Happily_Married পর্ব ৬+৭

#Happily_Married🔥
#Part_6
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida


তুমি আমাকে মনে করতে পারছো না?(আলিফ দাত চেপে চেপে)

আপনি কি আহামরি কিছু যে আপনাকে মনে রাখতে হবে?(আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)

তোমাকে আমার যে কি করতে ইচ্ছে করতে ইচ্ছে করছে?(আলিফ রাগে গজগজ করতে করতে)

কি করবেন পরে চিন্তা করবেন আগে বলুন আপনি কে?(আমি ভ্রু কুঁচকে)

আমাদের কথোপকথন শুনে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।

জীবনের প্রথম হয়তো কেউ দেখছে নিজের বিয়েতেই বরকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে সে কে?

আমি কিছুক্ষন ভেবে,,
ওই দাড়ান।আমি বর সেজে এসেছেন তার মানে আপনি বর।ভালো কথা কিন্তু আমি কোথায় যেনো আপনাকে দেখেছি।কোথায় দেখেছি?

অনেক কষ্টে করে মনে করলাম
আপনার গাড়ি দিয়েই তো পালিয়ে ছিলাম।আর ধরাও পড়েছিলাম।তারমানে আপনি আমার পালানোর বারোটা বাজিয়েছেন?(আমি অবাক হয়ে)

আল্লাহ বাঁচাইছে।তোমার মাথায় একটু হলেও মগজ আছে।আচ্ছা বলতো এতো তাড়াতাড়ি আমাকে ভুলে গেলে কী করে?(আলিফ দুষ্টু হাসি দিয়ে)

রাখেন মিয়া।আগে বলুন আপনি কেনো আমার পালানোর প্ল্যানের বারোটা বাজিয়েছেন?(আমি)

বারে আমার বউ চলে গেলে আমি বিয়ে করবো কাকে?(আলিফ)

তারমানে আপনি আগে থেকেই সব জানতেন?(আমি চোখ বড় বড় করে)

হুম।(আলিফ মাথা নেড়ে)

এখন প্লিজ বলবেন না।আমার সব গুলো প্ল্যানে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন আপনি?(আমি অসহায় হয়ে)

আমার বউ কতো বুদ্ধিমতী।(আলিফ দুষ্টু হাসি দিয়ে)

আমি খুব কষ্ট করে নিজের রাগ কন্ট্রোল করছি।

আপনার নাম কি?(আমি দাত চেপে চেপে)

আলিফ রায়হান চৌধুরী।(আলিফ ভাব নিয়ে)

আপনার নাম শুনে আমার ছোটো বেলার আলিফ লায়লার কথা মনে পড়ে গেলো।(আমি মজা নিয়ে)

আমার কথা শুনে উনার চোখে মুখে রাগের ছাপ দেখতে পেলাম।আমি কেনো এখানে একা রেগে থাকবো আপনিও একটু রাগেন। মি:আলিফ লায়লা।(আমি মনে মনে বিজয়ের হাসি দিয়ে)

হিয়া আর আলিফের কথা শুনে পিয়াস মিটমিট করে হাসছে।আর পিয়া তো সেই ভয়ে কাপছে।

আপনি শিওর আমাকে বিয়ে করতে চান?(আমি)

অবশ্যই!(আলিফ নিজের রাগ কন্ট্রোল করে)

আমি খুব খারাপ মেয়ে!(আমি)

আমি খুব ভালো করে নিবো।(আলিফ)

আমি রান্না করতে পারি না।(আমি)

রেস্তরাঁ থেকে কিনে নিবো!(আলিফ)

আমি মারপিট করি।(আমি)

বিয়ের পর দুজন মিলে বক্সিং করবো।এমনি আমার ভালো কোনো বক্সিং সঙ্গী নেই।(আলিফ)

আমার মধ্যে মেয়েলি কোনো স্বভাব নেই।(আমি)

ওইটা কোনো সমস্যা নেই।(আলিফ)

আমি ভাবছি আর কি বলা যায়!আমার সব প্ল্যান ফিরে আসছে।আর সামনে বিয়ে দাড়িয়ে আছে।মাথা ভন ভন করে ঘুরছে কোনো প্ল্যান আসছে না।তবে কি এই লোকটা আমাকে বিয়ে করবেই?কি হবে আমার!(আমি মনে মনে অসহায়ের মতো)

হিয়া।আরো কিছু বলার আছে তোমার?না থাকলে কাজী সাহেব বিয়েটা পড়াক।আর যদি থাকে তাহলে বলো আমার কাছেও উত্তর আছে।(আলিফ বিজয়ের হাসি দিয়ে)

না নেই।আজ যথেষ্ট সবাইকে বিনোদন দেয়া হয়ে গেছে।কাজী সাহেব বলুন কি বলতে হবে?কোথায় সাক্ষর করতে হবে?(আমি নিরাশ হয়ে বসে পড়লাম)

হিয়ামনী এই প্রথম কেউ তোর সাথে কথায় পারে উঠতে পারলো।তুই যে কত্তো বড়ো একটা ফাজিল তা আমি ভালো করেই জানি।তোকে জব্দ করতে একমাত্র আলিফই পারবে।এইজন্যই তো আলিফই তোর জন্য ঠিক।(হিমেল সাহেব মনে মনে বিজয়ের হাসি দিয়ে)

এইবার বুঝছো যে কি করে তোমার ছেলে জানতে পেরেছে যে মেয়ে পালিয়েছে!(আলেয়া বেগম মনে মনে)

হুম।কিন্তু বৌমা এমন করলো আমাদের মান সম্মান তো,,,(রামিম সাহেব একটু মনমরা হয়ে)

আমাদের ছেলে বিয়ে করছে এইটা নিয়ে খুশি থাকো।মান সম্মান নিয়ে পরে ভাবা যাবে।(আলেয়া বেগম)

হুম আব্বু।আর ভাবী তো তেমন কিছু করেনি।তাই মান সম্মান নিয়ে ভেবেও কোনো লাভ নেই।(আলিশা)

হুম।আলিফের খুশিতেই আমি খুশি আর কিছুর পরোয়া আমি করি না। ও বিয়ে করতে রাজি হয়েছে এইটাই অনেক বড়ো কথা।(রামিম সাহেব)

দেখলে বলেছিলাম না।তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে সামলাতে পারবে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।দেখলে তো?তুমি শুধু শুধু ভয় পেয়ে ছিলে।(পিয়াস)

হুম।(পিয়া লজ্জা পেয়ে)

পিয়ার লজ্জা মাখা মুখ দেখে পিয়াস হাসতে শুরু করলো।


বিদায়ের একটু আগে
একটু পরেই আমাদের বিদায়,, পিয়া,পিউ আপু,পরি আন্টি,পাবেল আঙ্কেল আমাকে জড়িয়ে এমন করে কান্না করছিলো যে বলে বোঝানো যাবে না।বাবা কিছুক্ষণ আড়ালে দাড়িয়ে থেকে ভিতরে চলে গেলো।
আমি উকি দিয়ে বাবাকে দেখার চেষ্টা করলাম।তখনই আলিফ আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,,

যাও গিয়ে বাবার কাছে বিদায় নিয়ে এসো।তাহলে আর তোমার চিন্তা করতে হবে না।

আপনাকে বলতে হবে না।আমি জানি।আর আমি কারো চিন্তা করি না।বুঝলেন?
বলেই হনহনিয়ে বাবাকে খুঁজতে গেলাম।

জীবনেও নিজের মনের কথা স্বীকার করবে না।(আলিফ মনে মনে)

পিয়া আলিফের কাছে গিয়ে বলল
ভাইয়া আপনি একটু আড়ালে আসবেন আপনার সাথে একটু কথা ছিল।

ওকে।(আলিফ অবাক হয়ে)


আমি গিয়ে বাবাকে খুঁজতে খুঁজতে পেলাম আমার রুমে আমার জিনিস পত্র গুলো নিয়ে কান্না করছে।

আমি রুমে ঢুকে বললাম
এতই যখন আমাকে মিস করবে তবে কেনো আমাকে বিয়ে দিতে গেলে?

কই আমি তোকে মিস করবো?(হিমেল সাহেব কাদতে কাদতে)

করবে না মিস?(আমি কাছে আসতে আসতে)

না করবো না।তুই চলে গেলে আমি আর কারো সাথে ঝগড়া করবো না,তুই চলে গেলে আমাকে আর সকাল সকাল উঠে খাবার বানাতে হবে না,তুই চলে গেলে তোর দুষ্টামির জন্য আমাকে আর কারো জন্য ক্ষমা চাইতে হবে না,তোর ভার্সিটিতে ডাকলে আর আমাকে যেতে হবে না,সারাদিন কাজ করে এসে তোর জন্য রাতের খাবার বানাতে হবে না এসেই খালি ঘুমাবো,আর ছুটির দিন কেউ জোরে জোরে গান বাজিয়ে আমার ঘুমের বারোটা বাজাবে না আমি শান্তিতে ঘুমাবো, কারো সাথে আর রেমোর্ট নিয়ে ঝগড়া করতে হবে না শান্তিতে বাংলা ছবি দেখবো।আরো অনেক কিছু আছে যেটা তুই না থাকলে আমি একলা একলা করবো।আমি একলা অনেক মজা করবো।কে বলেছে আমি তোকে মিস করবো?
বলেই বাবা আমার জিনিস গুলো জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে।

আমি তার কাছে গিয়েই তাকে জড়িয়ে ধরলাম।
আমি জানি আমার বাবা আমাকে একটুও মিস করবে না।একটুও না।আমিও আমার বাবাকে মিস করবো না একটুও করবো না।
আমিও বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললাম।আশ্চর্য ব্যাপার হলো এই সব কথাগুলো শুনে যে কেউই কেদে দিতো কিন্তু আমি একটু কান্না করছি না।বরং আমি খুব স্বাভাবিক।তবে আমার মন কান্না করার জন্য আকুল হয়ে উঠছে ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কান্না করি কিন্তু পারছি না।আমি এমনি আমার মনে হয়না আমার বুঝ হওয়ার পর কোনোদিন কেঁদেছি।আজ পর্যন্ত আমার জীবনে যতই কষ্ট হোক না কেনো,যতই দুঃখ পাই না কেনো,,সেটা আমার চোখ দিয়ে কখনই বের হতো না।আমি কান্না করতে পারি না।


একই সময়
আমি যদি ভুল না হই তুমি হিয়ার বেস্ট ফ্রেন্ড,তাই না?(আলিফ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে)

জ্বি ভাইয়া!(পিয়া হাত কচলাতে কচলাতে)

কি কথা ছিল তোমার?(আলিফ)

আসলে ভাইয়া হিয়া যেমন দেখতে তেমন না।(পিয়া)

কি বলতে চাইছো?(আলিফ অবাক হয়ে)

হিয়া ওর বয়সের তুলনায় যথেষ্ট বুদ্ধিমতী।কিন্তু বিয়ে কথা আসলে ওর বোধ শক্তি লোপ পায়।যখনই বিয়ের কথা উঠে তখনই ও নিজেকে গুটিয়ে নেয়।পালাতে চায় বিয়ে থেকে আর এই জন্যই ও এত্তো কাহিনী করলো বিয়ে ভাঙ্গার জন্য।নিজেকে খারাপ প্রমাণ করতেও দ্বিধা করলো না।কিন্তু ও খারাপ মেয়ে একদমই না।(পিয়া)

কি হয়েছে?আমাকে সোজা সাপ্টা বলো পিয়া।(আলিফ)

আসলে হিয়া সম্পর্ককে ভয় পায়।তাই যখনই কেউ ওর সাথে নতুন সম্পর্ক করতে আসে তখনই ও কিছু বুঝে না বুঝেই তাকে রিজেক্ট করে দেয়।হোক সেটা বন্ধুত্ব,আত্মীয়তা আর রিলেশন।তাই যখন বিয়ের কথা উঠলো তখন ও আরো ভয় পেয়ে গেলো তাই ও উঠে পড়ে লেগে ছিল বিয়ে ভাঙতে।(পিয়া)

কিন্তু সম্পর্ক নিয়ে ওর কি ভয়?(আলিফ)

ওর মনে হয় ও কারো সাথে সম্পর্ক করলে সে ওকে ছেড়ে চলে যাবে আর ও হার্ট হবে।ওর কাছে সম্পর্ক ভাঙার কষ্ট অনেক।তাই ও ভাবে যদি কোনো সম্পর্ক তৈরিই না হয় তাহলে ভাঙার ভয়ও থাকবে না।তাই ও সম্পর্ক তৈরিই করে না।সম্পর্কগুলো থেকে নিজের মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে।আমরা হাতে গোনা কয়েকজন লোক আছি যার সাথে ওর সম্পর্ক আছে।(পিয়া)

এইটা কেনো হয়েছে? ও কি আগে থেকেই কারো সাথে সম্পর্ক এ ছিল।যে ওকে ছেড়ে চলে গেছে বলে ওর এই অবস্থা?(আলিফ)

না না ভাইয়া।হিয়া ছোটোবেলা থেকেই এমন।তবে এই ব্যাপারে আমি বেশি কিছু জানি না।আমার সাথে হিয়ার দেখা হয়েছিল যখন আমার আর হিয়ার বয়স পাঁচ বছর ছিলো।যখন হিয়া আর আঙ্কেল আমাদের বাড়ির পাশেই থাকতে আসে।তখন থেকেই হিয়া অন্যরকম ছিল কারো সাথে মিশতে চাইতো না।অনেক কষ্ট করে ওর আমার বন্ধুত্ব হয়।তবে আমি আর আকাশই ওর একমাত্র বন্ধু।(পিয়া)

আকাশ কে?(আলিফ)

আমার আর হিয়ার ছোটোবেলার বন্ধু।আমরা এক সাথে বড়ো হয়েছি।(পিয়া)

ও আচ্ছা।তবে কি তুমি সত্যিই এইসব জানো না কেনো হয়েছে?(আলিফ)

না।তবে আমার মনে হয় ওর মার সাথে কোনো সম্পর্ক আছে এইসবের।(পিয়া)

কেনো?(আলিফ)

আসলে যখন ওরা প্রথম এইবাড়িতে এসেছে তখন থেকে এখন পর্যন্ত আমরা ওর মার মুখ দেখা তো দূরে থাক তার নামও শুনি নি।তার কি হয়েছে?কোথায় আছে?কেমন আছে?বেচেঁ আছে কিনা? আমরা কিছুই জানি না।হিমেল আঙ্কেল না করেছে হিয়ার সামনে যেনো ওর মার কথা আমরা না তুলি।তাই আমরাও কোনো ওর কাছে কিছু জানতে চাই নি।(পিয়া)

ও আচ্ছা।(আলিফ)

ভাইয়া আপনিও কিছু বলতে যাবেন না। ও যদি নিজে থেকে কিছু বলে তাহলে ঠিক আছে।আর ভাইয়া প্লীজ ওর মন থেকে সম্পর্ক নিয়ে যেই ভয় আছে সেই ভয় গুলো দূর করবেন।এইটা আমার অনুরোধ।(পিয়া হাত জোড় করে)

কি করছো পিয়া?তুমি আমার ছোটো বোনের মত।ছোটো বোন হয়ে এইসব করছো!আমি কথা দিচ্ছি আমি আমার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করবো হিয়ার মন থেকে সম্পর্কের ভয় দূর করতে।(আলিফ)

ধন্যবাদ ভাইয়া।(পিয়া কাদতে কাদতে)

হয়েছে আর কাদতে হবেনা।এখন চলো তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে বিদায় দিতে হবে না?(আলিফ পিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে)

হুম।চলুন
পরেই আলিফ আর পিয়া চলে গেলো।
পাশে দাড়িয়ে দাড়িয়ে পিয়াস ওদের কথা শুনে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো।


বাহিরে এখন বিদায়ের পালা
সবার কান্না দেখে আমার খুব খারাপ লাগছে,, বিশেষ করে বাবার।তবে পাবেল আঙ্কেল বাবাকে সামলাচ্ছে।
মন না চাইতেও সবাইকে বিদায় দিয়ে গাড়িতে বসলাম।
গাড়িতে আমি,আলিশা আর আমার বর মশাই।সামনের সিটে বসেছে পিয়াস ভাইয়া।

ভাবী তুমি কাদলে না?(আলিশা)

আমি কাদি না কাদাই।(আমি)

তাহলে এখন কার কাদার পালা।(আলিশা)

আলিফ লায়লা,ভাইয়ার(আমি আর আলিশা এক সাথে)

আলিফ আর পিয়াস,, হিয়া আর আলিশার কথা শুনে হাসতে শুরু করলো।


গাড়ি কতোটুকু যেতে যেতে থেমে গেলো।

কি হয়েছে থামলে কেনো?(আলিফ ভ্রু কুঁচকে)

স্যার গাড়ির পেট্রোল শেষ হয়ে গেছে।(ড্রাইভার)

সামনেই পেট্রোল পাম্প।চলো পেট্রোল ঢেলে নেয়া যাক।(পিয়াস)

পাম্প পর্যন্ত যাওয়ার তেল তো আছে?(আলিফ)

জ্বি স্যার।(পিয়াস)

পরেই গাড়িটা পেট্রোল পাম্পে গিয়ে থামলো।

ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে তেল ভরাতে লাগলো।

তখনই পিয়াসের ফোনে একটা ফোন আসলো,,,
আলিফ আমি একটু আসছি।
বলেই পিয়াস বেরিয়ে গেলো।

তখনই আলিশা বললো
ভাইয়া পানির পিপাসা লেগেছে। একটু পানি আনবি?(আলিশা)

পিয়াস কে বলছি?(আলিফ)

আরে পিয়াস ভাইয়া ব্যাস্ত আছে দেখে পাচ্ছিস না!তুই গিয়ে নিয়ে আয় না।(আলিশা)

আচ্ছা যাচ্ছি।
বলেই আলিফ নেমে পানি আনতে গেলো।

আলিফ চলে যেতেই আমি আলিশাকে বললাম,,
আলিশা আমি একটু ওয়াশরুমে যাবো।(আমি)

আমিও যাই তোমার সাথে!(আলিশা)

না না।তুমি থাকো আমি যাচ্ছি।
বলেই আমি গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলাম।

আমাকে গাড়ি থেকে বেরোতে দেখেই পিয়াস ভাইয়া বলল
কোথায় যাচ্ছো?(পিয়াস ফোনে কথা বলতে বলতে)

একটু ওয়াশরুমে।এক্ষুনি চলে আসবো।(আমি)

আচ্ছা সাবধানে যেও।(পিয়াস আবার ফোনে কথা বলতে বেস্ত হয়ে গেলো)

হুম
বলেই আমি ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লাম।


কিছুক্ষণ পর
আলিশা,তোর ভাবী কোথায়?(আলিফ)

ওয়াশরুমে গেছে।(আলিশা)

কখন?(আলিফ সন্দেহ নিয়ে)

অনেকক্ষন হলো।(আলিশা)

এখনও আসে নি হিয়ামণী?(পিয়াস এসে)

তুই কোথায় ছিলি?(আলিফ)

আমি ফুপির সাথে কথা বলছিলাম।আমিও দেখলাম ও গেলো কিন্তু অনেকক্ষন হয়েছে তো চলে আসার কথা তো।(পিয়াস)

আলিফ আর কিছু না বলেই দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো। ও যেই ভয় করছিল সে ভয়ই হয়েছে।ওয়াশরুমের উপরের অংশে জানালা খোলা।আর ফ্লোরে হিয়ার বিয়ের হাই হিল জুতো জোড়া পরে আছে।

আলিফ হিয়ার হাই হিল জুতো জোড়া হাতে করে বাহিরে এসে,,,
ওই মেয়ে আবার পালিয়েছে।(রেগে)


চলবে,,,,

#দুটি_কথা

#প্রথম
আমার সবচেয়ে বেশি পড়া গল্প #marriage_with_benefits আমি রেগুলার পোস্ট করছি..তেমনি কম পড়া গল্প গুলোও আমি রেগুলার পোস্ট করছি।যদি কোনো কারণে পোস্ট না করতে পেরেছি তখন আমি বলে দিয়েছি।এখন পর্যন্ত আমি সব গুলো গল্পই রেগুলার পোস্ট করছি।
তাই রিডার্স পেয়ে গেছি বলে রেগুলার না এক দিন পরপর পোস্ট করছি।এইরকম কথা আমাকে বলতে আসবেন না। ব্যাস্ততা সবার জীবনেই কম বেশি আছে।সব কিছু উপেক্ষা করে তো এক জিনিসেই মনোযোগ দিতে পারি না।

#দ্বিতীয়
গল্পটা সম্পূর্ন কাল্পনিক।এখানে প্লিজ বাস্তবতা খুঁজতে আসবেন না।যেমন:: এইটা কি রিয়াল লাইফে হয়?বাস্তব জীবনে এসবের ভিত্তিই নেই।এইসব কথা।

আমি কোন একটা গল্পটা লিখার সময় একজন কমেন্ট করেছিলো
আপু আমরা অনেকেই বাস্তব জীবনে অনেক কিছু ফেস করি।তাই ওইসব ভুলতে গল্প পরে নিজেদের মন ভালো করতে আসি।
উনার কমেন্ট আমার ভালই লেগেছে।আমিও নিজের মন ভালো করতেই লিখি।তাই এই গল্পটা আমি মজার করতে চাই।যাতে পরে কারো মন ভালো হয়।এখানে বাস্তবতা খুঁজে নিজেও নিরাশ হবেন না।আমাকেও নিরাশ করবেন না।আর যদি বাস্তবতার সাথে মিলে যায় তাহলে তো কিছু করারই নাই😅।আপনার ভাগ্য ভালো 🥳।
#Happily_Married🔥
#Part_7
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida


কিহ!(পিয়াস আর আলিশা অবাক হয়ে)

হুম।(আলিফ রেগে)

ভাই,ভাবী এখানে একটা চিরকুট লিখে গাড়ির সিটে গুজে রেখে গেছে।(আলিশা চিরকটুটা আলিফের হাতে দিয়ে)

আলিফ চিরকুটটা খুলে পড়তে শুরু করলো,,,
চিরকুট
আমার বাবাকে বলে দিয়েন আমাকে উনি বিয়ে করতে বলছেন।সংসার করতে না।

আলিফ রাগে চিরকুট ধুমরে মুচড়ে বললো
বিয়ে তোমাকে করাতে পেরেছি। সংসারও তুমিই করবে হিয়ামনি।

এখন কি করবি?(পিয়াস আলিফের কাধে হাত রেখে)

কিছুক্ষণ ভেবে আলিফ বললো
তোদের একটা কাজ করতে হবে,,
বলেই আলিফ ওদের কিছু একটা বললো।


অন্যদিকে
আজ ফাগুনে পূর্ণিমা রাতে
চল পালায়ে যাই

Mein chali,mein chali
Dekhu peyar ki Gali
Mujhe roke na koi
Mein chali, mein chali

ছুটলে কথা,থামায় কে?
আজকে ঠেকায় আমায় কে?
(আমি জোড়ে জোড়ে চিৎকার করতে করতে গান,ছড়া গুলো বলতে লাগলাম)

তুই থামবি হিয়া?(আকাশ চিন্তিত হয়ে বাইক চালাতে চালাতে)

আরে তুই এতো চিন্তা করছিস কেনো?(আমি ওর বাইকের পিছে বসে)

তুই কি কোনো দিন চিন্তা ছাড়া আমাকে কিছু দিয়েছিস?(আকাশ রেগে)

বেস্ট ফ্রেন্ড এর জন্য এইটুকু করতে পারবি না?(আমি ঠোঁট ফুলিয়ে)

কোন এক সময় বলেছিলাম বেস্ট ফ্রেন্ড এর জন্য জানও দিতে পারি।কিন্তু কে জানতো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড সত্যিই সত্যিই আমার জান চেয়ে বসবে!(আকাশ হতাশ হয়ে)

হইছে তোর আর হতাশ হতে হবে না।আরে বলছি তো কিছু হবে না রে!(আমি আকাশকে সান্তনা দিয়ে)

তুই কি করে জানলি ভবিষ্যতের কথা?তোর বরের কতো গুলো বডিগার্ড ছিলো তুই জানিস!আমার তো দেখেই আত্মআ বের হয়ে গেছিলো।কি করে যে আমি গাড়ির তেল বের করেছিলাম তুই জানিস!খালি মনে হচ্ছিল এই বুঝি কেউ দেখে ফেলল।(আকাশ)

কেউ দেখে নাই তো?আর শুন এখন যা করার করে ফেলেছি।এখন আর তোর মাথা ব্যাথা নিয়ে লাভ নেই।বরং তুই ভালো করে গাড়ি চালা।মাত্র বিয়ে হয়েছে এখনি মরতে চাই না।আমার বাসরও হয়নি।(আমি)

তোর মুখে কিছু আটকায় না?পাঠিয়ে দেই বরের কাছে?গিয়ে বাসর কর।(আকাশ ভ্রু কুঁচকে)

ওই ব্যাটা। বাইক চালানোতে মনোযোগ দে।(আমি দাত চেপে)

পরেই আকাশ ওর বকবক বন্ধ করে বাইক চালাতে মনযোগ দিলো।
আসলে আমার আর আকাশের প্ল্যান ছিল এমন,,
যখন বাবা আমার হাত পা বেঁধে দিয়েছিল তখনই আমি অনেক কষ্টে এই উপায় বের করি।আমার বাবা বলছে বিয়ে করতে সংসার করতে তো আর না।তাই আমি বিয়ে করলাম কিন্তু এখন সংসার করবো না।আর বিয়ে ভাঙার চেষ্টা করেছি দুই কারণে,,এক বিয়ে ভাঙার চেষ্টা করলে কেউ আমাকে সন্দেহ করবে না।আর দুই বিয়ে যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে তো আমারই ভালো।

বিয়েতে যখন কবুল বলার কথা বলা হয়েছে তখনই আমাকে এমন কিছু করার ছিল যার কারণে সবার মনযোগ আমার কাছে চলে আসে আর বাহিরে আকাশ এসে গাড়ি থেকে পেট্রোল বের করতে পারে।

সেই প্ল্যান মতাবেগ আমি কবুলের সময় হাঙ্গামা করলাম।আর এই ফাঁকে আকাশ পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত যাওয়ার পেট্রোল রেখে বাকি পেট্রোল গুলো বের করে নিলো।

যখন গাড়িটা পেট্রোল পাম্পে গিয়ে থামলো।তখনই আমি আলিশকে বলি ওর ভাইকে বলতে পানি আনার কথা।আর আমার নাম যেনো না নেই। আলিশাও উনাকে বললো।আমার ভয় ছিলো উনি হয়তো যাবেন না।কিন্তু না উনি গেলো।আর thanks to ওই লোকটা যে ওই সময়ই পিয়াস ভাইয়াকে ফোন দিয়েছে।না হলে যে কি করে ম্যানেজ করতাম কে জানে?

আমি জানতাম ওই পাম্পের ওয়াশরুমের ভিতরে বড়ো একটা জানালা আছে।এই জন্যই ওইটা বেছে নিয়েছি🤪।আমি জানালা দিয়ে বের হতেই বাহিরে বাইক নিয়ে দাড়িয়ে ছিলো আকাশ।এখন আমি আর ও, ওর বাইক দিয়ে রেল স্টেশন এ যাচ্ছি।সেখান থেকে কক্স বাজার ঘুরাঘুরি করবো।তারপর সব ঠান্ডা হলে বাড়ি ফিরবো।হয়তো বাবা রাগ করে থাকবে কিন্তু বাড়ি থেকে তো বের করে দিবে না।আর আমার একটু বদনাম হলো কিন্তু আমি বিয়ে নামক জিনিস থেকে তো বেচেঁ গেলাম।
নিজের প্ল্যান শুনে নিজেরই বাহ বাহ দিতে ইচ্ছে করছে!(আমি মনে মনে)

আকাশ?(আমি)

হুম।বল।(আকাশ)

আমি খুব ভালো প্ল্যান করতে পাড়ি তাই না?(আমি)

না তুই মানুষকে ফাঁসাতে পারিস।(আকাশ দাত চেপে)

অসভ্য ছেলে।(আমি মুখ ফুলিয়ে)


কিছুক্ষণ পর
আকাশ?(আমি)

আবার কি হলো?(আকাশ বিরক্ত হয়ে)

শপিং মলের সামনে একটু দাঁড়া।আমি কিছু কাপড় কিনে নিয়ে আসি।(আমি)

আচ্ছা।যা।
বলেই আকাশ বাইকটা রাখলো।আর আমি দৌড়ে দিয়ে কিছু কাপড় কিনে আনলাম।সাথে লেহেঙ্গাটাও চেঞ্জ করে আসলাম।

চল।(আমি)

হুম।
বলেই আকাশ বাইক চালাতে শুরু করলো।


রেল স্টেশন এ
আকাশ এই ব্যাগটা কোনো ভাবে বাবার কাছে পৌঁছে দিবি।আর বাবার কাছ থেকে একশো হাত দূরে থাকিস এখন।(আমি)

তাতো বুঝলাম।কিন্তু এই ব্যাগে কি?(আকাশ)

আমার বিয়ের গয়না।আর লেহেঙ্গা।এইটা ওই আলিফ লায়লাকে দিয়ে দিতে বলিস বাবাকে।আর উনি যদি ডিভোর্স চায় তাহলে বলিস আমি ফিরে এসে দিয়ে দেবো।(আমি)

এইটা কি অনেক জরুরি হিয়া?বিয়ে হয়ে গেছে তোদের এখন সুখে সংসার কর।আলিফ লোকটা অনেক ভালো।আমি শুনেছি তোর সব ফালতু শর্তে উনি রাজি হয়েছে।এমন ছেলে পাওয়া অনেক কষ্টের।(আকাশ আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করে)

যে যাই বলুক।বিয়ের সম্পর্ক আমার জন্য না।(আমি বিড়বিড় করে)

কিছু বললি?(আকাশ)

না।কিছু না তুই ওইসব বাদ দে তো।
আমরা কথা বলছি তখনই অ্যানাউন্সমেন্ট হলো।

আমার ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে গেছে।আমি উঠলাম ট্রেনে।
বলেই আমি ট্রেনে উঠে পড়লাম।

ভালো থাকিস হিয়া।(আকাশ)

তুইও।(আমি মুচকি হেসে)

কিছুক্ষণ পরই আমার ট্রেন ছেড়ে চলে গেলো।


রেল স্টেশন এ
অন্য মনস্ক হয়ে বসে আছে আকাশ।তখনই কিছু কালো রঙের স্যুট পড়া লোক ওর মুখে কালো কাপড় পরিয়ে নিয়ে গেলো।

আকাশের মুখ থেকে কাপড় সরাতেই ও দেখলো ও একটা রুমের মধ্যে রয়েছে।আর সামনে একটা লোক বসে আছে।

তুমি আকাশ তাই না?(লোকটা)

আপনি দুলা ভাই,তাই না?(আকাশ)

হুম।
বলেই আলিফ মুচকি হাসি দিলো।

আমাকে কেনো এনেছেন এখানে?(আকাশ অবাক হয়ে)

কারণ হিয়া কোথায় একমাত্র তুমিই জানো?(আলিফ)

আকাশ কিছুটা ঘাবড়ে গেল
আমি কি করে জানবো হিয়া কোথায়?

হিয়ার গয়না তোমার কাছে,ওর লেহেঙ্গা তোমার কাছে আর তুমি জানো না হিয়া কোথায়?(আলিফ ভ্রু কুঁচকে)

আপনার মনে হয় আমি বলবো?(আকাশ অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে)

তোমাকে যদি আমি এখন পুলিশে দেই।তুমি আমার বউকে কিডন্যাপ করে ওর গয়না চুরি করেছো।এমন কেস করি তাহলে তুমি তো জেলে থাকবে। তখনও কি বলবে না হিয়া কোথায়?নিজেকে বাঁচাতে হলেও তো তোমার হিয়ার কথা বলতে হবে।(আলিফ)

আমাকে যদি পুলিশেও দেন তবুও আমি বলবো,আমি জানি না হিয়া কোথায়?আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে কখনো ধোঁকা দেবো না।আমার যতো কষ্টই হোক না কেনো?(আকাশ)

আলিফ আকাশের এই বন্ধুত্ব দেখে মুচকি হেসে বললো,,
আমি শুনেছি মেয়েটা নাকি খুব ভেবে চিনতে বন্ধুত্ব করে।যাতে ওর ভবিষ্যতে কষ্ট পেতে না হয়।তুমিও ওর সাথে বন্ধুত্ব করেছো। তবে তোমার বন্ধুত দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ হলাম।হিয়া সত্যিই অনেক ভাগ্যবতী তোমার মত আর পিয়ার মত বেস্ট ফ্রেন্ড পেয়েছি।অবশ্য ও যা ভয়ানক মেয়ে,ওর বন্ধু তোমরা ভেবেই তোমাদের উপর আমার আফসোস হচ্ছে।(আলিফ)

কিছু করার নাই দুলাভাই।ওই মেয়ে যেমন ভয়ানক তেমনি ভয়ানক ওর কর্ম কান্ড।তাই আমাদের নিজেদেরই নিজেদের নিয়ে আফসোস হয় আপনার তো হবেই।(আকাশ আলিফের দেয়া শান্তনা গ্রহণ করে)

অন্যদিকে পিয়াস দরজায় হেলান দিয়ে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভ্রু কুঁচকে ভাবছে
এখানে কি আকাশকে হায় হতাশ করার জন্য আনা হয়েছে।আলিফ তুই হিয়ার সঙ্গ পেয়ে নিজেই অদ্ভুত হয়ে যাচ্ছিস।(মাথায় হাত দিয়ে)

আচ্ছা যাই হোক।আমি তোমার বন্ধুত্বের সম্পর্কতে ফাটল ধরাতে চাই না।পিয়াস ওকে ছেড়ে দে।(আলিফ)

ছেড়ে দেবো?তাহলে হিয়ামনীর খবর কোথা থেকে পাবো?(পিয়াস অবাক হয়ে)

যা বলছি তা কর।(আলিফ)

পিয়াস কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।
আকাশ তুমি যেতে পারো।(পিয়াস সাইড দিয়ে)

পরেই আকাশ হিয়ার দেয়া বেগটা দিয়ে চলে গেলো।

তোর মাথা খারাপ হয়ে গেলো নাকি আলিফ!ওই একমাত্র জানে হিয়ামনি কোথায়?আর তুই ওকে ছেড়ে দিলি?(পিয়াস)

তোর কি মনে হয় ও বলবে হিয়া কোথায়?আর ওকে যদি টর্চার করে বা ভয় দেখিয়ে মুখ থেকে বেরও করি হিয়া কোথায়!আর এইসব যখন হিয়া জানবে তোর মনে হয় ওকে কেউ আটকে রাখতে পারবে পালানো থেকে।এই মেয়ে এমনি পালাতে এক্সপার্ট আবার যদি শোনে ওর বেস্ট ফ্রেন্ডকে কষ্ট দিয়েছি তুই ভাবছিস ও কি করবে?বা কি করতে পারে?(আলিফ)

তুই ওকে ভয় পাচ্ছিস?আলিফ রায়হান চৌধুরী কাউকে ভয় পাচ্ছে?(পিয়াস অবাক হয়ে)

ওকে ভয় পাই না,ওকে হারাতে ভয় পাই।(আলিফ বিড়বিড় করে)

কি হলো?কি বিড়বিড় করছিস?(পিয়াস)

কিছু না।(আলিফ)

আচ্ছা তাহলে এখন ভাব কি করে হিয়ামনির খোজ করবি?(পিয়াস)

ওইটা ভাবা হয়ে গেছে।তোর কি মনে হয় আলিফ রায়হান চৌধুরী এতই কাচা খেলোয়াড়।আমি হাড়ে হাড়ে চিনি আমার বউকে।ওই চড়ুই পাখি বউকে খাচায় জব্দ করতে হলে আমার ওর থেকে একশো কদম আগে থাকতে হবে।(আলিফ ডেভিল হাসি দিয়ে)

দুইটাই আজব।মনের ভিতর কি চলে কিছুই বুঝা যায় না!(পিয়াস মাথায় হাত দিয়ে)

আলিফ ফোনটা বের করে সেলিমকে ফোন করলো,,
সেলিম।ডকুমেন্ট গুলো নিয়ে এসো ভিতরে।(আলিফ)

জ্বি স্যার।
বলেই আলিফ ফোনটা কেটে দিলো।

কিসের ডকুমেন্ট?(পিয়াস)

দেখলেই বুঝতে পারবি।(আলিফ)


কিছুক্ষণ পর
সেলিম রুমে ঢুকলো।আর ঢুকেই একটা ফাইল আলিফকে দিলো।

আলিফ বসে বসে ফাইলের পেপার গুলো দেখতে লাগলো,,,

সেলিম তুমি কি কি জানতে পেরেছ বলো?(আলিফ ফাইল দেখতে দেখতে)

স্যার রেল স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা গেছে ম্যাম চট্রগ্রামের ট্রেনে উঠছে।(সেলিম)

বুঝলাম হিয়ামনি ঐখানে।কিন্তু ঐখানে কোথায় আছে তা তো আর জানি না।চট্রগ্রাম তো আর ছোটো না!(পিয়াস)

তার জন্যই তো এই সব কাগজ।(আলিফ পেপার গুলো দেখিয়ে)

এইসব কি?(পিয়াস)

আকাশের পনেরো দিনের কল রেকর্ড।যেহেতু হিয়াকে বাবা পনেরো দিন বাড়ি থেকে বের হতে দেয়নি।সেহেতু ওর জন্য টিকেট, হোটেল রুম বুক আকাশই করেছে।এখন আমাদের হোটেলের নম্বর বের করতে হবে।তারপরই আমার চড়ুই পাখির খোজ আমি পেয়ে যাবো।(আলিফ বাকা হেসে)

হিয়া মনি তো ওর ফোন থেকেও বুক করতে পাড়ে।(পিয়াস)

হুম।কিন্তু হিয়া এতও বকা না যে এসব করতে ও নিজের ফোন ব্যবহার করবে।(আলিফ)

একটা থেকে একটা কম না।
বলেই পিয়াসও দেখতে শুরু করলো কাগজ গুলো।

স্যার এই নম্বরে আজ থেকে আকাশ কথা বলতে শুরু করেছে।(সেলিম)

এইটা মনে হয় হিয়ার নতুন নম্বর।(আলিফ)

এইযে হোটেলের নম্বর পেয়েছি। আর সব ভালো কথা এইটা আমাদের হোটেলের নম্বর।(পিয়াস)

এক্সসিলেন্ট।এইবার সেলিম দেখো এই নতুন নম্বরএর লোকেশন কোথায়?(আলিফ)

ওকে স্যার।
বলেই সেলিম বাহিরে চলে গেলো।


কিছুক্ষনপর
সেলিম হন্তদন্ত হয়ে রুমে ঢুকে
স্যার।এই নম্বরের লোকেশন চট্রগ্রামের দিকে যাচ্ছে দেখাচ্ছে।আর হোটেলটা হচ্ছে কক্স বাজারের।(সেলিম)

দেখলি বলছিলাম না,,আমার চড়ুই পাখিকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি।পিয়াস আমার জন্য প্লিজ আমার যাওয়ার ব্যবস্থা কর।(আলিফ)

ওকে।(পিয়াস)

আমি আসছি আমার চড়ুই পাখি।(আলিফ মনে মনে)


অন্যদিকে
আকাশ একের পর এক ফোন করে চলেছে হিয়াকে কিন্তু ও ফোনই ধরছে না।

দূর এই মেয়ে সব সময় চিন্তায় ফেলে দৌড় দেয়।এখন আমি দুলাভাইয়ের কথা ওকে কি করে বলবো?(আকাশ)


অন্যদিকে
হিয়া ওর ঘুমের বেঘাত ঘটবে বলে ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমাচ্ছে ট্রেনের মধ্যে।

সারারাত ওদের এইভাবেই চলে গেলো। পরের দিন ভোরে হিয়া ট্রেন থেকে নামলো চট্রগ্রামে।সেখান থেকে ও কক্স বাজার যাবে।


ট্রেন থেকে নামার পর কক্স বাজার আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।মাঝ পথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি বলে আরো দেরি হয়ে গেছে।সারাদিন টইটই করছি।এই প্রথম একা বের হয়েছি।বাবা কোনোদিন একা বের হতে দেয়নি।আমাকে উনার অনেক ভয় ছিলো।তবে এখন যেহেতু খাচা থেকে ছুটতে পেরেছি আর খাঁচায় বন্দি হচ্ছি না।এইসব ভাবতেই আনন্দের সাথে হোটেল রুমে ঢুকলাম। ব্যাগ পত্র রেখে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লাম।ফ্রেশ হয়েই একটা ঘুম দেয়ার ধান্দায় আছি।

আমি ওয়াশরুমে থেকে টাওয়াল পেঁচিয়ে বের হয়ে নিজে নিজে বললাম
আজকে ভালোই মজা করছি।

তাই নাকি চড়ুই পাখি।আমাকে ছেড়ে হানিমুন করতে আসছো।আবার একা একা মজাও করছো।এইটা কিন্তু ঠিক না।(আলিফ)

গলাটা চেনা চেনা লাগছে কেন?(আমি মনে মনে)

আমি ধীরে ধীরে বেডের দিকে তাকিয়ে দেখি আলিফ বিছানায় শুয়ে শুয়ে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে,,,

আমার চড়ুই পাখি!তুমি কি আমাকে মিস করছো?(আলিফ চোখ টিপ মেরে)

আমি কিছুক্ষণ উনার দিকে ভুত দেখার মত তাকিয়ে রইলাম,,,
তারপর

আআআআআ(জোরে চিৎকার দিয়ে)


চলবে,,,
ধন্যবাদ🥰🥰

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here