#অজানা_তুমি
#রুবাইতা_রুহি (ছদ্ননাম)
#পর্ব-১৭
রাতের বেলা ফ্যান,লাইট অফ করে ফ্লোরে বন্ধ গ্লাসের নিচে আকাশের দিকে মুখ করে তাকিয়ে আছি।মাথায় আছে হাজারো চিন্তাভাবনা।আজকে হয়তো পূর্ণিমা!ঠিক জানা নেই।কিন্তু আকাশে থালার মতো গোল চাঁদ উঠেছে।চাঁদের এক পাশে রয়েছে ঘন কালো মেঘ।সমস্ত আকাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তারা জ্বলজ্বল করছে।মনে মনে নিজের কল্পনা শক্তি কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন রকমের আকৃতি তৈরি করছি।মা এগুলো শেখাতো।ভাত খেতে না চাইলে সোজা আমাকে বারান্দায় নিয়ে এসে রাতের আকাশে তারা গুনতে বলতো।তারপর তারা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানানো শেখাতো।এদিকে আমি এগুলো করতে ব্যাস্ত থাকতাম আর ফাঁকেফাঁকে মা আমাকে ভাতের নালাগুলো মুখে দিয়ে দিতো।খাইয়ে দাইয়ে বাবার সাথে মুভি দেখতে চলে যেতাম।যদিও ছোট ছিলাম মুভি সম্পর্কে বেশি কিছুই জানতাম।কিন্তু তবুও বাবার খুশি আর আগ্রহ দেখে আমিও কৌতুহল মেটাতে বাবার কোলে বসে পড়তাম।মা পপকর্ণ ভেজে নিয়ে আমাদের সাথে যোগদান করতো।বাবা বেশিরভাগই ডিটেক্টিভ,বোমকেশ,রহস্যময় এই ধরণের মুভিগুলো বেশি দেখতো।এইসব দেখে আমারও গোয়েন্দাগিরি করার শখ জাগে।তাই তো আজকে বেশি সাহস দেখাতে গিয়ে অকাম করে এসেছি।মুখ থেকে “ছক” করে শব্দ বের হলো।আজকে যেনো মেঘ মানত করেই রেখেছে যে সে আজকে কোনোভাবে পৃথিবীতে কোনো প্রকার আলো আসতে দেবেই না।কিন্তু চাঁদও দমে যাওয়ার পাত্রী নয়।কেউ কারো থেকে কম নয়।একজন এই মহাবিশ্ব আলোকিত করতে চাইছে তো আরেকজন অন্ধকার।এক পর্যায়ে মেঘই জয়ী হলো।ঢেকে দিলো সুন্দর,ঝকঝকে আলোকিত চাঁদকে আর আধারে বিলিয়ে দিলো সারা পৃথিবীকে।এতোক্ষনের চাঁদের মৃদু আলোতে সবকিছু আলোকিত থাকলেও এখন অমাবস্যার মতো সবকিছু আধারে ঢেকে গেছে।আড়াল হয়ে গেছে ঝকঝক করা তারাগুলো।অন্ধকারে এক প্রকার হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে।কেনো এরকমটা হচ্ছে আমার সাথে?কিসের শত্রুতা আমার সাথে এদের?যদিও রিদ্রিশকে আর দেখতে পাই নি।কিন্তু তবুও মনের মধ্যে খুটখুট করছে।এছাড়াও আজকে ঠিক ওইখানে যখন লুকিয়ে ছিলাম তখন কারো পরিচিত গন্ধ নাকে ভেসে এসেছিলো।মনে হয়েছিলো খুব চেনা জানা কেউ।কিন্তু মনে পড়ছে না।আজকে হঠাৎই আয়রান নাম প্রাণীটিকে খুব মনে পড়ছে।ওইদিনের পর থেকে আর একবারো আমার সামনে আসেনি।রাগ করে আসেনি?নাকি অন্যকোনো কারণে?আড়চোখে একবার বিছানায় পড়ে থাকা ফোনের দিকে তাকালাম।কিছু একটা ভেবে ফ্লোর থেকে উঠে গিয়ে ফোনটা হাতে নিলাম।লক খুলে কল লিস্টে ঢুকলাম।এখানে কোন কাজে এসেছি নিজেও বুঝতে পারছি না।তঁবে যখন ঢুকেই পড়েছি তখন কেউকে না কেউকে কল দিয়েই তারপর ফোনটা হাত থেকে রাখবো।হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে কল লিস্টে ড্যান্স করছিলাম তখনই “আয়রন ম্যান” নামে সেভ করা নাম্বারটি চোখের সামনে লাফিয়ে উঠলো।আচমকাই হার্টবিট টিরিংবিরিং করতে লাগলো।এটা ঠিক হয় নি।কাপাকাপি আঙ্গুলে বেখালি হয়ে ওই “হেই হেই” নাম্বারেই কল ঢুকে গেলো।চোখ পড়তেই ফটাফট কেটে দিলাম।প্রায় ঢুকে গিয়েছিলো হয়তো একটুর জন্য বেচে গেছি।বুঝলাম না যার কাছ থেকে এতো দূরে দূরে থাকতে চাই তাকেই কেনো বারবার মনে পড়ে।সত্যি বিরক্তকর।তখনই রিংটোনের শব্দে লাফিয়ে উঠলাম।কিছুটা আন্দাজ করতে পারছি হয়তো কে কল দিতে পারে।আড়চোখে তাকিয়ে কল রিসিভ করলাম।ওইপাশ থেকে ঘনঘন শ্বাস প্রশ্বাসের মৃদু শব্দ শোনা যাচ্ছে।অপেক্ষায় আছি যদি কোনো সাড়া পাই।কিন্তু ফলাফল শূন্য।বুঝলাম না নিজেই কল দিয়ে আবার সাইলেন্ট মুডে চলে গেলো কেন?এই নিস্তব্ধতা কাটিয়ে ওঠার জন্য একটু গলা ঝেড়ে নিলাম।তবুও কোনো রেসপন্স পাচ্ছি না।উল্টো ওপাশ থেকে শ্বাস প্রশ্বাসের আওয়াজ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।এমন লাগছে যেনো কোনো শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগির সাথে কথা বলছি।শ্বাস কষ্টে কথা বলতে পারছে না।আচ্ছা তাহলে কি উনি অসুস্থ?বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম।আর চুপচাপ থাকতে পারছি না।একটা মানুষ কল দিয়ে এভাবে চুপচাপ থাকে কি করে?আমার তো কথায় পেট ফুলে উঠেছে।তাই আরো একটু ভালোভাবে গলা ঝেড়ে,মুছে,পরিস্কার করে ধীর কন্ঠে বললাম
-“”শুনছেন?””
ওপাশ থেকে কোনো রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছে না।হচ্ছে টা কি?এভাবে তো প্রচুর অস্বস্তিতে পড়ে যাচ্ছি।একেই তো অনেকদিন হলো দেখা হয় নি তারপর আবার এই ঢং।ভালো লাগছে না।আমিও কান থেকে মোবাইল টাকে একবার বাতাস খাইয়ে পুনরায় কানে লাগিয়ে বালিশ জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লাম।এভাবে যদি ভালো লাগে থাকতে তাহলে থাকুক!কল উনি দিয়েছেন তাই ব্যালেন্স ও ওনারই বেশি কাটবে।আমারটা জায়গা মতোই থাকবে।ক্ষতি ওনার তাই যদি চুপচাপ থাকতে পারে আরো তাহলে থাকুক না!আমিও বলবো না কোনো কথা।দেখি কি করে!আরো কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইলাম।এখন তো ঘুম আসছে।কি করি?তখনই ওপাশ থেকে শীতল কন্ঠে কেউ ডেকে উঠলো
-“”হেই!””
এই তো মহাশয় মুখ খুলেছেন।যাক ভালো।এখন কথা বলবো না।আমার বেলায় তো বোবায় ধরেছিলো।এখন প্রতিশোধ হবে।আবার ওইপাশ থেকে কেউ ধরা গলায় বললো
-“”কল কেনো দিয়েছো?””
শুনে থমকে গেলাম।ঠিকই তো ফোন কেনো দিলাম?কি কারণে দিলাম?কি বলবো?ঠোঁট থরথর করে কাঁপছে।মনে হচ্ছে চুড়ি করে ধরা পড়ে গেছি।ওপাশ থেকে আবারো বললো
-“”কি হলো?কথা বলো?মিস করছিলে আমাকে?””
মিস?মিস করছিলাম?নাহ নাহ ওইটা বেখায়েলিতে কল চলে গেছে।আমি ইচ্ছে করে দেইনি।এই বলে নিজেকে মিথ্যা শান্তনা দিতে লাগলাম।ওপাশ থেকে অনবরত এই একই প্রশ্ন করে যাচ্ছে।মাথার ভিতরে কিছু উত্তর সাজিয়ে নিলাম তারপর বললাম
-“”ভুলে চলে গিয়েছিলো।””
-“”রিয়েলি?””
-“”হুম!””
-“”বুঝলাম।কি করছো?ডিনার শেষ?””
-“”নাহ এখনো শেষ হয়নি।শুয়ে আছি।আপনি?””
-“”এইতো পুকুর পারে বসে আছি!””
-“”এই এতো রাতে পুকুর পারে?””
-“”হুম!আসতে চাও?””
-“”না না থাক।আপনিও বেশিসময় থাকবেন না।শাঁকচুন্নিতে যখন ধরবে তখন বুঝবেন।””
ওপাশ থেকে মৃদু হাসির শব্দ পেলাম।আজকে অন্য সবদিনের তুলনায় উনি খুব কম কথা বলছেন।ব্যাপারটা ঠিক বোধগম্য হচ্ছে না।হঠাৎ ওপর পাশ থেকে কোমল কন্ঠে কেউ বলে উঠলো
-“”আমি মনে হয় তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি,তাই না?””
বাক্যটি শুনে অজানা কোনো কারণে বুকের ভিতর ছ্যাত করে উঠলো।এরকম কেনো বলছেন উনি?বিষাদে মনটা হাহাকার করে উঠলো।অনুতপ্তটা ঘিড়ে ধরেছে সারা মন,মস্তিষ্ক।ওইদিন হয়তো একটু বেশিই রিয়েক্ট করে ফেলেছি।উনি হয়তো ভিতরে ভিতরে কষ্ট পেয়েছিলেন আমার এই ব্যবহারের জন্য।কিছু বললাম না।চোখ লেগে আসছে।ওপাশ থেকেও কোনো আওয়াজ আসছে না।
সকালে অনবরত কলিংবেলের শব্দে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে।উঠে গিয়ে দরজা খুলতেই বিষ্মিত হয়ে গেলাম।এনারা এখানে কেন?কি করেছি আমি?
#অজানা_তুমি
#রুবাইতা_রুহি (ছদ্ননাম)
#পর্ব – ১৮
বাইরে পুলিশ সদস্যদের দেখে আতঁকে উঠলাম।ওনাদের পিছনেই রাগী মুখভঙ্গি করে দাঁড়িয়ে আছে বাড়িওয়ালা সহ তার পরিবার।আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।ভিতরে অজানা উত্তেজনা কাজ করছে।তখনই একজন মহিলা পুলিশ বলে উঠলো
-“”আপনাকে মার্ডার করার অপরাধে গ্রেফতার করা হচ্ছে।””
শুনে হতবুদ্ধি হয়ে গেলাম।কি বলছেন এনারা?আমি মার্ডার করেছি?কিন্তু কাকে?কেনো করবো?করলেও আমি তো এ ব্যাপারে কিছুই জানি না?কি হচ্ছে এসব?আমি ঘাবড়ে না গিয়ে নিজেকে শান্ত করে ওনাদের উদ্যেশ বললাম
-“”মিথ্যা কথা।আপনারা না জেনে শুনে আমাকে মার্ডারের অপরাধে গ্রেফতার করতে চান,প্রমাণ আছে আপনাদের কাছে?””
তখন ওনাদের মাঝে ইন্সপেক্টর বলে উঠলেন
-“”আমরা কোনোদিন প্রমাণ ছাড়া কেউকে গ্রেফতার করতে আসি না।এই সাইদ প্রমাণগুলো বের করো!””
তখনই সাইদ নাম লোকটি ব্যাগ থেকে একটি ওরণা বের করলেন।দেখে হতবাক হয়ে গেলাম।এটা তো আমারই ওরণা।কিন্তু আমি তো কারো খুন করি নি।সেই মুহুূর্তে ইন্সপেক্টর আবার বলতে লাগলেন
-“”আমরা একজনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে এই ওরণাটা উনি আপনার শরীরে দেখেছিলেন।এবং উনি এটাও বলেছেন যে আপনাকে ওই পুরোণ বিল্ডিং থেকে দৌড়ে আসতে দেখেছিলেন আর আপনার পরনে জুতোয় রক্তও লেগেছিলো।এছাড়া আপনার জামা-কাপড়েও রক্ত দেখা গেছে।এইসব প্রমাণই বলে দিচ্ছে আমরা যে গ্যাংদের খুজছি তাদের সাথে আপনিও জড়িত।তাই আপনাকে আটক করা হচ্ছে।””
তখন একজন মহিলা পুলিশ আমার হাতে হ্যান্ডকাফ পড়াতে লাগলেন।আমি পাথর হয়ে শুধু তাদের কথা ও কাজকর্ম দেখছি।সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।আমার সামনে এই বাড়ির মালিকের বউ দাড়িঁয়ে খুব খারাপ ভাবে নিজের বিকৃত করে বলছে
-“”হায় হায় এই খুনি মাইয়ার লইগ্গা আমাগো মান সম্মাডা গেলো।কতবড় ডেইন্চরাচ এই মাইয়া।বাইরে বাইরে আরো কি কি করে খোদা জানে!আমি তো একদিন এই মাইয়ারে বাসার নিচে একটা পোলার লগে কতাও কইতে দেখছি!আল্লায় জানে বিছনায় কতো কতো পোলার লগে ফুরতি করছে।কেউ আর আমাগো বাড়িত ভাড়া উঠবো না।এই মুখপুড়ি মনে হয় ৩মাসের ভাড়াডাও দেয় নাই!এই রাদুলের বাপ।তুমি কিছু কও নাই কেন আমারে?এতোদিন ভাড়া পিছায়ে পিছায়ে নিছো?কারবার কি হ্যা?এই মাইয়ার লগে কি চলে তোমার?””
বাড়িওয়ালা নিজের টাক মাথা চুলকাতে লাগলো।আমি মাথা নিচু করে দাড়িঁয়ে আছি।কি বলবো?কিছুই যে আর বলার নেই।এখন প্রমাণ ছাড়া কিছু বললেও কেউ আমার কথা বিশ্বাস করবে না।অসহায় আমি!কতোটা অসহায় আর নিজের নামে এই জঘন্য মিথ্যা অপবাদগুলো উঠলে শুধু সুইসাইডের কথাই মাথায় আসে সেটাই উপলব্ধি করতে পারছি।মহিলা আবারও চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলতে লাগলো
-“”এই মা***** যাওয়ার আগে আমাগো টাহা দিয়া যা।””
কিছুই বলছি না আমি।কোনো প্রতিক্রিয়া নেই আমার মাঝে।শূন্য শূন্য লাগছে সবকিছু।কেউ নেই আমাকে একটু সাহায্য করার,কেউ নেই সত্যি কথাটি বলার যে আমি নির্দোষ।এই!এই সবকিছু মিথ্যা কথা।কতোটা খারাপভাবে ফেঁসে গেছি নিজেও বুঝতে পারছি না।বিষাক্ত কিছু গন্ধ নাকে ভেসে আসছে।বিষাদে সারা মন ঢেকে গেছে।গলার ভিতর শুকিয়ে মরুভূমির রূপ ধারণ করেছে।মনে হচ্ছে মাটি ফেটে পানির আর খাবারের অভাবে নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে চাষিদের ফসল।তখনই বাইরে থেকে আকাশে গুন গুন করে শব্দ হলো।মাথা নিচু করে অপরাধিদের মতো দাড়িঁয়ে আছি।পার্থক্য এটাই অপরাধীরা অপরাধ করে মাথা নিচু করে কিন্তু আমি অপরাধ না করেও মাথা নিচু করে দাড়িঁয়ে আছি।আমার হাতের দুই পাশে দুইজন মহিলা পুলিশ আমার হাতের কবজি শক্ত করে ধরে আছে।এতে মনে হচ্ছে হাত ছিঁড়ে যাবে এমনাবস্থা।বাড়িওয়ালার বউ এদিকে আমার মুখের একদম সামনে দাড়িঁয়ে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে কথা বলেই যাচ্ছে আর বিভিন্নভাবে মুখভঙ্গি চেন্জ করছে।এতে আমার মুখের উপর ওনার থু থু ছিটে ছিটে পড়ছে। এখানে সিচুয়েশন ভিন্ন থাকলে হয়তো এই মহিলাকে ভালোভাবে ঝেড়ে দিতাম কিন্তু এখন ভিতর থেকে কোনো অনুভূতিই পাচ্ছি না আমি।যেন মরে গিয়েও বেচে গেছি।মহিলাটি কিছু সময় ভাড়া নিয়ে হাঙ্গামা করে শেষ পর্যায়ে বললেন
-“”বুঝছি কোনো কাম হইবো না।যা করার আমারেই করতে হইবো!””
বলে মহিলাটি আমার বেডরুমের ভিতর ঢুকে সোজা আমার আলামরিতে হাত দিলেন।আলামরির দুয়ার খুলে ভিতরে মায়ের রাখা কিছু সৃতি থাবা দিয়ে নিতে লাগলেন।চোখে তীব্র লোভ দৃশ্যমান।মায়ের একটা সোনার নুপুর,মা-বাবার এন্গেইজমেন্টের দুইটা ডাইমোনন্ডের আংটি,বাবার দেওয়া আমার নামের ছোট্ট একটা ডাইমন্ডের লকেট।শেষে ওইগুলো হাতে নিয়ে আবারো ফিরে আলমারি থেকে মায়ের যতো শাড়ি ছিলো সব নিয়ে নিলেন।তারপর বেরিয়ে এলেন।ওনার চোখে তীব্র লোভ দেখে ভিতরে ভিতরে ঘৃণায় গুমড়ে মরছি।কিন্তু আটকানোর শক্তিটুকু পাচ্ছি না।প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে।মনে হচ্ছে আমি দীর্ঘ কতো কতো বছর ধরে কোনো স্বপ্ন বা কোমায় আছি।মহিলাটি মুখ ভেংচি দিয়ে আবার শেষ নিংশ্বাসটুকুও নিজের সাথে নিয়ে গেলো।ওইখানে আমার মা-বাবার স্পর্শ ছিলো।চোখ থেকে এক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো। এতোকিছু হয়ে গেলো কিন্তু পুলিশরা ওনাদের কোনো বাধা দিলেন না।এত্তোক্ষনে এতো চিল্লা পাল্লায় বাড়ির সব ভাড়াটিয়া এসে হাজির হয়েছে।সবাই নাটক দেখছে চুপচাপ দাঁড়িয়ে। এক পর্যায়ে আমাকে টেনে বের করে গাড়িতে ওঠানো হলো।আর রওনা হলো নিজেদের গন্তব্যের উদ্যেশ।জানি না আর কি কি হতে চলেছে আমার সাথে।আর কি কি সহ্য করতে হবে।জানি না আমি কিছু।কিচ্ছু না!
____চলবে___
[