গল্পঃ #Mr_Devil
(A psycho love story)
লেখিকা : নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৩০
তখনই পিছন থেকে কেউ ডাক দেয়।
রানী : রোদ
হ্যা লোকটা রোদ।
রোদ পিছনে ফিরে রানীর ডাকে সাড়া দেয়
রোদ : কিছু বলবে ?
রানী : খাবে না ?
রোদ : তোমরা খেয়ে নাও আমার খাওয়ার ইচ্ছা নেই
রানী : রোদ প্লিজ আর কত দিন ওর স্মৃতি আগলে থাকবে । ও আমাদের ছেড়ে অনেক দুর চলে গেছে চাইলে ও আমরা ওকে
থামিয়ে দিয়ে
রোদ : ও আছে । আমি জানি ও আছে ওর এত সাহস নেই আমাকে ছেড়ে যাওয়ার খুব তাড়াতাড়ি আমরা ওকে ফিরে পাবো । আবার আগের মত
রানী : রোদ এক বছর
রোদ : এই নিয়ে আমি কোনো কথা শুনতে চাইনা ।
রানী কিছুক্ষণ রোদের দিকে তাকিয়ে চলে গেলো। রোদ এখনও মুনের ছবির দিকে তাকিয়ে আছে ।
এক বছর আগে
মুনকে সবাই অনেক খুঁজেছে কিন্ত পাহাড় থেকে পড়ে মুনের কোনো খোজ পাওয়া যায়নি । পুলিশ অনেক খুঁজে ও মুনের খোজ পায়নি। কিন্ত রোদ হাল ছাড়েনি ১মাস রোদ মুনকে পাগল এর মত খুঁজছে তাও মুনের খোজ পাওয়া যায়নি রোদ বিশ্বাস করে মুন আছে । মুনের অস্তিত্ব রোদ অনুভব করতে পারে । সেদিন মুন একা চলে যায়নি নিয়ে গেছে রোদের হাসি খুশি ভালোবাসা সব। সেদিনের পর থেকে রোদ তেমন বাইরে বের হয়না । রাজ রানী হাজার চেষ্টা করেও রোদকে আগের মত করতে পারেনি । রোদ এখনও মুনকে খুঁজছে ।
বর্তমান
রোদ মুনের ছবিতে একটা চুমু খেয়ে। মুনের ছবি নিয়ে সোফায় শুয়ে পড়ে। মুনের সাথে যে খাটে রোদ ঘুমাতো এখন আর সেখানে ঘুমায় না । মুন ছাড়া রোদ ঘুমাতে পারে না।
IN London
পরি জয়ের সাথে বাস্কেট বল খেলা শিখছে ।
জয় : বাহ আমার পরি তো খুব ভালো খেলতে পারে
পরি কিছু বলছে না শুধু খিলখিল করে হাসছে।
অনেকক্ষণ খেলার পর ওরা বাসায় ফিরে আসে।
নীলিমা : পরি আজ ভার্সিটিতে গেলি না ?
পরি : ওহ সিট আমি তো ভুলে গেছি আজ তো আমার ফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করার কথা রাইমা ম্যাম বিদায় নেবে তাই ।
পরি তাড়াতাড়ি উপরে গিয়ে রেডী হয়ে নিল
জয় : পরি আস্তে
নীলিমা : মেয়েটা খুবই চঞ্চল
জয় : আমার বউ বলে কথা
নীলিমা : বিয়েটা এবার করে নে
জয় : নেবো মম নেবো আগের ওর ভার্সিটিতে শেষ হোক তুমি ত সবই জানো কত বড়ো একটা বিপদ থেকে উঠলো । এখন আমি ওকে আমার সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য টাইম দিচ্ছি
ওদের কথা মাঝে পরি রেডী হয়ে নিচে নামলো
পরি : মামনি আমি বের হচ্ছি
জয় : পরি
জয়ের ডাকে পরি দাড়িয়ে যায়।
জয় পরীর কাছে গিয়ে ওর গালে হাত রাখতে গেলে পরি পিছিয়ে যায়।
জয় : যাচ্ছ সাবধানে থাকবে কেমন আর ছেলেদের
পরি : জানি জানি ছেলেদের সাথে কথা বলবো না কেউ বিরক্ত করলে আপনাকে বলব ফ্রেন্ড দের সাথে পিক তুলে social media দেবো না । সাবধানে গাড়ি চালাব
বালাহ বালাহ্ বলাহ
জয় : শেষ ?
পরি..
জয় পরীর নাক টেনে বলে বলে
জয় : ড্রামা কুইন
পরীর যেনো কেনো একটা অসস্তি হচ্ছে। জয় বুঝতে পেরে বলে
জয় : কিহলো মাথায় চাপ দিচ্ছে । ওসব ভেবো না ২মাস কোমায় ছিলে তাই মাথায় চাপ দিও না যাও ফ্রেন্ড দের সাথে এঞ্জয় করো আমি বিকালে নিতে আসবেন
পরি নিজেকে ঠিক করে বলে
পরি : আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসি
পরি বেরিয়ে গেলো।
জয় উপরে গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসলো।
পরি ওর ফ্রেন্ড এর কাছে গেলো।
পরি : হে মাম্মারা
সবাই 😒
পরি: সরি আসলে একটু বাস্কেট বল খেলা শিখছিলাম সরি
দোলা : কে শিখেছিল?
অধরা : কে আবার জয়
সুমি : আমাদের জিজু
পরি: তোরা বাদ দে ম্যামের বাসায় যাবি না?
পাখি: বাদ দে তো ওদের কথা চল তার আগের শপিং মল থেকে কিছু কিনতে হবে
সবাই: হুম
সবাই মিলে শপিং মলে গিয়ে কিছু কিনে রাইমা ম্যাম এর বাসায় গেলো।
সেখানে সবাই আড্ডা দিয়ে যে যার মতো বাসায় চলে গেলো।
এদিকে পরি পড়েছে বিপদে ওর গাড়ি চলছে না । সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হতে গেলো।
পরি : গাড়িটা এখনই নষ্ট হতে হলো ধুর এখন আমি কিসে বাসায় যাবো।
এক কাজ করি উনাকে ফোন করি ।
পরি ফোন বের করতে গেলে দেখে ওর ফোন বন্ধ
পরি: বিপদ যখন আসে সব দিকে দিয়ে আসে ধুর ছাই
পরি গাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় একজনের কাছ থেকে ফোন নিল
পরি : যাক বাবা ফোন তো পেলাম কিন্ত নাম্বার (মনে মনে)
পরি নাম্বারে ফোন দিল কিছুক্ষন রিং হওয়ার পর ফোন ধরলো পরি কিছু বলতে যাবে কিন্ত ওপাশ থেকে কণ্ঠ শুনে পরি স্তব্ধ
ওপাশ থেকে হেলো হেলো করে যাচ্ছে কিন্ত পরীর কোনো হুস না । ওপাশ থেকে রেগে কল কেটে দেয়।
পরি আবার ফোন দেয় এবার পরি হেলো বলে
তখনই কেউ ওর হাত থেকে ফোন কেরে নেয়। পরি তাকিয়ে দেখে জয়
জয় : তুমি এখানে কি করছ ?
পরি : আসলে
জয় : বাসায় চলো
জয় পরীর হাত ধরে গাড়িতে নিয়ে এসে বসায়।
in BD
রোদ একটু ঘুম পড়েছিল তখনই কেউ ওর ফোন কল দেয় রোদ ফোন ধরে কিন্ত কেউ কথা বলে না কিছুক্ষণ পর আবার কল দেয় রোদ কিছু বলতে যাবে কিন্ত ওপাশের কণ্ঠ ওকে খুব টানছিল।
রোদ আবার ফোন দেয় কিন্ত অন্য একটা মেয়ে ফোন ধরে।
রোদ যেনো কিছু তেই কণ্ঠ ভুলতে পারছে না
রোদ নাম্বার এর লোকেশন চেক করে দেখে এটা লন্ডন ।
রোদ : ওখানে কে থাকে
রোদ রুমে থেকে বেরিয়ে রাজ এর রুমে যায়
রাজ : রোদ তুই কোনো কি দরকার
রোদ : লন্ডন এ আমাদের কে থাকে?
রাজ : কেউ না তো কেনো ?
রোদ : খোজ নিয়ে দেখ
রাজ কিছুক্ষণ ভেবে বলে
রোদ রাজের কথা শুনে অন্য একটা রুমে যায় । রোদের পিছন পিছন রাজ রানী ও যায় ।
রোদ ঘরটা এলোমেলো করে কি যেনো খুঁজছে। সারা ঘর খুঁজে নিজের ঘরে এসে মুনের ছবির সামনে দাঁড়ায় ।
একটা মুচকি হেসে কাউকে ফোন করে। কথা শেষে রোদ একটা ভিলেন হাসি দিয়ে বলে
রোদ : i am coming soon your #Mr_Devil coming
কথাটা বলে রোদ #ডেভিল_স্মাইল দেয়।
IN London
পরি গাড়ি থেকে নেমে সোজা রুমে ঢুকে সাওয়ায়ের নিচে বসে পরে। কেনো যেনো পরীর খুব অসস্তি হচ্ছে কিন্তু কেনো সেটা পরি বুঝতে পারছে না ।
অনেকক্ষণ শাওয়ায়ের নিচে থেকে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে । আয়নায় নিজেকে দেখছে পরি । চোখ মুখ ফুলে লাল হয়ে আছে অনেকক্ষণ কান্না করার ফলে কিন্ত কেনো এমন হচ্ছে সেটা পরি বুঝতে পারছে না।
পরীর এসব ভাবার মাঝে জয় দরজা ধাক্কা দেয়।
জয় : পরি তাড়াতাড়ি দরজা খুলো এতক্ষণ কি করছো ?
পরি নিজেকে ঠিক করে চোখে জেল লাগিয়ে দরজা খুলে দেয়।
জয় : কি হলো এতক্ষণ লাগে দরজা খুলতে
পরি : আসলে গোসল করছিলাম
জয় : ওহ তোমার ত আবার বাইরে থেকে আসলে গোসল না করলে হয়না
পরি শুধু মুচকি হাসি দিল
জয় : তাড়াতাড়ি খেতে আসো
পরি জয়ের সাথে খেতে গেলো। খেতে ইচ্ছা করছে না তবুও জয়কে না বললে ও রেগে যাবে ।
পরি হালকা খেয়ে ঘরে এসে শুয়ে পরলো।
আজকের কথা ভাবতে ভাবতে পরি ঘুমিয়ে পরলো
হটাৎ মাঝ রাতে একটা খারাপ স্বপ্ন দেখে পরীর ঘুম ভেংগে গেল
পরি : আমি এমন স্বপ্ন কেনো দেখলাম আর লোকটা কে উফফ আবার মাথা ব্যাথা করছে
পরি নিজেকে শান্ত করে তাহাজুতের নামাজ পড়ে নিল
তারপর উঠে বারান্দায় গিয়ে দাড়াল । হালকা বাতাস একটু শীত শীত পরিবেশ মুন চোখ বন্ধ করে পরিবেশটা উপভোগ করছে ।তখনই ওর কানে কিসব আওয়াজ আসতে লাগলো
গল্পঃ #Mr_Devil
(A psycho love story)
লেখিকা : নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৩১
পরী তাড়াতাড়ি চোখ খুলে
পরী : এসব আমি কি দেখছিলাম কে ওই লোক। আর আজ আমি জয়ের কাছে ফোন না দিয়ে অন্য জায়গায় ফোন দিলাম কেনো ওটা কার নাম্বার উফফ আবার মাথা ব্যাথা করছে ( দুই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে)
তখনই আজানের শব্দ শুনা গেলো। পরী নিজেকে শান্ত করে নামাজ পড়ে নেয়।
নামাজ শেষ করে পরি বই নিয়ে ছাদে যায়। সকালে মিষ্টি বাতাস মনটাকে ফুরফুরে করে দেয়। সকালে ছাদে যাওয়া পরীর প্রতিদিন এর রুটিন ।
পরি ছাদে হেটে হেটে বই পড়ছে তখন নিচে চোখ যায় । জয় জগিং করে আসছে ।পরিকে দেখে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে ফ্লাইং কিস দেয়। পরি শুধু মুচকি হাসি দিছে।
কিছুক্ষণ বই পড়ে পরি নিচে এসে রেডী হয়ে নীলিমার কাছে যায়।
পিছন থেকে নীলিমা কে জড়িয়ে ধরে
পরি : মামনি
নীলিমা : কীরে আজ এত তাড়াতাড়ি যা আমি খাবার দিচ্ছি
পরি : মামনি আমার খুদা নেই আমি পরে খেয়ে নেবো
নীলিমা : কেনো খুদা নেই কেনো ?
জয় জানতে পারলে কত রাগ করবে জানিস আর খাবার খেয়ে তো ওষুধ খেতে হবে
পরি : মামনি আমি ত এখন সুস্থ তাহলে কেনো ওই ওষুধ খেতে হবে ভালো লাগে না আমার
নীলিমা : পরি চুপ চাপ যাও খেতে বসো আমি কোনো কথা শুনতে চাইনা
পরি আর কোনো কথা না বলে টেবিলে বসলো।
একটু পর জয় আসলো
জয় : গুড মর্নিং সুইটহার্ট
পরি এই সুইটহার্ট কথাটা শুনতে পারে না
পরি : জয় আপনাকে কত বার বলছি
জয় : যে এই সুইটহার্ট কথাটা না বলতে তাই তো
পরি : হা তাই
জয় : আমি আমার বউকে যা খুশি বলতে পারি
পরি : আপনি
নীলিমা : খাওয়ার সময় কোনো কথা না
সবাই খাচ্ছে পরি হালকা খেয়ে বেরিয়ে গেলো।
জয় : আজ ওকে ওষুধ দিয়েছ?
নীলিমা: হুম খেতে চাইছিল না তাই সুপের সাথে মিশিয়ে দিছি
জয় : ওষুধ যেনো কোনো দিন বন্ধ না হয়। আর ওর এক্সাম হলে আমরা বিয়ে করে নেবো
নীলিমা : আমি বলছি কি
জয় : আমি কোনো কথা শুনতে চাইনা
বলে জয় অফিসে চলে গেলো।
নীলিমা : ছেলেটা একদম ওর আব্বুর মত হয়েছে
পরি খুব স্প্রিডে গাড়ি চালাচ্ছে ওর যখনই রাগ হয় তখন ও ফুল স্প্রিড গাড়ি চালায়।
কিছুক্ষণ পর পরি একটা নদীর পারে এসে বসে পরলো। মুন খারাপ থাকলে পরি এখানে আসে । নদীর পানিতে পা ডুবিয়ে দিল যেনো ওর শান্তি লাগে
পরি নদীর পারে তাকিয়ে আছে ওর চোখ দিয়ে নোনাজল বের হচ্ছে ।
IN BD
রোদ ঘুম থেকে উঠে কোথায় বেরিয়ে যায় ।
রাজ : রোদ এতো সকালে কোথায় গেলো?
রানী : জানিনা আমি কফি দিতে গিয়ে দেখি রোদ ঘরে নেই সারা বাড়ি খুঁজে ও পাইনি
রাজ : ও তো অফিসে যায়না ওর ফোন ও বন্ধ রানী : ওর বডিগার্ড কে ফোন করে দেখো
রাজ পকেট থেকে ফোন বের করে কল করতে যাবে তার আগে রোদ চলে আসে
রানী : ওই তো রোদ চলে আসছে
রোদ ওদের দিকে এগিয়ে যায়
রাজ : রোদ কোথায় গিয়েছিলি তুই ?
রোদ : একটু কাজ ছিল
রানী : কিন্ত আমাদের তো একটু বলে যেতে পারতে
রোদ কিছু না বলে উপরে যায় । গোসল করে নিচে এসে রাজ রানীকে ডাকতে থাকে
রাজ : কিহলো আবার ডাকছিস কেনো ?
রোদ : আমি একটু বাইরে যাচ্ছি
রানী : একটু আগে না আসলে
রোদ : হুম দরকার আছে। আর রাজ আমাদের কলেজ থেকে সকলের ফ্যামিলি ব্যকগ্রাউন্ড আমাকে বের করে দিস
রাজ : ওটা দিয়ে তুই কি করবি
রোদ : যা বলছি কর বাকিটা আমি ফোন বলে দেবো ।
এখন আমার হাতে সময় নেই ।
বলে রোদ আর না দাড়িয়ে বেরিয়ে গেলো।
রাজ : কি করতে চাইছে ও
রানী : i have no idea
রাজ: ওকে নিয়ে আর পারিনা মুন থাকলে তো ওকে সামলাত
রানী : হুম
রোদ আপন মনে গাড়ি চালাচ্ছে আর একটু পর পর ফোনের স্কিনে মুনের ছবি দেখছে।
রোদ : i cannot wait
তোমাকে হারিয়ে আমি কতটা অসহায় হয়ে পড়েছিলাম সেটা কি তুমি জানো কেনো আমার থেকে দূরে চলে গিয়েছিলে কেনো সারাদিন পর যখন ক্লান্ত হয়ে যখন শরীর এলিয়ে দিতাম বিছানায় তোমাকে পেতাম না মাথা ব্যাথা করলে ও তোমাকে পেতাম ১বছর আমি তোমাকে পাগল এর মত খুঁজেছি কিন্ত তোমাকে পাইনি আর না খুব ভালোবাসি খুব
এসব ভাবতে ভাবতে রোদের ফোনে কল আসে রোদ মুচকি হেসে কল ধরে
রোদ : হুম
…..
রোদ: ওকে নজর রাখো আমি দেখছি
….
রোদ : যা বলছি তাই এখন কোথায় আছে
…
রোদ : সারাদিনের সব খবর আমার চাই
রোদ আর কিছুক্ষণ কথা বলে ফোনটা রেখে দেয়।
রোদ সিশ বাজাচ্ছে আর গাড়ি চালাচ্ছে
IN London
পরি নদীর পাড়ে তাকিয়ে পুরানো কথা ভাবছে
পরি : কেনো ছেরে চলে গেলে আমাকে। তোমরা যদি আজ আমার সাথে থাকতে তাহলে আমি কারোর সাথে নিজের মনের কথা বলতে পারতাম । সবাই তার আব্বু আম্মুর সাথে কত মজা করে কিন্ত আমার আব্বু আম্মু আমায় ছেরে চলে গেছে কেনো ছেরে গেলে । আমায় সাথে নিলে তো ভালো হতো। সেদিন বিদেশ থেকে না ফিরলে ভালো হতো । তবে তোমাদের শেষ ইচ্ছা আমি রাখবো জয়ের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে এসেছিলে আর অ্যাকসিডেন্ট হয়ে তোমরা ছেরে চলে গেলে আমার বিয়ে নিয়ে কত সখ ছিল তোমাদের কিছু হলো না । (কাদতে কাদতে)
পরি কাদচে আর এসব কথা বির বির করছে তখনই ওর কাঁধে কেউ হাত রাখে। পরি পিছনে তাকিয়ে দেখে
পরি : আপনি
জয় : হুম তোমার ফ্রেন্ড ফোন করেছিলো তুমি নাকি ভার্সিটিতে যাওনি পরে ভাবলাম এখানে থাকতে পার
পরীর পাশে বসতে বসতে
পরি : ওহ
জয় : আব্বু আম্মুর কথা মনে পড়ছে ?
পরি : কেনো কাছের মানুষ এভাবে ছেরে চলে যায় কেনো বলতে পারেন
জয় : এটাই নিয়তি আর আমাদের মানিয়ে নিতে হবে আল্লাহ তাআলা অশেষ রহমতে তুমি বেচে আছো ২মাস কোমায় থাকার পর
পরি : আমি কেনো বেচে গেলাম আব্বু আম্মুর সাথে আমি গেলে
বাকি কথা বলার আগে জয় পরীর ঠোঁটে আঙ্গুল রাখে
জয় : তোমার কিছু হলে আমি বাঁচতাম কি করে যা বলেছ বলেছ আর কখনো যেনো এই ধরনের কথা না শুনি খুব ভালোবাসি তোমায়
পরি কিছু না বলে সামনে তাকালো।
জয় পরীর দিকে তাকিয়ে আছে ।
অনেকক্ষণ ওরা ওখানে বসে বাসায় চলে আসলো।
পরি বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে শুয়ে পরলো। আগের থেকে এখন ওর মন অনেকটা ফুরফুরে ।
পরি : ধুর এভাবে বসে বসে থাকতে ভালো লাগে এক কাজ করি জয়ের ল্যাপটপ নিয়ে আসি
পরি জয়ের রুমে গিয়ে দেখে জয় নেই।
পরি ল্যাপটপ নিয়ে বারান্দায় গেলো। ল্যাপটপ অন করতে দেখে পরীর ছবি ।
পরি : আরে এই ছবি উনি পেলো কোথায় এটা তো আমি কখনো তুলিনি আর আমি শাড়ি কবে পরলাম
পরি আর না ভেবে ইউটিউব গান শুনতে গেলো ।
গান শুনছে তখনই জয়ের ইমেল এ কেউ কিছু পাঠায় । পরি ওপেন করে দেখে অনেক গুলো টেক্সট সাথে একটা পিক ৩টা ছেলে হাসি মুখ তার মধ্যে জয় আছে । পরি পাশের ছেলেটাকে দেখে কেমন যেনো হলো
পরি আরো text দেখতে যাবে তার আগে কেউ ওর হাত থেকে ল্যাপটপ কেরে নেয়।
পরি পাশে তাকিয়ে দেখে জয়
পরি : আপনি ল্যাপটপ নিলেন কেনো ?
জয় : তুমি আমার ল্যাপটপ নিয়ে কি করছো?
পরি : আমি তো এমনি গান শুনছিলাম পরে আপনার ইমেল আসলো তাই
জয় : আমার একটু কাজ আছে তুমি এখন যাও
পরি: কিন্ত আপনি
জয় : যাও বলছি (ধমক দিয়ে)
পরি আর কিছু না বলে চলে আসলো। এই প্রথম জয় পরীর সাথে খারাপ ব্যাবহার করল ।
পরি রুমে এসে মন খারাপ করে শুয়ে থাকে কিছুক্ষণ পর ঘুমের দেশে চলে যায় ।
সকালে পরি ঘুম থেকে উঠে পুরাই অবাক
গল্পঃ #Mr_Devil
(A psycho love story)
লেখিকা: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৩২
পরীর রুমে বেলুন দিয়ে সাজানো আর লেখা সরি পরি । পরি পুরো রুম দেখে অবাক।
পরি বুঝতে পারে এটা কার কাজ পরি মুচকি হেসে ফ্রেশ হতে যায় ।
ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে জয় বসে আছে । জয় পরিকে দেখে মুচকি হেসে বলে
জয় : ম্যাডাম এর রাগ কুমলো ?
পরি আনমনে বলে উঠে
পরি : রাগ তো মানুষ কাছের মানুষ এর উপর করে
জয় : ওহ আচ্ছা এখন আমি পর হলাম দুইদিন পর যার সাথে বিয়ে এখন সে পর
পরি…
জয় পরির কাছে এসে পরির চুলগুলো ফু দিয়ে সরিয়ে দেয়।
জয় : তোমার এক্সাম হতে আর ৩মাস বাকি আমি চাইছি সামনের সপ্তাহে আমাদের এঙ্গেজমেন্ট হয়ে যাক কি বলো
পরি : আপনারা যা ভালো বুঝেন তাই করেন
জয় : হুম এখন চলো খেয়ে নিবে
পরি : হুম
জয় পরির হাত ধরতে গেলে পরি চলে যায় ।
খাওয়ার সময়
পরি খাচ্ছে তখনই একজন বলে উঠে ম্যাম আর লাগবে। পরীর কাছে কন্ঠটা খুব চেনা লাগছে। পরি তাকিয়ে দেখে একটা মেয়ে
পরি : তোমাকে তো আগে কখনো এখানে দেখিনি ?
জয় : ও নতুন আসছে আজ থেকে তোমার সব কাজ ও করবে ।
পরি : আমার জন্য আবার স্পেশাল লোক রাখার কি দরকার
নীলিমা : আমি কিছুদিন বাইরে যাবো তাই তোর ওষুধ খাওয়ানোর জন্য রাখা হইছে
পরি : ওসব ওষুধ খেতে আমার ভালো লাগে না (বিরক্তি নিয়ে)
জয় : পরি ওটা তোমার ভালোর জন্য
মেয়েটা : হা ম্যাডাম স্যার ঠিক বলছে আপনি ওষুধ না খাইলে কেমনে হইবো তাড়াতাড়ি তো সুস্থ হতে হইবো
পরি : তোমার নাম কি ?
চম্পা : জী চম্পা আপনার নাম কি পরি নাকি অন্য কিছু আছে
জয় : কিছুদিন পর পরি আহমেদ জয় হবে
পরি কিছু বললো না
চম্পা : খুব ভালো আপনাদের দুইজনের খুব মানাইবো
পরি : মামনি তুমি কোথায় যাবে ?
নীলিমা : সামনে তোদের এঙ্গেজমেন্ট সেই জন্য অনেক কেনাকাটা আছে তাই কইদিন দেশের বাইরে থাকবো
পরি : মামনি সব কিছু এতো তাড়াতাড়ি
নীলিমা : দেখ পরি অনেক দিন থেকে আমার ছেলেটা তোর জন্য wait করছে এখন তো just এঙ্গেজমেন্ট করবে বিয়ে তো তোর এক্সাম এর পর হবে
পরি উঠে যেতে গেলে। চম্পা ওর হাত ধরে
চম্পা : কই জান তাড়াতাড়ি খেয়ে নেন ওষুধ খেতে হবে তো
পরি : আমি খাবো না
বলে পরি উপরে চলে গেলো।
চম্পা : স্যার আমি ম্যাম কে বুঝিয়ে খাইয়ে দেবো।
বলে চম্পা চলে গেলো।
নীলিমা : মেয়েটা তো ভালই কাজের
জয় : হুম সব বুঝিয়ে তারপর নিয়ে আসছি একটু গেও টাইপের bd থেকে আসছে সেইজন্য।
নীলিমা : ওহ তুই খা আমি একটু পর বের হবো
জয় : হুম
পরি রুমে বসে ভাবছিল তখন চম্পা আসে
চম্পা : কি ব্যাপার ম্যাডাম আপনার কি মন খারাপ ?
পরি : তুমি এখানে কেনো আসছো ?
চম্পা : আপনার সাথে তো আমার থাকার কথা তাই চলে আসলাম।
ম্যাডাম কিছু মনে না করলে একটা কথা বলবো?
পরি : হুম বল
চম্পা : ম্যাডাম আপনি কি জয় স্যারকে পছন্দ করেন না ?
চম্পার কথায় পরি চমকে উঠলো
পরি : মানে ?
চম্পা : না ম্যাডাম ছোটো মুখে বড়ো কথা আপনার ব্যাবহার বুঝলাম
পরি : নিজের কাজ কর এসব বেপারে বেশি ভাবতে হবে না
বলে পরি ওয়াশরুমে চলে গেলো।
চম্পা কোমর থেকে ফোন বের করে কাকে একটা call করলো
চম্পা : হেলো আমি বলছি
…
চম্পা : সব ঠিক আছে কিন্ত কিছু একটা গোলমেলে লাগছে
…
চম্পা : আমি খেয়াল রাখবো আর আমি পিক পাঠিয়ে দিচ্ছি
কিছুক্ষণ কথা বলে চম্পা ফোন কেটে কিছু একটা খুঁজে পিক তুলে কাকে পাঠিয়ে দিলো।
চম্পা : উফফ বাবা কাজ শেষ
পরি : কি কাজ শেষ ?
চম্পা ভয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে পরি দাড়িয়ে আছে
চম্পা : আপনার ঘর গুছানো শেষ এখন আপনি ওষুধ খেলেই হবে
পরি : আমি ওসব খাবো না
চম্পা : ম্যাডাম না খেলে তো আমার চাকরি থাকবে না প্লিজ ম্যাডাম খেয়ে নিন
পরি শেষে খেয়ে নিল।
জয় দরজায় দাড়িয়ে সব দেখে চলে গেলো।
পরি ও ওষুধ খেয়ে বেরিয়ে গেলো
ভার্সিটিতে গিয়ে পরি ওর ফ্রেন্ড এর সাথে ক্লাসে গেলো।
ক্লাস শেষে সবাই মিলে আড্ডা দিয়ে যে যার মতো বাসায় চলে গেলো।
পরি গাড়িতে উঠতে যার তার আগে কেউ ওর মুখে রুমাল দিয়ে সেন্সলেস করে ফেলে।
পরীর যখন চোখ খুলে নিজেকে একটা রুমে আবিষ্কার করে।
পরি চারিদিকে চোখ বুলিয়ে চেনার চেষ্টা করে।তখনই কেউ বলে উঠে তাকিয়ে লাভ নেই তুমি এখন তোমার স্বামী এর কাছে আছো
পরি কণ্ঠ শুনে সামনে তাকিয়ে দেখে একটা লোক পকেটে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে মুখে তার বাকা হাসি ।
পরীর লোকটার দিকে তাকিয়ে কেমন ঘরের মধ্যে চলে গেলো। লোকটা ধির পায়ে পরির সামনে এসে পরির গালে হাত দিয়ে বলে
লোকটা : আমাকে ছেড়ে কোথায় গিয়েছিলে তুমি জানো না তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারি না কেনো এভাবে আমাকে ছেড়ে চলে গেলে কেনো
কথা বলতে বলতে লোকটার চোখে পানি চলে আসলো।
লোকটা : আমাকে চিনতে পারছ না আমি তোমার রোদ । মুনের রোদ
পরি : রোদ ?
রোদ : হুম চিনতে পেরেছ আমায়
পরি : আপনি কে আর আমাকে এভাবে ধরে রেখেছেন কেনো ছাড়ুন বলছি ছাড়ুন (নিজেকে ছাড়াতে)
রোদ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
রোদ : মুন কেনো এমন করছো আমি রোদ তোমার স্বামী আমাকে চিনতে পারছ না
পরি : আমি আপনাকে চিনি না ছাড়েন আমাকে
পরি রোদকে ধাক্কা দিয়ে উঠে যেতে গেলে রোদ পরির হাত ধরে পরির ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।
পরি কিছুক্ষণ ছুটাছুটি করে শান্ত হয়।
রোদ কিছুক্ষণ পর ছেরে পরির কপালের সাথে নিজের কপাল লাগিয়ে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিতে থাকে
রোদ : একবার আমাকে ছেড়ে যাওয়ার ভুল করেছো দ্বিতীয় বার সেই ভুল করো না। নাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না বুঝেছ (ধমক দিয়ে)
রোদের ধমকে পরি ভয় পেয়ে যায় ।
রোদ : এখন লক্ষ্মী মেয়ের মতো বাসায় যাও আমার কিছু কাজ আছে কাজ শেষ করে তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসবো (কপালে চুমু দিয়ে)
পরীর কাছে এই ছোয়া চেনা চেনা লাগছে।
রোদ : চলো তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসি ।
পরি : না আমি আপনার সাথে যাবো না
রোদ : মুন্ননননন
পরি ধমকে চুপ হয়ে যায়।
পরি : এখন আর কিছু বলবো না একবার এখন থেকে বেরিয়ে যাই পরে দেখাবো মজা (মনে মনে)
রোদ পরির হাত ধরে রুম থেকে বাইরে নিয়ে এসে গাড়িতে বসায় ।
রোদ মুনকে বুকের সাথে জড়িয়ে আছে । পরীর ও উঠে যেতে ইচ্ছা করছে না এসব আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে পরি ঘুমিয়ে পরে।
ঘুম ভেংগে দেখে।
চলবে
(