পবিত্রতার_ছোঁয়া পর্ব ৭

গল্প :#_পবিত্রতার_ ছোঁয়া
পর্ব :#7
লেখিকা :#জাবিন _মাছুরা [ছদ্মনাম]

আমি দেখলাম রিমি আপু আর একটা ছেলে হাত ধরে হাঁটছে। কি করে সম্ভব। রিমি আপু তো তাহসিন স্যারকে ভালোবাসে। এর আগে স্যারকে সবার সামনে প্রপোজ ও করছে। পলকের মধ্যেই তারা গাড়িতে উঠে পড়ল।

আমিও বেশি কিছু না ভেবেই গাড়িতে ওঠে পড়লাম।

||

তাহসিন ওর বাবার সাথে দেখা করতে অফিসে এসেছে,,

তাহসিন :বাবা কি বলবে?

তামিম সাহেব :তুমি কি বুঝতে পারছো না আমি কি বলবো?

তাহসিন : হুম।

তামিম সাহেব :দেখ, তুমি কি বিয়ে টা ছেলে খেলা মনে করো।

তাহসিন:নিশ্চুপ,,,,

তামিম সাহেব : তুমি কি ভেবেছো, তোমার সব সিদ্ধান্ত আমি মেনে নেব। নেভার, কখনো ই না।

তাহসিন :নিশ্চুপ.,,

তামিম সাহেব : তুমি কি ভেবেছো তোমার যখন – তখন নেওয়া সিদ্ধান্ত গুলোতে মিহুর কতো টা এফেক্ট হতে পারে।

তাহসিন : বাবা, আমি কখনও চাই না মিহুর উপর কোন এফেক্ট পরূক। এর জন্যে আমার যা যা করতে হবে আমি তাই করবো।

তামিম সাহেব : মিহুকে ভালোবাসিস?

তাহসিন আর কোন কথা না বলে অফিস থেকে বের হয়ে এলো।

তামিম সাহেব ভাবতে লাগলেন এখন যা করার তাকেই করতে হবে।
||
স্কুলে আসার পর থেকে আমার মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরছে, ওই ছেলেরটার সাথে রিমি আপুর কিসের সম্পর্ক।

তমা:এই মিহু কী এতো ভাবছিস?

আমি : কিছু না।

তমা :সেদিন থেকে দেখছি তুই কেমন যেন হয়ে গেছিস। কি হয়েছে?

আমি :কিছুই হয় নি।

তমা:তাহসিন স্যারের পরীক্ষা কেমন হয়েছে?

আমি :ভালো হয় নি রে,,,

তমা:আমারো। আমার তো ভয় হচ্ছে। আমি কোচিং যায না যেদিন খাতা দেবে।

আরে আমার তো না যেয়ে কোন উপায় ও নেই। স্যার তো ঠিক বাসায় চলে আসবে। [মনে মনে]

তমা :ওই তুই কি এতো ভাবিস?

আমি :কথা বলিস না। স্যার দেখে ফেললে,ক্লাসের বাইরে বের করে দেবে।
||
রিনা বেগম আজ তার ভাইয়ের বাড়িতে এসেছে,,

রিনা:রিমি,,,

রিমি: তোকে একটা খুশির খবর দিব।

রিনা: কী হয়েছে ফুপি?

রিনা:তাহসিন তোকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গিয়েছে।

রিমি: তুমি কী সত্যি বলছ?

রিনা: হ্যাঁ সত্যি। আমাদের প্ল্যান কাজ করছে।

রিমি : ফুপি, তুমি আমাকে অনেক খুশির খবর দিলে। এজন্যই তোমাকে অনেক ভালোবাসি। [ ফুপিকে চুমু দিয়ে]

রিনা :আরে পাগলী কি করছিস,,,,

রিমি : আমি যে কাজ দুই বছরে করতে পারিনি, তা তুমি একদিনেই করে দিলে। [উত্তেজিত হয়ে]

রিনা: তোর আর তাহসিনের বিয়ে হলে সবচেয়ে ভালো লাগবে আমার। সবচেয়ে বড় কথা হলো তুই আর আমি একসাথে থাকব।

রিমি:হ্যাঁ ফুপি।

রিনা: এখন থেকে আর ফুপি বলে ডাকবি না।

রিমি:ফুপিকে ফুপি বলে ডাকবো না তো কী বলে ডাকব?

রিনা : শাশুড়ি মা। গাধী মেয়ে।

রিমি:ওহহ।[জরে জরে হেসে]

||

আমি স্কুল থেকে বাসাই ফিরে খাওয়া শেষ করে বিছানায় শুয়ে আছি। আমার আজকে খুব খুশি লাগছে এটা ভেবে যে রিমি আপু আর স্যারের মাঝে কোন সম্পর্ক নেই।
এমন সময়ে হঠাৎ বৃষ্টি চলে এলো। আমার মনে এক আজানা ভালো লাগা কাজ করল। মন চাইছে ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজি। আমি আর দেরি না করে ছাদে চলে এলাম। মাকে বলিনি। যদি জানতে পারে আমি বৃষ্টি ভেজছি, তাহলে কখনো এই সন্ধ্যা বেলায়েতে বৃষ্টিতে ভিজতে দেবে না।

ছাদে যেয়ে আমি আমার লম্বা চুলগুলো ছেড়ে দিলাম। সন্ধ্যা বেলার বৃষ্টিতে ভেজার মজা টাই আলাদা। ওড়না আর হাঁটু পর্যন্ত চুলগুলো বাতাসে ওড়তে লাগলো।
আমি ভিজছি আর গান গাইছি। আমার সাদা ফ্রগ আর ওড়না যেন গায়ের সাথে লেগে গিয়েছে, কিন্তু সেদিকে আমার কোন খেয়াল নেই। হঠাৎ আমি কারো আওয়াজ শুনতে পেয়ে রোবটের মতোদাড়িয়ে পড়লাম।হাত-পা কাঁপতে শুরু করলো।

মিহু,,
চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here