#ভালোবাসার_প্রজাপতি
#পর্বঃ১৩
#মাহিয়া_মুন
আদ্রিজ এবং মেঘ বসে আছে ডক্টর এর সামনে। দুজনের মনেই বিরাজমান আতংক। ডক্টর নিহার কেবিন থেকে বের হয়ে তাদের এইখানে কেন ডেকে এনেছে বুঝতে পারছে না দুজন।
ডক্টর দুজনের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে কিছুটা গম্ভির গলায় বলে উঠলেন,
“দেখুন মিস্টার চৌধুরী, পেশেন্ট এর হাতের অবস্হা খুব একটা ভাল নয়। ধারণা করা হচ্ছে পেশেন্টের হাতে গুলিটা গত রাতে করা হয়েছে। কোনো রকম ট্রিটমেন্ট না হওয়ায় হাতে ইনফেকশন হয়ে গেছে। আরো একটা ব্যাপার হচ্ছে পেশেন্ট মানসিক ভাবে অসুস্থ্য। ওনাকে উপর্ দিয়ে সুস্থ সবল দেখা গেলেও ওনার এই মানসিক সমস্যা টা অনেক আগে থেকেই। রিপোর্ট এ তাই দেখা গেছে। এবং আমার যতটুকু মনে হচ্ছে,She is mentally depressed। ওনার এখন মানসিক সাপোর্ট এর প্রয়োজন খুব। I hope you understand. ওনাকে টেনশন ফ্রি রাখার চেষ্টা করবেন। হাঁসি খুশি রাখবেন।”
*
*
নিহা তাকিয়ে আছে মেঘার দিকে। মেয়েটা তার জ্ঞান ফিরার পর থেকেই তার হাত ধরে কান্না করে যাচ্ছে। কেঁদে-কেটে চোখে মুখের কি অবস্হা করেছে মেয়েটা।
নিহা আসতে করে বলে উঠলো,
“মেঘু থাম। বাচ্চাদের মত কান্না করছিস। দেখ আমি ঠিক আছি, বেশি ক্ষতি হয়নিতো।”
মেঘা নাক টেনে বলে উঠলো,
“হ্যা দেখতে পাচ্ছি কতটা ঠিক আছিস। আমার জন্যই এমন হয়েছে। আমারি উচিত ছিলো না ওইদিন তোকে রেখে মেঘের সাথে যাওয়া।”
এই বলে মেঘা পুনরায় কাঁদতে লাগলো।
নিহা এইবার চরম বিরক্ত চোখে তাঁকিয়ে রইলো মেঘার দিকে।
মেঘার মা মিসেস হাওলাদার নিহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন,
“ও কাদুক মা, আজ দু দিন ধরে তো কেঁদেই যাচ্ছে। কিন্তু মা তুই ছিলি কোথায় আর হাতে গুলি কিভাবে লাগলো? কে করলো এরকমটা?”
নিহার মুখটা যেন হটাৎ খুব গম্ভীর হয়ে গেল। কিছু না বলে তাকিয়ে রইল অজানায়।
মেঘ কেবিনে আসতে আসতে বলে উঠলো,
“আন্টি,, আমরা নিহার থেকে এই ব্যাপার এ পরেও জানতে পারবো। ডক্টর বলে দিয়েছে কাল নিহাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবো। আগে আমার ভাবি সুস্থ্য হয়ে নিক তারপর ভাবীর থেকে এই বিষয়ে গল্প শুনবো। কী বলেন ভাবী শুনাবেন না?”
নিহা হালকা হেসে বললো,
“শুনাবো ভাইয়া তবে তার আগে এই ভাবী বলাটা যে বাদ দিতে হবে।”
মিসেস আশা চৌধুরী এবং মিসেস অনুপমা চৌধুরী আসতে আসতে বলে উঠলেন,
“কোনো বাদ দেওয়া যাবে নাহ ভাবী ডাকা। বরং মেঘের সাথে সাথে আদি ও তোমায় ভাবী ডাকবে।
নিহা তাদের দেখে আস্তে আস্তে উঠে বসতে নিলেই আদ্রিজের মা দ্রুত এসে শুইয়ে দিতে দিতে বলে উঠলেন,
“আরেহ মা কি করছো, কষ্ট করে উঠতে হবে না। তুমি শুয়ে থাকো। যা ভয় পাইয়ে দিলে আমাদের , তার জন্য তোমার পানিশমেন্ট আছে।”
নিহা হাসতে হাসতে বললো,
“যথা আজ্ঞা রাণীমা।”
মেঘ বলে উঠলো,
“বড় আম্মু পানিশমেন্টটা আমি ডিসাইড করে দেই। এইযে নিহা আমায় ভাবী ডাকতে বারন করছে, এমন ব্যাবস্থা করো যাতে আমায় আর নিহা বারন করতে না পারে।”
মিসেস চৌধুরী হাসতে হাসতে বললো,
“একদম ঠিক বলেছিস। এইটাই করা হবে।”
নিহা তাকিয়ে রইলো সবার দিকে। তার মানে সে বাদে সবাই চাইছে যাতে সে আদ্রিজ বাবুকে বিয়ে করে নেয় । তাছাড়া জ্ঞান ফিরার পর থেকে এখন অবদি তো লোকটা একবার এসে দেখলোনা তাকে। খুব তো বলেছিল মায়াবিনীর মায়ায় আটকে পড়েছে, যে মায়া কখনোই কাটার নয়। নিহা ঠিকই ভেবেছিল, এইসব ক্ষণিকের ভালোলাগা, মোহ বৈ কিছু না।
আচ্ছা নিহার কি অভিমান হচ্ছে লোকটার প্রতি। কিন্তু এইটা যে হওয়ার নয়। তার এখনো অনেক কিছু করার বাকি আছে। নিজের পরিবারকে খুঁজতে সুদূর জার্মানে যেতে হবে। নিহা চাইছে না তার এই জীবন যুদ্ধে কেউ তাকে সাহায্য নামক করুণা করুক। তাছাড়া কোথায় সে আর কোথায় আদ্রিজ বাবু। আদ্রিজ বাবুর সাথে তাঁর আকাশ পাতাল পার্থক্য। বামন হয়ে চাঁদ ধরতে চাওয়া নিহাৎ বোকামি ছাড়া কিছুই না।
*
*
গভীর রাত। নিহার সাথে হসপিটালে মেঘা এবং মেঘ রয়ে গেছে। বাকিদের মেঘ জোর করেই পাঠিয়ে দিয়েছে। সে জানে নিশ্চই তার ভাই রাতে আসবে। দিনে আসেনি যদি না আবেগপ্রবণ হয়ে যায় সবার সামনে।
নিহা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। হটাৎ ঘুমের ঘোরেই অনুভব করলো কেউ তাকে জড়িয়ে ধরে আছে। এক পর্যায়ে নিহা চোখ খুলে ফেললো। সে যা ভেবেছে তাই। কেউ একজন তাকে জড়িয়ে ধরে আছে।
নিহা যখন বুঝতে পারলো লোকটি কোনো পুরুষ তখনি চিৎকার দিয়ে উঠলো।
সাথে সাথে কেউ একজন তার মুখ চেপে ধরলো।
নিহা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইল সামনে থাকা ব্যাক্তিটির দিকে।
আদ্রিজ নিম্ন কণ্ঠে বলে উঠলো,
“হুস চিৎকার করছো কেনো? আমি ছাড়া কারো সাহস আছে নাকি তোমায় এইভাবে জড়িয়ে ধরার।”
“আপনি আমায় জরিয়ে ধরলেন কোন সাহসে?আর এতো রাতে এইখানে কি করছেন?”
“সাহসের কি দেখেছো এলোকেশী। এখনো অনেক সাহস দেখানোর বাকি। কিন্তু তাঁর আগেই তুমি ভয়ে পালিয়ে গেলে কেন? এখন তো তোমাকে দেওয়া কথা আমি কিছুতেই রাখতে পারবো না। ”
“কোন কথার কথা বলছেন?”
“সময় হলে নিজে থেকেই বুঝে নিবে। ”
এই বলে আদ্রিজ নিহার হাত ধরে পাশে বসলো।
ধরা গলায় বলে উঠলো,
“জানোতো এলোকেশী মায়া বড্ড খারাপ অনুভূতি। একবার কারো মায়ায় জড়িয়ে গেলে তা থেকে নিস্তার পাওয়া যায় না। আমি তোমার মায়ায় একদম আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছি। ভালোবাসা কি জানিনা, তবে তোমাকে আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আগ মুহূর্ত পর্যন্ত পাশে চাই। এই দুই রাত আমার কাছে নরক যন্ত্রণা মনে হয়েছে। আমি চাইনা আর এরকম যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে। দ্বিতীয় বারের মত আমায় একবার বিশ্বাস করেই দেখো না।”
নিহা অন্ধকারে লোকটিকে না দেখলেও বুঝতে অসুবিধা হল না যে লোকটি কাঁদছে। আদ্রিজ বাবুর ধরে রাখা তার হাতটি ওনার চোখের পানিতে অনেকটাই ভিজে গেছে।
নিহা কিছুটা বিব্রত কণ্ঠে বললো,
“আদ্রিজ বাবু আপনি কাদঁছেন কেন? দেখুন আপনি যেটা চাইছেন সেটা সম্ভব নয়। আমি আগেও বলেছি কারণটা।”
“এইটা কোন কারণ হতেই পারে না। আমি বুঝতে পেরেছি তুমি এইভাবে বুঝবে না। তার জন্য অন্য ব্যাবস্থা করা আছে। তুমি কিছুটা সুস্থ্য হয়ে নেও পাখি।”
“দেখুন এসব উদ্ভট নামে আমাকে ডাকবেন না।”
“আমার মুখ আমি ডাকবো। তোমার কি?”
“আমাকে ডাকবেন না।”
“আমার যাকে ইচ্ছে তাকে ডাকবো। তোমার কি?”
“দেখুন…….”
“এমা,,, ছি ছি তুমিতো দেখি আমার থেকেও ফাস্ট। বিয়ের আগেই……..”
নিহা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইল আদ্রিজ এর দিকে। এই লোকটা কথা কোথায় নিয়ে গেছে।
“ছি….কিসব বলছেন। এই আপনার পরিবার জানে যে আপনি এতটা লু…..”
“হ্যা বল কি আমি?”
“উফফ! এই আপনি যান তো।”
“হ্যা যাব তো। কিন্তু তার আগে……..”
এই বলে আদ্রিজ নিহার গালে ঠান্ডা কিছু লাগিয়ে দিল। নিহা চমকে উঠলো নিজের গালে ঠান্ডা কিছুর স্পর্শ পেয়ে।
“আদ্রিজ বাবু আপনি কি লাগিয়েছেন আমার গালে?”
আদ্রিজ কিছু বললো না।
নিহা হটাৎ অনুভব করলো আদ্রিজের গালের সাথে তার গালের স্পর্শ। সে যেন নিশ্বাস নিতেই ভুলে গেছে। একদম স্থির হয়ে গেল। এই প্রথম কোনো পুরুষ তার এতো কাছাকাছি এসেছে। হৃদপিন্ডের চলাচল যেন ঊর্ধ্বগতিতে চলছে।
আদ্রিজ সরে এসে বললো,
“লাগিয়েছি কিছু একটা। ঘুমিয়ে পরো। সকালে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে এলোকেশী। তৈরী থেকো। ”
এই বলে আদ্রিজ নিহার কপালে চুমু একে দিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।
আনমনেই নিহার বাম হাতটি চলে গেল কপালে।
শরীল জুড়ে যেন ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল। কিছু একটা ভাবতেই গালে হাত দিয়ে তা নাকের সামনে ধরলো।
হটাৎ ই মুখ দিয়ে বেড়িয়ে আসলো দুটি শব্দ।
“হলুদ বাটা।”
#চলবে#ভালোবাসার_প্রজাপতি
#পর্বঃ১৪
#মাহিয়া_মুন
পড়ন্ত বিকেল। সূর্য্য পশ্চিমাংশে অনেকটাই হেলে পড়েছে। বিকেলের এই আবহাওয়াকে আরো সুন্দরময় করে তুলতেই হয়তো শুরু হয়েছে হালকা বাতাস।
সেই বাতাসকে গায়ে মেখে চৌধুরী বাড়ির ছাদে দোলনায় বসে আছে নিহা এবং মেঘা।
প্রায় ঘন্টা খানেক আগেই নিহাকে হসপিটাল থেকে এইখানে নিয়ে আসা হয়েছে। ব্যাপারটা নিহার খুব অদ্ভূত লাগলেও মামনির কথায় নিজের ভাবনাকে ততটা গুরুত্ব দেয় নি। কাল রাতে সে কিছুতেই ঘুমাতে পারে নি। আদ্রিজ বাবুর ঐভাবে হলুদ লাগিয়ে দিয়ে আসা, সারপ্রাইজ এর কথা বলা , সবটাই কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে নিহার কাছে। তাছাড়া আদ্রিজ বাবুকে আজ সারাদিনে একবারও দেখে নি। এই বাসায় আসার পরও দেখা হয়নি।আদ্রিজ কে নিয়ে এসব ভাবনায় নিজের উপরই নিজে মহা বিরক্ত নিহা। এমন নাজে সে নিজের অনুভূতি বুঝতে পারছে না, বুঝতে পারছে ঠিকই তবে সেই অনুভূতি কে মনের কোনে তালা বদ্ধ করে রেখেছে। পালিয়ে যেতে চাইছে নিজের অনুভুতি থেকে।এই সকল অনুভূতি নিহার কাছে মুল্যহীন। তার এখনো নিজের লক্ষ্যে পৌঁছোনো বাকি।
এই বাড়ির সবাই যা চাইছে সবটাই নিহা বুঝতে পেরেছে। তবে সে কাওকে চাইলেও বুঝাতে পারবে না তার ইচ্ছেটা। সে চাইছে না তার জন্যে কারো জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হক। নিহার হটাৎ মনে পড়ল ঐদিন রাতের কিছু কথা।
সে মিস্টার আদিল এহসান এর জ্বলন্ত লাশ নদীতে ফেলে দেওয়ার পর যখন তার ফোন ফেলতে নিচ্ছিল, তখনি ফোনটা বেজে উঠেছিলো। নামটা দেখে সে কিছুটা অবাক হয়েছিল কারণ নামটা ছিলো আদিত্য বেটা। অবাকের মাত্রা ছড়িয়েছিল তখন যখন নিহা ফোনটা রিসিভ করেছিল। কেউ একজন ওপাশ থেকে উচ্ছাসিত কণ্ঠে বলে উঠেছিলো,
“Papa, what’s up? There is good news for you. তুমি তো জানোই আমার স্টাডি কমপ্লিট। খুব তো বলতে আসছিনা কেন এখনো , সুখবর টা হল কিছুদিনের মাঝেই আমি আসছি পাপা।”
নিহা তখন ফোনটা কেটে নদীতে ফেলে দিয়েছিল।
যতটুকু জানে যে আদিল এহসানের কোনো সন্তান নেই। তাহলে এই আদিত্যটা কে ছিলো? পাপা কেন বলছিল?যেই হোক সে যে খুব দ্রুত দেশে আসছে নিহা তা সুনিশ্চিত। আজ বা কাল ঠিকই আদিল এহসানের নিখোঁজ হওয়ার খবর বের হবে। সবাই জেনে যাবে আদিল এহসান নিখোঁজ। তার লোকেরা নিশ্চয়ই নিহার কাছে আসবে। সেসব নাহয় যেভাবে হোক কাটিয়ে নিবে কিন্তু এই আদিত্য?
মেঘার ধাক্কায় নিজের ভাবনা থেকে ফিরে আসলো নিহা।
“কিরে কখন থেকে ডাকছি। কোন ভাবনায় ছিলি বলতো।”
“পরে বলবো কেনো ডাকছিলি বল”।
“নিচে ডাকছে সবাই তোকে আর আমাকে চল।”
নিহা কিছুটা আন্দাজ করলো তাকে কেন ডাকা হচ্ছে। কি বলবে সে, সবটা যে কাউকেই বলা যাবে না।
চৌধুরী বাড়ির ড্রয়িং রুমে বসে আছে পুরো চৌধুরী পরিবার এবং মেঘার পুরো পরিবার। সকলের মধ্যমণি নিহা। সকলের মনেই জানার ইচ্ছা বিরাজমান।
নিহা সবার দিকে এক পলক তাকিয়ে বলে উঠলো,
“আমি সঠিক জানিনা কে আমায় কিডন্যাপ করিয়েছে। তবে সে একজন পুরুষ ছিলো। কথা শুনে যতটুকু মনে হয়েছে আংকেল দের বয়সী হবে। আর…….”
আদ্রিজ ভ্রু কুঁচকে বললো,
“আর কি…….…”
“আর সে আমার পুরো পরিবারকেই চিনে।”
এই কথা শুনে যেনো সবাই আসমান থেকে পড়ল।
আজিজ চৌধুরী অবাক কণ্ঠে বলে উঠলেন,
“কিন্তু তুমি কিভাবে বুঝলে মা?”
“কারণ সে আমাকে কিছুটা বলেছে।”
“কি বলেছে?”
“সে আমার পরিবারের পূর্ব পরিচিত। সে আমাকে মূলত নিয়েছে কিছু পেপার্স এ সাইন করার জন্য। তবে কিসের পেপার্স, সে কে ছিলো কিছুই জানি না। আমার চোখ- মুখ বাঁধা ছিল। ডান হাত খুলে দিয়ে বলেছিল সাইন করতে। আমি না বলায় রেগে আমার হাতে গুলি করেছিল। তারপর আমি জানিনা কি হয়েছিল। জ্ঞান ফিরার পর নিজেকে রাস্তায় শোয়া অবস্থায় দেখি ।চারদিকে অনেকটা অন্ধকার ছিল। কিছুক্ষণ পর পাখির আওয়াজ পেয়ে বুঝলাম যে সকাল হচ্ছে। আস্তে আস্তে হেঁটে আসছিলাম ঠিক তখনি ঝাপসা চোখে দুর থেকে একটা গাড়ি আসতে দেখেছিলাম। তারপর নিজেকে হসপিটাল আবিষ্কার করলাম।”
মিস্টার মেহরাব চৌধুরী বলে উঠলেন,
“কিন্তু নিহা সে তোমায় এইভাবে রাস্তায় কেন রেখে গেল। তুমিতো সাইন ও করনি। আর সেকি তোমায় তোমার বাবা মা এর নাম বলেছে?”
“নাহ্ আংকেল। তাদের কারো নাম বলে নি। তবে আমার নাম আমি বলার আগেই সে বলেছে। আমারও ইচ্ছে তাকে আরও একবার দেখা। নিজের পরিবারের সম্পর্কে জানা। কিন্তু আমিতো কিছুই জানিনা।”
” থাক মা। যা হয়েছে ভুলে যাও। আল্লাহ্ চাইলে তোমার বাবা মাকে তুমি খুঁজে পাবে। আমরা সবাই তোমার পাশে আছি।”
বাবা শব্দটা শুনতেই নিহার চোখের সামনে ভেসে উঠলো আদিল এহসানের বলা কথাগুলো। কিভাবে মেরেছিলো তার বাবাকে। নিহার চোখ মুহুর্তেই লাল হয়ে গেল। চোখের কোনায় পানি যেন ঢেউ খেলছে। হটাৎ ই যেন সে কিছুটা উন্মাদ হয়ে গেল। চোখ যেন বলে দিচ্ছে নিহার মনে থাকা ইচ্ছেটা। নিহা চাইছে আদিল এহসানকে আবারো টুকরো টুকরো করতে।
চোখের সামনে পানির গ্লাস দেখতে পেয়েই তা ডান হাতে নিয়ে খুব জোড়ে চাপ দিল। মুহুর্তেই তা ভেঙে অনেকটাই নিহার হাতে গেঁথে গেল। কিছু একটা বিড়বিড় করতে করতে পাশে থাকা মেঘার গাঁয়ে ডলে পড়ল। সবাই ভয় পেয়ে গেল নিহার এইরকম আচরণে। যদিও তারা জানে ডক্টর এর বলা কথাগুলো। সবাই যেন শকড হয়ে গেছে। মেঘার চিৎকারে আদ্রিজ দ্রুত গিয়ে নিহার হাত চেপে ধরলো।
অনেকটা হুলস্থুল কাণ্ড ঘটে গেল যেন মুহুর্তেই।
আদ্রিজ নিহাকে কোলে নিয়ে নিজের রুমে চলে গেল। তার পিছে পিছে সবাই গেলো।
মেঘ দ্রুত ডক্টর এর কাছে কল দিল।
*
*
*
#চলবে
(আসলামু আলাইকুম। গল্প কেমন হয় জানাবেন প্রিয় পাঠক পাঠিকারা। এইটা আমার জীবনে লেখা প্রথম গল্প। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)