#হালাল_প্রেমের_গল্পকথন -৫
Tahrim Muntahana
~ আম্মু, তোমার ছেলে তোমার হাতের বিরিয়ানি খেতে চেয়েছে।
কিছুক্ষণ হলো বাবার বাড়িতে পা রেখেছে তাহু। বোরকা ছেড়ে, হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে কৃত্রিম বাতাসে খানিক বিশ্রাম ও নিয়েছে। যখন বর এসে বললো সে এখন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবে, তাহু আর শুয়ে থাকতে পারলো না। নিজের প্ল্যান মাফিক মায়ের কাছে বায়না টা করেই ফেললো। মিসেস বিথী কিছুক্ষণ মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইলেন। তাহু তেমন একটা প্রতিক্রিয়া দেখালো না বরং ভাবালেশ ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো মুচকি হেসে। মিসেস বিথীও জামাইয়ের ইচ্ছে মতোই রান্না চাপালো, অথচ ধরতেই পারলো না তার মেয়ের পরিকল্পনা। মা কে রান্নার কাজে ব্যস্ত দেখে এক ছুটে নিজের ঘরে ঢুকে পড়লো তাহু। তাযিন কে উদ্দেশ্য করে বললো,
~ আপনার তো আজ যাওয়া হবে না। আম্মু বিরিয়ানি রান্না করছে, না খেয়ে যেতে পারবেন? আর রান্না শেষ হতেই তো অনেক রাত হয়ে যাবে, বলছিলাম আপনি কালকেই যান!
~ অসম্ভব, আজ থাকতে পারবো না। আম্মুকে এসব করতে না বলো।
~ আমি বলতে পারবো না, আপনার এত দরকার যাওয়ার, আপনি বলেন। আমি এখন ঘুমাবো, রাতে উঠে মজা করে বিরিয়ানি খাবো। একবার ভাবেন, বিরিয়ানি আপনার কত্ত প্রিয়!
তাহুর কথা তাযিন শুনলো না। তার আজকে না গেলেই নয়, গুরুত্বপূর্ণ এক কাজ আছে। তাই তাহুর সাথে আর কথা না বাড়িয়ে শাশুড়ির কাছে চলে গেলো। গিয়েই বললো,
~ আম্মু আজকে এসব করার দরকার নেই, রাত হয়ে গেছে। আমার যেতে হবে, আরেকদিন এসে খাবো!
মিসেস বিথী কোনো কথায় শুনলেন না। বরং কড়া কন্ঠে বললেন,
~ চুপচাপ ঘরে গিয়ে বিশ্রাম কর। আগে তো আবদারের ঝুলি নিয়ে বসতি, এখন শাশুড়ি হয়েছি বলে কি আবদার করা যাবে না? বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে করছে আমাকে বললেই হতো।
তাযিন কিছুক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো শাশুড়ির দিকে। সে কখন বললো বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে করছে? তার আর বুঝতে বাকি রইলো না এসব কিছু তার বউ নামক পন্ডিতের। রাগ করতে গিয়েও হেসে ফেললো তাযিন। মিসেস বিথী কে বুঝতে না দিয়ে বললো,
~ কি যে বলো না, আম্মু। এখন তো আবদার আরো বেশী করে করবো। তবে তুমি একা একা কাজ করছো কেন? আমি সুনু কে পাঠিয়ে দিচ্ছি!
বিনিময়ে মিসেস বিথী মুচকি হাসলো। তাযিন ঘরে গিয়ে দেখলো ফোন টিপছে তাহু। ফোনটা হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বললো,
~ ঘুমাবে বলে? ফোন কেন হাতে?
~ ঘুম আসছে না এখন, দিন ফোনটা।
~ ঘুম আসছে না? আচ্ছা চলো, আম্মুকে কাজে সাহায্য করবে। আমাকে রেখে দেওয়ার জন্য এত পরিকল্পনা, যাও কাজ করো।
জিভেতে কামড় বসালো তাহু। এই রে লোকটা ঠিক ধরে ফেলেছে। চটজলদি বললো,
~ আমি কিন্তু মিথ্যা বলিনি, আপনি সেদিন বললেন না? আম্মুর হাতের বিরিয়ানি আপনার খুব পছন্দ। তো আমি তো ভাবতেই পারি আপনার খেতে ইচ্ছে করছে কারণ আমার কিছু খেতে ইচ্ছে করলেই ওই খাবার নিয়ে যত ভালো ভালো কথা বলতে থাকি। আম্মু, আব্বুও বুঝে..
মুখে হাত চেপে ধরে তাহু। কথায় কথায় নিজের সব তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছে। আমতা আমতা করে আবার কিছু বলবে তাযিন সেই সুযোগ দিল না। টেনে তুলে রান্নাঘরে পাঠিয়ে দিল। তাহু ছলছল নয়নে হাসি মাখা বদনে এরকম টাইপ মুখ করে আম্মুকে সাহায্য করলো কাজে। মনে মনে বললো, এমন ধুরন্ধর জামাই সবার হোক, সে কেন একা সহ্য করবে!
…
সময় টা এখন রাত দশটা বেজে এগারো মিনিট। খাওয়ার জন্য আসন পেতে বসেছে সবাই। মিসেস বিথী মেয়ের জামাই কে খুব যত্ন নিয়ে খাবার বেড়ে দিলেন। তাহু তখন শসা কাটতে ব্যস্ত। নিজের মায়ের এমন গদগদ ভাব দেখে মুখ বেঁকিয়ে নিজের কাজ শেষ করলো সে। তাহুর নানা নাতিন জামাইয়ের সাথে বেশ আমোদেই কথা বলছে, আগে ছিল নাতি, এখন যুগ হয়েছে নাতিন জামাই! মিসেস বিথী খেতে ডাকতেই দুজন এসে বসলো। খেতে শুরু করলো, তবে তাহু চুপচাপ বসেই আছে। তা দেখে মিসেস বিথী বলে উঠলেন,
~ আহম্মকের মতো বসে আছো কেন? তোমাকে খাইয়ে দিয়ে আমি খাবো, জলদি আসো।
মুহূর্তেই দাঁত কেলিয়ে হেসে তাহু মায়ের পাশে বসলো। লোভ সামলাতে না পেরে এক লোকমা মুখে নিয়েই থেমে গেল সে। খাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেছে। মায়ের দিক তাকিয়ে নিম্নস্বরে বললো,
~ আম্মু বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেছি!
মিসেস বিথী মেয়েকে ধমক দিলেন না বরং নরম সুরে বললেন,
~ ‘বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহ’ এটি বলো। খাবার আগে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে বিকল্প পথ হিসেবে এই দোয়াটি পড়তে হয়।
তাহু তাই করলো। খাওয়া যখন প্রায় অর্ধেক হয়ে এসেছে কেশে গলা ঝেড়ে ঘরে প্রবেশ করলেন তারেক ইসলাম। সালাম দিতেই তাহুর নানি বলে উঠলো,
~ খাবার বয়ছি গো, সালাম ফিরাইতে পারমু না।
~ এসব কুসংস্কার নানিবুড়ি। কোরআন ও সহিহ হাদিসে এর কোনো রকম হাদীস, ব্যাখা নেই। বরং ইসলামে কিছু নির্দিষ্ট সময় বা পরিবেশ বাদে সবসময় সালাম প্রদানের কথা বলা হয়েছে। আর তুমি যেটা মনে করে বলছো সেটা হলো হাত মোসাফাহার! খাওয়ার সময় হাত মোসাফাহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।
থামলো তাহু। আবার দুষ্টুমির সুরে বললো,
~ এরকম ভুল ধারণা থেকে বের হও, শেখার কোনো বয়স নেই। আমার কাছে শিখবে, তুমি ছাত্রী আমি শিক্ষক। আজ থেকে আমাকে মেডাম বলে ডাকবে, সম্মান দিয়ে কথা বলবে! বুঝছো?
মিসেস বিথী চোখ রাঙালেন। তারেক ইসলাম নিজেও হাত মুখ ধুয়ে খেতে বসলেন। আর কোনো রকম কথা হলো না খাওয়ার সময়। খাওয়ার সময় কথা বলতে নেই।
“ইসলামের অনন্য সৌন্দর্য প্রকাশ পায় সালামের মাধ্যমে। সালাম পরস্পরে সম্পর্ক বৃদ্ধি করে, ভালোবাসা গভীর করে। সালাম আরবি শব্দ, এর অর্থ হচ্ছে শান্তি, প্রশান্তি, কল্যাণ, দোয়া, শুভকামনা।
‘সালাম’ আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে অন্যতম। (সুরা-৫৯ হাশর, আয়াত: ২৪)
বেশি বেশি সালাম প্রদানের ব্যাপারে নবী (সা.) আমাদের আদেশ করেছেন। আজান, ইকামত, নামাজ, ইস্তিঞ্জা ইত্যাদি ছাড়া বাকি সর্বাবস্থাই সালাম দেয়া যায়।
খাওয়ার সময় সালাম আদান প্রদান করা যাবে না এমন কোনো বিধান ইসলামে নেই। শায়খ আব্দুর রহমান আস সাহিম বলেন,
“সমাজে প্রচলিত খাওয়ার সময় সালাম দেয়া যায় না বলে যে কথাটি রয়েছে তা সালামের ব্যাপারে নয়, মোসাফাহার ব্যাপারে। সুতরাং সালাম দেয়া ও নেয়াতে কোনো সমস্যা নেই।”
(সাখাবী, আল-মাকাসিদ, মোল্লা কারী, আল আসরার, আল-আজলূনী, যারকানী)”
…
খাওয়া শেষে বাড়ির পুরুষ তিনজন বসেছে বাহারি আলাপে। আলাপের টপিক হচ্ছে তারেক ইসলামের ছোট মামার পরিবার ছোট খাটো এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। দায়িত্ব তার উপরেও পড়েছে। তারেক ইসলাম হুট করেই শাশুড়ি কে উদ্দেশ্য করে বললেন,
~ আম্মা, আপনার ভাই রা কি আসবে? দাওয়াত দিতে বললো তো।
~ নানির ভাই রা কেন আসবে? সেরকম তো কোনো যোগাযোগ নেই, একটা বার ফোন ও করে না। এর আগের বার ও অনুষ্ঠানে এসেছিলো।
তাহুর কথায় হাসলো তারেক ইসলাম। মেয়ে জানে না দেখে অবাক হলেন না। না জানারই কথা। বললেন,
~ তোমার নানা নানি মামাতো-ফুফাতো ভাই-বোন ছিলো। ফুফাতো ভাই রা তো দাওয়াতের পাওনাদার আব্বা। নিকটবর্তী আত্মীয়দের হক রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। হাদীস শুনোনি?
“রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তার বন্ধন ক্ষুণ্নকারী ও মদখোর কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না!”
(সহিহ বুখারি ও মুসলিম শরিফ)
অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো তাহু। কি বলে? হঠাৎ করেই কিছু একটা মনে হতেই কিছুটা শব্দ করেই হাসলো সে। হেসেই বললো,
~ কি আশ্চর্যের ব্যাপার। নানা নানিবুড়ি কাজিন কাপল, আব্বু-আম্মু ও কাজিন কাপল, আমরাও কাজিন কাপল। এখন আর কোনো ছেলে কাজিন অবশিষ্ট থাকলে আপুকেও বিয়ে দিয়ে দাও। ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং হবে।
চোখ রাঙালো তাযিন। তাহু পাত্তা দিলো না। মিসেস বিথী এসে সবাইকে ঘুমানোর কথা বলতেই তাহু তড়িঘড়ি করে বললো,
~ আমি আজ নানিবুড়ির সাথে ঘুমাবো।
কারোরই বুঝতে বাকি রইলো না তাহুর পরিকল্পনা। রাত জেগে নানির সাথে গল্প করবে, শুনবে তাদের বিয়ের কাহিনী। তারেক ইসলাম নিজের ঘরে চলে যেতেই তাযিন একপ্রকার টেনে ঘরে নিয়ে গেল তাহুকে। এই মেয়ের মাথার যে ভুত চাপে কার্য হাসিল করা ছাড়া নামে না। বুড়ো মানুষ টাকে অযহত কষ্ট দিবে। ভাবনা মতো কাজ করতে না পেরে জেদ চেপে বসলো তাহুর। রাগ করে কোনো রকম কথা না বলেই শুয়ে পড়লো। তাযিন ও কিছু বললো না, এই মুহুর্তে কিছু বলা মানে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা! জেনে বুঝে কেই বা এমন করতে চায়? রাতটা চলে গেল সেভাবেই। ভোরে ঘুম থেকে উঠেই নামাজ কায়েম করে তাহু ছুটেছে নানির ঘরে। রাতে যেন ঘুমাতেও পারেনি। নানিকে উদ্দেশ্য করে বললো,
~ এই বুড়ি, তুমি আমাকে আগে বলো নাই কেন নানা তোমার ভাই ছিলো?
~ আমি কি জানতাম নাহি তুমি জানো না।
~ তাও ঠিক, আচ্ছা বলোতো তোমাদের বিয়ে কি করে হয়েছে?
~ আমি তহন ছোড, একদিন আব্বা কইলো বিয়া। আগেকার যুগে বাপ মায়ে যা কইতো তাই মানতো হগলে । আগে তোমার নানার কোলে উইঠা কত ঘুরতাম।
~ হাই হাই কি কও? তারমানে নানা তোমার থেকে অন্নেক বড়? তাহলে তোমাকে বুড়ি লাগে বেশী কেন?
~ মাইয়া মানুষ কুড়িতেই বুড়ি। বেডা মানুষদের মতো শইল না তো আমাগর। তুমিও তোমার জামাইয়ের আগেই বুড়ি হবা।
~ মুটেও ন! বুড়ি বয়সে আমি রূপচর্চা শুরু করবো, যাতে আমাকে বুড়ি না লাগে। তখন মানুষ বলবে তাযিন বুড়োর কম বয়সী একটা বউ আছে।
বলেই হেসে উঠলো তাহু। তাহুর নানিও হাসলো। তাহু আবার বললো,
~ আম্মুও কি আব্বুর কোলে উঠে ঘুরতো?
~ না রে, তোমার আব্বু তো আমার হাতেই মানুষ। তোমার দাদুর যহন আরেক জায়গায় বিয়া হইলো তহন তারেক রে ওর নানির কাছে রাইখা গেছিলো, আমিই বড় করছি। বিথীর দাদি আছিলো বউ জ্বালাইনা মানুষ, কত কাজ করাইতো আমারে দিয়া, ২৩-২৪ জন মাইষের রান্দন একাই করতে হইতো তাও আবার পাটায় মরিচ বাইট্টা। বড় হইয়া যহন তোমার মামা অন্যখানে বাড়ি করলো আমাগর নিয়া যাইতে চাইছিল, তারেকের মায়ার পইড়া আর যাই নাই। বড় হইয়া বিয়া করলো বিথী রে।
তাহু অবাক হলেও মুচকি হাসলো। এমন শাশুড়ি যে তার কপালে পড়েনি হাজার হাজার শুকরিয়া উপর ওয়ালা’র কাছে। বউ জ্বালানো শাশুড়ি তাহুর কপালে পড়লে হয়তো প্রতিদিন ঝগড়া হতো, তাহু আবার এরকম কিছু সহ্য করতে পারে না। নানির দিকে তাকালো তাহু। ননদের ছেলের জন্য কেউ এত করে কি না কে জানে! আদুরে গলায় বললো,
~ তুমি খুব ভালো নানিবুড়ি। তোমার শাশুড়ি তোমার মতো ছেলের বউ পেয়ে ভাগ্যবতী ছিলো, তবে বেশী দিন সেই ভাগ্যের খেলা টিকে নি, হয়তো নিজের কর্মেই এমন হয়েছে, আল্লাহ’ই ভালো জানেন। এবার আমি যাই।
নিজের ঘরে গিয়ে দেখলো তাযিন ঘুমিয়ে পড়েছে। তাহুও শব্দ না করে তাযিনের পাশে শুয়ে পড়লো। ঘুম থেকে উঠলো বেশ দেরীতে, হয়তো এখনো উঠতো না যদি না কেউ পা না টানতো। চোখ ঢলে সামনে তাকাতেই তাযিনের রাগী মুখশ্রী দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল তাহু। তাযিন বললো,
~ এমন ঘুম আমি বাপের জন্মে দেখি নি। কখন থেকে ডাকছি? উঠ তাড়াতাড়ি, কাজচোর একটা, যা কাজ কর!
~ আপনার মতো সৎ জামাই যার ঘরে আছে তার জীবন শেষ হতে বেশী দেরী লাগবে না। যান তো আমার চোখের সামনে থেকে।
তাযিন কপট রাগ দেখিয়ে ঠাস করে এক চড় বসাতেই তাহু তাযিনের চুল খামচে ধরলো। তখনই তাযিন খানিক জোরে বলে উঠলো,
~ চুল ছাড় বেয়াদব। রাতে আমাকে ঘুমোতে দিস নি, এভাবে কেউ ঘুমায়? লাথি দিস, মুখের উপর হাত তুলে দিস।
লজ্জা পেল তাহু। ঘুমের মধ্যে কি আর তার হাত আছে? তাযিনের কাছ ঘেঁষে বসে বললো,
~ এই কথাটা কাউকে বলবেন না, আম্মুকে তো না ই। আমাকে ঝাঁটা দিয়ে মারবে। প্লিজ! আপনি আমার আপন জামাই হয়ে এমন শত্রুতা করবেন? আমি আপনাকে কত ভালোবাসি জানেন?
তাযিন হেসে উঠলো। স্বামী স্ত্রীর ব্যাপার এসব সে কোন মুখে বলবে? অথচ এই বোকা মেয়ে কতকিছু ভেবে ফেলেছে। তবে বুঝতে দিল না, তাহুকে একটু টাইট দিতে বললো,
~ আমার পা ব্যাথা করছে, টিপে দাও! তাহলে ভাববো বলবো কি বলবো না!
তাহু কোনোরকম শব্দ ব্যয় না করেই বরের পা টিপতে লাগলো। তাযিন অল্প না একটু বেশীই অবাক হলো। সে তো ভেবেছিলো পিঠের উপর গুড়ুম করে পড়বে একটা। তাযিনের অবাক হওয়ার ভঙ্গিমা দেখে তাহু বললো,
~ আমি যদি স্বামীর আনুগত্য করি, সেবা করি, মান্য করি উপর ওয়ালা আমাকে চিরশান্তির জান্নাত দান করবেন, যেখানে আমি আর আপনি যুগ যুগ বসবাস করবো। এমন সুযোগ হাত ছাড়া করা যায় না বলুন!
তাযিন কিছুক্ষণ স্তব্দ হয়ে তাকিয়ে রইলো অর্ধাঙ্গিনীর দিকে। তারপর হুট করেই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিল। তাহুও চুপচাপ স্বামীর বক্ষে স্থান করে নিল। স্বামী-স্ত্রীর একান্তে সময় কাটানোও যে ইবাদত, সওয়াব লেখা হয়!
মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৬৬১ নং বলা হয়েছে,
“কোনো নারী যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রমজানের রোজা রাখে, নিজের সতীত্ব রক্ষা করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে, তাহলে তাকে (কিয়ামতের দিন) বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করো।”
চলবে…?
(রিয়েক্ট করার অনুরোধ রইলো। অনেক অনেক শুকরিয়া)