ক্রাশ পর্ব -০৯

#ক্রাশ
#পর্ব_০৯
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
মোহনা সাগরের ঠোঁট দুটি বোলাতে লাগলো।
ইসঃ কত ব্যাথায় না সে পেয়েছে?
চারটা দাঁতের ছাপ স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে।
তার নিজের উপর ভীষণ রাগ হলো।
আর নিজেকে রাক্ষস ভাবতে লাগলো।
কি করে সে সাগর কে এতো জোরে একটা কামড় দিলো?

হঠাৎ সাগর মোহনার হাত দুটি ধরে বললো ঠোঁট বুলিয়ে দিলেই কি ব্যাথা ভালো হয়ে যাবে?
ব্যাথা ভালো করার জন্য তো তাতে ঔষধ দিতে হবে।
এভাবে আফসোস না করে ঔষধের ব্যবস্থা করো।
মোহনা তখন বললো,

কি ঔষধ দিতে হবে?
আর কোথায় আছে সেটা?
তাড়াতাড়ি বলুন।
আমি নিয়ে আসছি।
আমি যেহেতু ব্যাথা দিয়েছি তাই ব্যাথাটা সারানোর দায়িত্বটাও আমার।

সাগর তখন বললো এতো অধৈর্য্য হচ্ছো কেনো?
ঔষধ আনতে কোথাও যেতে হবে না।
ঔষধ তোমার কাছেই আছে।

মোহনা সেই কথা শুনে সাগরের থেকে তার হাত দুটি সরিয়ে নিলো।
আর অন্য মুখ হয়ে দাঁড়িয়ে বললো,
কি বলছেন এসব?
আমার কাছে কোন ঔষধ নাই।
সাগর নিজেও এবার দাঁড়াল।
পিছন দিক থেকে মোহনার কোমর ধরে টেনে তার মুখ করলো,
কোমর ধরার ফলে মোহনা অন্যরকম একটা ফিলিংস অনুভব করতে লাগলো।
সে চোখ বন্ধ করে থাকলো।
সাগর তখন মোহনার ঠোঁট দুটি স্পষ্ট করলো।
মোহনা সাথে সাথে সাগরের হাত দুটি সরিয়ে দিলো।
তার কন্ঠস্বর পরিবর্তন হলো।
সে আস্তে আস্তে বললো কোমর থেকে হাত টা সরান প্লিজ।
সাগর সেই কথা শুনে এক ঝটকায় তাকে আরো কাছে নিলো।
আর বললো এমন লজ্জা পাচ্ছো কেনো?
তুমিও যেহেতু ভালোবাসো আমিও যেহেতু ভালোবাসি সুতরাং লজ্জা পাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।
আমার চোখের দিকে তাকাও।
মোহনা সেই কথা শুনে সাগরের দিকে তাকালো কিন্তু বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারলো না।
সাগর এমনভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে তাকে আস্তই খেয়ে ফেলবে।
তখন আর কোন কথা না বলে সাগর মোহনার ঠোঁটে তার ঠোঁট লাগালো।
কিন্তু সে তার ঠোঁট লাগাতেই মোহনা নিজেই সাগরের ঠোঁট মুখে পুরে নিলো।
কিন্তু সাগরের চোখে চশমা থাকার কারনে দুইজনেই ডিস্টার্ব ফিল করলো।
সাগর সেজন্য হাসতে লাগলো।
মোহনাও একটা মুচকি হাসি দিলো।
আর নিজেই চশমাটা খুলে ফেললো।
দুইজন কিছুক্ষনের জন্য অন্য জগতে চলে গেলো।

হঠাৎ সামিরা ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকতে লাগলো।
মোহনা তখন সাগর এর ঠোঁট দুটি তার মুখ থেকে বের করলো।
আর সাগর কে বললো ছাড়ুন এখন,ছাড়ুন এখন।
সামিরা ডাকছে।
এদিকে সাগর ঘোরের মধ্যেই আছে।
সে এখনো তার স্বপ্নের দুনিয়া থেকে বের হয়ে আসে নি।
সে মোহনার এভাবে সরে যাওয়া দেখে আবার তাকে কাছে টেনে নিলো আর নিজেই এবার মোহনার ঠোঁট দুটি চুষতে লাগলো।
কিন্তু ব্যাথার কারনে সে আস্তে আস্তে মুখ নাড়তে থাকলো।
সে সামিরার ডাক শুনতেই পারে নি।
মোহনা তখন সাগরের পিঠে মারতে লাগলো কিন্তু সাগরের কোন সাড়াশব্দই নাই।
তাই মোহনা বাধ্য হয়ে সাগর কে এবার একটা চিমটি দিলো।
সাগর তবুও তাকে ছাড়ছে না।
তাই মোহনা হাত দিয়ে জোরে করে একটা ধাক্কা দিলো।
আর মুহুর্তের মধ্যে দুইজন আলাদা হলো।
সাগর আবার তার কাছে এগিয়ে এলো কিন্তু মোহনা তখন তাকে সরিয়ে দিয়ে বললো দরজা টা খুলতে হবে।
সামিরা এসেছে।
সাগর কিছু না বুঝেই বললো খুলবো না দরজা।
আর সামিরা কে?
কেনো খুলতে হবে?

মোহনা তখন হাসতে হাসতে একেবারে শেষ হয়ে গেলো।
সে সাগরের মাথার চুল গুলো ধরে দিলো এক টান।
আর তার হাতে পানির গ্লাস ধরে দিয়ে বললো মুখে আগে পানি দিন।
এই বলে মোহনা দরজা টা খুলতে গেলো।
দরজা খোলার সাথেই সামিরা বললো ভাইয়া এতো জোরে চিৎকার দিলো কেনো?
কি হয়েছে ভাবী?
সামিরা মোহনার উত্তরের অপেক্ষা না করে রুমের ভিতর ঢুকলো।
সাগরের হাতে গ্লাস দেখে বললো পানি কি খাওয়ার জন্য নিয়েছিস না ভাবীর গায়ে ঢেলে দেওয়ার জন্য নিয়েছিস?
সাগর কোন উত্তর না দিয়ে গ্লাস টা টেবিলের উপর রাখলো।
আর বললো তুই এতো রাতে আমার রুমে এসেছিস কেনো?
সামিরা তখন বললো তুই চিৎকার করে উঠলি কেনো?
ভাবীর উপর নিশ্চয় রাগ দেখাচ্ছিস?
আরে বোকা বুঝতে শেখ একটু।
আজ তোর বাসর রাত।
এই রাতে বউ দের উপর রাগ করতে নেই।
তাদের সাথে মিষ্টি করে কথা বলতে হয়।
তুই কবে যে চেঞ্জ হবি আল্লাহই জানে।
এই বলে সামিরা দুই হাত তুলে বললো আল্লাহ এরে একটু বুদ্ধি দাও।

সাগর তখন বিড়বিড় করে বললো নিজেরই তো কোন বুদ্ধিজ্ঞান নাই।
তা না হলে এতো রাতে কারো বাসর ঘরে ঢোকে?
আর আসছে আমাকে বুদ্ধি দিতে?
সামিরা তখন সাগরের কাছে গিয়ে বললো মনে মনে কি বলছিস এসব?
আমি কিন্তু শুনতে পেয়েছি সব।
হঠাৎ সামিরা সাগরের ঠোঁটে কামড়ের চিহ্ন দেখতে পেলো।
আর হাসতে লাগলো।
বললো,তোকে আবার কামড় দিলো কে?

সামিরার হাসি দেখে মোহনা লজ্জা পেয়ে গেলো।
সামিরা মনে হয় বুঝে ফেলছে যে সে এই কামড় টা দিয়েছে।
সাগর ও এটাই ভেবেছে।
তাই সে তোতলাতে লাগলো আর বললো তুই যেটা ভাবছিস সেটা কিন্তু নয়।
মোহনা কিন্তু কামড়ায় নি আমাকে।
আর ওর এতো সাহস আছে নাকি আমাকে কামড়ানোর?
সামিরা তখন বললো ভাইয়া আমি জানি রে এসব।
আমাকে আর কিছু বলতে হবে না।

“নিশ্চয় তুই ভাবীর উপর রেগে গিয়ে নিজেই নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরেছিস?
ইসঃ এরকম বকাঝকা কেনো করছিস মেয়েটার উপর?
আর ওর উপর রেগেই কি হবে এখন?
বিয়ে তো হয়েই গেছে।
সাগর তখন বললো তুই যা তো এখন।
আমাদের ব্যাপার আমাদের কেই বুঝতে দে।
সামিরা তখন বললো কি বলছিস এসব?
আমি থাকতে তুই কিছুতেই ভাবীর উপর চোখ রাঙ্গাতে পারবি না।
এই বলে সামিরা মোহনার কাছে গেলো।
আর বললো,
ভাবী একটু মানিয়ে নাও প্লিজ।
বুঝতেই তো পারছো ওকে সবাই মিলে জোর করে বিয়ে দিয়েছে।
তাই ও যদি একটু বকে প্লিজ মাইন্ড করো না।
মোহনা তখন একটা মুচকি হাসি দিলো আর বললো তুমি আমাকে নিয়ে একদম টেনশন করো না।
আমি কিছু মনে করি নি।
আর আমি তো আগেই শুনেছি ওনার নাকি রাগ টা একটু বেশি।
তাই ওনার রাগ কে আমি পাত্তাই দিচ্ছি না।
উনি বকে যাচ্ছেন আমি শুনে যাচ্ছি।
সাগর মোহনার দিকে রাগান্বিত চেহারায় তাকালো।
এই মেয়েটা আবার কি বলছে এসব?
আমি ওর উপর আবার কখন রাগ হলাম?

সামিরা মোহনার কথা শুনে বললো ভাবী কি বলছো এসব?
ভাইয়া তোমাকে সত্যি সত্যি বকেছে?
তোমার উপর রাগ দেখিয়েছে?
মোহনা তখন বললো রাগ দেখানোটাই স্বাভাবিক না?
আগে উনি এই ঘরে একা থাকতেন।
আর এখন আমি এসে ভাগ বসায়ছি।
সেজন্য হয় তো বিরক্ত হচ্ছেন।
সাগর তখন বললো মোহনা তুমি কিন্তু একটু বেশি বেশি বলছো।
সামিরাকে এখন তার নিজের রুমে যেতে বলো।
অনেক রাত হয়েছে।

সামিরা সেই কথা শুনে বললো তুই চুপ কর।
আর একটা কথাও বলবি না।
কাল তোর বিচার আমি করবো।
সবাই কে বলবো তুই ভাবীর সাথে খারাপ ব্যবহার করছিস।
এই বলে সামিরা মোহনার হাত ধরে বললো ভাবী তুমি দুঃখ পেয়ো না।
এ বাড়িতে কি রুমের অভাব?
তুমি আজ আমার রুমে থাকবে।
কাল আমি ভাইয়ার কথা সবাইকে বলে দিবো।
সাগর সেই কথা শুনে দৌড়ে এলো।
কি পাগলের মতো বকছিস?
হাত ছাড় ওর।
ও কোথাও যাবে না।
আর মোহনাকে চোখের ইশারা দিয়ে বললো তুমি কিছু বলছো না কেনো?
এভাবে দাঁড়িয়ে থেকে কি তামাশা দেখছো?

মোহনা তখন সামিরাকে বললো সামিরা তুমি ভুল ভাবছো।
তোমার ভাইয়া আমাকে একটুও বকে নি।
আর আমার উপর রাগ ও দেখায় নি।
তুমি অযথা টেনশন করো না।
রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ো।

সামিরা তখন সাগরের কাছে গিয়ে বললো, দেখছিস ভাবীর কত দয়া!!
তোকে শাস্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য মিথ্যে কথা বলছে।
কিন্তু আমি সবাইকে এটা বলবোই বলবো।
এই বলে সামিরা মোহনাকে নিয়ে তার রুমে চলে গেলো।
বেচারা সাগর চিৎকার করতে করতে সামিরার পিছু পিছু চলে গেলো।
আর বললো সামিরা কি পাগলামি শুরু করেছিস?
মোহনাকে ছেড়ে দে।
মোহনাও বলছে সামিরা হাত ছাড়ো আমার।
আমাদের রুমে যেতে দাও।
তখন সামিরা সাগরের দিকে তাকিয়ে বললো আচ্ছা ঠিক আছে ছেড়ে দিবো।
কিন্তু তার আগে বল আর কোন দিন ভাবীর উপর রাগ দেখাবি না?
ওনার সাথে ভালো ব্যবহার করবি?
সাগর তখন বললো সব করবো।
আর সাথে অনেক ভালোওবাসবো।
এবার ওকে ঘরে যেতে দে।।।
সামিরা তখন মোহনার হাত ছেড়ে দিলো আর বললো দেখলে ভাবি ভাইয়াকে কেমন তোমার বসে আনলাম?
তোমাকে কথা দিয়েছিলাম না কিছুদিনের মধ্যেই ওকে চেঞ্জ করবো?
দেখলে আমার টেকনিক?
এক রাতেই কেমন পালটে দিলাম?
এখন তুমি তোমার নিজের রুমে যাও।
আর আমাকে অবশ্যয় জানাবে ও তোমার সাথে কেমন আচরন করে?
মোহনা কিছু বলার আগেই সাগর মোহনার হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে গেলো।

সাগর রুমে গিয়েই মোহনার দুই হাত দেয়ালে শক্ত করে চেপে ধরলো।
আর বললো,সামিরাকে আমার নামে কি সব বলছিলে?
আমি তোমার উপর অত্যাচার করেছি?
এখন দেখবে অত্যাচার কাকে বলে?
দেখি কে তোমায় বাঁচাতে আসে?
তখন মোহনা বললো ইতোমধ্যে বাঁচানোর জন্য লোক এসেও গেছে?
পিছনে দেখো কে দাঁড়িয়ে আছে?
সাগর পিছন ফিরে দেখে তার দাদু দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।
আর বলছে কি হচ্ছে এসব?
তুই মোহনাকে মারছিস?
তোর এতো বড় সাহস?
সাগর বললো ক,,,ই মারছি দাদু?
মারি নি তো?
দাদু তখন বললো আমি তো নিজের চোখেই দেখলাম।
ঘুম বাদ দিয়ে কি হচ্ছে এসব?
সাগর তখন কোন কথা না বলে চুপ করে থাকলো।
কিন্তু মোহনা চুপ করে থাকতে পারলো না।
সে দাদুকে বললো দাদু তুমি ভুল ভাবছো ওনাকে।
উনি আমাকে মারে নি তো?
এমনিতেই আমরা কথা বলছিলাম।
দাদু তখন বললো তাহলে এতো রাতে দরজা খোলা কেনো?
মোহনা তখন বললো সামিরা এসেছিলো।
কিন্তু ও যাওয়ার পর দরজাটা আটকাতে ভুলে গেছি।
দাদু সে কথা শুনে সামিরার উপর রেগে গেলো।
ও আবার এতো রাতে তোমাদের রুমে এসেছে কেনো?
মোহনা তো পড়ে গেলো মহা ঝামেলায়।
যে কথাই সে বলছে দাদু ঘুরে ফিরে তার উপর পাল্টা প্রশ্ন করছে।
মোহনা তখন বললো দাদু এখন তো আসে নি।
অনেকক্ষণ আগে এসেছিলো।

—কি বলছো এসব?
এই বলছো কিছুক্ষন আগেই এসেছিলো।
আবার বলছো অনেক আগে এসেছে?
মোহনা সে কথা শুনে আর কোন কথা বললো না।
তখন দাদু বললো আর দেরী করো না।
তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো।
আর সাগর?
মোহনার সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করবি না?
এই বলে দাদু চলে গেলো।
মোহনা সাথে সাথে দরজা টা লাগিয়ে দিলো।

সাগর তখন বললো আমি তোমার উপর কি অত্যাচার করলাম?
ঘুরেফিরে এরা বার বার সেই একই কথায় বলছে কেনো?
অত্যাচার তো এরা সবাই মিলে আমার উপর করছে।
আর অত্যাচার করছো তুমি।
কিন্তু ঘুরেফিরে দোষ দিচ্ছে আমার।
মোহনা সে কথা শুনে হাসতে লাগলো।
সাগর তখন বললো তোমার খুব হাসি পাচ্ছে?
তাই না?
এই বলে মোহনাকে কাছে টেনে নিলো।
মোহনা তখন বললো হাসছি কি আর সাধে?
তোমার আর তোমার ফ্যামিলির কান্ড থেকে সত্যি হাসি বের হচ্ছে।
তোমরা সবাই খুব সহজ সরল।
সাগর তখন বললো মোটেও না।
সবাই সহজ সরল হলেও আমি কিন্তু অনেক জটিল।
মোহনা সেই কথা শুনে সাগরের ঠোঁট দুটিতে আস্তে করে আবার একটু কামড় দিলো আর বললো তুমি আরো বেশি সরল।

–আমি সরল!
আমাকে দেখে বোকা মনে হয়?
এই বলে সাগর মোহনাকে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।

-উহঃ ব্যাথা পেলাম তো?
এতো জোরে কেউ ধাক্কা দেয়?
মনে হয় কোমর টা ভেংগেই গেলো।
সাগর সে কথা শুনে মোহনার বুকের উপর শুয়ে পড়লো আর বললো ভাংগুক।
ভেংগে চুরমার হয়ে যাক।
তবুও এখন আর কোন কথা শুনছি না।
এই বলে সাগর মোহনার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো।তারপর অনবরত কিস করতে লাগলো।
কিছুক্ষনের মধ্যে ভালোবাসায় মেতে ওঠে দুইজনই।
ঘরের সব লাইট বন্ধ করে দেয় সাগর।
মোহনা তখন সাগর কে আরো জোরে জড়িয়ে ধরে।
ভালোবাসার অতল সাগরে হারিয়ে যায় দুইজন।
মনের মধ্যে পুষে রাখা দীর্ঘ দিনের ভালোবাসা আজ পূর্নতা পায়।

চলবে,,,,,,
পরবর্তী পর্ব পড়তে চাইলে অবশ্যয় লাইক কমেন্ট করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here