#অন্ধকার_পল্লী
#Tabassum_Riana
Part:২
,,,,,,,,,,,,,,,,সকাল থেকেই মাথাটা বড় ব্যাথা করছে অবনীর।অবশ্য বাসের ঝাঁকুনি অসহ্য গরমের কারনেই এমন হচ্ছে।ক্লাশে বসে মন দিতে পারছেনা অবনী।পাশে বেস্টফ্রেন্ড অন্তরা সে কখন থেকে বক বক করেই যাচ্ছে।অবনী জানিস তো তোর রাফসান ভাই কেমন?ওর সাথে দেখা করতে গেলে ফোন টা পর্যন্ত টাচ করতে দেয়না। সরি রে আমি তোর ফোন ধরতে পারিনি রাগ করিসনা।আর কখনো হবেনা।একনাগাড়ে বলতে থাকে অন্তরা।আরেনা রাগ করিনি।আসলে এতো বৃষ্টি হচ্ছিলো তাই কল দিচ্ছিলাম আরকি। যাই হোক মাথাটা পেইন করছে।চল কফি খেয়ে আসি।বলে উঠে সামনে এগোয় অবনী।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,কফিতে চুমুক দিতে দিতে কোথাও যেন হারিয়ে গেছে আফিন।আনমনেই কি যেন ভাবতে থাকে।বৃষ্টি পড়ছে।আফিন রাস্তা দিয়ে একাএকা হেঁটে চলছে।হঠাৎ কাউকে দেখে থেমে যায়।সামনে জলপরী দাঁড়িয়ে আছে স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে।সেই হাসি বড় রহস্যময়।সব উলটপালট করে দিচ্ছে আফিনের ভিতরের।আফিন মেয়েটার কাছে একপা একপা করে এগুচ্ছে।কিন্তু জলপরীকে ধরতে পারছেনা।যতোই এগুচ্ছে জলপরী ততোই পিছুচ্ছে।একসময় অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো জলপরী।আফিন কফির মগ টেবিলের ওপর রেখে মাথার পিছনে দুহাত রেখে বসে আছে।কি করবে এখন?এখন কাজে মনযোগ দেয়াই ভালো।ভাবতে থাকে আফিন। ল্যাপটপে খুটখাট শুরু করে দেয় আবার।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,অবনী ঐদিন কি করে বাসায় গেছিলি?অন্তরার কথায় ঘোর কাঁটে অবনীর।না মানে একজন লিফট দিয়েছিলো।আমতাআমতা করে বলতে থাকে অবনী।হি ছিল অর সি ছিলো? অন্তরা হেসে বলে উঠে।কেন কি করবি হি অর সি দিয়ে।যেই ছিলো সে হেল্প তো করেছে।আচ্ছা অবনী বলনা সে কি হ্যান্ডসাম ছিলো।অবনীর কাঁধে হাত রেখে বলতে থাকে অন্তরা।জ জানি না।বাদ দে তো।এসব কথা শুনতে ভালো লাগছেনা।কথা টা বলে উঠে যেতে থাকে অবনী।অন্তরা দৌড়ে ওর পিছু নিতে থাকে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,শুনি মেয়েটাকে বিয়ে দিবে কবে?তোমার তো অবসর হয়ে গেছে।মেয়েটার ও তো বিয়ের বয়স হয়েছে।এভাবে রাস্তায় একা একা চলাফেরা করে।সেটা তো ভালো দেখা যায়না। তাই বলছি ভালো একটা ছেলে দেখে মেয়েটার বিয়ে দিয়ে দাও।দিন কাল ভালো না।কখন কি হয়ে যায়।গড়গড় করে বলতে থাকলেন আমেনা বেগম।কি শুরু করেছো কি?এখনো সেকেলে রয়ে গেলে?উলটপালট বকছো কেন?কিছু হবেনা মেয়ের।ও কি একাই রাস্তায় থাকে নাকি।ওর বয়সী অনেক মেয়েই একা চলাফেরা করে।বলে চোখে চশমা জড়িয়ে সংবাদপত্রে মন দিলেন রহমত সাহেব।মেয়ের চিন্তা হচ্ছিলো বলেই বলছিলাম।মন খারাপ করেই বলে উঠলেন আমেনা বেগম।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,রুহী আজ ও দাঁড়িয়ে আছে বাসস্টপে।সামনে দিয়ে অনেক বাস ট্যাক্সি চলে যাচ্ছে তবে কোনটাকেই থামানোর জন্য মন সায় দিচ্ছিলো না ওর।কিসের আশায় কে জানে?অন্তরা অবনীর কাছে এসে দাঁড়ালো। কিরে যাবিনা?চল।অন্তরা অবনীর হাত ধরে বলে উঠে।আমি যেতে পারবো তুই চলে যা।রাফসান ভাই অপেক্ষা করছে তোর।সত্যি যেতে পারবি তো?অন্তরা বলে উঠলো।অবনী মাথা ঝাঁকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।অন্তরা রাফসানের সাথে চলে গেলো।
আফিন গাড়ি ড্রাইভ করে আগের জায়গার ঠিক কাছাকাছি এসে পড়েছে।শেষ ফুঁ দিয়ে সিগারেট জানালা দিয়ে ফেলে দিলো আফিন।জায়গাটার কাছে এসে গাড়ি সামনে চালিয়ে যেতে থাকলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,দুপুর দুটো বাজে রহমত সাহেব ঘরে ঢুকলেন রাগে গজগজ করতে করতে।শালার বাচ্চা শালারে ইচ্ছা করতেছিলো পুঁতে ফেলি। চাকরীটা থাকলে আজ রিমান্ডে দিতাম।কতবড় সাহস এত বড় কথা বলে।এদের দলকে শাস্তি দেয়া উচিৎ।নষ্ট পল্লির নষ্টা পোলাপান।রাগে গজগজ করে বলতে থাকে রহমত সাহেব। কি হয়েছেটা কি?ওভাবে চিৎকার করছো কেন শুনি?আমেনা বেগম শাড়ীর আঁচলে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে এসে বলতে লাগলেন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,অবনী শেষমেষ ট্যাক্সি টাকে ডাকতে লাগলো।এই ট্যাক্সি যাবেন?জি আফা।২০০টাকা ভাড়া দিতে হইব ট্যাক্সিওয়ালা বলে উঠে।১০০টাকা ভাড়া এখান থেকে অবনী বলতে লাগলো।আইলে আহেন না আইলে নাই।বলে ট্যাক্সিওয়ালা চলে যেতে লাগলো।অবনী অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কি করবে এখন?ঠিক তখনই গাড়ি এসে থামে অবনীর সামনে।গাড়ির দরজা আপনাআপনি খুলে গেলো ওর সামনে।অবনী মাথা নিচু করে দেখার চেষ্টা করলো।সেই আগের লোকটাই।অবনী আবার দাঁড়িয়ে গেলো।তারপর কি যেন ভেবে গাড়িতে চেপে বসলো।
,,,,,,,,,,,,,,আফিন লুকিং গ্লাসে অবনীকে আড় চোখে দেখছে।কি আছে এই মেয়ের মধ্যে যা এক দেখাতেই এমন হারিয়ে ফেলেছে নিজেকে আফিন।অবনীর চোখে চোখ পড়তেই চোখ সরিয়ে নিলো অাফিন।গাড়ি চলতে লাগলো অজানার পথ ধরে।
চলবে