প্রেয়ন পৃথুর প্রেমসুতা পর্ব -০৭+৮+৯

#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো
#পর্ব_০৭
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

প্রেয়ন বাসায় এসে ঘরে গিয়ে পৃথুলা কে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে চুপচাপ ওয়াসরুমে চলে যায়।
বেরিয়ে এসে দেখে পৃথুলা কিছুটা কাঁপছে।
প্রেয়ন তার কাছে গিয়ে মাথায় হাত দিতে বুঝতে পারে তার জ্বর আসছে।
কিন্তু হটাৎ এভাবে জ্বরের কারন কি।
প্রেয়ন পৃথুলাকে ডাকতে লাগলো,
–পৃথু এই পৃথু।
পৃথুলা আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকালো,
–হু। (আদো শুরে)
–খারাপ লাগছে পৃথু।
–হু। (আদো শুরে)
–আম্মু আম্মু আম্মু জলদি এসো।
প্রেয়নের চিৎকার শুনে নায়লা বেগম দৌড়ে প্রেয়নের রুমে এলেন,
–কি হইছে।
–মা পৃথুর জ্বর আসছে,
–কি বলিস একটু আগেও তো ঠিক ছিলো।
নায়লা বেগম পৃথুলার মাথায় হাত দিতে চমকে উঠে।
গা পুরে যাচ্ছে।
–কি রে প্রেয়ন এমন কি করে হলো।
–জানি না মা আমি তো বাসায় ছিলাম না।
–দেখি তুই ডক্টর কে ফোন দে।
প্রেয়ন ডক্টর কে ফোন দিলো।
কিছু সময় পর ডক্টর চলে আসে,
–ওনার জ্বর ১০৩°;
না কমলে হসপিটালে ভর্তি করতে হবে।
সমস্যা হলো কি করে ওনার জ্বর সাভাবিক না।
আপনাদের ওনার থেকে দুরে থাকা ভালো।
–আপনি কি পাগল ডক্টর আমার স্ত্রী অসুস্থ আর আপনি দুরে থাকতে বলছেন।
–মি.খান আমি ওনার নমুনা নিয়ে গেছি পরিক্ষা করতে পাঠিয়ে দিবো আজ।রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত দুরত্ব বজায় রাখা ভালো।
–প্রেয়ন ডক্টর যা বলছে তাই কর (নায়লা বেগম)
–মা তুমিও ওনার মতো পাগল হইছো নাকি।
করোনা হতে হলে জ্বর না শুধু কাশি,শ্বাস কষ্ট ও লাগে।
–ডক্টর আমি না আপনি মি.খান
–মানছি আপনি ডক্টর কিন্তু ওর এখন সেবার প্রয়োজন নাকি আমাদের দুরত্বের।
–মিসেস.খান আপনি দেখুন আপনার পরিবার কে আপনি কি করে বাঁচাবেন।
আমর বক্তব্য আমি দিয়ে দিছি।
আমাকে অনুমতি দিন।
আর ওনাকে কিছু দিন হোমকরেন্টাইন এ রাখুন। ওনার কাছ থেকে দুরে থাকুন।
–ওকে ঔষধ তো দিবেন ডক্টর
–দেখুন করোনার ঔষধ এখনো বার হয় নি।
–প্রেয়ন ওনাকে এগিয়ে দেও,
–না না আমি যাচ্ছি আপনারা বরং কি করবেন সেটার জন্য পরামর্শ করুন৷
ডক্টর বেরিয়ে এলেন।

বাইরে,
–মি.নীল আপনি যা বলেছেন তাই করেছি।
–ধন্যবাদ ডক্টর আপনার পেমেন্ট কি আপনি পেয়েছেন।
–জি। তবে অর্ধেক।
–নীল চৌধুরী কখনো বাকি কাজ করে না বাকি পেমেন্ট তুমি বাইরে বেরোতেই পেয়ে যাবে।
— অনেক ধন্যবাদ। কখনো প্রয়োজন হলে বলবেন। কিন্তু মি.নীল আমি বুঝলাম না পৃথুলা আপুর সাথে আপনার কি শত্রুতা।
–শত্রু মিত্র আমার কিছুই নেই ডক্টর আপনাকে দরকারের জন্য যা বলেছি তা করেছেন তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। বাকি আমার দায়িত্ব।
ফোন কেটে দিলো,
–আমি আসছি প্রেয়ন খান ।
আমার আগমন তেমার জীবনকে তচনচ করতে বাদ্ধ।
আর একটা কথা যা আমার নয় তা কারোর নয়।
কথাটা বলে বিকট হাসিতে মেতে ওঠে নীল।

–প্রেয়ন চল বাবা।
–না মা তুমি এটা বলতে পারো না ওকে এভাবে রেখে আমি পারবো না যেতে।
–প্রেয়ন চল তুই। আমার কছম তোকে তুই পৃথুলার কাছে থাকবি না।
মায়ের কথায় প্রেয়ন পাথর হয়ে গেল। নয়লা বেগম ছেলেকে টেনে নিয়ে গেলেন প্রেয়ন কে।
এদিকে পৃথুলার অবস্থা প্রচুর খারাপ হতে শুরু করেছে।
প্রেয়ন বাইরে থেকে দেখতে পাচ্ছে পৃথুলা ঠক ঠক করে কাপছে৷
কোন পদক্ষেপ না নেবর জন্য জ্বরের বেগ বাড়তে আছে।
এদিকে পৃথুলাকে আঁটকে চাবি রেখে দিয়েছে নায়লা বেগম।
স্বাভাবিক এমনি হবার কথা ছিলো। জীবন যেখানে যাকে যে শাস্তি দেয়।
কেয়ামতের আলামত পৃথিবীতে বিস্তার করেছে।
জানালার কাচে ভেতরে দেখা যাচ্ছে তাকে।

দিন গড়িয়ে রাত হলো।
পৃথুলার অবস্থা এখন পুরোই খারাপ।
পানির পিপাসা পেয়েছে তার। সমানে পানি পানি বলে চলেছে।
বাইরে থেকে সেটা প্রেয়ন শুনতে পাচ্ছে কিন্তু মায়ের জন্য কিছুই করতে পারছে না।
কি করবে? এক দিকে মা অন্য দিকে পৃথুলা।
পৃথুলা পানির জন্য অকুতি সমানে বেড়েই চলেছে।
চোখ খোলার মতো শক্তি তার নেই।
না আছে বিছনা ছেড়ে ওঠার।
বাইরে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারতেছে প্রেয়ন সব।
পৃথুলার এক একটু আকুতি প্রেয়ন এর হৃদয়ে এক একটা ক্ষতের সৃষ্টি করছে।
–মা অনেক হইছে মরি ওকে নিয়ে মরবো না হলে এক সাথে বাঁচবো তুমি ওর কাছে যেও না।
কথাটা বলেই প্রেয়ন দরজা ভেঙে দেয়।
–প্রেয়ন বাবা,
–না মা কাছে এসো না আমার স্ত্রী এর করোনা আছে তোমাদের সমস্যা হবে।
প্রেয়ন কথাটা বলেই পৃথুলার কাছে গিয়ে পানি ধরলো।
জ্বরের জন্য কোন ঔষধ দেওয়া হয় নি তাকে।
নিচে গিয়ে খাবার এনে নিজের মতো ঔষধ দিয়ে দেয়।
জ্বর তখনো কমে নি।
ঔষধ দিয়ে মাথায় জল পট্টি দিচ্ছে।
–পৃথু আমাকে ক্ষমা করে দে আমার জন্য তোকে এতো সময় এতো কষ্ট সহ্য করতে হইছে।
তুই চিন্তা করিস না কাল অন্য ডক্টর আসবে আমি জনি তোর কিছু হয় নি পৃথু।
কিছু হয় নি তোর।

বাইরে থেকে এমন দৃশ্য দেখে নায়লা বেগম চোখের পানি মুছতেছেন।
–সত্যি পৃথুলা তোকে আমার ছেলেটা অনেক ভালোবাসে। হে আল্লাহ এমন কিছু শুনিও না যাতে আমার পরিবারের কোন ক্ষতি হয়৷
–কি গো পৃথুলার নাকি জ্বর (আরিফ খান প্রেয়নের বাবা)
–হ্যাঁ গো।
–তো এখানে কি করছো ওর কাছে চলো।
–না।
–কেন.?
–ডক্টর বলেছে ওর করোনা হইছে।
–ওর কি শুধু জ্বর।
–হুম।
–তাহলে কি করে করোনা হলো। আজব কে বলেছে।
–ডক্টর বলেছে আমি প্রেয়ন কে দুরে রেখেছিলাম কিন্তু পৃথুলার অনেক পানি পিপাসা পেয়েছে ওকে আর ধরে রাখতে পারি নি।
–তুমি কি পাগল নায়লা মানলাম ওর করোনা হইছে তার মানে তুমি মেয়েটাকে একটা ঘরে বন্দি রেখে দিবা।
–তা কি করবো।
–অমানুষ তুমি।
–কি বলছো,
–কি বলব আর এর থেকে বেশি।



–পৃথু
–হু,
–খারাপ লাগছে।
–পানি খাবো।
–কষ্ট হচ্ছে।
–অনেক মাথা ব্যাথা করছে।
–একটু পর ঠিক হয়ে যাবে পৃথু তুই চিন্তা করিস না পৃথু।
–হু।
প্রেয়ন পৃথুলার কপালে ভালোবাসা একে দেয়।
শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার প্রিয়সি কে যেন ছেড়ে দিলেই হাওয়া হয়ে মিলীন হয়ে যাবে।

চলবে,#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_০৮
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
রাত গভীর হচ্ছে পৃথুলার অবস্থা খারাপ হচ্ছে।
প্রেয়নের বুকের মাঝেই পৃথুর জ্বর ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
প্রেয়নের হাতে কিছু নেই।
জ্বরের তাপ সহ্য কারার মতোন না।
প্রেয়ন উঠে পৃথুলার কপালে লবন পটি দিতে শুরু করলো।
–পৃথু এই পৃথু।
পৃথুলার সেন্স নাই।
–হে আল্লাহ এই রাতটা ওকে একটু সুস্থ করো আমি সকালেই ওকে নিয়ে হসপিটালে যাবো।
পৃথুলার অবস্থা সহনশীল নয়।
প্রেয়নের ভয় বেড়ে চলেছে।
এভাবে রাত কাটলো৷
কেউ ঘুমালো না রাতে।
সকালে সূর্য উদয় হতেই প্রেয়ন পৃথুকে নিয়ে বের হয়।
–প্রেয়ন ওর অবস্থা কি? (প্রেয়নের বাবা)
–কাছে এসো না বাবা পৃথুর বোধহয় করোনা আছে কাছে এসো না।
–বাবা তোর মায়ের কথায় কষ্ট,
–বাবা ওর অবস্থা ভালো না আমি হসপিটালে যাচ্ছি পারলে দুয়া করো।
প্রেয়ন পৃথুলাকে পাজকোলে নিয়ে গাড়িতে করে হসপিটালে আসে,
–ডক্টর. আসিফ
–মি.খান আপনি এখানে। আমাকে ফোন করতেন আমি আসতাম।
–আসার প্রয়োজন নেই আমার স্ত্রী এর জ্বর প্রচুর।
–ওনাকে এদিলে আনুন।
পৃথুলাকে শোয়ানো হয়।
ডক্টর চেকাপ করে,
–মি.খান কতো দিন থেকে জ্বর।
–কাল থেকে।
–কি বলেন কোন ব্যাবস্থা নেন নি।
–ওর কি করোনার লক্ষন।
–এক দমি না৷ জ্বরের জন্য করোনা কেন হবে। ও বুঝলাম করোনার ভয়ে কি ওনাকে সারা রাত ভুগিয়েছেন।
মোটেও ঠিক করেন নি ওনার অবস্থা এতে অনেক খারাপ হয়েছে।
আমি ওনাকে কেবিনে সিফট করছি।
প্রেয়নের মাথায় রাগ উঠে যাচ্ছে।
কেন ডক্টর কাল এমন করলো।
এদিকে পৃথুলাকে কেবিনে সিফট করা হয়।
ডক্টর ঔষধ দেয়৷
জ্বর নিয়ন্ত্রণ এ আসবে কিন্তু দেরি হবে।
–মি.খান ওনার পাশে আপনাকে প্রয়োজন। ওনার কাছে জান।
–অবশ্যই।
–আর একটা কথা৷
–জি।
–দেখুন জ্বরের মানে করোনা নয়। ওনার জ্বর অতিরিক্ত বেড়ে গেছে এই জন্য কাল কোন প্রকার ব্যাবস্থা নেন নি তাই।
দয়া করে আর এমন করবেন না।
–জি আচ্ছা।
প্রেয়নের মনে মনে আগুন বইছে।



–স্যার আমি তো কাজ করে এসেছিলাম কিন্তু মি.খান মিসেস.খানকে খুব ভালোবাসেন।
–ভালোবাসা হ্যাঁ ওদের ভালোবাসার জন্য এখন আমার প্লান ভেস্তে গেল।
রাখুন আপনি অকম্মা।
–বস খান বাড়ি থেকে সকলে মি.খানকে তার স্ত্রী এর সাথে বের হতে দেখা গেছে।
–হুম তোরা যা।
নীলের প্লান বেস্তে দিয়ে কোন দেশের সুখ অর্জন হবে না মি.প্রেয়ন।
আমি তোর থেকে আমার সব নিয়েই তবে ছাড়বো।



–পৃথু।
–জি।
–এখন কেমন লাগছে।
–মাথা ভার।
–কি খাবি বল তো।
–কিছু খাবো না।
–কিছু খেতে হবে।
–পেয়ারা খাবো।
–পেয়ারা ভাতে কি খাবি তাই বল।
–জানি না।
–আচ্ছা আমি নিয়ে আসছি দেখ।
প্রেয়ন বাইরে গিয়ে খাবার নিয়ে আসে সাথে পেয়ারা।
–উঠ খাইয়ে দি।
প্রেয়ন পৃথুলাকে খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দিলো।
এরি মধ্যে প্রেয়নে ফোনে ফোন আসে।
–আসসালামু আলাইকুম মা।
–পৃথুলা কেমন আছে।
–এখন আছে ভালোই ভয় নেই মা আমার স্ত্রী এর করোনা হয় নি।
–আল্লাহ মালিক।
আমি আসছি।
–না মা দরকার নাই।
–কেন?
–আমার স্ত্রী এর না হয় অন্য কারোর থাকতে পারে তুমি এসো না আমি আসবো কাল বাসায়।
–বাবা তুই রেগে আছিস।
–না মা রাগবো কেন?
–পৃথুলার খেয়াল রাখ।
–হুম।

–মাকে আসতে কেন বারন দিলেন?
–তোমায় বলতে হবে(রেগে)
–না সরি (মুখ ভার করে)
–পেয়ারা খেয়ে নেও পৃথু৷
–দিন (খুশি হয়ে)
পৃথুলার ছোট ছোট ব্যাপারে খুশি হয়।
তা দেখে প্রেয়ন যেন পৃথুলার থেকে বেশি খুশি হয়।
ভালোবাসা এমনি হয়।
ভালোবাসার মনুষের মুখের হাসি হয় অন্য জনের ভালোলাগার কারন৷

–পৃথু৷
–জি৷
–আরো কিছু খাবি।
–আর কতো।
–একটু তো খাইলি।
–কই খাইছি তুমি বসো রাইমাকে ফোন দিবেন কথা বলি।
–হুম নেও।
–তার দরকার নেই রাইমা এই যে।
–কিরে পিচ্চি তুই এখানে।
–হ্যাঁ তুমি অসুস্থ আমি আসবে না আপুনি।
–তোমরা বসো আমি একটু কাজ শেরে আসছি (প্রেয়ন)
–আচ্ছা।
রাইমা, পৃথুলার খেয়াল রাখলো ততক্ষণে প্রেয়ন তার কাজ শেষ করে এলো,।


–আচ্ছা ভাইয়া আপু এখন আসতে হবে।
–আচ্ছা সাবধানে যাস।
–আচ্ছা।
রাইমা চলে আসে।।
–আজ রাস্তা ফাঁকা নাকি।
রাইমা কথা বলতে বলতে আসছে নিচের দিকে তাকিয়ে জামা ঠিক করতে করতে।
হটাৎ একটা লোকের সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যেতে নিলে লোকটা তাকে ধরে বসে।
–আউ।
–আপনি ব্যাথা পেলেন কি করে।
–এ মা আমি পরি নি।
–কি!
–সরি সির আমি খেয়াল করি নি৷
(নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে)
–চোখ গুলো কি আকাশে থাকে।
–আজব সরি বললাম না৷
–সরি আমার ডিক্সোনারি তে নাই।
–যাহ বাবা ভালো হইছে আরো ধাক্কা দিবো পরলে ঠেকান।
রাইমা কথাটা বলে মুখ ঘুরলি দিয়ে চলে এলো।
–বেয়াদব মেয়ে।
–বস আমাদের কাজ।
–তোর কাজ তুই কর এখন আমি বাসায় যাবো।। আর শোন,
–জি।
–ওই মেয়ে কে দেখ তো।
–জি বস।
–নীলকে ধাক্কা দিয়ে বলে কিনা আবার ধাক্কা দিবো দেখাচ্ছি মজা।


চলবে,#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_০৯
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

–পৃথু (ধমক শুরে)
–জি(ভয় পেয়ে)
–তুই নামছিস কই।
–ওয়াসরুমে (আস্তে)
–ওহ আয় আমি নিয়ে যাচ্ছে।
–(হুহ যেতে পারি না নাকি শুধু বকে আমাকে মনে মনে)
ওয়ারুম থেকে এসে রাতের খাবার আর ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।
উনি হয়তে সারা রাত পাশে বসে ছিলেন।
সকালে ডক্টর আমাকে রিলিজ দিলো
আমরা বাসায় আসলাম।
বাসায় এনে প্রেয়ন আমাকে টেনে আগে উপরে নিলো মায়ের সাথে কথা না বলতে দিয়ে
–তুই না অসুস্থ রেস্ট নে।
–ও মা তাই বলে মায়ের সাথে দেখা করবো না।
–কেন করবি না হাত মুখ ধুয়ে নে পরিস্কার হয়ে তার পর।
–ও হসপিটাল থেকে আসছি তাই?
–এতো প্রশ্ন কেন করিস পৃথু (রেগে)
–সরি
আমি ওয়াসরুমে চলে এলাম।
কুসুম গরম পানিতে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে ঘরে এলাম।
–এবার ঠিক আছে।
–সমস্যা ছিলো আগে আপনিও আসছেন আপনিও জান মুখ ধুয়ে আসুন (এটিটিউড নিয়ে)
পৃথুলার কথা বলা শুনে প্রেয়ন মনে মনে হাসতে হাসতে ওয়াসরুমে যায়।
–এবার ঠিক আছে (প্রয়ন স্টাইলে)
হুহ আন্ডা ঠিক আছে।
–পৃথুলা।
–মা তুমি আমি আসতে যাচ্ছিলাম।
মাকে জড়িয়ে ধরে।
–কিরে মা এখন কেমন আছিস।
–এই তো ভালোই আছি। তুমি? বাবা কই।
–তোর বাবা বাইরে গেছেন।
–ও।
–কি খাবি বল তো আজ তোর জন্য আমি রান্না করবো।
–সত্যি!
–হুম।
–তাহলে আমার ফুপি স্টাইলে ঝাল মাংস রান্না করো। ভাবলেই আমার খাওয়া ইচ্ছে যাগতে থাকে
–পাগলি মেয়ে দুই দিন পর যে নিজে মা হবে সে কিন বাচ্চামি করে৷
মায়ের মুখে মা হবার কথা শুনে আমার ১ মাসের কথাটা মনে পড়ে গেল৷
মূহুর্তে আমার মুখের রঙ বদলে ফ্যাকাসে হয়ে গেল।
–কিরে পৃথুলা।
–কিছু না মা তুমি করবে রান্না।
–হুম করবো তো তুই থাক এখানে।
মা চলে গেল।
বসে পড়লাম বিছানায়।
সত্যি মানুষের জীবনের মোড় কোথা থেকে কোথায় যায় কেউ বলতে পারবে না।



কোচিং থেকে বাসায় ফিরছে রইমা।
রাস্তায় কোন রিকশা নেই তাই হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে।
তার বান্ধবী রা একটু আগে গেছে ওর একটা কাজ ছিলো তাই দোকানে লেট হলো।
–ধুর ভালো লাগে না। একা একা হাঁটতে।
আগে আপু ছিলো ফোন দিলেই চলে আসতো এখন সব মরন আমার।
–রাইমা।
হটাৎ ফাঁকা রাস্তায় কারোর কন্ঠে নিজের নাম শুনে থমকে দাঁড়ায় রাইমা।
পেছনে ফিরে কালকের সেই মুডি বেক্তি টাকে দেখে ভিশন রাগ হয়।
–আপনি এখানেও চলে এসেছেন? (কিছুটা রেগে)
— আমি আসি নি তুমি এসেছো আমার জায়গায়।
–মানে?
–এই যে দেখছো এই পুরো এলাকা টায় আমার রাজত্ব চলে।
–রাজা হোন বা প্রজা হোন আমার কিছু যায় আসে না।
আমি আসছি।
রাইমা হাঁটা ধরলে নীল রাইমার সামনে তার একটা দুল ধরে।
–এটা তো আমার।
–হুম তোমার আমি কারোর জিনিস নিজের কাছে রাখি না তাই ফেরত দিলাম।
কথাটা বলে দুলটা দিয়ে নীল চলে যায়।
–যাহ বাবা আবারও মুড দেখিয়ে চলে গেল।
হুহ আমারো কম না আবার দেখা হলে দেখিয়ে দিবো।
Attitude এর বস্তা যাকে বলে।
রাইমা বাসায় চলে এলো।



–পৃথু৷ (চিল্লিয়ে)
–জি চিল্লান কেন সময় সময়.।
–তুই আমার কথা না শুনলে তো চিল্লায় না।
–সমস্যা কি?
–ঠান্ডার পোশাক কই।
–কেন আলমারি তে। (সিম্পল ভাব নিয়ে)
–পৃথু তোর শরীরে কই(দাঁতে দাঁত চেপে)
–ওহ আমার নাই তো।
–তোকে আমি,
–পরতেছি তো এই যে চাদর।
–আবার এমন দেখলে মারবো কিন্তু
–আমি মারা গেলে বা কি মাত্র ১ মাসের জন্য এতো কষ্ট করার কি দরকার৷
আমার কথায় প্রয়ন চুপ হয়ে গেলেন।
আমার দিকে একটু তাকিয়ে থেকে।
হটাৎ আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।
কি কান্ড এগুলা।
এ লোকের মাথায় আসলে চলে কি আজিব!


–পৃথুলা তোর খাবার।
–তুমি এনেছো ধন্যবাদ মা।
অনেক খুশি হয়ে।
–চলো নিচে এক সাথে খাবো।
–আচ্ছা চল।
সবাই মিলে ফুপির হাতের স্পেশাল রান্না খেলাম।
বেশ মজা ছিলো।
আমার কাছে নিজের সংসারের মতোই সব টাকে মনে হচ্ছে।
কিন্তু এটা তো শুধু খনেকের শুখ।
শুখ সত্যি মরিচিকা।
চলবে,
(গল্প সম্পর্কে সবার মতামত আসা করছি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here