ঘর বাধার স্বপ্ন পর্ব -১৩

#ঘর_বাধার_স্বপ্ন
#আরোহী_ইসলাম
#পর্ব:১৩

——-
ওয়াশরুমের ভিতরে গোসল করতেছে অবনি হঠাৎ মাথায় হাত দিয়ে ঠোট কামরে বললো ‘ ওহ গড জামা কাপড় আনতেই তো ভুলে গিয়েছি এখন কি হবে?
অবনি এইগুলো বলতেছে ঠিক সে সময় ধ্রুব ওয়াশরুমের দরজার সামনে এসে বললো’ এই নে তোর জামা।’

অবনি ধ্রুবের কথা শুনে আস্তে করে দরজা খুলে হাত বের করে বললো’দেও।’ ধ্রুব দুষ্টু হেসে ওয়াশরুমের ভিতরে চলে এসে দরজা আটকে দিলো। অবনি ধ্রুবের কাজ দেখে অবাক হয়ে বললো
‘ তুমি এইখানে এলে কেনো? আমি গোসল করতেছিলাম তো?

ধ্রুব অবনি কথায় নেশা ময় চোখে চেয়ে বললো’ আমার সাথেও আবার করবি, এই বলে ধ্রুব অবনির দিকে এগোতে লাগলো। ধ্রুবকে নিজের দিকে আসতে দেখে অবনি ভিতু চোখে ধ্রুবের দিকে তাকালো। ধ্রুব অবনির কোমরে হাত রেখে নিজের কাছে এনে অবনির ঠোটে ঠোট ডুবিয়ে দিলো। অবনি চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে। দশ মিনিট পর ধ্রুব অবনির ঠোট ছেড়ে দিতেই অবনি শ্বাস নিতে নিতে ধ্রুবের দিকে চোখ রাঙিয়ে বললো ‘ কি করছেন কি আর একটু হলেই আমি ম, আর কিছু বলার আগেই ধ্রুব অবনির ঠোটে হাত দিয়ে থামিয়ে দিলো। অবনি লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে। অবনির লজ্জা মাখা মুখ দেখে ধ্রুব মুচকি হেসে অবনির চোখে নিজের ঠোট ছুয়ে দিলো। অবনি কেপে উঠে ধ্রুবের হাত খামছে ধরলো।ধ্রুব মিটমিট করে হেসে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে গেলো।

রাতের বেলায়
” অবনি ধ্রুবকে বললো ‘ধ্রুব চলো আমার সাথে।’
ধ্রুব বললো কোথায়?
অবনি ধ্রুবের হাত ধরে নিলিমার রুমের সামনে আসতেই রুম থেকে নিলিমার কথা শুনতে পেলো।

এদিকে
নিলিমা হোহো করে হেসে তার মাকে বললো’ আম্মু অবনি কতটা বোকা যে আমাদের বানানো কথা বিশ্বাস করে নিলো। ও জানে না যে ওকে আমরা আমাদের গুটি হিসেবে ব‍্যবহার করতেছি।’

নিলিমার মা চিন্তিত কন্ঠে বললো’ আমাদেরকে সাবধানে থাকতে হবে। ও তো জানে না যে আমরাই ওর বাবাকে খু’ন করেছি। ওই ভিডিওটা ফেক ছিলো।

নিলিমা কৌতূহল নিয়ে তার মাকে বললো
‘ আম্মু তুমি কেনো নিজের ভাইকে খু’ন করলে?

নিলিমার মা শয়তানি হেসে বললো
‘ অবনির বাবার নামে আমার বাবা সব সম্পত্তি লিখে দিয়েছে কারন তাকে সে অনেক ভালোবাসে। ধ্রুবের বাবাকে কিছু দেয়নি কিন্তু ওর এই নিয়ে কোনো মাথা ব‍্যথা ছিলো না। ও অবনির বাবাকে অনেক ভালোবাসতো। আমার এই সম্পত্তি লাগবেই এই সব সম্পত্তি আমি পেলে অনেক বড়লোক হয়ে যাবো এবং অনেক অনেক টাকা আমাদের হাতের মুঠোয় চলে আসবে।

নিলিমা এইবার সব বুঝতে পারলো কেনো তার মা এই রকম কাজ করতেছে। অবনি আর ধ্রুব সব কথা রেকর্ড করে নিলো। ধ্রুব অবাক হয়ে অবনিকে বললো’ এইগুলো কি বলতেছে ফুপি?

অবনি ধ্রুবকে নিয়ে রুমে এসে দরজা আটকে বললো’ যা শুনেছো তা সত্যি।

ধ্রুব অবনির দিকে তাকিয়ে বললো’ তুই সব জানতি?

অবনি দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললো
‘ হ‍্যাঁ।’

‘এখন কি করবি?

অবনি ধ্রুবকে জড়িয়ে ধরে বললো
‘ সবটা আমার উপরে ছেড়ে দাও। তুমি শুধু আমার প্রতি বিশ্বাস রাখিও।’

ধ্রুব অবনিকে বললো’ ইনশাআল্লাহ।’

পরের দিন
অবনি ড্রয়িং রুমে বসে আছে। ফুপি এসে অবনিকে বললো’ অবনি ধ্রুবকে নিয়ে ভেবেছিস কিছু?

অবনি ফুপির দিকে তাকিয়ে বললো’ হুম। আজ বাড়িতে তো কেউ নাই শুধু ধ্রুব আমি আর তোমরা বাদে। আম্মু, আফিহা, আবিদ ভাইয়া, ধ্রুবের মা,দাদি সবাই তো এতিমখানায় গেছে কিছুক্ষন আগে।’

নিলিমার মা বললো’ এই সুযোগে তুই ওকে মে’রে ফেল।’
কথার মাঝেই আফিহা চলে এসে ভ্রু উলটে বললো কাকে মা’রবে?

নিলিমার মা তোতলাতে তোতলাতে বললো’ কাকে মারবো? কাউকে না তুমি ভুল শুনেছিস।’

আফিহা সন্দেহ চোখে নিলিমার মায়ের দিকে তাকিয়ে অবনির দিকে তাকিয়ে বললো’ কি হচ্ছে আপু?

অবনি বললো’ কিছু না। তুই যাসনি?

‘ কোচিং ছিলো দেখে যায়নি।’

অবনি আফিহাকে জড়িয়ে ধরে বললো’ কিউট বোন আমার। তারপর দুইবোন হেসে দিলো।

অবনি রুমে এসে দেখে ধ্রুব ঘুমিয়ে আছে বাচ্চাদের মতো অবনি ধ্রুবের মুখের দিকে তাকালো।

কিছুক্ষন পর
নিলিমা অবনিকে বললো’ তুই এখনই ধ্রুবের সাথে কথা বলবি না বেশি ওকে। ওর থেকে দূরে থাকবি। ভুলে যাস না ও কিন্তু খু’নির ছেলে।’

অবনি আস্তে করে বললো’ কে খু’নির ছেলে আর কে না সেটা আমি জানি এখন শুধু তোমাদের জেলে পাঠানোর টিকিট কাটতে হবে।’

অবনের অস্পষ্ট কথা নিলামা শুনতে পেলো না।নিলিমা সন্দেহ চোখে অবনির দিকে তাকিয়ে বললো’ কি বললি?

অবনি বললো’ না কিছু না।’
‘তারপর অবনি রুমে এসে দরজা আটকে দেখে ধ্রুব রুমে দাঁড়িয়ে আছে। অবনি রুমে এসে রেগে চেচিয়ে ধ্রুবকে বললো ‘ হিসেবে বরাবর হবে বুঝতে পারছেন আপনি? যা করেছেন তার ফল পেতে হবে আপনাকে।’

ধ্রুব শান্ত কন্ঠে অবনির হাত ধরে বললো’ রিলাক্স অবনি, আমরা বসে কথা বলছি। তুমি রাগ করো না।’

অবনি এক ঝটকা দিয়ে ধ্রুবের হাত সরিয়ে বললো
‘ আমি রাগ করবো না? এটা আমার রাগ না। আপনি এখানো আমার রাগ দেখেননি। আমি, আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই পা পিচলে ঠাস করে ধ্রুবের উপরে পরে গেলো। ধ্রুব অবনির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। অবনি দাঁড়িয়ে ধ্রুবের দিকে তাকিয়ে পুনরায় আবার চেচামেচি করে বললো’ আমি আজ মোটেও চুপ থাকবো না। আমি যদি চুপ হয়ে যায় তাহলে

ধ্রুব ভ্রু কুচকে বললো ‘ তাহলে কি? অবনি ধ্রুবের কানের কাছে এসে আস্তে করে বললো’ তাহলে নিলিমা সন্দেহ করবে।’

”এইদিকে ধ্রুবের পাশের রুমেই নিলিমা থাকে। নিলিমা বিছানায় বসে ধ্রুব আর অবনির ঝগড়া দেখতেছে আর হাসতেছে”

অবনি ধ্রুবের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বললো’ আপনি আমায় চুপ করাতে পারবেন না আজ।’

ধ্রুব রাগের ভান করে বললো’ আমি অবশ্যই চুপ করাতে পারবো। এইভাবে কেউ স্বামীর সাথে কথা বলে?

অবনি ধ্রুবের কথার উত্তর না দিয়ে টি টেবিল থেকে ফুলদানি হাতে নিয়ে ধ্রুবের দিকে আসলো।
ধ্রুব বললো’ এইটা তুলছিস ভাঙবি বলে?

অবনি বললো’ এই মূহুর্তে আমার কাউকে বারি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিতে ইচ্ছে করতেছে।’ এই বলে অবনি ফুলদানিটা ছুড়ে মারলো ফ্লোরে। ধ্রুব রেগে পাশের ফুলদানি এনে ছুড়ে মেরে বললো’ তুই শুধু একাই ভাঙতে পারিস নাকি? আমি পারিনা।’

অবনি চিৎকার করে বললো’ তুমি একটা এ‍্যানাগোন্ডা, ইদুর তোমাকে আমি শেষ করে দিবো।’

ধ্রুব অবনির কাছে এসে অবনিকে জড়িয়ে ধরে বললো’ শান্ত হও আমার উগ্রচন্ডী। কান ফেটে যাচ্ছে আমার। ওয়াশরুমে চলো ওইখানে গিয়ে কথা বলছি আমরা।’

অবনি রেগে বললো ‘ আপনি একটা পচা। আপনাকে পচা টমেটো ছুড়ে মা’রা উচিত।’ধ্রুব অবনির হাত ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে আসলো। ধ্রুব অবনিকে বললো’ কি হয়েছে?

অবনি ধ্রুবকে বললো’ নিলিমা তোমাকে মা’রার জন্য বলছে। আর তোমার সাথে যেনো কথা না বলি খারাপ আচরণ করি।’

ধ্রুবের প্রচন্ড রাগ হচ্ছে নিলিমাদের উপরে। ধ্রুব বললো’ এখন কি তুমি আমার সাথে কথা বলবে না?

অবনি শান্ত চাহনিতে বললো’ না বলবো না।’ ধ্রুব রেগে বললো’ মানে আমি কি আমার বউয়ের সাথে কথা বলতে পারবো না আশ্চর্য।’

অবনি হেসে বললো’ আরে রেগে যাচ্ছো কেনো? এই কিছুদিন তুমি রুমের বাহিরে বেশি একটা কথা বলবে না।’

ধ্রুব ঠোট উলটে বললো’আচ্ছা।’

সকালবেলায়
‘ অবনি ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখে ধ্রুব তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। অবনি তা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে উঠতে যাবে ধ্রুব অবনির শাড়ি টান দিয়ে বললো’ আরেকটু ঘুমাও না।’

অবনি মুচকি হেসে বললো
‘ অনেক বেলা হয়ে গেছে আমাকে এখন উঠতে হবে।’

ধ্রুব অবনির দিকে তাকিয়ে বললো ‘ এতো ভোরে উঠে কি করবে?

অবনি কিছুটা একটা ভেবে বললো’ কাজ আছে ছাড়ুন তো আমায়।’ এই বলে অবনি উঠে ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বের হলো। অবনি ড্রয়িং রুমে এসে সবার জন্য রান্না করতে লাগলো। নিলিমা রান্নাঘরে এসে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে অবনির হাতে একটা ওষুধ দিয়ে বললো ‘ এইটা ধ্রুবকে খাইয়ে দিবি ঠিক আছে?

অবনি চুপ করে রইলো। নিলিমা এই বলে চলে গেলো। তারপর অবনি ওইটা ফেলে দিয়ে মুচকি হেসে সবাইকে খাবার বেড়ে দিলো। অবনি নিলিমার মাকে বেশি বেশি করে খাবার দিলো। অবনি মনে মনে রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো,,

#চলবে…
( ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। কেমন হয়েছে জানাবেন। গল্পটা কিন্তু শেষের দিকে। হ‍্যাপি রিডিং।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here