#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্বঃ১
কিরে ছাদে এসে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?
আচমকা কারো কথা শুনে, হকচকিয়ে উঠে
পিছন ফিরে তাকাতেই বুঝতে আর বাকি রইলো না,
যাকে নিয়ে আমার মনে ভয় এই কন্ঠের মালিক সেই ব্যাক্তিটিই। আর যাই হোক এই চিরোচেনা কন্ঠ ভুলি
কি করে। সেই ছোট্ট বেলা থেকে যে কতো লক্ষাধিক বার শুনেছি এই কন্ঠস্বর তার কোন ইয়ত্তা নেই।
কাকে দেখতে এসেছিস ছাদে জবাব দিচ্ছিস না কেন? ধমকের সুরে আবারও প্রশ্ন করায় আমি ভাবনার
জগৎ থেকে বেরিয়ে এসেছি ঠিকই, কিন্তু কোন উত্তর দিতে পারছি না।
উত্তর দিবো কি করে আমার তো হাত পা রীতিমত কাপাকাপি শুরু করেছে। জানি না আজ আবার কি কি শুনতে হবে আমাকে।
মাথা নিচু করে দাড়িয়ে এসব ভাবছি তখনি বর্ষণ
ভাইয়া আমার সামনে এসে মুখ গম্ভীর করে বললো
কথা বলছিস না কেন?
আমি আমতা আমতা করে বললাম আ আ আসলে ভ্ ভা ভাইয়া….
বর্ষণ ভাইয়া আমার কথা থামিয়ে দিয়ে বলল, থাক আর বলতে হবে না, এ সময়টাতে যে বাসার এপাশে ওপাশে রাস্তায় শত শত ছেলেদের আড্ডা জমে সেটা আমি জানি।
সে কারনেই যে তোর এই সময় ছাদে আসা সেটাও আমি জানি। তোদের মতো মেয়েদের আমি খুব ভালো করে চিনি।
ভাইয়ার বলা কথাগুলো শুনে বুকের ভেতরটা কেমন যেন দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে, কথা বলার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছি আমি।
ভাইয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি, চোখ দুইটা রক্তবর্ণ হয়ে গেছে, যেন চোখ দিয়ে আগুন ঝরে পরছে। রাগে ফর্সা গাল দুটো পাকা টমেটোর মতো হয়ে গেছে। নাকের ডগা লাল টুকটুকে হয়ে আছে মনে হচ্ছে টোকা দিলেই রক্ত ঝরে পরবে এক্ষুনি।
টলমল চোখেই একনজর ভাইয়াকে দেখে চোখ নামিয়ে নিলাম, চোখের জল যে আজ বাঁধ মানবে না সেটা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছি 🥺
তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম আ আমার একা একা ভালো লাগছিল না,খুব মন খারাপ করছিল, তাই একটু ছাদে আসছিলাম। আমি আ……
বাকি কথা শেষ করতে না দিয়েই ভাইয়া বললো শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে আসিস না। ছেলেগুলো তোকে কিভাবে দেখছিল সেটা আমি দেখেছি 😡 এক্ষুনি ছাদ থেকে রুমে যা।
ভাইয়ার পিঞ্চমারা কথা গুলো দাড়িয়ে দাড়িয়ে শুনলেও, ঠিক হজম করতে পারলাম না। ওড়না দিয়ে মুখ চেপে ধরে কান্না করতে করতে দৌড়ে রুমে চলে আসলাম।
বিছানায় পরে বালিশে মুখ গুজে কতক্ষণ চোখের জল ফেলেছি তার ঠিক নাই। আমার মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরছে, আমি কি এতোটাই খারাপ? ভাইয়া আমাকে কিভাবে বলতে পারলো, আমাদের মতো মেয়েদের ভালো করে চেনে? ছোটবেলা থেকে রুপ ভাইয়া এই চিনলো আমাকে?
মাগরিবের আজানের ধ্বনি কানে আসতেই, বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালাম। ওযু করে নামাজ পড়ে জায়নামাযে বসে আছি । চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে, চেষ্টা করেও আটকাতে পারছি না। মনে হচ্ছে বুকের ভেতরটায় কেমন যেন অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। মনে হচ্ছে কেউ কলিজাটা টেনে ধরে আছে। এমন সময় মামনীর (বর্ষণ ভাইয়ার আম্মা) ডাক পড়লো,,, মেঘু পাখি ও মেঘু পাখি কই তুই?
আমি তারাহুরো করে চোখের পানি মুছে, মুখে হাসি টেনে বললাম এইতো মামনী নামাজ পড়লাম।
মামনী তখন বলে উঠলো, কিরে সারা বিকেল কোথায় ছিলি একবারও বের হলি না।
আমি বললাম, আসলে মামনী ভালো লাগছিল না, তাই রুমেই ছিলাম বলে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি।
একটু মিথ্যে বলতেই হলো। তা না হলে মামনী আবার বর্ষণ ভাইয়া কে বকা দেবে। যেটা আমার একদমি ভালো লাগবে না।
মামনী তখন আমার থুতনি ধরে মুখটা উঁচু করে বললো
মা- বাবা কে মিস করছিস? আমরা কি কোন ভাবে তোকে কষ্টে রেখেছি? নাকি আজও আমাদের আপন ভাবতে পারিসনি?
মামনীর কথাগুলো শুনে, কেন যেন আম্মুকে খুব মনে পরছিল। মনে হচ্ছিল আম্মু যদি এই মুহুর্তে আমার পাশে থাকতো তাহলে তার কোলে মাথা রাখলে হয়তো কষ্টটা কমে যেত। তার ভালবাসার হাতের স্পর্শে ভুলিয়ে দিত সকল দুঃখ।
মামনী তখন কাঁধে হাত রেখে বললো কিরে কি ভাবছিস?
আমি বললাম কিছুনা মামনী। বলেই জরিয়ে ধরলাম মামনীকে। মামনী ও ভালবেসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিল।
মামনী বললো মেঘু নিচে চল, আমি বললাম মামনী তুমি যাও আমার ভালো লাগছেনা আমি একটু একা থাকতে চাই।
বলেই মনে মনে বললাম, আমি কিছুতেই তোমার ছেলের সামনে যেতে চাইনা মামনী, আমি জানি এখন নিচে গেলে তোমার বদমাইশ, ইতর, ঢেঁড়শ ছেলের সামনে পারতে হবে। মামনী বললো খাবি না?
মামনীর কথায় আমি বললাম না মামনী আজ খেতে ইচ্ছে করছে না তোমরা খেয়ে নিও রাতে, আমাকে ডেকোনা।
মামনী মাথায় হাত বুলিয়ে দরজাটা ভিড়িয়ে দিয়ে চলে গেল। আমিও হাঁটতে হাঁটতে বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালাম।
এই সুনসান নিস্তব্ধতা যেন আকাশকে আরও বিশাল করেছে,, আর আমার হৃদয়ের শূন্যতা ও যেন আরও দ্বিগুণ হয়েছে ।
আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি আনমনে, আর ভাবছি মামনী কতো ভালো একটা মানুষ, বাবাইটাও (বর্ষণের বাবা) কতো ভালো কিন্তু তাদের ছেলেটা এমন বদমেজাজী রাক্ষস কেন? সবসময় রেগে কথা বলে। রাগী হনুমান, মুখ সবসময় গম্ভীর করে রাখে, ঠিক বাংলার পাঁচ এর মতো। আচ্ছা মুখ কি কখনো বাংলার পাঁচ হয় নাকি 🙄 এটা ভেবেই ঠোঁটের কোনে এক ঝিলিক হাসি ফুটে উঠলো আমার। মনে মনে ভাবছি সে ওর যা খুশি করুক, যেমন খুশি মুখ করে থাকুক তাতে আমার দাদা নানার কি? ঐ কাকতাড়ুয়াকে নিয়ে ভাবার সময় আমার নেই। কথাটা বলতেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো আপনা-আপনি। আবার মনে মনে বলছি সত্যি কি বর্ষণ ভাইয়াকে নিয়ে আমি ভাবি না??
এশার আজান কানে আসতেই বেলকনি থেকে সোজা ওয়াশরুমের দিকে হাটা দিলাম। ফ্রেশ হয়ে ওযু করে নামাজ আদায় করে নিলাম।
তারপর রুমের লাইট অফ করে, জিরো পাওয়ারের লাইট টা অন করে বেডে গা এলিয়ে দিতেই কারও গলার আওয়াজ ভেসে আসলো। বর্ষা আপু নিচে যাবেনা?
বুঝতে আর সময় লাগলো না এটা নিপু। নিপুকে বললাম না রে নিপু ভালো লাগছে না। মামনী কে বল আমি ঘুমাবো। আমায় যেন না ডাকে।
মামনী আমাকে জোর করেনি রাতের খাবার খাওয়ার
জন্য । কারণ সে জানে যেদিন মন খারাপ থাকে আমার সেদিন আমি কিছু খাইনা। আমি খাবো কি করে বলুনতো!! একচুয়েলি আমার তো কিছু খেতেই ইচ্ছে করে না।
আমি জানি আমি আজ কিছু খাবোনা বলে, মামনী ও কিছু মুখে তুলবে না। কিন্তু আমি চাইছি না রুপ ভাইয়ার সামনে যেতে।
চলুন এবার আমাদের পরিচয়টা দিয়ে দিই –
আমি মেঘলা ইসলাম বর্ষা। মাসুদ ইসলাম এবং মিসেস মাহবুব ইসলামের একমাত্র রাজকন্যা।
যে আমায় বকাবকি করল মানে বর্ষণ ভাইয়া তিনি হলেন –
রায়হান খান এবং মিসেস রোমা খানের একমাত্র সন্তান।
শ্রাবন আহমেদ বর্ষণ।
আমার বাবা আর বর্ষণ ভাইয়ার বাবা দুজন বাল্যকালের বন্ধু।
আর যে মেয়েটা আমায় ডাকতে এসেছিলো, সে হল নিপু। এ বাসার সব দিকটা ও দেখাশোনা করে। তবে ওকে মেইড সার্ভেন্ট বলা চলে না। কারণ তার আরও একটা পরিচয় আছে যেটা আপনারা গল্প পড়তে পড়তে জানতে পারবেন।
#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্বঃ ২
রাত দশটা ডাইনিং এ বসে আছে বর্ষণ, রায়হান খান এবং রমা খান।বারবার বর্ষার রুমের দিকে তাকাচ্ছে বর্ষণ, কারণ সন্ধ্যায় বাসায় আসার পর থেকে তাকে আর বাইরে বের হতে দেখেনি বর্ষণ। রমা বুঝতে পেরে বললো দেখনা বাবা মেঘুর নাকি ভালো লাগছে না, মেয়েটা কখন থেকে দরজা বন্ধ করে বসে আছে খেতেও আসে নি। বর্ষণের মনে পড়ে গেল বিকেলের ঘটে যাওয়া ঘটনাটা।বর্ষা ছাদে দাঁড়িয়েছিল আর রাস্তার মোড়ে দুইটা’ ছেলে বর্ষাকে নিয়ে বাজে কথা বলছিল। রাস্তার মোড় থেকে ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা বর্ষাকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে ছেলেদুটো। ব্যাস আর কি লাগে বর্ষণ সাথে সাথে কাউকে ফোন দিয়ে সোজা ছাদে চলে যায় এসেই বর্ষার উপর রাগ ঝাড়তে শুরু করে বাকিটা তো আপনারা জানেন।
ফ্ল্যাশব্যাক –
বর্ষা কাঁদতে কাঁদতে ছাদ থেকে রুমে যাওয়ার পরই বর্ষণ ও বের হয়ে যায়, আসলে ঐ সময় যে বর্ষণ ফোন দিয়েছিল সেটা ছিল বর্ষণের বন্ধু সাগর ।সাগরকে ফোন দিয়ে ছেলেদুটোকে তুলে নিয়ে যেতে বলে সে।সাগর ছেলে দুটোকে যে বাগানবাড়ি তে বেঁধে রেখেছিল, বাসা থেকে বের হয়ে বর্ষণ সেই বাগানবাড়িতেই গিয়েছিল।
বর্ষণ রেগে ছেলেদুটোকে ইচ্ছেমতো পেটাতে থাকে আর বলতে থাকে তোদের এত বড় সাহস কী করে হলো আমার বাসার ছাদে কোন মেয়েকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বাজে কথা বলিস?ছেলে দুটো সমানে বর্ষণের হাতে-পায়ে ধরছে আর বলছে এমন ভুল আর কখনো হবে না এবারের মত আমাদের ক্ষমা করে দেন।বর্ষণ ছেলে দুটোকে ক্ষমা করে দেয় তবে হ্যাঁ শাস্তিটা পরিপূর্ণ করেই ছেড়ে দেয়, আর সতর্ক করে দেয় এমন ভুল আর যেন জীবনে কখনো না করে। তারপরে সন্ধ্যার দিকে বাসায় ফিরে আসে বর্ষণ।
বর্তমানে-
বর্ষণ কোনো কথা না বলে প্লেটে খাবার নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেল। বর্ষণের মা সেটা দেখে মুখ টিপে হাসলো। রমা খান আর রায়হান খান খাওয়ায় মনোযোগ দিলো। এদিকে বর্ষণ বর্ষার রুমের সামনে এসে দরজায় হাত দিতেই দরজা খুলে যায়।বর্ষণ নিঃশব্দে রুমে ঢুকে লাইট অন করতেই থমকে যায়। বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে।বর্ষণের হার্টবিট মিস হয়ে যায় কয়েকটা।খাটের এক পাশে জরোসরো হয়ে শুয়ে আছে বর্ষা।চোখে নোনা জল শুকিয়ে গেছে । চোখ দুটো ফুলে আছে। কয়েক ঘন্টায় নিজের কি হাল করেছে মেয়েটা।বর্ষণ মনে মনে বলতে লাগল আসলে তখন এভাবে এতটা রিয়্যাক্ট করা উচিত হয়নি।
বর্ষণ টেবিলে খাবার রেখে বর্ষার পাশে গিয়ে বসে পড়ল। কিছুক্ষণ এক ধ্যানে বর্ষার মায়া ভরা মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো বর্ষণ।একদম বাচ্চাদের মত ঠোঁট উল্টিয়ে ঘুমিয়ে আছে বর্ষা দেখেই বোঝা যাচ্ছে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে পাগলিটা।দেখতে কি নিষ্পাপ আর মায়াবী লাগছে মেয়েটাকে।ঘুমের মধ্যেই মাঝে মাঝে ফুঁপিয়ে উঠছে।বর্ষণের এখন নিজের উপরেই রাগ হচ্ছে, কেন শুধু শুধু মেয়েটাকে তখন এভাবে কষ্ট দিলো।এতোটা কষ্ট না দিলেও পারতো।বর্ষণ বর্ষার মাথায় হাত দিয়ে চুলে বিলি কাটতেই বর্ষা পাশ ফিরে আবার ঠোঁট উল্টিয়ে ঘুমিয়ে পরে।সেটা দেখে বর্ষণের ঠোঁটের কোনায় হাসি ফুটে ওঠে।আর মনে মনে বললো পাগলীটা এখনো সেই পিচ্চিই রয়ে গেছে বড় হলো না।বর্ষণ বর্ষাকে ডাকছে কিন্তু বর্ষার যেন তাতে কোন পাত্তা নেই। আর পাত্তা থাকবেই বা কেমন করে সে তো ঘুমের দেশে হারিয়েছে হাজার বার ডাকলেও খুঁজে পাওয়া যাবে না তাকে।
উপায় না পেয়ে একহাতে বর্ষার এক বাহু ধরলো অন্য হাতে বর্ষার ঘাড়ের নিচে দিয়ে টেনে তুলে বসালো।ঘুমে হেলেদুলে পড়ছে বর্ষা, তা দেখে বর্ষণ বর্ষাকে নিজের দিকে টেনে নিয়ে শক্ত করে ধরে রেখেছে একহাতে।যেন বর্ষা পরে না যায়।বর্ষা হেলে বর্ষণের বুকে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পরে।তার এলোমেলো অবাধ্য চুলগুলো সারা মুখে বিচরণ করছে। মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে বর্ষণ। এদিকে ঘুমের ঘোরে বর্ষার যেন দম যায় যায় অবস্থা শক্ত করে কে ধরে রেখেছে। নড়তেও পারছেনা চরতেও পারছেনা। বর্ষা চোখ মেলে তাকিয়ে নিজেকে বর্ষণের বুকে দেখে ছিটকে দূরে গিয়ে, দুই হাতে ভর দিয়ে পিছন দিকে বেঁকে বিছানায় বসে চোখ দুটো বড় বড় করে বর্ষণের দিকে তাকিয়ে আছে।বর্ষা মনে মনে ভাবছে এটা হয়তো স্বপ্ন। তাই দুই হাতের উল্টোপিঠে নিজের চোখ দুটো বন্ধ করে আবার তাকায় কিন্তু না এটা তো স্বপ্ন না সত্যি। বর্ষা কিছু বলবে তার আগেই বর্ষণ খাবার নিয়ে ওর মুখের সামনে ধরলো। বর্ষা মাথা নিচু করে বসে আছে কারণ সে খাবেনা আর বর্ষণের হাত থেকে তো একদমই না।বর্ষণ ভাতের প্লেট টা নামিয়ে রেখে বাম হাতে বর্ষার থুতনি ধরে মুখটা উঁচু করে তুলে ধরে মুখে খাবার তুলে দেয়।
বর্ষার মুখে খাবার দিয়ে বলে আমাকে পোড়াতে তোর খুব ভাল লাগে তাই না রে!বর্ষা চোখ বড় বড় করে বর্ষণের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে কি বলছে কি এই ছেলেটা!
আমি তাকে পোড়াই? নাকি সে আমাকে পোড়ায়, কষ্ট দেয়?বর্ষা মুখে খাবার নিয়ে জিজ্ঞেস করল তুমি খেয়েছো ভাইয়া?
বর্ষণ কিছু বললো না দেখে বর্ষা আবার জিজ্ঞেস করলো।
বর্ষণ জবাব দিলো, তুই খেয়ে নে তারপর আমি খাবো।আবার বর্ষার মুখে খাবার দিতে নিলেই বর্ষা হাত ধরে রাখে বর্ষণের। তারপর সেই ভাত বর্ষণের মুখে তুলে দেয় আর বলে, যে খাবার আছে দুজনে খেয়েও বেঁচে যাবে। তাই তোমাকে আর কষ্ট করে পরে খেতে হবে না।দুজন খাওয়া শেষ করে বর্ষার রুমে লাইট অফ করে রুম থেকে বের হতে হতে বর্ষণ বলে কাল সকালে রেডি হয়ে থাকিস বের হতে হবে।বর্ষণের কথা শুনে অবাক দৃষ্টিতে বর্ষণের দিকে তাকালো বর্ষা। কিন্তু বর্ষণ কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে ডাইনিংয়ে চলে গেলো।
প্লেট নিয়ে ডাইনিংয়ে রেখে হাত ধুয়ে রুমে চলে যায় বর্ষণ। গিয়ে বসে পরে তার সেই প্রিয় ডায়েরিটা নিয়ে যেখানে তার প্রেয়সীকে নিয়ে লেখা আছে হাজারো কথা হাজারো ভালোবাসা যেটা শুধু তার ওই কলম আর ডাইরির পাতাই সাক্ষী।
ঘড়ির কাঁটা জানান দিচ্ছে রাত একটা।ডায়েরিটা সযত্নে রেখে বর্ষণ ওয়াশরুমে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে এসে লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পরে।
সকাল….
নাস্তার টেবিলে বসে সবাই একসাথে নাস্তা করছে।বর্ষণ রায়হান খানকে বলে পাপা তুমি অফিস চলে যাও আমার আসতে একটু লেট হবে। রায়হান খান আর কিছু না বলে হ্যা সম্মতি জানিয়ে বেরিয়ে পরে।বর্ষণ বর্ষাকে দ্রুত রেডি হয়ে নিচে আসতে বলে। বর্ষা কোন কথা না বলে হ্যা সূচক মাথা নেড়ে উপরে চলে যায় রেডি হতে।
বর্ষণ নিচে বসে আছে।সিঁড়ির দিকে চোখ পরতেই চোখ ওখানেই আটকে যায়।বর্ষা রেডি হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছে।দুধে আলতা গায়ের রং। অফ হোয়াইট কালার এর থ্রি পিচ পরেছে।মুখে হালকা মেকআপ ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক যেন তার সৌন্দর্যকে আরও দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।কোমর ছাপিয়ে খোলা চুল হেয়ার ক্লিপ দিয়ে আটকানো বাচ্চাদের মতো। কিছু অবাধ্য চুল মুখে এসে পরছে। বর্ষণ যেন এক নতুন মায়াবতীকে দেখছে।
বর্ষা নিচে এলে বর্ষণ রাগ দেখিয়ে বললো এই শোন আমি তোকে কোথাও ঘুড়তে বা পার্কে নিয়ে যাচ্ছি না যে তোকে এমন সং সেজে যেতে হবে। যাহ্ চুল বেঁধে হিজাব পরে আয়।বর্ষা দ্বিধা নিয়ে জিজ্ঞেস করলো ত্ ত তোমার তো দেরি হয়ে যাবে।
সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না তোকে যেটা বলেছি সেটা কর তাতেই হবে ডোন্ট কেয়ার ভাব নেওয়া সেই জবাব বর্ষণের। তারাতারি করে নিচে আয় আমি গাড়িতে ওয়েট করছি লেট হচ্ছে আমার বলেই হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলো বর্ষণ।
চলবে……
(