বাবা” অসম্ভব তুমি কি বলছো, আমি পারবো না। তুমি কি ভুলে গেছ উনি আমার শিক্ষক হন ।
বাবা:না মা আমি ভুলি নি আমি জানি তাহসিন তোর স্যার হয় । দেখ মা বোঝার চেষ্টা কর তুই ওকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যা ।
আমি : দেখ বাবা আমি ওনাকে বিয়ে করতে পারব না। আমার কি বিয়ের বয়স হয়েছে তুমি বল। [কান্না করতে করতে]
মা : দেখ কোন কথা না। আমারা যা বলব তোকে তাই করতে হবে। তুই তাহসিন কে বিয়ে করবি মানে করবি ব্যাস আর কোন কথা না। চল দেরি হয়ে গেল কাজী সাহেব চলে এসেছে।
আমি:মা”
[আমি মাহিরা জাবিন মিহু। আমি নবম শ্রেণির ছাত্রী। আজ স্কুল থেকে ফেরার পর শুনি আমার বিয়ে ঠিক তাও আবার আমার সবচেয়ে রাগী স্যারের সাথে। স্যারের নাম তাহসিন তাজ। তিনি অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পরে। তিনি আমার কোচিং এর শিক্ষক। তিনি কোচিংএর সবচেয়ে রাগী শিক্ষক। দুই বছর ধরে তিনি কোচিং এ ক্লাস নেন। কিন্তু তিনি কোন দিন ও আমার সাথে ভালো ভাবে কথা বলে নি। তাকে আমি প্রচুর পরিমাণে ভয় পায়। তার ক্লাসে আমার প্রায়ই টইলেটে যেতে হয়। ভেবেই আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। আমি কীভাবে তাকে স্বামী হিসেবে মানব। আমার মাথায় অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।]
||
কাজী : মা বল কবুল।
শাদিয়া :ওই মিহু কী এত ভাবছিস ।ভয় পাস না ।[আমার ফুপাত বোন]
আমি :আপু আমার অনেক ভয় লাগছে। আমি টইলেটে যাবা। [আপুর কানে কানে]
শাদিয়া :আরে ভয়ের কিছু নেই ।আমরা আছি তো ।
বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে চাপা কষ্ট নিয়ে কবুল বলে দিলাম। এই তিনটি শব্দ যে এতো ভারী তা না বললে কখনো বুঝতে পারতাম না। কবুল বলার সাথে সাথে আমার চোখে দিয়ে অবাধ্য অশ্রু পরতে লাগল। অনেক কষ্ট কান্না আটকে রাখতে চেয়েও পারলাম না।
||এদিকে,
তাহসিন :আঙ্কেল, বাবা আমি আপনাদেরকে কিছু কথা বলতে চাই।
আমার বাবা:বল তাহসিন আমারা শুনেছি।
স্যারের বাবা :যা বলবে ভেবে চিন্তে বলবে। তোমার পাগলাম আর মানতে পারব না।
তাহসিন :বাবা আমি চাই মিহু এ বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করবে। যদি আমাদের বিয়ের কথা যানা যানি হয় তাহলে মিহুর সমস্যা হতে পারে।
মিহুর বাবা: ঠিকই বলছ বাবা। আমি চাই আমার মেয়ে আমার কাছেই থাকুক।আর মিহু তো এখনো সাবালিকা হয় নি।
স্যারের বাবা :কিন্তু”
শাদিয়া : হ্যাঁ আঙ্কেল মিহুর এখানেই থাক।যদি এ বিয়ের ব্যাপারে ওর বন্ধুরা বা বাইরের কেউ জানে তাহলে ওর অনেক সমস্যায় পড়তে হবে।
স্যারের বাবা : ঠিক আছে। আপনারা যা ভালো বুঝেন।
|||
আমি বিছানার বসে সেই কখন থেকে কান্না করছি কিন্তু কেউ দেখার মতো নেই কেউ। আমার কথা কেউ শুনল না। আমি তো বাবার সব কথা শুনি কিন্তু বাবা আমাকে বুঝল না। আমি কি দোষ করেছিলাম। আমি তো কখনো বিয়ের কথা ভাবি নি তাহলে আমার সাথে কেন এরকম হলো। আমি কোচিংনের সবাইকে কি বলব। আমি স্যারের সাথে থাকলে ভয়ে মরে যাব। রিমি ম্যাম আর স্যার তো একে অপরকে ভালোবাসে। ওহ, আমি পাগল হয়ে যাব। [কান্না করতে করতে]
||
শাদিয়া : দেখ তাহসিন তুই বিয়ে টা এখন না করলেও পারতি ।রিমি যদি জানতে পারে তোর বিয়ে হয়ে গিয়েছে তাহলে যে কী হবে ।[রিমি, শাদিয়া, তাহসিন এক সাথে পড়ে]
তাহসিন :দেখ রিমির কথা একদম আমার কাছে বলবিনা ।আমি শুধু ওকে বন্ধু ভেবেছি অন্য কিছু নয়। [রেগে গিয়ে]
শাদিয়া :তাহলে কি তুই আমার পিচ্চি বোনের প্রেমে পরেছিস।হুম?
তাহসিন : দেখ ভেদা পেচাল পারিস না। আমি বলতে পারব না।বেশি কথা না বলে আমাকে মিহুর রুমে নিয়ে চল ।
শাদিয়া : রাগিস না।চল।
তাহসিন যখন মিহুর রুমে যাওয়া জন্যে পা বাড়ায় তখন ওর ফোন বেজে ওঠে।
তাহসিন বাবা: তাহসিন তুই কোথায়?
তাহসিন :বাবা আমি শাদিয়ার সাথে বাইরে আছি। কি হয়েছে।
তাহসিনের বাবা:আমার আর্জেন্ট কাজ পড়ে গেছে তোকে আমার সাথে যেতে হবে।
তাহসিন :হ্যাঁ আসছি।
||
তাহসিন ঘরে আসার পর।
তাহসিন :চল বাবা।
আমার বাবা: আপনারা চলে যাবেন। থাকলে ভালো হতো।
তাহসিন :আঙ্কেল দরকারী কাজ পরে গেছে। আমারা আসি। মিহুর খেয়াল রাখবেন। কোন দরকার হলে ফোন আমাকে দেবেন।
আমার বাবা : তাহলে আসি।
|||
শাদিয়া :মিহু দারজা খোল ।তুই কিছু খাস নি। দারজা খুল। আমার কিন্তু ভয় করছে। মামা মামি তোমরা কোথায়। মিহু “”
আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। চারপাশে অন্ধকার, তার মানে রাত হয়ে গেছে। কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, তা মনে নেই। বিয়ের কথা মনে করতে বুকের ভেতর ধক করে উঠল। বাবা মা ডাকছে কিন্তু আমি চুপ করে আছি।
বাবা :মা দরজা খুল। আমাকে ভুল বুঝিস না। দেখ তাহসিনরা চলে গেছে। তোকে ওদের সাথে যেতে হবে না।
আমি:বাবা কথা শুনে আমি তো অনেক খুশি হলাম। যাক আমাকে ওই রাগী স্যারের সাথে যেতে হলো না। কিন্তু আমি খাব না দরজাও খুলব না। তাই আমি সবাইকে বললাম তোমরা চলে যাও। [কান্না করতে করতে]
মিহুর মা :শাদিয়া কিছু একটা কর ।মিহু না খেলে আমাদের যে গলা দিয়ে খাবার নামবে না।
শাদিয়া :দেখি কি করা যায়।
||
কিছুখন আমি কারো কোন আওয়াজ পেলাম না। কিন্তু হঠাৎ দারজা খুলে গেল। খুলার পর আমি যা দেখলাম তা দেখার জন্য আমি একদম প্রস্তুত ছিলাম না। আমি অবাক সাথে গালে ব্যথা অনুভব করলাম ।আপ,,,,,,,,,
চলবে কি?
#গল্পের নাম:#পবিত্রতার ছোঁয়া
#পর্ব :1
#লেখিকা :#জাবিন মাছুরা [ছদ্মনাম]
[পরের পর্ব আপনাদের উপর নির্ভর করবে]