তুমি আসবে বলে পর্ব -২+৩+৪

#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-২

অরনিঃ হ্যালো

ওপাশ থেকেঃ————

আরনিঃ না না না এমনটা করো না। এখানে আসলে অনেক প্রবলেম হতে পার বোঝার চেষ্টা করো। আর এখন দিদিয়া ভালো আচ্ছে। আসলে প্যানিক এ্যাটাক হয়েছিলো। তুমি তো জানো সব..

ওপাশ থেকেঃ —————–

অরনিঃ অনেক দিনের কষ্টের ফল এভাবে নষ্ট করে দিওনা প্লিজ৷ যারা যারা পাপ করেছে তাদের সবাই কে তার কর্মেফল পেতে হবে। তাই এসব কথা মথা থেকে বের করে দাও। আর হ্যাঁ আমি দিদিয়ার খেয়াল রাখছি তুমি তোমার কাজ করো শুধু

ওপাশ থেকেঃ —————

অবনিঃ ওকে বাই

বলে ফোন কেটে দিলো। অরনি অন্তুর দিকে তাকিয়ে বলো…সবাইকে তার কর্মের ফল পাবে শুধু সময়ের অপেক্ষা। বলে লাইট অফ করে অন্তুর পাশে শুয়ে পরে…
_______________________

আয়ান অন্তুর রুম থেকে বেরিয়ে তার রুমে এসে দেখে তার বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল তার স্ত্রী আয়রা জেগে বসে আচ্ছে বেডে। আয়ান ভাবে লাগলো শুধু এই একটা মেয়ে না থাকলে সে কবে মারা যেতো সে নিজেও জানে না। আয়ান হালকা হেঁসে রুমের দরজা বন্ধ করে বলতে লাগলো…

আয়ানঃ তোমাকে কতো বার বলবো আয়রা রাত জাগবে না। তোমাকে ডক্টর রাত জেগতে মানা করেছে কেন আমার কথা শোনো না এতে বেবির ক্ষতি হবে। [বলতে বলতে তার কাছে এসে বসলো]

(আসলে আয়রা ৭ মাসের প্রেগন্যান্ট) আয়রা আয়ানের কথার পাশে কিছু না বলে তার দিকে চেয়ে থাকে। আয়ানের কপালে কাটা দেখে সেখানে হাত দিয়ে বলতে লাগলো…

আয়রাঃ সরি আয়ান শুধু আমার জন্য তোমাকে এতো কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে। আমার জন্য আজ তোমার ফ্যামিলি তোমার সাথে ভালো করে কথা বলে না৷ আমার জন্য অরনি তোমার সাথে প্রয়োজন ছারা কথা বলে না। আর অন্তুর জীবনটা আমার জন্য ন….

আর কিছু বলতে যাবে তার আগে আয়ান তাকে বলতে না দিয়ে সে বললো…

আয়ানঃ সুহহহ আর একটা কথাও না। তোমাকে কতো বার বলবো এসব নিয়ে কথা বলবে না। তুমি আমার একটা কথাও শোনো না। এখন থেকে তোমার সব ভাবনা শুধু বেবিকে নিয়ে হবে আর কিছু না প্লিজ। আমি সব ঠিক করে দেবো সত্যি। [ বলে আয়ান আয়রার কপালে চুমু দেয়]

আয়রা আর কিছু বলো না আয়ান বেড সাইডের ড্রয়ার থেকে ফাস্ট এইড বক্স নিয়ে আয়রার কাছে দিলে আয়রা কাটা জায়গায় ঔষধ লাগিয়ে দিতে লাগলো। ঔষধ লাগানো শেষে আয়ান লাইট অফ করে বেডে এসে শুয়ে আয়রা কে বুকে নিয়ে তার মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। আয়রা চুপ করে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে যায় আর আয়ান যখন বুঝতে পারে আয়রা ঘুমিয়ে গেছে তখন তার কপালে চুমু দিয়ে সে ও ঘুমিয়ে যায়…
____________________________

পরিচয়…. অন্তরা মির্জা অন্তু আমাদের গল্পের নায়িকা। দেখতে অনেক সুন্দর ও ফর্সা, চোখগুলো টানাটানা, চুল অনেক বড়, ঠোটের বা পাশে নিচে একটা লালচে তিল আছে। ৪ বছর আগে একটা ঘটনাই অন্তুর জীবন পাল্টে যায়। আজাদ মির্জা (অন্তুর বাবা) তিনি রাজনীতি সাথা সংযুক্ত। আয়েশা মির্জা (অন্তুর দিদুন), আকাশ মির্জা (অন্তুর চাচা) তিনি ও আদি মির্জা (অন্তুর দাদাভাই) মিলে বিজনেস করে। আদি মির্জা বিজনেসর কাজে বিদেশে থাকে ৫ বছর ধরে, দেখতে অনেক হ্যান্ডসাম। নিহিতা মির্জা (অন্তুর চাচী)। অরনি মির্জা (অন্তুর চাচাত বোন) কিন্তু নিজের বোনের থেকে আপন। দেখতে কিউট ফর্সা হসলে গালে টোল পরে। অরনি অনার্স ৩য় বর্ষ। আয়ান মির্জা (অন্তুর চাচাত ভাই) সে তার বড় আব্বুর সাথে তার রাজনীতি সামলায়। আয়রা মির্জা (আয়ানের স্ত্রী)।

অর্ণব আহমেদ অন্তুর ভালোবাসা। সে অনাথ আস্তে আস্তে গল্পে সব বলা হবে…..
________________________

সকালের সোনালী রোদে প্রথম কিরণে ঝলকানিতে রুমের বড় পর্দা ভেদ করে রুমে প্রবেশ করচ্ছে। বিছানার মাঝে ছোট একটা পরী
হাত-পা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে শুয়ে আছে। তার লম্বা চুল গুলো মুখের ওপর পরে আছে। নিস্পাপ ভাবে ঘুমিয়ে আছে সেই পরী। হালকা রোদে আলোতে তার রুমকে আলোকিত করছে। হঠাৎ সেই রুমে একটা সুদর্শন পুরুষ প্রবেশ করলো। তার পরনে জগিং সুট সে হেটে সেই বিছানর কাছে এসে দেখে ছোট পরীকে -পা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ঘুমাতে দেখে তার ঠোঁটের কোণে হাসি ফোটে উঠলো। সে তার হালকা হাতে পরীটার মুখের উপর থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে কপালে ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দিলো। হালকা স্বরে ডাক দিতেই লাগলো… আনভি সোনা অনেক সকাল হয়েছে এবার ওঠো। তুমি তো জানো আমি তোমাকে ছাড়া সকালে খাই না তালে এমন করো না তাড়াতাড়ি ওঠো সোনা।

আনভি হালকা নড়েচড়ে ওঠে বসলো। তার হাত দিয়ে চোখ মুছে বললো…পাপা তুমি আবার আমালে (আমাকে) সোনা বলে [মুখ ফুলিয়ে বলো]

মেয়ের মুখ ফুলিয়ে থাকাতে দেখে রোদ তার কান ধরে ইনোসেন্ট ফেস করে বললো…. সরি আম্মু আর হবে না। তুমিতো আমার আম্মু তাইলে তোমাকে সোনা বলবো কেনো। হুমম…

আনভি তার পাপার কথা শুনে খিলখিল করে হাসতে লাগলো আর বলো…ওকে

রোদ হেসে আনভি কে কোলে তুলে নিয়ে তার সাড়া মুখে চুমু দিয়ে বললো..

রোদঃ আম্মু চলো তোমাকে ফ্রেশ করে দিয় তারপর আমাকে রেড়ি হয়ে অফিস যেতে হবে। নিচে দাদুন তোমার জন্য ওয়েট করছে।

আনভি রোদের কথা শুনে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। রোদ আনভি কে ফ্রেশ করিয়ে বসিয়ে নিজে রেড়ি হয়ে আনভিকে নিয়ে নিচে চলে গেলো। নিচে এসে রোদ দেখে মিস্টার আসিফ চৌধুরী (রোদের বাবা) সোফায় বসে নিউজপেপার পরছে। রোদকে আসতে দেখে তিনি উঠে দাড়িয়ে বলো..

মি.চৌধুরীঃ তোমাদের আসতে এতো দেড়ি হলো কেন? জানো কখন থেকে ওয়েট করছি খাবার জন্য। আনভি দাদুভাই ঘুম হয়েছে তোমার।

আনভিঃ হুম হুম দাদুন অলেক (অনেক) ঘুম হয়েছে।

রোদঃ হয়েছে চলো ব্রেকফাস্ট করে নিই।

বলে তারা সবাই ডাইনিং টেবিলের গিয়ে বসে খেতে লাগলো। খাওয়ার মাঝে রোদ মি.চৌধুরী কে বলে..

রোদঃ বাবাই তোমার ছোট পুত্র প্রাপ্য কোথায়। সে আমাকে বলেছিলো আজ আমার সাথে অফিসে যাবে। তা সে ঘুমিয়ে আছে নাকি…

মি.চৌধুরীঃ তাকে পাবে কে সকাল সকাল কোথায় গেছে কে জানে। বুঝিনা বাবা পড়াশোনা শেষ হয়েছে অফিসে যাবে কাজ শিখবে তা না টোটো কোম্পানির মতো কোথায় কোথায় ঘুড়ে বেরাছে।

রোদঃ তুমি টেনশন করো না ওকে ওর মত থাকতে দাও সময় হলে শিখে যাবে। [বলে খেতে লাগলো]

আর কথা না বাড়িয়ে সবাই খাবার খেতে লাগলো। খাওয়া শেষ হলে রোদ আনভি কে কোলে করে বলতে লাগলো…

রোদঃ আম্মু আমি অফিসে যাবো তুমি কোনো দুষ্টুমি করো না। দাদুনকে বেশি চা খেতে দেখলে বকা দেবে ওকে। আর মালা আন্টি কথা শুনবে। ওকে আম্মু

আনভিঃ ওকে পাপা আমি কোনো দুষ্টুমি করবো না আন্লি( আন্টর) কথা শুনবো। আর দাদুনকে চা খেতে দেবো না হুম হুম

রোদ হেসে আনভিকে চুমু খেয়ে কোল থেকে নামিয়ে সোফায় বসিয়ে দিলো। রোদ আবার বললো…

রোদঃ বাবা আনভিকে দেখে রেখো। আর মালা আনভি কে বাইরে নিয়ে যেওনা। সেদিন পরে গিয়ে হাত কেটে গেছে বুঝলে।

মালাঃ ওকে স্যার

মি.চৌধুরীঃ তোকে চিন্তা করতে হবে না আমি দাদুভাই কে দেখে রাখবো।

রোদ মাথা নাড়িয়ে বেরিয়ে গেলো অফিসে জন্য….

______________________

পরিচয়….রোদ চৌধুরী বড় মাপের বিজনেসম্যান। রোদকে দেখতে পুরো হিরোর মতো। আসিফ চৌধুরী বড় ছেলে আর ছোট ছেলে প্রাপ্য
চৌধুরী। প্রাপ্য দেখতে ও হিরোর কম না সে পড়াশোনা শেষ করে ঘুড়ে বেরাই। আর আনভি হলো রোদের জান তার একমাত্র মেয়ে। আনভির বয়স ৩ বছর কিন্তু পুরো পাকা বুড়ি। সব কথা বলতে পারে সবার সাথে লাগে অনেক দুষ্টু। বাড়ির সবার প্রান আনভি। পরে সব জানতে পারবেন। এখন আসি গল্পে।
____________________

অফিসে

ফুল অ্যাটিটিউড নিয়ে অফিসে ভেতরে আসে রোদ। রোদকে দেখে সবাই দাঁড়িয়ে তাকে গুড মর্নিং বলে রোদ উওর দিয়ে তার কেবিনে চলে গেলে অফিসের সব স্টাফ সস্তির নিঃশ্বাস নিয়। এতোখন মনে হচ্ছিল সবার দম বন্ধ হবার অতিক্রম। (আসলে সকল স্টাফ রোদকে যমের মতো ভয় পায় কারন রোদ কখনো কাজে গাফিলতি পচ্ছন্দ করে না তাই) রোদ তার কেবিনে বসে কাজ করতে করতে কাওকে ফোন করে বললো..

রোদঃ মিস লিনা আমার কেবিনে আসুন

লিনাঃ ওকে স্যার

বলে ফোন রেখে রোদ নিজের কাজে মন দিলো। একটু পর কেবিনে নক পরলে সে আসতে বলে। লিনা এসে রোদকে দেখে আটকে যায় কিছু আর বুঝতে পারে না। রোদ কথা বলতে বলতে লিনার দিকে তাকালে দেখে লিনা তার দিকে তাকিসে আছে দেখে রোদ জোরে ধমুক দিয়ে বললে…

রোদঃ মিস লিনা আপনি কি শুনেছেন আমি কি বলেছি। মিস লিনা

রোদে ধমুক শুনে মিস লিনার হুস ফেরে সে আমতা আমতা করে বলতে লাগলো…

লিনাঃ জ্বি স্যার

রোদঃ আজকে কয়টা মিটিং আছে

লিনাঃ স্যার আজ ৩ টা মিটিং আছে। ১১টা একটা, ৩টাই ১ট আর ৫টাই ১টা আছে স্যার।

রোদঃ ওকে তুমি যেতে পারো

লিনা চলে যেতে নিলে রোদ তাকে আবার ডাকে আর বলে…

রোদঃ আদিবার কি আবস্থা?

(আদিবা হলো রোদের পি.এ। অসুস্থ থাকায় সে অফিসে আসে না তাই রোদ তার কথা জিজ্ঞেস করলও)

লিনাঃ স্যার মিস আদিবা এখন একটু বেটার আছে। ৫ দিন পর অফিসে আবে বলেছে।

রোদঃ ওকে তুমি যাও।

লিনা চলে যায় আর রোদ তার কাজ করতে থাকে….

_____________________

আকাশে আজ হলকা কালো মেঘের ভেলা ভাসছে। হলকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে যখন তখন বৃষ্টি হবে মনে হচ্ছে। অরনি সবে মাত্র ক্লাস করে বের হলো। অরনি করিডোর দিয়ে যাবার সময় বাইরে তাকিয়ে কাওকে খুঁজতে থাকে এদিক সেদিক তাকিয়ে না পেয়ে হতাশ হয়ে চলে যাবে। তখন তার পিছন থেকে কেও একজন অরনির হাত ধরে টান দেয়। এতে অরনি ভয় পেয়ে যায় সে পিছনে তাকিয়ে যাকে দেখে তাকে দেখে তার চেহার রং পাল্টে যায় আর বলে..

অরনিঃ তুমি…….
#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-৩

বৃষ্টি তেজ আগের তুলনায় বেশি হচ্ছে। হালকা বাতাস তার সাথে বিদুৎ চমকাচ্ছে। অন্তু একমনে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে বাইরে বৃষ্টি দেখছে এদিকে যে সে বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে তার সে খেয়াল নাই। অন্তু নিজের ভাবনাই ব্যস্ত সে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো…

অন্তুঃ দেখো অর্ণব বৃষ্টি হচ্ছে তুমি তো বৃষ্টি ভালোবাসতে তাই না। তোমার মনে আছে অর্ণব এই বৃষ্টিতে আমাদের কতো স্মৃতি আছে (বলে তার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটলো) জানি মনে আছে, এই বৃষ্টিতে তুমি আমাকে প্রথম ভালোবাসো বলেছো, এমন এক পলাশি বৃষ্টিতে তোমার আর আমার ভালোবাসার এক মুহূর্ত। আর এই বৃষ্টিই তোমাকে আমার কাছ থেকে কেরে নিয়েছে [বলে ডুকে কেদে দিলো]

হঠাৎ অন্তু কাধে কারোর স্পর্শ পেলে সে বাস্তবে ফিরে আসে। চোখের জল মুছে পিছনে তাকিয়ে দেখে আয়রা হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। অন্তু কিছু বলতে যাবে তার আগে আয়রা বললো…

আয়রাঃ অন্তু রুমে আসো বৃষ্টিতে তো ভিজে যাচ্ছো। ঠান্ডা লেগে যাবে।

তারপর দুজন রুমে এসে বেডে বসে কথা বলতে লাগলো। কথা বলতে বলতে আয়রা বললো…

আয়রাঃ তুমি কিছু মনে করো না অন্তু আসলে বোর হচ্ছিলাম তাই তোমার কাছে আসলাম। বাড়িতে কেও নেই মানে দিদুন ঘুমাচ্ছে,অরনি ভার্সিটি থেকে আসে নাই। আর মা তো আমার সাথে কথা বলে না, আয়ান কাজে গেছে তাই মনে করলাম তোমার কাছে আসলাম। তুমি কি রাগ করেছো।

অন্তুঃ না ছোট ভাবি তুমি যখন ইচ্ছে আমার কাছে আসবে। আমি কিছু মনে করবো না। বলো

আয়রাঃ তুমি জানো কাল আদি দাদাভাই আসবে। আজ সকাল বড় আব্বুর বলো তুমি সকালে ব্রেকফাস্ট করতে আসো নাই তাই বলাম।

অন্তুঃ আসলে সকালে ভালো লাগলো না। আর অরনি বলেছে সকালে দাদাভাই আসবে।

আয়রাঃ ওও ভালো। আয়ান আমাকে বলো তুমি কি যাবে কাল দাদাভাই কে আনতে এয়ারপোর্টে

আয়ানের না শুনে অন্তুর আর কথা বলো না। এই বিষয়টা বুঝতে আয়রা অন্তু হাত তার পেটে রাখে। আয়রার এই কাজে অন্তু ভ্রু কুচকে তার হাত সরাতে নিলে কিছু একটা অনুভব করতেই অন্তুর চেহার উজ্জ্বল হয়ে গেলো সে বলতে লাগলো..

অন্তুঃ ছোট ভাবি এটা তো

অন্তুকে কিছু না বলতে দিয়ে আয়রা বললো…

আয়রাঃ হমম ঠিক বুঝেছো তোমার ভাইপো অনেক দুষ্টু হয়েগেছে আমাকে শান্তিতে থাকতে দেয় না। সারাক্ষন জ্বালায়।

অন্তুঃ ভালো আমার একমাত্র ভাইপো সে করবে না দুষ্টুমি তো কে করবে শুনি।[ বলে হাসতে লাগলো]

আয়রাঃ ওকে তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি দুপুরের খাবার পাঠাতে বলছি। আসি

অন্তুঃ ওকে

আয়রা চলে যায় তাকে যেতে দেখে অন্তু ভাবতে লাগলো… এই মেয়েটা এতো ভালো কিন্তু চাচী কেনো তাকে মানতে পারে না। শুধু কি সে অনাথ বলে কিন্তু আমি আজও বুঝি না আয়ান ভাবিকে এতো ভালোবাসে যে সে চাচীর কথা না মেনে ভাবিকে বিয়ে করে নিয়ে এসেছে। বাড়ি সবাই ভাবিকে মেনে নিলেও চাচী মানতে পারে নাই এমন কি ভাবি প্রেগন্যান্ট তাও। জানি না কেন এমন করে। বলে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে অন্তু ফ্রেশ হতে চলে গেলো……

__________________________

ভার্সিটিতে..

অরনিঃ প্রাপ্য এটা কেমন কথা। জানো আমি কতোটা ভয় পেয়ে গেছিলাম। এখন বুকের মধ্যে ধরপর পরছে।

প্রাপ্যঃ ভয় কেনো পাবে তুমি। আমি ছাড়া তোমাকে ছোঁয়ার সাহস করে করবে। এই প্রাপ্যর ভালোবাসর দিকে যে হাত বাড়াবে তার হাত আমি আস্তো রাখবো না।

অরনিঃ হয়েছে থাক। তো এমন চোরের মতো দিন-দুপুরে এখানে কি করছো।

প্রাপ্যঃ কি আর করবো বলো। ভাইয়ার সাথে অফিসে যাবার কথা আজ কিন্তু যাই নাই। তাই সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি। বন্ধুর ওখানে ছিলাম এতোখন এখন তোর কাছে।

অরনিঃ প্রাপ্য এমন করো কেন বলতো

প্রাপ্যঃ যা বাবা আমি আবার কি করলাম

অরনিঃ কি করোনি। তোমার পড়াশোনা শেষ হয়েছে অনেকে আগে এখন অফিসে কাজ না করে ঘুরে বেরাচ্ছ। এরপর যখন আর বাড়ি থেকে বিয়ে দিয়ে দেবে তখন কি করবে তুমি।

প্রাপ্যঃ তুলে নিয়ে যাবো তোমাকে

অরনিঃ এটা মজা না প্রাপ্য আমি সিরিয়াসলি বলছি

প্রাপ্যঃ ওকে বাবা আর হবে না আমি কাল থেকে অফিস যাবে ওকে

অরনিঃ ওকে

প্রাপ্যঃ তাইলে চলো লাঞ্চ করে তোমাকে বাড়ি দিয়ে আসবো।

অরনিঃ ওকে

বলে তার চলে গেলো।( হুম বুঝেই তো গেছেন মনে হয়….অরনি আর প্রাপ্য একে ও অপরকে ২বছর ধরে ভালোবাসে। একটা ঘটনার মাধ্যমে তাদের দেখা,বন্ধুত তারপর প্রেম। প্রাপ্য জীবনে অরনি একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা ছাড়া সে থাকতে পারবে না।)

বিকেল-৪টা….

বিকেলর প্রথম প্রহরে এখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। তার মধ্যে প্রাপ্য অরনিকে দুপুরে লাঞ্চ করিয়ে সারাবেলা তাকে নিয়ে ঘুরে এখন অরনির বাড়িতে রাখতে এসেছে। অরনি প্রাপ্য কে বলো…

অরনিঃ ওকে এখন আসি। তুমি সাবধানে যাবে আর বাড়ি গিয়ে এসএমএস দেবে।

প্রাপ্যঃ ওকে অরুসোনা তুমি বাড়ির ভেতরে যাও তারপর আমি যাবো। [মন খারাপ করে]

অরনিঃ মন খারাপ করো না প্লিজ।আর আই লাভ ইউ

প্রাপ্যঃ আই লাভ ইউ টু। বাই

অরনিঃ বাই

বলে অরনি ছাতা নিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যেতেই প্রাপ্য গাড়ি নিয়ে চলে যায়।

_______________________

রাত-৭ঃ৩০টা…

রোদ গাড়ি থেকে নেমে কলিংবেলের বজালে একজন সার্ভেন্ট এসে দরজা খুলে দেয়। রোদ বাড়িতে ডুকতেই কোথা থেকে দৌড়ে আনভি এসে রোদের জড়িয়ে ধরে। রোদ ও মৃদু হেসে তাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করতে করতে বলে..

রোদঃ আমার আম্মুটা সারাদিন কি করেছে?

আনভিঃ বেসি (বেশি) কিছু না মালা আন্টি আর দাদুনের সাথে খেলা করেছি। [কিউটি ফেস করে বললো]

রোদঃ ভালো। কোন দুষ্টুমি করো নাই তো

আনভি মাথা ঝাকিয়ে না বলে। রোদ আনভিকে নিয়ে ড্রইংরুমে আসলে মি.চৌধুরী রোদকে দেখে বলে…

মি.চৌধুরীঃ রোদ আনভিকে এখানে রেখে ফ্রেশ হয়ে আসো। সারাদিন বাইরে ছিলে এসে আনভিকে নিয়েছো এতে যদি ইনফেকশন হয় আনভির তখন। এমনিতে আনভির শরীর খারাপ থাকে।

রোদঃ ওকে বাবাই

বলে আনভিকে সোফায় বসিয়ে সে রুমে গেলো ফ্রেশ হতে। প্রায় ৩০মিনিট পর ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে দেখে প্রাপ্য আর আনভি খেলছে আর তার বাবাই টিভি দেখছে। রোদ এসে সোফায় বসে মালা( আনভির ন্যানি) কফি দিতে বলে সে টিভি দেখতে লাগলো৷ ৫ মিনিট মালা কফি দিলে রোদ খেতে খেতে প্রাপ্য কে বলে…

রোদঃ তো প্রাপ্য সাহেব সারাদিন কোথায় ছিলেন। আজ তো অফিসে যাবার কথা ছিলো তাইনা।

প্রাপ্যঃ আ স লে আসলে ভা ই য়া আমি মানে [ আমতা আমতা করতে থাকে]

রোদঃ আমি আমতা আমতা শোনার জন্য বসে নেই। সোজা কথা বলো কোথায় ছিলে সারা দিন।[একটু রাগি স্বরে বললো]

প্রাপ্য কিছু বলতে যাবে তার আগে আনভি চকোলেট খেতে খেতে বললো…

আনভিঃ পাপা চাচ্চু চাচীর সাথে দেলা (দেখা) করতে গেছিনো (গেছিলো)। [বলে চকোলেট খেতে লাগলো]

আনভির কথা শুনে রোদ আর তার বাবাই অবাক হয়ে প্রাপ্যর দিকে তাকিয়ে আছে। প্রাপ্য একবার রোদ ও একবার তার বাবার দিকে তাকিয়ে আনভির দিকে দেখে মনে মনে বললো…আভনি পরী তোমাকে এতো এতো চকোলেট দেয় আর আজ তুমি আমাকে ফাঁসিয়ে দিকে। এখন কি হবে আমার, এরা তো আজ না শুনে ছারবে না বলে মনে হচ্ছে না। বলে শুকনো ঢোক গিলে বলতে লাগলো…

প্রাপ্যঃ ভাইয়া বাবা আসলে আমি

মি.চৌধুরীঃ প্রাপ্য আনভি কি বলো সেটার উওর দাও। [ গম্ভীর কণ্ঠে ]

প্রাপ্যঃ আমি অরনির সাথে ছিলাম সারাদিন৷ আসলে আমরা দুজন দুজনাকে ভালোবাসি আজ ২বছর ধরে।[ চোখ বন্ধ করে একদমে কথাগুলো বলে দিলো প্রাপ্য ]

এদিকে অনেক সময় হলে কাওকে কথা না বলতে দেখে প্রাপ্য চোখ ঘুলে রোদের দিকে তাকাতেই রোদ আর তার বাবাই উচ্চ স্বরে হেসে দেয়। প্রাপ্য তাদের কে হাসতে দেখে বোকার মতো চেয়ে থাকে। রোদ তার হাসি থামিয়ে বলো..

রোদঃ আরে বাবা এতো ভালো কথা। তুই এতো চাপ নিচ্ছিস কেনো।

মি.চৌধুরীঃ হুম আমাদের অরনিকে আগে থেকেয় ভালো লাগে। এখন বউমা করে আনতে আমদের আপত্তি নেয়৷ তাই এতো টেনশন করার দরকার নাই

প্রাপ্য তার বাবা আর ভাইয়ের কথা শুনে সস্তির নিঃশ্বাস নিলো। এতখন জান যায় যায় আবস্থায় ছিলো তার। রোদ প্রাপ্য কে বললো…

রোদঃ তা বিয়ে নিয়ে কি ডিসিশন তোদের মানে কবে করবি।

প্রাপ্যঃ অরনির অনার্স কমপ্লিট হক তারপর

রোদঃ ভালো। চলো সবাই ডিনার করি।

রোদের কথায় সবাই সস্মতি দিয়ে সবাই ডিনার করতে গেলো। ডিনার করে কিছুক্ষণ গল্প করে সবাই যার যার রুমে ঘুমাতে চলে গেলো।

_________________________

রাত-১১টা

রোদ বেডে বসে ল্যাপটপ কাজ করছে তার পাশে আনভি হাত পা ছিটিয়ে ছিটিয়ে ঘুমিয়ে আছে। রোদর কাজ শেষে ল্যাপটপ রেখে দিয়ে আনভিকে ভালো করে শুয়ে দিয়ে লাইট অফ করে দিয়ে আনভিকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে চুমু খয়ে বলতে লাগলো….

রোদঃ তুমি দেখছো আমাদের আনভি একদম তোমার মতো হয়েছে। শুধু চোখ আমার মতো। অনেক দুষ্টু হয়েছে। যাকে বলে পাকনা বুড়ি। তুমি বলেছিল না তোমার লম্বা চুল পচ্ছন্দ তাই আমি আনভির ও চুল কাটি নাই অনেক বড় হয়েছে চুল ওর। সমস্যা হয় ওর কিন্তু কাটে না বলে আমার মাম্মার বড় চুল পচ্ছন্দ তাইলে আমি কাটবো কেন??। কি বলব তখন জানি না প্লিজ তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো আমার আর আনভি কাছে। তোমাকে আমাদের প্রয়োজন। কাম ব্যাক সুন লাভ…..

বলে আনভিকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে গেলো……
#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-৪

সকাল থেকে আজ মির্জা বাড়িতে হই হুল্লোড়,কাজের তরজোর চলছে। হবেই না কেনো আজ বাড়ির বড় ছেলে ৫ বছর পর বাড়ি আসবে বলে কথা। তাই আয়েশা মির্জা সব নিজে দেখে শুনে কাজ করাছে। আদির রুম পরিচ্ছন্ন থেকে শুরু করে তার পচ্ছন্দের খাবার পযর্ন্ত করেছেন তিনি। দিদুন কিচেনে সবাই কে কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছে তখন অরনি তার দিদুন কে পিছেন থেকে জড়িয়ে ধরে বলো…

অরনিঃ কি করছো দিদুন

দিদুনঃ আদি দাদুভাইর জন্য রান্নার প্রিপারেশন নিচ্ছি দিদিভাই [বলে কাজ দেখাতে লাগলো]

অরনিঃ ওওও। আচ্ছা

দিদুনঃ হমমম। তো তুমি কিচেনে কেন?? সব সময় তো হাতে বই বা মোবাইল ফোন থাকে তো আজ আবার কিচেনে কেনো?

অরনিঃ কি বলে বুড়ি আমি কি কোনো দিন কিচেনা আসি না?? হুমম [কপট রাগ দেখিয়ে]

(আসলে অরনি সব সময় বই নিয়ে ব্যস্ত থাকে না হলে অন্তির সাথে সময় কাটায় আর তা না হলে ফোন নিয়ে থাকে। কিচেনে আসে খুব কম কিন্তু সব প্রকার রান্না পারে সে। অন্তু তাকে নিজের হাতে রান্না করা শিখিয়েছে) দিদুন হালকা হেঁসে আবার বলতে লাগলো…

দিদুনঃ জানি তো আমার দিদিভাই টা সব পারে সে কেন কিচেনে আসবে সব সময়। আচ্ছে রাখো সইসব কথা তুমি এক কাজ করো অন্তু দিদিভাইর জন্য খাবার তার রুমে নিয়ে যাও তো। অনেক বেলা হয়েছে খাতে আসলো না আজ নিচে।

অরনিঃ ওকে দিদুন

বলে সে দিদুনকে ছেড়ে দিলে তার দিদুন খাবার বেরে দেয় একটা ট্রে তে। অরনি খাবার নিয়ে অন্তু রুমের দিকে যেতে লাগলো….

অরনি অন্তুর রুমে এসে দেখে অন্তু বিছানার ওপর বসে হুমায়ুন আহমেদের “অপেক্ষা” বইটি পরচ্ছে। দরজা থেকে রুমে এসে অরনি খাবরটা টেবিলের ওপর রাখে দিলো। কিছু একটা রাখার শব্দে অন্তু বই থেকে মুখ তুলে দেখে অরনি খাবার নিয়ে এসেছে। অন্তু মৃদু হেসে বইটা তার পাশে রেখে অরনি কে বললো…

অন্তুঃ অরু আয় বস আমার কাছে। খাবার টা ওখানেই রাখ আমি পরে খেয়ে নেবো।

অরনি এসে অন্তুর পাশে মুখ ফুলিয়ে বসে বললো…

অরনিঃ তোমার সাথে কথা নাই দিদিয়া [মুখ ফুলিয়ে]

অরনিকে মুখ ফুলাতে দেখে অন্তু শব্দ করে হেসে দিলো। অন্তুর হাসি দেখে অরনি আরো মুখ ফুলালো। অন্তু হাসি থামিয়ে বলল..

অন্তুঃ কেন কেন কথা নাই কেন আমার সাথে?? আমি কি করলাম আবার।

অরনিঃ আমরা সবাই দাদাভাই কে আনতে যাবো তুই কেনো যাবি না। তুই জানিস তুই না গেলে দাদাভাই কতো কষ্ট পাবে।

অন্তুঃ আমি জানি দাদাভাই কষ্ট পাবে আমাকে এয়ারপোর্টে না দেখে কিন্তু সে বুঝবে আমি কেন যায় নাই।

অরনিঃ হুমম

(হয়েছে কি বাড়ির সবাই যাবে আদিকে আনতে কিন্তু অন্তু যাবে না।আসলে আয়রা প্রেগন্যান্ট আর দিদুন যাবে না তাই অন্তু ও যাবে না) অরনি জানে তার দিদিয়াকে দিদুন কে আয়রা কে একা থুয়ে কোথাও যাবে না তাই হালকা হেঁসে বলল…

অরনিঃ ওকে দিদিয়া তাইলে আমি যায় তুমি খাবারটা খেয়ে নিও।

অন্তু মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে অরনি চলে যায় আর অন্তু খাবার নিয়ে খেতে লাগলো…

________________________

বেলা-১২ঃ৩০টা

নিজে কেবিনে বসে প্রাপ্য অফিসে কাজ করছিলো (আজ প্রাপ্যর রোদের সাথে অফিসে এসেছে। রোদ নিজে প্রাপ্য কে সব কাজ বুঝিয়ে দিয়েছে) তখন তার ফোনে ফোন আসলে প্রাপ্য ফোন নিয়ে স্ক্রিনের ওপরে অরনির নাম দেখে কাজ বন্ধ করে হেসে ফোন ধরে বললে…

প্রাপ্যঃ তো অরুসোনার এখন আমার কথা মনে পরলো বুঝি হুমম হুমম

অরনিঃ হুমম মনে পরলো জনাব। তা সকালে খাইয়ে আসছো

প্রাপ্যঃ হ্যাঁ, তুমি

অরনিঃ হুমম, কি করছো

প্রাপ্যঃ কাজ করছি। তুমি

অরনিঃ বসে আছি।

প্রাপ্যঃ তো কি মনে করে ফোন করেছো। তোমার তো আমার জন্য সময় হয় না তাইলে আজ কি হলো [মজা করে বললো]

অরনিঃ কেন ফোন দিতে পারি না আমি তোমাকে বুঝি। নাকি অফিসে কোন সুন্দরী মেয়ে পেয়ে গেছো। তাই আমাকে আর ভালো লাগছে না..[ রাগে কথাগুলো বলে ন্যাকা কান্না করতে লাগলো। অরনি জানে প্রাপ্য মজা করে বলেছে কিন্তু অরনি তাকে টাইট দেবার জন্য এমন করছে]

অরনির কান্না শব্দ শুনে প্রাপ্য ব্যস্ত হয়ে বলতে লাগলো…

প্রাপ্যঃ অরুসোনা কি হলো কান্না করছো কেন। দেখ আমি মজা করছিলাম সত্যি সোনা। দেখো আমি তোমার চোখের জল দেখতে পারি না তাও তুমি আমাকে শাস্তি দেবার জন্য এমন করো না প্লিজ। ইউ নো আই লাভ ইউ সো মাচ। আমি অন্য কাওকে দেখি পযর্ন্ত না তোমাকে ছাড়া প্লিজ এমন করো না।

অরনি হালকা হেঁসে বললো.. আই নো ইউ লাভ মি সো মাচ। তাই তো তোমার সাথে এমন করি। সরি আর কান্না করবো না আর আমি এমনি বলাম।

প্রাপ্যঃ আই লাভ ইউ সোনা

অরনিঃ আই লাভ ইউ। শোন যে জনে ফোন করলাম আজ দেখা হবে না দাদাভাই আসবে তাকে আনতে যাবো। পরশু দেখা করি ভার্সিটি শেষে কাল ব্যস্ত থাকবো।

প্রাপ্যঃ ওকে সোনা তোমার কথাই হবে। এখন রাখি কাজ করছি। আই লাভ ইউ

অরনিঃ আই লাভ ইউ। বাই

প্রাপ্যঃ বাই

ফোন দেখে কাজ করতে থাকে প্রাপ্য। কিছুক্ষণ পর মিস লিনা এসে বলো রোদ তাকে তার কেবিনে যেতে বলেছে। প্রাপ্য লিনা কে যেতে বলে সে রোদের কেবিনে গেলে রোদ তাকে বসতে বলে সে বসলে রোদ কাজ বন্ধ করে বললো….

রোদঃ প্রাপ্য আজ একটু আগে আমাকে বেরোতে হবে তুই যদি আজ কাজ গুলো দেখে নিতি। আমি জানি আজ তোর প্রথম দিন কষ্ট হবে করতে কিন্তু আজ…

প্রাপ্যঃ ভাইয়া প্লিজ এমন করে বলিস না আমি করে নেব সব তুই টেনশন করিস না। আর আমি একা না সবাই আছে আমি বুঝে নেব কাজ। তুই যা [রোদকে বলতে না দিয়ে প্রাপ্য বললো]

রোদঃ আসলে আনভি এখন ফোন করে কান্না করে বলছে তার নীল রঙের ডোল লাগবে মানে লাগবে। তুই বল এখন কি করি? তাই আজ তাড়াতাড়ি বেরিয়ে মলে যাবো ডোল কিনতে। না হলে যেতাম না

প্রাপ্যঃ আমার পরীটা যা চায় তাই হবে তুই ডোল খুজে নিয়ে বাড়ি যাবি না হলে তোর এক দিন কি আমার এক দিন।

রোদ প্রাপ্যর কথা শুনে হেসে ফেলো। সে বললো…

রোদঃ ওকে। যা কাজ করতে দে

প্রাপ্যঃ ওকে

প্রাপ্য চলে যেতেই রোদ তার কাজে মন দিলো…

_______________________

বিকেল সাড়ে ৫টা…

অন্তু নিজের রুম থেকে বাইরে বেরিয়ে ড্রইংরুমে এসে সোফায় বসলো। বাড়ির সবাই আদিকে আনতে গিয়েছে। দিদুন আর আয়রা রেস্ট নিচ্ছে তাই অন্তু বাইরে বসে আচ্ছে। অন্তু একবার সারা বাড়ি দেখে নিলো সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত আছে। কিছুক্ষন বসে থেকে কি মনে করে অন্তু উঠে দাড়িয়ে টেলিফোনের কাছে গেলো। কিছু সময় ভেবে একবার হাত বাড়াই টেলিফোনে আবার হাত গুটিয়ে নেই মন কে মানিয়ে অন্তু টেলিফোনে নিয়ে একটা নাম্বারে ডায়েল করলো আর মনে মনে বলতে লাগলো….প্লিজ আল্লাহ আজকে নাম্বারটা খোলা থাকে। [বলতে লাগলো]

(হুমম অন্তু যে নাম্বারে ফোন দিচ্ছে সেটা আর কেও না অর্ণবের নাম্বার। আজ ৪ বছর ধরে সে এই নাম্বারে ফোন দিচ্ছে কিন্তু প্রতিবার নাম্বারটি বন্ধ আসে দেখা যাক আজ কি হয়)

হঠাৎ অন্তু চেহারা রং পাল্টে যায়। অন্তু দাঁড়িয়ে থেকে বসে পরলো তার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরলো।(হুমম আজ নাম্বারটা খোলা পেয়েছে সে) কাঁপা কাঁপা গলায় বলতে লাগলো…

অন্তুঃ অর্ণব প্লিজ ফোন ধরো। আমি জানি তুমি আছো কেন এমন করছো আমার সাথে প্লিজ ফোন ধরো। [বলে কান্না করতে লাগলো]

হঠাৎ অন্তু ফোন রেখে দৌড়ে বাড়ির বাইরে চলে গেলো। আজ আকাশে বার বার গর্জে গর্জে উঠছে। বৃষ্টির সাথে বাতাস হচ্ছে তুমুল এর মধ্যে অন্তু পাগলের মতো দৌড়াছে আর বিড়বিড় করে বলছে…আমি আসছি অর্ণব তোমার কাছে আমি জানি তুমি আসলে বাড়িতে যাবে আমি আসছি।

বলে দৌড়াতে লাগছে।(তখন ফোন না ধরাই অন্তু মনে করে অর্ণব ফোন যখন খোলা তাইলে সে তার বাড়িতে থাকতে পারে তাই সে দৌড়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে) অন্তু দৌড়ে থাকে বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ অন্তু সামনে গাড়ি চলে আসে সে কিছু বোঝার আগে গাড়িটা অন্তুকে ধাক্কা লাগে সে কিছুটা দুরে পরে যায়। এদিকে, রোদ অফিস থেকে বেরিয়ে মলে গিয়ে অনেক খুজে নীল রঙের ডোল পেলো তারপর সেটা নিয়ে সে বাড়ি আসছে তখন দেখে বৃষ্টি হচ্ছে। সে গাড়ি নি যাবার সময় হঠাৎ দেখে একটা মেয়ে দৌড়ে তার গাড়ি সামনে আসছে রোদ গাড়ি থামাতে যাবে তার আগে ধাক্কা লেগে যায়। রোদ গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে মেয়েটি দেখার জন্য তার কাছে আসতে লাগলো। এদিকে অন্তু কপাল কেটে রক্ত বের হচ্ছে সে অনেক কষ্ট তার বোজা বোজা চোখ দিয়ে তার সামনে আসা অবয়ব দেখতে লাগলো। সেই অবয়ব দেখে অন্তু ঠোঁটের কোণে হাসিঁ ফুটে উঠলো তার আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো সে অস্পষ্ট কন্ঠে বলতে লাগলো…. অ র্ণ ব অর্ণব…………

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here