#তবুও_তোমায়_ভালোবেসেছি
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৫
“তোমার লজ্জা থাকা উচিত, যে মেয়েকে ঠকিয়েছো আবার তার বোনকে বিয়ে করো। তোমার বাবা মাকে দেখে তো মনে হয় ভদ্রলোক কিন্তু ছেলেকে ঠিক করে শিক্ষা দিতে পারে নি ”
“এসব কি বলছেন?এই ছেলের সাথে ইভার সম্পর্ক ছিলো? ” (মীরার মা)
“হ্যাঁ, ইভা আমাদের কাছ থেকে কখনো কোনোকিছু লুকিয়ে রাখি নি। ওদের সম্পর্কে কথা জানানোর পর আমি খোঁজ খবর নেই সব ভালো শুনি তারপর বিয়ের ব্যাপারে কথা বলার জন্য পরিবারের কাছে যাবে তখন ইভা জানায় ও নীলকে বিয়ে করবে না। এখন বিয়ে না করার কারন বুঝলাম, তোমার মতো ছেলেকে বিয়ে না করে ভালোই করেছে ” (বাবা)
নীলের বাবা-মা আমার বাবার কথা শুনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
“ছিঃ ছিঃ তোমাকে আমার মেয়ের জামাই ভাবতেও লজ্জা লাগে ” (মীরার বাবা)
“আঙ্কেল যা হওয়ার হয়ে গেছে এখন ওদের বিয়ে মেনে নেন, ওরা সুখী হবে ” (আবির)
“অসম্ভব, এই ছেলে ইভার ভালোবাসার মূল্য দেই নি ও কি করে সংসারের মূল্য দিবে? ” (মীরার বাবা)
“নীলের অতীত ইভা, বর্তমান মীরা। অতীতের কথা ভেবে বর্তমান নষ্ট করা ঠিক না আর হ্যাঁ এখন ইভার বিয়ে হয়ে গেছে ও কিন্তু নীলের জন্য বসে থাকে নি তাহলে নীল বিয়ে করলে ক্ষতি কি? মীরা সবকিছু মেনে নিয়ে সংসার করলে আপনাদের সমস্যা থাকার কথা না।”(আবির)
নীলের সাথে আমার সম্পর্কে কথা মীরা জানার পরেও কিছু বলছেন না কেনো? খুব স্বাভাবিক হয়ে আছে কেনো? আমি মীরার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম,
” আমার সাথে একটু এদিক আয়”
“কেনো? ”
“আগে আয় তারপর বলছি”
মীরাকে আমার রুমে এনে জিজ্ঞেসা করলাম,
“নীলের সাথে কি তুই সংসার করতে চাস? ”
“হ্যাঁ চাই, ওকে আমি ভালোবাসি তো”
“আমার সাথে নীলের সম্পর্ক ছিলো সেটা তোকে বলে তোদের মধ্যে কোনো ঝামেলা করতে চাই নি, আমি জানতাম না বাবা মা-ও আজ আসবে নয়তো কখনো কেউ জানতো না আমাদের সম্পর্কের কথা কিন্তু তুই বিশ্বাস কর নীল তোকে সত্যি ভালোবাসে ”
“আমি তো আগে থেকে জানতাম তোদের সম্পর্কের কথা”
“কিহ্ তুই আগে থেকে জানিস ”
“না মানে ওই আর কি ”
“মীরা তুই সত্যি কথা বল আমাদের সম্পর্কের কথা জানিস”
“হ্যাঁ হ্যাঁ জানতাম তোর সাথে নীলের সম্পর্ক ছিলো। নীলকে একদিন কলেজে দেখেছি তারপর থেকে ওকে আমার ভালো লাগতে শুরু করে তখন মনে মনে ঠিক করি যেভাবে হোক নীলকে আমার করে ছাড়বো কিন্তু ও কিছুতে আমার সাথে সম্পর্কে রাজি হচ্ছে না তখন আমি সুইসাইড করতে যাই আর ও রাজি হয় কিন্তু সম্পর্কের কিছু দিনের মধ্যে বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে,,,,,,,, ”
পুরো কথা শোনার আগে মীরার গালে ঠাসসসস্ করে থাপ্পড় দিলাম সাথে এটাও বললাম,
“তুই কোনো দিন আমার সামনে আসবি না ”
নীলার ভুল থাকলেও পুরো দোষ মীরা করেছে। শুধু শুধু নীলকে সবাই খারাপ ভাবছে এটা হতে দেওয়া যাবে না তাই মীরাকে নিয়ে ড্রয়িং রুমে সবার সামনে গিয়ে বললাম,
“নীলের কোনো দোষ নেই, একটা ভুল বুঝাবুঝির জন্য এসব হয়েছে। তোমার কেউ নীলের সাথে খারাপ ব্যবহার করো না ”
“কি এমন ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল যে তোর সাথে সম্পর্ক ভেঙ্গে দিয়েছে ” (মা)
“মা নীলের সাথে সম্পর্ক ওটা পুরানো কথা এখন আমার সংসার হয়েছে দুটি বাচ্চা আছে সব মিলিয়ে আমি খুব সুখী আছি। আঙ্কেল আন্টি আপনারা ওদের বিয়ে মেনে নেন। মীরা আপনাদের বাড়ির খুব ভালো বউ হবে ”
“আমি আমার ছেলের হয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, ও যে দোষ করেছে,,,,,,,,, (নীলের বাবা)
” ব্যাস, আর কিছু বলতে হবে না। কারো কোনো দোষ নেই সব ভাগ্যের দোষ ”
“আচ্ছা তোর কথা মেনে নিয়ে ওদের বিয়ে মেনে নিলাম ” (মীরার বাবা)
সবাই চলে যাচ্ছে তখন নীল আমাকে ডেকেছিলো কিন্তু আমি কথা না বলে নিজের রুমে এসে খুব কাঁদলাম। কেনো মীরা আমার ভালোবাসার মানুষকে কেড়ে নিলো? ওর কি ক্ষতি করেছিলাম এমন করলো কেনো? মীরার কথাগুলো কানে বাজতে থাকে, খুব কষ্ট হচ্ছে নিজের আপন মানুষ এভাবে ঠকালো?
আমার কাঁধে কারো হাত রাখার অনুভূতি পেয়ে পিছনে দিকে তাকিয়ে দেখলাম আবির,
“যা হবার হয়ে গেছে এখন থেকে তুমি নতুন জীবন শুরু করবে দুটি মেয়ের মা সেটা ভুলে যেও না ”
আবির কথাটা বলে মিশ্মি -তিশ্মিকে আমার কলো দিয়ে চলে গেলো। আমি মেয়েদের কপালে চুমু দিয়ে আমার বুকের সাথে ঝাপটে ধরলাম।
চলবে,,,,,