#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2
#ফাতেমা_তুজ
#part_23
চোখ হাত আর পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে রিক কে।
শরীরে ব্যথার ছাঁপ গুলো স্পষ্ট। চারিদিকে অন্ধকার আর অন্ধকার। রিক চোখ বাঁধা নিয়েই চার পাশে চোখ বুলাচ্ছে।
তবে কিছুই দেখতে পারছে না। পাগলের মতো করছে , যেন বহু বছর ধরে আলো দেখে না ওহহ।
রিক চিৎকার করে উঠলো। তবে সে চিৎকারের প্রতিধ্বনি বার বার ফিরে আসছে। রিক মাটিতে বসা অবস্থায় আর্তনাদ করে বলল
_ কেউ আমার চোখ খুলে দাও। কে আমাকে বেঁধে রেখেছো ?
চার পাশ থেকে একটা পোঁকা মাঁকড়ের আওয়াজ ও শোনা যাচ্ছে না।
রিক আবার চিৎকার করলো। রিকের চিৎকারের প্রতিধ্বনির সাথে আর ও কিছু হাসির প্রতিধ্বনি ভেসে উঠলো।
মধ্য রাতে সেই সব প্রতিধ্বনি আর খিল খিল হাসি অশরীরীর মতো লাগছে। রিকের চিত্ত কেঁপে উঠলো । তরতর করে ঘামছে ওহ গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
আবার কিছু হাসির শব্দ ভেসে আসলো। সব গুলো কন্ঠস্বর ই মেয়েলি গলা। গলার স্বর গুলো কেমন চেনা চেনা লাগছে ওর।
রিক ভয়ার্ত কন্ঠে বলল
_ কে কে তোমরা?
রিকের কন্ঠের সাথে তাল মিলিয়ে ভেসে উঠলো কে কে তোমরা ?
তারপর ই বিকট শব্দ করে হো হো করে হাসি।
রিকের কপালের ঘাম গুলো সব নাকে এসে লাগছে।
ভয় হচ্ছে ওর , সব কেমন বিদঘুটে লাগছে।
রিক কাঠ হয়ে যাওয়া ঠোঁট টা জ্বিভ দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে বলল
_ বলো কে তোমরা? কি চাও আমার থেকে ?
আবার সেই খিল খিল হাসি । রিক কেঁপে উঠলো।
একটা মেয়েলি গলা থেকে উচ্চারন হলো
_ আমি তোমার বউ বেবি। যাকে ছাড়া তোমার ঘুম আসতো না বলতে।
রিক নাক কুঁচকে বলল
_ মৌ
_ মৌ কে মৌ আমি তো তোমার প্রান সোনা । আমাকে তুমি ভুলে গেলে সোনা। আমার শরীরের ঘ্রান না নিলে তুমি তো অপূর্ন থাকতে।
আমাকে চিনতে পারছো সোনা?
রিক শুকনো ঢোক গিলল। খানিক টা উঁচু কন্ঠে বলল
_ সিমা আমাকে খুলে দাও। আমি তোমাদের সব বলছি।
আমার কথা শোনো
_ কি বলবে বাবু । এই যে আমি তোমাকে না স্পর্শ করলে তোমার হৃদস্পন্দন থেমে যায় ?
আমার সাথে কাটানো মুহুর্ত গুলো তোমার জীবনের সব থেকে সেরা।
রিক চিৎকার করে উঠলো। পাগল পাগল মনে হচ্ছে ওর। সব ঝামেলা গুলো এক হলো কি করে তাই বুঝতে পারছে না ওহ।
রিক শান্ত কন্ঠে বলল
_ দেখো এভাবে কিছু হবে না। আমাকে মুক্ত করো আমি তোমাদের সব বুঝিয়ে বলছি।
মিতা প্লিজ আমাকে মুক্ত করো।
রিকের কথা তে হো হো করে হেসে উঠলো সবাই।
রিক মাথা চেপে ধরে চিৎকার করে উঠলো। সামনে থাকা ওয়াইনের বোতল টা ছুঁড়ে ফেলে দিলো।
কাল রাতে ঘটে যাওয়া মুহুর্ত গুলোই ভাবছিলো ওহ।
ওয়াইনের গ্লাসে ওয়াইন ঢেলে ঢকঢক করে খেয়ে নিলো।
চোখ দুটো রক্ত লাল হয়ে আছে। এক বিকৃতি হাসি হেসে একা একাই বির বির করলো
” ছাড়বো না কাউকে , সবাই কে শেষ করে ফেলবো ”
*
ফারাবির ঘুম ভেঙেছে দুপুর একটায়। এর মাঝে কতোবার ওকে ডেকে গেছেন ওর মা তার হিসেব নেই।
হাই তুলতে তুলতে আরমোড়া ভাঙলো ফারাবি। ক্লান্ত শরীর টা এক ঘুমেই চাঙা হয়ে গেছে।
শরীরের জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজন। আবার এই ঘুমের জন্য ই মানুষ মরে যায়। প্রতি টা জিনিসের ই ভালো খারাপ দিক আছে । আমাদের উচিত সব কিছু সঠিক ভাবে ব্যবহার করা।
ওয়াসরুমে গিয়ে দাঁত ব্রাশ করছে ফারাবি।
ওর একটি বিশেষ বাজে স্বভাব আছে তাহ হলো পেস্ট খেয়ে ফেলা।
যার জন্য ওহ এখনো বেবি জেল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করে।
ফ্রেস হয়ে এসে চুল গুলো কোনো মতে আঁচরিয়ে ই ফারাবি ভৌ দৌড়।
প্রচন্ড খিদে পেয়েছে ওর। কাল রাতে ডিনার বলতে একটা রোল খেয়েছে।
কারন তখন ওর খেতে ইচ্ছে করছিলো না।
ডাইনিং এ এসে খোঁজা খোঁজি করছে ওহহ। নাস্তা নেই টেবিলে, অবশ্য এতো বেলা অব্দি নাস্তা থাকবেই বা কি করে ?
এখন তো লাঞ্চ এর টাইম হয়ে গেছে।
ফারাবি মুখ টা গোমড়া করে কিচেনে চলে আসলো।
কিচেনে ওর মা আর বড় রান্না করছেন। ফারাবি ধীর পায়ে হেঁটে ফ্রিজ খুলে ফ্রিজ থেকে জুস বের করে এক গ্লাস জুস নিয়ে নিলো।
এক পিস পেস্ট্রি কেক ছিলো সেটা দেখেই ওর চোখ চকচক করে উঠলো।
আপাতত এই দুটো টেই পেট ঠান্ডা হয়ে যাবে।
ফারাবি কেক আর জুস নিয়ে উপরে উঠে গেল।
রিফাতের মা এক পলক সে দিকে তাকিয়ে বলল
_ বুঝলি ছোট, আমাদের ফারাবি টা এখনো বাচ্চাই রয়ে গেল।
দুদিন বাদে বিয়ে হবে , বাচ্চা হবে আর এখনো ওর ই বাচ্চামো গেলো না।
ফারাবির মা হালকা হেসে বললেন
_ তার জন্য ই তো কাছের লোকের বাড়িতে পাঠাতে চাই আপা।
ভালো খারাপ সব কিছু ই যেন মানিয়ে নেয়। আর ভাবি আর ভাই তো ওকে খুব আদর করে।
রিক টা ও খুব ভালোবাসে , বিয়ে টা দিতে পারলেই শান্তি।
রিফাতের মা হালকা হেসে বললেন
_ তবে যাই বলিস না কেন তুই আগে আগে কথা দিয়ে ঠিক করিস নি।
যদি ফারাবি রাজি না হতো ?
ফারাবির মা মলিন হাসলেন। ভাইয়ের অনুরোধ ফেলতে পারেন নি ওনি। ওনার ভাই কেঁদে উঠেছিলেন সেদিন। বাবা মারা গেছে ছোট বয়সে ভাই দের হাত ধরেই বড় হয়েছেন ওনি।
এমন বাবার মতো ভাইয়ের অনুরোধ কি করে ফিরিয়ে দিবেন ওনি ?
তবু ও কথা দেওয়া উচিত হয় নি। ভাগ্যিস মেয়েটা দ্বিমত করে নি।
*
লম্বা লম্বা দম ফেলে নিজের রুমে আসলো ফারহান। ক্লান্ত ওহ , সারাদিন কাজের প্রচন্ড চাপ ছিলো।
সকালে নিউজ পেপারে নিজেদের ছবি দেখে অন্তর আত্মা কেঁপে উঠে ওর।
ভাগ্য ভালো ছিলো যে ছবি টা পেছন থেকে তোলা।
সকাল থেকে ঘুমোতে পারে নি ওহ। তার আগেই ফ্রেস হয়ে অফিসে ছুটে গিয়েছি। বড় একটা প্রজেক্ট আছে সামনে। তার জন্য দরকার অনেক গুলো টাকা। তবে লোন নেওয়া যাবে না। কারন এতে করে ইন্টারেস্ট হবে ।
ফারহান খানিকটা চিন্তায় পরে গেল। বাবার থেকে টাকা নেয় না ওহ।
তবে ধার তো নেওয়াই যায় ?
ফারহান আন মনে ভাবতে ভাবতে ফরহাদ চৌধুরীর কাছে গেলেন।
সন্ধ্যা সাড়ে সাত টা বাজে। এই সময় লাইব্রেরি তে বসে বই পড়েন ওনি।
লাইব্রেরির কাছে গিয়ে নক করলো ফারহান।
ফরহাদ চৌধুরী প্রশস্ত হেসে বললেন
_ আরে আয় ।
ফারহান এক গাল হেসে ফরহাদ চৌধুরীর কাছে গেলো।
রকিং চেয়ার থেকে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসে ফরহাদ চৌধুরী বললেন
_ কিছু দরকার ?
_ তুমি জানলে কি করে?
ফরহাদ চৌধুরী লম্বা হেসে বললেন
_ ছেলে মেয়েরা বড় হলে বাবা মায়ের কাছে কম আসে।
দরকার ছাড়া তেমন একটা আসে না তারা।
ফারহান মুখ টা ছোট করে বলল
_ আব্বু রাগ করেছো ? আমি কি করবো বলো বিজন্যাস টা বি ডি তে সিফট করাতে কাজ বেড়ে গেছে।
ফরহাদ চৌধুরী সামান্য হাসলেন।হাতের বই টা একটা তাকে রেখে বললেন
_ তিন বছর আগে সিঙ্গাপুর না গেলে ও পারতে।
আমার বিজনেস টা দেখলে তোমার ক্ষতি হতো না কোনো।
_ আব্বু তুমি তো জানোই আমি কেমন। আই নো তোমার প্রপার্টি তে আমার অধিকার আছে। তবে আমি এটা বিশ্বাস করি নিজ থেকে কিছু আলাদা করা দরকার।
আর তাই
_ আর তাই তুই নিজের বাবার থেকে টাকা নিয়ে বিজনেস অব্দি শুরু করলি না।
সেটা ও ব্যংক থেকে লোন নিয়ে বিজনেস করলি।
ফারহান মৃদু হাসলো। ফারহান যখন লোন নিতে ব্যংক এ যায় বিনাবাক্যে তারা লোন দিয়ে দেন। তবে কিছু মানুষ জড়তা সৃষ্টি করে। নানা রকম কথা উঠায় নিজেদের এতো টাকা থাকতে কেন লোন নিলো ফারহান ।
হাজারো ঝামেলা , এক পার্টি তে ওদের অপমান করার প্ল্যান ও হয়েছিলো ।
তবে ফারহান ভরা সভায় যে স্পিচ দিয়েছিলো তাতে করতালি তে ভরে উঠে পুরো পার্টি।
ফারহান নিজ থেকে পরিচয় গড়তে চেয়েছে। লোকে যেন বলতে না পারে বাবার টাকায় চলে ওহ।
তাছাড়া জীবনে নিজ থেকে কিছু করা টাই মূল সার্থকতা।
ফারহান আলতো হেসে বলল
_ তবে আজ একটা আর্জি নিয়ে আসছি।
_ কিহহ ?
_ আমি টাকা ধার নিতে চাই।
ফরহাদ চৌধুরী চমৎকার হাসলেন। পকেট থেকে চেক বের করে বললেন
_ সাইন করা আছে যতো লাগবে নিয়ে নিও।
ফারহান স্মীত হাসলো। তার বাবা প্রচন্ড বুদ্ধি সম্পূর্ণ বিজনেস ম্যান।
কয়েক বছরে পুরো দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।
মূলত জেদ ই ছিলো ওনার শক্তি।
*
ফারাবি কে সেই ভোর বেলা দেখেছিলো ফারহান এখনো দেখে নি ওহ।
মন টা কেমন কেমন করছে। কি ভাগ্য আজ ওদের তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকী আর ওরা দুজন দুজনার থেকে দূরে।
লম্বা করে শ্বাস ফেলল ফারহান । সারা দিন এতো কাজের চাপ ছিলো যে মেয়েটা কে একটা কল ও করে নি।
_ স্যার আপনার ডিনার রেডি।
_ ঘরে রেখো যাও। আর শোনো একটা ব্ল্যাক কফি দিয়ে যেও।
_ ওকে স্যার।
সার্ভেন্ট চলে যেতেই ফারহান লেপটপে মনোযোগ দিলো। মাথায় প্রচন্ড চাপ আজ। টেন্ডার নিয়ে কনফিউশন এ আছে।
প্রায় ঘন্টা খানেক লেপটপে কাজ করে উঠলো ফারহান।
কাউচ এ লেপটপ টা রেখে দিয়ে সটান হয়ে বসে নিলো।
একটু জুস মুখে দিয়ে ফোন হাতে নিলো। রাত সাড়ে এগারোটা , ফারাবি নিশ্চয়ই ঘুমে। মেয়েটা সারাক্ষণ ঘুম নিয়ে পরে থাকে।
হাজার চিন্তা ভাবনা কাটিয়ে ফারহান ফোন টা করেই ফেলল।
কি আশ্চর্য এক বার রিং হতেই ফোন রিসিপ হয়ে গেল।
ফারহানের মুখ টা চুপসে গেল। ক্ষীন কন্ঠে বলল
_ ঘুমাস নি কেন ?
_ ঘুম আসছিলো না।
_ ঘুম কুমারীর ঘুম আসছিলো না আমি কি ঠিক শুনছি?
_ হুমম আপনি ঘুমান নি কেন ?
_ আমি এতো তাড়াতাড়ি ঘুমাই নাকি।
_ অতো রাতে ঘুমিয়ে আবার সকাল ছয়টায় কি করে উঠেন ?
_ অভ্যাস হয়ে গেছে বউ।
ফারাবি লজ্জা পেল। ফারহান স্মিত হাসছে , মিনমিনে গলাতে বলল
_ এখনি সময় ঘুমিয়ে নে , পরে কিন্তু সুযোগ পাবি না।
ফারাবি ঠোঁট বাকালো। ওর লজ্জা লাগছে বেশ , তবে প্রশান্তি লাগছে কারন আজ দুজন ই দুজন কে অনুভব করছে।
_ ঘুম কুমারী ঘুমিয়ে পরলি নাকি ?
_ উহুমমম ঘুম আসবে না।
_ আমি আসি তাহলে ?
_ এই না না
ফারহান খিল খিল করে হাসলো। ফারাবি লম্বা করে শ্বাস নিয়ে বলল
_ একটা সত্যি কথা বলবো?
_ হুমম বল।
ফারাবি লজ্জা মেশানো অনুভূতি তে বলল
_ আমার না আপনাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হচ্ছে।
ফারাবির কথা শেষ হতে না হতে ফোন টা কেঁটে দিলো ফারহান।
ফারাবি ভ্রু কুঁচকে রইলো। অনেক গুলো কল করলো কিন্তু ফোন রিসিপ হচ্ছে না। ফারাবি চিন্তায় পরে গেল, হঠাৎ করে ফোন টা কেঁটে দিলো কেন ফারহান ?
#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2
#ফাতেমা_তুজ
#part_24
সা সা করে বাতাস বইছে। ব্যলকনির গ্রিল ধরে দাড়িয়ে আছে ফারহান আর ফারাবি।
একটু আগেই ফারহান এসেছে। ফারাবি ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টি তে তাকিয়ে ছিলো ফারহানের দিকে।
মানুষ টা নিশ্চয়ই পাগল। ফারহান তার ঠান্ডা হাত ফারাবির হাতের উপর রাখলো।
ফারাবি বুক ভরে শ্বাস নিলো। দুজনের মাঝে খানিক টা নীরবতা চলছে।
কেন যেন দুজনেই আজ কথা খুঁজে পাচ্ছে না।
ফারাবির দীর্ঘপল্লব বিশিষ্ট চোখ দুটো বার বার বুঁজে যাচ্ছে।
মূলত ফারহানের সংস্পর্শেই এই আবেশ। স্মিত হাসে ফারহান, আকাশের তারা গুলোর দিকে এক পলক তাকিয়ে বলল
_ আমাদের বিষয় টা সবাই কে জানানো উচিত ।
রিক উন্মাদ হয়ে গেছে , এবার ঝামেলা করবেই ওহ।
রিকের কথা ভাবতেই ফারাবি কেঁপে উঠলো। ভয়ার্ত কন্ঠে মিনমিনিয়ে বলল
_ আমার ও তাই মনে হয়।
_ তবে জানিস কি আজ আমার ভয় হচ্ছে। জানি না সবাই বিষয় টা কেমন করে নিবে।
তোকে নিয়ে আমি সারা জীবন ই ইনসিকিউর ফিল করবো। আচ্ছা বুকের মধ্যে আগলে রাখার কোনো উপায় নেই ?
ফারহানের বাচ্চামো ফারাবি মৃদু হাসলো। পরক্ষণেই মন টা খারাপ হয়ে গেল।
ভাবতেই ভীষন কান্না পাচ্ছে ওর। ওহ যদি ফারহানের ভালোবাসা প্রথম থেকেই অনুভব করতো তাহলে রিক নামের ঝামেলা টা আসতো না।
ফারহানের বাহু তে মাথা ঠেকিয়ে ফারাবি বলল
_ আমি এর জন্য দায়ী। আমি অনুভব করতে পারি নি আপনাকে।
সব সময় আপনার রাগ টাই দেখেছি।
ফারহান মলিন হেসে বলল
_ তোর দোষ নেই এতে। আমি তোকে কখনো আমার ভালোবাসা বোঝাতেই চাই নি।
সব সময় রাগ দেখাতাম , আর সেদিন ও রাগের বষে চর মেরে বিয়ে করেছিলাম।
যদি বোঝাতাম , অনুভব করাতাম তাহলে হয়তো এতো কিছু হতো না।
ফারাবি আচমকাই ফারহান কে জড়িয়ে হু হু করে কেঁদে উঠলো।
ফারহান অবাক হলো , ফারাবি নাক টানতে টানতে বলল
_ আমি রাসিফ ভাইয়া কে পছন্দ করতাম না।
সেদিন বন্ধুদের সাথে সাথে প্ল্যান করেছিলাম। রাসিফ ভাইয়া আমাকে প্রপোজ করলে আমি সম্মতি জানাবো।
রাসিফ ভাইয়ার সাথে অনেকের প্রেম ছিলো । আমি তো চেয়েছিলাম ওনাকে উচিত শিক্ষা দিতে।
ফারহান এক গাল হাসলো। এ গুলো সবি জানে ওহহ। তবে ওদের বিয়ের পরে সব জেনেছে।
ফারাবি ঠোঁট উল্টিয়ে কাঁদতে লাগলো। ফারহান বোকা হেসে বলল
_ একদম নয়। আমি জানি সব , তবে পাকামো টা করতে চাওয়া টা তোর উচিত হয় নি।
পনের বছর বয়স ছিলো তোর , রাসিফ এর সাথে পেরে উঠতি না।
রাসিফ তখন নতুন তারকা হলে ও ওর হাত অনেকের সাথে।
নোংরা মনের মানুষদের সাথে পেরে উঠার জন্য কারো সাহায্য লাগে।
আর তুই একটা পুঁচকে , সে নাকি একাই নেমে গিয়েছিলি শাস্তি দিতে।
ফারাবি ঝরা হাসলো। সে চেয়েছিলো রাসিফ কে শাস্তি দিতে।
” নিজের জন্মদিনের জন্য স্কুল থেকে দুটো দিনের ছুটি নিয়েছিলো ফারাবি। কথা ছিল জন্মদিনের পরের দিন সবাই ঘুরতে যাবে। কিন্তু ফারাবির বান্ধবী জুঁই জানায় রাসিফ স্কুলের একটা ফাংশন করতে আসবে কাল। ফারাবি এই সুর্বন সুযোগ হারাতে চায় নি। রাসিফ হলো ওর স্কুলের ট্রাস্টির ছেলে।
রাসিফ ফারাবি কে পছন্দ করে। ফারাবির সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে ও ফারাবি কখনো সুযোগ দেয় নি।
রাসিফের গানের গলা ভালো হওয়াতে রাসিফ বিভিন্ন জায়গায় ফাংশন ও করে।
আর বিভিন্ন মেয়ের সাথে রিলেশন করে তাদের মন নিয়ে খেলে ছেড়ে দেয়।
এই রকম ই ঘটনা ঘটেছিলো ফারাবির বান্ধবী জুঁই এর বড় বোনের সাথে।
সেদিন ই ফারাবি ভেবে নিয়েছিলো রাসিফ কে শাস্তি দিবে।
রিলেশনের নাটক করে ধোঁকা দিবে , তখন বুঝবে মানুষের মন নিয়ে খেললে কতো টা কষ্ট হয়।
জুঁই এর বোন জিনিয়া রাসিফ কে খুব ভালোবাসতো। কিন্তু এতো বড় প্রতারণা করবে তা বুঝতে পারে নি ওহ।
ভালোবাসার আঘাত সইতে না পেরে সুইসাইড করতে গিয়েছিল।
তাই প্ল্যান করে রাসিফ কে ফাঁসাবে ওরা। যেহেতু রাসিফ ফারাবি কে সত্যি সত্যি পছন্দ করে তাই মূল কাজ টা ওকেই করতে হবে ।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে গ্রাউন পরে ব্রাইডাল মেকআপে বের হয় ফারাবি। স্কুলের ফাংশন বলেই এতো সাজ গোঁজ করে বের হতে হবে বিষয় টা ফারহানের একদম পছন্দ হয় নি।
তাছাড়া ফারাবি এমন ছোট ফাংশনে সাজ গোঁজ করে না।
তাই ফারাবির পেছনে পেছনে ফারহান ও চলে যায় স্কুলের ফাংশনে।
স্টেজ এ গান গাইছে রাসিফ। বার বার ফারাবির দিকে তাকাচ্ছে ওহহ। যা দেখে ফারাবির গা জ্বলে উঠে। তাচ্ছিল্য হেসে সব দেখতে থাকে।
জুঁই জড়োসড়ো হয়ে ফারাবির পাশে বসে আছে । ওর খুব ভয় হচ্ছে, ফারাবি হালকা হেসে বলল
_ আপুর জন্য আমাদের এই টুকু করতেই হবে জুঁই।
রাসিফ ভাইয়া কে খুব ভালোবাসে জিনিয়া আপু । আর তাছাড়া ওনি যেটা করছেন সেটা ও ঠিক না।
আমাদের প্ল্যান মতো ওনার সাথে আমরা একদিন ই কথা বলবো। তার পর ই ওনাকে বলবো ওনাকে পছন্দ নয় আমার।
জুঁই স্মিত হাসলো। কি হবে বুঝতে পারছে না ওহ। তবে এটা ভেবে ভালো লাগছে ওর বোনের জন্য ফারাবি এতো বড় রিক্স নিচ্ছে।
গান শেষ হলেই করতালি তে ভরে উঠে চারপাশ। রাসিফ প্রসন্ন হাসে ,ফারাবি জুঁই কে ইশারা করে আড়ালে চলে যেতে বলে।
জুঁই ভয়ার্ত চোখে তাকাতেই ফারাবি আশ্বস্ত করে। ফারাবি স্টেজের একটু সাইটে দাড়িয়ে পরলো।
রাসিফ চার দিকে ফারাবি কে খুঁজতে লাগলো। আশে পাশে না পেয়ে মুখ টা মলিন করে ফেলল।
হঠাৎ ই ফারাবি কে স্কুলের গেট দিয়ে যেতে দেখে রাসিফ।
একটা গোলাপ হাতে দৌড়ে যায় ওহহ। ফারাবির কাছে যেতেই ফারাবি চকচকে হাসলো। রাসিফ মোহনীয় হেসে মাথা চুলকিয়ে বলল
_ একটা কথা বলার ছিলো ফারাবি।
ফারাবি এক গাল হেসে বলল
_ কি বলবেন ভাইয়া ?
_ প্লিজ ফারাবি ডোন্ট কলড মি ভাইয়া। ভাইয়া ডাকলে কলিজায় আঘাত লাগে।
ফারাবি হো হো করে হেসে উঠলো। তা খানিক টা দূরে থেকে স্পষ্ট দেখতে পেল ফারহান।
ফারহানের চোখ দুটো সরু হয়ে কপালে ভাঁজ পরে গেল।
রাসিফ ফারহানের তিন ব্যাচ জুনিয়র ছেলে। ফারহান কে বেশ সম্মান করে ওহহ।
ফারহান একটা সিগারেট জ্বালিয়ে নিলো। ফারাবির দিকে তাকিয়ে সিগারেটের বিষাক্ত ধোঁয়া টানতে লাগলো।
আজ কাল মাঝে সাঝে সিগারেট খাচ্ছে ওহ। মূলত কলিজা পুরিয়ে দেওয়ার জন্য ই খাওয়া। ফারাবির প্রতি গভীর আসক্ত হচ্ছে। নিজেকে দমিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পরেছে।
ফারহান সিগারেট টা ফেলে দিলো। চোখ দুটো রক্ত লাল হয়ে গেছে। ফারাবির দিকে এক পা এক পা করে আগাতে লাগলো।
ফারহানের চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে। রাসিফ ফুল হাতে হাঁটু গেড়ে বসে আছে। আর ফারাবি হাসি মুখে দাড়িয়ে আছে।
ফারাবি ফুল টা নিতে যাবে তার আগেই ফারহানের শক্ত পোক্ত হাতের থাপ্পর পরে ওর গালে।
আচমকা আক্রমণে ফারাবি মুখ থুবড়ে পরে মাটিতে।
রাসিফ নাক কুঁচকে দাঁড়িয়ে রইলো। ফারহান চিৎকার করে বলল
_ চলে যাহহ ,
ফারহানের ভয়ঙ্কর কন্ঠস্বরে কেঁপে উঠে রাসিফ। ফারহান সম্পর্কে খুব ভালো আইডিয়া আছে ওর।
তাই দৌড়ে পালিয়ে যায় রাসিফ। ফারাবির হাতে বেশ খানিক টা ছিলে গেছে। ফারহানের রক্ত মাথায় চড়ে গেছে।ফারাবি কে টেনে হেচরে তুললো ওহহ। ফারহান কে দেখেই ফারাবির গলা শুকিয়ে গেল।
ফারাবির মুখ থেকে একটা শব্দ ও বের হলো না। তরতর করে ঘামছে ফারাবি।
ফারাবি কে টেনে গাড়ি তে বসিয়ে দেয় ফারহান।
ফুল গতিতে গাড়ি চালাতে থাকে। তা দেখে ফারাবি আর ও বেশি ভয় পেয়ে যায়।
চোখ দিয়ে নোনা জলের ফোয়ারা নামতে থাকে। তাতে ফারহানের কোনো ধ্যান নেই।
একটা ছোট্ট ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে গাড়ি থামায় ফারহান।
ফারাবির হিচকি উঠে গেছে। ফারহানের চোখ থেকে যেন দাবানল ঝরে যাচ্ছে।
ফারহান এক ধমক দিয়ে বলল
_ এক ফোঁটা চোখের পানি ফেললে মেরে দিবো একদম।
ফারহানের ধমকে ফারাবির চিত্ত কেঁপে উঠে। ফারহান টেনে নামিয়ে নেয় ওকে। ডুপ্লেক্স বাড়ির ভেতরে নিয়ে একটা রুমে বন্দি করে দেয়।
ফারাবি ভয়ে কিছু বলতে পারছিলো না।ফারহান কে ছোট থেকেই ভয় পায় তারউপর এমন রাগ দেখে ফারাবির কন্ঠস্বর যেন আটকে যায়।
বাক শক্তি হারিয়ে ফেলে ওহহ।
ঘন্টা খানেক পর একটা কাগজ নিয়ে আসে ফারহান ফারাবির দিকে বাড়িয়ে রগরগা কন্ঠে বলল
_ সাইন করে দে।
ফারাবি বিনাবাক্যে না দেখেই সাইন করে দেয়। ফারহান ফোঁস করে দম ফেলে নিজেকে শান্ত করে।
মিনিট পাঁচেক পর পাঁচ জন লোক আসে। তাদের দেখে ফারাবি ভরকে যায়। গুটি শুটি মেরে বসে পরে।
যখন কাজী বলেন কবুল বলতে ফারাবি শিউরে উঠে। তার মাথার উপর দিয়ে সব যেতে থাকে।
ফারহান ধীর কন্ঠে বলল
_ কবুল বল।
ফারাবি চমকে তাকায় ফারহানের দিকে। ফারহান আবার বলল
_ কবুল বলতে বলেছি।
ফারাবির শরীরে রাগ রগরগ করে উঠে। কবুল কেন বলবে ওহ ?
কি হচ্ছে টা কি ওর সাথে ?
ফারহান রাগী কন্ঠে আবার বলল
_ কি বলছি কানে যাচ্ছে না তোর ?
ফারাবি চেচিয়ে উঠে। ফারহানের দিকে অগ্নি চোখে তাকিয়ে চিৎকার করে বলল
_ কবুল কেন বলবো আমি ?
আমার সাথে কি হচ্ছে এসব ? আমার মাথা কাজ করছে না।
ফারহান ইশারা করে সবাই কে ডয়িংরুমে যেতে বললো।
সবাই চলে যেতেই রুমের দরজা লক করে দেয় ফারহান।
নিজে কে যথাসম্ভব ঠান্ডা করে শান্ত স্বরে বলল
_ কবুল বলতে বলেছি কবুল বলবি।
এতো কথা কেন বলিস তুই ?
_ আমি বলবো না কবুল। কার সাথে আমার বিয়ে দিচ্ছেন আপনি?
ফারহান বাঁকা হেসে বলল
_ বিয়ে দিচ্ছি না অলরেডি বিয়ে হয়ে গেছে।
ফারাবি অবাক চোখে তাকায়। ফারহান রেজিস্ট্রি পেপার ফারাবির হাতে দিয়ে বলল
_ ভালো করে পড় একটু আগে তোর সাথে আমার রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে।
ফারাবি অবাক চোখে তাকায়। একটু আগে যে পেপারে সাইন করেছে তা রেজিস্ট্রি পেপার ছিলো।
ফারহানের সাথে ওর রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে।
ফারাবি চিৎকার করে উঠে। পেপার ছিঁড়ে ফেলে হুংকার দিয়ে বলল
_ আমি মানি না এই রেজিস্ট্রি। আপনি আমার সাথে
ফারাবি আর কিছু বলতে পারি নি তার আগেই সর্বশক্তি দিয়ে চর মেরে দেয় ফারহান।
ফারাবি ছিটকে পরে বেডের উপর।
ফারহানের চোখ থেকে অগ্নিশিখা ঝরছে। কপালের রগ ফুটে উঠেছে।
ফারাবির চোখ ফেটে পানি ঝরছে।
ফারাবি কে বেডে সাথে চেপে ধরে ফারহান। ফারাবি ভয় পেয়ে যায়। ফারহান নিজের রাগ সংবরন করে বলল
_ একটা কথা ও বলবি না তুই। তুই অলরেডি আমার বউ। তুই মানিস আর না মানিস তুই শুধু আমার।
ফারাবি চমকে উঠলো। নিজেকে ছাড়ানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টা করতে লাগল।
কিন্তু ফারহানের সাথে পেরে উঠলো না। ফারহান বাঁকা হেসে বলল
_ তুই যদি কবুল না বলিস তাহলে তোর সাথে খারাপ কিছু হয়ে যাবে।
আমি জোর করে কিছু করতে চাচ্ছি না। কিন্তু তুই যদি কবুল না বলিস তাহলে রেজিস্ট্রি পেপার অনুযায়ী আমি স্বামীর অধিকার নিতে পেতে বাধ্য হবো।
ফারাবি ভরকে যায়। ফারহান বাঁকা হাসে। ফারাবি কাঁপতে থাকে , কি হচ্ছে ওর সাথে। এক মুহুর্তে সব পাল্টে যায় । তিন কবুল উচ্চারন করে ফারহানের হাতে নিজের নামের দলিল তুলে দেয় ওহ।
এভাবেই বিয়ে টা হয়ে যায় ওদের।
ফারাবি কেমন নিশ্চুপ হয়ে গেছে। রোবটের মতো এক দিকেই তাকিয়ে আছে। ফাস্ট এইডস বক্স এনে ফারাবির হাতে ড্রেসিং করে দেয় ফারহান।
ফারাবি কে আঘাতে করে ভালো নেই ওহ।
কষ্ট হচ্ছে খুব , তবে ফারাবি কে নিয়ে ইনসিকিউর ছিলো ওহ।
তাই বাধ্য হয়ে মেয়েটার উপর জোড় খাটায় ওহ।
ফারাবি রক্ত মাখা হাত টা দেখে ফারহানের বুকে চিন চিন ব্যাথা শুরু হয়ে গেল।
আচমকাই শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নেয় ফারাবি কে।
ফারাবি কেঁপে উঠে, ওর সব এলোমেলো হয়ে গেছে।
ফারহানের সাথে নিজের সম্পর্ক টা বুঝে উঠতে পারছে না ওহহ।
ফারহানের চোখের অশ্রু কনা ফারাবি দেখতে পেলো না।
ফারাবির গায়ে আঘাত করে সহস্র গুন কষ্ট পাচ্ছে ওহ।
মেয়েটা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে ফারহান নিজেকে সামলাতে পারে নি।
চোখের পানি আড়াল করে ফারাবি কে নিয়ে গাড়ি তে বসিয়ে দেয় ফারহান।
ফারাবি কে বাড়িতে পৌছে দেয়। ফারাবি এতো বড় শকড হয়েছে যে নিজেকে সবার থেকে আড়াল করে রাখে।
দশ দিন কারো সাথে একটা কথা ও বলে নি ওহহ।
পনের দিন পর ই ফারহান চলে যায় সিঙ্গাপুর। ফারাবি একা হয়ে যায় , বার বার মাথায় আসে ফারহান তাকে ফেলে চলে গেছে।
ভেতর থেকে আর্তনাদ চলে আসে। স্বামী নামক মানুষ টা তাকে ফেলে রেখে চলে গেছে।
জোড় করে বিয়ে কেন করলো তাহলে ?
সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। নিজেকে সামলে নিতে বছর পেরিয়ে যায়। আর তৈরি হয় চাঁপা অভিমান সাথে এক আকাশ সমান ভালোবাসা ”
দমকা হাওয়া বইছে, ঝড় হবে বোধহয় ফারাবি কে জড়িয়ে ধরলো ফারহান।
ফারাবি সরস হেসে বলল
_ ধন্যবাদ আপনাকে আমার সাথে জোড় করার জন্য।
আপনি যদি সেদিন জোড় করে বিয়ে না করতেন তাহলে আমি কখনোই আপনাকে পেতাম না।
ফারহান বুক ভরে শ্বাস নিলো। ব্যর্থ প্রেপিক নয় ওহ , পূর্ন হয়েছে ওহ।
ভালোবাসা দিয়ে জয় করেছে , শুরুটা অন্যায় ভাবে হলে ও জয় করে নিয়েছে ওর প্রেয়সী কে।
ফারহান অনুনয়ে স্বরে বলল
_ ফারাবি একটা কথা দিবি ?
ফারাবি প্রশ্নবোধক দৃষ্টি তে তাকালো। ফারহান আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল
_ কখনো একা ফেলে যাবি না তো ?
সবাই দূরে ঠেলে দিলে ও আমাকে নিঃস্ব করে দিবি না তো ?
ফারাবির চোখ ছলছল করে উঠলো। স্বপ্নে ও ভাববে না ওহ , ফারহানকে ছাড়া ওহহ বাঁচতে পারবে না।
এই মানুষটার আত্মার সঙ্গে মিশে গেছে ওহ।
ফারহানের চোখে এক ফোঁটা গরম অশ্রু কনা ফারাবির হাতে পরে।
ফারাবির বুক টা কেঁপে উঠে। ফারহানে পায়ের উপর পা রেখে গলা জড়িয়ে ধরে ফারাবি।
ফারহানের গালে চুমু খেয়ে নেয় ফারাবি।
তারপর কান্নামিশ্রিত কন্ঠে বলল
_ কখনো না । আমি কখনো ছাড়বো না আপনাকে।
আমি যদি আপনার বউ হই তাহলে আপনি ওহ আমার স্বামী।
আর মেয়েদের বিয়ের পর স্বামী আপন হয়ে যায়।
পবিত্র কোরআনের বানী উচ্চারন করে আপনার নামে নিজেকে রাঙিয়েছি।
কখনো আপনাকে ছাড়বে না ফারহান, কখনো না।
ফারহানের বুকে প্রশান্তি নেমে যায়। ফারাবির হাত শক্ত করে জড়িয়ে নেয়।
ওদের দুজন কে আলাদা করার আর শক্তি কারো নেই।
সৃষ্টিকর্তা ওদের পূর্ন করেছে।
*