#একই_সুতোয়_বাঁধা
পর্ব-১৯,২০
সপ্ত শীখা
অদ্ভুত কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে সায়নের। ছেলেবেলার প্রতিটি মুহূর্ত ও পুষ্পর সাথে কাটিয়েছে। মুখচোরা ছিল ও… ডানপিটে পুষ্পই ওকে বাঁচিয়ে এসেছে সব ঝুটঝামেলা থেকে। গ্রাম ছেড়ে আসার দিন কি কান্নাই না করেছিল ! সায়ন বোকার মত বলেছিল পুষ্পকে… বিয়ে করবে তারা। কে জানত বিয়ে আগেই হয়ে বসে আছে !
তবে এ ব্যাপারে নরম হতেও পারত সায়ন… কিন্তু পুষ্প ধোঁকাবাজি করায় সেটাও শেষ। এতদিন ধরে সায়নের সাথে প্রেম প্রেম খেলার কি মানে ! আগেই সব বলে দিলে কি হত ! যেকোন সমস্যায় সায়ন আজও পুষ্পকেই স্মরন করে। আর সেই পুষ্প কি এভাবে খেলা করল ওকে নিয়ে !
— ভাই ! ও ভাই !
— রাজু আবার এসেছিস ঘ্যানঘ্যান করতে-
— তো কি করতাম ? আপনে দুইদিন ধইরা কিচ্ছু খাইতাসেন না ঠিকমত… আমি কার লেইগা রান্ধি ? আজকা আপনের লিগা মুরগির ঝোল রানছি আর মুগের ডাইল। আসেন খাইবেন।
— রাজু তোকে কতবার বলেছি আমার কাছে এসে এসে ঘ্যানর ঘ্যানর করবি না। আমি খাব না যা… পরে ক্ষিদে পেলে খেয়ে নিব।
— আইচ্ছা। আমিও খামু না আজকা থিকা। যার কামাই হেই খায়না তো চাকর বাকরে মুখে খাওন তুলব কুন অধিকারে !
সায়নের হাসি চলে আসছে। ছেলেটা অনেক বেশিই ভালবাসে সায়ন কে। কেমন বাচ্চাদের মত ব্ল্যাকমেইল করছে !
— আচ্ছা আর ঢং করা লাগবে না। চল কি রান্না করেছিস দেখি-
💙💜💚💛❤️
— পুষ্প সবকিছু নিয়েছিস তো ?
–হু। নীরা ভয় লাগছে… যদি তাড়িয়ে দেয় ?
— জানি ভয় লাগছে। লাগুক… তার সাম্নে দেখাস না সেটা। যেভাবে প্ল্যান হয়েছে সেভাবে করবি সব।
— তাও ভয় করছে… এসবে যদি আমাকে আরো ঘেন্না করা শুরু করে ?
— পুষ্প, নিজের ভালবাসার উপর বিশ্বাস রাখ অন্তত! দেখ… বিয়ের কথা জানতি না তবু তোর মনে ওর প্রতি ভালবাসা তৈরি হয়েছিল। পুরুষদের এত সূক্ষ্ম অনুভূতি নেই। তোর কাজ তারমনে সে অনুভূতি গুলি জাগিয়ে তোলা।
— নীরা… দিয়ে আসবি আমাকে ? এটলিস্ট… সাথে থাকিস ম্যানেজ না হওয়া পর্যন্ত-
— নো ম্যাডাম। সব আপনাকেই করতে হবে।
❤️💛💚💙💜
দুদিন পরে আজ অফিসে পা রেখেছে সায়ন। সবাই ই অবাক বেশ… কখনই অফিস বাদ দেয়না ও। সজল ওকে দেখে ছুটে এল।
— কিরে দোস্ত ! কই ছিলি? ফোন বন্ধ… এদিকে অফিসেও আসিস নাই। শরীর খারাপ ছিল ?
— হু ।
— শুনেছিস খবর ? তোর আন্ডারে ছিল যে বোরকাওয়ালি সে রিজাইন করেছে।
— কি ! কবে ?
— কালকেই। আরে তুই তো বাঁচলি… আচ্ছা শোন। বস ডেকে পাঠিয়েছে তোকে।
বেশ কিছু ঝাড়ির প্রস্তুতি নিয়ে বসের রুমে গেল সায়ন। বেশ বয়স্ক মানুষ তবুও চিন্তাভাবনা পরিষ্কার তার।
— মে আই কাম ইন স্যার ?
— অহ… সায়ন ! কাম… অফিসে আসেননি কেন?
— স্যার শরীরটা ভাল ছিল না…
— তা দেখে বোঝা যাচ্ছে। চোখ তো বসে গেছে একেবারে। আচ্ছা সায়ন, আমাদের কক্সবাজারের সাইটটা ভিসিট করতে হবে। কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কিছুদিন থেকে সেরে আসবেন কাজটা। কবে যেতে পারবেন ?
— স্যার… আমি… আজই যাব। রাতে ?
— দ্যাটস গুড !
সায়ন বসের রুম থেকে নিজের ক্যাবিনে এসে চুল খামচে ধরে বসে রইল। কেন করল এটা ও ? নিজেই জানে না। শুধু জানে কটা দিন এই শহর থেকে দূরে কাজকর্মে নিজেকে ব্যস্ত রেখে পুষ্পকে মন থেকে সরাতে চায় হয়তো…
— রাজু ! শোন আমার ব্যাগ গুছিয়ে রাখ। আজকে রাতে চারদিনের টুর আছে।
রাতে ট্রেনে উঠেই জানালা খুলে রাখল সায়ন।
হু হু বাতাস বইছে তবু জানালা লাগাতে ইচ্ছে করছে না । যা ইচ্ছে হোক। জ্বর হোক… মরে যাবার মত অবস্থা হোক… তবে যদি এই মানসিক কষ্ট থেকে মুক্তি পায় ও !
❤️💛💚💙💜
রাজু খুবই অবাক হয়েছে। সেদিনের বোরকা পরা আপুটা আজকে একেবারে গাট্টি বেঁধে হাজির হয়েছে। বেল চেপে খুবই স্বাভাবিক ভাবে বাসায় ঢুকেছে সে।
— আফা ভাই তো বাসাত নাই !
— ও তাই ! কোথায় গেছে ?
— টুরো গেসে… চাইরদিন পর ফিরব।
— ও আচ্ছা। আমি এখন থেকে এই বাসায়ই থাকব বুঝলে রাজু ? আমার ব্যাগটা তোমাদের গেস্টরুমে রেখে এসো।
— আফনে কেডা ?
— আমি ? তোমার ভাবি হই। ভাইয়ের বউ।
— ভাই বিয়া করল কবে ?
— আমাদের খুউউব ছোটবেলায় বিয়ে হয়েছে। আর তোমার ভাই আমার উপর রেগে আছে এখন। এসে আমাকে দেখলে বকাঝকা দিতে পারে। তুমি তাকে কিছু জানিওনা রাজু আমার ব্যাপারে কেমন ?
— ভাবি… আপনে কি খাইবেন ?
— রান্না করতে পারো নাকি ?
— অবিশ্যি ! ভাইয়ের রান্না কেডা করে ? আমি ! কন কি খাইবেন ?
— শুকনা মরিচ দিয়ে ঝাল আলুভর্তা আর ঘন ডাল। করে দিবে ?
— অবিশ্যি ! আফনে ফেরেশ হইয়া নেন ভাবি। আমি খানা বসাইতেছি।
— রাজু। তোমার ভাইকে-
— কিচ্ছু কমুনা। আমি আফনের সাথে আছি ভাবি। ভাই আমারে খুব মানে। আফনেরে ধমকাইলে আমারে বলবেন।
পুষ্প শান্ত মনে ভাল একটা গোসল দিয়ে নিলো। ভালই হয়েছে সায়ন নেই। একটা প্রস্তুতি নিতে পারবে ও সায়নের মুখোমুখি হবার। লাথি ঝাঁটা খেয়ে হলেও ওর ভালবাসা জয় করে নেবে পুষ্প। মনে মনে ও জানে… সায়ন ও ভালবাসে তাকে। দুইভাবে ভালবাসে… বন্ধু হিসেবে পুষ্প আর প্রেমিকা হিসেবে জান্নাতুল !
.
#একই_সুতোয়_বাঁধা
পর্ব-২০
সপ্ত শীখা
চারদিন পর এক রাতে ঢাকায় ফিরল সায়ন। ক্লান্ত, তবু নিজের উদ্যম কিছুটা ফিরে পেয়েছে সাগরের পাড়ে ঘুরতে ঘুরতে।
রাত প্রায় তিনটা। এসময় জেগে থাকবে তো রাজুটা ? এ ছেলে জাগতে পারেনা মোটে। একবার এমন ঘুম দিয়েছে যে বেল বাজিয়েও কাজ হয়নি… সায়নকে সারারাত বাইরেই থাকতে হয়েছিল। আজ আবার…
বেল চাপতেই দরজা খুলে গেল। যে খুলেছে সে দরজার পেছনে। সায়ন সোজাসুজি নিজের রুমে চলে গেল। পুষ্পকে দেখতেও পায়নি আর পুষ্পও তাতে খুশি। ঝোঁকের মাথায় দরজা খুলতে চলে এসেছে। ক্লান্ত মানুষটাকে এই রাতে বিরক্ত করতে চায়না সে। যা হবার কাল হবে।
ফ্রেশ হয়ে এসে টেবিলে সাজানো খাবার পেয়ে খুশিই হয় সায়ন। আরো অবাক হল যখন খাবারগুলো দেখল। সব প্রিয় খাবার ওর !! টমেটো দিয়ে ছোটমাছের ঝোল, ঘন ডাল, মুরগির মাংস ভুনা আর টাকিমাছের ভর্তা। খেতেও বেশ হয়েছে সব। রাজুটা ভালই রান্না শিখেছে… মনে মনে ভাবল সায়ন।
পুষ্প হাসিমুখে দরজার ফাঁকা দিয়ে দেখছে সায়নের খাওয়া। কেমন ক্ষুধার্ত হয়ে খাচ্ছে ! অতকিছু রান্না করতে পারেনা তবুও মা কে ফোন করে আর ইউটিউব ও রান্নার বই মিলিয়ে রেঁধেছে আজ ও। রাজুকে কিছু করতে দেয়নি। সায়নের যে ভাল লেগেছে তা তো বোঝাই যাচ্ছে !
💛💛💛💛💛
বেলা করে ঘুম ভাংল সায়নের। আজ অফিস নেই তাই ফজরের পর আর এলার্ম দেয়নি। ১১ টা বাজে প্রায়। আস্তেধীরে উঠে ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখে বেডসাইড টেবিলে চা রাখা। খুবই অবাক হল সে… রাজু তো কখনো বেড টি দেয়না ! ফোন টা খুলে নিউজফিড স্ক্রল করতে করতেই চা শেষ করল ও। মশলা দেয়া চা খেয়ে বেশ চনমনে লাগছে শরীরটা…
— নাস্তা দেব ? না একবারে লাঞ্চ করবেন ?
ভূত দেখার মত চমকে গেছে সায়ন। কোল থেকে ফোন পড়ে গেছে কার্পেটে। এ মেয়ে এল কোত্থেকে !
— তু…ত্তুমি আমার বাড়িতে কেন ? এত সাহস হয়েছে তোমার ?
— সাহসের কি আছে ? আমার হাসবেন্ডের বাড়ি আর আমিই থাকতে পারব না ?
— হাসবেন্ড ! অজান্তে হওয়া বিয়ে তার আবার আদিখ্যেতা !
— মিস্টার সায়ন, আদিখ্যেতাই বলুন আর যাই বলুন আমি আপনার স্ত্রী।
— হাহহহহ !! আমি কখনই দেবনা এই অধিকার। বাসায় ঢুকতে দিলো কে তোমাকে ?
— আমি গত পাঁচদিন যাবত আপনার… সরি আমাদের এই বাসায় থাকছি। বুঝলেন ?
— হোয়াট !
— হু।
— তোমার এতটা সাহস হয়েছে পুষ্প ? এতটা ? এখুনি বের হয়ে যাও বাড়ি থেকে !
— মিস্টার সায়ন, আমাকে আঙ্গুল বাঁকা করতে বাধ্য করছেন। মিষ্টি কথায় বুঝবেন না তাইতো ?
— কি বলতে চাও তুমি ? ফ্রড মেয়ে একটা-
— শাট আপ ! কে ফ্রড ? কি ফ্রড করেছি আপনার সাথে আমি ? বোরকা নিকাব পরে থেকেছি কারন এ আমার ধর্ম। আর পরিচয় দিইনি কারণ সারপ্রাইজ দিতে-
— শাট আপ !
— ওকে… সায়ন, এইটা দেখুন। আমাদের বিয়ের রেজিস্ট্রির কপি। স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বিয়ে হয়ে গেছে। কাজেই আমরা স্বামী স্ত্রী। আর তাই… আপনি এ বাড়িতে জায়গা না দিলে আমি কেস করতে বাধ্য হব।
সায়ন বসে পড়ল আবার। ওর মাথা বনবন করে ঘুরছে। এ কেমন জল্লাদ মেয়ে ! কাগজপত্র নিয়ে চলে এসেছে !
— এমন মাথায় হাত দিয়ে বসলে চলবে না মশাই। আমি আজ থেকে এবাড়িতেই থাকব। আপনি অকারন আপত্তি করে ঝামেলা বাড়াবেন না। কিচ্ছু বিরক্ত করব না আপনাকে। উল্টো রান্না করে খাওয়াব, ঘর সাজাব আর অনেক ভালবাসব। বুঝলেন ?
আবারো মাথা ঘুরছে সায়নের। একই অঙ্গে কত রূপ রে বাবা ! জল্লাদ সেই সাথে সিডিউসিং !
— পুষ্প… দেখ তুমি লিমিট ক্রস করে যাচ্ছ।
— উহু করছি না তো ! যা যা বলেছি একটাও কি বিরক্ত হবার মত বলুন ?
— তোমার প্রেসেন্স ই বিরক্ত হবার জন্য যথেষ্ট !
— এটা রাগ থেকে বলছেন। আমি জানি… পুষ্পকে না হলেও জান্নাতুল কে তো ভালবাসেন আপনি !
পুষ্প আর পারছে না এই আলাপ চালিয়ে যেতে। ওর চোখ ফেটে কান্না পাচ্ছে। এগিয়ে এসে কার্পেটের উপর বসে সায়নের দু পা জড়িয়ে ধরে ওর হাঁটুতে মাথা ঠেকাল পুষ্প। দুচোখে বন্যা। সায়ন চমকে উঠেছে এমন কান্ডে।
— সায়ন, আমাকে একটু ভালবাসলে কিই বা হয় ? আমি যে গত নয় বছর ধরে ভালবেসে যাচ্ছি ! আর কত জ্বলব আমি ? প্লিজ… আমাকে থাকতে দিও এখানে। একটা মানুষ থাকব টের ও পাবেনা তুমি…
সায়ন কি বলবে বুঝতে পারার আগেই পুষ্প উঠে দৌড়ে চলে গেল। ওর দুচোখের বহমান পানি সায়ন দেখেছে অবশ্য। আর তাতেই ওর মাথা জ্যাম হয়ে গেছে। চুপচাপ বসে রইল দুপুর পর্যন্ত।
— খেতে আসুন। খাবার দিয়েছি। সমস্যা নেই বিরক্ত করব না আমি। রাজু বেড়ে খাওয়াবে। আসুন তাড়াতাড়ি।
সায়নের সম্বিত ফিরল পুরো দুঘন্টা পরে। তাও পুষ্পর ডাকে। অবশ্য পুষ্প রুমে ঢোকেনি। বাইরে থেকেই ডেকে গেছে। সায়ন উঠে টেবিলে গিয়ে বসল। রাজু রান্নাঘর থেকে এসেছে। সে পরিবেশন করে দিলেও সায়নের নজর খুঁজছে পুষ্পকে। যেভাবে কান্নাকাটি করল…
— রাজু… পুষ্প কবে এসেছে ?
— যেদিন আপনে গেসেন। আপনে আমারে কন নাই যে আপনের বউ আছে । তয় আমি রাগ নাই কারণ ভাবি বড় ভালা মানুষ। আমারে ভালা পায়।
— তাই ? ভালা পাওয়া পাওয়িও হয়েছে ? তা কোথায় তোর ভাবি ?
— গেস্টরুমে। ভাই… আপনের বউ লাগে তো হ্যায়। স্বামী ইস্তিরি আলিদা রুমে থাকোন নাই। আপনে কন এক রুমে আইতে।
— এত পেকে যাস না রাজু। আচ্ছা, খেয়েছে তোর ভাবি ?
— কাইল রাতের খাওন ও খায়নাই এখনো। রান্ধে আর কান্তে থাকে।
💜💜💜💜💜💜
পুষ্প জোহরের নামাজ পড়ে নিয়েছে। এখনো মোনাজাতে সে। একচোট কান্নার শেষে জায়নামাজে মাথা ঠেকিয়ে সেজদার ভঙ্গিতে পড়ে ছিল ও। হঠাৎ দরজার শব্দে ধরমরিয়ে উঠল। রাজু ট্রে নিয়ে এসেছে।
— ভাবি… ভাইয়ে কইছে খাইয়া নিতে। আর এইটা দিছে।
একটা ছোট চিরকুট। লেবুর গন্ধমাখা।
” না খেয়ে বসে থাকার আদিখ্যেতা টা করো না অন্তত। না খেয়ে মরে গেলে তো লোকে আমাকেই দূষবে। খেয়ে নাও আর প্রতিবেলার খাবার যেন মিস না হয় কখনো।
সায়ন। ”
আবার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল একটু। চিরকুট টা সযত্নে তুলে রেখে খেয়ে নিলো পুষ্প। সত্যিই… অকারণে না খাবার কোন মানে নেই… আর সায়ন নিজ থেকে বলেছে আজ !
💚💚💚💚💚
অফিসে এসেছে সায়ন। কিন্তু মেজাজ টা এমন অদ্ভুত খিচড়ে গেছে ! রাজুর হাতে করে বেরুনোর সময় টিফিন বেঁধে পাঠিয়ে দিয়েছে পুষ্প। এ কেমন ঢং !
লাঞ্চটাইমের অনেক পরে খিদে পেতে আস্তে আস্তে বক্স খুলল সায়ন। ডবল ডেকার বক্সের উপরের বাটিটায় চিরকুট। আর নিচেরটায় খিচুড়ি মাংস।
” আমার উপর রাগলে সমস্যা নেই। খিচুড়ির উপর রাগবেন না। খেয়ে নেবেন।
পুষ্প ”
বিরক্ত মুখ করে খেতে শুরু করল সায়ন। এ মেয়ে কি খাইয়ে খাইয়েই মন জয় করতে চায় ? মনের আগে পেট জয় করবে মনে হচ্ছে !
💖💖💖💖💖
সায়নের ফিরতে দেরি হয় রাতে। রাজুকে ততক্ষনে শুইয়ে দেয় পুষ্প। নিজেই বেড়ে খাওয়ায় স্বামী কে। সায়ন বেশ বিরক্ত বিরক্ত মুখ করলেও আজকাল বেশ বোঝা যাচ্ছে তার ও এতে অভ্যেস হয়ে গেছে। পুষ্পর এই বসে খাওয়ানো, টিফিন দেয়া, চিরকুট, বিছানা করে দেয়া… সবকিছুতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে সায়ন।
রাত দশটায় ক্লান্ত সায়ন দরজায় বেল বাজাল। কেউ খুলছে না দরজা। পুষ্প কোথায় !! অস্থির লাগছে সায়নের… দশ মিনিট বেল বাজাতে রাজু উঠে এসে খুলল। তাকে একচোট বকাবকি করে পুষ্প কে খুঁজল সায়ন। নেই নেই… কোথাও নেই !
বড্ড বিরক্তি এসে গিয়েছিল সায়নের… এই জোর জবরদস্তির সম্পর্কে। আজ পুষ্প হয়ত তা বুঝতে পেরেই সরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সায়ন আর আজ খুশি হতে পারছে না। কোথায় গেল মেয়েটা এমন হুট করে !!