অবুঝ_পাখি পর্ব ৭+৮

#অবুজ_পাখি
#নাম_না_জানা_পথিক
পাট:৭
রিফাত: পরি আমার স্ত্রী তাই এই বিয়েটা হতে পারে না। আলক সরি দোস্ত।
ভাবি: রিফাত এগুলো কি বলতেছো পরি একটা হিন্দু মেয়ে ওর সাথে তোমার বিয়ে হতে কিভাবে হতে পারে।
আম্মু: মনে মনে যেটার ভয় পাচ্ছিলাম সেটাই হলো। এখন রিফাতের দাদি যদি এসে এগুলো শুনে তাহলে আর কারোর রক্ষে নেই।(রিফাতের দাদি তার বোনের বাসায় গেছে একটা কাজে)
রিফাত: তোমাদের কাছ থেকে একটা কথা লুকাইছি ভাবছিলাম পরে বলবো আজকে না বললে আর হয়না। গ্রামে পরিকে ঐ বিয়ে থেকে বাঁচাতে হিন্দু ধমের রিতীতে বিয়ে করি।
আম্মু: রিফাত দেখো তোমাদের এই বিয়ে কেউ মেনে নিবে না। তোমাদের বিয়েটা ভুলে যাও আলক আর পরির বিয়ে হলে সবাই খুশি থাকবে।
রিফাত: আম্মু পরি আমার ওয়াইফ ওর সাথে আমার বিয়ে হয়েছে।
আম্মু: রিফাত বোঝার চেষ্টা করো এটা কোনো সম্ভব না পরি একটা হিন্দু মেয়ে। তোমার দাদি এসে যদি এগুলো শুনে তাহলে কি হবে তুমি কল্পনা করতে পারতেছো না।
রিফাত: আমি কিছু বুঝতে চাই না পরি আমার ওয়াইফ ও আমার সাথেই থাকবে।
ভাবি: রিফাত বাচ্চামো করো না সমাজ কি বলবে একবার ভেবে দেখো।
আম্মু: রিফাত রুমে যাও এই বিষয়ে রাতে সবাই আসলে কথা হবে এখন আর একটা কথা না।
রিফাত পরিকে নিয়ে তার রুমে চলে গেল।
আলক: আন্টি
আম্মু: তুমি তো দেখলাই রিফাত কি বললো তারপরও রাতে তোমার আঙ্কেল আসলে আমরা এই বিষয়ে রিফাতের সাথে কথা বলে তোমাকে জানাবো।
আলোক তার বাবা-মাকে নিয়ে চলে গেল।
পরি: আপনি এসব না করলেও পারতেন বিয়েটা হলে সবাই ভালো থাকতো।
রিফাত: খুব শখ না তোর আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার আরেকবার যদি তোর মুখে বিয়ের শুনি তাইলে তোর জিব টান দিয়ে ছিড়ে ফেলুম।
পরি: এই প্রথম রিফাত পরিকে তুই করে বললো রাগে রিফাতের চোখ অসম্ভব লাল হয়ে আছে। পরি ভয়ে চুপ হয়ে গেল।
বাকিটা সময় বাসায় একদম নিরবতায় কাটে।
রাতে রিফাতের আব্বুর আর ভাই অফিসে থেকে বাসায় আসলে ভাবি তাদের সব খুলে বলে।
আব্বু: এত কিছু হয়ে গেল আর আমি কিছুই জানিনা।
ভাবি: আব্বু তুমি অফিসে আছিলা তাই আম্মু ফোন দিতে মানা করছে।
আব্বু: তোমার আম্মু কোথায়?
ভাবি: আম্মু রুমে
আব্বু: আমি ফ্রেশ হয়ে আসি তারপর সব কথা হবে বলে আব্বু তার রুমে চলে গেল।
ভাবি: তোমার কাছে কি লাগে আব্বু কি সিদ্ধান্ত নিবে।
ইমন ভাইয়া: সেটা আব্বুই যখন বলবো তখন শুইনো অফিস থেকে আসছি আগে ফ্রেশ হবো তা না কি শুরু করছো চাপো।
ভাবি: হুহ আমি বললেও দোষ না বললেও দোষ।
ইমন ভাইয়া: তাড়াতাড়ি রুমে আসো।
রাতে ডিনারের সময়
ভাবি: আব্বু কি সিদ্ধান্ত নিলা
আব্বু: কোন ব্যাপারে?
ভাবি: কাল সকালে তোমাদের দাদি আসবে সেই যা সিদ্ধান্ত নিবে।
আম্মু: এখন চুপ করে খাও আর একটা কথাও না।
আজ কেউ রিফাতের সাথে কোনো কথা বলতাছে না।
রিফাত আর পরি ডিনার শেষ করে যে যার রুমে চলে যায়।
রিফাত: কতক্ষন ধরে দরজা খুলে শুয়ে আছি পরির কোনো খবর নাই। আজকেও কি আসবে না। রিফাত কি জেনো ভেবে নিজেই পরার রুমে চলে গেল গিয়ে দরজা লক করা এখন ডাক দিবে কি না দ্বিধায় পড়ে গেল যদি ঘুমিয়ে পড়ে। রিফাতের মন মানতাছেনা। রিফাত আস্তে করে পরিকে ডাক দিতে লাগলো ১বার ডাক দিতেই পরি এসে দরজা খুলে দিল
রিফাত: তুমি কি দরজার কাছেই ছিলা নাকি
পরি: হ্যাঁ মানে না না
রিফাত: হ্যাঁ কি না
পরি: জানি না আপনি এখন আমার রুমে কি করেন।
রিফাত: খেয়াল করলো পরি আজ টি-শাট পড়ছে রিফাত এই প্রথম পরিকে টি-শাটে দেখলো। বউয়ের সাথে ঘুমাইতে আসছি।
পরি: বউ নামটা শুনেই পরির বুকটা কেঁপে উঠলো।
রিফাত: দরজার সামনে থেকে সরো তো ঘুমাবো বলে রিফাত বিছানায় শুয়ে পড়ে।
পরি: কেউ যদি এসে দেখে যে আপনি আমার রুমে আছেন।
রিফাত: তোমাকে এত কিছু ভাবতে হবে না।
পরি কিছু না বলে দরজা বন্ধ করে খাটের এক পাশে শুয়ে পড়লো।
রিফাত পরিকে টান দিয়ে তার বুকের উপর নিয়ে আসলো কার যে যাই বলুক তুমি শুধু আমার পাশে থাকবে ওকে। পরিকে কিছু বলতে না দিয়ে রিফাত নিজের টি-শাট খুলে পরির টি-শাটের ভিতর ঢুকে।
পরি: রিফাতের কান্ডে চমকে গেলো। আমি টি-শাটের নিচে কিছু পড়ি নাই।
রিফাত: আমি তো টি-শাটই পড়ি নাই।
পরি: আপনি আর আমি এক না।
রিফাত: বেশি কথা বললে তোমারও টি-শাট খুলে ফেলবো এখন চুপচাপ ঘুমাও।
পরি রিফাতের কথা শুনে চুপ হয়ে গেলো।
সকালে রুকুর ডাকে ঘুম ভাঙ্গে রিফাতের উঠে দেখে পরি তার বুকে তাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে।
রুকু: পরি উঠো দাদি ডাকতেছে।
রিফাত: রুকু তুই যা আমি পরিকে নিয়ে আসতাছি।
রুকু: ওকে বলে চলে গেল।
রিফাত: পরি উঠো সবাই ডাক দিয়ে দিচ্ছে।
পরি: ডাক দেওয়ার কথা শুনে লাফিয়ে উঠতে গিয়ে টি-শাটের সাথে টান খেয়ে রিফাতের বুকে আছড়ে পড়ে।
রিফাত: পরির কাহিনী দেখে মুচকি হাসতে থাকে।
পরি: ঐ আপনি হাসি বন্ধ করেন আমি চিন্তায় মরি নিচে সবাই কি যে বলে আর উনি হাসতাছে যত্তসব বলে টি-শাট থেকে বেরিয়ে গেল।
রিফাত: হা করে পরির দিকে তাকিয়ে আছে পরি রাগের মাথায় ভাবছে পরি রিফাতের টি-শাটের ভিতরে আছে।
পরি: আজব এভাবে হা করে আছেন কেনো আমাকে কি আজ প্রথম দেখতাছেন নাকি।
রিফাত: আজ প্রথমই দেখতাছি জাস্ট ওয়াও।
পরি: নিজের দিকে তাকিয়ে একটা বড়সর শক খায় তাড়াতাড়ি করে বেডশিট দিয়ে নিজের শরীরটা ঢেকে নেয়।
রিফাত: ঢাকলা কেনো সেই লাগতেছিল।
পরি: বেডা বুইড়া লুচ্চা বান্দর রিফাতরে বকতে বকতে পরি বেডশীট পেঁচিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়।
রিফাতও তার রুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে পরি চুপটি করে খাটে বসে আছে।
রিফাত: ভয়ের কিছুই নাই আমি আছি তো।
পরি:শুধু ভাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।
রিফাত পরিকে নিয়ে নিচে এসে দেখে সবাই বসে আছে পরি আর রিফাতের জন্য অপেক্ষা করতেছিল।
দাদি: রিফাত দেখ তুই কি করছোস আমি কিছুই বলবো না। এই মেয়েকে আমি তোর বউ হিসেবে কখনো মানতে পারবো না। আমার বোনের নাতনি ফারিয়ার সাথে তোর বিয়ে ঠিক করছি।#অবুজ_পাখি
#নাম_না_জানা_পথিক
#পাট:৮
দাদি: রিফাত তোর সাথে আমি আমার বোনের নাতনির বিয়ে ঠিক করে আসছি।
রিফাত: দাদি এসব কি বলতাছো পরির সাথে আমার বিয়ে হয়েছে পরি আমার বউ। আমি ফারিয়াকে কি করে বিয়ে করবো?
দাদি: আমার থেকে তোর কাছে এই মেয়েটা বেশি গুরুত্বপূণ আর কিসের বিয়ে এই একটা অন্য ধমের জাত পাতের ঠিক নাই বাড়ির আশ্রিতা থেকে বাড়ির বউ হয়ে সব দখল করে নেয় এসব মেয়েকে আমার জানা আছে।
রিফাত: দাদি পরি ঐরকম মেয়ে না। আমি পরিকে ভালোবাসি আমি ফারিয়াকে বিয়ে করতে পারবো না।
দাদি: এই মেয়ে তোকে ভালোবাসে। এই মেয়ে কি তোর জন্য ইসলাম গ্রহন করতে পারবে।
রিফাত: চুপ করে মাথা নিচু করে ফেললো ঠিকই তো পরি তো আর ইসলাম গ্রহন করবে না।
দাদি: এখন চুপ কেনো রিফাত তুই কখনো আমার একটা কথার অবাধ্য হহনি আজ এই মেয়েটার জন্য আমার সাথে তক করতেছোস সব সমস্যার মূলে হলো এই মেয়েটা একে বাড়ি থেকে বের করে দিলেই সব সমস্যা শেষ হয়ে যাবে। এই মেয়ে বাড়ি থেকে বের হো।
পরি শুধু মাথা নিচু করে চোখের পানি ফালাইতাছে পরি ভেবেছিল তার জীবনে এখন মনে হয় একটু সুখ আসবে কিন্তু তা আর হলো না।
রিফাত: দাদি পরিকে বের করে দিলে ও কোথায় যাবে এই পৃথিবীতে আমি ছাড়া ওর আর কেউ নেই।
দাদি: ঐ মেয়ে এখানে থাকতে পারে তবে আমার একটা শত আছে।
রিফাত: কি শত?
দাদি: তোমায় ফারিয়াকে বিয়ে করতে হবে।
রিফাত: দাদি আমি যদি ফারিয়াকে বিয়ে করি তাহলে পরির কি হবে।
দাদি: সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না তোমার আম্মু আমাকে আলোকের কথাটা বলেছে আমি আলোকের সাথে ওর বিয়ে দিবো।
রিফাত: দাদি প্লিজ আমি তোমাকে অনুরোধ করতেছি।
দাদি: ও যদি মুসলিম হতো তাহলে হয়তো আমি ওরে মেনে নিতাম কিন্তু ও অন্য ধমের একটা মেয়ে মেনে নেওয়া সম্ভনা। ইমনের আব্বু তুই বিয়ের কাজ শুরু কর আমি এই মাসের মধ্যে ফারিয়া আর রিফাতের বিয়ে দিতে চাই।
আব্বু: আমি দেখতেছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি চেষ্টা করতেছি|
দাদি: এখন যে যার কাজে যাও এই বিষয়ে আর একটা কথা না।
সবাই নিজের কাজে চলে গেলো। রিফাত নিজের রুমে চলে গেল। রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিচে আসলো।
আম্মু: তুই এখন কোথায় যাস?
রিফাত: অফিসে যেতে হবে কিছু দরকারি কাজ আছে।
আম্মু: বস নাস্তা করে যা।
রিফাত: না আম্মু দেড়ি হচ্ছে আমি এখন নাস্তা করবো না। বলে রিফাত বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো।
আম্মু: আল্লাহ আমার ছেলেটাকে দেখে রেখো।
রিফাতের অফিসের অনেক কাজের চাপ ছিলো। তাই খাওয়ার সময় পায় নাই। রিফাত রাত ১০ টায় বাসায় ফিরে।
আম্মু: রিফাত তোর আজকে এতো দেড়ি হলো কেনো কতগুলো ফোন দিছি একটা ফোনও ধরলি না কেন
রিফাত: আজকে অফিসে অনেক কাজ ছিল। সারাদিন কিছু খাইনি আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেছি।
আম্মু: আমি খাবার রেডি করি তুই দেখ পরিকে নিয়ে আসতে পারিস কিনা মেয়েটা সারাদিন কিছু খায়নি।
রিফাত: আমি ফ্রেশ হয়ে পরিকে নিয়ে আসি তুমি আমার আর পরির খাবার বাড়ো।
আম্মু: আচ্ছা।
রিফাত তার রুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে ফ্রেশ হয়ে সোজা ডাইনিং রুমে চলে গেল।
আম্মু: পরি আসলো না।
রিফাত: আমি পরির রুমে খাবার নিয়ে যাচ্ছি।
আম্মু: যা দেখ মেয়েটাকে একটু খাওয়াতে পারিস কিনা সারাদিনে রুম থেকে বের হয় নি।
রিফাত: খাবারটা দেও আমি গিয়ে দেখি।
রিফাত খাবার নিয়ে পরির রুমের সামনে গেল।
রিফাত: পরি দরজা খোলো।
পরি: রিফাতের আওয়াজ পাওয়ার সাথে সাথে দরজা খুলে বিছানায় গিয়ে বসে পড়লো।
রিফাত: সারাদিন কিছু খাওনি কেনো?
পরি: দাভাই তুমি আজকে সারাদিনে আমার সাথে কথা বলোনি কেনো।
রিফাত: এটার জন্য আমার পাখিটা আমার উপর রাগ করছে।
পরি: আমি কারোর পাখি না।
রিফাত: পরিকে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে পরির নাকের সাথে নিজের নাক ঘসতে লাগলো আমার মিষ্টি পাখিটা রাগ করে না।
পরি: এত কাছে এসে বললে কি আর রাগ করে থাকা যায়।
রিফাত: সারাদিন কিছু খাওনি এখন মিষ্টি পাখিটা চুপ করে খেয়ে নেও।
পরি: দাভাই তুমি খায়িয়ে দেও।
রিফাত: আচ্ছা।
পরি রিফাতের কোলে বসে দুহাত দিয়ে রিফাতের গলা জড়িয়ে আছে আর রিফাত পরিকে খায়িয়ে দিচ্ছ।
পরি: দাভাই তুমি খেয়েছো?
রিফাত: আজ অফিসের অনেক কাজ ছিল খাওয়ার সময় পায়নি তোমাকে খায়িয়ে দিয়ে খাবো।
পরি: আমার সাথেই খাও একবার তুমি খাবা আরেকবার আমি।
রিফাত: ঠিক আছে। খাওয়া শেষে পরি কোল থেকে নামৈ আমি তোমার মুখ মুছে দিচ্ছি।
পরি: কোল থেকে না উঠেও মুখ মুছা যায়।
রিফাত:কিভাবে?
পরি যা করলো রিফাত কল্পনাতেও ভাবেনি পরি তার দুই ঠৌঁট রিফাতের ঠৌঁটে ডুবিয়ে দিল। পরি রিফাতের ঠৌঁটগুলো মুখে নিয়ে চুষতে লাগলো। দীঘ ৬ মিনিট পর পরি রিফাতের ঠৌঁট ছেড়ে দেয়।
পরি: দেখছো না উঠেই ঠৌঁট মুছা হয়ে গেলো।
রিফাত: হুম উঠো এখন আমাকে আমার রুমে যেতে হবে।
পরি: দাভাই আমি আজ সারারাত তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো।
রিফাত: কি দরকার শুধু শুধু মিথ্যামায়া বাড়ানোর তুমি তো আর আমার জন্য ইসলাম গ্রহন করবে না আর কয়েকদিন পর আমারও বিয়ে তাই এখন থেকে তোমাকে ছাড়া থাকতে শিখি বলে রিফাত এঁটো প্লেট নিয়ে রুম থেকে চলে গেলো।
পরি: রিফাতের কথা শুনে চমকে গেলো আমারতো এই পৃথিবী তে দাভাই ছাড়া আর কেউ নাই।
রিফাত: তার প্লেটগুলো নিচে রেখে তার রুমে গিয়ে পরির একটা জামা জড়িয়ে শুয়ে পড়লো রিফাতের চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তেছে কিভাবে তার অবুজ পাখিকে ছাড়া সে থাকবে।
(এখানেই কি তাদের সমাপ্তি তাদের কি আর মিল হবে না।)
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here