#অবুজ_পাখি
#নাম_না_জানা_পথিক
পাট:৬
সকালে রিফাত ঘুম থেকে উঠে দেখে পরি নেই। আজ নিজে থেকেই উঠে চলে গেছে। রিফাতের কিছুটা খারাপ লাগলো প্রতিদিন সকালে উঠে পরির মুখটা দেখা রিফাতের একটা অভ্যাস হয়ে গেছিল। রিফাত আর কিছুক্ষন শুয়ে থেকে ফ্রেশ হতে চলে গেল। ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে রিফাত সোজা ছাদে চলে গেল। কোলাহলমুক্ত সকালের এই পরিবেশটা দেখতে খুব ভালো লাগে। হালকা পাখির কিচিরমিচিরের শব্দ কানে ভেসে আসতেছে। এক অদ্ভুত মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। রিফাত এই পরিবেশটা উপভোগ করে নিচে চলে এলো। রিফাত আজ থেকে অফিসে যাবে। রিফাত গ্রামে ঘুরতে যাওয়ার জন্য ছুটি নিয়েছিল। ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় আজ থেকে রিফাতকে অফিসে যেতে হবে।
রিফাত: আম্মু নাস্তা দেও
আম্মু: আজ তাড়াতাড়ি নাস্তা করতে আসলি যে তোর অফিস বন্ধ না।
রিফাত: আজ থেকে যেতে হবে।
আম্মু: বস পরিকে বলতাছি নাস্তা দিতে।
রিফাত: অবশেষে পরির দেখা পাবো মনে মনে বললো।
ভাবি: রিফাত এই নেও তোমার নাস্তা।
রিফাত: ভাবি তুমি পরি কোথায়?
ভাবি: ও আম্মুর সাথে কাজ করতেছে।
রিফাত: ওহহ আজ পরির সাথে দেখা হলো না। পরি মনে হয় কাল রাতের জন্য আমার জন্য রাগ করে আছে। রিফাত নাস্তা করে অফিসের জন্য বেরিয়ে গেলো।
সকাল ১১ টা রিফাতের বাসায় আলক তার পরিবার নিয়ে আসে পরিকে দেখতে হটাৎ করে আলক তার পরিবারকে নিয়ে আসায় সবাই কিছুটা অবাক হয়ে যায়।
আম্মু: আলক তুমি এই সময় এখানে রিফাত তো বাসায় নেই অফিসে গেছে।
আলক: আন্টি রিফাত আপনাদের কিছু বলে নাই।
আম্মু: না তো।
আলক: আসলে আন্টি আমার পরিকে খুব ভালো লেগেছে আমি ওকে বিয়ে করতে চাই।
আম্মু: পরির বিয়ে হলে ভালোই হবে রিফাতের লক্ষন ভালো লাগতেছে তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে দেওটা জরুরি। তোমরা ভিতরে আসো।
আম্মু আলকের আব্বু-আম্মুর সাথে কথা বলতে লাগলো আর ঐ দিকে ভাবি আর রুকু পরিকে সাজাতে ব্যস্ত। পরি একটা মূতির মতো হয়ে গেছে কাল রাতের পর থেকে। তার ভিতর কোনো অনুভূতি নেই।
আলকের মা: ভাবি এখন মেয়েকে নিয়ে আসেন। ছেলেতো আমার কাল থেকে শুধু আপনাদের মেয়ের কথা বলতেছে।
আম্মু: আসলে আপনাদের হয়তো বলা হয়নি পরি আমাদের মেয়ে না। ওর বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই।
আলকের মা: আমরা জানি সেসব কিন্তু এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। ছেলের খুশিতেই আমাদের খুশি।
ভাবি আর পরি রুকুকে নিয়ে আসতেছে সিঁড়ির দিকে সবাই আআ করে তাকিয়ে আছে। পরি একটা লাল শাড়ি পড়েছে। পরিকে অসম্ভব সুন্দর লাগতেছে। আলক তো চোখই ফেরাতে পারতেছেনা। পরিকে লাল শাড়িতে একটা গোলাপের কলি থেকে মাত্র ফুটন্ত ফুলের মতো লাগতেছে।
আলকের মা: আমার ছেলে কি আর সাধে বিয়ে পাগল হয়েছে আপনাদের মেয়ে দেখতে অসাধারন। আমরা বিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সেরে ফেলতে চাই আপনাদের যদি আপত্তি না থাকে।
সবাই আরও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে লাগলো। আলক ভাবলো রিফাতকে এই খবরটা জানানো দরকার। আলক সবার থেকে লুকিয়ে রিফাতকে ফোন দিল।
রিফাত: হ্যালো বল
আলোক: থ্যাংকস দোস্ত
রিফাত: থ্যাংকস কেনো?
আলোক: আব্বু-আম্মু পরিকে খুব পচ্ছন্দ করছে। তারা আশিবাদের তারিক ঠিক করতেছে।
রিফাত: তোরা কি আমাদের বাসায়?
আলোক: হ্যাঁ
রিফাত: ওহ আচ্ছা রাখি কাজ করতেছে পরে কথা বলি।
আলোক: ওকে।
রিফাতের আলোকের কল কেটে রুকুকে ফোন দিল।
রিফাত: রুকু তুই এখন কোথায়?
রুকু: আমি ড্রয়িং রুমে পরির সাথে বসে আছি। ভাইয়া তুমি জানো পরির আশিবাদের ডেট ঠিক করতেছে।
রিফাত: তুই একটু পরিকে তোর রুমে নিয়ে গিয়ে আমাকে ফোনদে
রুকু: এখন তো সবাই আছে কিভাবে যাবো পরে দেই।
রিফাত: আমি ফোন রাখলাম ৩ মিনিটের মধ্যে পরির ফোন চাই বলে রিফাত কল কেটে দিল।
রুকু: এই কুত্তাটা খালি আমারে জ্বালায়। পিটাইতে পারলে শান্তি পাইতাম মনে মনে বকতে লাগলো। আম্মু পরি বলে ওয়াসরুমে যাবে। আমি ওকে নিয়ে যাই।
আম্মু: যা
পরি: আপু কোন রুমে নিয়ে যাবা? কিছুটা অবাক হয়ে বললো।
রুকু: ওয়াসরুমে
পরি: এটা আবার কী?
রুকু: ভাইয়া তোমারে সব বুঝিয়ে দিবে এখন আসো তো। পরিকে তার রুমে নিয়ে রিফাতকে ফোন দিল।
রিফাত: ফোনটা পরিকে দে আর তুই বাহিরে দাঁড়িয়ে থাক দেখ কেউ আসে কিনা
রুকু: আমাকে কি তোর দারোয়ান মনে হয়।
রিফাত: হো,, এখন কথা কম বইলা তাড়তাড়ি যা বলি কর।
রুকু: পরি এই নেও ফোন। ভাইয়া তোমার সাথে কথা বলবে।
পরি: নমষ্কার।
রিফাত: পরি এসব কি হচ্ছে ভুলে যেও না তোমার আর আমার বিয়ে হয়েছে।
পরি: আমি কি না করেছি আপনি এসে আপনার বাড়ির সবাইকে বলেন তাহলেই তো হয়।
রিফাত: তার মানে তুমি ইসলাম গ্রহন করবা।
পরি: আমি ইসলামও গ্রহন করতে পারবো না। আপনি আপনার পরিবারকেও জানাতে পারবেন না। তাহলে কেনো শুধু শুধু আপানাদের বাড়িতে পড়ে থাকবো। আলোক ভাইয়া দেখতেও সুন্দর। তার পরিবারও আমাকে মেনে নিবে। আমার একটা নিজের পরিবার হবে কারোর আশ্রিতা হয়ে কেনো থাকবো।
রিফাত: খুব শখ না আলোককে বিয়ে করার। তোর বিয়ের শখ আমি পূরন করতাছি। আমি বাসায় আসতাছি বলে রিফাত কল কেটে দিল।
পরি: দাভাই এই প্রথম আমাকে তুই করে বললো দাভাইয়ের মুখে তুইটা বেশি ভালো লাগে। দাভাই আমিও তো চাই তোমার সাথে থাকতে তুমি তো আমাকে এই কথাগুলো বলতে বাধ্য করেছো। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি দাভাই।
রুকু: আমি এখন আসবো।
পরি: আসো পরি আর রুকু বিভিন্ন কথা বলতে লাগলো। এরকম সময় মুনিয়া খালা পরিকে ডাকতে আসলো
মুনিয়া খালা: পরি রিফাত তোমাকে নিচে ডাকে।
পরি: আচ্ছা।
পরি আর রুকু নিচে চলে আসলো।
রিফাত পরির হাত ধরে সবার সামনে গিয়ে আলোক সরি রে দোস্ত তোর সাথে পরির বিয়েটা হচ্ছে না। পরি আমার স্ত্রী।
সবাই অবাক হয়ে রিফাতের দাকে তাকিয়ে আছে।
চলবে..