দীপ্ত গোধূলি পর্ব -২৭+২৮

#দীপ্ত_গোধূলি
#লিখনীতে -স্বর্ণালী তালুকদার
#পর্ব -২৭

এই ঠিকানায় আজকে অনেকজন নতুন সদস্য এসেছে আহান দাদুভাই।আর আজই তোমরা এলে!আসো তোমারা ভিতরে আসো।এই সবাই কই গেলে গো!দেখো কারা এসেছে!আব্দুল্লাহ মিয়া সবাইকে ডাকতে ডাকতে ভেতরে চলে গেছেন।

অনাথ আশ্রম আর বৃদ্ধাশ্রমের একত্রিত রূপ হলো ঠিকানা।আহানের বড় বাবা অর্থাৎ আনোয়ার সাহেবের বাবার হাতে তৈরি এই ঠিকানা।বৃদ্ধাশ্রম আর অনাথ আশ্রমের একটাই নাম দেওয়া হয়েছে আর সেটা হলো ঠিকানা।অনাথ শিশুদের পরিচয় হলো এই ঠিকানা।আর বৃদ্ধাশ্রমে যাদের রেখে যাওয়া হয় তাদেরও এই ঠিকানাই একমাত্র সম্বল!সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তাদেরকে এখানে রাখা হয়।তাই একবার যে ছেলে বা মেয়ে তাদের মা বাবাকে এখানে রেখে গেছে ওদের আর দ্বিতীয় বার নিজেদের মা বাবার মুখ দেখতে হয় নি!নিজের জন্মদাতা পিতা জন্মদাত্রী মায়ের প্রতি তিক্ততার রূপেই বৃদ্ধাশ্রম!তারা যদি নিজেরদের মা বাবাকে এতই ভালোবাসতো তাহলে তাদের নতুন কোনো ঠিকানা খুজে নিতে হত না।তবে এই ঠিকানার কথা ভিন্ন।এ যেন মিলনমেলায় এক পরিপূর্ণ সংসার! অনেকে তো স্বেচ্ছায় এই ঠিকানায় চলে আসে!স্বেচ্ছায় বলতে যতেষ্ট অভিযোগের ফলেই তারা তাদের মায়া ত্যাগ করে চলে আসতে বাধ্য হয়!বাচ্চাদের দেখাশোনা করার জন্য কোনো লোক রাখার প্রয়োজন হয় না!এই অনাথ আশ্রমের বড় ছেলে মেয়েগুলোই ছোটদের খেয়াল রাখে।আর ওরাই বৃদ্ধাশ্রমে যাদের এক্কেবারে বেশি বয়স তাদেরও খেয়াল রাখে।পরিবারের মতো মিলেমিশে থাকে সবাই।অনাথ বাচ্চাদের জন্য এইখানে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ার সুযোগ রয়েছে।তারপরের পড়াশোনার জন্য তাদের বাহিরে দেওয়া হয়। ঠিকানার পরিবেশ,নিয়মনীতি,শিষ্টাচারের প্রতি অনকেই আকৃষ্ট হয়ে ডোনেশন দিতে চায় কিন্তু ঠিকানার কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করতে নারাজ।
গোধূলির পরিবার বলে যে,এই ঠিকানা হলো আমাদের আরেকটা পরিবার।আর পরিবার চালানোর জন্য ডোনেশন নেওয়াটা ঠিক ভালো দেখায় না।তবে হ্যাঁ যদি কোনো সময় আপনাদের সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই আপনাদের জানাবো।

অনাথ আশ্রমের অর্ধেকের বেশি বাচ্চা তো সারাদিন ইনফ্যাক্ট রাতেও বৃদ্ধাশ্রমেই থাকে।পড়াশোনা আর খেলাধূলার পর বাকি সময়টা ওরা বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিটি মানুষের সাথেই কাটায়।বয়স বিবেচনা করে তাদের বিভিন্ন নামে সম্মোধন করে!রাতের বেলায় কাকা কাকি,নানা নানু,দাদা দাদুর কাছ থেকে গল্প শুনে ঘুমিয়ে যাওয়ার পর ওদের আবার নিয়ে যাওয়া হয়।

ঠিকানা হলো আত্মতৃপ্তির আরেক নাম।বাহির থেকে দেখলে যে কেউ ভাববে এটা হয়তো পুরাতন কোনো রাজবাড়ী বা জমিদার বাড়ি!ঠিকানার প্রত্যকটা দালান সেই আদলেই তৈরি করা!চারপাশে বিশাল বড় বড় গাছ।ফুল থেকে শুরু করে ঔষধি সব ধরনের গাছ রয়েছে এখানে।ঠিকানার ঠিক সামনেই রয়েছে বিশাল এক দীঘি।আর দীঘির ঠিক মাঝখানে দেওয়া এক বিশাল সিংহাকৃতির পুয়ারা।সিংহের মুখ থেকে সেই পানি আবার দীঘির জলেই বিলীন হয়ে যায়!

সাজি বুড়ি!

দিঘীর পাড়ে পেতে রাখা বেঞ্চটায় বসে এক ধ্যানে সেই পুয়ারার দিকে তাকিয়ে ছিল গোধূলি। আব্দুল্লাহ মিয়ার ডাকে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছন ফিরে বলে,

– আসো দাদু!বড়দা ভাই কোথায় গো?

– আহান দাদুভাই একটু ম্যানেজার সাহেবের সাথে দেখা করতে গেছে।মনে হয় ঠিকানার বিষয়ে কোনো আলাপ আলোচনা করবে!

– ওহ!দাদু?

– হুম!

– তখন তুমি বললে না যে আজকে নতুন কারা যেন এসেছে!

– হে এসেছে তো!তুমি যাবে তাদের কাছে?

– হুম!

– আসো আমার সাথে।

_______________________

– কোথায় গিয়েছিলে দাভাই?

– ম্যানেজার সাহেবের সাথে একটু দেখা করে আসলাম।

– ওহ।

– মন ভালো হলো তবে!

আহানের কথার বিনিময়ে স্মিত হেসে জবাব দিলো গোধূলি।

– দাভাই আমি তোমাদের খুব বিরক্ত করি না!

আহান গোধূলি গাল ধরে উৎকন্ঠিত স্বরে বলল,
-না সাজি, একদম না।তুই তো আমার লক্ষ্মী বোন।তুই এইভাবে কেন বলছিস?

– এমনি!আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমি তোমাদের অহেতুক বিরক্ত করি!

আহান একটু রাগ দেখিয়ে বলল,
– এইসব ভুলভাল কথা আর কখনো বলবি না সাজি!মনে থাকবে!

গোধূলি শুধু মাথা উপর নিচ করে সম্মতি দেয়।

– এখন চল বাড়ি ফিরতে হবে তো।অনেকটা রাত হয়ে গেছে।বাড়ির সবাই বার বার ফোন দিচ্ছে।

– হুম চলো।

সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গোধূলি আর আহান চলে আসে।গাড়ির কাছে আসতেই দেখে দীপ্ত গাড়ির মধ্যে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।গোধূলি কিঞ্চিৎ অবাক হয়।কারণ এর আগে দীপ্ত কখনো ঠিকানায় আসে নি!আর ঠিকানার ঠিকানাও দীপ্ত জানে না!

– দীপ্তকে আমি ঠিকানার আড্রেস দিয়েছি।

আহানের কথায় গোধূলি কোনো কথা না বলে শুধু একবার আহানের দিকে তাকিয়ে পুনরায় হাটতে শুরু করে।দীপ্ত গোধূলির দিকে তাকাতেই হৃদয়টা যেন একটু মুছড় দিয়ে উঠল!এ কি হাল বানিয়েছে মেয়েটা!বিকালেও তো দিব্যি ভালো ছিল!কান্না করে চোখ মুখ ফুলে গেছে!কি এমন হয়েছিল যার জন্য ওকে রাতের বেলায় বাড়ির বাইরে বের হয় আসতে হলো।দীপ্তের ভাবনার মাঝেই আহান আর গোধূলি গাড়ির কাছে চলে আসে।
দীপ্ত ওদের উদ্দেশ্যে বলল,
– সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি! এতক্ষনে বুঝি তোদের আসার সময় হলো?

– না আসলে ম্যানেজার কাকার সাথে একটু আলাপ আলোচনা করতে গিয়ে দেরি হয়ে গেলো!

– আচ্ছা ঠিক আছে।এখন তাড়াতাড়ি আয় অনেক রাত হয়ে গেছে।বড় মামু ফোন দিয়েছিল আমি বলেছি অলরেডি আমরা বেড়িয়ে গেছি।

– তোর গাড়ি কোথায়?

– আমি গাড়ি আনি নি!

– তাহলে তুই এত দূর কিভাবে আসলি?

– বোকার মতো কথা বলিস না আহান।আমি গাড়ি আনি নি তো কি হয়েছে রাস্তায় কি অন্য গাড়ি নেই!

– সেটা তো আমি জানি বাট তুই তো নিজের গাড়িতেই কমফোর্টেবল তাই বললাম!যাকগে যা তুই গিয়ে পিছনে বস….

– আমি ড্রাইভ করবো আহান!

দীপ্ত ড্রাইভ করবে শুনে গোধূলি চুপচাপ পিছনের সীটে গিয়ে বসল।
– বড়দা ভাই তুমি আমার সাথে বসবে!

গোধূলি অনুরোধের সুরে কথাটা বলে। বোনের কথায় আহান বলে,
– আমি তোর সাথেই বসবো!তুই দুই মিনিট বস আমি একটু আব্দুল্লাহ দাদুর সাথে দেখা করে আসি।

– ঠিক আছে।

_________

আহান গিয়ে বোনের পাশে বসতেই দীপ্ত ড্রাইভিং এ মন দেয়।গোধূলি আহানের কোলে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে।আহান ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।গোধূলি অনেকক্ষণ আগেই ঘুমিয়ে গেছে।মনটার সাথে সাথে তো ওর শরীরটাও ভালো না।

– আহান!

……

– নাম চলে এসেছি।

……

– আহান!এই আহান কোথায় হারিয়ে গেলি?

– হুম!ওহ চলে এসেছি?

– অনেকক্ষণ আগেই!

– তুই যা আমরা আসছি।

– ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আয়।

গোধূলি এখনো ভাইকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।ওকে ডেকে তোলে আহান।তারপর দুজনেই বাড়ির ভিতরে চলে যায়।
#দীপ্ত_গোধূলি
#লেখনীতে-স্বর্ণালী তালুকদার
#পর্ব-২৮

হাই মিস গোধূলি!মন ভালো হলো তোমার?

গোধূলি টেবিলে একাই ব্রেকফাস্ট করছিল।পুরুষালী কন্ঠ পেয়ে মাথা তুলে তাকিয়ে উৎকন্ঠিত স্বরে বলে উঠলো ,

– ইফতি ভাইয়া!তুমি?

ইফতি সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বাম পাশের ভ্রু টা একটু উঁচিয়ে বলে,

-হুম আমি!তো?

– তুমি আমাদের বাসায়?

-কেন আমি কি আসতে পারি না?

– কেন নয়।কিন্তু আমি সেটা বলি নি।তুমি তো বললে আসবে না!

– আমার বেস্টির বিয়ে আর আমি আসবো না!

– তাহলে বললে কেন যে আসবে না!

– ওটা আদিবার জন্য সারপ্রাইজ ছিল!

– ওহহ এই ব্যাপার!
অনেকটা সুর টেনে কথাটা বলল গোধূলি।

– হুম।আর আমিই কিন্তু সবার আগে এসেছি!

– তাই!তা কখন এলে তুমি?

– কাল বিকালে!

– কি!

হুম তো কি হয়েছে?এইভাবে চোখ গোলগোল করে তাকিয়ে আছো কেন?

– তুমি কাল বিকালে এসেছ?তাহলে আমি কোথায় ছিলাম!

– মন খারাপের দেশে!

ইফতির কথায় গোধূলি একটু থেমে গিয়ে বলে,

– সরি ভাইয়া!

– তুমি সরি বলছ কেন?

– না তোমরা আমাদের বাসায় এসেছ অথচ আমি তোমাদের খোঁজ খবর নেই নি!ব্যাপারটা একটু কেমন অড দেখায় না?

– সো হোয়াট!ইটস ওকে।

– আসলে আমি একটু অসুস্থ ছিলাম তো তাই বিকালে একটু রেস্ট নিচ্ছিলাম!আর আমি অসুস্থ বলে হয়তো আমাকে কেউ ডাকেও নি।

– আরে ধুর পাগলি!এতে এত প্যানিক হওয়ার কি আছে! আদিবা আমাদের সবটা বলেছে।সো ডোন্ট বি সরি!জাস্ট চিল!

– হুম!তা বাকি সবাই কোথায়?

– শপিং করতে বের হবে বলে রেডি হচ্ছে।তুমি তো লেইট করে ঘুম থেকে উঠলে তাই ওদের সাথে এইখানে দেখা হলো না।আমি একটু কফি নেওয়ার জন্য এসেছিলাম আর তোমার সাথে দেখা হয়ে গেল!কাল রাতে অবশ্য তোমার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম সবাই কিন্তু তোমাদের ফিরতে দেরি হয়ে গিয়েছিল তাই সবাই ঘুমিয়ে পরেছিল।আমি অবশ্য সজাগই ছিলাম!

– তাহলে আমাকে ডাকলে না কেন?

– আমার কাছে মনে হয়েছিল ওই মুহূর্তে তোমাকে ডিস্টার্ব না করাই ভালো!

– এইভাবেই কেন বলছ ইফতি ভাইয়া!তুমিও তো আমার আরেকটা ভাই বলো!

– হুম তো!ভাই হয়েছি বলে কি বোনকে ডিস্টার্ব করতে হবে!ভাইয়ের মনে কি দয়া মায়া নাই!

– ভাইয়া তুমিও নাহ!

গোধূলিকে ইফতির সাথে এই ভাবে সাবলীলভাবে হেসে হেসে কথা বলতে দেখে আরেক জনের গা পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে।যদিও ওদের মধ্যে কি নিয়ে এত কথা হচ্ছে শুনা যাচ্ছে না তবুও যতটুকু দেখতে পাচ্ছে তাতেই অবস্থার চিত্র পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে!

– আচ্ছা এখন তাড়াতাড়ি যাও গিয়ে রেডি আসো।

– ঠিক আছে।

গোধূলি কোনো রকমে খাওয়া শেষ করে রুমের উদ্দেশ্যে দৌঁড় লাগায়।গোধূলির কান্ড দেখে ইফতি হাসতে হাসতে রান্নাঘরে চলে যায় কফি বানাতে।ইফতি জাকিয়া বেগমের বেস্ট ফ্রেন্ড এর ছেলে।আর আদিবারও বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ার সুবাদে ইফতির এই বাড়িতে ঘরের ছেলের মতোই যাতায়াত।নিজের কাজ নিজে করতে পছন্দ করে ইফতি।আর এই বাড়ির সবাই ওকে খুব আদরও করে।ইনফ্যাক্ট আদিবার সব বন্ধুদেরকেই তারা আদর স্নেহ করেন।

– আরে ইফতি তুই কেন কফি করছিস?আমাকে বলতি আমি করে দিতাম।

– আরে আন্টি!আসো আসো এখানে বসো!তুমি বলো কি খাবে?

– হা হা হা!

– আন্টি তুমি হাসছো কেন?

– হাসবো না তো কি করবো!তোকে দেখে মনে হচ্ছে তুই না আমি তোদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছি।

– ওই একই হলো।নাও কফিটা খেয়ে বলো কেমন হয়েছে?

জাকিয়া বেগম কফির মগে চুমুক দিয়ে বললেন,
– বাহ!অসাধারণ হয়েছে রে।

– থ্যাংক ইউ।

বুবু রায়ান ভাইয়ারা কখন থেকে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।একটু তাড়াতাড়ি আয় তো।

আহান আদিবাকে তাগিদ দিয়ে নিচে চলে যায়।

– ওই তো সবাই চলে এসেছে!

ইহানের কথায় দীপ্ত তাকিয়ে দেখ সবাই চলে এলেও ইফতি আর গোধূলি এখনো আসে নি।দীপ্তের মাথা গরম হয়ে যায়।হাতে থাকা গাড়ির চাবিটার শক্ত করে চেপে ধরলো যখন ইফতি আর গোধূলিকে একসাথে আসতে দেখলো।ওরা গাড়ির কাছে আসতেই গোধূলি বলে উঠলো,

– আমি ইফতি ভাইয়ার সাথে বাইকে করে যাবো!

দীপ্ত ঘটনার মোড় ঘুরাতে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে,

– আরে না তুই ইফতি ভাইয়ার বাইকে করে কিভাবে যাবি!ইফতি ভাইয়ার বাইক তো নষ্ট।

– আরে না…..

ইফতি কিছু বলতে চাচ্ছিল কিন্তু আহান ওকে চোখে ইশারা করে বোঝালো চুপ থাকতে।

গোধূলি একটু অবাক চোখে বাইকটার দিকে তাকিয়ে বলে,

– তাহলে এটা এখানে কেন?

– মেরামত করতে নিয়ে যাবে বলে।

গোধূলি মন খারাপ করে গাড়িতে গিয়ে উঠে বসে।দীপ্তও বিশ্বজয়ের তৃপ্তিতে মুচকি হেসে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসলো।

– আরে আরে আপনি কেন এখানে বসছেন?

দীপ্ত গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলল,
– তো আর কারো বসার সাহস আছে?
– মানে?
দীপ্ত একটু থতমত খেয়ে গিয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে বলে,
– না মানে ড্রাইভ করার কথা বলছিলাম আরকি।আহান তো আদিবাপুর সব ফ্রেন্ডের নিয়ে গেলো।আর ইহান তো বাড়ির বড়দের নিয়ে যাচ্ছে।বাকি রইলো তুই আমি আর….

– আর?

দীপ্ত পিছনে দেখিয়ে চোখে ইশারা করে বলল,
– ওই যে দুইটা বিচ্ছু!

দীপ্তের কথা শুনে গোধূলির মুখ হা হয়ে গেছে।

– বিচ্ছু!

– দীপ্ত ভাইয়া তুমি আমাদের বিচ্ছু কেন বললে?

দীপ্তের কথা শুনে পিছিনের সিট থেকে আলিফ আলবী রেগে আগুন হয়ে কথা বলল।দুই ভাই মার দেওয়ার ভঙ্গিমায় দীপ্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন দীপ্ত ওদের থামিয়ে দিয়ে বলে,
– আরে আরে এতে তোরা এত রাগ করছিস কেন?বিচ্ছুদের কত পাওয়ার হয় তোরা জানিস!বিচ্ছুদেরকে সবাই অনেক ভয় পায়।

– তাই দীপ্ত ভাইয়া?

– হে তো।কেন তোরা জানিস না?এ বাবা তোদের আজও কেউ এটা বলে নি!

মুখ গোমড়া করে আলিফ আলবী একসাথে বলল,
– না!

– দেখেছিস কান্ড!তোদের যে এত পাওয়ার আছে সেটা তোদের কেউই বলেই নি!দিস ইজ নট ফেয়ার গোধূলি! তুই না ওদের এত ভালোবাসিস তুইও ওদের বলিস নি!

দীপ্তের কথা শুনে অবাকের উপর অবাক হচ্ছে গোধূলি!দীপ্তকে ফিসফিসিয়ে বলে,
– আপনি ওদের এইসব কি বলছেন?

– তুই চুপ থাক।তো বিচ্ছু বাহিনী যাওয়া যাক!

– দীপ্ত ভাইয়া তাও তুমি আমাদের বিচ্ছু ডেকে না!এই নামটার মধ্যে কেমন জানি ভিলেন ভিলেন গন্ধ লাগে!

– তোরা তো দেখছি পাক্কা বিচ্ছু!

– দীপ্ত ভাইয়া আবার!
অনেকটা চিৎকার করে উঠে আলিফ আলবী!

– আচ্ছা যা আর বলবো না।তা এবার যাওয়া যাক গাইস?

গোধূলি কিছুটা ঝাঝালো গলায় বলে,
– তাড়াতাড়ি চলুন।বাকিরা হয়তো এতক্ষণে শপিংমলে চলে গেছে।

– যাচ্ছি তো।এইভাবে বলার কি আছে।একটু ভালো করে তো বলবি!

– আপনি…

দীপ্ত গোধূলির উত্তরের অপেক্ষা না করেই গাড়ি ড্রাইভিং এ করতে শুরু করে।গোধূলি আঙ্গুল উঁচিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছিল কিন্তু না বলেই থেকে যায়।

চলবে……
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here