” চাঁদ হয়ে রবো ”
~খাদিজা বিনতে হক
পর্ব- ১৫
বাথরুমের ভিতর একটা লাশ।
পচে গন্ধ বের হচ্ছে।বিসশ্রী গন্ধ নাকে গেলে।
পেটের ভেতর থেকে নাড়ি দলাপাকিয়ে।বমির সাথে বেরিয়ে আসার উপক্রম।
তুষার নাক খুলতে পারছে না।
ইচ্ছে করছে।নাক প্লাজ দিয়ে আটকে রাখি।
,
নিজের বাথরুম থেক বের হওয়া এমন দূরগন্ধ পেয়ে তুষারের এমন মনে হলো।
কৌতুহল নিয়ে বাথরুমের কাছে এগোতে
ভর্কে হেলো।সুন্দরি কোনো রমনির লাশ।
ঠিক বুজেছিলো।দ্বীধা নিয়ে লাশটার পাশে জেতে মনে হলো।এটা ওর কোনো পরিচিতো কেউর বডি।
কাছা কাছি যেতে চমকে উঠলো।পৌষী।
পৌষী পরে আছে।নিথর দেহোটা পরে মেজেতে।
ফ্লরের উপর পরা রক্তগুলো জমাট বেধেছে।
তার মানে অনেক আগে মারা হয়েছে।
,
তুষার বুদ্ধিহীনা হয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেসে দাড়ীয়ে।
ওর কি কান্না করা উচিৎ।হ্যা।উচিৎ।
কান্না করা উচিৎ।হাউমাউ করে কান্না করা উচিৎ।
ওর বউ মারা গেছে।নিশ্চই কান্না করা উচিৎ।
কিন্তু ওতো পুরুষ।পুরুষের কান্না করতে নেই।
তাইলে থম দিয়ে বসে থাকা উচিৎ।পিনপতন নিরবতা পালন করা উচিৎ।
ওর বউর মৃত্যু হয়েছে।না কেউ খুন করেছে।
অস্ফুটস্বরে মুখ থেকে বেরিয়ে গেলো।
“খুন!!কে খুন কটেছে!!”
দরজার কাছে দাড়ীয়ে লিজা বেগম বলল
“আমি মেরেছি।।আপদ বিদেয় হয়েছে।।বলল।
কেন তুই খুশি হোসনি!”
এবার তুষারের চোখ লাল হয়ে উঠলো।
মাকে কিছু বলবে।গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।
কেনো সব কথা দলা পাকিয়ে।
গলার মধ্যে আটকে হাসছে।ও প্রচুর ঘামছে।
,
ধরফর করে শোয়া থেকে লাফদিয়ে উঠলো।
তার মানে স্বপ্ন ছিলো।তবে পুরো শরীর ঘেমে নেয়ে একাকার।তুষারের হাতের ফোনটার দিকে চোখ চলে গেলো।পৌষী!!
,
পৌষীর চোখ দিয়ে গলগল করে জল গরিয়ে পরছে।দৌড়ে নিজের রুমে গেলো।
তুষার ফোনটা কানে নিয়ে সব শুন ছিলো।
তখন পৌষী বেরনোর সময়।ফোনটা হাতে নিয়ে বের হয়।তুষার লাইনে ছিলো সব সুনেছে।
নিজের কানকো বিশ্বাস করতে পারছে না।
নিজের কানে না শুনলে হয়তো বিশ্বাস করতো না।
,
সবটা না বুজলেও এটা বুজতে পারছে।
পৌষীর বিপদ।সারা রাত লাইনে ছিলো।
ওর মা এমন জঘন্যতম কাজ করতে পারে ভাবতে পারেনি।
,
পৌষী ড্রয়ার থেকে।পার্ফিউম এর বোতল গুলো বের করলো।
এসব সেই পার্ফিউম।যেগুলো গ্রান ও মাঝে মাঝে পেতো।সেদিন চাবি।আনতে।গিয়ে।
মানে রেশের ফ্লাটের চাবি আনতে গিয়ে।
লিজা বেগমের রুমে ড্রয়ারে পেয়েছে।
,
কিছু একটা মনে করে এগুলো ঘরে নিয়ে এলো।
লিজা বেগম খুজে নি।কারনটা আজ বুজতে পারলো।
যে কিনা ছোটো ছোটো ব্যপারে পৌষীকে দোষ দেয় সে তার রুমের পার্ফিউমের বতল খুজে পেলো না কিছুই বলেনি।
ওনার তো বাড়ী মাথায় তোলার কথা তোলে নি।
,
সবটা সন্দেহ করে।
বতল গুলো নিজের কাছে রেখেছে।
হাতে আরো একটা জিনিস।
কালো শাড়ী।দু জোরা নুপুর।
সব কপালের দোষ ভেবে মেজেতে এক কোনায় গুটি সুটি মেরে বসে রইলো।
,
তুষার ফোনের ওপাশ থেকে হ্যালো!! হ্যালো!!
করে যাচ্ছে।পৌষী কোনো কথাই বলল না।
তুষারের যেনো সকাল হবার বার।
এটুকু সময় ওর কাছে।অসহো নিয়ো লাগছে।
টেনশনে মথা কাজ করছে না।
,
হঠাৎ মনে পরলো।
কেউ একজন ফোন করে পৌষীর সম্পর্কে বাজে বাজে কথা বলতো।প্রথমে বিশ্বাস না করলেও।
সন্দেহের দলা পাকিয়ে।অনেক বড় সন্দেহের ঝর উঠতো ওর মাঝে।
না না ন কারন মিলিয়ে মারতো পৌষীকে ও।
এটা সব থেকে ভুল ছিলো।
ওর নিজের মা এমন একটা কাজ করতে পারে বুজতে পারেনি।পৌষীকে পছন্দ নয় তার সেটা তো আগেই জানতে কিন্তু।এতোটা ঘ্রিনা করে ভাবতে পারে নি।মায়ের কাছে অনেক প্রশ্নের উত্তর জানা বাকি।
,
সকালের ফ্লাইটে চলে এলো বাড়ীতে।
মায়ের সামনে চেয়ারে বসে মাথা নিচু করে জানতে চাইলো কেনো করেছো এসব।
,
লিজা বেগমর স্পষ্ট জবাব।
“ওই ফক্কিন্নীর মেয়েকে বিয়ে করেছিস তাই।ওই মেয়েকে আমার পছন্দ না।
তাছারা তুই তো জানিস ও অন্য পুরুষের সাথে রাত কাটিয়েছে”
,
এই কথটা শুনে তুষারের শ্বাস কষ্টটা বেরে গেলো।
দরজার আড়াল থেকে উকি দিয়ে পৌষী তাকিয়ে।
এতো দিনের সব জট পাকানো প্রশ্ন গুলো খুলছে।
সব কটা উত্তর মানুষ দিতে না পারলেও।
প্রকৃতি দিচ্ছে।প্রকৃতি তার সব শোদ করে।
কারো কিছু বাকি রাখে না।
কয়েক বছর পুরোনো নিকৃষ্টতম কথা সমনে উঠে এসছে।
,
ফ্রিজ থেকে ঠাণ্ডা পানি নিয়ে এসে লিজা বেগম।
তুষারকে দিলো।
“দেখলি।ব্যপারটা তুই ও মেনে নিতে পারিসনি।
ডক্টর কতো করে বলল।তোর এই সমস্যাটা তখনই যাবে যখন।তুই কোনো একটা ব্যপার নিয়ে নিজেকে।অপ্রস্তুত করবি”
,
পৌষীর চোখের কোনায় চিক চিক পানি।
তাহলে তুষারের রোগের কারণ ও।
আগে বললেই পারতো।আমি চলে যেতাম ওর জীবন থেকে।
,
লিজা বেগম।তুষারের কাছে গিয়ে বলল।
“ওই পিশাচ।অশুভ মেয়েটাকে আমাদের জীবন থেকে বের করে দে।আমি তোর ভালোর জন্যই ওকে সরিয়ে দিতে এতো কিছু করেছি।ও চলে গেলে।আমাদের জীবনটা ঠিক আগের মতো হবে।আমি তোকে ওর থেকেও ভালো মেয়ে দেখে আবার বিয়ে দেবো”
,
মায়ের কথা শুনে ভাবলেস হীন ভাবে কিছুখন তাকিয়ে রইলাম।বুকের যন্ত্রনা টা কিছুতেই থামছে না।বুক চেপে ধরে বসে রইলো
বেদ বুদ্ধিহীনা হয়ে বলল
“আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়া উচিৎ মা।
আমরা আলাদা থাকবো।
কই আমার তো এমন কিছুই মনে হয় না।
ওর মাঝে যে কতোটা সত্বীত্ব তা আমি জানি।
আমার মনে হয়।তোমার এগুলো ভুল ধারনা।
আসলে আমি তোমার মতের বাহিরে বিয়ে করেছি তো তাই।এমনটা তোমার মনে হচ্ছে।
কিছুদিন ওকে নিয়ে দূরে থাকলে।সব সমস্যা মিটে যাবে”
তুষার বুকের ব্যথায় কুকরে আবার বলল
“তেমাকে আমি আগেও বলেছি।আমি ওই কথা বিশ্বাস করি না।কেউ আমাদের কান ভাঙিয়ে কথাটা বলছে”
,
লিজা বেগম কপট রাগ্নীত গলায় বলল
“কেউ নয় ওর কাজিন বলেছে কথাটা।শুধু কাজিন কেনো ওর প্রতিবেশীরা।তারাও তো বললো।তা নিয়ে আমি বিয়েটা ভেঙে দিলাম।তোরা দুই ভাই ঢ্যঙঢ্যঙ করতে করতে। বিয়ে করতে চলে গেলি.”
“না মা সবটা আমাদের গুলিয়ে ফেলানোর জন্য।
কেউ পৌষীর ভালো চায় না তাই ওই নিঃক্রীষ্ট্য কাজটা করেছে।”
“চূপ কর।শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করিসনা”
“মা আমাদের ফার্মগেটের ফ্লাটটায় আমি আর পৌষী শিপট হবো”
,
লিজা বেগম কিছু বলল না।
বোকার মতো বসে।কিছুখন অভিমান করে ঘরে ঢুকে দরজার নব বন্ধ করে দিলো।
বিছানার এক প্রান্তে বসে বিড় বিড় করে বলল।
“যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর”
,
,
চলবে,,,
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)