#কাঞ্চাসোনা_২
#পর্ব_০৯
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর
ধ্রুব দুই হাতে শাহীনের কাধ ধরে সকালের সামনে থেকে সরায়।হঠাৎ শরীরে কারো স্পর্শ পেয়ে শাহীন অবাক হয়ে পিছনে তাকায়,ধ্রুবকে দেখে চমকে যায়।এই মূহুর্তে ধ্রুবকে সে আশা করেনি,তার জানামতে ধ্রুব এখন দাওয়াতে থাকার কথা তাহলে বাসায় যে!আর বাসায়ই বা ঢুকলো কি করে?শাহীনের মনে পরে সকাল তখন দৌড় দেয়াতে সে মেইন দরজা বন্ধ না করেই সকালের পিছু ছুটেছিলো।সকালকে কাছে পাওয়ার নেশায় দরজা আটকানোর কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলো।আর এই ভুলে যাওয়াই তার কাল হয়ে দাড়ালো।শাহীনের অবাকের রেশ মুখে রেখেই ধ্রুব তার বলিষ্ঠ হাত দিয়ে সজোড়ে শাহীনের গালে পরপর চারটা থা/প্পড় দেয়।ধ্রুবর চোখ র/ক্তলাল দেখাচ্ছে।শাহীনের গায়ে এলোপাতাড়ি কি/ল ঘু/ষি মা/রতে থাকে।শাহীন এতোটাই হকচকিয়ে যায় যে প্রতিবাদ করার সুযোগ পায় না।ধ্রুব মা/র থামানোর পরে শাহীন কিছু বলতে চায় তার বলার আগেই ধ্রুব তার শার্টের কলার চেপে ধরে,
“তুই এতো খা/রাপ?তোর মনমানষিকতা এতো নি/কৃষ্ট?”
শাহীন ঠোঁট নেড়ে কিছু বলতে চায়।ধ্রুব তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,
“এমন কাজ করার আগে ভাববি না এর পরিনতি কি?তুই আমার ভাই ভাবতে ঘৃ/ণা লাগছে।”
সকাল ধ্রুবকে দেখে যেনো তার দেহে প্রাণ ফিরে পায়।ছুটে এসে ধ্রুবকে দু’হাতে আঁকড়ে ধরে কাঁদতে থাকে।ভ/য়ে,আ/তংকে তার শরীর থরথর করে কাঁপছে।ধ্রুবকে এতো শক্ত করে ধরে যেনো তার বুকে ঢুকে যেতে চাইছে।ধ্রুব দু’হাত দিয়ে সকালকে আগলে ধরে চোখ বন্ধ করে।দুজনের প্রথম আলিঙ্গন যে এমন পরিস্থিতিতে হবে এটা কেউই কল্পনা করেনি।সকাল কাঁপা গলায় ফিসফিস করে বললো,
“আমাকে খারাপভাবে ছুঁয়ে দিতে চেয়েছে।”
ধ্রুব সকালের মাথায় হাত ভুলিয়ে বললো,
“আমি আছিনা?কিচ্ছু হয়নি।রিলাক্স।”
সকাল কিছু বলে না নিথর হয়ে ধ্রুবর বুকে লেপ্টে থাকে।আসলেই সকালের বড়ো কোনো ক্ষতি হয়নি,সকাল শাহীনকে এটা সেটা বলে কাছে আসা থেকে আটকাচ্ছিলো আর মনে মনে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছিলো যেনো কেউ আসে,বলতে বাধা নেই সে মনে প্রাণে চাইছিলো যেনো ধ্রুব আসে এসে তাকে রক্ষা করে।শাহীন যখন তাকে খুবলে দিতে মরিয়া হয়ে গিয়েছে সকাল তখন গলা ছেড়ে কাঁদে।শাহীন বিরক্ত হয়ে বললো,
“এতো কান্নার কি আছে?”
“এতোবড়ো ক্ষতি করবেন না।”
“এটাকে ক্ষতি বলেনা,এটা জাস্ট ইনজয়।কালকে রাতে বললাম না মজা পাইবা।”
যেকোনো ভাবেই হোক শাহীনকে আটকাতে হবে।সকাল নিজেকে শান্ত রেখে বললো,
“আমাকে চাই তো?তাহলে এভাবে না বিয়ে করে।”
শাহীন সকালের দিকে তাকিয়ে বললো,
“তুমিতো বিয়ে করবেনা কিন্তু আমার যে তোমাকে চাই,একরাতের জন্য হলেও চাই,এই মাখন না ছুঁতে পারলে হাত নিশপিশ করবে।”
সকাল মরিয়া হয়ে শাহীনকে বুঝাতে চাইলো,
“আমি আপনাকেই বিয়ে করবো।একটু অপেক্ষা করুন।”
শাহীন হো হো করে হেসে বললো,
“আমাকে বলদ পেয়েছো?তুমি যে আমাকে বিয়ে করবেনা ভালো করেই জানি।”
শাহীন আবার এগিয়ে আসে।সকাল অজোড়ে কাঁদছে।সকালের চোখে শাহীনকে জা/নোয়ারের মতো হিং/স্র মনে হচ্ছে।সে তার হাত দিয়ে সকালের জামা ধরে,সকাল আর্তনাদ করে উঠে।তখনি আল্লাহর ইশারায় ধ্রুব আসে।এসব ভেবেই সকাল ফুপিয়ে উঠে।আড়চোখে শাহীনের দিকে তাকায়।
শাহীন ফ্লোর থেকে শার্টটা নিয়ে গায়ে দিতে দিতে বেরিয়ে যেতে চায় তখনি পরিবারের আর বাকি সবাই সামনে এসে দাঁড়ায়।সবাইকে দেখে শাহীন আরো অবাক হয়ে যায় সে ভেবেছিলো আর কেউ তাকে ধরাছোয়ায় পাবে না।সকাল আর ধ্রুব কিছু বললে সোজা অস্বীকার করবে কিন্তু পুরো পরবারকে কে জানালো?ধ্রুব?শাহীন পিছনে ফিরে আক্রোশের চোখে ধ্রুবকে দেখে।ধ্রুব সবাইকে দেখে এগিয়ে আসে।
তখন অনুষ্ঠানে পৌছে যখন মিতুর মুখে শুনেছে সকাল আসেনি তখনি একরাশ চিন্তা মাথায় এসে ভর করেছে আর সাথে সাথেই শাহীনের কথা মনে পড়ে।সবাই জানায় শাহীন আসেনি।ধ্রুবর চিন্তা এবার ভ/য়ে পরিনত হয়।মায়ের কাছে বিস্তারিত বলে বাসার উদ্যেশে রওনা হয়।কাছাকাছি হওয়ায় পাঁচ মিনিটেই পৌছে যায়।নিচতলা থেকে তিন তলায় উঠতে ধ্রুব বেশী সময় লাগেনা,ইতোমধ্যেই সকালের চিন্তায় গলা শুকিয়ে কাঠ।ভাগ্য ভালো বিধায় সদর দরজা খোলাই পায়।বাসায় পা রেখেই সকালের আর্তনাদ তার কানে আসে সেদিকেই ছুটে যায় আর সকালকে রক্ষা করে।এখনো সে শক্ত করে সকালের হাত ধরে রেখেছে।মনোয়ারা’ই সবাইকে নিয়ে চলে এসেছেন।শাহীনের কর্মে উনারা সবাই হতভম্ব।শাহীন খারাপ জানা ছিলো তাই বলে এতো জঘন্য এটা কারো কল্পনায় ছিলো না।আনোয়ার মির্জা শাহীনের গালে থা/প্পড় দিয়ে বললো,
“তুই আমার র/ক্তের ভাবতেই ঘৃ/ণা লাগছে।”
শাহীন আস্তে করে বললো,
“আব্বা আমি….”
“তোর মুখে আব্বা ডাক শোনার চেয়ে না শোনা অনেক ভালো।কিভাবে এমন চিন্তা মাথায় এলো?”
উনি তেড়ে এসে আরো মা/রতে থাকে।কেউ থামাচ্ছে না যেনো এটা তার প্রাপ্য।সবসময় শাহীনকে মাথায় তুলে রাখা নুরজাহান আর তাছলিমাও বাকরুদ্ধ।নুরজাহান কি বলে নাতীকে বাঁচাবে বুঝতে পারছেনা অবশেষে তাছলিমা বললো,
“যেহেতু আমার ছেলে সকালের সর্ব/নাশের চেষ্টা করেছে তাই শাহীনই সকালকে বিয়ে করবে।”
শাহীন না বলে আ/র্তনাদ করে উঠে।শক্ত করে ধ্রুবর হাত আঁকড়ে ধরে।ধ্রুব সকালের দিকে একপলক তাকিয়ে সবার দিকে ফিরে বললো,
“এমন অ/সভ্যের সাথে সকালের বিয়ে হবে না।”
নুরজাহান মুখ অন্ধকার করে বললো,
“শাহীন তো মেয়ের ক্ষ/তি করে ফেলেছে,বিয়ে করেই ক্ষ/তিপূরণ হোক।”
সকাল জোড়ে কথা বলার শক্তি পাচ্ছেনা।ভ/য়ে তার শরীর এখনো কাঁপছে।আস্তে করে ধ্রুবকে বললো,
“আমাকে কিচ্ছু করেনি,কিচ্ছু না।”
ধ্রুব সবাইকে ধাতস্ত করে বললো,
“যা ভাবছেন তেমন কিছু হয়নি তার আগেই আমি চলে এসেছি।সুতরাং এসব বিয়ের কথা আসার প্রশ্নই আসেনা।”
তাছলিমা আর নুরজাহান প্রতিবাদ করে বললো,
“না,শাহীনই বিয়ে করবে।”
মনোয়ারা বললো,
“আপনারা বললেই তো বিয়ে হচ্ছে না।আর শাহীন যা করার চেষ্টা করেছে এর পরে আর ওর সাথে আমার বোনের মেয়ের বিয়ে দেয়ার প্রশ্নই আসে না।”
ধ্রুবর বাবা সারোয়ার মির্জা মাথা নেড়ে বললো,
“বিয়ে কোনো সমাধান না।আর সকাল তো বলছেই তেমন কিছু হয়নি,আর শাহীনের কাছে এমন কাজ অকল্পনীয়।”
আনোয়ার মির্জা ছেলের কর্মে অপমানিত বোধ করেন।শাহীনের দিকে তেড়ে আবারো মারতে যায়,
“অমানুষ এখনি বেরিয়ে যা।আমার সামনে আসলে খুন করে ফেলতে পারি।”
শাহীন তার আব্বার কথা আগ্রাহ্য করে আস্তে বললো,
“আমি রাজি।সকালকে বিয়ে করবো।”
শাহীনের এমন কথা শুনে সকাল কোনো কথা না বলে আস্তে করে ধ্রুবর বুকে ঢলে পড়ে।ধ্রুব সকালকে পাজকোলা করে মিতুর রুমে নিয়ে যায়।
সবাই চাচ্ছে শাহীনই সকালকে বিয়ে করুক।একটা মেয়ে তার সম্মান হারানোর পরে নিশ্চয়ই ঢোল পিটিয়ে সম্মান হারানোর কথা বলবেনা।সবাই ভেবে নিচ্ছে সকাল আর ধ্রুব মিথ্যা বলছে।সবাই সচোক্ষে শাহীনকে গায়ে শার্ট চড়াতে দেখেছে।ধ্রুব সবাইকে বুঝাতে চেয়েছে কিন্তু কেউই তার কথা বিশ্বাস করছেনা।অবস্থা বেগতিক দেখে ধ্রুব মোবাইল হাতে নিয়ে সামিরকে ফোন দেয়।তারপর কিছুক্ষণ কথা বলে ফোন রেখে সোজা মিতুর রুমে যায়।সকালের জ্ঞান ফিরেছে সে কেঁদে কেঁদে মিতুকে বিস্তারিত বলছে।ধ্রুব কিছু না বলে সকালের হাত ধরে টেনে দাঁড় করায়।মিতুকে আসতে ইশারা করে সবার অলক্ষে সকালকে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়।সকাল ধ্রুবকে বলে,
“কোথায় নিচ্ছেন?”
ধ্রুব গাড়িতে সকালকে উঠাতে উঠাতে বললো,
“গেলেই দেখবে।”
মিতু আর সকাল আর কোনো শব্দ করেনা।সকাল যেনো বড়োসড়ো আ/ঘাত পেয়েছে।গাড়িতে আর কেউ কোনো কথা বলেনা।একটানে গাড়ি গিয়ে থামে কাজী অফিসের সামনে।কাজী অফিস লেখাটা দেখে সকাল হতবাক হয়ে ধ্রুবর দিকে তাকায়।অবিশ্বাস্য চোখে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে আছে।ধ্রুব হাত বাড়িয়ে সকালের হাতটা নিজের হাতে পুরে নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়।সামির সব ব্যবস্থা করে ফেলেছে।ভার্সিটির কয়েকজন ফ্রেন্ড সাক্ষীসহ যাবতীয় ব্যবস্থা করে ফেলেছে।সামিরকে দেখে মিতু অবাক হয়,বন্ধুর জন্য বেশ জান প্রান দিচ্ছে কিন্তু তার বেলায় কেনো এতো রুক্ষতা?মিতু দীর্ঘশ্বাস ফেলে ধ্রুবর পিছুপিছু যায়।
কাজী সাহেব কবুল বলতে বললে সকাল ধ্রুবর দিকে তাকায়।ধ্রুব টেবিলের নিচ দিয়ে সকালের হাত আঁকড়ে ধরে।চোখের ইশারা করে বলতে বললো।সকালের চোখ মূহুর্তে পানিতে টইটুম্বুর হয়ে যায়।ধ্রুব আস্তে করে বললো,
“সকাল,তুমি কি রাজি না?”
সকাল নিঃশব্দে কাঁদে।ধ্রুব আবার বলে,
“তুমি রাজি না হলে বিয়ে ক্যান্সেল।কিন্তু বাসায় যাওয়া যাবেনা,বাসায় গেলেই শাহীনের সাথে বিয়ে হবে আর নয়তো তোমাকে তোমাদের গ্রামে দিয়ে আসি।বলো তুমি কোনটা চাও।”
সকাল ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে ধ্রুবর কথা বুঝতে চায়।বুঝতে পেরে দুদিকে মাথা নাড়িয়ে না করে।ধ্রুব বুঝতে পারেনা সকাল কিসের উপর না বলছে তাই সে বললো,
“কি না?”
সকাল আস্তে করে বললো,
“বাড়ি যাবো না।”
“তাহলে?”
সকাল কিছু না বলে ধ্রুবর চোখে তাকিয়ে থাকে।সকালের সুপ্ত মনোবাসনা বুঝতে পেরে ধ্রুব মুচকি হাসে।কাজীকে পুনরায় বিয়ে পরাতে বলে।বিয়ে শেষ করে ধ্রুব বাসায় আসে।বাসার সবাই তাদেরকে দেখে অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে।আজকে বুঝি অবাক হওয়ার দিন!সবার সাথে অনেক কথা কাটাকাটি করে ধ্রুব সবাইকে বুঝাতে সক্ষম হয়।নুরজাহান আর তাছলিমা নাখোস হলেও বাকিরা মুটামুটি খুশী।সবচেয়ে বেশী খুশী হয়েছে মনোয়ারা।এই যে কিছুক্ষণ পরে পরে সকালকে বুকে জড়িয়ে ধরছে,পরক্ষনেই কপালে স্নেহমাখা চুমু দিয়ে মিষ্টি করে হেসে যাচ্ছে।সবার সাথে কথা শেষ হতে হতে রাত আড়াইটা বেজে যায়।মিতু সকালকে ধ্রুবর রুমে দিয়ে আসে।সকাল যেতে চায়নি কিন্তু মিতু জোর করে বলেছে,ধ্রুব তার স্বামী,আজকে থেকে স্বামীর রুমেই থাকতে হবে।মিতু চলে যাওয়ার পরে সকাল দুরুদুরু বুকে ধ্রুবর বিছানায় বসে।সারাদিনের ধকলে শরীর নেতিয়ে পরতে চাইছে।
মিতু রুমে এসে সামিরকে ফোন করে।বেহায়া মনটা অন্যের ভালোবাসায় পূর্নতা দেখে নিজের ভালোবাসাটাও পূর্ন করতে চাইছে।কিন্তু তার ভালোবাসা যে একতরফা!সামির তো তাকে ভালোবাসে না।এসব ভাবতে ভাবতেই অপরপাশ থেকে সামির ঘুমঘুম গলায় বলে,
“এতো রাতে কি চাই মিতু?”
সামিরের ঘুম ঘুম গলার স্বর শুনে মিতুর বুকে গিয়ে লাগে।কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো,
“আপনাকে চাই।”
সামির বাচ্চাদের মতো বললো,
“আমি ঘুমাচ্ছি।বেকারদের ঘুমের ডিস্টাব করতে নেই তাদের ঘুমটাই একমাত্র সম্বল।তুমি আমার ঘুম ভেঙে মস্তবড়ো অন্যায় করে ফেলেছো মিতু।”
সামিরের কথার ধরনে মিতু হেসে দেয়।
“এই অন্যায়ের শাস্তি কি হতে পারে?”
“এখনি ফোনটা রেখে দেয়া।”
মিতু মাথা দুলিয়ে বললো,
“না।”
সামিরের ঘুম ছুটে যায়।হাত দিয়ে চোখ কচলে বললো,
“কি না?”
মিতু আবদার করে বললো,
“বিয়ে করবো?”
সামির কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
“কাকে?”
মিতু সোজা গলায় বললো,
“আপনাকে।”
“আমি বেকার মানুষ বিয়ে করে তোমাকে খাওয়াবো কি?”
“খাওয়াতে হবেনা।শুধু একটু বেশী ভালোবাসবেন তাতেই হবে।”
মিতুর কথায় সামির হাসে,
“ভালোবাসলে কি পেট ভরবে?”
“ভরবে তো।”
“অভাবে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায় কথাটা যেমন পুরোপুরি সত্য না ঠিক পুরোপুরি মিথ্যাও না।”
মিতু মরিয়া হয়ে সামিরকে বুঝাতে চায়।
“আমি পালাবো না।চলুন না ভাইয়ার মতো বিয়ে করে নেই।”
সামির হাসে।দুনিয়ার সবচেয়ে বড়ো শান্তি হচ্ছে পেটের শান্তি।কথায় আছেনা পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি।পেটে খিদা থাকলে দুনিয়ার সব বিতৃষ্ণা লাগে আর এই বিতৃষ্ণার ব্যাপারটা সামির বেশ ভালো করে উপলব্ধি করেছে যা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো মিতুর অজানা।তাই বালিকার আহ্লাদে গা ভাসানোর কর্ম তার নয়।
ধ্রুব আস্তে করে তার অতিপরিচিত রুমে প্রবেশ করে।আশ্চর্য হলেও এটা সত্যি যে এতোদিনের পরিচিত রুমে ঢুকতে তার সংকোচ হচ্ছে,অজানা শিহরণে বুকটা বেশামাল কাঁপছে।আর সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে কোনো প্রিপ্রারেশন ছাডাই পুতুলটা তার হয়ে গেছে।দরজা লাগানোর শব্দ শুনে সকাল ধ্রুবর দিকে তাকায়।ধ্রুব হাসার চেষ্টা করে।ধীরপায়ে সকালের দিকে এগিয়ে যায়।সকাল ধ্রুবকে দেখে কুকড়ে যায়।মুখের বর্ণ হয় সাদা।তার মনোভাব শাহীন যা করতে চাইছিলো ধ্রুব তো তাই করবে।দুজন’ই তো পুরুষ!একজন অপবিত্র আরেকজন পবিত্র।সকাল ভ/য়ে চুপসে যায়।বুকের ভেতর শুরু হয় কাঁপন।শাহীন কাছে আসাতে চিৎকার করে নিজেকে বাঁচাতে চেয়েছে কিন্তু এবার?ধ্রুবও কি শাহীনের মতো বি/ষাক্ত ছোবল মা/রতে চাইবে?সকালের সারা শরীর কেঁপে যায়।সকালের এই সাদা চেহারা,শরীরের কাঁপন কোনোকিছুই ধ্রুবর নজর এড়ায় না।তারও তো কেমন লাগছে।আস্তে করে বললো,
“সব ঠিকঠাক?”
সকাল মাথা নাড়ে।ধ্রুব সকালের হাত ধরতে গেলে সকাল একপা পিছিয়ে বললো,
“আমায় ছুঁবেন না।”
ধ্রুব শুধু সকালের হাত ধরতেই চাইছিলো তার অন্য কোনো উদ্যেশ্য ছিলো না।সকালের ভ/য় পাওয়ার কারণ উপলব্ধি করার পরে বললো,
“তুমি কি আমাকে ভ/য় পাচ্ছো?”
সকাল আমতা-আমতা বললো,
“মিতু আপুর রুমে চলে যাই?”
ধ্রুব শুধু তাকিয়ে থাকে।সকাল’ই আবার বলে,
“প্লিজ।”
“আচ্ছা।”
সকাল ধীর পায়ে দরজার দিকে এগিয়ে যায়।ধ্রুব সকালের যাওয়ার পানে তাকিয়ে হঠাৎ বুকে তোলপাড় অনুভব করে জলদি গিয়ে দরজা ঠেলে সকালের সামনে দাঁড়ায়।সকালের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,
“সকাল!কথা দিচ্ছি তোমাকে ছুঁবো না তাও এই রুমে থাকো।প্লিজ।”
সকাল থমকে দাঁড়ায়।ধ্রুবর কথা ফেলতে ইচ্ছা হয় না।আবার বিছানায় গিয়ে বসে।ধ্রুব বিছানায় বসে না আগের মতোই দরজার সাথে হেলে দাঁড়িয়ে আছে।প্রিয়তমার ছুঁয়া না হয় পরেই পেলো কিন্তু তার সুখ পাখিটা’তো সারা জীবনের জন্য তার হয়ে গেলো।ধ্রুব খেয়াল করলো সকালের চুপসানো মুখটাও তার কাছে আদর আদর লাগছে।ইশ!মেয়েটা এতো আদুরী কেনো?ধ্রুবর বউ বলে?ধ্রুব চোখ বন্ধ করে সস্থির নিঃশ্বাস ফেলে এই আদুরে পাখিটা তার বউ।ধ্রুব তার বুকে শিরশিরানো অনুভূতির আন্দোলন অনুভব করে মুচকি হাসে।
চলবে….
❝আমার পাঠক-পাঠিকারা কি খুব রেগে?এবার রাগ কমেছে?বিয়ের খুশীতে মিষ্টি খাওয়ান।আর হ্যাঁ গল্পের থিমটা মাথায় রেখেই গল্পটা শুরু করি।আর এই থিম অনুযায়ীই চলবে।আশা করি কালকের মতো রাগ করে আজকে লাইক,কমেন্ট না করে যাবেন না।আজকে সবাই কমেন্ট করেন আমি রিপ্লাই দেয়ার চেষ্টা করবো।❞