#নিয়তি
#সেলিনা_আক্তার_শাহারা,
#পর্ব—৩
_________
ঘর থেকে বেরিয়ে এবার পা চালায় সপ্নার রুমে,
গিয়ে তুর্জ কিছুটা অবাক, নন্দিনি সব চকলেট খায়নি ৪ টা রেখেছে কখন রাখলে??
নাহ এতটাও বাচ্চামু নেই, সত্যি কি নন্দিনি এমন! নাকি সব দেখানো সতীনের মেয়েকে কেউ এত আদর করে,
তুলি আজ প্রথম মা বলেছে নন্দিনি খুশিতে গত গত,
মাম্মা মাম্মা বলছে তুলি তার ঠোট হাসি মেখে, নন্দিনির বেশ আদর করছে তুলিকে,
তুর্জের হাসি মাখা মুখটা আবার মলিন হয়ে গেলো এটা ভাবতেই নন্দিনি হয়তো সবাইকে দেখানোর জন্যই এমনটা করছে!
এই মেয়েকে বিশ্বাস নেই একটু চোখে চোখে রাখতে হবে।
তুর্জ আবার চলে এলো নিজের রুমে, একটু টুক টাক কাজের পর ডিনার করতে বসলো সবাই, শিলা বেগম আসেনি উনার শরিল টা ভালোনা,
চিন্তা মগ্ন হয়েছিলো আজ সারা দিন তাই মাথাটা খুব ধরা,
তুর্জ মায়ের সাথে দেখা করতে গেলো, একটু খাবার মুখে দিয়ে,
আর তার মার জন্য একটু সুপ হাতে নিয়ে রুমে ঢুকলো,
শিলা বেগম তুর্জকে দেখে বিছানা থেকে উঠে বসে, ছেলেকে পাশে বসিয়ে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছেন তিনি,
তুর্জ মায়ের মুখের সামনে সুপটা ধরেছে চামচে করে,
শিলা বেগম একটু মুখে তুলে নিলো দ্বিতিয় বাইট টা হাতে মানা করে তুর্জে বলে উঠলো এখন রেগে আছিস!!!
তুর্জ সুপটা রেখে মায়ের দিকে তাকিয়ে উওর দিলো, মায়ের সাথে রাগ করে থাকা যায় কখনো!!
তুর্জের মা একটা হালকা হাসি দিয়ে বললো, তুই তো আমার সব কথাই রাখিস রে, তবে আরেকটা কথা রাখ না বাবা,
তুর্জ তার মায়ের না বলা কথা টা ঠিক বুঝে নিয়ে বললো,
মা এমন আবদার করোনা যা আমার দ্বারা হবে না।
সায়মা চলে জাওয়া পর তুলিকে আকরে ধরে বাচঁতে চাইছি তাই থাকতে দাও না, নন্দিকে বিয়ে করে আনতে বললে তাও আনলাম, গল্পের আসল লেখিকা সেলিনা আক্তার শাহারা।
মা এই মেয়েটা আমার তুলির জন্য ঠিক নাকি ভুল জানিনা তবে আমার মেয়েকে আমি ঠিক আগলে রাখতে পারবো,
নন্দিনিকে সায়মার অধিকার দেওয়ার কথা কখনোই বলবে না মা প্লিজ,
তুর্জেম মা আবার খাটে শুয়ে কপালে হাত দিয়ে চোখ ঢেকে বললো আচ্ছা তকে জোর করব না, তবে নন্দিনি যা মেয়ে তাকে তুই দূরে রাখতে পারবি না এটা আমার চ্যলেন্জ,
মায়ের কথার উওর না দিয়ে সুপ টা নিয়েই চলে জেতে নিলো তুর্জ,
শিলা বেগম চোখ বন্ধ করেই বললো আরে সুপটা তো রেখে যা নাকি রাতে না খাইয়ে রাখবি শুনি!!!!!
তুর্জ তার মায়ের এমন অদ্ভুত কথায় হালকা হেসে টেবিলে সুপটা রেখে বেরিয়ে গেলো,
তুলিকে বুকে জরিয়ে ঘুম পারাচ্ছে নন্দিনি, তুর্জকে জেনো ভুলেই গেছে তুলি,
কাছে আসতে চায়না একবার ইচ্ছা করে,
নন্দিনিকি জাদু করলো নাকি!!
তুর্জ দুহাত বারিয়ে নন্দিনির কাছ থেকে তুলিকে চাইলো,নন্দিনিও তুলিকে তুর্জর কোলে দিয়ে খাটে আয়েস করে শুয়ে মোবাইল টিপা শুরু করলো,
তুর্জ তুলিকে নিয়ে বারান্দায় দারিয়ে গুন গুন করে গান গাইছে যা সায়মা রুজ গাইতো বিয়ের পর থেকে, গল্পের লেখিকা সেলিনা আক্তার শাহারা।
রুজ সায়মার গলায় গান না শুনলে তুর্জের ঘুম হত না, আর আজ তার মুখটা দেখতে পায় না, সব ওর দুষ কেন বলেনি বাচ্চা নিতে এত সম্যসা, সারা জীবন নিসন্তান থাকতাম তাও তো সায়মা পাশে থাকতো।
তুর্জের চোখ ভিজে এসেছে, চোখ মুছে তুলিকে নিয়ে রুমে চলে এলো নন্দিনির পাশে তুলিকে শুইয়ে দিলো,
এখন আবার সেই সমস্যা তুর্জ শুবেটা কই,
তুর্জ নন্দিনিকে উদ্দেশ্য করে গলায় খকখকানি দিলো,
নন্দিনিও মোবাইলের দিকে চেয়ে তুর্জকে ইশারা করে খকখকানি দিলো,
তুর্জ বিরক্ত হয়ে বললো এই ম্যাডাম আমি শুবো কই!!
তুর্জের মুখটা বাংলার পাঁচ হয়ে আছে কারন এই মেয়েটা খাটেতো জায়গা দিবেনা, নিচেও ঘুমানো সম্ভব নয়,
নন্দিনি তুর্জর দিকে অনেক ক্ষন চেয়ে রইলো, মুখটায় কি মায়া মায়া ভাব কি বোকার মত মুখটা করে রেখেছে, বহু কষ্টে নন্দিনি তার হাসিটা চাপিয়ে বললো হুম পয়েন্ট তাই তো,
দারান কিছ একটা করছি, বলেই মাথায় টুকা দিতে দিতে অনেক ক্ষন চিন্তা করেই কিছু বলছে না শুধু ভাবছে, এদিকে তুর্জ বেচারা কখন থেকে দারিয়ে আছে পা ধরে গেছে,
তাই অনুনয় স্বরে বললো একটু বসতে পারি কি???
নন্দিনি মাথা ঝাকিয়ে সমম্তি দিলো
,
বা বাহ এমন ভাবে বললো জেনো আমি কোন কন্ট্রাকটার ওনার কাছে বিল পাশ করাতে এসেছি , আমার বাড়ি আমার ঘড় আমার খাট তাও বসতে এই ঝগরাটে পুচকিটার অনুমতি নিতে হচ্ছে ছি ছি তুর্জ তর কি অধপতন হল একলা একলাই বির বির করছে তুর্জ,
নন্দিনি হাতে তুরি দিয়ে তুর্জকে বললো এই মি..
তুর্জ এবার নন্দিকে ঠাট্টা করে বললো তা কি ভাবলেন চিন্তা মনি ম্যাডাম!!!
নন্দিনি এবার কপালটা ভাজ করে বললো কিছু পেলাম না,
এক কাজ করুন আপনি তুলির ঐপাশে শুবেন আর আমি তুলির এই পাশে, ভুলেও আপনার হাত পা জেনো এদিক উদিক না যায়,
তুর্জ হাফ ছেরে আয়েশ করে শুয়ে বললো আমি কেন আমার চোদ্দ গুষ্টির কারোরটাই ওদিকে জাবে না আপনি আরামে ঘুমান,
নন্দিনিও পাশ ফিরে শুয়ে পরলো তুর্জ মোবাইলটা নিয়ে তার সায়মার ছবি দেখছে আর চোখ ভিজাচ্ছে,
এমন সময় আবার নন্দিনির আওয়াজ “” এই যে মি.. বুইড়া শুনছেন???
দেখুন দুদিনের বাচ্চা তো আপনি নন তাহলে আমায় বুইড়া বলেন কেন??? তুর্জের ভারি কন্ঠের জবাবে নন্দিনির কোন রিয়েকশন নেই,
নন্দিনি উঠে বসে তুর্জের দিকে বাকা ভাবে চেয়ে বললো ” আপনায় এখানে বিছানায় ঘুমাতে দিয়েছি আপনি তার সুজোগ নিয়ে আমার সাথে কোন হ্যাংকি প্যাংকি করার চেষ্টা করবেন নাতো!!!!!
তুর্জের গলা জেনো জমে গেছে, কি বলে এই মেয়ে পাগল নাকি তুর্জ রেগে নন্দিনির দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বললো
What the hagkii pagkkii!!!
নন্দিনি তুর্জকে ধমক দিয়ে বললো চুপ করুন, এক দম এদিকে ঘুরে গুমাবেন না ঐ দিকে ঘুরে তার পর ঘুমাবেন বুজেছেন,
তুর্জ এবার উঠে বসে বললো ওহহ হ্যালো কি বলছেন মাথার তার কয়টা ছেরা হুম।
আপনার সাথে আমি ওহ সরি, এসব কখনো মাথায় আনবেন না,
আপনি আমার লিগেলি বিয়ে করা বৌ আমি চাইলে সবটাই এই মূহুর্তে আদায় করতে পারি, তা আপনি বা অন্য কেউ আমায় বাধা দিতে পারবে না, আর আপনি কোন হুর পরী নন যে আমি নিজেকে আটকাতে পারব না একটা হ্যাংলা পুচকি ঝগরাটে মেয়ে হুম,
আরো শুনুন আমার সায়মার জায়গাটা না কেও নিতে পারবেনা কোন হুর পরীও না, আর আপনি তো বহু দূরে তাই এসব ভাবনা বাদ দিয়ে চলুন ওকে গুন নাইট,
এক শ্বাসে বলে তুর্জ ও পাশ ফিরে শুয়ে পরলো,
নন্দিনির মনটা এবার একটু খারাপ হল সায়মা নাম টা শুনে তুর্জের মুখে, আমার সামনে সায়মার নাম টা নিলো কেন!!!
ধুর নিলেই আমার কি যা ইচ্ছা করুক,
বলেই নন্দিনিও শুয়ে পরলো,
নন্দিনি শুয়ে নিলয়ের সপ্নে ডুপ দিলো,
বিয়ের ডেটও প্রায় ফিক্সট ছিলো নিলয় আর নন্দিনির,
নিলয় খুশিতে পাগল ছিলো কারন তার নন্দি কে নিজের করে পাবে, কতই শপিং কত কিছু নিলয়ের মা বাবা দুজনই ছেলের খুশিতে আত্ত হারা,
নন্দিনির বাবা মা ও খুশি ছিলো, মেয়ে মনের মত তার জীবন সাথি পাচ্ছে আর কি চাই জীবনে,
এক মাএ মেয়ে নন্দিনি তার বাবার সব সম্পত্তির একলা মালিক, সবার চোখের মনিও বটে,
বিয়ের এক সপ্তাহ আগেই নিলয়কে দেখতে পেয়েছিলো অন্য একটা মেয়ের হাত ধরে প্রেমালাপ করছিলো,
তা নন্দিনির চোখ এরায় নি,
কি সহজ করে নিলয় বলে দিলো সে ভালো বাসেনা তাকে সে এই মেয়েটাকে ভালো বাসে আর কালকেই বিয়ে করবে,
আর নন্দিনি ছিলো টাইম পাস,
ছোট্ট এই শব্দ শুনার পর নন্দিনি দু দিন হাসপাতালে ছিলো,
আর তার পর ওর বাবা তার বিয়ে দিতে উঠে পরে লাগে,,,,,,,
নন্দিনি কাদঁছে বেইমান নিলয়কে নিয়ে, আর তুর্জ ভাবছে তার প্রান প্রিয় সায়মাকে নিয়ে,
দুজনেরই রাত পার হয়েছে দুই দুনিয়ায় ডুবে।
সকালে তুর্জ আগে উঠে সায়মার ছবি গুলো আবার দেয়ালে টানিয়েছে, যা কিনা তার মা সব নামিয়ে ফেলেছে হয়তো নতুন বৌ রাগ হবে ভেবে,
তবে তুর্জের এতে কিছু জায় আসেনা, কে রাগ করলো না করলো,
সে তার সায়মাকে দেখতে চায় সব জায়গায় বাস,
নন্দিনি ঘুম থেকে উঠেই ছবি গুলোতে চোখ বুলালো, বেস সুন্দরিই ছিলো বুইড়ার বৌ টা,
তবে কেন জানি হিংসাও হচ্ছে কেন এত সুন্দরি হল,,
একটু তাকিয়ে থেকে মনটা একটু খারাপ করে ফ্রেস হয়ে বাহিরে চলে গেলো।
নাস্তা করে তুর্জ বেরিয়ে গেছে সেই কখন তুলিকে নিয়ে হাটতে বেরিয়েছে, আজ কোটে জাবেনা তাই পুরো সময়টা মেয়েকে দিতে চায় সে,
নন্দিনিও নাস্তা সেরে বসে আছে খুব বুর হচ্ছে তুলিটা নেই মেয়েটার মায়ায় পরে গেছে,
দুপুরে একটু আগে তুর্জ বাড়ি ফিরেছে,
সবাই এক সাথে বসেছে তুলি আর নন্দিনি নেই,
কারন সারা দিনে পেয়েছে তুলিকে কোলে নিয়ে এত চুমু খেলো এতে সবাই খুশি, তবে তুর্জ এখন সিউর না ওর রুপটা বুঝতে পারছেনা,
নন্দিনি তুলিকে বুকে জরিয়ে কত কথাই বলছে আর তুলিও টুকটাক একটু আটু বলছে,
বিকেলে নন্দিনির মা বাবা এসেছে ওদের নিতে,
নন্দিনি অভিমান করে তার বাবার সাথে একটুও কথা বলেনি, তবে তুর্জ বেস আপ্পায়ন করেছে তাদের,
নন্দিনির বাবা তাদের জেতে বললেই তুর্জ খেপে জায়,
আর বলে আপনার মেয়েকে নিতে চান নিয়ে যান জত দিন খুশি থাকুক, তবে আমি জাবো না বা তুলিতো না একদমইনা…..
চলবে।