#হলুদ_খাম
লেখিকাঃ #তানজীমা_ইসলাম
__________________[২১]___________________
ভোরের আলো ফোটার পরপরই রুশা তার বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফেরার জন্য বেরিয়ে পড়েছে। বাকিরা বেরিয়েছে সকালের নাস্তা করে তারপর। একটা সিএনজি নিয়ে আমতলী বাসস্ট্যান্ডে এসে পৌঁছেছে সেলিনা, সায়ন, তনিমা আর তনু। সিএনজি থেকে নেমে বীরগঞ্জগামী একটা বাস এ উঠে পড়ল তারা।
বাসে প্রায় সব সিট বুক, পেছনের দিকে পরপর তিনটা সিট ফাকা আছে। সেলিনা আর তনিমাকে পাশাপাশি দুটি সিটে বসিয়ে দিল সায়ন। সামনে দুই সিটের একটা ফাকা, জানালার ধারে বসে আছে এক বৃদ্ধা মহিলা। মাথায় পাক ধরা সাদা চুল আর মুখে বয়সের ছাপ দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার বয়স ষাটের ওপরে।
তনুকে সেই মহিলার পাশে বসিয়ে নিজে দাড়িয়ে রইলো সায়ন। আস্তেধীরে ভিড় বাড়ছে। একের পর এক যাত্রী উঠছে নামছে। মাঝেমধ্যে আশেপাশের সিট ফাকা হচ্ছে কিন্তু সায়ন সেদিকে না গিয়ে দু’পাশের সিট ধরে দাড়িয়ে আছে তনুর পাশে। তার এভাবে দাড়িয়ে থাকা দেখে মনে হচ্ছে যেন, তনুর আশেপাশে কেউ না আসতে পারে সেজন্য ঢাল হয়ে দাড়িয়ে আছে সায়ন। তনু বারকয়েক বলেছে,
” এভাবে কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকবেন! ওপাশে সিট খালি হয়েছে, গিয়ে বসুন।
” হ্যাঁ। আর সেই সুযোগে তুই অন্য ছেলেদের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকবি তাইতো!
তনু আর কিছু বলল না, সে বুঝে গেছে সায়নকে এখন ঠেলেঠুলেও এখান থেকে সরানো যাবে না। থাকুক, দাড়িয়েই থাকুক সে। কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকে দেখা যাক। এরমধ্যে পাশের বৃদ্ধা মহিলা বেশ তীক্ষ্ণ দৃষ্টি বুলাতে লাগল তনুর ওপর। তনুর সেদিকে হুস নেই। সে তাকিয়ে আছে সায়নের দিকে আর সায়ন তাকিয়ে আছে জানালার বাইরে। বৃদ্ধা একটা গলা খাঁকারি দিয়ে বলল,
” চেংরী (মেয়ে) তোমার নাম কি?
তনু সচকিত হয়ে তাকালো মহিলার দিকে। সায়নও একপলক মহিলার দিকে তাকিয়ে আবার বাইরে তাকালো। বৃদ্ধা আবার বলল,
” নাম কি তোমার?
” জ্বি, তনু। কেন?
” না মানি (মানে) এমনেই আর কি। বাড়ি কি আমতলী!?
” না। এখানে আমার নানুবাসা। আর বাসা হল বোচাগঞ্জে।
” অ! বুচাগঞ্জ! ঐ হানে তো আমার চাচতো বইনের দেবরের বড় চেংরা (ছেলে) থাহে। চেংরাডা ম্যালা ভালো, বুঝলা। দ্যাখতে এক্কেরে ধলা রাজহাঁস!
ধলা রাজহাঁস কথাটা শুনে ফিক করে হেসে ফেলল তনু। মানুষ আবার রাজহাঁসের মতো দেখতে হয় তনুর জানা ছিলো না। নিশ্চয়ই ছেলেটার গলা রাজহাঁসের মতো সরু লম্বা আর পা দুটো বেটে! তনু পরে হাসি সামলে নিয়ে বলল,
” ওহ।
” তা যাও কই? বুচাগঞ্জ?
তনু কিছু বলার আগেই সায়ন বলে উঠল, ” না, নানী। ও বীরগঞ্জে যাচ্ছে শ্বশুরবাড়িতে।
সায়নের কথা শুনে বৃদ্ধা বেশ হকচকিয়ে উঠল। তনু প্রথমে অবাক হলেও কিছু বলল না। তবে মহিলার চুপসে যাওয়া মুখটা দেখে তনুর ভীষণ হাসি পাচ্ছে। বৃদ্ধা তনুর দিকে তাকিয়ে বলল,
” কি গো চেংরী! এই চেংরা কয় কি?
এবারও তনুকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সায়ন বলে উঠল, ” ও কি বলবে! যা জিজ্ঞেস করার আমাকে করেন। আমিই তো ওর জামাই।
বৃদ্ধা মহিলার চুপসানো মুখটা আরও চুপসে গেলো। তনুর যেন হাসি আর পেটে ধরছে না। হাসির চোটে তার পেট ফেটে যাওয়ার উপক্রম। বাকিটা পথ বৃদ্ধা আর একটা কথাও বলল না। গন্তব্যে পৌছানোর সাথেসাথে মহিলা বাস থেকে নামার জন্য উঠে দাড়ালো।
সায়ন একটু সরে গিয়ে তার যাওয়ার পথ দিল। মহিলা সিট ছেড়ে বের হতে হতে সায়নকে বলল,
” লও চেংরা, এইবার বউয়ের পাশে বইয়া পড়ো।
তনুর দিকে তাকিয়ে বলল, ” তোমার জামাই মাশাল্লাহ একখান রাজপুত্তুর! বুঝলা চেংরী!?
” হ বুঝছি নানী।
মহিলা তার পান খাওয়া লাল ঠোঁট জোড়ায় হাসি ফুটিয়ে দ্রুত পায়ে বাস থেকে নেমে গেলো। সায়ন সাথেসাথে তনুকে ধাক্কা দিয়ে বলল,
” সর চেংরী! জামাইরে বইতে দে।
” পাশে বইয়া কি করবেন? তারচে কোলে আইয়া বহেন।
বাস স্টার্ট দিতেই তনু একটু ঝুকে জানালার ধারে সরে গেলো। সায়ন তার পাশে বসতে বসতে বলল,
” বেদ্দপ চেংরী!
” হ, আপনার বউ!
সায়ন তার দিকে না তাকিয়েই বাকা হাসল। তার এই হাসি দেখে তনুর গা পিত্তি জ্বলে উঠলো কিন্তু কিছুই বলল না। নিজ মনে বলল,
” হেসে নিন হেসে নিন। এখন তো আপনার সময় সায়ন আহমেদ। বিয়েটা হোক তারপর আমারও সময় আসবে। আর তখন আপনাকে আমি দেখে নিবো! হুহ!!
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
বেলা গড়িয়ে দুপুর নেমেছে। কিছুক্ষণ আগেই বাসায় এসে পৌছেছে সেলিনারা। স্নেহার রুমে থাকছে তনিমা আর তনু। সায়ন তার রুমে ঢুকে গোসল করে ঘুম দিচ্ছে। সেলিনা গোসল করে রান্নাঘরে এসে দেখল, ইকবাল বাজারের ব্যাগ থেকে তরিতরকারি বের করছে। আর তনিমা ঝাল পেয়াজ কাটছে। সেলিনা ফ্রিজ থেকে গোরুর মাংসের প্যাকেটটা বের করে পানিতে ভিজিয়ে রাখল।
তনু মাত্র গোসল করে বেরিয়েছে, বাসায় কারেন্ট নেই। এসেই শুনল, জেনারেটরে নাকি কি সমস্যা হয়েছে। ইকবাল মিস্ত্রি ডেকে এনেছে, তারা বাইরে কাজ করছে। তনু চুল মুছতে মুছতে বারান্দায় এসে তোয়ালেটা দড়িতে নেড়ে দিল।ভীষণ গরম পড়ছে আজ, সূর্যের প্রখর তাপে ব্যালকনির গ্রিল গুলোও তেতে উঠেছে।
তনু নিচে তাকিয়ে দেখল, বাগানের অপজিটে বেতের চেয়ারে বসে আছে সায়নের বাবা। তার মাথার ওপর বিশাল বিশাল নারকেল গাছের ছায়া। রোদের আলো সেখানে নেই বললেই চলে। নিশ্চয়ই ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগাচ্ছেন। কিন্তু তার বিরক্তি মাখা চোখমুখ দেখে মনে হচ্ছে তাকে যেন কেউ প্রখর রোদের নিচে বসিয়ে রেখেছে। তার মাথার খুলিটাও টগবগ করে ফুঠছে বোধহয়।
বাসায় ঢুকে কলিংবেল চাপতেই দরজা খুলে দিয়েছিলো সায়নের বাবা। সবার সাথে হাসিমুখে কুশলাদি করল অথচ সায়নকে দেখা মাত্রই তার চোখ জোড়া কেমন যেন দপ করে জ্বলে উঠল। ব্যাপারটা অবশ্য তনু বা সায়নের অজানা নয়। সকালে আসার আগেই সেলিনা আর তনিমা তাদেরকে সব জানিয়েছে।
সায়ন গোসল করে আরামছে ঘুমোচ্ছে কিন্তু তনুর ঘুম আসছেনা। তার ফোনটাও চার্জে বসানো। এখন বই পড়লে সময়টা ভালো কাটতো। তনু ব্যালকনি থেকে এসে ঘরে ঢুকে স্নেহার বুকশেলফের দিকে এগিয়ে গেলো। বিয়ের পরও স্নেহার প্রায় সব জিনিসপত্র এই ঘরেই আছে। সে কিছুই নিয়ে যায়নি। তার বাবা তাকে নতুন জিনিসপত্র দিয়েছে। যদিও ইমরান সেসব নেওয়ার পক্ষপাতী ছিলো না। কিন্তু স্নেহার কারণে সে নিতে বাধ্য হয়েছে। বাবা ভালোবেসে মেয়েকে কিছু দিচ্ছে, মেয়ে কি সেটা ফিরিয়ে দিতে পারে!
তনু বুকশেলফ থেকে হুমায়ুন আহমেদ এর লেখা মিসির আলি সমগ্রের “দেবী” উপন্যাসটা নিল। বইটা সে আগেও কয়েকবার পড়েছে। বইটা নিয়ে আবারও ব্যালকনিতে গিয়ে বসল তনু। সূর্যের তাপ কিছুটা কমে এসেছে, তবে ভ্যাপসা ভাবটা যাচ্ছেনা। তনুর একবার মনে হল নিচে মামার ওখানে গিয়ে বসবে কিনা। নারকেল পাতা গুলো হেলেদুলে কি সুন্দর হাওয়া দিচ্ছে।
পরক্ষণেই তনু সে চিন্তা বাদ দিল। মামার মেজাজ এখন ভালো নেই। শেষে তাকে কি না কি জিজ্ঞেস করে বসবে, তখন সে কি বলতে কি বলে ফেলবে কে জানে। হটাৎ কারো পায়ের শব্দ পেয়ে তনু বই থেকে মুখ উঠিয়ে ওপরে তাকালো। ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে তাকিয়ে আছে সায়ন। তনু ভ্রুকুটি করে বলল,
” কিছু বলবেন?
” তোর জামাইয়ের মাথা ব্যাথা করছে আর তুই এখানে বসে বসে উপন্যাস পড়ছিস! দেখি কি এমন উপন্যাস যে তোর জামাইয়ের খোজ নেওয়ার কথাও মনে নেই!!
বলেই খপ করে তনুর হাত থেকে বইটা একরকম ছিনিয়ে নিল সায়ন। তনু উঠে দাড়াতে দাড়াতে ভাবলেশহীন ভাবে বলল,
” আপনার মাথা ব্যাথা করছে তো আমি কি করবো! আমি কি ডক্টর!! হুহ!!!
সায়ন বইটা নিয়ে ঘরে গিয়ে জায়গামতো রেখে দিল। তনু তার পেছন পেছন ঘরে চলে এসেছে। সায়ন আবারও ঢুলতে ঢুলতে এসে বলল,
” গাধী! তুই তো কিছুই বুঝিস না। আয় তোকে বুঝিয়ে দিচ্ছি কি করতে হবে।
বলেই তনুর দুই কাধ চেপে ধরে বেডে বসিয়ে দিল সায়ন। তনু না চাইতেও বসে পড়ল, সায়ন কি করতে চাচ্ছে ঠিক বুঝতে পারছেনা সে। সায়ন তনুকে ছেড়ে সেও তার পাশে বসে পড়ল। তারপর দুইপা বেডে তুলে তনুর কোলে মাথা রেখে বলল,
” মাথা চেপে দে।
তনু কিছুক্ষণ থম মেরে সায়নের দিকে তাকিয়ে রইলো। সায়ন আবারও চোখ মেলে দেখল তনু তার দিকে বড়বড় চোখে তাকিয়ে আছে। সায়ন আবার চোখ বুজে বলল,
” আমি জানি আমি অনেক জোস দেখতে। এখন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে না থেকে মাথাটা চেপে দে। আমাকে দেখার জন্য সারাজীবন অনেক সময় পাবি।
তনু দাতে দাত পিষে বলল, ” ধলা বিলাই একটা! আপনাকে দেখতে যাবো কোন দুঃখে! আপনি যে এভাবে চিতপাত হয়ে আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছেন। কেউ দেখে ফেললে তখন কি হবে!
” কি আর হবে। তাড়াতাড়ি আমাদের বিয়ে দিয়ে দেবে।
তনুর ইচ্ছে করছে সায়নের মাথায় একটা ঘুষি মারতে। কিন্তু সে সাহস তার নেই, তাই মনেমনেই সায়নকে মেরে ভূত বানাতে লাগল সে। সায়ন এবার না তাকিয়েই বলল,
” তুই কি ভালোয় ভালোয় দিবি! নাকি তোকে থেরাপি দিতে হবে!
” কিসের থেরাপি?
” মাইর! মাইরের ওপরে কোনো থেরাপি আছে নাকি।
তনু হতবাক হয়ে গেলো, সায়ন তাকে মারবে! অবশ্য এটা অসম্ভব কিছু নয়। যদিও সায়ন তাকে কোনোদিন মেরেছে বলে তার মনে পড়েনা। ছোটবেলায় মেরেছিলো কি না কে জানে। তনু কাপা কাপা গলায় বলল,
” আপনি আমাকে মারবেন!?
” মারবো না তো কি করবো। তোকে কখন থেকে বলছি মাথা চেপে দিতে। তা না করে তুই পেত্নীর মতো বসে আছিস। তোকে তো কচু গাছের সাথে ঝুলিয়ে পেটানো দরকার।
তনু এবার রেগেমেগে বলল, ” আমি পেত্নী! তাহলে আপনি কি আপনি একটা ভ্যাম্পায়ার!
ভ্যাম্পায়ার নাম শুনে সায়ন কিছুটা অবাক হয়ে বলল, ” ভ্যাম্পায়ার কেন? আমি কি তোর রক্ত খেয়েছি নাকি!!
” রক্ত খান নি। তবে কামড় তো দিয়েছেন। তাও আবার গলায়!
সায়ন শব্দ করে হেসে বলল, ” তুই আসলে গাধী না বুঝলি। তুই একটা লজিক্যাল গাধী। তোর কথায় লজিক আছে।
বলতে বলতে আবারও ঘর কাপিয়ে হেসে উঠল সায়ন। তনুর এবার নিজেরই বেশ লজ্জা লাগছে। সে কি বলতে কি বলে ফেলেছে! এরমধ্যে নিচ থেকে সেলিনার ডাক শোনা গেলো,
” সায়ন! তনু! এসে খেয়ে নে।
সায়ন হাসি থামিয়ে বেড থেকে নামতে নামতে বলল, ” মা খেতে ডাকছে। কিন্তু কি খাবো বল তো! খাবার খাবো নাকি তোকে খাবো?
সায়ন শব্দ করে হাসছেনা, তার চোখেমুখে এবার স্পষ্ট শয়তানি হাসি দেখতে পাচ্ছে তনু। সায়ন আরেকনজর তনুকে ভালোমতো দেখে দ্রুত পায়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। সায়ন চলে যেতেই একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল তনু। এতক্ষণ কেমন যেন শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল তার, এমন তো আগে কখনো হয়নি। সায়নের সাথে বিয়ে হবে জানার পর থেকেই কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেছে সে।
____________________________
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
সবাই ডাইনিং টেবিলে একসাথে বসে খাচ্ছে। সায়ন আর তনুকে টেবিলের দুই প্রান্তে বসিয়ে দিয়েছে তনিমা। সে নিজে বসেছে ভাইয়ের পাশে। সেলিনা ছেলের পাশে বসে নিরবে খেয়ে চলেছে। খাওয়া যেমন তেমন সে যেন ভাত না চিবিয়ে পানি দিয়ে গিলছে। খাওয়াদাওয়া শেষে সায়ন আর তনু ওপরে চলে গেলো। সেলিনা থালাবাসন নিয়ে রান্নাঘরে গেছে। সায়নের বাবা হাত ধোয়ার জন্য উঠতেই তনিমা শান্ত গলায় বলল,
” ভাইয়া! তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।
” হুম বল।
” এখানে না, চল তোর ঘরে যাই।
” বেশ।
দুই ভাইবোন ঘরে যাওয়ার পর সেলিনাও ঘরে এসে দাড়ালো। সায়নের বাবা কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল,
” আবার তুমি এলে কেন? দেখছো না আমরা কথা বলছি।
সেলিনা কিছু বলার আগেই তনিমা বলে উঠল, ” যে ব্যাপারে কথা বলতে চাইছি, সেটা ভাবিও জানে। তাই ভাবির এখানে থাকা জরুরি।
সায়নের বাবা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল, ” আচ্ছা, কি বলবি বল।
” হয়তো শুনেছিস, সায়ন আর তনু দু’জন দু’জনকে ভালোবাসে। আমি জানিনা ওদের ব্যাপারে তোর কি মতামত। তবে আমি ওদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছি আর চাই যত দ্রুত সম্ভব ওদের বিয়ে দিতে। এখন তোরা ওদেরকে মেনে নিবি কিনা সেটা তোদের ব্যাপার। তোরা মানলেই বিয়ের কথা এগোবে এছাড়া না।
” আর রোকন! সে কি জানে?
” না। ও জানেনা। তবে ও আপত্তি করবেনা আমি জানি। তনুর জন্য বিয়ের সম্বন্ধ এলে সে বারবার জিজ্ঞেস করতো, তনু কাউকে পছন্দ করে কি না। যদি করে তাহলে তাকে যেন বলে। সে নিজে ছেলের ব্যাপারে সব খোজ খবর নিয়ে বিয়ের কথা এগোবে।
বোনের কথায় সায়নের বাবার চিন্তায় কুঞ্চিত কপাল বেশ শিথিল হয়ে এলো। বোনের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে এবার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলল,
” আর তোমার কি মতামত?
” তনুকে অপছন্দ করার কিছুই নেই। ওরা দু’জন দু’জনকে অনেক ভালোবাসে। ছেলেমেয়েরা খুশি থাকলেই আমি খুশি, তাই আমিও ওদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছি।
সায়নের বাবা মাথা দুলিয়ে বলল, ” বেশ। আগে আমি ওদের সাথে কথা বলবো। তারপর এসব নিয়ে ভাবা যাবে।
_________________________
|
|
|
|
[চলবে]