তুমি_আমার_অধিকার পর্ব ১৩

#তুমি_আমার_অধিকার🍂
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্ট_13

নিলয় নিরার হাতে ডিভোর্স পেপার দিয়েছে । আরে সেটাতে নিলয়ের সাইন করা বাদ ছিলো । আজকে সেটা করে দিয়েছে

নিলয়ঃ- যাক অবশেষে তুমি যা চেয়েছো তাই হয়েছে । এখন আর আমাদের মধ্যে কেনো যোগাযোগ নেই বা কেনো সম্পর্ক. আজ থেকে তুমি তুমার পথ দেখবে আমি আমার পথ দেখবো । ফারদার আমার সামনে কখনো আসবে না । আমার ওপর কেনো অধিকার নেই আজ থেকে । এটুকু বলে নিলয় থেমে গেলো ।

নিরা ভাবতেও পারিনি নিলয় এমনটি করবে । সে নিলয়কে কিছু বলতে যাবে নিলয় তাকে থামিয়ে দিলো.

– দেখো এখন আর একটি কথাও বলবা না । তুমি আমার চোখের সামনে থেকে দূর হও.

– এইদিকে তো অন্তী সেই খুশি, সে ভাবতোও পারছে না । সমস্যাটা এতো তাড়াতাড়ি সলভ হয়ে যাবে । নিলয়ের ওপর প্রচন্ড অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে । অন্তী মুচকি মুচকি হাসছে নিরার চেহারার দিকে তাকিয়ে
আর নিরার দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে ইশারাতে বুজালে ফট এখন থেকে.. তর সময় শেষ ।

-নিরা চলে গেলো ।

অন্তী তো সেই খুশি । তার এখন মন চায়ছে নিলয়কে জড়িয়ে কিস করতে । তবে সে আর দেরি না করে নিলয়কে অচমকা জড়িয়ে ধরিয়ে কিস করা শুরু করলো । নিলয় তো অন্তীর এমন কাজ দেখি হতম্ভব..

এইইই কি করছো পাগল হয়ে গেলা নাকি থামো মানুষ দেখে কি বলবে??
– দেখলে দেখুক তাতে আমার কি?? আমি আমার হবু বরকে কিস দিয়েছি তাদের সমস্যা কি??
– ওহ ছাড়ো আমার শরম করছে ।
– ওরে আমার লজ্জাবতী কই দেখি দেখি মুখখানা..

অনেকক্ষণ চললো তাদের খুনসুটি তারপর বাসায় চলে আসলো তারা । নিলয় তার বাবা মাকে অন্তীর বিষয়টা জানালো তারা নিলয়ের এক কথায় মেনে নিলোও । অপর দিকে হারুন সাহেবও না করলো না মেয়ের দিকে তাকিয়ে । আর নিলয় ছেলে হিসাবে ভালো তাহলে আপওি করার তো প্রশ্ন আসে না ।

– সামনের 14 তারিখে বিয়ের ডেট ঠিক হলো

এর মধ্যে কার্ড ছাপিয়ে একখানা কার্ড নিরার বাসায় পাঠানো হলো..

নিরার বাবা নিরাকে ডেকে তার হাতে নিলয় আর অন্তীর বিয়ের কার্ডটা দিয়ে বললো আহ কি কপাল আমাদের কত ভালো ছেলে আর তুই নিজ হাতে সব নষ্ট করে দিলি । নিরা তার বাবার কথার জবাব না দিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো
কার্ডটা খুলে পড়লো । তার মনে নিলয়ের জন্য ভালোবাসা না ঘূর্ণা জন্মায়ছে । নিলয়ের বলা কথা আর অন্তীর হাসি তার মনে বিষাদ ঢেলে ঢালছে । মনে মনে সে তাদের বিরুদ্ধে যড়যন্ত করা শুরু করে দিলো আমি থাকতে তুমাদের কখনো এক হতে দিবো না । তুমাদের সুখের সংসার হওয়ার আগে আমি তা নরক করে দিবো । আমাকে এখনো পুরাপুরি চিনো নাই তোমরা ।

– নিরা তার ফোনটা বের করে সে ভার্সিটিতে পড়ার সময় তখনকার এক মাস্তান ছিলো তার সাথে নিরার রিলোশন ছিলো কিছুদিন । তাকে কল করলো..

হ্যালো রবিন.. কে?
– কে
আমি নিরা..
– কোন নিরা..??
নিরাঃ- ভুলে গেছো আরে তালতলার নিরার ।
রবিনঃ- ওহ চিনছি কেমন আছো অনেক দিন পর কি মনে করে??
নিরাঃ- আমার একটা কাজ করে দিতে পারবা..!!
রবিন:- কি কাজ!!
একজনকে তুলতে হবে শুধু…
রবিন:- দেখো আমি এইগুলো ছেড়ে দিয়েছি অনেক আগে এখন পারবো না!!
নিরাঃ- প্লিজ প্লিজ না করো না প্লিজ যতটাকা চাইবে দিবো সমস্যা নেই.
রবিন:- আচ্ছা ঠিক এতো বলতে হবে না, এই কাজে রিস্ক আছে আর টাকা নগদ 50 হাজার ক্যাশ দিতে হবে তারপর কাজ হয়ে গেলে 50 হাজার ওকে
নিরাঃ- হুম ওকে..
রবিন:- আচ্ছা এখন যাকে তুলতে হবে তার ফটো দেও আর কাজ হয়ে গেলে টাকা নিয়ে আমাদের গ্যারেজে চলে আসো আর যাকে তুলবো তাকে রাখবো কোথায়..
নিরাঃ- আগে তুলো কিছুদিনের জন্য গ্যারেজে রাখবা তারপর আমি ব্যবস্থা করে নিবো..
রবিন:- তবে দুইদিনের ভিতর পারবো না কিন্তু পরে ক্যচাল হয়ে যাবে । পুলিশের ঝামেলা টামেলা এখন আর ভাল্লাগে না তুমি বলছো দেখে কাজটা করে দিচ্ছি…
নিরাঃ- আচ্ছা বাবা আচ্ছা আগে কাজটা করো । আর কাজ হয়ে গেলো কল দিয়ো…

রবিন:- ওকে ঠিক আছে…

রবিন তাদের ছেলেদের কাজে লাগিয়ে দিলো তারা অন্তীকে দুই দিন ফলো করলো সে কোথায় যায় কি করে কার সাথে দেখা করে.. তবে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো তারা অন্তী শুধু একজনের সাথে দেখা করে সেটা হলো নিলয়..

রবিন তার গ্যারেজে বসে তার ছেলেদের বললো ডেট ফাইনাল, মেয়েটা যখন কালকে বিকাল বেলা বাসা ফিরবে তখনিই কিডন্যাপ করবো । অন্তী যে পুলিশের মেয়ে তারা জানে না । বা নিরা তাদেরকে বলি নি তারাও জানতে চেষ্টা করে নি । তাদের কাজ হলো কাজ করো টাকা নেও..

পরের দিন …

আজকে দিনটা ফ্যাকাশে লাগছে নিলয়ের, চোখের সামনে বার বার অন্তীর মুখটা সামনে ভেসে আসছে । তড়িঘড়ি নিলয় ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে গেলো । অন্তীর বাসার সামনে এসে অন্তীকে কল দিয়ে নিচে নামতে বললো । অন্তী নিলয়ের ফোন পেয়ে কিছুটা অবাক হয়ে গেলো দ্রুত নিচে নামলো অন্তী নিচে নামতেই নিলয় অন্তীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ছাড়ার কেনো নাম গন্ধ নেই । বেচারি অন্তী তো তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিলো না । নিলয় অন্তীকে ছেড়ে বললো দ্রুত রেডি হয়ে আসো‌..

– অন্তী বাসা চলে গেলো আয়নার সামনে দাড়িয়ে ঠোটে হালকা করে গোলাপি রংয়ের লিপিষ্টিক দিলো । চোখে কাজল, আপতত এইটুকু দিয়ে দ্রুত নিলয়ের কাছে আসলো.

– নিলয়ের আজকে অন্তীকে প্রাণ ভরে দেখছে মেয়েটাকে আজকে অন্যদিনের চেয়ে খুব মায়াবি লাগছে ইসস মন চায়ছে এখনি খেয়ে ফেলতে তার পাখিটাকে নিজেকে কোন রকমে কন্টোল করে একটা রিক্সা ডেকে ঘুরতে বেড়িয়ে গেলো তারা

– আজ অনেক জায়গায় ঘুরলো অন্তীর যত পছন্দের জায়গা আছে সবখানে নিলয় অন্তীকে নিয়ে গেলো । চেয়ারে বসে আছে সে

– সে বলার আগে দুই প্লেট ফুচকা নিয়ে এলো নিলয় আগে সে ফুচকা খেতো কিন্তু আজ নিলয়ও তার সাথে খাবে উফ তার যে কি যে ভালো লাগছে….

– তবে সে এইবার ফুচকা খেতে গিয়ে ঝালে একাকার এমন ঝাল আগে কখনো লাগে নি । নিলয় অন্তীর দিকে তাকিয়ে বললো কি ঝাল লাগছে ,

অন্তী:- হুম… নিলয় অন্তীকে অবাক করে দিয়ে নিলয়ের ঠোট অন্তীর ঠোটের সাথে মিলিয়ে দিলো । অন্তী চোখ বড় বড় করে চেয়ে থাকলো নিলয়ের দিকে ।

– নিলয়ের ঠোটে স্পর্শ পেয়ে সে কেপে উঠলো.. তবে ঝাল কিছুটা কমেছে এটা ভালো লেগেছে.. তার

সন্ধ্যা হতে চললো

এইবার অন্তীকে রিক্সায় উঠিয়ে দিলো নিলয়

অন্তী যাওয়ার আগে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো নিলয় মনে হচ্ছে‌ তার কলিজাকে কেউ তার কাছ থেকে নিয়ে যাবে..

এইদিকে রবিন ও তার ছেলেরা শিকারের জন্য অপেক্ষা করছে এতো দিন তাদের হাত থেকে কেনো শিকারী রেহাই পায় নাই ।

বস.. মেয়েটা এখনো আসছে না কেনো । আর কতক্ষণ থাকবো মশা তো আমাদের শরীরের ওপর অন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে..
রবিনঃ- অপেক্ষা কর আসবে আসবে..

রবিনের কথায় সত্যি হলো দূর থেকে অন্তী আসছে
‌ওইইই চললল শিকারি এসেছে গেছে চল শিকার করি..

অন্তী রিক্সা থেকে বাসার সামনে দাড়ালো রবিন তার দল অন্তীর দিকে এগুচ্ছে

– হঠাৎ তাদের সামনে দিয়ে গাড়ি গিয়ে অন্তীর সামনে দাড়ালো অন্তী কিছু বুজে উঠার আগে তার মুখে স্পে মেরে তাকে তুলে নিলো..

রবিন আর তার ছেলেরা তো পুরা অবাক, শিকারিকে তাদের সামনে থেকে নিয়ে গেলো, এটা কোনো অন্য কেনো গ্যাংয়ের কাজ হবে নাকী..

– কিছু না করে মামলা খেয়ে গেলো তারা.. রবিনের দল ব্যর্থ হয়ে গ্যারেজে ফিরে আসলো..

মোটামোটি রাত বারোটা অন্তী হুশ এলো রুমের বাহিরে বের হতেই সে পুরা হতবাক…??

( রহস্য যেনো বেড়ে চলছে, অন্তীকে রবিনরা কিডন্যাপ না করতে পারলে কে করলো সেটা আর কেনোই বা করলো তাদের উদ্দেশ্য কী ?? রহস্যের জট খুলবে নেক্সট পার্টে ততক্ষণ পযন্ত অপেক্ষা করুন ধন্যবাদ)

চলবে..

.