#তোমায়_দিলাম_কফির_নিমন্ত্রণ
By #Arifa_Afroze
#পর্ব_৬
.
.
.
২ কিংবা ৩ এপ্রিলের গল্প..
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার বাঁশি ছিল আর আগন্তুকের আছে হাসি,বাঁশিওয়ালা থেমেছিল পাহাড়ের উপর আর আমার আগন্তুক থামলো হাসপাতালের বাইরে ছোট্ট একটা খাবার দোকান এ।
–হাসপাতালের এত কাছে এই দোকান অথচ আমার কখনো চোখেই পড়েনি!!এত রাত অবধি খোলা থাকবে আপনি জানলেন কি করে?
পাশের ছোট লাল টুলটায় বসতে বসতে বলে উঠলাম আমি।সামনে রেশাদ ভাই বসা।
–ছাত্রজীবনে অনেকবার এসেছি এখানে,রাত বিরেতে ক্ষুদা লাগলে ফ্রেন্ড সার্কেলের সবাই এখানে চলে আসতাম,তাই নাম দিয়েছিলাম ফ্রেন্ডস রেস্তোরাঁ।
–মামা,কি আছে খাওয়ার??
সামনে এক বুড়ো লোক কে দেখে বলে উঠলেন রেশাদ ভাই।
–মামা তরকারি তো শেষ।কি খাইতেন?
–দুইটা ডিম ভাজি করে দাও।তাইলেই চলবে।আর,মিস কফি এখানে কফি পাওয়া যাবেনা কি খাবেন?
আমার চেহারায় কপট অভিমান দেখে হাসতে হাসতে রেশাদ ভাই আবার বলে উঠলেন,
–দুইটা লেবু চা দিও খাওয়া শেষে।
–একটা প্রশ্ন করব?
কি মনে করে বলে উঠলাম।
–হুম,করো।
–আপনি সত্যি কফি খান না?
–না,আরুশি।আমি সত্যি কফি খাইনা।কফি আমি সহ্য করতে পারিনা।সেদিন অন্য কিছু খাওয়ার নেমন্তন্ন জানালে ভালো করতে।
রেশাদ ভাই এর চোখেমুখে আবার সেই দুস্টুমি ফুটে উঠছে সাথে আছে মুচকি হাসি।এবার আর রাগ হলোনা আমার।আমি শুধু তাকিয়ে রইলাম একদৃষ্টিতে,সত্যি কি এই মানুষটার প্রেমে পড়েছি আমি?উত্তরটা নিজেই দিলাম।’হুম পড়েছি বৈকি।আমার একলা আকাশে তাকে সূর্য বানিয়ে ঘুরছি প্রতিনিয়ত।বাইরেও আজ সেদিনের মত বৃষ্টি পড়ছে।রেশাদ ভাই এর সাথে মুখোমুখি বসে আমি,স্বপ্ন না সত্যি??চোখ খুললে আবার সেই বাস্তবতার ধূসর মরুভূমিতে আবার হারিয়ে যাবো নাতো!!’
●●●
দুইদিন না থাকায় আজ বেশ সকাল সকাল রেডি হয়ে বাড়ি থেকে বের হলাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।বাসে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে সেই রাতের ঘটনা ভাবছিলাম।সেদিনের একসাথে খাওয়া, আমাকে হোস্টেল অবধি পৌঁছে দেয়া,সত্যি কি তার মনেও কিছু আছে?ভাবতেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম।এই ঘটনার পরে কয়েকদিন যেন স্বপ্নের মত লাগল।রেশাদ ভাই এর সাথে সম্পর্ক আগের থেকে অনেক সাবলীল,ওটির মধ্যে আমাকে টিজ করা,কাজ নিয়ে বকা দেয়া,আমাকে খেপিয়ে হাসাহাসি করা সবকিছুর মধ্যেই কোথায় যেন একটা নতুন সুর শুনতে পেলাম আমি অথবা বলতে হয় আগের সুরেই নতুন গান বাজছে যেন।আর সুরের তালে তালে নেচে যাওয়া আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আরেকবার তাকে নেমন্তন্ন জানাবার।এবার সরাসরি প্রপোজাল দিব।অপমানিত হবো? হলে হবো।তবুও এই সংজ্ঞাহীন অনুভূতি জানার অধিকার আছে রেশাদ ভাই এর ও।
“আআআ,ভাবতেই লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছি,কিভাবে বলব আমি!!!”
–আরুশি।
অমিত ভাই এর ডাকে বাস্তবে ফিরে এলাম।পাশে এপ্রোন পড়া একজন দাঁড়িয়ে,অপরিচিত।
–হুম ভাইয়া,কেমন আছেন?
আমার কৌতুহলী চোখ দেখে অমিত ভাই বলে উঠলেন,
–আমাদের নতুন ট্রেইনি ড.রায়া।রায়া ও আমাদের আরেক ট্রেইনি..
–ড.আরুশি,তাইতো?
পাশ থেকে বলে উঠল,মেয়েটি।
–এই কয়েকদিন এ তোমার সম্পর্কে অনেক শুনেছি।আমি রায়া,তোমাদের এক ব্যাচ সিনিয়র,তুমি করে বললাম কিছু মনে করোনা।
–আরে না না আপু,কি বলেন।আগে আপনাকে স্বাগত জানাই আমাদের ছোট্ট পরিবারে,আপনাকে পেয়ে এই ইউনিট এ মেয়ে সার্জন এর সংখ্যা বাড়ল,ভাবতেই ভালো লাগছে।
ড.রায়া,এই মেডিকেল এর ই ছাত্রী ছিলেন,রেশাদ ভাই এর দুই ব্যাচ জুনিয়র।উনি রেশাদ ভাই এর মত ‘মহা’ মেধাবী না হলেও বেশ মেধাবী সেটা শুনলাম সাথে বেশ মিশুক সেটা বুঝলাম এক আলাপের পরিচয়েই।কথা শেষে,রায়া আপু রোগী দেখতে চলে গেলে আমি প্রীতির কাছে গিয়ে বললাম,
–ওনাকে এত চেনাচেনা লাগছে কেন বলতো?
–আরে সেদিন পহেলা বৈশাখে রেশাদ ভাই এর সাথে গান গাইলত।ওনার গার্লফ্রেন্ড।
প্রথমবার থমকে দাঁড়িয়েছিলাম এমন রেশাদ ভাই কে সামনে দেখে আজ আরেকবার,আরেকবার থেমে গেল আমার চিন্তাভাবনা।গার্লফ্রেন্ড!!!যে ভয়টা বারবার উঁকি দিয়েও দরজা থেকে আমার খুশির জন্য চলে গিয়েছিল,সে যে আসলে বাইরে দাঁড়িয়েছিল এভাবে আমার রূপকথার ঘর অন্ধকারে ভরিয়ে দিতে,বুঝতে পারিনি।কোথা থেকে চোখের কোণে বিন্দু বিন্দু জল জমা শুরু হল।ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয়েছি মূর্তির মত সেই মোক্ষম সময়ে রেশাদ ভাই এর আগমন,
–রায়া,চলো।শফিক স্যার ডাকছেন।
পেছন থেকে হাসিমুখে রুমে ঢুকল রায়া আপু।
এবার আমার দিকে দৃষ্টি পড়ায় রেশাদ ভাই বলে উঠলেন,
–আরে মিস কফি যে!কেমন কাটল ছুটি?
–মিস কফি!!!ঘটনা কি?আমি কি কিছু মিস করেছি নাকি রেশাদ ভাই?
কৌতুক ভরা প্রশ্নার্ত চোখে রায়া আপু বলে উঠল পাশ থেকে।
–আরে কি মিস করবে?
–না না।নিশ্চই কিছু আছে।আরুশি তুমি বলো।
আমি সেসময় চোখ তুলে তাকানোর পর্যায়েও নেই।তখন শুনলাম রেশাদ ভাই বলছেন,
–আরে তেমন কিছুনা।মিস কফি আই মিন মিস আরুশি আমাকে একবার কফির নেমন্তন্ন জানিয়েছিলেন, যখন আমাদের পরিচয় ই হয়নি।লাভ এট ফার্স্ট সাইট মে বি!!তাইতো নাকি,আরুশি?
বলেই তার বিখ্যাত বিদ্রুপাত্মক হাসি দিলেন।
–আয় হায়, কি রোমান্টিক!!!আরুশি তোমার তো দারুন সাহস।আমার তো ভাইয়াকে ‘পছন্দ করি’ এই কথাটা বলতেই তিন বছর লেগেছিল আর তুমি প্রথম দেখাতেই..ওয়াও!!!উত্তরে কি বলেছিল বলোতো ভাইয়া?? ভাইয়া আমাকে না জানিয়ে সত্যি ইনভাইটেশন একসেপ্ট করে ফেলছ নাকি?আমি কিন্তু রাগ করবো তাইলে।
এবার সত্যি চোখের পানি ধরে রাখা কঠিন হয়ে গেল আমার জন্য,প্রথম ধাক্কা সইবার আগেই রেশাদ ভাই এর এমন ধাক্কার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না।আমার উত্তরের আগেই ঠিক সেই মুহূর্তে তিয়াসের আগমন।ওকে দেখেই আমি বলে উঠলাম,
–ওহ তিয়াস,তুই এসে গেছিস, চল।রায়া আপু আমি আসছি,আমার ফ্রেন্ড দেখা করতে আসছে।
এইটুকু কথা বলার শক্তি ছিল তাই বলে তিয়াসের সাথে বের হয়ে এলাম।পিছনের মানুষটার মুখভঙ্গি দেখা হল না আর।
●●●
পহেলা বৈশাখ বিকেল বেলা…
–আরুশি।
–আরে তিয়াস,দোস্ত,কেমন আছিস?অনেকদিন পর দেখা,ঢাকায় এলি কবে?
–এইতো লাস্ট উইক এ,তোর খবর কি?
–এইতো চলছে আমার।তোকে অনেক ধন্যবাদ দোস্ত।সেদিন জার্নাল গুলা দিয়ে অনেক হেল্প করেছিস আমার।
–আরে কি বলিস!!এতে থ্যাংকস এর কি আছে?
–আরে ভুলেই তো গেছি,প্রীতি ও আছে আমার সাথে। চল, ওর সাথে দেখা করিয়ে দেই। মেয়েটা যে কই গেল!!বোধহয় মেলার স্টলে ঘুরছে, চল যাই।
আমি মেলার একপাশে খানিকটা দূরে নির্জন জায়গায় ঘাসের উপর পা এলিয়ে দিয়ে বসে ছিলাম,হাতে একটা শরৎচন্দ্রের বই।আমার বই পড়া দেখে বিরক্ত হয়ে প্রীতি একা একাই মেলায় ঘুরছে।এর মাঝেই তিয়াসের আগমন।আমি উঠতে নিলে তিয়াস হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল,আর আমাকে অবাক করে দিয়ে একটা লাল গোলাপ বের করে বলে উঠলো,
–আই লাভ ইউ আরুশি।
–আই লাভ ইউ টু।হা হা হা।কি একটা পোজ দিছিস রে,সত্যি সত্যি মনে হচ্ছে।
ওর হাত থেকে ফুলটা নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে শাড়ীর ময়লা ঝাড়তে ঝাড়তে বললাম।
–সত্যি ই।।।।অনেকদিন ধরে বলার চেষ্টা করছিলাম,আমি জানি তুই ইন্ট্রোভার্ট।মেসেজ এ বললে অন্যভাবে নিতি তাই আজ সরাসরি বলতে এলাম।
আমার মাথা তখন মোটামুটি খালি,আমি ‘আরুশি’ কে কেও কোনোদিন প্রপোজ করতে পারে প্রথমত সেই ধারণাই আমার ছিল না আর সেটা আবার আমার এত পুরোনো বন্ধু।
–তিয়াস,আমি…
–ইটস ওকে।তোকে এখনই কিছু বলতে হবে না।টেক ইউর টাইম।
–তিয়াস…প্লিজ।আমি কাউকে মিথ্যে আশা দিতে চাইনা।আর তুই আমার এত ভালো বন্ধু যে তোকে তো নয় ই…
–ইটস ওকে আরুশি।আমি তোকে চিনি।তাও চাই একটু সময় নে, দুদিন পরেই না হয় উত্তরটা শুনব তোর কাছ থেকে।
এই ঘটনায় যতটা উদ্বেল ছিলাম তার সমস্তটাই উবে গেল সন্ধ্যায় রেশাদ ভাই এর গানে।
●●●
তিয়াস কে সাথে নিয়ে বের হয়ে এলাম ঠিক ই কিন্তু চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারলাম না।বাচ্চাদের মত কাঁদতে শুরু করলাম।আমার অবস্থা তিয়াস কতটা বুঝেছিল জানিনা,কিন্তু কোনও প্রশ্ন ও করেনি।শুধু আমার উত্তর বুঝে গেছে এই বলে বিদায় নিয়েছিল।আর আমি তখনও অঝোরে চোখের পানি ফেলছি।
-কেন আরুশি,কেন কাঁদছিস?এটাই তো নরমাল,দুদিনের দুটো মিষ্টি কথার মানে তো ভালোবাসা না।তুই এত বোকা!!!!
সত্যি বোকার রাজ্যে বসবাস করি আমি।কি বুঝে কেনই বা এমন একজন মানুষের প্রেমে পড়তে গেলাম যার বৃত্তের বাইরে আমি।
●●●
আজকাল রেশাদ ভাই কে খানিকটা এড়িয়ে চলি।ওনারও আমাকে দরকার হয়না খুব একটা,তার মোটামুটি সব রোগী রায়া আপুই দেখে।আমার জন্যও ভালো হয়েছে,সেদিনের সেই অপমানের পর পারতপক্ষে ওনার সামনে যাওয়ার দরকার হয়না।আর যাওয়ার পথ যেটুকু খোলা ছিল সেটাও বন্ধ হয়ে গেল রেশাদ ভাই এর এম আর সি এস পার্ট বি পরীক্ষার কারণে।আজকাল বেশিরভাগ সময় ই তিনি ছুটি কাটান আর নাইলে জরুরি কাজ সেরেই লাইব্রেরিতে ছোটেন।আর এই সব কিছুতেই ওনার সাথী রায়া আপু,উনিও ভাইয়ার সাথেই পরীক্ষা দিবেন।আজকাল আমার লাইব্রীরিতে যাওয়া বন্ধ,পাছে দেখা হয়ে যায় ওনার সাথে এই ভয়ে।তবুও একদিন ব্যাড লাক এর জোরে দেখা হয়েই গেল,
–আরে আরুশি,কি অবস্থা?লাইব্রেরীতে কি করো?
পরদিন সার্জারির জন্য একটা বই ইস্যু করতে এসে রায়া আপুর সাথে দেখা।
–হুম আপু,এইতো চলছে।এই বইটা নিতে এসেছিলাম।
কথা শেষ করার আগেই পিছনে রেশাদ ভাই কে দেখতে পেলাম।আজকাল ওটি তেও কম যান তাই অনেকদিন পর প্রথমবারের মত আগন্তুকের চেহারা দেখলাম,হাসি ছাড়া।
–এই বই টা খুব ভালো।পড়ো কাজে লাগবে।আচ্ছা আমরা কফি খেতে যাচ্ছিলাম,তুমিও চলোনা আমাদের সাথে।
‘কফি!!’
তার মানে রেশাদ ভাই কফি খান।শুধু আমার নেমন্তন্ন প্রত্যাখ্যান এর জন্যই বলা,’আমি কফি খাইনা’।
ঠিক কি হল জানিনা একটু রুড ভাবে সাথে সাথে বলে উঠলাম,
–থ্যাংকস আপু।কিন্তু আমার একটু তাড়া আছে।
কথাটা শেষ করে রেশাদ ভাই এর দিকে না তাকিয়েই বের হয়ে এলাম।অভিমান,পুরু অভিমান জন্মেছে এবার।সেই দেয়াল ভেদ করে আর ভালোলাগা ঢুকতে পারবেনা।আর এবার হয়ত এই মোহ,ভালোলাগা, ভালোবাসা যাই বলি সেটা থেকে দূরে সরে আসার সময় হয়েছে।অন্তত আমার সেটাই ধারণা ছিল।
●●●
–আরুশি তুই ঠিক আছিস?
–হুম ,হুম ঠিক আছি প্রীতি।হালকা পেট ব্যথা।
–তাইলে রেস্ট নিতি,আসার দরকার ছিলোনা তো হাসপাতালে।তোকে বেশ পেইল দেখাচ্ছে।বেশি কষ্ট হচ্ছে?
আমি তখন আনমনে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে।আজ আবার সেই ঝুম বৃষ্টি,আর বৃষ্টির সাথে আমার সেই দুঃখ।আজ রেশাদ ভাই ইংল্যান্ড যাচ্ছেন এক মাসের জন্য,পরীক্ষা শেষে ফিরবেন।ততদিনে অবশ্য আমার যাওয়ার সময় চলে আসবে।আর হয়ত দেখাই হবে না।সেটাই ভালো।এই এক পক্ষীয় ভালোবাসা এবার বিদায় জানানোর সময় এসেছে আর চোখের আড়াল হলেই সেটা সম্ভবপর হবে হয়ত।ভাবতে ভাবতেই অজান্তে দুফোঁটা চোখের জল গড়িয়ে পড়ল।
–আরু!!!ঠিক আছিস তুই সত্যি?কাঁদছিস কেন?বেশি ব্যথা?? কোনও স্যার এর সাথে কথা বলব?
আমাকে দেখে বেশ বিচলিত হয়ে গেছে প্রীতি। খানিকটা অবাক করে দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম ওকে,আমার চোখের বাকি জল টুকু আড়াল করতে,
–আরু, আরু…
–ঠিক আছি আমি প্রীতি,একদম ঠিক।ঠিক হওয়ার সময় চলে এসেছে।
প্রীতি কে কথাটা বললাম ঠিক ই কিন্তু রাউন্ডের সময় পেটে হাত দিয়ে বসে পড়লাম প্রচন্ড ব্যথায়,আর সাথে সাথে জ্ঞান ও হারালাম।
●●●
এনেস্থেসিয়ার প্রভাব যখন কমছে আর পেথিডিন এর প্রভাব চালু হচ্ছে ঠিক সেই ঘোরে কি আশ্চর্য এখনো তোমায় দেখছি,’হাসিমুখ আগন্তুক’।
‘এটা যেন স্বপ্ন নয়,সত্যি হোক,সত্যি হোক।’
সেই প্রার্থনায় আবার গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম,ঠোঁটের কোনে প্রচণ্ড ব্যথার মধ্যেও এক চিলতে আনন্দের হাসি।
(( চলবে…))
●●●
(পরিশিষ্ট::
‘এয়ারপোর্ট এর এসি টা কি আজকে একটু বেশিই ঠান্ডা?’
মনে মনে ভাবল রেশাদ।বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে।মিষ্টি বৃষ্টি।এক চিলতে হাসি,কিছু মনে পড়ল বোধহয়।আবার মুখভঙ্গি পরিবর্তন হল এবার সত্যি জরুরি কিছু মনে পড়েছে তাই।হাতের ব্যাগটা খুলে কিছু কাগজপত্র হাতড়ে অবশেষে মাথায় হাত দিয়ে একা একাই বলে উঠল রেশাদ,
-ধুর!! এত জরুরি কাগজটা কিভাবে ভুলে রেখে আসলাম বাসায়!!
মনে পড়তেই ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে অন করল সে।সকালে আসার আগেই অফ করে নিয়েছিল মোবাইল।এখন ফোন দিয়ে ছোট ভাইকে বলবে আনার জন্য কাগজটা।মোবাইল অন হতেই এয়ারপোর্ট এর ওয়াই-ফাই অটো কানেক্ট হয়ে টুংটাং মেসেজ এর শব্দ।বিরক্ত হয়ে শুধু সিন করার জন্য খুলল তাদের হাসপাতালের মেসেঞ্জার গ্রুপ চ্যাট।সেখানে লাস্ট মেসেজ,
“আরুশি কে ওটি তে নিয়ে যাচ্ছি আমরা।ওর বার্স্ট এপেন্ডিক্স সাসপেক্টেড।”
বাইরে ঝুম বৃষ্টি,তাই হয়ত উবার এর গাড়িটা আসতে দেরি হল কিন্তু রেশাদের উঠতে এক মুহূর্ত দেরি হলো না।সাথে পেছনের ঘোষণা ও শোনা গেল।বলেই চলেছে,
‘The passengers of London flight please report in front,this is your last call’ )