#ভালবাসার_মেঘ_বৃষ্টি
#Avigya_Ayaat
পর্বঃ৫
ছেলেটির কথা শুনে আহিকার অনেক রাগ হয়।
আহিকাঃ রুপা দেখ ছেলে-মেয়ে গুলো কি বেয়াদব। ওই গরীব লোকটার টাকা দিচ্ছে না। আমার মনে করছে ওদের ধরে মাইর দিয়ে আসি।
রুপাঃ তুই এসব বাদ দিয়ে চল এখান থেকে।
আহিকা ঃ আমি ওদের কাছে থেকে টাকা নিয়ে ফুসকাওয়ালাকে দিবো তারপর যাবো।
এরপর আহিকা রুপার কোনো কথা না শুনে সেই ছেলেদের সামনে যায় আর ছেলেদের কে বলে….
আহিকাঃ টাকা না থাকলে ফুসকা খেতে আসেন কেনো?
সেইখান থেকে একটি ছেলে রেগে বলে ওঠে..
– এই মেয়ে আমাদের দেখে কি গরীব মনে হয়?
আহিকাঃ দেখে গরীব মনে হয় না, তবে আপনাদের ব্যবহার দেখে গরীব লাগে।
ছেলেটি বলে….
– আমার যে টাকা আছে, আমার তো মনে হয় তার কানি কোনা ও তোমার নেই। আমি কে জানো?
আহিকাঃ আপনি কে তা দিয়ে আমি কি করবো? আপনি একজন গরীব লোকের কাছ থেকে খাবার খেয়ে টাকা দিচ্ছেন না এর মানে আপনি তার থেকে ও গরীব।
– এই মেয়ে এবার কিন্তু বেশি বেশি বলে ফেলছো ।
আহিকাঃ আমি বেশি বেশি যখন বলছি তাহলে ওনার ফুসকার টাকা দিয়ে দেন।
– দিবো না টাকা।
আহিকা ছেলেটাকে আর কিছু না বলে সেই লোকটির দিকে তাকিয়ে বলে..
আহিকাঃ মামা ওনারা গরীব মানুষ খেতে পাই না তাই আপনার কাছে থেকে খাবার খাইছে। ওনাদের কাছে টাকা নেই তাই মাফ করে দেন।
আহিকার কথা শুনে ছেলেটি বলে….
– এই বেয়দপ মেয়ে তোমার সাহস হয় কি করে এসব বলার।
আহিকাঃ সত্যি তো বললাম।
ছেলেটি রেগে দোকানদারকে এক হাজার টাকার নোট দিয়ে সেখান থেকে চলে যায় আর যাওয়ার সময় আহিকাকে বলে..
– আমার চোখের সামনে আর কখনো পরো না, তাহলে তোমার অবস্থা খারাপ হবে।
আহিকা তার কথা কানে না নিয়ে হাসি মুখে ফুচকাওয়ালা কে বিদায় বলে সেখান থেকে চলে আসে।
রূপাঃ আহিকা তুই শুধু শুধু কেনো ঝামেলা করতে গেলি।
আহিকাঃ তারা লোকটির সাথে অন্যায় করছিলো, লোকটি গরীব, তার সংসার এই ফুসকা বিক্রির টাকা দিয়ে চালায়।আর তুই তো জানিস আমার বাবা সবসময় বলে অন্যায় সহ্য না করতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে।
রূপাঃ আচ্ছা বাদ দে, দোয়া কর জেনো কখনো আর দেখা না হয়।
এরপর দুজনে বাসায় চলে যায়।
তিন দিন পর…..
আহিকাঃ মা আমি ভার্সিটি গেলাম।
আহিকার মাঃ সাবধানে যাবি আর কারো সাথে কোনো ঝামেলা করিস না বললাম।
আহিকাঃ আচ্ছা।
এরপর রূপা আর আহিকা ভার্সিটি যায় । দুজনে ভার্সিটির মাঠে হাটছে তখনি রূপা বলে…
রূপাঃ আহিকা দেখ…..
আহিকাঃ কি দেখবো?
রূপাঃ তোর ডান দিকে তাকিয়ে দেখ।
আহিকা তার ডান দিকে তাকিয়ে দেখে একটু দূরে সেই দিনের সেই ছেলে -মেয়েরা দাড়িয়ে।
আহিকাঃ রূপা এইখান থেকে তাড়াতাড়ি চল এই ফালতু লোকদের সাথে কোনো কথা বলার ইচ্ছা নেই।
রূপাঃ হুম,না জানি আবার দেখা হলে কি ঝামেলা করে।
দুজনে তাড়াতাড়ি ক্লাস রুমে চলে যায়।
দুজনে ক্লাস রুমে বসে আছে তখনি ক্লাসের বাহির দিয়ে সেই ছেলেরা যায়।।
আহিকা তা দেখে রূপাকে বলে….
আহিকাঃ এসব ফাজিল ছেলেরা এই দিক দিয়ে ঘুড়ঘুড় না করে অন্যদিকে যেতে পারে না।
তখনি পাশে থাকা একটি মেয়ে বলে…
– চুপ করো, এসব কথা জেনো তারা শুনতে না পায়। এই ভার্সিটির নেতা টাইপের এরা। সবাই অনেক খারাপ। সবগুলো ধনীর দুলাল। এদের লিডার হলো আহাম খান। এদের থেকে দূরে দূরে থেকো, না হলে তোমার অবস্থা কি হবে ভাবতে ও পারবে না।
রূপা মেয়েটির কথা শুনে বড় একটা ঢোক গিলে আহিকার দিকে তাকায়। আহিকা রূপার দিকে চুপ করে তাকিয়ে থাকে।
রূপা ঃ যদি কিছু হয় তাহলে তোর মা তোকে আলুর ভর্তা করবে।
আহিকাঃ ভয় পেয়ে লাভ নাই, যা হবার হবে, পরে দেখা যাবে।
রূপাঃ হুম দেখিস তুই।
আহিকা আর রূপা ক্লাস শেষ করে বাসায় যাওয়ার জন্য বের হয়। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আহিকা কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। মাথা উচু করে তাকিয়ে দেখে সেই ছেলে দাঁড়িয়ে।
আহিকা কিছু বলতে যাবে তার আগে ছেলেটির পাশে থাকা মেয়েটি বলে …..
– আহাম দেখ সেই মেয়েটি।
আহিকা কথাটা শুনে একটু ভয় পেয়ে যায় আর মনে মনে বলে…
আহিকাঃ যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যা হয়।
আহাম রাগি কন্ঠে সয়তানি একটা হাসি দিয়ে বলে….
আহামঃ আমি তোকে বলেছিলাম না যে আমার সামনে কখনো আসবি না, তাহলে তোর অবস্থা খারাপ হবে। তাও তো আসলি,এখন তোর কি হবে ভাবছি।
আহিকা ভয় পেলে ও মনে মনে স্থীর করে যে সে ভয় পাবে না।
আহাম তার পাশে থাকা মেয়েটি কে বলে…
আহাম ঃ রিতা বলতো কি করা যায়।
রিতাঃ তুই কি করবি তাড়াতাড়ি করে নে।
আহিকা আশেপাশে তাকিয়ে দেখে ভার্সিটির অনেকে তাকিয়ে দেখছে কিন্তু কেউ কিছু বলতে আসছে না।
রূপা কিছু বলতে চাই ছিলো কিন্তু আহিকা তাকে চোখের ইশারায় চুপ থাকতে বলে।
আহাম ঃ সবার সামনে আমি বরং এই মেয়েকে একটা কিস করে দেয়।
আহামের কথা শুনে তার বন্ধরা সবাই জোরে হাসতে থাকে আর আশেপাশের সবাই চুপ হয়ে আছে।
আহিকা ভাবে যা করার তার নিজের করতে হবে, নিজের রক্ষা নিজেকেই করতে হবে।
আহাম আস্তে আস্তে আহিকার কাছে যাচ্ছে তখন আহিকা রাগে জোরে আহামের গালে চড় মারে আর বলে
আহিকাঃ অসভ্য মানুষের অসভ্য কারবার। আপনাদের মতো মানুষকে দেখলে ঘৃণা আসে।আর মনে রাখবেন এই আহিকা দূর্বল না।
এই বলে আহিকা রূপাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসে।
আহামের জেনো রাগে মাথা গরম হয়ে গেছে। আহাম মনে মনে বলে
আহামঃ আহিকা তোকে আমি দেখে নিবো,সবার সামনে আমার গালে চড় মারার প্রতিশোধ আমি নিয়েই ছাড়বো।
আহিকা ঃ আমার মা জেনো এসব না জানে।
রূপাঃ ঠিক আছে কিন্তু আবার তুই ভার্সিটি যাবি কি করে, আজকের পর তো তোর সাথে আরো খারাপ কিছু করার চিন্তা করবে ।
আহিকাঃ আমি ও দেখবো কি করে,আমার ভয় পেলে চলবে না।
পরের দিন…..
আহিকা আর রূপা ভার্সিটি যায়।
রূপাঃ আমার অনেক ভয় করতাছে, না জানি আজ কি হয়।
আহিকার ও ভয় করছে তাও মনে সাহস নিয়ে বলে..
আহিকাঃ রূপা ভয় পেয়ে লাভ নাই,মনে সাহস রাখ।
রূপাঃ হুম…
আহিকা আর রূপা ক্লাসে যাচ্ছে তখনি হঠাৎ কেউ পিছন থেকে আহিকার চোখ বেঁধে নিয়ে যায়।
কিছু সময় পর আহিকার চোখ খুলে দেয়।
আহিকা আশে পাশে তাকিয়ে দেখে চারপাশ অন্ধকার, কেউ নেই সেখানে।
একটু পর আহিকা দেখে রুমের দরজা দিয়ে দুজন তার দিকে আসছে। আহিকার কাছে এসে বলে…..
-তোকে দেখে ১ম দিনই তোকে ছোয়ার খুব শখ হয়েছিল তাই আজ দুজনে শখটা পূরন করবো।
আহিকা মনে সাহস নিয়ে বলে….
আহিকাঃ কে?
– তা জেনে কি করবি?
আহিকা ছেলেটির কন্ঠ আহামের কন্ঠের সাথে মিলালোন চেষ্টা করে। কিন্তু কন্ঠটা আহামের না।
হঠাৎ একটা ছেলে আহিকার হাত ধরে। আহিকা কি করবে ভেবে না পেয়ে তার মাথায় থাকা চুলের কাঠি হাতে নিয়ে সেই ছেলের হাতে পাড় দেয়।
ছেলেটি চিৎকার করে হাত ছেড়ে দেয়।
আরেকটা ছেলে আহিকাকে ধরতে আসে তর সাথে ও একি কাজ করে।
আহিকা দুজনের হাত বেধে তাড়াতাড়ি রুমের লাইট জ্বালায় আর ছেলেদের দিকে তাকিয়ে দেখে…..
চলবে…..