Mr_Husband পর্ব ২১+২২

#Mr_Husband
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
#পর্ব_২১

—“রুশাকে কোথায় পেয়েছিস? কি করে পেয়েছিস? ও এতো বছর পরে ফিরেই বা এলো কেন?”

এক দমে বলল ইসী। আঁধার দীর্ঘ শ্বাস নিলো। তারপর ওদের সব খুলে বলল। সব শুনে সবার তব্দা লেগে যায়। কেউই বিশ্বাস করতে পরছে না আঁধারের কথা গুলো। কিছুক্ষণ সবাই চুপচাপ বসে থাকে। কারো মুখেই কথা নেই। খেয়াল করে আঁধারের হাত থেকে চুয়ে চুয়ে রক্ত পরছে। অয়ন বিস্ময়ের সাথে প্রশ্ন করে,

—“তোর হাতে কি হয়েছে? রক্ত বের হচ্ছে কেন?”

সবাই সচকিত হয়ে অয়নের দিকে তাকায়। আঁধার নিজের হাত আড়াল করে বলে,

—“কিছু না এমনিই ছোট একটা চোট।”

ইসী উঠে আঁধারের কাছে গিয়ে ওর হাত টেনে সামনে আনে। আঁধার আসার সময় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ক্ষত স্থানে আবারো আঘাত পায় যার কারণে এখনো রক্ত চুয়ে চুয়ে পরছে। ইসী আঁধারকে ওর হাত দেখিয়ে বলে,

—“এটা ছোট চোট? আঙ্গুল গুলো ফেটে কি বিশ্রি অবস্থা হয়েছে আর তুই বলছিস এটা ছোট একটা চোট!”

আপন ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলো,

—“কি এমন হয়েছিল যে এমন করেছিস?”

আঁধার বাহানা বানিয়ে বলল,

—“কারের ডিক্কি লাগাতে গিয়ে মাঝে হাথ পরে গেছে।”

ইসী হাত ভাজ করে বলে,

—“ওহ! রিয়েলি! বোকা পেয়েছিস আমাদের? আঁধার তোকে আমরা স্কুল লাইফ থেকে চিনি। তোর রাগ সম্পর্কে আমাদের সবার খুব ভালো করে জানা আছে। তাই কথা না ঘুরিয়ে সোজা মেইন পয়েন্টে আয়।”

আঁধার এবার রেগে বলল,

—“একবার বলেছিত কিছু হয় নি।”

অয়ন বলে,

—“থাক ও যখন বলতে চাচ্ছে না ওকে আর জোর করিস না। যদি বলার হতো তাহলে ও নিজেই বলতো।”

ইসী কিছু বলল না। ওর রুশার উপর খুব রাগ হচ্ছে। মেয়েটাকে কালবৈশাখি ঝড়ের মতো। যখনি আঁধারের জীবনে আসে তখনই সব উলোট পালট করে দিয়ে চলে যায়।

.
সন্ধ্যার দিকে আজানের পর আঁধার আরিফা রেজওয়ানকে ফোন করে। আরিফা রেজওয়ান তখন জায়নামাজে বসে নামাজ পরছিলেন। ফোনের রিংটোন বাজতে বাজতে কেটে যায়। আবারো রিংটোন বেজে ওঠে আবার কিছুক্ষণ পর কেটে যায়। এভাবে ফোন বাজতে থাকে আবার কেটে যেতে থাকে। আরিফা রেজওোআন কোনো মতে সালাম ফিরিয়ে কলটা রিসিভ করে। এভাবে এক নাগাড়ে কল দেওয়া দেখেই সে বুঝতে পেছে যে তার এক মাত্র গুনোধর ছেলেই ফোন দিয়েছে। আরিফা রেজওয়ান সালাম দিয়ে কথা শুরু করলো,

—“আসসালামুয়ালাইকুম বেটা! কোথায় আছো?”

আঁধার জোর পূর্বক সালামের উওর দিয়ে বলল,

—“ওয়ালাইকুম উস সালাম! মম মেডিক্যাল ক্যাম্পের জন্য আজ ঢাকার বাইরে যাতে হচ্ছে।”

—“হঠাৎ!”

—“হঠাৎ করেই সব ঠিক হয়েছে। আমরা আজ সকালেই জানতে পারি ঢাকার বাইরে ছোট্ট একটা গ্রামে হঠাৎ করেই সবাই অসুস্থ হয়ে পরছে। তাই আমরা আজকেই সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। সকল থেকেই কাজে ব্যস্ত ছিলাম তাই আগে জানাতে পারিনি।”

—“কত দিন লাগবে আসতে?”

—“এক সপ্তাহের মধ্যেই চলে আসবো।”

—“ঠিক আছে সাবধানে যেও।”

—“মম?”

—“বলো?”

—“সবার খেয়াল রেখো।”

আরিফা রেজওয়ান শব্দবিহীন হাসলো। তার পাগল ছেলে সবার বলতে যে কাকে বুঝিয়েছে সেটা সে ভালো করেই বুঝতে পেরেছে। আরিফা রেজওয়ান বললেন,

—“রাখবো!”

—“ঠিক আছে রাখছি।”

—“হুম!”

আঁধার ফোন কেটে দিলো। আররিফা রেজওয়ান ফোন রেখে মোনাজাত ধরে বললেন,

—“হে আল্লাহ! আপনি ওদের দুজনকে সুখে রাখুন। ওদের দুজেনের সম্পর্ক যেন এমন’ই ওটুট থাকে। ওদের মাঝে যেন তৃতীয় কেউ না ঢুকতে পারে। আমিন!”

.
এক সপ্তাহেরও বেশি হয়ে কিন্তু আঁধার এখনো ফেরেনি। এদিকে আঁধারকে এক নজর দেখার জন্য মুনের চোখ দুটো তৃষ্ণার্ত হয়ে আছে। মুনের মন চাইছে আঁধার যেখানেই থাক সেখানে গিয়ে মুন আঁধারকে জড়িয়ে ধরতে পারতো। তাহলে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরতো। এতো শক্ত করে ধরতো যে আঁধার কখনো ছাড়িয়ে যেতেই পারতো না। মুন আগের থেকে শুকিয়ে গেছে। কিছু খেতে ইচ্ছে করে না। বেশি সময় না খেয়েই থাকে। আরিফা রেজওয়ান বোকে বোকে খাওয়ায়। সরা দিন সবার সাথে হাসি,খেলা।দুষ্টুমিতে নিজেকে ব্যস্ত রেখে রাত হলে নিশাচর পাখির মতো আঁধারের ছবিটির দিকে তাকিয়ে থাকে। আঁধারের ছবি দেখে তৃষ্ণা মেটানোর বৃথা চেষ্টা করে মুন। কিন্তু যখন খুব বেশি মনে পরে তখন বালিশে মুখ চেপে কাঁদে। এমনও হয় অনেক সময় কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে যায়। তার মধ্যে রুশা তো আছেই ওর মনকে আরো বিষিয়ে দেওয়ার জন্য। আজ যেন মন অনেক বেশি আকুল হয়ে উঠেছে মুনের। কিছুই ভালো লাগছে না। কোনো কাজেই মন বসছে না। মুন জোড় করে কাজে মন লাগানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। মুন ব্যালকনিতে গিয়ে ইজি চেয়ারে বসে চোখ বন্ধ করে আঁধারের মুখটা মনে করার চেষ্টা করে। হঠাৎ মুন খুব পরিচিত একটা সুঘ্রাণ পায়। এই ঘ্রনটা আঁধার ওর চারপাশে থাকলেই পায়। মুনের আর বুঝতে দেরী হয়না। মুন উঠে দৌড়ে রুমে যায়। গিয়ে দেখে আঁধার অন্য দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছে। মুন দৌড়ে গিয়ে ঝাপিয়ে পরে। আঁধার পরে যেতে নেয় পরক্ষনেই নিজেকে সামলে নেয়। কিন্তু আঁধারের হাতের ফোনটার জীবন এই পর্যন্ত’ই ছিল মনে হয়। তাই তো মুন ওভাবে জড়িয়ে ধরাতে আঁধার প্রস্তুত না থাকায় আইফোনটা হাত থেকে ছুটে নিচে পরে যায়। আঁধার বিস্ফোরিত চোখে ফোনটার দিকে তাকিয়ে আছে। এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকার আইফোনটার কি অবস্থা। মুন শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে আঁধারকে। যেন ছাড়লেই কোথাও পালিয়ে যাবে। শব্দবিহীন অশ্রু ঝড়ছে চোখ দুটি থেকে। আঁধার রেগে মুনকে ছাড়িয়ে জোড়ে ধাক্কা দিলো। মুন টাল সামলাতে না পেরে সোফার সাথে বারি খায়। মুন কিছুই বুঝে উঠতে পারে না শুধু অশ্রুশিক্ত নয়নে আঁধারের দিকে তাকিয়ে থাকে।

#চলবে,#Mr_Husband
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
#পর্ব_২২

“ইউ ইডিয়েট কোনো কমনসেন্স নেই তোমার? এভাবে হুট করে কেউ জড়িয়ে ধরে? দেখো তোমার জন্য আমার এতো দামি ফোনটার কি অবস্থা হয়েছে। কোনো কাজ তো নেই তোমার সারাদিন ঘুরাঘুরি, লাফালাফি ছাড়া। বলেছিলাম শুধু ঠিক মতো পড়াশোনা করতে তাও তোমার দ্বারা হয় না। যত্তসব!”

কথাগুলো বলে আঁধার নিজের স্টাডি রুমের লক খুলে সেখানে গিয়ে দরজা লক করে দিলো। মুন কথাগুলো শুনে নিচে বসেই সোফায় মুখ গুজে কাঁদতে লাগলো। আঁধারের তিক্ত কথা গুলো শুনে খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে ওর। এদিকে আঁধার ভাঙা ফোনটার দিকে তাকিয়ে তারপর রেগে এক আছাড় দিলো। সাথে সাথে ফোনটা কয়েকটা টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরলো। তারপর আঁধার গ্লাভস ছাড়া খালি হাতেই ওর স্টাডি রুমে থাকা পাঞ্চিংব্যাগে একের পর এক পাঞ্চ করতে লাগলো। আঁধার নিজের সব রাগ এই পাঞ্চিং ব্যাগের উপর উঠাচ্ছে। যার ফলে ও নিজেই হার্ট হচ্ছে। আসলে আঁধার নিজেকে হার্ট করতেই এমন করছে। কারণ ও যে মুনের ছোট্ট নিষ্পাপ মনে কষ্ট দিয়েছে। কিন্তু কি করবে? ‘ও’ নিজেও যে নিরুপায়। একরাত কাছে এসে এখন শত রাত দূরে থাকতে হচ্ছে। ওর নিজের চোখ দুটোও যে মুনকে দেখার তৃষ্ণায় জলশূন্য হয়ে উঠে ছিল সে কথা কি করে বোঝাবে মুনকে? মুনকে এখন নিজের থেকে দূরে রাখতে হবে ওকে সেভ রাখতে হবে। এর জন্য মুনকে আঁধাররে কষ্ট দিতে হবে। আর মুনকে যতবার ও কষ্ট দিবে ততবার নিজেকেও কষ্ট দিবে। পাঞ্চ করতে করতে আঁধারের হাত দুটো রক্তাক্ত হয়ে গেছে তবুও আঁধার যেন থামতেই চাচ্ছে না। শরীর ঘামে ভিজে কালো শার্টটা শরীরের সাথে লেপটে গেছে। রিংটোনের আওয়াজে আঁধারের মনোযোগ ভঙ্গ হয়। আঁধারের মুখে এক রাশ বিরক্তি দেখা দেয়। বিরক্তিতে কপালে ভাজ পরে ভ্রু কুচকে আসে। আঁধার সেই ভঙ্গিতেই পকেট থেকে আরেকটা ফোন বের করে কানে ধরে। ওপাশ থেকে কেউ বলে ওঠে।

“হ্যালো আঁধার! তুই পৌঁছে গেছিস?”

আঁধার বক্সিং করতে করতে ছোট করে জবাব দেয়,

“হুম! তোদের খবর বলল? পেয়েছিস ওটাকে?”

“হ্যা! পালিয়ে যাবে কোথায়? ও সব শিকার করতে রাজি আছে।”

“ওহ! দ্যাটস্ গ্রেট! এতো জল্দি কাজ হয়ে গেল?”

“হ্যা! তুই আয় তাড়াতাড়ি।”

“ইয়াহ! অ্যাম কামিং।”

আঁধার ভাঙা ফোনের টুকরো গুলোর দিকে একবার তাকিয়ে তাচ্ছিল্য হাসলো। আঁধার তখন ইচ্ছে করেই ফোনটা হাত থেকে ফেলে দিয়ে ছিল। যাতে মুনকে হার্ট করতে পারে। আঁধার স্টাডি রুম থেকে বেরিয়ে দেখলো মুন নিচে বসে সোফায় মাথা দিয়ে গুটিসুটি মেরে ঠোঁট উল্টে ঘুমাচ্ছে। মুখের উপর কিছু চুল ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। চোখে জল শকিয়ে গেছে কিন্তু চোখের পাতা এখনো ভিজে। এটা যেন মুনের অভ্যাস কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে যাওয়া। আঁধার আস্তা আস্তে মুনের কাছে গিয়ে বসলো। তারপর আলতো হাতে মুনের মুখের উপর পরে থাকা চুল গুলো সরিয়ে কানে গুজে দিলো। তারপর সাবধানে পরম যত্নে মুনের কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে ছোট করে বলল,

“ভালোবাসি মনপাখি। খুব বেশি ভালোবাসি। আর তাই তোমাকে সেভ রাখতে চাই। সব বিপদ থেকে দূরে রাখতে চাই। আর এর জন্য তোমাকে আগে আমার থেকে দূরে রাখতে হবে। কিন্তু চিন্তা করো না এই দূরত্ব বেশি দিনের নয় শুধু কিছু মাসের, কিছু সপ্তাহের, কিছু দিনের। তারপর সব আবার আগের মতো হয়ে যাবে। ততোদিন একটু ধৈর্য্য ধরো।”

বলে মুনের গাল স্পর্শ করে চলে গেল।

.
আঁধার যাওয়ার আগে ভাবলো, একবার রুশার সাথে দেখা করে যাবে। আঁধার গেস্টরুমের দিকে পা বাড়ালো। দরজায় দুবার কড়া নাড়তেই রুশা দরজা খুললো। আঁধারকে দেখতেই রুশার চোখ দুটো চকচক করে উঠলো। রুশা আত্নহারা কন্ঠে বলল,

“আঁধার তুমি কখন এলে?”

আঁধার সাভাবিক স্বরেই বলল,

“এই তো কিছুক্ষণ আগে। কেমন আছো এখন? এখানে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো?”

“হুম ভালো আছি। অসুবিধার কিছু নেই কিন্তু তোমার বাড়ির লোকেদের হয়তো আমার জন্য খুব অসুবিধা হচ্ছে। কি করবো বলো? এখানে আমার কোনো রিলেটিভও নেই যে তাদের কাছে থাকবো। সবাই বিদেশে থাকে। তুমি চিন্তা করো না আমি খুব দ্রুত নিজের কাজ শেষ করে বিদেশে চলে যাবো।”

“তুমি বেশি বুঝছো। আমার বাড়ির লোকেদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তোমার যতদিন ইচ্ছে থাকতে পারো।”

“থ্যাঙ্ক ইউ! তুমি না থাকলে যে কি হতো!”

“থ্যাঙ্কস্ বলার কিছু নেই। শুধু একটা কথা মাথায় রাখবে, মুন যেন কখনো হার্ট না হয়।”

“মুন তো খুব মিষ্টি একটা মেয়ে ওকে আমি হার্ট কেনো করবো? ওর সাথে তো আমার কোনো শত্রুতাও নেই।”

“বাদ দেও। এমনিই বলেছি। আমার কাজ আছে আসছি।”

বলে আঁধার চলে গেল।

রুশা মনে মনে বলল,

“বউের জন্য দরদ তো ভালোই আছে দেখছি। কিন্তু একটা জিনিস কি জানো আঁধার? রুশাকে যেই জিনিস না করা হয় সেই জিনিসের প্রতি রুশার আগ্রহ বেশি। তাই সরি তোমার কথা রাখতে পারলাম না।”

.
কালো হুডি গায়ে মুখে মাক্স আর সানগ্লাস পরে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে AR। আর তার সামনে সবাই অপরাধীর মতো নতজানু হয়ে দাড়িয়ে আছে। একজন বলল,

“সরি বস! আমরা বুঝতে পারিনি লোকটা পালিয়ে যাবে। কিন্তু বস আরেকটা সুযোগ দিন আমাদের। দেখবেন ২৪ঘন্টার মধ্যে আমরা ব্যাটাকে খুজে বের করে আপনার সামনে এনে হাজির করবো।”

AR হাতের ইশারায় যেতে বলল। মানে সে ওদের আরেকটা সুযোগ দিয়েছে। লোকগুলো যেন জান ফিরে পেয়েছে।

রুশা সাদা টপস পরে কফি শপের সামনে দাঁড়িয়ে অনেক্ষণ ধরে কারো জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু সে আসছে না। বারবার হাতঘড়ি দেখছে আর বিরবির করছে,

“এখনো আসছে না কেনো? কখন আসবে?”

রুশার এখন খুব বিরক্ত লাগছে। রোদ্রের তাপ প্রখর। ওর ফর্সা তক লালচে হয়ে উঠেছে। রুশা ফোন বের করে লোকটাকে ফোন করতে লাগলো। কয়েকবার রিং হওয়ার পর ধরলো। রুশা রুদ্র কন্ঠে বলল,

“কোথায় আপনি এখনো আসছেন না কেন? আর কতক্ষণ ওয়েট করতে হবে? দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে তো শহীদ হয়ে যাবো।”

ওপাশ থেকে শোনা গেল,

“এতো কাছেই আছি। আসছি!”

“হুম! দ্রুত।”

বলেই রুশা ফোন কেটে দিলো। রুশা অন্য দিকে ফিরে ছিলো। একটা লোক ওর দিকেই এগিয়ে আসছিল। লোকটা যখন রশার একদম কাছে চলে আসে। তখনই একটা বড় গাড়ি আসে তার ভিঝতর থেকে কিছু মুখুশ ধারী লোক বেরিয়ে আসে। তারপর লোকটার মুখ রুমাল দিয়ে চেপে ধরে লোকটাকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায় আর রুশা জানতেও পারে না।রুশা বিরক্ত হয়ে কিছুক্ষণ পর আবারো সেই লোকটার কাছে ফোন দেয় কিন্তু লোকটার ফোনের সুইসুইসড অফ বলছে বারবার। রশা আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ফুসতে ফুসতে চলে যায়।

.
রুশা মুনের রুমে নক করে কিছুক্ষণ পর মুন দরজা খুলে। রুশার মুনকে কেমন যেন লাগলো। তাই ও জিজ্ঞেস করলো,

“কি করছিলে?”

“কিছু না। ঘুমিয়ে ছিলাম। কেনো কোনো দরকার?”

“হুম! আমার না খুব মাথা ব্যথা করছে এককাপ কফি করে দিবে প্লিজ?”

“নিচে কেউ নেই?”

“না। তাই তো তোমাকে বললাম।”

“ঠিক আছে। আপনি নিজের রুমে যান। আমি নিয়ে আসছি।”

রুশা চলে গেল মুন কিচেনে গিয়ে কড়া করে রুশার জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে গেল। রুশা রুমে শুয়ে শুয়ে ফোন টিপছিলো। মুন আসতেই ফোন রেখে উঠে বসে। মুন কফির মগটা রুশার দিকে এগিয়ে দেয় রুশু মগটা নিতে গিয়ে মুনের হাতে গরম কফি ফেলে দেয়। মুন চিৎকার করে উঠে। রুশা উঠে দাঁড়িয়ে মুনের হাত ধরে বলে,

“ওহ! সরি! সরি! আমি বুঝতে পারি নি তোমার হাতে পরে যাবে। তুমি ঠিক আছো তো?”

মুন ঠোঁট কামড়ে ব্যথা সহ্য করে হাসি মুখে বলল,

“আমি ঠিক আছি। কিছু হয় নি। আপনি শুয়ে রেস্ট নিন। আমি আপনার জন্য আরেকটা কফি পাঠাচ্ছি।”

“না থাক এখন আর লাগবে না।”

মুন কিছু বলল না। কোনো মতে ওখান থেকে বেরিয়ে রুমে চলে গেল। তারপর ওয়াশরুমে গিয়ে হাতে পানি দিলো কিছুক্ষণ। খুব জ্বালা করছে। তারপর ফাস্ট আইড বক্স থেকে একটা ক্রিম বের করে হাতে লাগিয়ে নিলো। আঁধারের কথা খুব মনে পরছে ওর। কেন জানি একটু কষ্ট হলেই সবার আগে আঁধারকে মনে পরে। আগে কবির খানকে মনে পরতো।

.
AR এখনো সেই আগের ভঙ্গিতেই বসে আছে চেয়ারে। ঘার কাত করে গান ঘোরাচ্ছে।অঘ আর তার সামনে সেই লোককে হাত আর মুখ বেধে হাটু গেড়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। একটা মুখুশধারী লোক ওই লোকটার মুখ থেকে কাপড় খুলে দিলো। লোকটা নিজের প্রাণ ভিক্ষা চাইছে,

“আমাকে মাফ করে দিন স্যার আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি আপানাকে সব বলছি সব। শুধু আমাকে মারবেন না প্লিজ।”

AR এবার মুখ খুলল,

“এতোই যখন প্রাণের মায়া তখন পালালি কেন?”

“ভয়, ভয় পেয়ে গেছিলাম।”

“শুরু কর”

লোকটা অবুঝ চোখে তাকায়। একজন বলে ওঠে,

“সব সত্যি বলতে বলছে।”

লোকটা ঢোক গিলে বলল,

“আপনার আসল চেহারা মাফিয়া ওয়ার্ডে আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি। তাই আপনার বিপক্ষীক গ্যাং আপনাকে ধরার জন্য আপনার খোজে USA থেকে একটা মেয়েকে পাঠিয়েছে। মেয়েটি আপনাকে হন্ন হয়ে খোজছে। আর আমি এখান থেকে পালিয়ে ওই মেয়েটার সাথেই দেখা করতে গেছিলাম। মেয়েটির নাম……”

AR পৈশাচিক হাসিতে মেতে ওঠে। ভয়ংকর সেই হাসির ধ্বনি। AR এর উল্লাসিত কন্ঠে বলল,

“ওয়াও! গুড! ভেরি গুড! আমার সাথে গেইম! এখন আমি ডাবল গেইম খেলবো। আর সেটা আমার স্টাইলে।”

কেউ একজন বলল,

“রোদ ও তোর সাথে গেইম খেলছে আর তুই এভাবেই ছেড়ে দিবি ওকে?”

“নো ওয়ে মাই ফ্রেন্ড! AR রোদ কখনো প্রতারকে ছেড়ে দেয় না সে যে’ই হোক না কেন। আর এই ওয়ার্ডে সব দোষের একটাই শাস্তি মৃত্যু।”

#চলবে,

[আমার সবার কাছে একটাই অনুরোধ সম্পূর্ণ গল্পটা পরে তারপর খারাপ ভালো বিচার করবেন। কোনো কারণ ছাড়া আঁধার রুশাকে নিজের বাড়িতে রাখেনি। সব যদি আগে থেকেই বলে দি তাহলে গল্পের মজাটা কি থাকবে? সবাইকে বলছি একটু ধৈর্য্য ধরে পরুন ধীরে ধীরে সব ক্লিয়ার হয়ে যাবে।]

[আগের পর্বে ভুলে বলে ছিলাম মুন আর আঁধারের বিয়ের ছয়মাস চলছে। ওটা আটমাস হবে। ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।]

5 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here