#নীলচে_তারার_আলো
#নবনী_নীলা
#পর্ব_৭
হিয়ার চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে ফেলতেই শুভ্র নিঃশব্দে হাসলো। তারপর ওড়নাটা দিয়ে মুখের পানি মুছতে মুছতে বললো,” আশা করছি নেক্সট টাইম থেকে চুলের পানি দিয়ে বন্যা ভাসানোর ইচ্ছে বা শখ কোনোটাই তোমার হবে না।”শুভ্রের এমন উক্তিতে হিয়া পিট পিট করে চোখ খুলে তাকাতেই হতভম্ব হয়ে গেলো।
কি লোকরে বাবা! তার ওড়না দিয়ে মুখের পানি মুচ্ছে। এরপর কি করবে লোকটা? হিয়া আতঙ্কিত চেহারায় শুভ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। শুভ্র মুখের পানি মুছে ওড়নাটা এমন ভাবে ছুড়ে মারলো এসে একে বারে হিয়ার মুখের উপর পড়লো। তারপর শুভ্র আড় চোখে তাকিয়ে একহাত পকেটে ভরে সিড়ি বেয়ে নীচে নেমে গেলো।
হিয়া ঐখানেই মূর্তির মতন দাড়িয়ে রইলো। একটু আগে তার সাথে কি হলো এইটা? যখন এতোই তার ওড়না দিয়ে মুখ মুছে ওড়নাটা ভেজানোর শখ ছিল। ওড়নাটা টান মেরে নিয়ে গেলেই পারতো। একেবারে সিনেমার হিরোদের মতন এগিয়ে এসে এমন ঢং করার মানে কি? অসভ্য একটা লোক। মনে মনে বির বির করেই তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো হিয়া তারপর নিচে নেমে এলো।
মোহনা আপু টিভিতে কি একটা অনুষ্ঠান দেখছে। হিয়া গিয়ে তার পাশে বসলো। মোহনা হিয়াকে আড় চোখে তাকিয়ে বললো,” ছাদে গিয়ে যে বৃষ্টিতে ভিজেছো আমি কিন্তু দেখেছি। জ্বর যদি বাধিয়েছো চান্দু….,” বাকিটা বলার আগেই হিয়া মোহনার হাত ধরে টেনে নিজের দিকে নিয়ে এসে ফিসফিসিয়ে বললো,” আস্তে বলো না,প্লীজ। গোসল করতে গিয়েছিলাম তখন বৃষ্টির আওয়াজে বেড়িয়ে আসি। সরি আর ভিজবো না, এইটাই লাস্ট।”
মোহনা সন্দেহজনক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললো,
” হটাৎ বৃষ্টিতে ভিজলে কেনো?”
হিয়া এদিক ওদিক তাকিয়ে আবারো ফিসফিসিয়ে বললো,” আমার ভালোলাগে ভিজতে।”
মোহনা আড় চোখে একবার শুভ্রের দিকে তাকালো। শুভ্র কফির জন্য বলছে তার মাকে। মোহনার হটাৎ একটা ঘটনার কথা মনে পড়লো। মনে পরতেই সে হেসে ফেলল। হিয়া উদগ্রীব হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
” তুমি এভাবে হাসছো কেনো?”
” একটা কথা মনে পড়ে গেলো তাই।”, মোহনার কথায় হিয়া কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলো,” কি কথা? আমাকে বলো।”
” তুমি যখন খুব ছোট ছিলে, মানে সবে হাঁটতে শিখেছো তখন তোমরা আমাদের পুরানো বাসায় এসেছিলে। সেদিনও এমন বৃষ্টি ছিলো। তোমাকে কোলে করে আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। তুমি তোমার ছোট্ট হাত গুলো বাড়িয়ে বৃষ্টির পানি ধরছিলে আর হেসে লুটোপুটি খাচ্ছ। সেই মুহুর্তে শুভ্র পাশ দিয়ে যেতেই তুমি ওর গায়ে বৃষ্টির পানি ছিটিয়ে দিতেই শুভ্র কড়া চোখে তোমার দিকে তাকায়। ব্যাস এরপর থেকে শুভ্রকে দেখলেই তুমি কান্না করে দিতে। শুভ্রের তখন সাত আট বছর হবে, তখন থেকেই ওর বাচ্চা কাচ্চা খুবই অপছন্দ।”
এই কাহিনী শুনে হিয়া মোটেই খুশী হয় নি। বনমানুষটা দেখি ছোটো বেলা থেকেই এমন খিটখিটে মেজাজের। বাচ্চা বলে এনার অপছন্দ। এনার পছন্দটা কি? একটা রুমে ঘাপটি মেরে বসে থাকাই কি এনার পছন্দ? এ কেমন মানুষ? ছোটো বেলাও কেমন হনুমান ছিলো।
শুভ্র কফি হাতে সোফায় এসে বসতেই মোহনা বলে উঠলো,” ভাই তোর মনে আছে? ছোটো বেলায় ও তোর রুমের সামনে হাসের মতন আওয়াজ করা জুতো গুলো পরে ছোটো ছোটো পায়ে হাঁটতো আর তুই রাগী চোখে তাকালেই অ্যা করে কেঁদে দৌড় দিতো।”
শুভ্র কফির মগে চুমুক দিতে দিতে হিয়ার দিকে তাকালো। হিয়া রাগে কিরমির করছে। ছোটবেলায়ও লোকটা তাকে জ্বালিয়েছে, ছোটো থাকতেও রেহাই পাই নি।
শুভ্র কফির মগটা একপাশে রেখে ফোনটা হাতে নিয়ে মনে মনে বললো,” বড়ো হয়েছে কখন? আগেও ঘাড়তেড়া ছিলো এখনও ঘাড়তেড়াই আছে। পার্থক্য খালি আগে হাসের আওয়াজ করে জ্বালাতো আর এখন নূপুরের।” তারপরও দ্বিতীয়বারের মতন দৃষ্টি স্ক্রিন থেকে সরিয়ে হিয়ার দিকে তাকালো। চেহারাটা দেখো একেবারে জঙ্গলী বিড়ালের মতন করে রেখেছে যেনো এক্ষুনি উঠে এসে খামচি দিবে।
✨
হিয়া কলেজ শেষে বাড়ী ফেরার সময় দেখলো দিবা তার দিকে ছুটে ছুটে আসছে। হিয়া রাস্তার একপাশে দাড়িয়ে দিবার জন্য অপেক্ষা করলো। আজ সারাদিন মেয়েটা উধাও ছিলো। ক্লাসেও দেখেনি ওকে।
দিবা ছুটতে ছুটতে এসে হিয়ার সামনে থেমেই হাপাতে হাপাতে বললো,” এতো তাড়া কিসের বাসায় যাওয়ার? একটু অপেক্ষা করতে পারলে না।”
” সরি, আমি তো প্রথম ক্লাসের পর তোমাকে আর দেখিনি তাই ….”, এতটুকু বলেই হিয়া থামলো তারপর ব্যাগ থেকে নিজের পনির বোতল দিবার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,” পানি খাও।”
দিবা বোতলটা নিয়ে পানি খেয়ে স্বাভাবিক হলো। তারপর বললো,” ঐ ছেলেগুলো যে প্রতিদিন তোমার পিছু নেয় তুমি দেখো না? আমি তোমার জায়গায় থাকলে এতদিনে এদের মাথা ফাটিয়ে দিতাম।”
দিবার কথায় হিয়া সামনে তাকালো সত্যি কয়েকটা ছেলে একপাশে দাড়িয়ে ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে। কিন্তু এর আগে হিয়া ব্যাপারটা খেয়াল করেনি কোনোদিন। দিবা উঠে দাড়িয়ে বলল,” ওদিকে তাকিয়ে থেকো না। এরা বখাটে ছেলে পরে ভাববে তুমিও ওদের এসব কাজে মজা পাও।”
হিয়া সঙ্গে ভয় পেয়ে মুখ ঘুরিয়ে দাড়ালো। এইটা আবার কেমন বিপদ। দিবা বললো,” চলো আজকে আমি তোমাদের বাড়ী যাবো। এমনিও যেতাম বিকালে, আংকেলকে পটাইতে হবে বুঝছো। আর দুইজনকে একসাথে যেতে দেখলে এরাও এগুতে সাহস পাবে না।”
হিয়া অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো আংকেলকে পটাবা মানে?”
” আমি তো স্কাউট করি, তো একটা মেডিকেল ক্যাম্পের ওনারা চাইছে আমরা ওনাদের জন্য কাজ করি। বিশ জনের দরকার ছিলো। আমাদের কলেজে আমরা ছিলাম মাত্র বারো জন। আরো আটজন প্রয়োজন ছিলো, যারা ঐ ক্যাম্পে হেল্প করবে। সব ক্লাস ঘুরে ঘুরে সাতজনকে রাজি করানো গেছে আর একজনের কমতি ছিলো তাই তোমার নাম দিয়ে দিয়েছি। সময় ছিলো না হাতে কি করবো বলো? কালকেই ক্যাম্পিং।”, বলেই দিবা হিয়ার মুখের দিকে তাকালো। শেষের কথাটা শুনে হিয়া হকচকিয়ে তাকিয়ে বললো,” মানে? আমি গিয়ে কি করবো? আমি এইসব কোনোদিন করিনি।”
” আরে তেমন কঠিন না। মে হূ না , আমি শিখিয়ে দিবো।যারা ডক্টর দেখাতে আসবে সবাইকে লাইন ধরে দাড়করানো, ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করতে হবে। মানে ভলেন্টিয়রের কাজ আর কি। আর আমার তেমন কোনো ফ্রেন্ডও নেই তুমি গেলে আমারও ভালোলাগবে।” বলতে বলতে দিবা পিছনে তাকালো ছেলেগুলো নেই। যাক বাবা বদমাইশ গুলো গেছে।
হিয়া নীচের ঠোঁট কামড়ে চিন্তিত মুখে বললো,
” আংকেল যদি যেতে না দেয়।”
” আরে আমি তো সে জন্যেই যাচ্ছি। পাহাড়ে যাবো, অনেক সুন্দর জায়গা গেলেই দেখবে।”কথা বলতে বলতে ওরা বাড়ি ফিরলো। আজ আর হিয়ার বাড়ি ফেরার সময় ভয় লাগে নি। রবীউল সাহেবকেও দিবা সহজেই পটিয়ে ফেলেছে। দিবা ভয়ে ছিলো যদি আংকেল যেতে না করে দিতেন। কিন্তু তিনি সহজেই রাজি হয়ে গেছেন।
দিবা হিয়ার ঘর দেখবে বলে হিয়ার সাথে উপরে এলো। হিয়া আর শুভ্র আলাদা রূমে থাকে শুনে দিবার মুখ হা হয়ে রইলো। নাক মুখ কুচকে বিছানায় বসতে বসতে বললো,” এটা আবার কোন দেশি বিয়ে। তাই তো বলি বিয়ের পরও আমার বোন শুভ্র শুভ্র করে লাফায় কেনো।”
মাঝে মাঝে দিবার কথার প্রতিউত্তরে বলার মতন কিছু খুজে পায় না হিয়া, ঠিক এখনকার মতন। আসলে দিবা মেয়েটা বয়সের তুলনায় একটু বেশী ম্যাচিউর। তাই তার কথাবার্তায় সেটা প্রকাশ পায়।
দিবা একদৃষ্টিতে হিয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভাবলো তারপর বললো, “আচ্ছা তুমি কোনোদিন প্রেম করোনি তাই না? প্রেম করতে ইচ্ছে করে না তোমার?”
দিবার এমন প্রশ্নে হিয়া চোখ বড় বড় করে না সূচক মাথা নাড়লো। দিবা ঠোঁট উল্টে বললো,” উফফ,তুমি এতো ইনোসেন্ট কেনো? তোমাকে না আমি কিছু রোমান্টিক সিরিজ দেখাবো, তখন তোমারও আমার মতন প্রেম করতে ইচ্ছে করবে। ওইখানের হিরো গুলা কি রোমান্টিক হয়!” বলতে গিয়ে গাল দুটো টমেটোর মতন হয়ে গেলো দিবার।
হিয়ার সে মুহুর্তে কেনো জানি শুভ্রের চেহারা মুখের সামনে ভেসে উঠলো। হিয়া ভ্রূ কুচকে বললো,
” ওইগুলো শুধু ফিল্মেই হয়, বাস্তবে একেকটা হনুমান আর বদমেজাজি হয়।”
দিবা এদিক সেদিক তাকিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো,
” বদমেজাজি ছেলেগুলোই বেশি রোমান্টিক হয়।” হিয়া মুখ বাকালো। রোমান্টিক হলে হবে তাতে ওর কি! আচ্ছা ঐ লোকটা রোমান্টিক হলে কিভাবে হবে? ইমাজিন লোকটার বউ লোকটার গলা জরিয়ে ধরলো। তখন সে বউয়ের হাত গলা থেকে সরিয়ে দিয়ে বলবে আমার গলা জড়ানোর আগে তুমি আমার পারমিশন নিয়েছো? নেক্সট টাইম থেকে আমার পারমিশন নিবে। পারমিশন ছাড়া আমার কাছে আসা আমার খুবই অপছন্দ। ভেবেই হিয়া ফিক করে হেসে ফেললো।
✨ দিবার পাল্লায় পড়ে যে হিয়া এমনভাবে ফেঁসে যাবে কে জানতো। এইসবের কোনো মানে হয়। এইখানে এই লোকটা কি করছে? বাসে উঠার আগেও যদি জানতো এই লোকটা এইখানে আসবে হিয়া জীবনেও এইখানে আসতো না। বাস থেকে নেমে এই জায়গায় এসে দেখতে হচ্ছে এই লোকটা এইখানে। দিবাকে জিজ্ঞেস করেছে করার পর সে বাকা হাসিদিয়ে চলে গেছে।এইখান থেকে কি কোনো বাস পাওয়া যাবে এক্ষুনি ফেরার বাসে উঠে পড়তে ইচ্ছে করছে তার।
শুভ্রকে দেখে হিয়া যতটা অবাক তার থেকে দ্বিগুণ অবাক হয়েছে শুভ্র। এই মেয়েটা এইখানে? শুভ্রের পাশেই প্রভা বসে আছে। শুভ্র ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,” এই মেয়েটা এইখানে কি করছে?”
প্রভা সামনে তাকালো,” কার কথা বলছিস? হিয়া!”
শুভ্র আড় চোখে হিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,” ওর নাম হিয়া?”
প্রভা অবাক, এক বাসায় থাকে অথচ মেয়েটার নাম এখনো শুভ্র জানে না। প্রভা হতভম্ব হয়ে বললো,” তুই ওর নাম জানিস না এখনো?”
” খেয়াল করা হয়নি। যাই হোক ও এইখানে কি করছে?”,দ্বিতীয়বারের মতোন প্রশ্ন করলো সে।
” আমি কিভাবে জানবো? হয়তো স্কাউটে যোগ দিয়েছে।”,
” তার মানে ও দিবার কলেজেই ভর্তি হয়েছে।”, মনে মনে বললো শুভ্র। বাহ্ আর বাবাও আসার অনুমতি দিয়ে দিলো। এই মেয়ে লাফালাফি করে আবার কি ঘটাবে কে জানে।
প্রথমে হিয়ার বিরক্ত লাগলেও এখন ভালোই লাগছে। অনেকদিন পর কেমন মুক্ত পাখির মতন লাগছে নিজেকে। তারমধ্যে এতো মানুষের ভীড়। নতুন নতুন সব মুখ। সবাইকে লাইনে দাড় করানো হয়েছে। মহিলাদের একটা লাইন আর পুরুষদের। দুপুরের পর বাচ্চাদের টিকা দেওয়া হবে। সবাই কিছুক্ষনের মধ্যে যার যার কাজে ব্যাস্ত হয়ে গেলো। অনেকেই লাইন ভেঙ্গে আগে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু দিবা আর বাকিরা মিলে আটকে দেয়।
প্রভা শুভ্রের বুথের সামনে এসে বললো,” তোর আইডিয়াটা ভালোই ছিলো।”
” আমার আইডিয়া ভালোই হয়। আর মেডিকেলের প্রথমবর্ষের ছাত্রছাত্রীকে ভলেন্টিয়ার হিসাবে আনলে আগের বার কি হয়েছিল মনে আছে। পিকনিকে এসেছি মনে হচ্ছছিলো, একেকজন গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রন্ডকে নিয়ে এসেছে। অ্যান্ড লুক আট দেম, দে আর অ্যাক্টিভট। একচুয়ালি ওরা জানে কিভাবে এইসব সিচুয়েশন হ্যান্ডেল করতে হয়।” প্রভা ভালোই বুঝেছে এইবারের ক্যাম্পিং শুভ্রের মনের মতো হচ্ছে।
দুপুরের আগ পর্যন্ত সব ঠিক ছিলো। দুপুরের পর বাচ্চাদেরকে নিয়ে শুভ্রের ঝামেলা পোহাতে হলো। প্রতিটা বাচ্চা শুভ্রকে দেখেই কাদতে শুরু করছে। অন্যদের বুথেও বাচ্চারা কাদঁছে কিন্তু এভাবে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে কেউ কাদঁছে না। শুভ্রের নাজেহাল অবস্থা। হিয়া পাশেই ছিলো বাচ্চাদের কান্না দেখে হিয়া এগিয়ে গেলো। মুখটা বাংলার পাঁচের মতন করে রাখলে তো যে কোনো বাচ্চাই কাদবে। হাতে আবার জল্লাদের মতোন ইনজেকশন ধরে আছে। এমনিতেই গম্ভীর চেহারা তার উপর হাতে ইনজেকশন বাচ্চারা কাদবে না তো কি করবে?
হিয়া একটু এগিয়ে এসে ঈশারায় বাচ্চাটার সাথে খেলা করতেই কিছুক্ষনের মধ্যে বাচ্চাটা চুপ করে গেলো। হটাৎ বাচ্চাটার চুপ হয়ে যাওয়ায় শুভ্র বামদিকে তাকালো বাচ্চাটা ঐদিকে তাকিয়ে আছে। শুভ্রকে দেখেই হিয়া লুকিয়ে গেলেও শুভ্র তাকে ঠিকই দেখেছে#নীলচে_তারার_আলো
#নবনী_নীলা
#পর্ব_৮
শুভ্র দিবার দিকে তাকিয়ে থমথমে গলায় বললো,” এই যে তোমার বান্ধুবিকে ডাকো।”
দিবা একপাশে দাড়িয়ে লোকের সংখ্যা গুনছিল। শুভ্রের কথা শুনে সে চোখ পিট পিট করে তাকালো। তারপর একটা ভ্রু তুলে বললো,”কোন বান্ধুবি?”
শুভ্র কপাল কুঁচকে বললো,”বুথের পিছনে যে দাড়িয়ে আছে।” তারপর চোখ দিয়ে জায়গাটা ঈশারা করতেই কৌতূহল বশত দিবা এগিয়ে গিয়ে দেখলো, হিয়া আস্তে আস্তে পা ফেলে পালাচ্ছে।
দিবা এসেই খপ করে হিয়ার হাত ধরে চেঁচিয়ে উঠলো,” পেয়েছি পেয়েছি।” হিয়া কটমট করে তাকিয়ে ঈশারায় দিবাকে চুপ করতে বললো। কিন্তু দিবা….? সে টানতে টানতে হিয়াকে শুভ্রের সামনে নিয়ে গেলো।
এই দিবাটাকে আজ একবার হাতের কাছে পেলে হয়। একে তো না বলে নিয়ে এসেছে আবার জল্লাদের হাতে তুলে দিচ্ছে। দিয়েই লাফাতে লাফাতে অন্যদিকে চলে গেছে। হিয়া আড় চোখে শুভ্রের দিকে তাকালো। পিছনে অনুমতি ছাড়া দাড়িয়েছে বলে কি তাকেও ইনজেকশন দিয়ে দিবে। দিয়েও দিতে পারে এই লোকের কোনো ঠিক নেই। ভেবেই হিয়া দুকদম পিছালো সঙ্গে সঙ্গে শুভ্র বললো,” একদম নড়বে না, দাড়াও এইখানে। ” হাতের সিরিজ থেকে ওষুধ ইনজেকশনে পুশ করছে সে।
হিয়া একটা ঢোক গিলে কাপা কাপা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,” ক.. কেনো?”
শুভ্র ইনজেকশনের দিকে তাকিয়ে থেকেই বললো,
” সার্কাস দেখাতে।”
” মানে?”, চট করে জিজ্ঞেস করলো হিয়া। এতগুলো লোকের সামনে কি বলছে এই লোকটা। শুভ্র দৃষ্টি হিয়ার দিকে করে বললো,” এতক্ষণ পিছনে সার্কাস দেখিয়েছো আবার সামনে দেখাও। বাচ্চারা হ্যাপি হ্যাপি থাকবে।”
” পারবো না।”, রেগে গিয়েই চলে যেতে নিলো হিয়া। কি অবস্থা? সে কি জোকার যে সার্কাস দেখাবে?
শুভ্র হিয়ার হাতের কব্জি ধরে থামালো তারপর আস্তে করে বললো,” কমপ্লিমেন্ট দিয়েছি ভালো লাগছে না? দাড়াও এইখানে।”
” ঐটা কমপ্লিমেন্ট হলে রোস্ট কাকে বলে?”, ফিসফিসিয়ে রাগী গলায় বললো হিয়া। সামনের মহিলাটা কেমন অদ্ভূত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
শুভ্র শান্ত গলায় বলল,” চুপ চাপ দাড়াও।”
হিয়ার কাছে আর কোনো উপায় ও নেই। সিংহের গুহার সামনে আসলে কি সিংহ এমনে এমনে ছেড়ে দিবে। হিয়া দাড়িয়ে আছে তাই বাচ্চাগুলোর মনোযোগ তার দিকে শুধু টিকা দেওয়ার সময় বাচ্চাগুলো কেদে কেদে উঠছে।
প্রভা পুরো ঘটনাটাই খেয়াল করলো। শুভ্রের হিয়ার হাত ধরে থামানো। তবে মনে কোনো সন্দেহ আনলো না। ওইসব কিছু চিন্তা করতে গেলে তার অস্থিরতা বাড়ে। নিজেকে সে হাইপার করতে চায় না। প্রভা জানে না আর কতো সে এভাবে নিজের মন কে বোঝাবে?আর এমনিতেও হিয়ার শুভ্রের টাইপ না। শুভ্রের শান্ত, স্মার্ট আর পরিমিত কথা বলা মেয়ে পছন্দ। হিয়া সেসবের একদম বিপরীত।
পুরো ক্যাম্পিং শেষ হতে হতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধার কাছাকাছি। শেষের বাচ্চাটাকে টিকা দেওয়ার পর, হিয়া বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে পাশের একটা চেয়ারে বসলো। বাচ্চাটার মা হিয়ার কাছে বাচ্চাটা রেখে পাশের বুথ থেকে ওষুধ নিতে গিয়েছেন।
বাচ্চাটা অনেক কিউট। তুলোর মতন নরম গাল, ছোটো ছোটো হাত পা। যেনো জীবন্ত একটা পুতুল। শুভ্র পাশেই নিজের কাজে ব্যাস্ত ছিলো, বাচ্চাটার দিকে তাকাতেই দেখলো শুভ্রের দিকে তাঁকিয়ে সে হাসছে। শুভ্র অবাক হলো এতগুলো বাচ্চার মধ্যে এই বাচ্চাটি শুধু তাকে দেখে হেসেছে। হিয়া যে কম অবাক হয়নি তা না এই বনমানুষটার দিকে তাঁকিয়ে হাসছে কেনো বাচ্চাটা। এই আমার দিকে তাকাও। ঐদিকে কি? ঐ গোমড়ামুখোকে হাসার কি আছে? হিয়ার হিংসে হচ্ছে কারণ বাচ্চা মেয়েটা শুভ্রের দিকেই তাকিয়ে আছে হিয়ার দিকে তাকাচ্ছে না।
শুভ্র এগিয়ে এলো ঝুকে বাচ্চাটার দিকে তাকাতেই কিছু চুল কপালে এসে বিধলো। শুভ্র হাত দিয়ে সেগুলো পিছনে সরিয়ে বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে একটু হাসলো। হিয়া হা করে তাকিয়ে আছে।লোকটা কি সত্যি হাসছে? হাসলে গোমড়ামুখো টাকে এতো সুন্দর লাগে?সে হাসিতে যেনো হিয়া ডুবে গেছে অন্যরকম এক ঘোরের মাঝে।
শুভ্র হাত বাড়িয়ে দিলো বাচ্চাটার দিকে,সে চোখ পিট পিট করে তাকিয়ে শুভ্রের একটা আঙ্গুল ধরে খেলতে লাগলো। বাচ্চাটাকে শুভ্রের সত্যি ভালোলাগলো। ঠোঁটের এক কোনে হাসি নিয়ে সে বাচ্চাটাকে দেখছে। শুভ্রের সে হাসি দেখে হিয়ার কেমন জানি লাগছে। বুকের ভিতরটায় তোলপাড় চলছে। হাত পা ঠান্ডা হিম শীতল হয়ে গেছে। হিয়া বিস্ময় নিয়ে অপলকে তাকিয়ে রইলো। এমন লাগছে কেনো তার?
” বাচ্চাটার নাম কি?”, প্রশ্ন করে শুভ্র হিয়ার দিকে তাকালো। শুভ্র যে প্রস্ন করেছে সেটা সে শুনেছে বলে তো মনে হয় না। এতো অবাক হয়ে মেয়েটা কি দেখছে? শুভ্র হিয়ার সামনে তুরি বাজতেই হিয়া ঘন ঘন চোখের পাতা ফেললো। শুভ্র বললো,” কোথায় থাকে তোমার মন? আমি বাচ্চাটার নাম জিজ্ঞেস করেছি।”
হিয়া এখনো বুঝে উঠতে পারলো না এমন লাগছে কেনো তার সে রোবটের মতন বললো,
” মৃন্ময়ী।” বলেই আবার অন্যমনস্ক হয়ে গেলো।
✨ ফিরে যাওয়ার সময় হয়েছে। সবাই বাসে উঠাউঠিতে ব্যাস্ত। হিয়ার যেতে ইচ্ছে করছে না, কি সুন্দর জায়গাটা। এইখানে এসে যেনো প্রাণ ফিরে পেয়েছে সে। হিয়া বাসে উঠে বসেছে , জানালা দিয়ে বাহিরের আকাশটার দিকে তাকিয়ে আছে।
এতো কিছুর মাঝে শুভ্রদের সাথের কয়েকজন আজকে না ফেরার বাহানা করেছে। প্রভাও এতে তাল দিয়েছে। কিন্তু শুভ্রকে কেউ রাজি করাতে পারছে। শুভ্রের রাগ লাগছে। এরা এমন ইমাচুয়ের বিহেভ করছে কেনো? এরা সবাই নাকি কয়েকমাস পর ডাক্তার হবে।
তাদের সাথের দীপ্ত বলে উঠলো,” আজ রাতে বন ফায়ার করে কাটাবো। প্লীজ তুই বেগ্রা দিস না।”
শুভ্র চটে গিয়ে বললো,” দিজ ইজ বুলশিট। তোদের রেসপন্সিবিলিটি বলতে কিছু নেই। সঙ্গে যে এতগুলো ছেলেমেয়ে আছে, ওদের গার্জিয়ান কি ওদের অ্যালাও করবে? আর রাতের বেলায় এই পাহাড়ি এলাকায় এতগুলো ছেলে মেয়ের সেফটি দিতে পারবি তোরা? থাকবে কোথায়? আশে পাশে আছে কোনো হোটেল? বি ম্যাচিউর।”
শুভ্রের কথায় সবাই একটু ভাবনায় পড়লো শুভ্র ভুল কিছু বলেনি। প্রভা হুট করে বললো,” ওদের ফেরত পাঠিয়ে দেই।” প্রভারও থেকে যাওয়ার ইচ্ছা।
” একা একা এতগুলো ছেলে মেয়েকে পাঠাবো তাও আবার রাতের বেলা?” স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো শুভ্র।
” না না। একা না ইউসুফ আর রবিন তো থাকছে না ওরাও তাহলে ঐ বাসে করেই ফিরে যাবে। আমরা আমাদের বাস নিয়ে সকালে রওনা দিবো”, প্রভা শান্ত গলায় বলল।
শুভ্রের আর কিছু বলার নেই। করুক যা ইচ্ছে, শেষে ঝামেলা হলে বুঝবে। তখন শুভ্র শুভ্র করেও লাভ হবে না। শুভ্র মুখ ভার করে অন্যদিকে হাঁটা দিলো। ওদের আর কিছু বললো না। ওরা করুক ওদের যা ইচ্ছে, সে তার টা বুঝে নিবে।
যেহেতু প্রভা থাকবে দিবাও থাকার বাহানা পেলো আর দিবা থাকবে মানেই হিয়াকে সে টেনে হিচড়ে আনবেই। দিবা সেটাই করেছে, হিয়াকে ফিরতে দেয় নি। হিয়ার থাকার ইচ্ছা করছিলো কিন্তু শুভ্রের চেহারা ভেসে উঠতেই সে আবারও যেতে চাইলো। কিন্তু দিবা…? সে তো নাছোড় বান্দা। দিবা যেখানে হিয়াও সেখানে সিম্পল।
হিয়ার যে খুব খারাপ লাগছে তা না। জায়গাটা রাতের বেলায় অনেক সুন্দর লাগছে। হিয়া হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিকে গেলো, হাতে লম্বা একটা লাঠি দিয়ে মাটিতে আঁচড় কাটতে কাটতে যাচ্ছে সে হারিয়ে গেলে ঐ দাগ দেখে ফিরতে পারবে। দিবা গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছে কিছুক্ষন হলো, না হলে ওকে নিয়ে আসা গেলো ভালো হতো। হিয়া হাঁটতে হাঁটতে একটা উচু পাহাড়ের ওপর উঠে দাঁড়িয়েছে।
এইখান থেকে আকাশটা একদম কাছ থেকে দেখা যাচ্ছে। অদ্ভূত ভাবে আকাশে আজ কোনো মেঘ নেই। পরিষ্কার আকাশে তারাগুলো ঝিলমিল করছে। চাঁদটাও একপাশে হাসছে। হিয়া মুগ্ধ হয়ে দেখছে। আচ্ছা তার নীলচে তারাটা কোথায়?হিয়া খুঁজতে লাগলো। এর মাঝেই কামেরার ক্লিক ক্লিক আওয়াজে পাশে তাকাতেই কে যেনো তার মুখে ফ্ল্যাশ মারলো।
হিয়া আতঙ্কিত স্বরে বললো,” কে…? কে আপনি?”
গলায় ঝোলানো একটা ক্যামেরা মুখের সামনে ধরে আছে, মাথায় একটা কালো ক্যাপ পড়া একজন তার ছবি তুলছে। হিয়ার ভীষন ভয় করছে, এসব ভিনগ্রহী মানুষের সাথে তার দেখা হয় কেনো? হিয়া হাতের লাঠিটা সামনে ধরে কড়া গলায় বললো,” কে আপনি
ক্যামেরা নামান বলছি?”
ছেলেটা ক্যামেরা সরিয়ে বিরক্তি নিয়ে হিয়ার দিকে তাকাতেই হিয়ার আতংকে বুকটা কেপে উঠলো। প্রথমে চিনতে না পারলেও এখন ঠিক চিনেছে। এই এলিয়েনটা এইখানে কি করছে? সত্যি কি এইটা এলিয়েন নইলে হুট হাট করে এভাবে সামনে আসে কিভাবে? হিয়া কাপা কাপা হাতে লাঠিটা সামনে ছেলেটার দিকে তাক করে বললো,” আপ…আপনি এইখানে কি করছেন?”
ছেলেটা নির্বিকার ভঙ্গিতে বললো,” ছবি তুলছিলাম।”
” আমার ছবি তুলেছেন কেনো? আমার পারমিশন নিয়েছেন?”, কঠিন গলায় বললো হিয়া। বলার সময় মনে হলো সেও শুভ্রের মতন কথা বলছে।
” হেয়, আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার।”, ছেলেটার এমন কথায় হিয়া চোটে গিয়ে বললো,” তো আমি কি করবো? আপনি আমার ছবি তুলেছেন কেনো? ডিলিট করুন।”লাঠিটা একদম ছেলেটার মুখের সামনে রেখে শাসিয়ে বললো।
ছেলেটা এক হাত দিয়ে সামনে থেকে লাঠিটা সরিয়ে বললো,” পারমিশন নেওয়ার কি আছে? চাঁদের ছবি তোলার আগে কি চাঁদ থেকে পারমিশন নেই আমরা? যে চাঁদ তোমার ছবি তুলছি। চাঁদ এতো সুন্দর হয়েও কিছু বলে না আর তুমি এমন করছো কেন? চাঁদ থেকেও কি তুমি বেশী সুন্দর?”,বলেই বাকা ঠোঁটে হাসলো।
ছেলেটার কথায় হিয়া হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। কি বললো এই এলিয়েনটা? এ আবার কেমন কথা! হিয়া কড়া গলায় বললো,” ওসব জানি না। আপনি আমার ছবি রাখতে পারবেন না। ব্যাস।”
ছেলেটা হিয়ার হাতের লাঠিটা শক্ত করে ধরলো, মেয়েটা কথায় কথায় খালি লাঠি নাচ্ছাছে। চোখটা না গেলে দেয়। লাঠি ধরায় হিয়া নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে লাঠিটা টানতে টানতে বললো,” ছাড়ুন, ছাড়ুন বলছি।”
ছেলেটা লাঠি শক্ত করে ধরে রেখে এগিয়ে আসতে আসতে বললো,” না ছাড়বো না। ছাড়লেই তো আমার মুখের সামনে লাঠিটা নাচাতে থাকবে। আর প্রথমবার যখন হেল্প করেছি ধন্যবাদ তো দেও নি নামটা জিজ্ঞেস করেছি সেটাও বলোনি। এইসবের বদলে তোমার একটা ছবি তো আমি রাখতেই পারি, তাই না?”
” নাহ্ পারেন না।”, কড়া চোখে তাকিয়ে বললো হিয়া।
” অবশ্যই পারি। যতবার ওই ছবি দেখবো ততোবার মনে পড়বে তোমার আমার প্রথম দেখা।”, বলেই ছেলেটা হালকা হাসলো। হিয়া ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। কেমন জ্বালা রে বাবা। ঢাকায় ফিরে গেলেই ভালো হতো, এসবের পাল্লায় পড়তে হতো না। হিয়া লাঠিটা ছেড়ে দাড়িয়ে চলে যেতেই ছেলেটা পথ আটকে দাড়িয়ে বললো,” নামটা আজও বোলবে না?”
” নাহ্, আমি অচেনা মানুষকে নাম বলি না।”, গাল ফুলিয়ে বললো হিয়া।
” তাহলে চিনে নেও। চিনতে কতক্ষন? আমার নাম রবি।”,ছেলেটার কথায় হিয়া আড় চোখে তাকালো তারপর বললো,” আপনার নাম রবি? আমার নাম বৃহস্পতি। এবার সরে দাড়ান।”
হিয়ার কথায় রবি মাথা নিচু করে হেসে ফেললো। মেয়েটা সত্যি অন্য মেয়েদের থেকে আলাদা, অনেক আলাদা। রবি আর কথা বাড়ালো না মেয়েটাকে বিরক্ত করতে চাচ্ছে না। পথ থেকে সরে দারিয়ে বললো,
” আচ্ছা, নামটা মনে থাকবে।” হিয়া বড়ো বড়ো পা ফেলে কিছুদূর গিয়েই ছুটে দৌড় দিলো। রবি অপেক্ষা করছিল মেয়েটা একবার হলেও পিছনে ফিরে তাকাবে কিন্তু হিয়া একবারও পিছনে তাকায় নি।
শুভ্র ফোনের নেটওয়ার্কের জন্য পাহাড়টায় উঠেছিল। দূর থেকে ছেলেটাকে দেখতে না পেলেও হিয়াকে দেখে সে ঠিক চিনেছে। কি করছিল এরা দুজন এইখানে? আর ছেলেটাই বা কে? শুভ্র থমথমে দৃষ্টিতে কতক্ষন দাড়িয়ে রইলো।
[ #চলবে ]