#প্রেম_পায়রা (২)
#অজান্তা_অহি (ছদ্মনাম)
#পর্ব___১০
‘কি হয়েছে আপনার? এক্সিডেন্ট করেছেন?’
তিথির উদ্বিগ্ন কন্ঠ শুনে সম্পদ একটু হাসার চেষ্টা করলো। কিন্তু খুব একটা সুবিধা করতে পারলো না। ঠোঁটের কোণের কাঁটা জায়গার জন্য ঠোঁট প্রসারিত করতে পারলো না। ঝিমানো কন্ঠে বলল,
‘সিরিয়াস কিছু নয়। অতি সামান্য।’
‘এত জায়গা আঘাতের চিহ্ন থাকার পরো আপনার কাছে অতি সামান্য মনে হচ্ছে?’
তিথির কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে এলো। চোখের কিনারায় পানি জমতে লাগলো। সম্পদ ভীষণ অপ্রস্তুত হয়ে গেল। আশপাশে একজন দুজন করে মানুষ জমতে শুরু করেছে। পাঁচ তলার বেলকনি থেকে কিছু উৎসুক মুখও দেখা যাচ্ছে। এখানে আর এক মুহূর্ত সময় ব্যয় করা যাবে না। সে পকেট হাতড়ে দ্রুত টাকা বের করলো। ড্রাইভারের ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে তিথির দিকে তাকালো। কপাল কুঁচকে বলল,
‘এক্সিডেন্ট করেছি আমি। তুমি কাঁপা-কাঁপি করছো কেন? কাঁপা-কাঁপি বাদ দিয়ে আমায় একটু সাহায্য করো। রুম অবধি পৌঁছাতে হবে।’
তিথি বলার মতো কিছু খুঁজে পেল না। বুকের ভেতর অজানা আতংক ভর করেছে তার। কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছে বার বার। মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের করতে পারছে না। বোধশূন্যের মতো সে সম্পদের কাছে গেল। সিএনজির ভেতরে মাথা গলিয়ে দিয়ে সম্পদের বাহু চেপে ধরলো। সঙ্গে সঙ্গে সম্পদ আর্তনাদ করে উঠলো। অস্ফুটস্বরে বলল,
‘আস্তে! ব্যথা পাচ্ছি।’
ছিটকে হাতটা ছেড়ে দিল তিথি। অপরাধ বোধ তীব্র হলো। ছাড়া ছাড়া ভাবে বলল,
‘বুঝতে পারিনি। কোন হাতে ব্যথা নেই?’
সম্পদ এক নজর তিথির দিকে তাকিয়ে সিএনজির কিনার ঘেঁষে সরে এলো। ড্রাইভারকে উদ্দেশ্য করে বলল,
‘ভাই, একটু সাহায্য করুন। একটু আমাকে ধরে রুমে দিয়ে আসতে পারবেন?’
‘ঠিক আছে।’
বলে ত্রিশোর্ধ্ব লোকটি বের হলো। আস্তে আস্তে সম্পদকে সিএনজি থেকে নামাল। কাঁধের উপর সম্পদের বাহু চেপে ধরে সম্পূর্ণ ভর নিজের উপর নিল। সম্পদ চোখ মুখ কুঁচকে এক পায়ে দাঁড়ালো। দাঁতে দাঁত চেপে ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করছে সে। তিথির দিকে চেয়ে কোনোরকমে বলল,
‘গাড়ির ভেতর থেকে মেডিসিনের ব্যাগটা হাতে নাও।’
তিথি দ্রুত ব্যাগটা হাতে নিল। সম্পদের বলার অপেক্ষা করলো না। এক হাতে ব্যাগ নিয়ে আরেক হাতে তার বাম বাহু চেপে ধরলো। হাঁটতে যাতে সুবিধা হয়। যন্ত্রণা ক্লিষ্ট মুখে সম্পদ এক পলক তিথির দিকে তাকালো। তারপর এক পায়ে ভর দিয়ে সাবধানে সিঁড়ি মাড়িয়ে উপরে উঠতে লাগলো।
তিন তলার ডান সাইডের ফ্ল্যাটের সামনে এসে সম্পদ দাঁড়িয়ে পড়লো। নিজের সম্পূর্ণ ভরটুকু তিথির উপর ছেড়ে দিল। ড্রাইভারকে বলল,
“ধন্যবাদ আপনাকে ভাই। এবার নিচে যান। সিএনজি অন্য কেউ চুরি করতে পারে।’
‘রুমে দিয়ে আসি?’
‘না, না! এটুকু যেতে সমস্যা হবে না।’
‘আচ্ছা, সাবধানে।’
ড্রাইভার হাস্য বদনে নিচে নামলো। তিথি দরজা খুলে ক্ষণিকের সময় সম্পদের দিকে চেয়ে রইলো। সম্পদের মুখে যন্ত্রণার ছাপ স্পষ্ট। প্রচন্ড ব্যথিত হলো সে। এত কষ্ট পাচ্ছে কেন মানুষটা? সম্পদের অসাড় দেহটাকে প্রায় টেনে হিঁচড়ে রুম অবধি নিয়ে গেল সে। বিছানায় বসিয়ে ঘন ঘন শ্বাস টানলো। প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে গেছে সে। এতবড় শরীর সামাল দেওয়া যা তা কথা? একটু ধাতস্থ হয়ে বলল,
‘বিছানায় শুয়ে থাকুন।’
সম্পদের দু কাঁধে হাত রেখে বিছানায় শুইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে সম্পদ চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো,
‘আহ! এখানেও ব্যথা।’
তিথি আচমকা হাত সরিয়ে নিল। কেমন অসহায় বোধ করছে সে। সম্পদের কোথায় ব্যথা আর কোথায় ব্যথা নেই সেটা ধরতে পারছে না। দু হাত ক্রমাগত কাঁপছে তার। সম্পদ নিজে থেকে শুয়ে পড়লো। পিঠের কাছে জ্বলুনি হচ্ছে। কিন্তু প্রকাশ করলো না। তিথি ব্যান্ডেজ করা পা টান টান করে রাখলো। আলতো করে পায়ের নিচে একটা বালিশ দিয়ে উঁচু করলো। গভীর আবেগ মিশিয়ে জিগ্যেস করলো,
‘এক্সিডেন্ট করলেন কি করে? এতটা অসাবধান কেউ হয়?’
তিথির কন্ঠ শুনে সম্পদ চমকে গেল। এই ক্ষনস্থায়ী সময়ের মোহময়ী কন্ঠটা বুকের কোথাও গিয়ে তীরের মতো বিঁধলো। কেমন অদ্ভুত অনুভূতি বুকের গহীন থেকে উৎপন্ন হয়ে ছড়িয়ে পড়লো সমস্ত দেহে। এই একই অনুভূতি হয় তিথির সাথে ফোনে কথা বলার সময়। ফোনের অপর পাশ থেকে মেয়েটার কন্ঠ শুনলে বুকের ভেতর ধুকপুক করে তার। হার্টের গতিবিধি বেড়ে যায়। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে সে তিথির সাথে ফোনে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রয়োজনীয় যা কথাবার্তা সব তারা এসএমএসের মাধ্যমে সেড়ে ফেলে। আজও তিথির আবেগ মিশ্রিত কন্ঠ শুনে প্রচন্ড ঘাবড়ে গেল সে। খুব কাছে থেকে নতুন এক তিথিকে আবিষ্কার করলো যেন। যে তিথি তার দুঃখে দুঃখ পায়। তার কষ্টে কষ্ট অনুভব করে।
‘কি হলো? ব্যথা পেলেন কিভাবে?’
তিথির ফের প্রশ্নে সম্পদের ঘোর কাটলো। এক নজর তাকিয়ে দেখলো, তিথি কাতর দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে আছে৷ দ্রুত চোখ সরিয়ে নিল সে। শরীর এলিয়ে দিয়ে বলল,
‘বাইক এক্সিডেন্ট হয়েছে। উবারে করে ফেরার পথে প্রাইভেট কারের সাথে ধাক্কা লেগেছিল। অল্পের জন্য মারাত্মক ইনজুরির হাত থেকে বেঁচে গেছি। বাকি সবারও অল্প বিস্তর কেটে ছিঁড়ে গেছে এই যা! আমার বাম পায়ের উপর বাইকের এক অংশ এসে পড়েছিল। সেজন্য গোড়ালিতে ফ্র্যাকচার হয়েছে। মেজর না, মাইনর ফ্র্যাকচার। ডক্টর বলেছে কিছুদিন বেড রেস্টে থাকলে ঠিক হয়ে যাবে।’
‘এত স্বাভাবিক ভাবে বলছেন কেন? বাইকটা যদি পায়ের উপর না পড়ে মাথার উপর পড়তো কি হতো একবার ভেবে দেখেছেন?’
‘কি আর হতো? বড়জোর মরে যেতাম।’
সম্পদের এই ছোট্ট কথায় তিথির মুখ উপচে কান্না বের হতে লাগলো। ঠোঁট কামড়ে কিছুক্ষণ অশ্রুগ্রন্থির সাথে যুদ্ধ চালিয়ে গেল। কিন্তু সফল হলো না। পরাজয় সন্নিকটে বুঝতে পেরে এক দৌঁড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল।
তার গমনপথের দিকে কৌতূহল নিয়ে কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো সম্পদ। বুক চিঁড়ে লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস নির্গত হলো। তার অবচেতন মন দিন কে দিন তিথির উপর কেমন দূর্বল হয়ে পড়ছে। সে বুঝতে পারছে বিষয়টা কিন্তু মানতে নারাজ। তিথির উপর সে দূর্বল হতে চায় না। তার যুক্তিবাদী মন বলে, একটা মানুষের প্রতি এত দ্রুত কেউ দূর্বল হয়ে পড়তে পারে? পারে না! তক্ষুণি আরেকটা মন বিদ্রোহ ঘোষণা করে বলে, অবশ্যই পারে। তোমাদের বিয়ের প্রায় এক মাস হতে চলল। ইজ ইট নট এনাফ টু ফল ফর সামওয়ান?
সম্পদ হাঁসফাঁস করতে লাগলো। তার মস্তিষ্কের কোথাও সেট আপ হয়ে গেছে যে তিথি তার বউ। তিন কবুল বলে, আল্লাহর কালাম সাক্ষী রেখে সে তাকে বউ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটা কি যাচ্ছে তাই ব্যাপার? তিথিকে দেখলে তার কেমন বউ বউ ফিলিংস আসে। মেয়েটা মাথায় কাপড় দিয়ে তার সামনে দিয়ে যখন ঘুরঘুর করে বা নিঃশব্দে হাঁটাচলা করে তার হার্টবিট একটু একটু করে বেড়ে যায়। বুকের ভেতর ধুপধাপ পা ফেলার শব্দ অনুভব করে। মনে হয় তিথির পা ফ্লোরে পড়ছে না, তার বুকের জমিন দিয়ে হাঁটাচলা করছে। খুবই অযৌক্তিক চিন্তা ভাবনা। কিন্তু তার মন এসব মানতে নারাজ। বাসায় যতক্ষণ থাকে নিজেকে লুকিয়ে সে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ভাবে তিথির গতিবিধি পরখ করে। তিথি কত সেকেন্ড পর পর শ্বাস নেয়, কত সেকেন্ড পর পর নিঃশ্বাস ফেলে, কতক্ষণ পর পর চোখের পলক ফেলে সব তার মুখস্থ হয়ে গেছে। রান্নার সময় কতবার সে কানের পাশে খোলা চুল গুঁজে, চায়ে কয় চামচ চিনি খায়, ডেইলি কয় গ্লাস পানি পান করে সব মুখস্থ তার। এমনকি ঘুমের মধ্যে কতবার কাত ঘুরে এটাও সে গুণে দেখেছে৷
সে যে আস্তো এক তিথিকে আবিষ্কার করেছে সেটা তিথির অজানা। শুধু তিথির নয়, তার সচেতন মনেরও অজানা। তার সচেতন মন এসব হেয়ালিপনা, এসব পাগলামি মানতে নারাজ। শুধুমাত্র তিথির থেকে দূরে থাকার জন্য, তাকে ভুলে থাকার জন্য সে কিছুদিন যাবত কত চেষ্টা করছে। অফিস শুরু হওয়ার আগেই বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ছে। অফিস শেষে এখানে ওখানে দেরি করে বাসায় ফিরছে। ছুটির দিনগুলোতে ভোরবেলা বের হয়ে যায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার অজুহাত করে। রাতের বেলা ঝটপট দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে। আজও বন্ধুদের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিল। কিন্তু সারাদিন সে টিএসসির আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। বটতলার ছাউনিতে বসেও তার তিথির কথা মনে পড়েছে। শাহবাগের গ্রন্থাগারে হাজারো বইয়ের ভিড়েও তার তিথির মুখটি ভেসে উঠেছে। অতঃপর ক্ষুব্ধ মন নিয়ে সে রাস্তায় রাস্তায় হেঁটেছে৷ অগোছালো ভাবে হাঁটার সময় সমস্ত ধ্যান, জ্ঞান জুড়ে শুধু তিথি আর তিথি ছিল। তখনি অসাবধানতাবশত রাস্তা পার দিতে গিয়ে বাইকের সাথে এক্সিডেন্ট করেছে। এতবড় মানুষ রাস্তা পার দিতে পারে না ভেবে তিথি তাচ্ছিল্য করবে বলে সে একটু মিথ্যে বলেছে। এক্সিডেন্টের বিষয়টা ঘুরিয়ে বলেছে। কিন্তু এটা সত্যি যে আজ মারাত্মক কোনো দূর্ঘটনা ঘটতে পারতো।
নিজের শরীরের দিকে একবার নজর বুলিয়ে ভাঙা পায়ের দিকে তাকালো। ভীষণ আফসোস হচ্ছে তার। যাকে ভুলে থাকার জন্য, যার থেকে দূরে থাকার জন্য পালাই পালাই করলো, দিনশেষে সেই তার হাতে এসে ধরা দিতে হলো। এখন সেই মানুষটার সাথে তাকে ঘরবন্দী জীবন কাটাতে হবে। একত্রে থাকতে হবে। মাত্র কয়েক গজ জায়গার অক্সিজেন গ্রহণ করতে হবে। একে অপরের নিঃসৃত কার্বনডাই-অক্সাইড মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে। তবুও কিছুই করার থাকবে না।
‘দুপুরে খেয়েছিলেন কিছু?’
তিথির কন্ঠে ফের চমকে উঠলো সম্পদ। মাথা ঘুরিয়ে দেখলো মেয়েটা নুডলসের বাটি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নুডলস থেকে ধোঁয়া উঠছে৷ বুঝতে পারলো মাত্র তৈরি করা হয়েছে। সে দুপুরে কিছু খায়নি। তবুও মিথ্যে করে বলল,
‘খেয়েছিলাম একটু।’
‘এটা খেয়ে নিন।’
তিথির কন্ঠে স্পষ্ট অধিকার বোধ ফুটে উঠেছে। যেন সে না খেলে তাকে ধরে বেঁধে জোর করে খাওয়াবে। সম্পদ দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে গেল। সে অসুস্থ, তার শরীর দূর্বল বলে তিথি কি আর তাকে ভয় পাবে না? সবসময় জোর খাটিয়ে যাবে? বিষয়টা ভেবে মুখটা মলিন হয়ে গেল তার। চিপসানো কন্ঠে বলল,
‘ক্ষুধা নেই।’
তিথি বাটিটা কাচের টেবিলের উপর রেখে এগিয়ে এলো। কোনো শব্দ উচ্চারণ করলো না। শান্ত অথচ দৃঢ় ভঙ্গিতে সম্পদকে টেনে তুলল। পিঠের নিচে বালিশ দিয়ে আধ শোয়া করে বসিয়ে দিল। সম্পদ হতভম্ব হয়ে চেয়ে রইলো শুধু। সে বেশ বুঝতে পারছে, তিথি তার অসুস্থতার সুযোগ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে তিথি চামচে নুডলস পেঁচিয়ে তার মুখের সামনে ধরে বলল,
‘হা করুন।’
‘আমি অসুস্থ ভেবে তুমি কথা শুনতে চাচ্ছো না আমার। তাই তো? ভুলে যেও না আমি কিন্তু এখনো যথেষ্ট স্ট্রং আছি। দেখতে চাও?’
তিথির ভ্রু কুঁচকে গেল। বিরক্তি নিয়ে বলল,
‘অযথা কথা কেন বলছেন। চুপচাপ হা করুন।’
‘হাউ স্ট্রেন্জ! তুমি আমাকে মেজাজ দেখানো শুরু করেছ?’
সম্পদের প্রশ্নের উপর না দিয়ে তিথি হাতের বাটিটা নামিয়ে রাখলো। কপালের খাদ গভীর করে সম্পদের গাল চেপে ধরলো। জোরপূর্বক মুখে নুডলস পুড়ে দিয়ে বলল,
‘এত কথা বলতে বারণ করেছি না?’
সম্পদ আর কিছু বলার ফুরসত পেল না। হতবিহ্বল হয়ে খেতে থাকলো। দ্বিতীয় বার নুডলুস মুখে পুড়তেই মৃদু চিৎকার করে উঠলো। ঠোঁটের কিনারায় হাত রেখে বলল,
‘এখানটায় জ্বালাপোড়া করছে৷ অনেকখানি কেটে গেছে নাকি? সাবধান।’
সম্পদের ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেল তিথি। কিন্তু কিছু বলল না। সাবধানে খাওয়াতে থাকলো। খাওয়ানোর এক ফাঁকে সে খেয়েছে কি না সেটা সম্পদ জিগ্যেস করলো। মাথা নেড়ে শুধু সম্মতি জানাল তিথি।
খাওয়ার সময় অনেক বার সম্পদ শরীর চুলকাতে লাগলো। গায়ের ভেতর কুটুর কুটুর করে পোকা কামড়াচ্ছে যেন! সেই ভোরবেলার শার্টটা এখনো গায়ে রয়ে গেছে। রাস্তায় পড়ে যাওয়ার ফলে হাতে পায়ে, শরীরে ধূলোবালি লেগে গেছে। শার্ট চেঞ্জ করতে হবে। ফ্রেশ হতে হবে। না হলে সে শান্তি পাবে না। মুখের খাবার চিবোতে চিবোতে তিথির বের হওয়ার অপেক্ষায় রইলো।
নুডলসের বাটি খালি করে সম্পদ তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলল। তিথি পানির গ্লাস বাড়িয়ে দিল। তিথির হাত থেকেই সে কয়েক ঢোক পানি খেল। শূন্য বাটিটা তিথি টেবিলের উপর রেখে বলল,
‘ড্রেস চেঞ্জ করবেন না? আমি সাহায্য করছি।’
(চলবে)