#হঠাৎ_বর্ষনের_রাতে💖
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💖
— পর্বঃ০৭
“হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে অর্নব সামনের মেয়েটির দিকে যেন তার বিশ্বাসই হচ্ছে না মেয়েটা কে?’অর্নব কিছুটা বিস্ময়ভরা কন্ঠ নিয়ে বলে উঠলঃ
—“আফরিন তুই?’
“অর্নবের কথা শুনে সাদা লেডিস ফ্রক আর ব্লাক জ্যাকেট পড়া মেয়েটা ঘুরে তাকালো অর্নবের দিকে!’তারপর মেয়েটি অর্নবের সামনে গিয়ে বললোঃ
—“হুম আমি…
—“তাহলে তুই আমার গাড়ির গ্লাস ভেঙেছিস…
“আফরিন তার ঠোঁটে কামড় দিয়ে মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললোঃ
—“হুম…
“আফরিনের কথা অর্নব অবাক হয়ে বললোঃ
—“কি কিন্তু কেন?’
—“আর বলিস না ভেবেছিলাম তোকে না জানিয়ে এসে তোকে সারপ্রাইজ দিবো কিন্তু তোর ওই গার্ডরা কিছুতেই ভিতরে ঢুকতে দিলো না বললো তোর সাথে কথা বলতে হলে নাকি এপোয়মেন্ট লেটার লাগবে তাই বাধ্য হয়ে এমন করা লাগলো,সরি…
—“আমার যে কতগুলো টাকা লস হলো তার বেলা…
—“আরে প্যারা নিচ্ছিস কেন তোর তো এত টাকা ঠিক করে নিস…
—😒😒😒
“অর্নবের রিয়েকশন দেখে আফরিন আর কোনো জবাব না দিয়ে হাসতে হাসতে অর্নবের হাত ধরে অফিসের ভিতর যেতে যেতে বললোঃ
—“আর রাগ করিস না তো চল এখন ভিতরে যাই আর তোর গার্ডদেরও বলে দিস এরপর থেকে যেন আমার সাথে এমন না করে…
“আফরিনের কথা শুনে অর্নব দাঁড়িয়ে বলে উঠলঃ
—“কি করেছে ওঁরা….
—“আর বলিস না তখন…
|| ফ্লাসবেক ||
“ব্লাক গাড়ি করে,চোখে কালো সানগ্লাস সাথে ওয়াইট লেডিস ফ্রক,ব্লাক লেডিস জ্যাকেট পড়ে এসেছিল আফরিন!’অর্নবকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ওর অফিস থেকে কিছুরা দূরে গাড়ি থামায় আফরিন!’তারপর আস্তে আস্তে হাইহিল পড়ে গাড়ি থেকে নামে সে!’আফরিন অর্নবের অফিসের দিকে একবার তাকিয়ে তার চোখের চশমা খুলে ফেলে তারপর এগিয়ে যায় অফিসের ভিতরে!’কিন্তু গেট পর্যন্ত যেতেই অর্নবের গার্ডটা আফরিনের সামনে এসে বলে উঠলঃ
—“কোথায় যাচ্ছেন আপনি?’
“গার্ডদের কথা শুনে আফরিন বলে উঠলঃ
—“মিস্টার অর্নব ওনার সাথে দেখা করবো আমি…
—“আপনার কাছে এপোয়মেন্ট লেটার আছে…
“আফরিন কিছুটা বিস্মত নিয়ে বললোঃ
—“তা তো নেই,…
—“তাহলে তো আপনাকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া যাবে না…
—“কিন্তু…
—“এপোয়মেন্ট লেটার ছাড়া স্যার কারো সাথে দেখা করে না তাই আপনি পরে আসুন…
—“দেখুন আমি অর্নবের পূর্বপরিচিত…
—“ঠিক আছে আপনার নাম বলুন আমরা স্যারকে জানাচ্ছি….
“এবারের কথা শুনে আফরিন খুব নিরাশ হয় কারন সে চেয়েছিল অর্নবকে সারপ্রাইজ, এখন এখানে নাম বলে দিলে তো সেই সারপ্রাইজটা নষ্ট হয়ে যাবে!’আফরিনের ভাবনার মাঝখানে আবারো বলে গার্ডরাঃ
—“কি হলো আপনার নাম বলুন?’
—“নাম তো বলা যাবে না….
—“তাহলে তো আপনাকে ভিতর যেতে দিতে পারি না মিস…
“উওরে আফরিন আর কিছু না বলে নিরাশ হয়ে সাইডে চলে আসে হঠাৎই তার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে আফরিন বেশি কিছু না ভেবে চলে অর্নবের অফিসের পিছন দিকে যেখানে অর্নবের গাড়ি ছিল ব্যাস গুনেগুনে রেড কালার গাড়ি চুস করে পায়ের হিল জুতো খুলে সেটা দিয়ে বারি মারে অর্নবের গাড়ির জানালার গ্লাসের ওপর ব্যাস সাথে সাথে গার্ডরা ঘিরে ধরে তাকে তারপর অর্নবকে খবর দেয়!’
|| ফ্লাসবেক ওভার ||
“আফরিনের কথা শুনে অর্নব কিছুটা হতাশ বললোঃ
—“তুই এতো উল্টো কেন বলতো নাম বললেই তো হয়ে যেত…
—“আরে নাম বললে তো সারপ্রাইজটা থাকতো না তাই না…
—“তুই তো, অবশ্য এটা ঠিক গাড়ির গ্লাস ভাঙার কথা শুনে আমি সত্যি খুব সারপ্রাইজ’ড হয়েছি…
—“তাহলে আর বলছি কি?’এখন কি এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই কথা বলবি নাকি ভিতরেও যাবি…
—“ওহ হ্যাঁ চল…
“এতটুকু বলে দু’পা এগিয়েও আবার থেমে গিয়ে বলে অর্নবঃ
—“এক মিনিট দাঁড়া তো…
—“আবার কি হলো…
“আফরিনের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে অর্নব চলে যায় তার সিকিউরিটি গার্ডদের সামনে!’অর্নব যেতেই গার্ডরা মাথা নিচু করে বললোঃ
—“সরি স্যার,আমরা আসলে…
—“ইট’স ওকে তোমাদের কোনো দোষ নেই,গাড়িটা ঠিক করার জন্য ভালো গেরেজে পাঠিয়ে দিও…
—“ঠিক আছে স্যার…
“এরপর অর্নব চলে আসে আফরিনের সামনে তারপর একটু ক্ষিপ্ত মেজাজে বললোঃ
—“চল…
“উওরে আফরিন হাল্কা হেঁসে অর্নবের হাত ধরে দাঁত কেলানি হাসি দিয়ে বললোঃ
—“সরি দোস্ত…
—“হইছে আর কিছু বলতে হবে না….
—“দোস্ত রাগ করিস না এমনটা না করলে তো তোর সাথে দেখা না হয়েই চলে যাওয়া লাগতো সাথে সারপ্রাইজ দেওয়াও হতো…
—“হুম বুঝছি চল এখন…
—“আমার কিউট দোস্ত…
“এরকম হাজারো বক বক করতে করতে চললো আফরিন অর্নবের সাথে!’
.
“অন্যদিকে ওদের থেকে কিছুটা দূরত্বে দাঁড়িয়ে থেকে সবটাই দেখেছে ইরা!’তবে বেশি কিছু না বুঝলেও এতটুকু ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে সে অর্নব আর এই আফরিনের মধ্যে খুব ভালো বন্ধুত্বপূর্ন বা এর থেকে গভীর কোনো সম্পর্ক রয়েছে!’সাথে অনেকদিনের পূর্বপরিচিত কেউ!’
“ইরার ভাবনার মাঝেই আফরিন আর অর্নব ইরাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায় অর্নবের রুমের দিকে!’যেন অর্নব আফরিন কেউ খেয়াল করেনি এখানে কেউ দাঁড়িয়ে আছে কি না….
“বিষয়টায় তেমন একটা খেয়াল করে নি ইরা,সে তো এখনো হা হয়ে তাকিয়ে আছে আফরিন আর অর্নবের যাওয়ার পানে….
____
“অর্নবের রুমে বসে আছে আফরিন চারপাশে চোখ বুলাচ্ছে সে,এরই মাঝে অর্নব বলে উঠলঃ
—“তারপর বল কি খাবি চা না কফি?’
—“কফি,,
—“ওকে….
“এতটুকু বলে অর্নব তার টেবিলের উপর থাকা টেলিফোনটা দিয়ে কল করে দু-কাপ হট কফি অর্ডার করলো!’বলতে না বলতেই কফিও চলে আসলো তারপর অর্নব আর আফরিন কফি খেতে খেতে গল্প জুড়ে দিল!’আফরিন হলো অর্নবের স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির ফ্রেন্ড!’মানে অনেকদিন যাবৎই তাঁরা একসাথে আছে…
.
.
“সারাদিনে আর ইরা অর্নবের তেমন সাক্ষাৎ হয়নি!’কারন আজ অফিসের পুরোটা সময়ই অর্নব আফরিন একসাথে ছিল…
“আজকের মতো অফিসের সব সেরে বাড়ি ফিরলো ইরা!’কলিংবেল বাজাতেই মা এসে দরজা খুলে দিল!’ইরা বেশি কিছু না ভেবে ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঢুকে পড়লো তার রুমে!’তারপর ব্যাগটাকে বিছানার এক কর্নারে রেখে নিজেও ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পড়লো!’কাল শুক্রবার মানে অফিস বন্ধ ভেবেই খুশি খুশি লাগছে ইরার!’কাল সকালে নিশ্চিতে ঘুমাতে পারবে ইরা!’ভেবেই চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো ইরা!’সাথে সাথে আজ সারাদিন অফিসে কি কি ঘটলো সব চোখের সামনে ভেঁসে আসলো!’
—“সত্যি মেয়েটার সাহস আছে,না হলে অর্নবের স্যারের গাড়ির গ্লাস ভাঙে…
“এরকম হাজারো ভাবনা মাথায় আঁকতে আঁকতে কিছুক্ষন পর বিছানার শুয়ে থেকে,উঠে চলে ইরা ওয়াশরুমের দিকে!’…..
___
“পরেরদিন….
“সূর্যের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙলো ইরার!’কিছু্ক্ষন চুপ করে শুয়ে থেকে জোরে নিশ্বাস ফেলে বিছানা থেকে উঠে বসলো ইরা!’পুরো ছয়দিন পর আজ নিশ্চিতে ঘুমালো সে!’মনটা সতেজ আর ফুড়ফুড়ে লাগছে তাঁর….
.
“ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় দুপুর দু’টো ছাড়িয়ে গেছে!’এমনিতে এমন সময় আকাশ জুড়ে রোদ থাকলেও আজ আকাশে কোনো রোদ নেই,বৃষ্টির হওয়ার পূর্বাভাস চলছে খুব!’চারিদিকে কালো মেঘে ঢেকে গেছে হয়তো তুমুল বেগে বৃষ্টি হবে,,আর বলতে না বলতেই তুমুল বেগে বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো!’এমনই এক পরিবেশে বৃষ্টির মাঝে গাড়ি করে কোথাও যাচ্ছে অর্নব!’হঠাৎই কয়েক কদম এগোতেই মাঝরাস্তায় গাড়ি থামিয়ে দিলো অর্নব….
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…..
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!’আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে]
#TanjiL_Mim♥️





