#সত্যি_তোকে_অনেক_ভালোবাসি💖💖
#Part : 12
#ইসরাত_জাহান_প্রভা
মালিহা: আরে ভাইয়া,আপু চলো নিচে ডাকছে তোমাদের।।আর ভাইয়া কাল থেকে তো আপু তোমার।।একটু অপেক্ষা করো।।(ছাদে এসে মিরা আর শুভকে ডেকে)
শুভ: মালিহা তুমি কবে থেকে আমাকে ভাইয়া ডাকা শুরু করেছো?(অবাক হয়ে)
মালিহা: অনেক আগেই থেকে।।(হাসি নিয়ে)
শুভ: এভাবে ভাইয়া ডাকলে তো বুকটা ফাইটা যায় আমার…..(মজা করে)
মিরা: ঐ?টাংকি মারতেছো আমার সামনে??একদম খেয়ে ফেলবো কিন্তু বলে দিলাম।।(শুভর ন্যাকামি দেখে রাগ হয়ে)
শুভ: কৈ..কৈ..আমি তো ম..জা করছি..লা..লা..ম(তোতলাইতে তোতলাইতে)
মিরা: তোতলানো ছাড়িয়ে দেবো একদম।।বেয়াদবি??(রাগে)
মালিহা: ওহ!তোমরা ঝগড়া থামাও তো।।মামা,মামী ডাকছে তো তোমাদের।।আমি গেলাম।।
শুভ: চলো মিরা।।(ভয়ে)
মিরা: আমি ছাড়া কাউকে দেখলে বা টাংকি মারলে তোমাকে শেষ করে ফেলবো কিন্তু বলে দিলাম।।(রাগে)
শুভ: আচ্ছা বাবু এমন আর কখনও হবে না।।(হাসি মুখে)
….
নিলয়ের রুমে…
নিলয় পড়াশুনা আর পাগলামিতে ব্যস্ত…..
নিলয়: যেসব জৈব যৌগের অণুতে একযোজী কাবক্রিল মূলক বতমান থাকে তাদেরকে কাবক্রিলিক এসিড বলে।।”লাল শাড়ি পড়িয়া বইন আমার শ্বশুর বাড়ি যায়,একা একা ভালো লাগে না বিয়া করতে মন চায়।।খুঁইজা পাইনা ভালো মাইয়া কান্দে মন আমার,ও মালিহা কোথায় গেলা তুমি বউ হবে কী আমার??”থুক্কু কী বলছি এইসব!!আহ ভালো লাগে না আর।।পড়াই পড়ি।।কাবক্রিলিক এসিডের অণুতে কাবক্রিলিক এসিড মূলক…..
মালিহা: আসতে পারি বিদ্যাসাগর মশাই??(দরজার পাশে দাড়িয়ে)
নিলয়: আরে আসো আসো।।(হাসি নিয়ে জবাব দিয়ে)
মালিহা: কী করতেছেন??( বিছানায় বসে)
নিলয়: কী যে চাপে আছি!!এই পড়াটা শেষ করতে পারলেই বইটা শেষ হবে।।তখন আরেকটা বই পড়া শুরু করবো।।
মালিহা: আজাইরা!!(বিরক্ত নিয়ে)
নিলয়: আচ্ছা আমাকে প্রেম করা শিখাবা?(আগ্রহ নিয়ে)
মালিহা: কীহ!!কেনো?(আশ্চয হয়ে)
নিলয়: আরে সবার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।।আমার ও তো বিয়ে করতে ইচ্ছে করে।।তো ভাবছি মেয়ে পটাবো একটা।।কীভাবে পটাতে হয়??(হতাশ নিয়ে)
মালিহা: আমারে দেইখা কী তোমার এইসবের মাষ্টার মনে হয়??(আশ্চায হয়ে)
নিলয়: আরে তুমি দেখতে কিছুটা সুন্দর তাই অনেক প্রোপোজাল পাইছো নিশ্চই।।তা ছেলেরা কীভাবে তোমাকে প্রোপোজ করতো??
মালিহা: আমি দেখতে কিছুটা সুন্দর??(প্রচন্ড রাগে)
নিলয়: আরে কে বলছে কিছুটা??তুমি দেখতে প্রচন্ড সুন্দর।।(ভয়ে মুচকি হেসে)
মালিহা: সত্যি??
নিলয়: একদম সত্যি।।এবার বলো কীভাবে ছেলেরা প্রোপোজ করে??
মালিহা: তুমি কাকে প্রোপোজ করবা?(মায়া আর লজ্জা পেয়ে)
নিলয়: শুনবে?
মালিহা: হুম।।
নিলয়: সে এক ভৌত জগতে থাকা রাসায়নিক পরী।।তার দুই হাতে দুটি অক্রিজেন বন্ড,দুই পায়ে দুটি হাইড্রোজেন বন্ড।।চার হাত মিলে গেলো তো!!মুখ খানি তার সায়ানাইডের আদ্র বিশ্লেষণে চুবানো।।সেই মুখ খানি দেখলেই সকল মৌল যেনো যৌগতে পরিণত হতে চায়।।তার চোখ থেকে স্পষ্ট বেনজিন চক্র দেখা যায়।।সমতলীয় সেই চক্রে পাই কাঠামো যেনো বার বার চেন্জ হচ্ছে কিন্তু সিগমা কাঠামো একদম ঠিক ঠিক ভাবে অবস্থান করছে।।তার হাতের তালুতে যেনো রয়েছে ক্লোরোফোম গ্যাস।।যা বাব বার ঙ্গান হারিয়ে দেয়।।তার চুলের পিএইস এতটাই সমৃদ্ধ যে ফিউরান বা পাইরল আঘাত করতে পারে না।।অবশেষে বলতে চাই অ্যারোমা যুক্ত আপাদমস্তকে শুধু যেনো ভালোবাসতেই ইচ্ছে করে।।তাই তাকে এতটা ভালোবাসি।।
মালিহা: এগুলা কোন কবি লিখেছেন?(মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
নিলয়:কবি নিলয় বেনজোয়িক।।(হাসি নিয়ে)
মালিহা:বিশ্বাস করো তোমার মতো পাগল জীবনে দেখি নাই আমি।সব কিছুতে পড়াশোনা একদম ভালো না।।(রাগে ফুলে বের হয়ে গেলো)
নিলয়: যাক বাবা!!আমি আবার কী করলাম??যাই হোক মেয়েটাকে খুব কিউট লাগে।।একদম বেনজিনের মতো।।কিন্তু বেনজিন তো মোটা।।ও তো মোটামুটি মোটাও না পাতলা ও না।।ওহ হ্যাঁ বিয়ের পরেই বেনজিন হয়ে যাবে।।(হাহাহাহাহাহাহাহা)
……
সকাল থেকেই অনুর মা,শুভর মা রান্নাতে ব্যস্ত।।পায়েল,মালিহা আর শিলা অনু আর মিরাকে সাজাতে ব্যস্ত।।সন্ধ্যার দিকে কাজী উপস্থিত হলো।।ধীরে ধীরে শুভ,মিরা আর অনু,নিশানের বিয়ে সম্পন্ন হলো।।
……
শুভ,মিরার বাসর রাতে…
ঘোমটা দিয়ে বসে আছে মিরা।।শুভ এসে ঘোমটা তুলে দিয়ে মিরা চাঁদমাখা মুখটি দেখলো।।
শুভ: এত সুন্দর কেনো আমার বউটা??
মিরা: যাহ!!(লজ্জা পেয়ে)
শুভ: এত লজ্জা পেলে হবে??এখন ও তো কিছুই হলো না।।(মিরাকে কাছে টেনে)
মিরা শুভর বুকে মাথা রেখে বললো,শুভ আমাকে এভাবে সারাজীবন আগলে রাখবে তো?(মায়া নিয়ে)
শুভ: হুম মিরা।।রাখবো।।
শুভ মিরার ঠোঁট দুটোতে হালকা হাতের ছোঁয়া দিয়ে নিজের ঠোঁট দুটো মিরার ঠোঁটে ডুবিয়ে দিলো।।মিরা পাগলের মতো দিশেহারা হতে লাগলো।।শুভ মিরার আঁচল ধীরে ধীরে সরিয়ে দিয়ে বুকের মাঝে মাথা গুজে দিতে লাগলো।।ধীরে ধীরে মিরা পাগল প্রায় হতে লাগলো।।শুভকে অনবরত চুমু দিতে লাগলো।শুভ মিরার পেটের চারদিতে হাত বুলাতে বুলাতে নিচের দিকে চলে গেলো।।মিরা শাড়ী আস্তে আস্তে খুলে ফেলে দিলো শুভ।।ছায়ার বাঁধন খুলে এক টান দিয়ে ফেলে দিলো বহু দূরে।।পরম আবেগে মিরা আজ ভালোবাসায় নিজেকে বিলিয়ে দিলো শুভর কাছে।।তারা দুজনেই মেতে উঠলো এক ভালোবাসার গভীর পূণতায়।।
…….
নিশান ও অনুর বাসর ঘরে….
লাল টুকটুকে শাড়ি পড়ে ঘোমটা দিয়ে বসে আছে অনু।।নিশান রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো।।অনুর পাশে এসে নিশান অনুর ঘোমটা তুলে দিলো আর তাকিয়ে রইলো অনুর দিকে।।
অনু:কী দেখছো এভাবে?(লজ্জা পেয়ে)
নিশান: দেখছি আর ভাবছি কীভাবে তোমার ছবি আঁকলে সুন্দর লাগবে!!(চিন্তা নিয়ে)
অনু: তাই বুঝি!!
নিশান: হুম।।তুমি এভাবেই সারা রাত বসে থাকো আমি তোমার ছবি আঁকি।।বসে থাকো এভাবে।।
নিশান উঠতে যাবে ঠিক এই সময় অনু নিশানের হাত টেনে ধরে নিশানকে বিছানায় ফেলে দিলো এবং নিশানের উপর চড়ে বসলো।।
নিশান: কী হয়েছে গো?(ভয় পেয়ে)
অনু: বাসর রাতে বউকে বসায় রেখে তুমি ছবি আঁকবা??এটা কী সভ্যতা??সেই কবে থেকেই এই দিনটার অপেক্ষা করছি আর তুমি ছবি আঁকবা??দেখাচ্ছি তোমাকে….
এই বলে অনু নিশানের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।।নিশান অনুকে জড়ায় নিয়ে অনুর ওপর উঠে অনুর শাড়ী খুলে ফেলে দিলো।।অনুর সারা শরীরে ভালোবাসার ছোঁয়া দিতে লাগলো নিশান।।অনু পাগলের মতো দিশাহারা হয়ে পড়তে লাগলো।।ছায়াটা এক টানে খুলে ফেলে দিয়ে নিশান আর অনু হারিয়ে গেলো এক পূণতার জগতে।।যেখানে দুজনে মিলে একাকার হয়ে যায় একজনে।।
…….
মালিহা আর পায়েল দরজায় কান পেতে আছে শুভ আর মিরার রুমের বাহিরে।।নিলয় পাশ দিয়ে যেতেই পায়েল আর মালিহার কান্ড দেখে থেমে গেলো।।
নিলয়: এখানে কী করছো তোমরা??(আগ্রহ নিয়ে)
চমকে উঠে মালিহা আর পায়েল।।
পায়েল: কৈ কিছু না তো।।(ভয়ে ভয়ে)
নিলয়: আচ্ছা বাসর রাত নাকি খুব মজার??কী হয় সেখানে??তোমরা কেউ জানো?
পায়েল: মালিহা আপু তুই ম্যানেজ কর তোর বাবুকে আমি গেলাম।।(দৌড়ে পালিয়ে গেলো পায়েল)
মালিহা থ মেরে দাঁড়িয়ে রইলো।।
নিলয়: ও পালালো কেনো??(চমকে উঠে)
মালিহা: জানি না।।(অসহায় হয়ে)
নিলয়: আচ্ছা বললে না তো কী হয় বাসর রাতে??(দাঁত বের করে)
মালাহা প্রচন্ড রেখে গিয়ে নিলয়ের কলার টেনে কাছে এনে বললো,এই বলদ আমাকে বিয়ে কর তাহলে তোকে শিখায় দিবো বাসর রাতে কী হয়।।বুঝলি??(ছেড়ে দিয়ে)
নিলয়: তোমাকেই বিয়ে করতে হবে?অন্য কাউকে বিয়ে করলে সে শিখাবে না??(ভয়ে ভয়ে)
মালিহা: তোকে বলেছি না আমাকে বিয়ে করতে হবে!আমাকে বিয়ে করলেই শিখতে পারবি।।তার আগে না।।বল আমাকে বিয়ে করবি??(প্রচন্ড রাগে নিলয়ের কলার টেনে নিয়ে )
নিলয়: হ্যাঁ।।হ্যাঁ।।আমি তোমাকেই বিয়ে করবো।।আমার ভয় লাগছে।।ছেড়ে দাও আমায়।।(হাত পা কাঁপাতে কাঁপাতে)
মালিহা: যা ভাগ।।(নিলয় কে ধাক্কা দিয়ে)
নিলয় দৌড়ে পালিয়ে গেলো।
মালিহা: বলদা কোথাকার।।(নিজের রুমে যেতে যেতে)
চলবে,,,,,,,