#তুমি_আমার_অধিকার🍂
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#শেষ_পার্ট
রাত ঠিক বারোটা বাজে অন্তীর জ্ঞান ফিরে
অন্তীর জ্ঞান ফিরতে রুম থেকে বেরিয়ে দেখলো পুরো বাসাটা অন্ধকার কোথাও আলো নেই । একটু পা বাড়িয়ে হাটতে লাগলো অচমকা কিসের সাথে হোচট খেয়ে সে পড়ে গেলো সাথে সাথে লাইট গুলো জ্বলে উঠলো আর সবাই একই স্বরে বলে উঠলো হ্যাপি বার্থডে টু ইউ হ্যাপি বার্থডে টু ইউ, অন্তী ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো
– আবির অথৈ নিলয় সবাই আছে সে আনন্দে কেদে দিলো এতো ভালোবাসা সে পাবে কল্পনা করতে পারে নি । আজকে তার জন্মদিন সেটাও সে ভুলে গেছে ধ্যাত ।.
তবে নিলয়ের ঠিক মনে আছে.. যাক অনেক আনন্দ মজা করে রাত একটা বাজলো । নিলয় অন্তীকে নিয়ে ছাদে আসলো, ছাদের ওই কোণে চেয়ার দেখে নিরার কথা মনে হলো নিলয়ের মুচকি হাসলো নিলয়
– অন্তী আর সে ওইখানে গিয়ে বসলো ।
নিলয়ঃ- চাদঁটা আজকে সুন্দর না হুম…
অন্তীঃ- হুহ অনেক সুন্দর ( নিলয়কে জড়িয়ে ধরে)
আজকে দুইটা চাঁদ উঠছে .
অন্তীঃ- কি… কোথায়? ( কৌতূহল স্বরে)
নিলয়ঃ- হুই দুইটা চাদঁ একটা আকাশে আরেকটা আমার কাছে । নিলয় গুন গুন করে বলে উঠলো…..
আকাশে বাতাসে রটিয়ে দিলাম,
তুমি শুধু তুমি আমারিই জান,
অন্তী মুচকি হেসে যা শয়তান ।
পরের দিন..
নিরাঃ- তখন তো বড় বড় কথা বলছো,আবার ক্যাশ টাকাও নিছো আমার কাছ থেকে কিন্তু কোথায় কেনো কাজের কাজ হলো না । আমার টাকা ফিরিয়ে দেও ।
রবিনঃ- এখন টাকা ফিরিয়ে দিতে পারবো না । সব টাকা খরচ হয়ে গেছে । আর আমরা কি কম চেষ্টা করছি কত প্লান সব ভেস্তে গেলো । লাষ্ট একটা সুযোগ দেও আমি এইবার তুমাকে নিরাশ করবো না ।
নিরাঃ- ওকে ঠিক আছে । তবে আমি এইবার আর টাকা দিতে পারবো না । ( বিরক্তিকর ভাবে বললো )
রবিনঃ- ঠিক আছে ।
– রবিন এইবার নিখুত প্লান করলো । এইবার আর ভুল হওয়া যাবে না ।
বিকেল বেলা
অন্তী যেতে চাচ্ছে না নিলয় এক কথার মানুষ এখন তার বাসায় যেতে হবে । অবিবাহিত মেয়ে এতক্ষণে বাহিরে কোথাও থাকা যায় না । আর আংকেল আন্টি অপেক্ষা করছে তার জন্য ।
নিলয়ঃ- আমার কলিজাটা আর তো মাএ একটা দিন তারপর থেকে তুমাকে একবারে কলিজায় রেখে দিবো এখন লক্ষী মেয়ের মতো বাসায় চলে যাও আন্টি আংকেল অপেক্ষা করছে । অন্তীর না সও্বে নিলয় এক প্রকার জোর কে অন্তীকে রিক্সা উঠিয়ে দিলো ।
বিকেল বেলা রবিন আর তার দল সবাই যার যার পজিশন নিয়ে আছে । এইবার আর কেনো ভাবে শিকার হাত ছাড়া করা যাবে না ।
– অন্তী রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে গেটে ডুকতে যাবে এমন সময় একজন লোক তাকে ডাক দিলো, এই যে আপু একটু শুনুন..
অন্তী:-জ্বি বলুন, এরই মধ্যে একজন অন্তীর মুখে রুমাল চেপে ধরলো সাথে সাথে একটা কালো রংয়ের গাড়ি তাদের পাশে এসে দাড়ালো সেটাতে অন্তীকে তুলে নিয়ে দ্রুত এলাকা চম্পট দিলো তারা ।
– এইদিকে সন্ধ্যায় হয়ে গেলো অন্তী বাসায় আসার কেনো নাম গন্ধ নেই । হারুন সাহেব খুব অস্থির হয়ে পড়েছেন ।
অন্তীর মাঃ- আচ্ছা আমি বলছিলাম কি তুমি একবার অন্তীর ফোনে কল দিয়ে দেখো ।
– হারুন সাহেব অন্তীর ফোনে কল দিয়ে দেখলো তার ফোন বন্ধ । উপায় না পেয়ে তিনি নিলয়কে কল করলো ।
নিলয় হারুন সাহেবের কল পেয়ে খানিকটা অবাক হলো । কলটা রিসিভ করে..
নিলয়ঃ- হ্যালো আসসলামু ওয়ালাইকুম আংকেল ।
হারুনঃ- বাবা নিলয়, অন্তীকে তো তুমি বলছো রিক্সা উঠিয়ে দিয়েছো সেই কখন ।
– কিন্তু বাবা সে তো এখনো আসে নি । তুমি একটু খোজ নিয়ে তো দেখো সে আবার কোথায় চলে গেছে নাকি ।
আচ্ছা আংকেল আমি দেখছি । উহ এই অন্তীকে নিয়ে আর পারা গেলো না ।
– কেনো যে একা ছাড়লাম আমি নিজে গিয়ে দিয়ে আসলে ভালো হতো ।
অপর দিকে রবিন তারা চেলাকে বললো
ওই কালাম ধর নিরাকে কল দেয় । বস নেন কথা বলেন ।
রবিনঃ- হ্যালো কাজ হয়ে গেছে । কোথায় তুমি
নিরাঃ- আচ্ছা ঠিক আছে আপতত তুমার গ্যারেজে নিয়ে যাও আর তাকে বেধে রাখো ।
রাত দশটা বেজে গেলো এখনো অন্তীর কেনো খোজ নেই, আবির অথৈ আরো কয়েকজন মিলে অন্তীকে খুজতে বেরিয়ে গেলো । নিলয়ের চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে সব তার ভুল কেনো যে তার পাখিটাকে একা ছাড়তে দিলাম ইসস , মেয়েটা অনেক জোরাজোরি করছে থাকতে আমি কি করলাম জোর কে তাকে পাঠিয়ে দিলাম ।
-নিলয় এইবার আর নিজেকে আটকাতে পারলো না কাদতে লাগলো । আবির এসে নিলয়কে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছে.
– চিন্তা করিস না আর তুই এইভাবে ভেঙ্গে পড়লো আন্টি আংকেল কিভাবে থাকবে । আর অন্তীকে আমরা খুজে বের করবো ।
এইদিকে রাত মনে হয় বারোটা হবে অন্তীর মুখে পানি ছিটিয়ে দিয়ে তাকে জাগিয়ে তুলা হলো । অন্তী তাকে বাধা অবস্থায় দেখে ঘাবড়ে গেলো । তবে মনে সাহস রাখলো ।
মুখটা সম্পর্ণ ঢাকা এক মেয়ে তার সামনে আসলো ।
অন্তীঃ- কে তুমি । আর আমাকে কেনো এনেছো ।
নিরাঃ- তুমার শুভাকাঙ্খি, আস্তে আস্তে আমাকে চিনতে পারবে আর এতো তাড়াহুড়া করছো কেনো ধীরে সুস্থ আমাদের কথা হবে ।
অন্তীঃ- আমাকে যেতে দেও ভালো ভালো না হলে আমি এখন থেকে একবার ছুটতে পারলে তুমার রক্ষা নেই ।
অন্তীর কথা শুনে নিরার খুব রেগে যায় সে সজোরে অন্তীর গালে চড় বসিয়ে দেয় । অন্তীর মুখ থেকে রক্ত বের হলো ।
অন্তী:- আমার হাত পা বাধা । তবে আমার মুখ দিয়ে আমি তোকে ছোবল দিবো । কি ভেবেছো তুমি..
নিরাঃ- তর এমন হাল করবো জিবনে কখনো মুখ দেখাতে পারবি না কাউকে । এই কালাম একে ভালো করে বেধে রাখ আর কালকে এর হিসাব নিকাশ হবে । এই বলে নিরা চলে গেলো ।
– অন্তী নিজেও কল্পনা করতে পারবে না নিরা কালকে খুব জঘন্য খেলা খেলবে তার সাথে.. নিরা কাকে যেনো কল করলো…
হ্যালো
– জ্বি মেম ।
– আমি যে জিনিসটা চায়ছি সেটা কখন পাবো ।
– মেম কালকে আপনার দেওয়া ঠিকানা মতো পাঠিয়ে দিবো
– ওকে ঠিক আছে ।
পরের দিন সকাল বেলা…
পুরো একদিন অন্তীকে পুরো শহর তন্ন তন্ন করে খুজছে কোথাও নেই । এখন তো নিলয়ের মনে হচ্ছে অন্তীর সাথে খারাপ কিছু একটা হয়েছে । কেউ হয়তো তাকে কিডন্যাপ করেছে । কিন্তু কে এই জঘন্য কাজ করতে পারে । একমাএ সেই পারে নিরা । সে দ্রুত ফোনটা বের করে নিরার বাবার কাছে কল করলো নিরার বাবা সব ঠিক বললো কিন্তু নিলয়ের খটকা লাগলো নিরার যদি কিছু না করে তাহলে কে করলো ।
– অন্তীর বাসার সামনে সিসি টিভি লাগানো আছে । হারুন সাহেব ভাবলো একবার চেক করে নেওয়া যাক যদি কিছু পাওয়া যায় ।
– ওনি বাসায় গিয়ে সিসি টিভি অন করে যা দেখলো তিনি হতভম্ব হয়ে আছেন অন্তীকে রবিনের ছেলেরা তুলে নিয়ে গেছে । ওনি আর দেরি না করে নিলয় আর তার ফোর্স কে এক্ষুণি তার বাসায় আসতে বললো ।
– এইদিকে নিরা কালকের অর্ডার মাল হাতে পেয়ে গ্যারেজে চলে গেলো ।
নিরাঃ- কিরে কি খবর,
রবিনঃ- মেয়েটা তো পুরা ডেন্জারাস যা করতে হবে তুমাকে করতে হবে ।
নিরাঃ- আজকে সব খতম করে দিতে পারলে মুক্তি পাবো । চল কাজ শুরু করা যাক ।
নিলয় আবির বাইকে করে
আর হারুন সাহেব ওনার ফোর্স নিয়ে দ্রুত রবিনের গ্যারেজের দিকে ছুটলো । ওনারা প্রায় গ্যারেজে এসে পড়েছেন..
হারুন সাহেবঃ- আমাদের কাজটা করতে হবে খুব সাবধানে, কেনো তাড়াহুড়া করলে অন্তীর প্রাণ বিপন্ন হবে ।
– সবাই ধীরে সুস্থে রবিনের যত ছেলে পেলে আছে সবাইকে ধরে ফেলছে বাকি রয়েছে একজন । গ্যারেজে এক কোণে একটা রুম আছে সেখানে আলো জ্বলছে ।
সবাই সেখানে গিয়ে দেখে অন্তীকে চেয়ারে সাথে বেধে রাখা হয়েছে অন্তী অজ্ঞান হয়ে আছে, নিলয় দ্রুত অন্তীর কাছে গিয়ে অন্তীকে সেখান থেকে নিয়ে গেলো । আর তার পরিবর্তিতে হারুন সাহেবের এক ফোর্সকে বসিয়ে দিলো ।
অন্তী হাতে এক বোতল নিয়ে সামনে এগুতে লাগলো ।
– অনেক হয়েছে ।
এইবার লার্ষ্ট খেলা হবে তুমার সাথে তুমার এমন হাল করবো জিন্দেগীতে নিলয় কেনো কেনো ছেলে তুমার দিকে তাকাতে ভয় করবে । এই বলে বোতলটা মুখে ছুড়ে মারবে । তৎক্ষণাত ফোর্সটা তার মুখটা থেকে কাপড়টা সরালো নিরা তো ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো । সাথে সাথে হারুন সাহেব তার ফোর্স নিয়ে নিরাকে ঘিরে ফেললো । নিরা তো কিছুই বুজতে পারছে না এত দ্রুত তারা কিভাবে খোজ পেলো..
হারুন সাহেবঃ- অনেক জ্বালিয়ছো তুমি । এইবার তার কর্মফল ভোগ করার সময় এসেছে নিরা খাতুন । এই একে গাড়ি তুলো আর হুম বেধে তুলো ।
নিরাকে গ্রেফতার করা হলো ।
– ওইদিকে অন্তীর জ্ঞান ফিরলো । জ্ঞান ফিরতেই তার পাশে নিলয়কে দেখতে পারলো ।
-নিলয়ঃ কেমন আছো ( অন্তীর মাথায় হাত বুলিয়ে)
অন্তীঃ- হুম ভালো..
তারপর নিলয় অন্তীর কপালে চুমু আকলো
– আর একটা দিন অপেক্ষা করো তারপর একবারে নিজের করে নিবো ।
নিরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে । চিন্তা করো না সে তার কর্মফল পাবে ।
নিরাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হলো, হঠৎা কারো তালির শব্দ শুনে নিরা সামনে তাকিয়ে দেখলো হদয় নিরা অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে
– হদয় এখানে কিভাবে আসলো ।
হ্দয়ঃ- হাই বেবি চলে আসলা তুমি যাক ভালোই হলো
আমি বলেছিলাম না আমাদের আবার দেখা হবে । কিন্তু এইভাবে দেখা হবে কল্পনা করতে পারি নি ( হ্দয় দুখী ভাব নিয়ে কথাটা বললো )
নিরাঃ- কুওার বাচ্ছা তুই কোন সাহসে আমার সাথে কথা বলিস আমার সাথে তুই প্রতারণা করছিস । আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করছিস ।
হ্দয়ঃ- ওইইই সালি মুখ সামলে কথা বলবি । আমি তর সাথে প্রতারণা করলে তুইই কি করছিস হুম, তুইই ভালো নাকি , তোর বিয়ে হয়ে গেছে তারপরও অন্য ছেলের সাথে রং তামাশা করছিস, আসলে আমার দুজন যতই ভালো সাজার চেষ্টা করি আমরা কেউ ভালো নই.
আমরা দুজন যা করছি তার জন্য কর্মফল ভোগ করতে হবে.
তো প্যারা নাই চিল বেবি!!!
নিরাঃ- ওহ অসহ্য এখানেও এসে শান্তি নেই ।
ডিবি পুলিশ হদয়কে ধরেছে ( কয়েকদিন আগে )
– হাসপাতাল থেকে রিলিজ হলো অন্তী।
– আকাশটা আজ মেঘলা আবহাওয়াটা দারূণ কোথাও ঘুরতে গেলে মন্দ নয় কি বলো…
অন্তীঃ- হুম চলো
হাসপাতাল থেকে বের হতেই না হতেই ঝুম করে বৃষ্টি নামলো .
ওয়াও এর মধ্যে বৃষ্টি নামবে অন্তী কল্পনা করতে পারিনি
অন্তীঃ- ওই চলো কতদিন হলো বৃষ্টিতে ভিজি নাই । চলো আজকে মনভরে ভিজবো।
নিলয়ঃ- সে আর বাধা দিলো । সেও অন্তীর সাথে ভিজা শুরু করলো ।
টিপ টিপ বৃষ্টিতে কি যে ভালো লাগছে…
– হ্দয়ের কথা গুলো শিস দিয়ে ডাকছে..
অন্তীর আর নিলয়ের অনেক্ষণ খুনসুটি চলছে এই বৃষ্টির মাধ্যমে । নিলয় অন্তীর গালে হাতটা ছুয়ে দিতেই অন্তী কেপে উঠলো । নিলয়ের প্রতিটি ছোয়া তার ভালো লাগে । এক অজানা অনুভৃতি ডাক দেয় । মিশে যেতে ইচ্ছা করে নিলয়ের সাথে । নিরবতা ভেঙ্গে নিলয় বলে উঠলো,,
আচ্ছা অন্তী একটা কথা জিজ্ঞাসা করি…
অন্তীঃ- হুম বলো..
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিলয়ঃ- প্রেম করবে নাকি ভালোবাসবে ??
অন্তীঃ- না ভালোবাসবো..
নিলয়ঃ- কেনো দুটোর মধ্যে পার্থক্য কোথায়..?
অন্তীঃ- প্রেম দুতরফা হলে সম্ভব আর ভালোবাসা একতরফা হলো জীবিত থাকে ।
নিলয়ঃ- আর যদি ভালোবাসি না তোমায়?? 😴
অন্তীঃ- এজন্যই তো বললাম ভালোবাসবো. আর এটাতে শুধু আমার অধিকার থাকবে, যা তুমি কখনো আমার থেকে কেড়ে নিতে পারবে না ।❤
– তাই তুমি শুধু আমার অধিকার.
( সমাপ্ত)
–