#একগুচ্ছ_জারবেরা
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_৫(বোনাস)
আরাদ ভাইয়া হুট করে একটা কাজ করে বসলেন।যা আমি কখনো ক’ল্প’না ও করতে পারিনি।উনি আমার ঠোঁ’ট আ’কড়ে ধরলেন।আমি ছাড়ানোর চে*ষ্টা করলাম কিন্তু উনি ছাড়লেন না।আমার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো টপটপ করে।উনি ছে’ড়ে দিয়ে কানের কাছে ফিসফিস করে বললেন,,,
❝ভালোবাসার অধিকারে আর যেই অধিকার শুধু মাত্র আমারই আছে আর কারো না❞
আমি আর একটা কথাও বলিনি রাস্তায়।বাসার সামনে আসতেই গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে বাসায় ঢু’কে নিজের রুমে চলে আসলাম।রুমে এসে দরজা বন্ধ করে কাঁ’দতে লাগলাম।কাঁ’দতে কাঁ’দতে বললাম,,,
“আমি পারলাম না নিজেকে আপনি ছাড়া অন্যকারো স্প’র্শ থেকে বাঁ’চাতে!”
_________
“কি হলো আরাদ প্রেয়শী এইভাবে চলে গেলো কেনো।”
আরাদ মা*থা চু’লকে বলল,,,,
“আসলে খালামনি আমি ওকে একটা চুমু দিয়ে ফেলেছিলাম আসলে তাই ও কাঁ’দতে কাঁ’দতে রুমে গেলো”
প্রেয়শীর মা হেসে বলল,,,
“তুই যা ইচ্ছা তাই কর!আমার মেয়েটাকে শুধু ভালো করে তোল ও শুধু ওই আনফি নিয়ে এখনো পরে আছে।প্রতি রাত ওর কেঁ’দেই কা’টে”
শেষের কথাটা বলে চো’খ মু’ছলো প্রেয়শীর মা মিসেস প্রিয়তা। আরাদের আনফির কথা শুনে মা*থা গ’র’ম হয়ে গলো।তার প্রেয়শী কেনো সে ছা’ড়া অন্য কারো জন্য কা’ন্না করবে।আরাদ রে*গে বলল,,,,
“খালামনি আমি প্রেয়শীকে বিয়ে করতে চাই।”*
“তুই ওর মন জয় কর আগে বাবা কারণ ওকে জো*ড় করে বিয়ে দিতে চাইলে ও নিজের ক্ষ*তি করবে তাই জোড় করার দরকার নেই”
আরাদ কিছু সময় ভেবে বাঁ’কা হেসে বলল,,,
“ওকে খালামনি”
আরাদ চলে গেলো।মিসেস প্রিয়তা আরাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
“তুই আমার মেয়েটাকে ঠিক করতে পারবি তা আমি জানি।”
___________
ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনের একটা বিশাল এপার্টমেন্টের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে এক ব্যাক্তি।প্রেয়শীর শত শত ছবি বেলকনির ফ্লোরে আর ছোট টেবিলে পরে আছে।লোকটার হাতে ও’য়া’ইনের বোতল।ওয়াইন খেতে খেতে প্রেয়শীর একটা ছবি তুলে নিলো।
প্রেয়শীর ছবির দিকে তাকিয়ে বলল,,,
❝আমি আসছি প্রিয় খুব তাড়াতাড়ি। আর কেউ আ’লা’দা করতে পারবে না আমাদের!❞
কথাটা বলেই লোকটা কাউকে ফোন করলো।ফোন রিসিভ হতেই বললল,,,
“রাসিন তাড়াতাড়ি বিডিতে যাওয়ার ব্যবস্থা করো।আমি খুব দ্রুত বিডিতে যেতে চাই”
লোকটা ফোন কা’টতেই। হাসলো লোকটা বলল,,,
❝এই আনফি আহসানের কাছ থেকে তার প্রেয়শীকে আর কেউ আলাদা করতে পারবে না কেউ না আল্লাহ ছাড়া❞
আনফি ও’য়াইন খেতে লাগলো।সে এখন অপেক্ষা করছে তার প্রিয়র কাছে ফেরার।৩টা বছর তো দূরেই থাকলো।আর নাহ যাই হোক এবার সে বিডিতে যাবেই।
__________
আজ দুইমাস হলো সেই ঘটনার পা*গ*ল হয়ে যাচ্ছি আমি আরাদ ভাইয়ার জন্য।এতো পা*গ*লা*মি করে লোকটা।আগে বি*র*ক্ত লাগলেও এখন ভালো লাগে জানি নাবকেনো!খুব ভালো লাগে।কিন্তু আমি তো ওনাকে ভালোবাসি না আমি তো আনফি ভাইয়াকে ভালোবাসি।আমার ভাবনার মা’ঝেই হিয়া বলল,,,
“ক্লাস তো শে’ষ চল ক্যান্টিনে যাই”
আমি আর হিয়া ক্যান্টিনে এসে বসলাম।হিয়া বলল,,
“আচ্ছা আমি তো এখন সিয়র যে আরাদ স্যার তোকে ভালোবাসে”
“হয়তো উনি অনেকটা সা*ইকো টাইপ আমি ছোট থাকতে আরাদ ভাইয়া একটা কাজ করেছিলো”
“কি করেছিলো”
❝আমি মনে হয় তখন সেভেন এ পরি।ছোট তো আর আরাদ ভাইয়া মনে হয় এইচএসসি দিয়েছেন।আমি কয়েকটা ছেলের সাথে খেলেছিলাম।উনি ছেলেগুলোকে ইচ্ছামতো মে*রেছিলেন সাথে আমাকে থা*প্প*ড় মেরেছিলেন।এই ঘটনা খালামনি আঙ্কেল জানতে পেরে ভাইয়াকে অনেক বকা দিয়েছিলেন।উনি তাও শু’ধ’রাননি এরপর উনি আবারও আরো কয়েকটা ছেলেকে মারলেন আমার জন্য।আমি আরাদ ভাইয়ার ভ*য়তে ছেলেদের সাথে খেলতাম না। ছেলেদের থেকে দূরে থাকতাম।ম’নে একটা ভ*য় ঢু’কে গিয়েছিল।আ’ত’ঙ্কে থাকতাম।এরপর আর আমি আরাদ ভাইয়াদের বাসায় যেতাম না।আরাদ ভাইয়া মা’ঝে মা’ঝে এসে খেলতো আমার সাথে।আমাদের আর খালামনিদের বাসার দূরত্ব ১০ মিনিট এর।সেইদিন ছিলো শুক্রবার। আম্মু আমাকে নিয়ে গেলো আরাদ ভাইয়াদের ওখানে।আমি চুপচাপ বসে ছিলাম।আরাদ ভাইয়া এসে আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হলেন।আমার একটা ফ্রেন্ড এসে আমার হাত ধরেছিলো সেদিন আর এতেই আরাদ ভাইয়া তাকে মে*রে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন।আমাকেও খুব মে*রে*ছিলো সেদিন।ওইদিন আঙ্কেল আর খালামনি ভাইয়ার গা*য়ে হয়তো প্রথম হাত তুলেছিলো।একমাত্র ছেলে হওয়ার সু’বাদে কখনো গায়ে হাত তুলেনি আঙ্কেল বা খালামনি।সেদিনের পর আমি আর ও বাসায় যাইনি।তারপর একমাস পর জানতে পারি ভাইয়া কানাডা চলে গেছেন পরতে।খুশি হয়েছিলাম খুব কিন্তু মিস ও করছিলাম কারণ আমার একমাত্র খেলার সাথী যে ভাইয়াই ছিলো!❞
হিয়া গালে হাত দিয়ে বলল,,,
”এই তাহলে কাহিনী স্যার তো পুরাই পা*গ*ল তোর প্রেমে”
“চুপকর তুই জানিস আমি আনফি ভাইয়াকে ভালোবাসি”
“আমার কি মনে হয় জানিস তুই হয়তো আনফি ভাইয়াকে ভালোবাসিস না শুধু একটা মো’হ ছাড়া কিছু না!আনফি ভাইয়া আসার পর তোকে আগের মতো হাসি খুশি দেখছি।আমার মনে হয় তোর আরাদ স্যারকে একসেপ্ট করা উচিত”
“এ হয়না হিয়া আমার শুধু আনফি ভাইয়াকেই লাগবে”
ক্লাস শে’ষে বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছি।আরাদ ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।উনি আসতেই গাড়িতে উঠে বসলাম।উনি আমাকে নিয়ে একটা নিরিবিলি রাস্তায় আসলেন।গ্রামের সাইট এটা খুব সুন্দর জায়গাটা।গাছপালা দিয়ে ঘেরা।আমি হাঁটতে লাগলাম। সামনে এগোতেই দেখি খুব সুন্দর একটা ব্রিজ।আমি ওখানে গিয়ে দাঁড়ালাম। আরাদ ভাইয়াও আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে পরলো।আমার দিকে একগুচ্ছ জারবেলা ফুল দিয়ে বলল,,,
“আচ্ছা সব মেয়েদের তো গোলাপ পছন্দ বেশি তাহলে তোর কেনো জারবেরা ফুল পছন্দ”
“জানি নাহ তবে গোলাপের থেকে আমার জারবেরাই পছন্দ!আরাদ ভাইয়া কালকে ভোর বেলায় আমাকে এখানে নিয়ে আসতে পারবেন”
আরাদ ভাইয়া হেসে বলল,,,
“কেনো কুয়াশা আচ্ছন্ন দেখতে চাস”
“হুম কুয়াশা ঘিরে রাখলে কেমন দেখায় তাই দেখতে চাই”
“আচ্ছা তুই রেডি থাকিস আমি নিতে আসবো তোকে”
সেদিন চলে আসলাম।আরাদ ভাইয়া পরেরদিন ভোর বেলায় আমায় নিতে আসলো।আম্মুকে আগেই বলে রেখেছিলাম।এখানে আসতেই আমি এই জায়গার প্রেমে পরে গেলাম।জায়গাটা কুয়াশায় ঢা’কা পরাতে আরো বেশি সুন্দর লাগছে।ব্রিজের উপর আসলাম।আশেপাশের কিছুই দেখা যাচ্ছে না।আমি আর আরাদ ভাইয়া ওখানে অনেক সময় গল্প করলাম।এদিকে আরাদ প্রেয়শীর অগোচরে প্রেয়শীর অনেকগুলো ছবি তুলে নিলো।প্রেয়শীর খিলখিল হাসির শব্দে আরাদ মু’গ্ধ হচ্ছে।
চলবে,,,,,,!
[কে হবে নায়ক বলুন তো?]