পবিত্রতার_ছোঁয়া পর্ব ৮

#গল্প:#পবিএতার_ছোঁয়া
#পর্ব :#8
#লেখিকা:#জাবিন_মাছুরা[ছদ্মনাম]

||
ছাদে যেয়ে আমি আমার লম্বা চুলগুলো ছেড়ে দিলাম। সন্ধ্যা বেলার বৃষ্টিতে ভেজার মজা টাই আলাদা। ওড়না আর হাঁটু পর্যন্ত চুলগুলো বাতাসে ওড়তে লাগলো।
আমি ভিজছি আর গান গাইছি। আমার সাদা ফ্রগ আর ওড়না যেন গায়ের সাথে লেগে গিয়েছে, কিন্তু সেদিকে আমার কোন খেয়াল নেই। হঠাৎ আমি কারো আওয়াজ পেয়ে রোবটের মতো দাড়িয়ে পড়লাম।

||
আম্মু :মিহু,, এই মেয়ে তুই বৃষ্টিতে ভিজছিস কেনো?[রেগে]

আমি: কোন কথা না বলে ছাদের মধ্যেই দাড়িয়ে আছি। আম্মু ছাতা নিয়ে আমার কাছে এলো আর বলল,,

আম্মু : এই মিহু,, তোকে আমি এক থাপ্পড় দিয়ে,,,,

আমি : সরি আম্মু। [ছোট বাচ্চাদের মতো করে]

আম্মু : তোর কি মনে আছে, একটু পড় তাহসিন আসবে।

আমি : জানি তো,,,

আম্মু :যদি জ্বর আসে তাহলে তোর খবর আছে। তুই দুপুরে না একবার গোসল করলি। এই মেয়ে ঘরে চল। সামনে তোর পরীক্ষা। [রেগে]

আমি : আর একটু ভিজি। মাএই তো এলাম।

আম্মু : দাড়া, মার না খেলে তুই সোজা হবি না, তাই তো,,,,

আমি আম্মুকে কিছু বলতে না দিয়ে দৌড়ে ঘরে চলে এলাম। ঘরে এসেই আমি এক চিৎকার দিলাম। ঘর সাউন্ড ফ্রুভ হাওড়া আম্মু শুনতে পাই নি।

আমি : স্যার,,,,,

তাহসিন ফোনে স্ক্রোল করছিল। এমন সময় হঠাৎ মিহুর চিৎকার শুনে মিহুর দিকে অবাক নয়নে তাকালো।
মিহুর গা থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। হাঁটু পর্যন্ত চুলগুলো গায়ের সাথে লেগে গিয়েছে। ফর্সা ফুখ যেন ঠান্ডার কারনে হলুদ হয়ে গিয়েছে। ওড়না ঠিক মতো নেই। শরীরের প্রতিটি ভাজ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, যার জন্যে মিহুকে বৃষ্টিপরির মতো লাগছে। আজকে তাহসিন প্রথম মিহুকে ইস্কাফ ছারা দেখছে। তাহসিন যানতোই না যে, মিহুর এতো বড় চুল আছে।

আমি আর কিছু না বলেই বাথরুমে ঢুকে পড়লাম। দরজা বন্ধ করে দিয়ে দেয়ালে সাথে ঠেসে দাড়ালাম। আমার শরীর অতিরিক্ত কাপছে। নিজের প্রতি অনেক লজ্জা লাগছে। ইসস, স্যারের সামনে কিভাবে যাব।আইনাই নিজেকে দেখে আমি আবাক হয়ে গেলাম। ছি: কি বিসরি দেখাচ্ছে।

তাহসিন মিহুকে এমন অবস্থায় দেখে গভীর ঘোরে চলে গিয়েছিল। দরজা বন্ধের আওয়াজ পেয়ে ঘোর কেটে গেল।
তাহসিন : ছি: আমি এসব কী ভাবছি। মিহু শুধু আমার ছাত্রী। আমার নিজের উপর ঘৃণা হচ্ছে। সরি বৃষ্টিপাখি, আমাকে খমা করে দিও। [মনে মনে]

তাহসিন কিছু একটা ভেবে রেগে গেল। আর সাথে সাথে মিহুর রুম থেকে বের হয়ে গেল।

||
আমি জামা কাপড় চেন্জ করে বের হয়ে এলাম। আমার ভাগ্য ভালো ছিল যে আমি আগে থেকেই বাথরুমে জামা কাপড় রেখেছিলাম। বের হয়ে মাথায় সুন্দর করে ঘোমটা দিলাম। চোখ বন্ধ করে সালাম দিলাম।
কিন্তু কোন উত্তর না পেয়ে চোখ খুলাম। দেখলাম স্যার রুমে নেই।হয়তো স্যার চলে গিয়েছে। তাই আমি মাথা থেকে ওড়না খুলে খাটের উপর রাখলাম।নিশ্চিন্তে টাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে লাগলাম।
||
কিছুখন পর, স্যার রুমে চলে এলো। আমি সাথে সাথে লাফ দিয়ে উঠলাম। বিছানা থেকে তাড়াতাড়ি ওড়না নিয়ে মাথায় ইস্কাফ এর মতো করে পড়লাম।

আমি :স্যার,, [কাঁপতে কাঁপতে সালাম দিলাম]

স্যার কোন কথা না বলে চেয়ারে বসে পড়ল। আমিও পাশের চেয়ারে বসে বই বের করতে লাগলাম।

স্যার : মিহু,,

স্যার অতি শান্ত শুরে আমাকে ডাকলো। আমার তো তার ডাক শুনে হাত পা আরো কাঁপতে লাগলো। ঝড় আসার পূর্বে যে পরিবেশ ঠান্ডা থাকে,তা আর বুঝতে বাকি রইলো না।

আমি :জী,,,,

স্যার : বৃষ্টিতে ভিজেছো কেন? [শান্ত শুরে]

আমি : নিশ্চুপ,,,,

স্যার : এ্যানসার মি,,, [রেগে]

আমি:এ,, মনেই,,

স্যার : এমনেই মানে, যদি জ্বর আসে??

আমি : আসবে,, না তো,,

স্যার :ছাদে গিয়েছিলে কেন?

আমি : ছাদে ভিজতে ভালো লাগে তাই,,,

স্যার : বিয়াদব মেয়ে। ভিজতে যাওয়া না তো পাশের ছাদের ছেলেদের দেখতে যাও,, তাই তো,,,[ রেগে]

আমার এখন কান্না চলে আসছে প্রায়। আমি তো ছেলে দেখতে যাইনি। আমি তো ভিজতে গিয়েছিলাম। স্যার কী বলছে এসব? [মনে মনে]

স্যার : চুপ করে আছো কেন?

আমি : ভুল হয়ে গিয়েছে। আর যাব না। [ কাঁপতে কাঁপতে]

স্যার : এইবারের মতো মাফ করে দিলাম। যদি এরপর কোনদিন ছাদে যেয়ে ভিজতে দেখি, তাহলে তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। বুঝতে পেরেছো পিচ্চি।

আমি: মাথা নিচু করে রয়েছি,স্যারের রাগ কমানোর জন্য ধন্যবাদ আল্লাহ। [ মনে মনে]

এমন সময় আম্মু এক গ্লাস দুধ নিয়ে এলো বকতে বকতে।

আম্মু : এই মেয়ে ধর,,

আমি : আম্মু আমি খাব না। আমার বমি পাচ্ছে।

আম্মু : তাহসিন দেখ এই মেয়ে কথা শুনে না।

স্যার : মিহু খাও,,,

আমি : ইমহু,,, না।

আম্মু : না খেলে কিন্তু,,,

স্যার : আন্টি ওকে কিছু বলতে হবে না। ও খাবে আপনি রেখে যান।

আমি : না,, আম্মু যেও না আমি খাবো তো।

স্যার : এইতো ভালো মেয়ে,,,

আমি খাওয়া শেষ করলাম। এখন তো বমি বমি পাচ্ছে। স্যার পড়াছে আর এমন সময় কেউ মিহু রানী বলে আমার ঘরে চলে এলো।

মিহু রানী,,,,
রাফি ভাইয়া,,,,
(#চলবে)

[আপনাদের কী গল্পটা আর ভালো লাগে না?]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here