ভালবাসার মেঘ বৃষ্টি পর্ব -০৪

#ভালবাসার_মেঘ_বৃষ্টি
#Avigya_Ayaat
পর্বঃ৪
আহিকাঃ আমাকে তোরা চিনিস না। আমি কি কি করতে পারি এখন থেকে দেখবি।
এরপর আহিকা খুন্তি সরিষা নেই আর ছেলেটি তাড়াতাড়ি ঠান্ডা পানিতে হাত ভিজায়।
আহিকা ঃ ভেবেছিলাম আজকে সবাইকে একটু আনন্দে কাটাতে দেয় কারন কারন থেকে তাদের আর আনন্দ থাকবে না৷ কিন্তু তোরা তা হতে দিলি না। আজ থেকেই তোদের শায়েস্তা শুরু।
আহিকা হাত গরম খুন্তি নিয়ে আহামের আড্ডার সেখানে যায় আর সেখানে থাকা মদের বোতল,গ্লাস সব ফেলে দেয়।
আহাম রাগে বলে….
আহামঃ আহিকা… ….,এইটা কি করলি?
আহিকাঃ কেনো চোখে দেখতে পারিস না বুঝি।
আহামঃ আমার আর রাগ বাড়াবি না তাহলে তোর অবস্থা ভাল হবে না।

রাকিবঃ আরে আহাম এইসব ছোট লোকদের সাথে কথা না বলে গালে কয়টা চড় মেরে দেয়। [ রাকিব আহামের বন্ধু। রাকিব,রনি,টিনা আর রাকিব আড্ডা দিচ্ছিলো আজ ]
আহিকা রাকিবের দিকে তাকিয়ে বলে…
আহিকা ঃ আমাকে ছোয়া তো দূরে থাক যে আমাকে ধরতে আসবে তার অবস্থা খারাপ করে দিবো।
টিনা ঃ আরে আহাম ওর কথা না শুনে কয়টা চড় দেয়। আহিকা কিছুই করতে পারবে না। তুই না পারলে আমি দিলাম।
এই বলে টিনা আহিকার দিকে এগিয়ে আসে আর তার গালে চড় দিতে যায়। তখনি আহিকা টিনার হাত ধরে মোচড় দেয়। টিনা জোরে ঔ মা বলে ওঠে।
আহিকা ঃ বলেছিলাম না আমাকে কেউ ধরতে আসলে তার খারাপ অবস্থা হবে।
এই বলে আরো জোরে হাতে মোচড় দেয়।
টিনাঃ হাত ছেড়ে দে বলছি আহিকা।
আহিকাঃ মনে থাকবে তো, এই হাত জেনে আর কখনো আমাকে মারার জন্য না ওঠে।
আহামঃ আহিকা ছেড়ে দে বলছি টিনাকে।
আহিকা টিনার হাত ছেড়ে দিয়ে বলে….
আহিকাঃ আহাম তোকে ভাল করে বলে দিচ্ছি,তোর বন্ধুদের বলে দিবি আমার সাথে জেনো কখনো লড়তে না আসে।
রাকিবঃ আমি এখন তোকে কিছু বলছি না, তবে……
রাকিবকে আর কিছু বলতে না দিয়ে আহিকা বলে….
আহিকা ঃ সেইদিন তোকে চড় মেরে ছিলাম মনে নাই।
রাকিবঃ এইবার তুই কিন্তু বেশি বেশি করছিস।
আহিকাঃ শুন…. চড় যদি মারতে পারি তাহলে এইবার লাথি ও মারতে পারবো। আর আমার হাতের গরম খুন্তি দিয়ে হাত ও পুড়াতে পারবো।
আহাম রাগে জোরে চিৎকার করে বলে….

আহামঃ আর একটা কথা বললে গলা টিপে মেরে ফেলবো।
আহিকা ঃ আমি যা বলছি একটা কথা ও মিথ্যা বলি নাই। তার প্রমান তোদের বন্ধু রনি।
আহাম, রাকিব, টিনা পাশে তাকিয়ে দেখে রনি নেই।
আহামঃ রাকিব কই?
আহিকাঃ আমি কি করে জানবো রনি কোথায়।
রাকিবঃ রনির সাথে কি করেছিস বল।
আহিকাঃ তেমন কিছু করেনি, শুধু তার অপরাধের শাস্তি দিয়েছি। আরে আমার কথা শুনে ঘাবড়ে যাচ্ছিস কেনো?যা সবাই কিচেনে গিয়ে দেখ।
সবাই তাড়াতাড়ি কিচেনে যায় আর দেখে রনি তার হাতে ঠান্ডা পানি ঠালছে।
আহাম রনির কাছে গিয়ে বলে……
আহামঃ রনি তোর হাতে কি হয়ছে?
রনি কিছু বলতে যাবে তার আগে আহিকা বলে…..
আহিকাঃ সে আমার গায়ে হাত দিছিলো তাই হাতে গরম খুন্তি ধরছি।
টিনাঃ তোর এতো সাহস যে আমার ফ্রেন্ডের সাথে এমন করিস।
আহিকাঃ আমার আরো সাহস আছে, আমি এখন তো গালে ও চড় দিতে পারবো।
আহিকার কথা শুনে আহাম তার গালে চড় দিতে আসে। আহিকা তার হাত ধরে বলে
আহিকাঃ আমাকে মারার অধিকার তোর নেই তাই এমন দুঃসাহস আর কখনো দেখাবি না। আর সবাই এ বাড়ি থেকে এখনি বের হয়ে যা না হলে আমি এখনি আহামের দাদুকে কল দিয়ে তোদের মাতাল চেহারা দেখাচ্ছি।
রাকিব আহামের দিকে তাকিয়ে বলে…..
রাকিবঃ এ বাড়িতে এসে এমন অপমান হতে হবে জানতাম না। আর কখনো আসবো না।
আহিকাঃ আমি জেনো তোদের আবার আসার অপেক্ষায় দরজার সামনে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো।
টিনাঃ এই ছোট লোকের সাথে কথা না বলে সবাই এখান থেক চল।
আহিকাঃ হুম বড় লোকের বেটি তাড়াতাড়ি যা।
এরপর সবাই বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।
আহামঃ আহিকা তুই কাজটা একদম ঠিক করলি না।

আহিকা কথা শুনে ও না শুনার ভাব করে সেখান থেকে নিজের রুমে চলে যায়।
আহিকা নিজের রুমে শুয়ে আছে তখনি আহামের খালা আহিকাকে ডাকে। আহিকা বিছানা থেকে নেমে আহামের খালার কাছে যায়।
আহামের খালাঃ কখন থেকে ডাকছি নবাবজাদীর এখন আসার সময় হলো।
আহিকাঃ শুধু শুধু মিথ্যা শুনা আমি পছন্দ করি না।
আহামের খালাঃ আমি মিথ্যা বলছি।
আহিকাঃ আপনি তা ভাল জানেন।
আহামের খালাঃ মুখে মুখে তর্ক করতে পারিস।
আহিকাঃ নিজের অধিকার, ভাগ,সম্মানটা বুঝে নিতে জানি।
আহামের খালাঃ ছোট লোকদের আর কিছু না থাকলে ও মুখে বড় বড় কথা আছে।
আহিকাঃ হুমম আমি ছোট লোক ঠিক আছে। তবে আপনার মতো না।
আহামের খালাঃ ঃ মানে?
আহিকাঃ মানে এই যে আপনি বড় লোক বলে অন্যের বাড়ি থাকেন নিজের ছেলে, স্বামী রেখে। আবার অন্যের বাড়ির বউকে কথা শুনান।
আহিকার কথা শুনে আহামের খালা রেগে বলে….
আহামের খালাঃ তোর এতো সাহস আমাকে এসব বলিস। আসুক আহামের দাদু সব বলবো।
আহিকা ঃ নিজের বেলায় যদি ষোলো আনা হয় তাহলে অন্যের বেলায় আট আনা কেনো? অন্যরা যদি ষোলো আনা বুঝে নেয় আমি ও ষোলো আনা বুঝে নিতে পারি।
এই বলে আহিকা সেখান থেকে চলে আসে।
আহিকা নিজের রুমে বসে অতীতের কথা ভাবছে যার জন্য আজ তার বাবা- মা তার থেকে দূরে । যার জণ্য তার সাজানো জীবনটা এলোমেলো।
অতীত…..
আহিকা তোর আসতে এতো দেড়ি হলো কেনো?
আহিকাঃ মা এমনি রাস্তায় রিকশা নষ্ট হয়ে গেছিলো তাই হেটে আসছি।
আহিকার মাঃ এমনি কোনে সমস্যা হয়নি তো ভার্সিটিতে?
আহিকাঃ না মা।
আহিকার মাঃ কেউ কিছু বললে চুপ করে থাকিস, কিছু বলিস না।
আহিকা ঃমা তুমি জানো আমি আমার সাথে অন্যায় সহ্য করি না আর অন্যের সাথে ও।
আহিকার মাঃ তবুও।
আহিকাঃ মা বাদ দাও তো এখন এসব। আমি আমার রুমে গেলাম।
এই বলে আহিকা নিজের রুমে চলে যায়।

বিকেলে…

আহিকাঃ মা আমি রুপার সাথে একটু বাহিরে গেলাম। [রুপা আহিকার ফ্রেন্ড। ]
আহিকার মা ঃ কেনো?
আহিকাঃ এমনি একটু ঘুরতে আর ফুসকা খাবো।
আহিকার মাঃ যা কিন্তু তাড়াতাড়ি চলে আসিস, রাস্তায় কারো সাথে ঝামেলা করিস না।।
আহিকাঃআচ্ছা।
এরপর দুজনে ঘুরতে বের হয়। কিছু সময় ঘুরার পর দুজনে রাস্তার পাশের ফুসকার দোকানে ফুসকা খেতে যায়।
দুজনে ফুসকা খাচ্ছে তখন কয়টা ছেলে আসে সাথে দুইটা মেয়ে। সবাই ফুসকা খায়। আহিকা ফুসকার বিল দিয়ে সেখান থেকে চলে আসছে তখন শুনে ফুসকাওয়লা একটা ছেলেকে বলছে….
ফুসকাওয়ালা ঃ আমার টাকাটা দিয়ে জান মামা আমি গরীব মানুষ।
ছেলেটিঃ টাকা দিলাম না আমরা তাই তুই কি করবি শুনি।
ছেলেটির কথা শুনে আহিকার অনেক রাগ হয়।
আহিকাঃ রুপা দেখ ছেলে-মেয়ে গুলো কি বেয়াদব। ওই গরীব লোকটার টাকা দিচ্ছে না। আমার মনে করছে ওদের ধরে মাইর দিয়ে আসি।
রুপাঃ তুই এসব বাদ দিয়ে চল এখান থেকে।
আহিকা ঃ আমি ওদের কাছে থেকে টাকা নিয়ে ফুসকাওয়ালাকে দিবো তারপর যাবো।
এরপর আহিকা রুপার কোনো কথা না শুনে সেই ছেলেদের সামনে যায় আর……
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here