পর্ব-০৯
#তমিস্র_প্রভা🍁
#লেখিকা-লামিয়া_রহমান_মেঘালা
(গল্পটা সম্পূর্ণ রূপে কাল্পনিক চরিত্র দ্বারা গঠিত এর মাঝে কোন বাস্তবতার ছোয়া নেই,
ইহয়াকে বাস্তব এর সাথে মিলাবেন না ধন্যবাদ)
অতিতে,
ক্যালিফোর্নিয়া পৌঁছে,
নির্ঝর আর নাদিয়া একি হোটেলে যায়,
অনেকটা জার্নির পর দু’জন ই ক্লান্ত তাই সেই দিন আর কোন বাইরে যাওয়া হয় না,
পরের দিন বিকালে,
নাদিয়া চুল শুখাচ্ছিল গোসল সেরে এসে তখন তার ফোন বেজে ওঠে,
নাদিয়া গিয়ে ফোন পিক করে,
–হ্যালো আসসালামু আলাইকুম,
তখনকার সময়ে ফোন গুলো আধুনিক ছিল না,
একে অপরকে দেখার কোন সুবিধা ছিল না ফোনে,
নির্ঝর সমুদ্রের পাড়ে নাদিয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে,
নাদিয়াও কিছুক্ষণ এর মাঝে চলে আসে,
বেশ কিছু সুন্দর মুহুর্ত কাটায় দু’জন মিলে,
এভাবে কাটাতে থাকে দিন,
নাদিয়া নির্ঝর ক্রমশ কাছাকাছি চলে আসতে থাকে,
ক্যালিফোর্নিয়ায় সম্পূর্ণ সময় দু’জন দুজনের সাথে কাটিয়েছিল,
আজ দেশে ফেরার পালা,
নির্ঝর এর মোনটা বেশ ভার,
–নির্ঝর এতো দুখি কেন তুমি আমরা ত আবার এক জায়গায় হবো তাই না,
–হুম তাও ত,
নাদিয়া হেসে দেয়,
–ভালোবাসি প্রিয়, ( নির্ঝর )
–আমিও বাসি ভীষণ ভালোবাসি,
জানো যাকে ছাড়া এক বিন্দু সময় কাটানো মুসকিল হয়ে পরে তাকেই ভালোবাসা বলে,
–তুমি চিন্তা করো না আমি গিয়ে বাবার সাথে কথা বলব আমরা পবিত্র এক বন্ধনে আবদ্ধ হবো৷
নাদিয়া হেসে দেয়,
–আমি না তোমায় ভালোবাসি মিস্টার,
–আমিও মিসেস,
–এখনো হয় নি,
–সমস্যা নেই হয়ে যাবে,
ওরা দুজন একি ফ্লাইটে দেশে চলে আসে,
এয়ারপোর্টে,
–নাদিয়া,
–হুম,
–হাতটা বাড়িয়ে দেও,
নাদিয়া হাত বাড়িয়ে দেয়,
নির্ঝর একটা কালো গোলাপ এর কুরি নাদিয়ার হাতে দেয়,
–এটা দিয়ে কি হবে?
–এটা তুমি বাড়িতে গিয়ে তোমার রুমে একটা সুন্দর টপে লাগিয়ে দিবে এটা গাছ হয়ে যাবে,
নাদিয়া ও নির্ঝর কে একটা চাবির রিং দেয়,
–মিস্টার ম্যাজিশিয়ান,
এটা আপনার জন্য,
কোন একা বিকালে আমায় ডাকবেন মন কেমন করলে,
চলে আসব,
নাদিয়া মুচকি হেসে চলে আসে,
নির্ঝর ও তার রাস্তায় চলে আসে,
নাদিয়া বাসায় এসে সেই গোলাপের কুড়িটা টপে পুতে দেয়,
সেটা সুন্দর এক গাছে পরিনত হয়,
নাদিয়া মুচকি হাসে,
–কিরে তুই কি আমার ভালোবাসার প্রতিক? নাকি আমার একা থাকার সঙ্গী,
–নাদিয়া, ( নাদিয়ার মা)
–হ্যাঁ মা বলো,
–কি বলছো নিজে নিজে,
–কিছু না মা বাব কই,
–তোমার বাবার আসতে একটু দেরি হবে,
–ওহ,
–তুমি ঘুমিয়ে যাও মা তোমার হয়ত কষ্ট হয়ে গেছে,
–না মা বাবাকে না দেখে ঘুমাবো না,
–পাগলি মেয়েটা আমার,
নাদিয় বাবার জন্য অপেক্ষা করে বাবার সাথে দেখা করে
,–বাবা,
–আমার পরিটা নাকি।
–হ্যাঁ বাবা কেমন আছো?
–আমি ত আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুমি কেমন আছো?
–আলহামদুলিল্লাহ বাবা,
অন্য দিকে,
নির্ঝর বাসায় এসে সবার সাথে দেখা করেছে,
–মা তুমি এতো কিছু রান্না করেছো?
-,- হ্যাঁ আমার ছেলেটা বাসায় আসবে আর আমি রান্না করবো না তাকি হয়,
,–ও মা আমার মা তুমি বেস্ট,
আচ্ছা আমার পুচি, সুজি কই? (পুচি সুজি নির্ঝর এর বেড়াল)
–ওরা তোর রুমেই আছে,
–ওকে মা,
নির্ঝর খাওয়া শেষ করে নিজের বেড়াল দুটোর কাছে যায়,
কতো মিস করেছে ওরা ওকে,
নির্ঝরকে সব থেকে নরম হৃদয় এর মানুষ বলা হতো,
তার মতো ভালোবাসতে কেউ পারে না,
তার দায়িত্ব কর্তব্য,
সব ছিল এক জন পার্ফেক্ট মানুষ এর মতো,
অরূপ চৌধুরী নিজের ছেলেকে দেখে নিজেই অবাক হতেন,
এ যেন ১৬ আনা পূর্ণ একটা চাঁদ তার ঘরে আলোকিত হয়ে এসেছে,
রাতে,
নির্ঝর নাদিয়াকে ফোব করে,
–মিসেস, চৌধুরী কি করছেন শুনি,
–,আপনার দেওয়া গাছের কাছে বসে আপনার কথা ভাবছি মিস্টার চৌধুরী,
–বাহ আমার মিসেস আমার কথা কতোটা ভাবে?
–দিন রাত সব সময় ভাবে,
–নাদিয়া?
–হুম,
–ভালোবাসি৷
–আমিও
দিন কেটে যায় ওদের সম্পর্ক গভীর হয়ে যায়,
নির্ঝর তার বাবাকে আজ বলবে সে নাদিয়াকে ভালোবাসে আর ওকে ছাড়া থাকতে পারবে না,
–বাবা,
–হ্যাঁ বাবা বলো,
–আমার তোমাদের সাথে কিছু কথা আছে,
–এসো বলো কি কথা,
–বাবা আমি নাদিয়া খান,
রায়হায় খান এর এক মাত্র মেয়েকে ভলোবাসি,
নির্ঝর এর মায়ের হাত থেকে চায়ের কাপ পরে যায়,
নির্ঝর পেছনে ফিরে মায়ের এমন অবস্থা দেখে দৌড়ে মায়ের কাছে যায়,
–মা কি হয়েছে,
–তুই কি বললি এই মাত্র,
–বললাম তোমার বউ আনার সময় হয়েছে, আমি ভালোবাসি কাউকে
–কিন্তু বাবা,
–বৃষ্টি, ( নির্ঝর এর বাবা মৃদুস্বরে চিৎকার দিয়ে ওঠে)
নির্ঝর এর মা থেমে যায়,
–ঠিক আছে বাবা তোর বিয়ের প্রস্তুতি করা হবে,
নির্ঝর তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে,
আর নিজের রুমে চলে যায়,
–অরূপ তুমি সব,
–বৃষ্টি কিছুই করার নেই আমি আগেও বলেছি ভবিষ্যৎ আমি পাল্টাতে পারবো না,
যদি এখন সেটা করতে যাই তবে নির্ঝর এর উপর বাজে প্রভাব পরবে সেটা আমি চাই না,
,
অন্যদিকে,
–৭ গ্রহ যখন এক কক্ষে থাকবে তখন সূর্যের আলোয় গ্রহণ লাগবে পৃথিবীতে,
তখনি বিয়ে হবে নির্ঝর আর নাদিয়ার,
ওদের শুখের জীবনের শেষ হবে তখন,
নির্ঝর পরিনত হবে মানুষ রূপি এক রাক্ষসে,
আর নিজের একমাত্র ভালোবাসাকে নিজের হাতে খুন করবে,
সেই সোক সহ্য না করতে পেরে নিজেও মরে যাবে,
এই পুরো শুখি পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে,
লোকটা কথা গুলো বলে অট্টহাসিতে মেতে ওঠে,
–আমার ভবিষ্যৎ বলেছিলি না অরূপ চৌধুরী,
আজ তোর ভবিষ্যৎ আমি বদলে দিলাম৷
–কিন্তু বস এতে যে,
–চুপ হোক যা হয় হোক আমি শুধু ওদের ধ্বংস দেখতে চাই শুধুমাত্র ওদের,
অরূপ চৌধুরী এর জন্য আজ আমি সব থেকে বড়ো Astrology না,
ওর জবাব সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে ওকে আমি শেষ করে ছাড়বো,,
,
,
এদিকে,
নাদিয়া তার বাবাকে সবটা বলে রেখেছে আজ অরূপ চৌধুরী বৃষ্টি চৌধুরী তাদের এক মাত্র ছেলের সাথে নাদিয়ার বিয়ের কথা বলতে আসবে তাদের বাড়িতে,
সব ঠিক হবে আজ৷
,
,
দু’জন যে দু’জন কে ভীষণ ভালোবাসে তা দুই পরিবার ভালে বুঝতে পেরেছে,
সব দিকে মেনে ওদের বিয়ে ঠিক হয়,
পরের সপ্তাহের শুক্রবারে,
নাদিয়া ভীষণ খুশি,
অবশেষে সে তার প্রিয় মানুষ টাকে পেতে চলেছে,
হলুদের দিনে,
নাদিয়া খুব সুন্দর হিরা মুক্ত দিয়ে কাজ করা এলটা কাঁচা হলুদ রঙের লেহেঙ্গা পরেছে,
নির্ঝর ও শেরওয়ানি পরেছে,
নাদিয়া নির্ঝর এর পাশে বসে,
–আজ চিত্রকর দিয়ে আমাদের ছবি আকানো হবে,
সেটা বাধিয়ে রাখা হবে,
–তাই?
–হ্যাঁ অনেল ছবি আঁকানো হবে,
নাদিয়ার কথা মতোই অনেক রকমের ছবি আকা হয় ওদের দু’জন এর,
,
বিয়ের দিন চলে আসে,
অরূপ চৌধুরী এখন বিশেষ ভাবে চিন্তিত,
— বৃষ্টি,
— হ্যাঁ বলো,
— ভীষণ খারাপ কিছু হতে চলেছে,
— আমি ত আগেই বলেছিলাম৷
— বৃষ্টি আমার কাছে উপায় আছে,
— কি উপায়?
— ★★★★…………..
হয়ত এভাবে কাজ হবে।
— তুমি আমার ছেলেটাকে বাঁচাও এতে যদি আমার মৃত্যু ও হয় তাহলেও আমি মাথা পেতে তা সিকার করব,
— হ্যাঁ বৃষ্টি নাদিয়া আসবে নির্ঝর এর জীবনে আনার ফিরে আসবে,
নির্ঝর কে মানুষে পরিনত করতে আবার নাদিয়াকে আসতে হবে।
আবার ফিরে আসতে হবে ওকে আমার ছেলের জন্য,
চলবে?