সত্যি তোকে অনেক ভালোবাসি পর্ব -১৩

#সত্যি_তোকে_অনেক_ভালোবাসি💖💖
#Part :13
#ইসরাত_জাহান_প্রভা

নিলয়: আচ্ছা বললে না তো কী হয় বাসর রাতে??(দাঁত বের করে)

মালাহা প্রচন্ড রেখে গিয়ে নিলয়ের কলার টেনে কাছে এনে বললো,এই বলদ আমাকে বিয়ে কর তাহলে তোকে শিখায় দিবো বাসর রাতে কী হয়।।বুঝলি??(ছেড়ে দিয়ে)

নিলয়: তোমাকেই বিয়ে করতে হবে?অন্য কাউকে বিয়ে করলে সে শিখাবে না??(ভয়ে ভয়ে)

মালিহা: তোকে বলেছি না আমাকে বিয়ে করতে হবে!আমাকে বিয়ে করলেই শিখতে পারবি।।তার আগে না।।বল আমাকে বিয়ে করবি??(প্রচন্ড রাগে নিলয়ের কলার টেনে নিয়ে )

নিলয়: হ্যাঁ।।হ্যাঁ।।আমি তোমাকেই বিয়ে করবো।।আমার ভয় লাগছে।।ছেড়ে দাও আমায়।।(হাত পা কাঁপাতে কাঁপাতে)

মালিহা: যা ভাগ।।(নিলয় কে ধাক্কা দিয়ে)
নিলয় দৌড়ে পালিয়ে গেলো।

মালিহা: বলদা কোথাকার।।(নিজের রুমে যেতে যেতে)

……
পায়েল: কী রে আপু তোর বাসর রাতে কী শুধু বিক্রিয়ায় হবে নাকি অন্য কিছুও হবে?(মালিহার দিকে তাকিয়ে)

মালিহা: চুপ কর।। তুই আমাকে রেখে পালালি কেনো??(আশ্চয হয়ে)

পায়েল: ছিঃ আপু দুলাভাইয়ের সামনে কী করে বলবো যে বাসর রাতে কী হয়!!

মালিহা: বেশি পাকামো করিস না।।খুব ঘুম পাইছে।।

পায়েল: হুম আমারো।।

……
সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেলো মিরার।।নিজেকে শুভর বুকে আবিষ্কার করলো সে।।আস্তে আস্তে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে শুভর ঠোঁটে মিষ্টি একটা পরশ এঁকে দিয়ে একটা লম্বা সাওয়ারে গেলো মিরা।।একটু পর শাড়ি পড়ে আয়নার সামনে এসে চুল আছড়াতে লাগলো মিরা।।শুভ ঘুম থেকে উঠে অপলক দৃষ্টিতে মিরাকে দেখতে লাগলো।।মিরা পেছন ফেরে অবাক হয়ে বললো,কী দেখো?

শুভ: তোমাকে।।

মিরা: কেনো?

শুভ: ভালো লাগে।।

মিরা: কেনো?

শুভ: ভালোবাসি যে।।

মিরা: কেনো?

শুভ: ভাল লাগছে।।খুশির ঠ্যালায়।।(প্রচন্ড রাগে)

মিরা হাসতে হাসতে শুভর কাছে এসে বললো,রাগ করেছো??(মায়া নিয়ে)

শুভ: না একদম না।।খুশির ঠ্যালায় আছি।।(মুখ ঘুরিয়ে)

মিরা: রাগ ভাঙ্গতে হবে বুঝেছি।।কাছে আসো বাবু।।(শুভকে ডেকে)

শুভ ধপ করে মিরার কাছে আসে।।

মিরা: আদর চাই বুঝি আমার রাগী বর টার??(শুভর থুতনিতে হাতের ছোঁয়া দিয়ে)

শুভ: হুম।।(হাসিতে)

মিরা: রাতের আদর কম হয়েছে বুঝি??(মায়ার সুরে)

শুভ: হুম অনেক কম হয়েছে।।(হাসি দিয়ে)

মিরা: ওহ তাই বুঝি??আচ্ছা শুভ এক কাজ করো তুমি ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে নাস্তা করে অফিসে যাও।।আমিও আদর তৈরী করে রাতে বেশি বেশি আদর করবো এখন।।আচ্ছা?যাও তাড়াতাড়া যাও।।

মূহুতেই শুভর হাসি মুখ বিলিন হয়ে গেলো।।

শুভ: একটু দাও না আদর প্লিস।।(মিরার হাত টেনে বাচ্চাদের কন্ঠে মায়া নিয়ে)

মিরা: সরি বাবু।।অনেক বেলা হয়েছে এখন যদি নিচে না যাই তাহলে সকলে কী ভাববে বলো??ছেড়ে দাও হাতটা আমার।।

শুভ দুঃখ নিয়ে মিরার হাতটা ছেড়ে দিলো।।মিরা মিষ্টি হাসি নিয়ে নিচে নামতে লাগলো।।

শুভ: ধুত ভাল্লাগে না।।(উঠে ওয়াশরুমের দিকে যেতে যেতে)
……
মিরা নিচে গিয়ে রান্নাঘরে অনুকে দেখে চমকে গেলো।।

মিরা: কী রে অনু এত তাড়াতাড়ি উঠে পড়েছিস??

অনু: আরে নিশান তো ছাড়তেই চাইছিলো না।।অনেক কষ্টে চলে এসেছি।।তুই এত তাড়াতাড়ি কেনো?আমি একা তো পারতাম সব ম্যানেজ করতে।।

মিরা: ওহ।।তুমি একাই প্রশংসা পাবা আর আমাকে সবাই কাজ চুন্নি ভাববে তাই না!!(ইয়াকি করে)

অনু: বাহ ভালো বুঝেছিস তো।

মিরা আর অনু দুজনেই হাসতে লাগলো।

মিরা আর অনু দুজনে মিলে সকলের জন্য নাস্তা তৈরী করে নিলো।খাওয়ার সময় সকলে নতুন দুই বউ এর প্রশংসায় মেতে তুললো।।
….
শুভর বাবা আজ শুভকে তার দায়িত্ব বুঝায় দিলো।।নিশান খুশি হলো যে শুভ প্রথম কাজে আসলো।।শুভ সবকিছু বুঝে নিলো।।নিশান শুভকে নিশানের পদ দিতে চাইলে শুভ বলে,ভাই এতদিন তুই সব কিছু দেখছিস তাই তুই সব ভালো জানিস।।আমার কোনো সমস্যা নেই বতমান পদে।।তুই তোর পদে থেকেই আমার পাশে থাক তাতেই আমি খুশি।।

নিশান শুভকে বুকে জড়িয়ে নিলো।।শুভর বাবা আজ সত্যি অনেক খুশি হলো।।
……
নিলয়ের রুমে,

নিলয়: কবে যে এই বই গুলা সব গ্রাস করে ফেলবো??(বইয়ের দিকে তাকিয়ে)না পড়তে হবে।।পড়তেই হবে।।বুঝতেই হবে।।কিন্তু বাসর রাতটা তো বুঝলামি না।।যাক গে মালিহা তো বুঝাইতে চাইছে।।(হাসি নিয়ে)

মিরা: আসবো ভাই??(দরজায় দাঁড়িয়ে)

নিলয়: আরে আয় আপু।।(পেছনে ঘুরে)

মিরা: পড়তেছিলি বুঝি??

নিলয়: হুম রে।।

মিরা: আচ্ছা মালিহা যে তোকে পছন্দ করে এটা বুঝিস তুই??

নিলয়: কৈ!!আমাকে তো বলে নি।।

মিরা: আরে গাধা মেয়েরা পছন্দ করলে বা ভালোবাসলে ছেলেদের বলে নাকি!!

নিলয়: তাহলে কী করে আপু?

মিরা: আরে গাঁধা তুই ওকে প্রোপোজ করবি।।সাধারন বিষয় একটা।।

নিলয়: সেটা কীভাবে বলে আপু??

মিরা: নিজের মনের যত কথা আছে সব খুলে বলবি গভীর আবেগ দিয়ে।।

নিলয়: এতো একদম সহজ বিষয়।।(হাসি নিয়ে)

মিরা: আমি জানতাম তুই ঠিক পারবি।।একটু শোনা তো।।(আগ্রহ নিয়ে)

নিলয়: (একটু কেশে) আমার নাম নিলয়।।আমি দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে পড়াশোনা করছি।।আমরা দুই ভাই বোন।।এই তো কালকেই আমার বড় বোনের বিয়ে হলো।।খুব খুশি হয়েছি আমি।।আপুর বরের নাম শুভ।।সে আমাকে খুব ভালোবাসে….

মিরা: এই গাঁধা থাম থাম থাম।।(রাগে,বিরক্তি আর হতাশায়)

নিলয়: কেনো আপু কিছু বলতে কী ভুলে গেছি??(চমকে উঠে)

মিরা: এই তুই কী রচনা বলতেছিস??তোকে কী রচনা বলতে বলা হয়েছে??তোকে তোর মনের কথা বলতে বলা হয়েছে।।

নিলয়: মনের কথাই তো বললাম আপু।।(অবাক হয়ে)

মিরা: আরে ভাই আমার তুই মালিহার সামনে গিয়ে মালিহাকে বলবি যে,আমি তোমাকে ভালোবাসি।।পারবি না??

নিলয়: এটা তো খুব সহজ কাজ আপু।।খুব পারবো।।(হাসি দিয়ে)

মিরা: তাহলে আজকে বলিস।।ঠিক আছে??

নিলয়: আচ্ছা আপু।।

মিরা চলে গেলো।।নিলয় লাফাতে লাফাতে মালিহাকে খুঁজে বের করলো।।মালিহা ছাদে বসে বসে গান শুনছিলো।।নিলয় কে দেখে রেগে গেলো মালিহা।।

নিলয়: মালিহা….

মালিহা: ঐ তুমি এখানে আসছো কেনো??কোনো লেকচার থাকলে দূরে গিয়ে মুড়ি খাও গিয়ে।।আমাকে বিরক্ত করবে না একদম।।

নিলয়: আমি তো একটা কথা বলতে এসেছিলাম তোমায়।।(ভয়ে ও মন খারাপে)

মালিহা: কী কথা??(আশ্চয হয়ে)

নিলয়: আসলে হয়েছে কী মালিহা…

মালিহা: কী হয়েছে।।

নিলয়: সাধারনত তাপ প্রয়োগের ফলে বেশিরভাগ পলিমারই জারিত হয়ে অন্য উপাদানে পরিবতিত হয়।।কিন্তু আমি কোনো পরিবতন ছাড়াই শুধুমাএ একটা প্রভাবকের অদৃশ্য উপস্থিতি হৃদয়ের অন্তঃথ থেকে জারিত বা বিজারিত না করে মুখমন্ডের মুখ দ্বারা হালকা শ্বাস নিয়ে আবার ছেড়ে দিয়ে মধু মিশ্রিত গলায় বেনজিন বলয় বিহীন তোমাকে….

মালিহা: Seriously তুমি খুবই বিরক্তিকর নিলয়।।(রাগে আর বিরক্ত নিয়ে)এই কঠিন বাক্য ছাড়ে যখন কথা বলতে পারবে তখন আমার সামনে এসে কথা বলিও।।মনে থাকে যেনো।।
মালিহা প্রচন্ড রাগে চলে গেলো।নিলয় থ মেরে দাঁড়িয়ে রইলো।

নিলয়: আমি তো বলতে চাইছিলাম “আমি তোমাকে ভালোবাসি”কী কী যে বললাম!!যাক গে কাল আবার বলবো এখন।।আজ বরং আরো কিছু টিপস শিখি আপুর কাছে থেকে।।(লাফাতে লাফাতে নিচে নামতে নামতে)

To be continue,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here