#তোমার_মাদকতায়_আচ্ছন্ন
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_২০)
তুহার কথা শুনে সকলেই চমকে উঠলো। কথার মা তুহা বলে চিৎকার করে উঠলেন।
– মামিমনি আমাকে চুপ করাতে পারবেন না। আমাকে চুপ করিয়ে রাখলেও আপনি সত্যিটা চাপা দিয়ে রাখতেই পারবেন না।
– কি বলছো এসব তুমি(কথার বাবা)
– হ্যা মামা আমাকে একটা কথা বলূন তো, দিদিভাই এর সাথে জিজুর বিয়েতে দিদিভাই এর কি মত ছিলো।
– হ্যা।
– ভুল জানেন আপনারা। দিদিভাই সাগর বলে একটা ছেলেকে পছন্দ করতো। কিন্তু মামিমনি সবটা জেনে গিয়ে দিদিভাই এর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়েতে রাজি করায়। আর তার পরিনাম সকলেরই জানা।
কথার মা চুপ করে গেছে। সকলের অবাকের শেষ পর্যায়ে চলে গেছে।
-তাহু পাখি কি বলছো এসব।
-হ্যা, আর এটা সত্য কিনা তা মামি মনিকে জিজ্ঞেস করুন।
-মা এসব কি সত্যি (কাব্য)
উনি মাথা নীচু করে আছেন। কিছুই বলছেন না।
– মা চুপ করে থেকো না। দাভাই এর উত্তর দাও(কুহু)
– হ্যা হ্যা সত্যি সত্যি। কথা আকাশের সাথে বিয়েতে রাজি ছিলো না ওর সাগর নামে একটা ছেলের সাথে রিলেশন ছিলো। আমিই জোর করে ওকে বিয়ে দিয়েছিলাম।
কথার মা কাঁদতে লাগলেন। সকলেই কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।
– ছিঃ সাবিনা ছিঃ আমি কখনোই ভাবিনি তুমি আমার বড়ো মেয়ের জীবনটা নিয়ে এইভাবে খেলা করলে আমি কখনোই তোমাকে ক্ষমা করবো না।
– দ্যাখো আমি যেটা করেছিলাম ভালোর জন্যই করেছিলাম কিন্তু কখনোই ভাবিনি এইরকম কিছু হবে।
– তুমি তো আমাকে একবার সবটা বলতে পারতে। বলো কিন্তু তুমি সেটা না করে নিজের সিদ্ধান্ত আমার মেয়েটার উপরে চাপিয়ে দিলে। আবারো আমার ছোট মেয়ের জীবনটা নিয়ে খেলতে চাইছো।
– মামা শান্ত হন। আমি থাকতে কিছুতেই কুহুর বিয়ে ওখানে হতে দেবো না।আর অন্যায়কারীকে শাস্তিও দেবো। আমার উপরে একটু ভরসা রাখুন।
– কিন্তু তুহা তুমি কেন বলছো অন্যায়কারী তোমার কি সন্দেহ হচ্ছে কাউকে।(কাব্য)
– সন্দেহ নয় আমার বিশ্বাস দিদিভাই ভালোছিলো না। দিদিভাই এর উপরে শারিরীক অ/ত্যা/চা/র করা হতো আমি দিদি ভাই এর গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি।
সকলেই চমকে উঠলো। তুহা সবাইকে সবকিছু বললো।
– কি বলছিস এসব তুই।(ফারুক সাহেব)
– হুম। আমার মনে হয় পোস্টমর্টেম রিপোর্টে কিছু একটা গন্ডগোল আছে। নাহলে অদ্ভুত বিষয় ওতে কোনো আঘাতের কথা লেখা হয়নি।
– হ্যা বিষয়টা আমার ও সন্দেহজনক লেগেছে(ফারাবি)
– তাহলে এবার কি করবি তুহা (কথার বাবা)
– আমাদের সিঙ্গাপুর যেতে হবে।
– কেন?
– দিদিভাই এর মৃ/ত্যু/র রহস্য উন্মোচন করতে গেলে ওইখানে যাওয়াটা খুব জরুরি।
– আমিও যাবো (কাব্য)
– ওকে।
কেটে যায় ১৫ টা দিন…
চৌধুরী বাড়িতে সকলেই উপস্থিত হয়েছে আবারো একবার। আজকে কুহু আর আকাশের এনগেজমেন্টের অনুষ্ঠান।
তিশা প্রেগন্যান্ট শরীর খুব খারাপ হওয়াতে এই বাড়িতে আসতে পারেনি। মেধা,মিহা ওর বাবা মা সকলেই উপস্থিত হয়েছে। সকলেই অনেকটা অবাক হয়েছে এইরকম সিদ্ধান্তে।
– দেখলে আমি বলেছিলাম আকাশ বাবা এতটাও খারাপ নয়। কথা হয়তো অন্য কোনো কারনে এই কাজটা করেছে। কিন্তু তুমি শুনলে না,তুহার কথাতে নাচতে শুরু করলে দেখলে তো কি হলো সবটা দেখে তুহা নিজেই এই এনগেজমেন্টের আয়োজন করেছে। (কথার মা)
– এই তুমি চুপ করবে একটু কিছুই তো মাথায় ঢুকছে না।চুপ করে থাকো প্লিজ।(কথার বাবা)
কুহুর মা গজগজ করতে করতে চলে গেলেন।কুহুর বাবা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন। কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না ওনার তবে ফারাবি আর তুহার উপরে অনেকটাই বিশ্বাস আছে।
অন্যদিকে…
কুহু কান্নাকাটি করছে। মেধা আর মিহা মিলে ওকে থামাচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না।
– কুহু বোন আমার প্লিজ কান্না থামা দ্যাখ তুহা আর দাদাই তো কোনো খারাপ করবে না তোর ( মেধা)
– জানি না আমি।
কুহু কেঁদেই চলেছে। কাব্য এসে ওকে জড়িয়ে ধরলো।
– বোন আমার কাঁদিস না। যা হবে সবটাই ভালো হবে। এতটাও উত্তেজিত হস না তুই।
– কি ভালো হবে জিজুর সাথে আমার এনগেজমেন্ট আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না।
– আমিও তো সেটাই বুঝতে পারছি না তুহা হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন নিলো।
– আমার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে।
কুহু কেঁদে উঠলো। সকলেই ওকে বোঝাচ্ছে।
ওদিকে…
– মা কেন এই কাজটা করলে তুমি। কুহু আমার থেকে অনেকটাই ছোট আর তার উপরে ওহ কথার বোন ওর সাথে আমি কিভাবে!
মায়ের কথা শুনে আকাশের মুখে হাসি ফুটে উঠল।
– ঠিকাছে মা আমি রাজি।
জমজমাট সন্ধ্যা কি হতে চলেছে এই সন্ধ্যায়। নতুন কিছুর সূচনা না অন্যকিছু।
আকাশের পরিবার আসলে সকলেই আপ্যায়ন করতে লাগলো। তবে কারোরই মন থেকে সায় নেয় তুহার উপরে ভরসা রেখেই সবাই চলেছে।
– তাহু পাখি আমি জানি না তুমি কি করতে চাইছো। তবে আমার খুব ভয় লাগছে।
– আমার উপরে একটু ভরসা করুন। কুহুর কোনো ক্ষতি আমি হতে দেবো না। আমাকে একটু ভরসা করুন।
– আমি তোমাকে ভরসা করি আর আমি শুধু কেন আমার গোটা পরিবার তোমার উপরে ভরসা করে তাই তো এককথাতেই সবাই রাজি হয়ে গেছে।
– সবার ভরসার মান যেন আমি রাখতে রাখি।
– হুম পারবে।
ফারাবি তুহাকে বুকে জড়িয়ে নিলো। তুহা আর ফারাবি নীচে গিয়ে সবার সাথে কথা বলতে লাগলো।কিছুক্ষন পর কুহুকে নিয়ে আসা হয়।
– এবার তাহলে এনগেজমেন্টের অনুষ্ঠান শুরু করা যাক (আকাশের মা)
– এত তাড়া কিসের একটু অপেক্ষা করুন। এখনো তো সিনেমা চালুই হয়নি। (তুহা)
– মানে?(আকাশ)
– আজকে আমি সকলকে একটা গল্প শোনাবো একটা মেয়ের গল্প।
– এই তুহা কি বলছো তুমি আগে শুভ কাজটা হয়ে যাক তারপরে তোমার নাটক করো(কথার মা)
– না মামিমনি আমি এখনি বলবো।
বাড়ির সব আলো অফ হয়ে যায়। রঙিন আলো জ্বলতে থাকে,তুহা দাঁড়িয়ে থাকা জায়গায়টায় আলোর ফোকাস পড়ছে বারবার।
” গল্পটা শুরু হয় অনেকদিন আগে। একটা শান্ত শিষ্ট মেয়ে ছিলো। মেয়েটি যুবতী স্কুল গন্ডী পেরিয়ে সেই মাত্র কলেজে পা দিয়েছে তখনি তার জীবনে আসে প্রনয়। এক সিনিয়ার যুবকের প্রনয়ে হাবুডুবু খেতে থাকলো,বিষয়টা কোনো এক ভাবেই মেয়েটির মায়ের কানে পৌঁছে যায়, শুরু হয় অত্যাচার, মায়ের দাবি ছেলেটার সাথে কোনো রকম সম্পর্ক রাখতে পারবে না। মেয়েটি ক্রমাগত অত্যাচার সহ্য করে ছেলেটির সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখে, কিন্তু ভাগ্য তার সহায় হলো না, কিছুদিনের মধ্যেই আরেক প্রতিষ্ঠিত ছেলে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসলো তার জন্য, মেয়েটির মা জোর করে মেয়েটির বিয়ে দিয়ে দেয় ছেলেটির সাথে। মেয়েটি মন ভাঙা কষ্টটা নিয়েই স্বামীর ঘরে যায়। কিন্তু ছেলেটি তার মন বোঝনি, মেয়েটি আরো ভেঙ্গে পড়লো কিন্তু নিজের নিয়তিকে মেনে নিয়ে মানিয়ে নিতে শুরু করলো। কপাল এতটাই খারাপ ছিলো যে নিয়তি ও সহায় হলোনা। মাঝে কেটে যায় ২ টো বছর। সম্পর্কটা প্রথমে ভালো চললেও আসতে আসতে অবনতি ঘটতে থাকে।
তুহা একটু থামলো। উপস্থিত কারোরই বুঝতে অসুবিধা হলো না তুহা কার কথা বলছে। তুহার বাকি কথাগুলো শুনে সকলেই নির্বাক হয়ে গেলো।
#তোমার_মাদকতায়_আচ্ছন্ন
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_২১) কথার মৃ/ত্যু রহস্য উন্মোচন
তুহা কথা বলে যাচ্ছে,আর বাকিরা নির্বাক দর্শক কি বলবে কেউবা তো বলার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। তুহা একটু থেমে আবারো বলতে শুরু করলো…
– ভালোবাসা আসলে কতটা সেটা বোঝা যায় স্বার্থের সময়ে। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের স্বার্থ থাকে সন্তান লাভে। কিন্তু দিদিভাই আকাশের স্বার্থরক্ষায় ব্যর্থ হয়ে যায়। দিদিভাইয়ের শারীরিক অক্ষমতার জন্য একটার পর একটা মিসক্যারেজ হতে থাকে। দিদিভাই বড্ড ভেঙ্গে পড়লো আর তার সাথে যুক্ত হয় শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার। আকাশ রীতিমত দিদিভাইয়ের উপরে টর্চার করতে থাকে আর ওনার শাশুড়ি একটা সন্তানের জন্য দিদিভাই এর উপরে মানসিক চাপ দিতে থাকেন। দিদিভাই সবকিছুই সহ্য করে যাচ্ছিল কিন্তু সবকিছুর বাঁধ ভেঙে গেলো যখন জানলে আকাশ অন্য কারোর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। আমাদের বিয়ের আগে আসার আগে দিদিভাই আর আকাশের মাঝে প্রচুর ঝামেলা হয় আর আকাশ দিদিভাই কে মারধর করে।
তুহা চুপ করে যায় চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। সকলেই চুপ করে আছে চোখে পানি,কথার মা পাথর হয়ে গেছেন। মেয়ের জীবনে এতটা কষ্ট ছিলো তিনি কখনোই উপলব্ধি করতে পারেননি। তার করা একটা ভুলের জন্য মেয়েটি আজকে এই পথ বেছে নিলো। উনি কান্নায় ভেংগে পড়লেন।
আকাশের মা কিছু বলতে যাচ্ছিল, তুহা ওনাকে থামিয়ে দিয়ে বলল…
– এখনো অনেককিছু বাকি আছে যেগুলো আকাশ ছাড়া কেউ জানে না কি আকাশ সবটা আমি বলবো না তুমি বলবে।
– আমি কুহুকে বিয়ে করবো না আর না আজকে কোনো অনুষ্ঠান হবে মা চলো এখান থেকে এখানে দাঁড়িয়ে অপমানিত হবার কোনো কারণ আমি দেখছি না।
– আরে জিজুজী কোথায় যাচ্ছেন। এখনো তো আসল সত্যটা বাকি আছে(তুহা)
– আবার কি সত্যি তাহু পাখি ( ফারাবি)
– আমরা যা যা জানি সবটাই তো আংশিক সত্য। আসল ঘটনা তো অনেক বাকি, সবথেকে বড়ো সত্যি হলো তো এটাই যে দিদিভাই সু/ই/সা/ই/ড করেনি ওকে খু/ন করা হয়েছে।
কথাটা বজ্রপাতের ন্যায় সকলের মাথার উপরে ভেঙে পড়লো। আকাশ রীতিমত ঘামছে।
– এসব কি বলছিস তুহা মা আমার কথাকে খু/ন করা হয়ছে।
– হুম মামা আর এই কাজটা করেছে এই আ/কা/শ।
– আমি কিছুই করিনি আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।
– আমি মিথ্যা কথা বলিনা আমি যেটা বলছি তার যথেষ্ট প্রমান আছে আমার কাছে।
– কি প্রমান আছে তোমার কাছে।
– প্রমান তো পরে দেখাবো তার আগে তোমার কর্মকাণ্ড গুলো সবাইকে বলি.. সেইদিন রাতে দিদিভাই আর আকাশের মাঝে প্রচন্ড রকমের ঝামেলা হয়, আকাশ দিদিভাইয়ের কে ডির্ভোস দিতে পারছেন না শুধু মাত্র ওনার বাবা মায়ের জন্য। ওনারা চাইতেন দিদিভাইয়ের সাথেআকাশ থাকুক আর এই চৌধুরী বাড়ির সম্পত্তির ভাগ পাক। কিন্তু আকাশ আর সহ্য করতে পারছিলো রাগে দিদিভাই কে শে/ষ করে দেয় আর ঘটনাটি একটা আ/ত্ম/হ/ত্যার রূপ দেয়। বাকিটা সবাই জানি। আর ওনারা সম্পত্তির লোভে পরেই এই বাড়িতে আবারো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসেন।
তুহা বলা শেষ করে একটা ডাইরি আনলো। ডাইরিটা দেখে আকাশ চমকে উঠলো। এটা তো কথার ডাইরি।
– এটা কার ডাইরি তুহা (কাব্য)
– এটা দিদিভাই এর ডাইরি আর সবকিছু তথ্য এখান থেকেই আমি পেয়েছি। অফিসার ওনাদের নিয়ে যান।
আকাশ ও ওর বাবা মা কে নিয়ে যাওয়াহয়।যাবার আগে আকাশের বাবা সকলের কাছে ক্ষমা চাই…
– আমাকে মাফ করে দেবেন। আমি কখনোই কথাকে নিজের বউমা ভাবিনি সবসময় মেয়ে ভেবে এসেছি। আর সত্যি বলতে আপনাদের সম্পত্তির উপরে আমার লোভ ছিলো না কখনোই আল্লাহ আমাকে অনেক দিয়েছে তবে আমি একটা অন্যায় করেছি আর তার প্রায়শ্চিত স্বরূপ আমি অন্যায় স্বীকার করছি।
– অফিসার ওনাকে ছেড়ে দিন। উনিই আমাকে সাহায্য করেছেন সত্যি টা জানার জন্য।
– ম্যাম ওনি যেহেতু এই কেসের সাক্ষী তাই ওনাকেও থানায় যেতে হবে। বাকিটা কোর্ট ঠিক করবে।
– তুহা মা আমাকে বাঁচিয়ো না।কথার মতো একটা প্রানকে আমি বাঁ/চা/তে পারিনি আমার শাস্তি তো প্রাপ্য বলো। অফিসার চলুন।
সকলেই কান্নাকাটি করছে। কথার মা তো ওনার কাজের জন্য ক্ষমা চাইছেন।
– তোমার একটা জেদ আমার বড়ো মে এর জীবনটা শেষ করে দিলো আমি কখনোই তোমাকে ক্ষমা করবো না।
সাবিনা বেগমের থেকে সকলেই মুখ ফিরিয়ে নেয়। ওনার একটা ভূল সিদ্ধান্ত আজ সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। সকলেই আঘাতটা দিতে পারেনি তীব্র ঘৃনা জন্মেছে আকাশের প্রতি।
তুহা নিজের ঘরে হাতে একটা কাগজ নিয়ে বসে আছে। ফারাবি ওর কাঁধে হাত রেখে বললো…
– কি দেখছো তাহু পাখি।
তুহা কিছু না বলে কাগজটা আগিয়ে দিলো। ফারাবি ভ্রু কুঁচকে পড়তে শুরু করলো…
” আমার ভাগ্য আমার সাথে এন এতটা নির্মম হলো।
আমি তো সবকিছু ভুলে আকাশকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলাম। আমি তো নতুন করে সংসার সাজাতে চেয়েছিলাম কিন্তু কি হলো আচ্ছা সংসারে সন্তানই কি আসল, নিজের র/ক্ত থাকতেই হবে। কেন একটা অনাথ শিশুকে আঁকড়ে ধরে সংসারটা সাজানো যায় না। আমি অনেকবার আকাশকে বলেছি কিন্তু আকাশ আমাকে অত্যাচার করেছে। আকাশ একটা মেয়েকে ভালোবাসে একদিন তো আমাকেও পছন্দ করে বিয়ে করে এনেছিলো আজ সেই ভালোবাসা কোথায়। আজকে অন্য একটা মেয়ের জন্য আকাশ আমাকে মে/রে ফে/ল/তে চাইছে।আমি জানি আমি বেশিক্ষণ বাঁ/চ/বো না ।ওই পশুটা আমাকে বাঁ/চ/তে দেবেনা। নিজের মনের অব্যক্ত কথাগুলো লিখে গেলাম জানি না কখনো কেউ এই কথাগুলো পড়বে কিনা তবে আমার একটাই শেষ চাওয়া আমার মতো ভাগ্য আর কারোর না হয়। ”
_কথা।
ফারাবি স্তব্দ হয়ে গেলো। কথা ফারাবির খুব আদরের ছিলো। কথার শেষ চিঠিটা পরে ফারাবি কাঁদতে লাগলো। তুহা ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো।
– তাহু পাখি এইটা হবার কি খুব দরকার ছিল।
– হয়তো দরকার ছিলো, হয়তো দিদিভাই এর অনুপস্থিতি আমাদের কেমন পোড়ায় না দেখার ছিলো। কিন্তু ভাগ্য চাইলেই কখনোই দিদিভাই কে পাবো না।
শুরু হলো নতুন একটা সকাল,,,
আগের মতো প্রানচ্ছল পরিবেশ নেয় চৌধুরী বাড়িতে কিরকম একটা গুমোট পরিবেশ হয়ে আছে। সবাই যেন যান্ত্রিক মানুষ। সকলেই কথার জীবনের নির্মম পরিহাস জানার পর হাসিটা হারিয়ে ফেলেছে।
সময়ের সাথে মানুষও বদলে যায়। সকলেই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে নিজেদের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তবে সাবিনা বেগমের সাথে কারোরই আর তেমন সম্পর্ক নেয়। কথার মৃ/ত্যু/র জন্য সকলে ওনাকেও দায়ী করে। আকাশের বাবাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আকাশের মা কাজগুলোর সাথে যুক্ত থাকার জন্য ওনাকেও শাস্তি দেওয়া হয়েছে আর আকাশের জে/ল হয়েছে।
কাব্য অফিসের কাজে একটা হোটেলে এসেছে। অপেক্ষা করছে ক্লাইন্টের জন্য অপেক্ষা করছে এমন সময় কোথা থেকে একটা মেয়ে ওর সামনে এসে বসে পড়লো…
– তুমি এখানে।
– কেন অন্য কাউকে আশা করেছিলেন নাকি।
– সেটা তোমাকে বলবো কেন। যাও এখান থেকে।
– যাবার জন্য তো আসিনি। চুপচাপ বসে থাকুন আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
– আমার কাজ আছে আমি এখানে একটা মিটিং এ এসেছি।পরে কথা বলি তোমার সাথে।
– না আমার এখুনি দরকার ।
– আরে আমার সাথে পরে কথা বলছি,প্লিজ সিনক্রিয়েট করো না।
– ওকে।
খুশি মন খারাপ করে চলে যায়। কাব্য নিজের মিটিং শেষ করে খুশির কাছেগিয়ে বললো…
– বলো। কি বলবে।
খুশির কথা শুনে কাব্য চমকে উঠলো,
#চলবে…