#হলুদ_খাম
লেখিকাঃ #তানজীমা_ইসলাম
__________________[১৮]__________________
সায়ন বুঝতে পারছেনা তার মা হটাৎ এমন করছে কেন! আচ্ছা সে কি স্বপ্ন দেখছে!
দেখতেও পারে। গতরাতে ফুপ্পির কথা শোনার পর এমনিতেই জেগে জেগে উল্টাপাল্টা জিনিস দেখছে সে। একবার দেখছে তনু সেই প্রিয়ম না কি ছাই তাকে বিয়ে করে ফেলেছে!
সাথেসাথেই সে ঘুম ভেঙে উঠে বসেছে। কি সাংঘাতিক ব্যাপার!
তার তনু কি না অন্য কাউকে বিয়ে করেছে!? পরক্ষণেই বুঝল সে স্বপ্ন দেখছে অমনি আবার ঘুমিয়ে পড়ল। এবার দেখল আরও ভয়ানক স্বপ্ন!
প্রিয়ম আর তনুর বাচ্চা হয়েছে!! আর সায়ন তাদের হ্যাপি ফ্যামিলির ফটোশুট করছে!!
“গুল্লি মারি তোদের কচু মার্কা ফ্যামিলির”! বলতে বলতে আবারও সায়নের ঘুম ভেঙে গেল।
তাই এখনও সে স্বপ্ন দেখছে নাকি বাস্তব ঠিক বুঝতে পারছেনা।
সেলিনা ভাবলেশহীন ভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় যেতে যেতে বলল,
” আমার বউমা’টা এতো সকালে ঘুম থেকে কেন উঠেছে হ্যাঁ!? কাল রাতে তো ঠিকমতো ঘুমাওনি। যাও গিয়ে ঘুমাও।
সাথেসাথেই সায়নের মাথায় যেন বোমা বিস্ফোরণ ঘটল। তার মা এই সকাল সকাল কাকে বউমা বউমা ডাকছে!?
_______________________
তনু মাত্র ঘুম ভেঙে উঠে আড়মোড়া খেতে খেতে ঘর থেকে বেরিয়েছে। ওমনি বড় মামির বলা কথাটা শুনে তার পিলে চমকে উঠল। বড় মামি কাকে বউমা ডাকছে!? আর কেনই বা ডাকছে!!? তনু আর ভাবতে পারছেনা। একটা শুকনো ঢোক গিলে মামিকে বলল,
” কা’কে ডাকছো মামি?
” এখানে তুই ছাড়া কি কেউ আছে?
তনু ঘাড় ঘুরিয়ে বারান্দার এমাথা ওমাথা তাকিয়ে দেখল, সত্যিই তো সে ছাড়া কেউ নেই। মুহুর্তেই আরেক দফা চমকে উঠল সে। বড় মামি তাকে বউমা ডাকছে! কিন্তু কেন!!? সেলিনা তনুর দিকে এগিয়ে এসে বলল,
” হা করে দাড়িয়ে আছিস যে! নাকি সকাল সকাল শ্বাশুড়ির কাজে সাহায্য করতে উঠে এসেছিস!?
তনু ভেবে পাচ্ছেনা কি বলবে। তার কথাবার্তা গলার কাছে এসে তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। শেষে কি বলতে কি বলে ফেলবে ঠিক নেই। সেলিনা বুঝল তনু এখনও শক এর মধ্যে আছে। এরমধ্যে সায়ন তড়িঘড়ি করে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো। সে একবার মায়ের দিকে তাকাচ্ছে আবার তনুর দিকে তাকাচ্ছে। সেলিনা দু’জনকে উদ্দেশ্য করে বলল,
” ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি নিচে আয়।
সেলিনা চলে যেতেই সায়ন আড়চোখে তাকিয়ে দেখল, তনু তার দিকে তাকিয়ে আছে। সায়ন তনুকে না দেখার ভান করে দ্রুত পায়ে ছুটল ওয়াশরুমের দিকে। তনুর এতক্ষণে শক কাটলো। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখল বারান্দায় সে একা দাঁড়িয়ে আছে। আচ্ছা একটু আগে কি সে স্বপ্ন দেখছিলো নাকি বাস্তবেই মামি তাকে বউমা ডেকেছে! তনু নিজ মনেই বলে উঠল,
” নাহ! অসম্ভব! কাল রাতে ভালো ঘুম হয়নি তাই হয়তো ভুংভাং দেখছি। আর রুশা টা যে কি এক বিশ্রি তেল মেখেছে আল্লাহ মাবুদ জানে। গন্ধে আমার গা গোলাচ্ছিলো।
তনু ঘুমের হাই তুলতে তুলতে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে গেলো। এদিকে সায়ন ব্রাশ করতে করতে বেসিনের আয়নায় তাকিয়ে বলছে,
” হয় তোর মা পাগল হয়ে গেছে নাহয় তুই পাগল হয়ে গেছিস সায়ন। নয়তো এক রাতের ব্যবধানে মামি ভাগনির সম্পর্ক ক্যামনে বউ শ্বাশুড়ি হয়ে যায়!
” ওয়েট ওয়েট! ওখানে তনুও ছিলো। তাহলে তনুও কি পাগল হয়ে গেছে!
” ধুর শালা! মনে হচ্ছে আমি নিজেই পাগল হয়ে গেছি।
ওয়াশরুমের দরজা খোলা, তনু কোনোদিক না তাকিয়েই ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ল। কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেখে আঁতকে উঠল সায়ন।
সাথেসাথে তনু তাকিয়ে দেখল, সায়ন গালে ব্রাশ নিয়ে বেসিনের সাথে চিপকে দাড়িয়ে আছে। তার চোখ জোড়া দেখে মনে হচ্ছে যেন ভয়ানক কিছু দেখেছে সে! তনু ভ্রুকুটি করে বলল,
” আচ্ছা আপনি কি সত্যি সত্যি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন!?
সায়নের চোখ জোড়া আরও বড় বড় হয়ে গেছে। তনু এগিয়ে এসে বেসিনের ট্যাপ ছেড়ে দিল। সায়ন অবাক হয়ে তনুর দিকে তাকিয়ে আছে। তনুর কথাবার্তা তার মাথায় ঢুকছেনা। তনু ট্যাপের পানি হাতে নিয়ে হুট করে সায়নের গায়ে ছুড়ে মারল। প্রায় সাথেসাথে চেচিয়ে উঠলো সায়ন,
” গায়ে পানি মারছিস কেন? আজব!!
এবার তনুর বিশ্বাস হল এটা সায়ন এবং সে তার গায়ে পানি ছুড়েছে। সায়নের গায়ে পানি ছুড়েছে ভাবতেই ফিক করে হেসে ফেলল তনু।
সায়ন তাড়াতাড়ি ব্রাশ ধুয়ে মুখে পানি নিয়ে মুখ ধুতে লাগল। তনু কি ভেবে বলে উঠল,
” জানেন, আপনাকে ভেজা শরীরে দেখলে আমার মাথা ঠিক থাকেনা।
সায়নের মুখ ধোয়া শিকেয় উঠল। দ্রুত মুখ উঠিয়ে তনুর দিকে তাকিয়ে দেখল, তনু মিটমিট করে হাসছে। সায়নের রাগ হচ্ছে না কি হচ্ছে কে জানে। কিন্তু তনুর মিটমিট করে হাসা দেখে সায়নের ইচ্ছে করছে ঠাটিয়ে একটা চড় মারতে।
অথচ চড় মারা যেমন তেমন সায়ন হুট করে তনুর দুই বাহু ধরে ওয়াশরুমের দেয়ালে চেপে ধরল।
সায়ন হটাৎ দেয়ালের সাথে এমন চেপে ধরাতে বেশ ভড়কে গেল তনু। কি করতে চাইছে সায়ন! তনুর দিকে তাকিয়ে সায়ন বলে উঠল,
” মাথা ঠিক থাকেনা না!? তো কি করতে মন চায় তোর!?
” জা’জানিনা!
” তো কি জানিস?
তনুর সারা শরীর কাপছে, কাপা কাপা গলায় সে বলল, ” আমি এখনও হাতমুখ ধুইনি!
সায়ন বাকা হেসে বলল, ” তো আমি কি করবো?
” আমার ক্ষিদে পেয়েছে, সরুন আমি ফ্রেশ হবো।
” এক কাজ কর, আমাকে খেয়ে ফ্যাল।
তনু চমকে উঠে বলল,” আপনাকে কিভাবে খাবো?
সায়ন কিছু না বলে তনুর ঠোঁটের দিকে তাকালো। সাথেসাথে দু’হাতে নিজের ঠোঁট চেপে ধরল তনু। সায়ন একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলল,
” আমার ক্ষিদে পেলে কিন্তু ঠিকই খেয়ে নেবো।
এবার হিস্টিরিয়া রোগীর মতো কাপতে লাগল তনুর সারা শরীর। এরমধ্যে রুশার চিৎকার শোনা গেলো। সায়ন বিরক্ত হয়ে বলল,
” দ্যাখ, সকাল হতে না হতেই শাকচুন্নির চিল্লাপাল্লা স্টার্ট হয়ে গেছে!
তনুর কাপাকাপি একটু কমে এসেছে। কিন্তু সে কিছু বলছে না আর না হাত সরাচ্ছে ঠোঁট থেকে। সায়ন কিছুক্ষণ তনুর দিকে তাকিয়ে স্মিত হেসে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে গেল।
কিন্তু ওর হাসিতে কি যেনো ছিলো, সেই হাসিতে কাপাকাপি থেমে এবার লজ্জায় আরক্তিম হয়ে উঠল তনু।
______________________________
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|______________________________
রুশার চিৎকার শুনে একে একে প্রায় সবাই ওপরতলায় এসে হাজির। কিন্তু রুশার চিৎকার থামছে না।
সে দু’হাতে নিজের চুল ধরে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে। কিন্তু সে হটাৎ চিৎকার কেন করছে কেউ বুঝতে পারছেনা। সায়নের বাবা বলল,
” কি হয়েছে রুশা মা? এভাবে সাতসকালে চেচাচ্ছিস কেন!?
” আমার চুল!
বলে আবার চিল্লাতে লাগল রুশা। রাবেয়া বিরক্ত হয়ে বলে উঠল,
” রুশা! তুই থামবি!! এমন ভাবে চেচাচ্ছিস যেন কেউ মরে গেছে!!!
” আমার চুলে জট লেগে গেছে চোখে কি দেখছো না তোমরা!?
বলেই রুশা আবার মরাকান্না জুড়ে দিল। সবাই খেয়াল করল, সত্যিই রুশার চুল গুলো এলোমেলো হয়ে জট পেকে গেছে। কিন্তু এতে চেচানোর কি আছে, চিরুনি দিয়ে ছাড়ালেই তো হয়। তনিমা এগিয়ে এসে বলল,
” বোকা মেয়ে। চুলে জট লেগে গেলে বুঝি কেউ চেচামেচি শুরু করে! আয় আমি তোর চুলের জট ছাড়িয়ে দিচ্ছি।
তনিমা হাত বাড়িয়ে রুশার চুল ধরতেই বিশ্রি গন্ধে তার গা গুলিয়ে উঠল। সে আরেক হাতে নাকমুখ চেপে ধরে বলল,
” তোর চুলে এতো দূর্গন্ধ কেন রে!?
রুশা এবার কাদোকাদো হয়ে বলল, ” হাসু কাকার দেওয়া তেল মেখেছিলাম।
সাথেসাথে রাবেয়া আর সেলিনা নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়াচাওয়ি করল। মুখে না বললেও তাদের বুঝতে বাকি নেই রুশা সেই বাত ব্যাথার তেল চুলে মেখেছে! রাবেয়া চেচিয়ে উঠলো,
” সেই বাত ব্যাথার তেল!
” কোন বাত ব্যাথার তেল আম্মু?
” ঐ যে বোতলের মধ্যে ছাই রঙের বিশ্রি গন্ধ তেল!?
রুশার চোখ জোড়া ছলছল করে উঠল। সে বাত ব্যাথার তেল চুলে মেখেছে! এই চুল সে কাকে দেখাবে!!
সায়ন এতক্ষণ চুপ থাকলেও শেষপর্যন্ত নিজেকে সামলাতে পারলো না। হো হো করে হাসতে লাগল সে। সায়নের বাবা ছেলেকে ধমক দিলেন,
” সায়ন!
সায়ন কোনোরকমে হাসি চেপে রেখে তনুর দিকে তাকালো। তনু হাসছেনা, সে তো রুশার অদ্ভুত আচরণ আর এলোমেলো চুল দেখে ভয় পেয়ে গেছিলো। কি জানি রুশাকে জ্বিন ভূতে ধরল কি না।
হাসু মিয়া পান চিবাতে চিবাতে ওপরে এসে দেখল সবাই রুশাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। হাসু মিয়া এগিয়ে এসে বলল,
” কি হইছে? সজ্ঞলে এমনে খাড়াই আছেন ক্যা?
হাসুকে দেখে সেলিনা বিরক্ত হয়ে বলল, ” ভাই, আপনি বাত ব্যাথার তেল রুশাকে চুলে মাখতে দিলেন কেনো? এখন দেখুন বেচারির চুলের কি অবস্থা হয়েছে!
হাসু মিয়া চোখ কপালে তুলে বলল, ” কন কি ভাবি! রুশা তো আমার কাছে তেল চাইছে দেইখা আমি দিছি। ভাবছি তারও বুজি বাত ব্যাথা আছে। হ্যায় যে চুলে মাখবো তাতো কয় নাই।
রুশা চোখে অন্ধকার দেখছে। তাকে এই অবস্থায় সায়ন দেখে ফেলেছে! নিশ্চয়ই তাকে পেত্নীর মতো লাগছে দেখতে!! না জানি সায়ন কি না কি ভাবছে!!! রুশা এবার হাউমাউ করতে লাগল। হাসু মিয়া নরম গলায় বলল,
” রুশা মা তুমি যে চুলে তেল মাখবার চাও আমারে কইছিলা!? কইলে তো আমি এই তেল তোমারে দিতাম না।
তনিমা বাধা দিয়ে বলল, ” আচ্ছা যা হওয়ার হয়েছে। এখন ওকে গোসল দিতে হবে। এই রুশা! যা ভালো করে চুলে শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করে আয়।
রুশা কান্না থামিয়ে ফোপাঁতে ফোপাঁতে গোসল করতে গেলো। একে একে সবাই নিচে চলে যেতেই সায়ন হাসু মিয়ার কাধ এক পাশে জড়িয়ে বলল,
” চাচা! আপনি কি জানেন? আজ আপনি কতো মহৎ একটা কাজ করেছেন?
” সায়ন বাবা! বিশ্বাস করো, রুশা কয় নাই যে হ্যায় চুলে তেল মাখবো।
” আরে চাচা! এতো প্যারা নেন ক্যান? আপনার তো কোনো দোষ নাই। কিন্তু আপনি না জেনেই মহৎ কাজটা করেছেন।
” বুঝছি! রুশারে এমনে দেইখা তোমার খুব ভাল্লাগতাসে তাই না!!
সায়ন বাচ্চাদের মতো মাথা ওপর নিচ করে হ্যাঁ জানালো। হাসু সায়নের পিঠ চাপড়ে বলল, ” বদমাশ পোলা!
সায়ন হাসতে হাসতে বলল, ” আচ্ছা চাচা! আপনার ঐ তেল কি আরও আছে? থাকলে আমাকে একটা দিয়েন তো।
” ক্যান! তুমিও কি তেল মাইখা চিল্লাইবার চাও!?
” আরে চাচা আমি মাখবো নাতো। এসব জিনিস আত্নরক্ষায় কাজে আসে বুঝলেন।
______________________________
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|______________________________
প্রায় দুই ঘন্টা ধরে গোসল করে তারপর বেরিয়েছে রুশা। তার চুলের থেকে সেই বিশ্রি গন্ধটা গেছে নাকি শ্যাম্পুর সুগন্ধে নাকে লাগছে না কে জানে। কিন্তু চুলের জট এখনও ছাড়ায়নি।
তনিমা তাকে রোদে বসে চুল শুকাতে বলেছে। চুল শুকিয়ে গেলে তারপর সে চিরুনি দিয়ে ছাড়িয়ে দেবে।
কিন্তু বাইরে তো রোদই নেই, গত রাতে বৃষ্টি হয়ে প্রকৃতি বেশ শান্ত হয়ে আছে। ঠান্ডা হাওয়া বইছে চারিদিকে। রুশা নিচতলায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে তার চুলটা কিভাবে শুকাবে।
এবার আসার সময় সাথে করে হেয়ার ড্রায়ারটাও আনেনি। ওটা আনলে এখন সূয্যিমামার রোদের আশায় তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো না।
ইমরান আর স্নেহা সকালে ব্রেকফাস্ট করেই ফিরে যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছে। তনুর বাবা আর ভাইও চলে গেছে, তনিমা আর তনু কাল সকালে সায়নদের সাথে বের হবে। রুশার বাবাও আজ সকালে বেরিয়ে যাবে ভেবেছিলো, পরে মেয়ের কান্নাকাটি দেখে তার আর যাওয়া হল না। তাই একেবারে বউ আর মেয়েকে সাথে নিয়ে কাল সকালে সে ফিরে যাবে।
আরও একদিন সবাই থাকছে দেখে হাসু মিয়া তো খুশিতে গদগদ হয়ে গেছে। খামার থেকে একটা রাজহাঁস নিয়ে জবাই করতে পুকুরপাড়ে গেছে সে আর সায়ন। তনুও তাদের পিছুপিছু যাচ্ছিলো, হুট করে সেলিনা এসে তাকে নিয়ে রান্নাঘরে নিয়ে এলো। বারান্দায় মাদুর পেতে খোশগল্প জুড়েছে তনিমা আর রাবেয়া। হাসু মিয়ার পানের বাটা থেকে রাবেয়া পান বানিয়ে চিবাচ্ছে আর কিছুক্ষণ পর পর হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
তনু মনেমনে ভাবছে, ” কি এমন গল্প জুড়েছে আল্লাহ মাবুদ জানে। হেসে গড়াগড়ি দিতে দিতে আবার না ভিষম খায়।
সেলিনার ডাকে ভাবনায় ছেদ পড়ল তনুর। সেলিনা ঝালের বোটা ছাড়াতে ছাড়াতে বলল,
” আচ্ছা তনু! আমাকে তোর কেমন লাগে রে?
বড় মামির মুখে হটাৎ এমন প্রশ্ন শুনে তনু বেশ অবাক হয়ে বলল, ” কেমন লাগবে! ভালো লাগে।
” না, মানে ধর যদি আমি তোর শ্বাশুড়ি হই। তো শ্বাশুড়ি হিসেবে আমাকে তোর কেমন লাগবে?
তনুর মাথা চক্কর দিচ্ছে। এসব কি বলছে মামি! সেলিনা একটা বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
” ধুর বাপু! কি বলছি তা কি জানি। আচ্ছা শোন, আমি কিন্তু জানি তুই সায়নকে পছন্দ করিস। কিন্তু মা হয়ে এসব শুনে আমাদের বসে থাকলে তো চলবে না। বিয়ের আগে ছেলেমেয়েদের এমন মেলামেশা ঠিক না, গোনাহ হয়। আর তোদের বললেও যে শুনবিনা তাও আমরা জানি। তাই তোর মা আর আমি ভেবেছি তোদের বিয়ে দিয়ে দেবো। কিন্তু সায়ন তো এখনও চাকরি পায়নি। আচ্ছা, তুই কি একটা বেকার ছেলেকে বিয়ে করতে পারবি তনু!?
_________________________
|
|
|
|
|
[চলবে]