তুমি_আমার_অধিকার পর্ব ১১

#তুমি_আমার_অধিকার🍂
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ11

সব কিছু ঠিক আগের মতো চলতে থাকলো নিলয়ের । নিলয়ের বাবা মা এখন আর তাদের ছেলেকে বিয়ে করার চাপ দিচ্ছে না । নিলয়ের ভবিষৎতের সিধান্ত নিলয়ের ওপর ছেড়ে দিয়েছে । সব কিছু ভালোই চলছে । শুধু একজনের ছাড়া । সে হলো নিরা..

_ নিরা বাসা এসে ছন্নছাড়া হয়ে গেছে । একা থাকলে খুব কান্নাকাটি করে । নিজের ভুলের জন্য সে অনুতপ্ত । সে জেনে বুজে নিলয়কে খুব কষ্ট দিয়ে ফেলছে । এটা ভাবতেই তার কান্না আসে । নিলয় কি তাকে মেনে নিবে । সে তো তার অধিকারটুকু কেড়ে নিয়েছে । হদয়ের চরিএ সম্পর্ক কিছুই জানতো না আগে? তবে বার দুয়েক একজনের কাছ থেকে শুনছিলো হদয়ের ব্যাপারে তবে সে এগুলো পাওা দেই নি ।

_ নিরা এই অবস্থা দেখে, নিরার বাবা মা খুব চিন্তায় পড়ে গেছে ।

নিরার মাঃ- এই শুনছো আমি কি বলি মেয়েটা তো আমাদের চোখের সামনে শেষ হয়ে যাচ্ছে?? আমরা তো আমাদের মেয়েটাকে এইভাবে শেষ হতে দিতে পারি না তাই না । তুমি কিছু একটা করো??

নিরার বাবাঃ- হুম- আমিও তাই ভাবছি । যত যাইই করুক সে তো আমার মেয়ে । তার সুখের জন্য আমি সব কিছু করতে পারি । আমি কালকে সকালে নিলয়ের বাবা মার সাথে কথা বলবো ।

পরের দিন..

নিরার বাবা মা নিলয়দের বাসায় আসলো । কুশল বিনিময়ে শেষ করে তারা নিরার ব্যাপারে সব কিছু বললো আর যা হয়েছে । তা ভুলে মিটমাট করে নিতে বললো ।

নিলয়ের আম্মুঃ- ভাবী আপনারা যেভাবে বলছে এটা সস্তা না. আমরা ছেলেটা আমাদের ভুলের জন্য মৃত্যুর কাছ থেকে বেচে ফিরেছে আল্লাহর শুকরে । আর আপনারা কিভাবে পারেন আবার সেই প্রস্তাব নিয়ে আসতে ।

নিলয়ের আব্বুঃ- দেখুন আপনারা যাইই বলেন । এখন আমরা কিছু করতে পারবো না । আর আপনারা প্রথম থেকে আমাদের কাছ থেকে অনেক কিছু লুকিয়েছেন । দ্বিতীয় বার আপনাদের কিভাবে বিশ্বাস করতে পারি হুম…

নিলয়ের আম্মুঃ- এখন থেকে আমার ছেলের ভবিষৎতের সিধান্ত সে নিজে নিবে । আপনারা প্লিজ এখন আসুন ।

নিরার বাবা মা চলে আসলো নিলয়দের বাসায় থেকে,সব কিছু তাদের জন্য হয়েছে । তারা যদি ওই সময়ে সব কিছু না লুকিয়ে বলে দিতো তাহলে এতো কিছু হতো না ।

নিলয় অফিস শেষ করে, নদীর ধারে বসে আছে । এই দুই দিন অন্তী তার ফুফীর বাসায় গেছে অনেক জোড় করে অন্তীকে যখন নিতে পারছে না । তখন অগত্য নিলয় অন্তীকে বলে পাঠিয়েছে । একা বসে আছে ।

_ হঠৎা কোথার থেকে ধুম করে নিরা এসে পড়েছে…

পাগলের মতো সে বলা শুরু করছে..

নিলয় প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও । আমি আমার ভুলের জন্য অনুতপ্ত । আমি‌ এখন বুজতে পারছি । আমাকে একটিবার ক্ষমা করে দিয়ে তুমাকে ভালোবাসার সেই অধিকার টুকু দেও প্লিজ ।

_ নিলয় হতভম্ব হয়ে নিরার কথা গুলো শুনলো । তবে সে স্বাভাবিক বললো, দেখেন আপনার সাথে আমার যা সম্পর্ক ছিলো সব শেষ এখন । আর সম্পর্কটা আপনি শেষ করেছেন.

আপনি আমার থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছেন । বিয়ের সেই প্রথম থেকে আমাকে আপনি একটু ভালোবাসার অধিকার দেন নি । আর এখন কি হলো আপনার অধিকার দেওয়ার জন্য একবারে আমার দরজায় কড়া নাড়ছেন হুম…

_ নিলয় একটু বুজার চেষ্টা করো । আমি তুমাকে এখন ভালোবাসি ।

_ আপনি সময় নেন । আর আমাকে ভুলে যান । আমার মনে এখন অন্য কেউ আছে । আমাকে ভালোবাসার সব অধিকার সে অর্জন করে নিয়েছে । যেটা আপনি পেয়েও হারালেন একটা প্রবাদ আছে । ( যে পায় সে হারায় তার মূখর্তার জন্য । আর যে মূল্য বুজে সে বছরের পর বছর অপেক্ষা করে সেটা পাওয়ার জন্য) আপনি ও ঠিক তেমন!!

_ বাই দ্যা ওয়ে আমি এখন চলি । আর কখনো আমার সামনে আসার চেষ্টা করবেন না । এতে অন্তী মাইন্ড করবে!!

নিলয় চলে যাওয়াতে নিরা , খুব জোরে চিৎকার দিয়ে কান্না করতে শুরু করলো । আশে পাশের মানুষ তার তামাশা দেখছে । আর কেউ তো মিটিমিটি হাসছে । বাসায় চলে গেলো নিরা ।

এই কয়েক দিন নিরা নিলয়ের পিছনে সারাক্ষন আঠার মতো লেগে রয়েছে । সে বাসা থেকে বের হলে পিছু পিছু যেতো নিলয়ের অফিসও ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতো । তবুও কাজ হচ্ছে না ।

_ এইদিকে অন্তী অথৈর মাধ্যমে সব জানতে পারলো । সে আজই রাওয়ান দিলো । কারণ তার নিলয়কে সে কারো হাতে দিবে এই বোকামি সে আর করবে না । সে তার অধিকার কিভাবে আদায় করতে হয় তা শিখে গেছে ।

_ পরের‌ দিন আবারও নিরা নিলয়ের সামনে আসলো

কি ব্যাপার আপনাকে না করছি না । আপনি তারপরও এখানে আসলেন যে!!

নিরাঃ- কি করবো আমি তো তুমায় ভুলতে পারছি না । প্লিজ একটিবার আমায় মাফ করে দেও ।
নিলয়ঃ- সেটা সম্ভব না । যে একবার বিশ্বাস ভেঙ্গে ফেলে সে যতই বিশ্বাসের কথা বলুক তখন আর গ্রহণযোগ্য হয় না ।

এতোক্ষন দূর থেকে নিলয় আর নিরা কথা গুলো শুনছে এইবার সে নিরা আর নিলয়ের সামনে এসে পড়লো । অচমকা অন্তীর এই আগমন দেখে নিরা আর নিলয় হকচকিয়ে গেলো । অন্তী যে একা এসেছে তা না আবির অথৈ এসেছে ।

– তারা এইবার নিলয় কে ওই কালসাপের কাছে কিছুতে দিবে না ।

এইবার অন্তী রেগে মেগে বলা শুরু করলো এই মেয়ে তুমাকে না করছি নিলয়ের সামনে না আসতে । তারপর ও কেনো আসছো । হুহ….

নিরাঃ- তুমি কে?? আমাদের মাঝখানে কেনো আসলা । এটা আমার নিলয়ের পার্সোনাল বিষয় । আমাদের মাঝে ভুলবোজাবুজি হয়েছে তা আমরা মিটে নিবে তুমি নাক গলাতে এসে না আবার ।

এইবার অন্তী নিজেকে কোনো মতে কন্টোল করে নিলয়কে বললো তাকে বলবা এখান থেকে যেতে নয়তো আমার কিছু একটা করে ফেলবো ।

নিলয়ঃ- অন্তী তুমি এখন থেকে যাও ।
অন্তীঃ- কি বলছো তুমি । আমি যাবো কেনো সে যাবে ।
নিলয়ঃ- আমি তোমাকে যেতে বলছি । কথা কানে ঢুকে না যাও ।

_ নিলয় যখন অন্তীকে কথা গুলো বলছে নিরা মিটিমিটি হাসছে ।

আবির অথৈ তো সবাই অবাক নিলয়ের কাহিনি দেখে
আবিরঃ- কি করছিস তুই । মাথা ঠিক আছে তর..

নিলয়ের কথা শুনে অন্তী আর সেখানে থাকতে পারলো না । কান্না করতে সেখান থেকে চলে গেলো । আর ভাবতে থাকলো নিলয় কি তাকে ভালোবাসে না । আবার ওই‌ নিরার কাছে ফিরে যাবে?? এটা ভাবতেই কান্না করতে থাকলো ।

আবির আর অথৈ রাগ করে চলে গেলো সেখান থেকে ।

নিলয়ঃ-এখন আজকের পর থেকে আবার যদি আপনি আমার সামনে আসনে তাহলে খুব খারাপ হবে ।

নিরাঃ- আমি জানি তুমি এখনো আমায় ভালোবাসো।
নিলয়ঃ- জি না আমাদের ডিভোর্স পেপারে অতি শীঘ্রই পেয়ে যাবেন । বায়

নিরা অবাক হয়ে সেখানে দাড়িয়ে রইলো সে ভাবছে কি আর হলো কি?? সে তো ভাবছে নিলয় তাকে ভালোবাসে । অথচ তাকে মুক্ত করে দিবে সেই কথা ভাবছে নিলয় । এই‌কথা ভাবতেই নিরার চোখে অশ্রু ঝড়ছে ।

এইদিকে নিলয় খুব কষ্ট পাচ্ছে অন্তীর জন্য বেচারি মেয়েটা শুধু কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছে না, তার কাছ থেকে ।
না মেয়েটাকে এইবার একটু হাসিতে রাখতে হবে । অনেক কষ্ট পেয়ে গেছে সে । এইবার সুখের দিন আসছে ।

অন্তীর জন্য সারপ্রাইজ আছে সামনে!! আপতত তার অভিমান টা ভাঙ্গতে হবে । এই বলে নিলয় বাসার দিকে হাটা শুর করলো….

( আর কেমন হলো জানাবেন..)

– নিরা না অন্তী…

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here