#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_২
.
.
🦋
” করতে তো তোদের হবে-ই , নাহলে তোরা যে কেউ বাঁচবি না ৷ সে তোদের কাউকে ছাড়বে না৷ কিন্তু প্রাণো কোথায় গেল? কাল যদি ওর বিয়েটা না হয় তাহলে সব প্লান ভেস্তে যাবে৷ আর আমি বেঁচে থাকতে তা কখনো হতে দিবো না৷ কাউকে তার ভালোবাসার মানুষকে পেতে দিবো না৷ আমি যেভাবে কষ্ট পেয়েছি ঠিক সেভাবে তোমাদের কষ্ট দিবো৷ কেউ ছাড় পাবে না কেউ না৷” কথা গুলো বলে মেয়েটি রাগে ফুসতে ফুসতে বেড়িয়ে গেল৷
__________
” হ্যালো দাভাই সব ঠিক আছে তো?”
” এখানে সব ঠিক আছে বনু তুই ঠিক আছিস তো? ”
” বিন্দাস আছি দাভাই, দাভাই বিয়েটা যেন প্রিয়ার সাথে হয় তুমি দেখো৷ ”
” ঠিক আছে তবে তুই কেন বিয়েটা করতে চাইছিস না সেটা কিন্তু এখনো আমার কাছে ধোয়াশা বনু৷”
” দাভাই তোমাকে যতোটুকু বলেছি এখন আপাদতো ততোটুকু জেনে রাখো বাকি টা আমি ফিরে এসে তোমাদের জানাবো”
” ঠিক আছে , আচ্ছা শোন তোদের জন্য রিসোর্ট আগেই বুকিং দিয়ে রেখেছি৷ আষাঢ় মাস তাই রিসোর্ট প্রায় খালি বুকিং দিতে কষ্ট হয়নি আর তার চেয়ে বড় কথা আমার বন্ধুর রিসোর্ট তোদের কোন অসুবিধা হবে না৷ ”
” তুমি এড্রেস টা আমাকে পাঠিয়ে দিও দাভাই আর আমি ফোন বন্ধ করে রাখবো , যদি কোন প্রয়োজন হয় তাহলে ঐশী সাফা বা স্মিতাকে কল করলে আমাকে পাবে৷”
” আচ্ছা নিজের খেয়াল রাখিস আর সাবধানে থাকিস৷”
” তুমি ও সাবধানে থেকো দাভাই আর প্রিয়া কে দেখে রেখো রাখছি ৷”
প্রাণো দ্রুত কল কেটে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে হোটেলের দিকে ফিরে যায়৷ অন্যদিকে দুটো চোখ এতোক্ষন প্রাণোকে দেখতে ব্যস্ত ছিলো ৷ প্রাণোর চিন্তিত মুখ কথা বলার ভঙ্গি তার দীর্ঘশ্বাস সব কিছুতেই যেন প্রচন্ড আকর্ষণ অনুভব করতে সে ব্যক্তি৷ নিজের অনুভূতি গুলো যেন ধিরে ধিরে আরো ধাড়ালো হচ্ছে ৷ প্রনয়ের অনুভূতি গুলো দমিয়ে রাখা এক প্রকার তার জন্য যেন অসম্ভব হয়ে উঠছে৷
আকাশে আবারও কৃষ্ণ কালো মেঘের ঘনঘটা গুমোট মেঘ থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির ঝড়তে লাগলো ৷ বৃষ্টির ছোঁয়া থেকে বাঁচার জন্য বাধ্য হয়ে হোটেলের ভিতর ঢুকতে হলো স্মরণকে, স্মরণ ভিতরে ঢুকে অবাকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাড়িয়ে গেল৷ কারন তার বন্ধুগন শুধু তাদের মধ্যে গল্পে সীমিত নেই বরং পাশে টেবিলে বসা মেয়ে গুলোর সাথে রিতিমতো গল্প জুড়ে দিয়েছে৷ পাশে প্রাণোর দিকে চোখ পড়তে স্মরণ খেয়াল করলো প্রাণোর চোখ মুখে এক রাশ বিরক্তি; তার যেন এই সবে মহা বিরক্তি ৷ স্মরণ তার চোখে জিরো পাওয়ারের চশমাটা চোখে পড়ে নিলয়ের পাশের চেয়ারে বসে পড়ে৷ আকাশ নিলয় সাগর এক ঝলক স্মরণকে দেখে স্মরণের মুড বোঝার চেষ্টা করছে৷ স্মরণ কখন কোন মুডে থাকে এটা বুঝতে এই তিন মূর্তি মানের ভিষন হেপা পোহাতে হয়৷
সাফা কোল্ড ড্রিংক খেতে খেতে স্মরণের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে, ” হাই আই এম সাফা”
স্মরণ সাফার দিকে তাকিয়ে হাত না মিলিয়ে গম্ভির মুখে জবাব দেয়, ” হ্যালো আই এম স্মরণ ৷ ”
স্মরণের এমন জবাব হাত না মিলানোতে সাফা খানিকটা অপমানিত বোধ করলো৷ প্রাণো সাফার মুখ দেখে ভিষন হাসি পাচ্ছে ৷ মেয়েটা যে যেখানে সেখানে ছেলেদের সাথে ফ্লাটিং করার চেষ্টা করে সেটা প্রাণো আর বাকি বান্ধবীরা খুব ভালো করে জানে তাই তারাও কিছু বলছে না, কিন্ত আজ যে সাফা অপমানিত বোধ করলো এটা তিন বান্ধবী খুব ভালো করে বুঝতে পারলো৷ কেউ কোন কথা বলছে না প্রাণো বুঝতে পারলো না কি হলো! হঠাৎ করে ছেলে গুলো চুপ মেরে গেল তার কারনটা বুঝতে পারলো না ৷ কিছুক্ষণের মধ্যে হেলপার এসে সবাই কে তাড়া দেয় বাস কিছুক্ষণের মধ্যে ছেড়ে দিবে৷ প্রাণো উঠে দ্রুত ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে কিছু মিষ্টি আর পানির বোতল কিনে নেয়৷
বাস চলছে তার নিজের গতিতে , বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে ৷ ড্রাইভার খুব সাবধানে গাড়ি চালাচ্ছে৷ রাস্তা বেশ ফাঁকা হলেও বৃষ্টির কারণে সব কিছু খানিকটা অস্পষ্ট হয়ে আসছে৷ কারো চোখে ঘুম নেই ৷ আকাশ নিলয় দু’জনের সোজাসুজি সাফা আর ঐশী বসেছে সাগরের পাশে স্মিতা ৷ সাগর আর স্মিতার বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে দু’জনে গল্প করায় ব্যস্ত এদিকে নিলয় আকাশ দু’জনে ভিষণ বিরক্ত হচ্ছে এমন জার্নিতে, সাফা আর ঐশীর ও সেম অবস্তা , নিলয় হেলপার কে বলে বাসের সব লাইট জ্বালতে বলে ৷ হেলপার নিলয়ের কথা মতো সব লাইট জ্বালিয়ে দেয় ৷ সাদা লাল নীল আলোয় পুরো বাস আলোকিত হয়ে আছে৷ নিলয় বাসে বসে থাকা প্রত্যেকটা মানুষকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে বলে উঠলো , ” গাইজ এমন বোরিং জার্নি নিশ্চয় কারোর ভালো লাগছে না! এম আই রাইট?”
সাথে সাথে কিছু ছেলে মেয়ে বলে উঠলো ” ইয়েস ”
” তাহলে একটা গেম খেলা যাক ৷ যেহেতু বাহিরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে সেহেতু কয়েকটা গান হয়ে যাক ৷ ”
” গ্রেট আপনি তাহলে শুরু করুন মিস্টার নিলয়” (সাফা)
” লেডিস ফাস্ট তো আপনাদের দিয়ে প্রথমে শুরু করা যাক কি বলেন?”(আকাশ)
” সাফা প্রাণোর গলা ভিষণ ভালো ওকে দিয়ে প্রথমে শুরু করা যাক কি বলিস”(ঐশী)
” একদম ওকে বল” (সাফা)
প্রাণো প্রকৃতির বৃষ্টি স্নান দেখতে ব্যস্ত এদিকে এতো কথা এতো হইচই হচ্ছে এদিকে তার বিন্দুমাত্র কোন খেয়াল নেই ৷ সাফা তার সিট ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে প্রাণোর কাছে এসে দাড়ায়, স্মরণ এতোক্ষণ প্রাণোকে দেখায় ব্যস্ত ছিলো নীল আলোয় প্রাণোর মায়াবী ক্লান্তি মাখা মুখটা যেন আরো আকর্ষণীয় হয়ে আছে৷ বার বার চোখের পলক ফেলা , ঠোঁট নাড়িয়ে নিজের মধ্যে বলা কথা সব কিছুই স্মরণ মন দিয়ে দেখছে ৷ পাশে দাড়িয়ে সাফা চেঁচিয়ে প্রাণোর নাম ধরে ডাকতে স্মরণ প্রাণো দু’জনে চমকে ওঠে ৷
” কি হয়েছে সাফা এভাবে গাধার মতো চেঁচাচ্ছিস কেন?”
” কিহ! আমি গাধা?”
” স্যরি সাফা ভুল বলেছি ওটা গাধা নয় গাধী হবে ”
” তোকে তো আমি!”
” হুসস কি বলার জন্য এসেছিস সেটা বলে কেটে পড়”
” গান শুরু কর”
” গান!”
” জ্বি ম্যাডাম গান ৷ আপনি একটা গান গেয়ে আমাদের প্লিজ উদ্ধার করুন ৷ দেখুন সবাই আপনার গান শোনার জন্য অপেক্ষা করছে ৷”
” স্যরি সাফু সোনা আমি কোন গান টান গাইছি না ৷ আর সেকেন্ডবার আমায় গান গাইতে বললে তোকে আমি উস্টা মেরে বাস থেকে ফেলে দিবো” দাঁত কটমট করে সাফার দিকে তাকিয়ে বলল..
সাফা আর কিছু বলার সাহস পেল না কারন সে ভালো করে জানে প্রাণো রেগে আছে ৷ প্রাণো যখন ভিষণ রেগে যায় তখন তাকে সাফু বলে ডাকে, সাফা দ্রুত প্রাণোর সামনে থেকে কেটে পড়ে৷
সাফা ঐশী স্মিতা সাগর আকাশ নিলয় বাধ্য হয়ে নিজেরাই গান গাইতে লাগলো সাথে সাথে বাসের বাকিরাও গলা মেলাতে লাগলো৷
স্মরণ বোবার মতো চুপ করে ফোন টিপে যাচ্ছে ৷ প্রাণো একনজর স্মরণের দিকে তাকিয়ে আবার জানালার দিকে মুখ করে তাকিয়ে থাকে৷ মন টা যে তার ভালো নেই এক রাশ বিষন্নতা রাগ অভিমান তাকে ঘিরে আছে৷ চোখের সামনে সাজিতের সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মুহূর্ত ভেষে উঠছে তার সাথে সাথে প্রিয়ার সেই আকুতি ৷ প্রাণোর চোখের কোনে পানি চিক চিক করছে ৷ প্রাণো এক রাশ হতাশা নিয়ে তার সিটে মাথা এলিয়ে দিয়ে চোখের পাতা জোড়া বন্ধ করে ফেলে৷
সকাল নয়টায় বাস বান্দরবান বাস স্টান্ডে এসে থামে ৷ জানালার কাঁচ ভেদ করে সূর্যের আলো প্রাণোর শরীরে স্পর্শ করতে প্রাণো প্রচুর গরম অনুভব করে ঘুম ভেঙে যায়৷ চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে তার পাশে বসা অনাকাক্ষিত মানুষটার বক্ষঃস্থলে সে , স্মরণ নামক অচেনা লোকটি তাকে আস্টে পিষ্টে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে৷ প্রাণো এক মুহূর্তের জন্য স্তম্ভিত হয়ে গেল৷ স্মরণের শক্ত বাধন থেকে নিজেকে মুক্ত করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লো প্রাণো ৷ প্রাণোর নড়াচড়ায় স্মরণের ঘুম ভেঙে যায় ৷ চোখ মেলে প্রাণোকে তার বাধন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অস্থির হতে দেখে স্মরণ তার হাতের বাধন আলগা করে দিতে প্রাণো সরে যায়৷ জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকে ৷ স্মরণ হুট করে উঠে দাড়াতে প্রাণো চমকে যায় ৷ স্মরণের দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল, ” আমি আপনার বুকে কি করে গেলার মিস্টার স্মরণ ? আর আপনি বা আমাকে এভাবে আস্টে পিস্টে জড়িয়ে ধরেছিলেন কেন?”
” সেটা তো আপনি বলবেন মিস প্রাণো৷ আপনি আমার বুকে কি করে এলেন? আমি তো ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তাহলে!”
” একদম কথা ঘুড়ানোর চেষ্টা করবেন না মিস্টার , এই জন্য কাল আপনি সিট চেন্জ করতে চান নি যাতে আমার সুযোগ নিতে পারেন ছিঃ সব পুরুষ মানুষ এক সুযোগ বাজ মেয়ে দেখলে সুযোগ নিতে চায় কখনো মিথ্যে ভালোবাসার কথায় ভুলিয়ে আবার কখনো অচেনা মানুষ হয়ে”
প্রাণোর কথা গুলো স্মরণের শরীরে কাটার মতো বিধলো৷ স্মরণের মুখটা রাগে লাল বর্ণ ধারন করলো৷ প্রাণো কথা গুলো বলে স্মরণের মুখের দিকে তাকাতে চমকে উঠলো৷ রাগে যে স্মরণের মুখটা লাল হয়ে আছে সেটা বুঝতে প্রাণোর আর বাকি নেই৷ স্মরণ প্রাণোকে কিছু বলতে যাবে তার পূর্বে ঐশী সাফা স্মিতা সাগর নিলয় আকাশ ঘুম থেকে উঠে যে যার ব্যাগ পত্র গুছাতে লাগলো ৷ স্মরণ কোন কথা না বলতে পেরে রেগে তার ব্যাগ নিয়ে বাস থেকে নেমে যায়৷ প্রাণো তার বান্ধবীদের নিয়ে বাস থেকে নামে৷
” দোস্ত ফ্রেস হতে হবে কাছে পিঠে কোন রেস্টুরেন্ট আছে?” (স্মিতা)
” হুম আছে একটু সামনে হেটে যেতে হবে ” (প্রাণো)
” তুই দু’বার এখানে এসেছিলি তাই না প্রাণো?”(সাফা)
” হুম এসেছিলাম , এখন চল দ্রুত খিদে পেয়েছে ” (প্রাণো)
কিছুদুর হেটে একটা বড় রেস্টুরেন্ট দেখতে পেলো সবাই , প্রাণো স্মিতা ঐশী সাফা রেস্টুরেন্টের ভিতরে প্রবেশ করে প্রাণো স্মরণ তার বন্ধুদের দেখতে পেল৷ স্মরণ প্রাণোকে দেখে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিলো৷ আকাশ নিলয় সাগর প্রাণোদের দেখে তাদের সাথে বসে নাস্তা করার জন্য অনুরোধ জানালে স্মিতা সাফা ঐশী রাজি হয়ে যায় শুধু মাত্র প্রাণো ছাড়া; একে একে প্রাণো স্মিতা ঐশী সাফা ফ্রেস হয়ে এসে স্মরণদের সাথে বসে নাস্তা করে নেয়৷ নাস্তা করে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে প্রাণোর বুদ্ধিতে সবাই একটা গ্রুপ হয়ে চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে৷ সবাই দ্রুত বসার জন্য গাড়িতে উঠে পড়ে৷ প্রাণো স্মিতার পাশে উঠে বসতে স্মরণ গিয়ে প্রাণোর পাশে বসে ৷ প্রাণো তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে স্মরণের দিকে তাকায় স্মরণ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে৷
” আপনারা কোন রিসোর্টে উঠবেন” (সাফা)
” নীলাচল নিলাম্ভরী রিসোর্ট” (আকাশ)
” ওয়াট! আমরাও তো ওই একি রিসোর্টে দুই নম্বর কটেজে” (স্মিতা)
” আমাদের তিন নম্বর কটেজ” (সাগর)
” বেশ ভালোই হলো এক সাথে ঘুড়াঘুড়ি করা যাবে কি বলেন?” (নিলয়)
” হুম”( ঐশী”
” বাই দ্যা ওয়ে তোমরা মে বি আমাদের ছোট হবে তাই তুমি করে বলছি ডোন্ট মাইন্ড”(আকাশ)
” না না ঠিক আছে বলুন” (সাফা)
চান্দের গাড়িতে বসে নিলয় সাফা আকাশ স্মিতা সাগর ঐশী গল্প জুরে দেয় শুধু মাত্র প্রাণো আর স্মরণকে বাদ দিয়ে, দু’জনে চুপ হয়ে আছে কারো মুখে কোন কথা নেই৷
সকাল সারে এগারোটায় সবাই রিসোর্টে এসে পৌছায় ৷ প্রাণোদের দুটো রুমে দুজন দুজন করে ঢুকে গেল ৷ স্মিতা আর প্রাণো এক রুমে আর ঐশী আর সাফা অন্য রুমে ৷ প্রাণো রুমে এসে চেন্জ করে ফোন চার্জে লাগিয়ে শুয়ে পড়ে ৷ ক্লান্ত থাকায় প্রাণো ঘুমিয়ে পড়ে ৷ দুপুরে দরজায় কড়াঘাতে প্রাণোর ঘুম ভেঙে যায় ৷ কোন ভাবে ওড়না টা গায়ে জড়িয়ে দরজা খুলে সামনে দাড়িয়ে থাকা মানুষ টাকে দেখে প্রাণোর যেন পুরো শরীরে রাগ টা যেন হির হির করে বেড়ে গেল৷ প্রাণো রেগে কিছু বলতে যাবে তার আগে পেছন থেকে স্মিতা আল্লাদি গলায় বলে উঠলো , ” স্মরণ ভাইয়া আপনি এখনে?”
” হুম তোমাদের দুই বান্ধবী তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে রিসোর্টের রেস্টুরেন্টে ”
” ওহ ওকে ভাইয়া আপনি পাঁচ মিনিট দাড়ান আমরা দশ মিনিটে আসছি”
স্মরণ গম্ভির মুখে মাথা নেড়ে সায় জানায়৷
প্রাণো বিরক্তি নিয়ে লাগেজ থেকে ড্রেস বের করে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়৷ দশ মিনিটের শাওয়ার নিয়ে বের হয় সাথে সাথে স্মিতা শাওয়ার নিতে ঢুকে যায়৷ প্রাণো তার ভিজে চুল গুলো কোন ভাবে মুছে নীল সাদা সালোয়ার কামিজের সাথে ম্যাচিং করে হাতে নীল কাঁচের কানে ছোট ঝুমকো কপালে নীল টিপ ঠোটে হালকা লিপস্টিক লাগিয়ে নিলো৷ প্রাণো রেডি হয়ে ফোন চার্জার থেকে খুলে ফ্লাইট মুডে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে দেখে স্মরণ এখনো দাড়িয়ে আছে ৷
কাঁচের চুড়ির রুন ঝুন শব্দ শুনে পেছনে তাকিয়ে প্রাণোকে দেখে স্মরণের দু’চোখ আটকে যায়৷ কাজল কালো নীল চোখের মনি যুক্ত মেয়েটিকে দেখে এক মুহূর্তের জন্য স্মরণের যেন হৃৎস্পন্দন যেন থমকে গেল৷ নিশ্বাস নিতে ভুলে গেল স্মরণ ৷ প্রাণো স্মরণের অবস্তা দেখে ব্রু কুচকে জানতে চায় সমস্যা কি? স্মরণ চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে মাথা নেড়ে জানায় যে কোন সমস্যা নেই৷ দু’মিনিট পর স্মিতা বেরিয়ে আসতে প্রাণো দরজা লক করে স্মরণের পিছু পিছু যেতে লাগলো৷
________
বিয়ে বাড়িতে আত্মিয় স্বজন গিজ গিজ করছে ৷ মিসেস নিশিতা বেগম প্রচন্ড ভয়ে আছে এটা ভেবে কেউ যদি জানতে পারে প্রাণো বিয়ের কোনে পালিয়েছে তাহলে পুরো এলাকা রটিয়ে ফেলবে৷ অনেক আত্মিয় স্বজন প্রাণোর সাথে দেখা করতে চেয়েছিলো কিন্তু প্রিয়া এটা সেটা বলে কাটিয়ে দেয়৷ অন্যদিকে পুরো রুম অন্ধকার করে বসে আছে সাজিত ৷ গতকাল থেকে সাজিত রুম থেকে বের হচ্ছে না আর না কারোর সাথে কথা বলছে ৷ সাজিতের জমজ বোন মিহু এসে কয়েকবার দরজায় নক করে ডেকেছে তবুও কোন আওয়াজ করেনি সাজিত ৷ একসময় মিহু দরজার ওপাশ থেকে ফিস ফিস করে কিছু বলতে সাজিত তখনি দরজা খুলে দেয়৷ মিহু রুমে ঢুকে লাইট অন করে পুরো রুমের দিকে তাকাতে আতঁকে ওঠে৷ সাদা ফ্লোরে রক্তের ছোপ ছোপ দাঁগ ৷ রক্ত শুকিয়ে আছে ৷ মিহু ভয়ে ভয়ে তার ভাইয়ের দিকে তাকাতে সাজিত বলে ওঠে,
.
.
.
#চলবে……….
[ জনগন আপনাদের কি গল্প ভালো লাগছে না? রিয়েক্ট এতো কম কেন? ১০০+ রিয়েক্ট লাইক সিরিয়াসলি?😤 এই পর্বে ৩০০ রিয়েক্ট না উঠলে আমি আর গল্প লিখবো না৷ কাদের জন্য লিখবো! যারা কোন রিয়েক্ট করে না তাদের জন্য ? তার থেকে ভালো গল্প লেখাই অফ করে দিবো ৷😠]
[ভুল-ট্রুটি গুলো সুন্দর ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]