ভালবাসার মেঘ বৃষ্টি পর্ব -০৩

#ভালবাসার_মেঘ_বৃষ্টি
#Avigya_Ayaat
পর্বঃ৩

আহামের দাদুঃ আমি তোমার পাশে আছি কারন একটা মেয়ের সাথে অন্যয় আমি কখনো মেনে নিবো না।
আহিকাঃ তাহলে কাল থেকে দেখবেন আমার আসল খেলা।
আহামের দাদুঃ আচ্ছা আমাকে কি করতে হবে?
এরপর আহিকা আর আহামের দাদু কিছু কথা বলে।
আহিকাঃ আমি যা বললাম করতে পারবে দাদু।
আহামের দাদুঃ তোর জন্য সবই করবো আমি।
আহিকাঃ আচ্ছা দাদু।
দাদুঃ আচ্ছা তুই তোর রুমে যা।
আহিকা নিজের রুমে চলে আসে। তার বাবা-মায়ের কথা খুব মনে পরছে। আহিকা মনে মনে ভাবছে আহিকাঃ আহামের একটা মিথ্যা কথার কারনে আমার জীবন আজ অন্য রকম। আমার তো কোনো দোষ ছিলো না। আমি আহামের সাথে যা করছি তা তো কোনো দোষের না। প্রতিটা মেয়েই এমন করবে।
আহিকা সবকিছু ভেবেই বড় একটা নিশ্বাস নেই।

রাতে…..
একটু আগে আহাম ড্রিংক করে বাসায় এসেছে । আহিকা রুমে বসে আছে তখন আাহাম রুমে আসে।
আহিকা মাতাল আহামকে দেখে রেগে যায়।
আহিকাঃ আপনার সাহস হয় কি করে ড্রিংক করে রুমে আসার।
আহাম মাতাল কন্ঠে বলে….
আহামঃ আমার রুমে আমি যখন ইচ্ছা আসবো,যেভাবে ইচ্ছা আসবো, দরকার হলে এই রুমে বসেই ড্রিংক করবো।
আহিকাঃ এই রুম এখন আমার, এই রুমে কে আসবে, কে কি করবে তা আমি বলবো।আমার রুমে কেউ ড্রিংক করে ঢুকতে পারবে না তাই এখান থেকে বের হন।
আহিকার কথা শুনে আহাম রেগে তার দিকে তেড়ে আসে আর বলে…..

আহামঃ এইটা আমার রুম আর তুই এখান থেকে বের হ এখনি।
আহিকা আহামের দিকে আঙ্গুল উচু করে রাগে বলে…..
আহিকাঃ আমার সাথে রাগ দেখিয়ে কথা বলবি না। আর খুব শখ ছিলো না আমাকে বিয়ে করে কষ্ট দেওয়ার, কিন্তু সব তোর ওপর উল্টো পরবে। আমি এমন অবলা না যে নিজের জন্য লড়াই করতে পারবো না। তোর সবকিছু পাশের রুমে আছে ওইখানে চলে যা।
আহামঃ তোকে তো আমি মেরেই ফেলবো……
আহিকাঃ হাত লাগিয়ে দেখ না, তোর হাত কেটে ফেলে দিবো।
আহাম ঃ তোর সাহস অনেক বেড়ে গেছে দেখছি।
আহিকা ঃ তোর মতো মানুষের সাথে যুদ্ধে নামলে সাহস তো লাগবেই। এখন চুপচাপ এখান থেকে বের হ।
আহাম রাগে বেডের পাশে থাকা একটা ফুলদানি ভেঙ্গে সেখান থেকে চলে যায়।
আহাম চলে যাবার পব আহিকা বলে…
আহিকাঃ দরজার আড়ালে যে আহামের খালা লুকিয়ে কথা শুনছিলেন আমার সামনে আসেন।
দরজার আড়ালে লুকিয়ে থাকা আহামের খালা থতমত খেয়ে রুমের ভিতর আসে।
আহিকাঃ দরজার আড়ালে দাড়িয়ে কথা শুনছিলেন কেনো?
আহামের খালাঃ কই, আমি তো এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলাম আরকি।
আহিকাঃ আমি তো কুচি খুকু, কিছুই বুঝি না, চোখে দেখতে পায় না।
আহামের খালাঃ মানে?
আহিকা রেগে বলে…..
আহিকাঃ মানে আপনি মিথ্যা বলছেন। তবে চিন্তা করবেন না একদমই কারন বেশি দিন আর এ বাড়িতে আপনার থাকা হবে না, আড়ালে দাড়িয়ে কথা শুনতে পারবেন না।
আহামের খালা ঃ কি সব বলছো তুমি?
আহিকা ঃ বলছি আপনার সব ব্যাগপত্র গুছাতে শুরু করে দিন। আর এখন এখান থেকে যান।
আহামের খালা রাগে রুম থেকে বের হয়ে যায় আর মনে মনে বলতে থাকে……
আহামের খালাঃ আমাকে এ বাড়ি থেকে বের করতে চাইছিস। তার আগে আমি তোকে এ বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিব।

আহিকা রুমের দরজা বন্ধ করে রাতে ঘুমিয়ে যায়।

সকালে….
আহিকা ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে ড্রইংয় রুমে আসে। আহিকা আর দাদু বসে বসে কথা বলছে। কিছু সময় পর আহাম আর তার খালা আসে।
আহামের দাদু ঃ তোমরা যেহেতু চলে আসছো তাহলে আমার একটা কথা শুনো।
আহামের খালাঃ কি কথা?
আহামের দাদুঃ আমি তিন দিনের জন্য বাহিরে যাচ্ছি। একটা কাজ পরে গেছে আর্জেন্ট তাই।
দাদুর কথা শুনে আহাম আর তার খালা মনে মনে খুশি হয় আর মনে মনে বলে…..
আহামঃ এখন দেখবি আহিকা তের সাথে আমি কি করি।
এই বলে মনে মনে শয়তানি হাসি দেয়।
অন্যদিকে আহামের খালা মনে মনে বলে…
আহামের খালাঃ আজ থেকে বুঝবি আমার সাথে তর্ক করার পরিণাম।
আহিকা দুজনের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসি দিয়ে মনে মনে বলে…..
আহিকাঃ যত খুশি হবার হয়ে নাও,একটু পর থেকে তোমাদের সাথে কি হবে তোরা নিজে ও জানে না,।
আহামের দাদুঃ আচ্ছা আমি তাহলে সকালের নাস্তা,করে বের হবো,
কয়েক ঘন্টা পর আহামের দাদু কাজের জন্য চলে যায়। আহিকা নিজের রুমে শুয়ে আছে এমন সময় আহাম আসে।
আহামঃআমার বন্ধু -বান্ধব আসবে একটু পর। তাদের আপ্যায়ন তুই করবি।
আহিকাঃ তোর শয়তানি ফ্রেন্ডরা আসবে।

আহামঃ একদম ওদের ব্যাপারে খারাপ কিছু বলবি না।
আহিকাঃ ওদের ব্যাপারে কথা বলতেই ঘৃণা লাগে।
আহাম রাগে জোরে চিল্লিয়ে বলে..
আহামঃ আহিকা……,তোর মুখে অনেক কথা ফুটছে। আমি কমানোর ব্যবস্থা করছি।
আহামের খালা ঃ এই যে নবাববাড়ি তাড়াতাড়ি রান্না করো যাও, খুব তো শখ আমাকে বাসা থেকে বের করার। এখন দেখ তোর সাথে কি হয়?
আহিকাঃ আচ্ছা আমাকে দেখে তোদের কি মনে হয়? আমি কি অবলা যে দাদু চলে গেছে তাই ভেঙ্গে পরবো। তোমাদের ধারনা ভুল। আপনার ইচ্ছা হলে রান্না করে নেন।
একটু পর বাসার ভিতর আহামের কিছু বুন্ধ আসে।আহাম তাদের নিয়ে বসার রুমেই আড্ডা দিচ্ছে আর ড্রিংক করছে।
হঠাৎ আহাম আহিকাকে টেনে সবার সামনে নিয়ে বলে…..
আহামঃ দেখ সবাই এই মেয়েটাকে চিনিস তোরা…..
আহামের এক বন্ধু বলে….
আহামের বন্ধু ঃ এইটা তো সেই মেয়ে।
আহাম ঃ হুমমম, সেই মেয়ে যাকে আমি টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছি।
আহিকা রাগে ফুসছে তাও কিছু বলছে না।
আহাম তার ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলে একটা কাজের জন্য একটু রুমে যায়।
আহিকা ও সেখান থেকে চলে আসছে তখনি আহামের এক বন্ধু আহিকার হাত টেনে ধরে। তাতে আহিকার মাথায় যেনো আগুন ঝরছে।
আহিকা রাগি চোখে তাদের দিকে তাকায় আর তখনি আহামের বন্ধ বলে….
আহামের বন্ধু ঃ আরে এভাবে তাকাও কেনো? আমি তো শুধু হাত ধরেছি এর বেশি কিছু তো করেনি।
আহিকাঃ তোদের নোংরা মুখ দেখার বা তেদের কথা শুনার ইচ্ছা নেই। তাই আমার হাত ছেড়ে দে বলছি। এরপর আহিকা জোর করে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়।
আহামের বন্ধু ঃ আমাদের একটু ধরতে দাও তোমাকে।
আহিকাঃ ধরতে আসিস, হাত কেটে দিবো।
এই বলতে বলতে আহিকা কিচেনে যায়।
একটু পর আহামের এক বন্ধু চুপিচুপি কিচেনে গিয়ে পিছন থেকে আহিকাকে জরিয়ে ধরতে যায় আর তখনি আহিকা গরম খুন্তি সেই ছেলের হাতে চাপ দিয়ে ধরে আর বলে..
আহিকাঃ আমাকে তোরা চিনিস না। আমি কি কি করতে পারি এখন থেকে দেখবি।
এরপর আহিকা খুন্তি সরিষা নেই আর ছেলেটি তাড়াতাড়ি ঠান্ডা পানিতে হাত ভিজায়।
আহিকা ঃ ভেবেছিলাম আজকে সবাইকে একটু আনন্দে কাটাতে দেয় কারন কারন থেকে তাদের আর আনন্দ থাকবে না৷ কিন্তু তোরা তা হতে দিলি না। আজ থেকেই তোদের শায়েস্তা শুরু।
আহিকা হাত গরম খুন্তি নিয়ে আহামের আড্ডার সেখানে যায় আর…
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here