Mr Devil part 36+37+38

গল্পঃ #Mr_Devil
(A psycho love story)
লেখিকা: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৩৬

মুন গোসল করে কেবল আয়নায় দাড়িয়ে চুল মুছিল। রোদ পিছন থেকে মুনকে জড়িয়ে

মুন : আপনি (অবাক হয়ে)
রোদ : আমি ছাড়া কে থাকবে জান (মুনের কাধে মুখ রেখে)
মুন : জয় কোথায় ?
রোদ : ওকে কেনো খুঁজছো তুমি ?(রেগে)
মুন : না আপনি তো বললেন জয় কে নিয়ে আসবেন
রোদ : মুন তোমাকে আমি আগে ও বলেছি তোমার মুখে অন্য কোনো ছেলের নাম আমি শুনতে চাইনা (রেগে)
মুন : আমি তো
রোদ : চুপ কোনো কথা না আজ আমি আমার মুনকে চাই এক বছর তোমার থেকে দূরে ছিলাম আর না সারাদিন কাজ করে যখন ক্লান্ত থাকতাম তখন এই শরীর তোমার কলে রাখতে পারতাম না মাঝে রাতে ঘুম ভেংগে গেলে গল্প করার জন্য তোমাকে পাশে পেতাম না ।

মুন তাকিয়ে দেখে রোদের চোখে পানি ।
রোদ মুনকে জড়িয়ে ধরে সাথে মুন ও। তখনই চম্পা আসে।

চম্পা : সরি আমি কিছু দেখিনি (চোখে হাত দিয়ে )

রোদ মুনকে ছেরে দূরে দাড়ায়।
রোদ : এসো রুমা

(হা চম্পা হলো রুমা । মুনের বেষ্ট ফ্রেন্ড । রোদ মুনকে দেখে রাখার জন্য রুমাকে চম্পা সাজিয়ে পাঠিয়েছিল)

রুমা : আমি এখন বাসায় যাবো মুনের জন্য তো তুমি আছো আর আমি লামিয়া কে পাঠিয়ে দিবনে
রোদ : ধন্যবাদ আমাদের জন্য এত কিছু করছ সেই জন্য
রুমা : মুন তো আমার ও কিছু লাগে তাই না
রোদ : তুমি যদি না থাকতে তাহলে আমি জানতে পারতাম না মুনের সাথে কি হচ্ছে তোমার জন্য তো মুনকে আমি সুস্থ করতে পারতেছি ।
রুমা : থাক আর ধন্যবাদ দিতে হবে না যদি কিছু দিতে চাও তাহলে আমাকে খালা আম্মু বানিয়ে দাও।

মুন লজ্জা পায় রোদ মুনকে চোখ মেরে বলে
রোদ : হুমম টা তো হবেই কাজে লেগে পড়বো।
রুমা : আচ্ছা তোমরা থাকো আমি পরে আবার আসবো।
রোদ : কোনো অসুবিধা হলে জানিও

রুমা চলে গেলো রোদ বারান্দায় দাড়িয়ে বাইরে দেখছে মুন ও রোদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। রোদ মুনের দিকে না তাকিয়ে মুনকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরলো।

মুন : রুমার সাথে আমার কত দিন এর পরিচয়?
রোদ : ছোটো বেলা থেকে তুমি রুমা লামিয়া এক সাথে বড়ো হয়েছ
মুন : ওহ।
রোদ : হুম রুমার জন্য আমি তোমাকে ডক্টর দেখাতে পারছি
মুন : কিভাবে?
রোদ : সেদিন আমার কথায় রুমা আরিয়ানের বাসায় যায়
মুন : আরিয়ান মানে জয়
রোদ : হুম আর তোমার সব খবর আমাকে ফোন করে বলে সেদিন আমি ভার্সিটিতে গিয়ে তোমাকে তুলে নিয়ে আসি আর তোমার সকল চেকআপ করাই আর রুমা আগে থেকে তোমার সব ওষুধ আমাকে ছবি তুলে পাঠিয়েছিল তোমাকে বাসায় দিয়ে আমি ডক্টর এর কাছে যাই আর রুমার সাহায্যে তোমার ওষুধ পাল্টে দি।
মুন : বাবা কি জটিল
রোদ : তোমাকে ওসব ভাবতে হবে না তুমি শুধু আমাদের বাচ্চার কথা ভাবো

মুন চুপ হয়ে যায়।

মুন : আচ্ছা আমাকে এখানে আনলেন কি করে ?
রোদ : সেদিন লাইট অফ করে তোমাকে সেন্সলেস করে নিয়ে আসি তোমার টিকিট আগে থেকে কাটা ছিল তোমাকে আর রুমাকে পাঠিয়ে দিয়ে আমি আমার কাজ করতে যাই।
মুন : কি কাজ ?
রোদ : সব যদি এখন বলে দি তাহলে কি চলবে আজকের জন্য এই টুকু জান (মুনের ঘাড়ে কিস করে)
মুন : আমার যখন সেন্স তখন রুমা আমাকে সব বলে দেয়
রোদ : কি কি বলে ?
মুন : বলে যে আপনি আপনার স্বামী। আমাদের বিয়ের পিক দেখিয়েছে আব্বু আম্মু সবার কথা বলে । আর বলে জয় মানে আরিয়ান আমায় মিথ্যে বলছে
রোদ : তোমাকে বেশি ভাবতে হবে না এখন তুমি অসুস্থ ওই ওষুধ গুলো খাবে ঠিক সুস্থ হয়ে যাবে আর আমার যাই হোক তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে
মুন : জানেন সত্যি জানার পর আমি কত খুশি হইছি
রোদ : এতো খুশি কেনো ?
মুন : আরিয়ানকে আমার একটু ও ভালো লাগতো না আমি ওকে বিয়ে করতে চাইতাম না কিন্ত আব্বু আম্মু মিথ্যে কথা বলে তাই আমি রজি হই। আর এখন আমি খুশি যে আমার আব্বু আম্মু আছে আর স্বামী ও আছে
রোদ : কোনটা জেনে বেশি খুশি আব্বু আম্মু নাকি স্বামীর কথা জেনে ?
মুন : জানিনা
রোদ : ওকে জানতে হবে না বাকি সব আমি জানিয়ে দিবনে।

রোদ মুনকে কলে তুলে ঘরে এনে শুয়ে দেয়।

রোদ : আজ আমি আবার তোমাতে হারাতে চাই তোমার কি অনুমতি আছে প্লিজ না করো না

মুন রোদকে জড়িয়ে ধরে । আবার ও ওরা হারিয়ে গেলো। জানিনা কোণে গেছে যেখানে যাক আমার জানা নেই ।কেউ জেনে থাকলে বলে দিও।

রাতে মুন রোদের বুকে শুয়ে আছে আর রোদ মুনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।

রোদের মাথায় অনেক টেনশন । আরিয়ানকে বন্দী করলে ও আসল মানুষকে ধরতে পারলো না ।

রোদ মুনের কপালে চুমু খেয়ে বলে

রোদ : আমি থাকতে তোমার কিছু হতে দেবো না কিছুই না । কেউ তোমার ক্ষতি করতে চাইলে তাকে সবার আগে আমার মুখোমুখি হতে হবে একবার তোমাকে হারিয়েছি দ্বিতীয় বার হারাতে চাই না ।

রোদের চোখে পানি। হ্যা রোদ কাদছে আপন মানুষকে হারানোর ভয় রোদকে কুরে কুরে খাচ্ছে।

আর একটা রাত রোদ নির্ঘুম কাটিয়ে দিলো।

সকালে
মুন ঘুম থেকে উঠে দেখে রোদ ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

মুন : কি দেখছেন ?

রোদ মুনের কপালে ভালোবাসা দিয়ে বলে
রোদ : কিছু না
মুন : উঠুন বেলা হইছে
রোদ : হোক তাতে তোমার কি আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো
মুন : আপনি ঘুমান আমাকে তো উঠতে দিন
রোদ : না তোমাকে উঠতে দেবো না আগে যখন তুমি আমাকে নিয়ে জাগতে আমি কিছু বলতাম
মুন : আরে
রোদ : কোনো কথা না ঘুমাও

রোদ মুনকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো। আর মুন সে তো তার হিরো কে দেখতে বেস্ত ।

মুন রোদের গালে আলতো করে ছুয়ে দিলো।

রোদ : ইসস লোকটার মুখে কি মায়া এই জন্য তো আমি বার বার প্রেমে পড়ে যাই। প্রথম যেদিন আমার সামনে এসেছিল সেদিন আমি উনার প্রেমে পরে যাই আর এখন জানতে পারলাম উনি আমার স্বামী । আচ্ছা আরিয়ান এর বড়ো মিথ্যে কেনো বললো কি শত্রুতা উনার সাথে আরিয়ান তো চুপ করে থাকার ছেলে না এতক্ষণে তো অনেক পাগল এর মত খুঁজছে । আরিয়ান উনার কোনো ক্ষতি করে দেবে না তো না না আমি উনার কিছু হতে দেবো না ।

রোদ হালকা নড়েচড়ে উঠে মুন আস্তে আস্তে রোদের থেকে ছাড়িয়ে গোসল করতে চলে যায়।

অনেকক্ষণ গোসল করে এসে রোদের পাশে বসে আসে।

মুন : ধুর বাইরে ও যেতে পারছি না উনি তো আবার বলে দিচ্ছে উনাকে ছাড়া এক পা দিলে পা কেটে বসিয়ে রাখবে ।

ধুর ছাই ভালো লাগে না উনাকে কি ডাকবো না থাক ঘুমিয়েছে ঘুমাক। কিন্ত আমি কি করবো

মুন ঘরের এপাশ থেকে ওপাশ ঘুরছে। শেষে আর না পেরে রোদকে ডাক দেয়। কিন্ত রোদের উঠার নাম নেই।

মুন এবার রোদের উপর বসে চুল ধরে টানতে থাকে

মুন : উঠুন না উঠুন

রোদ ধরফরিয়ে উঠে

রোদ : কি হইছে?
মুন : আমি বাইরে যাবো
রোদ : কোথাও যাওয়া হচ্ছে না ঘুমাও
মুন : ধুর ছাই সেই থেকে ঘুমাও ঘুমাও করছেন এভাবে ঘরে থাকতে ভালো লাগে
রোদ : আগে তো ঘরে থাকতে কি করে ?
মুন : আগে কোথায় ঘরে থাকতাম আমি যখন ইচ্ছা হতো বেরিয়ে যেতাম সাথে জয় ও যেতো
রোদ : জয় তোমাকে খুব ভালোবাসে তাই না(ভ্রু কুচকে )
মুন : বাসুক তাতে আমার কি আমার এখন খুদা লাগছে

রোদ উঠে গোসল সেরে নেয়।

মুন বিছানায় বসে আছে। রোদ আয়নায় চুল ঠিক করে খাবার আনতে যায়।

একটু পরে খাবার নিয়ে মুনকে খাইয়ে দিতে লাগে। মুন ও খাচ্ছে।

মুন রোদের গালে দিতে গেলে রোদের ফোন বেজে উঠে ।

রোদ মুনের দিকে তাকিয়ে ফোন ধরে ।

কিছুক্ষণ কথা বলার পর রোদ বলে।

রোদ : মুন আমাকে যেতে হবে
মুন: এখন ?
রোদ : হুম তুমি রুমের বাইরে যাবে না বুঝছো ঘরে টিভি আছে সব আছে । খাবার তোমার রুমে দিয়ে যাবে নাহলে রুমার সাথে গিয়ে খেয়ে নিবে।

মুন মাথা নাড়ায়।

মুন : আপনি কখন আসবেন ?
রোদ : জানিনা কিন্ত নিজের যত্ন নিও আর ওষুধ খেয়ে নিও।

রোদ মুনের কপালে ভালোবাসা দিয়ে বেরিয়ে যায়। মুন মন খারাপ করে বসে আছে ।

রুমা : কীরে মন খারাপ কেনো ?
মুন : উনি তো না খেয়ে চলে গেলো।
রুমা : কাজ পড়েছে তাই চল তুই আর আমি মিলে গল্প করি
মুন : ওকে।

সারাদিন মুন রুমার সাথে ছিল রোদ একবার ও মুনকে ফোন করেনি । করবে কি করে মুনের কাছে তো ফোন নেই। সারাদিন মুন রোদের গল্প শুনেছে ।

রাতে মুন বসে আছে রোদ কখন আসবে বলে কিন্ত রোদ আসছে না

মুন : ধুর ছাই ওষুধ খেয়ে তো ঘুম আসছে উনি ত এখন ও আসছে না কি করবো

মুন এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলো।

সকালে মুন ঘুমের ঘোরে অনুভব করছে মুনকে কিছু দিয়ে বেঁধে রাখা হইছে । মুনের ঘুম পাচ্ছে খুব চোখ মেলে তাকাতেই পারছে না ।

অনেক কষ্ট মুন চোখ খুলে তাকালো
গল্পঃ #Mr_Devil
(A Psycho love story)
লেখিকা : নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৩৭

মুন চোখ খুলে দেখে রোদ ওকে শক্ত করে জড়িয়ে আছে মুন নরতে পারছে না ।

মুন : উনি কখন আসলো উফফ কিভাবে ধরে রেখেছে আমি মনে হয় পালিয়ে যাচ্ছি।

মুন রোদকে ডাকছে কি রোদের উঠার নাম নেই ।

মুন : রোদ উঠুন প্লিজ উঠুন
রোদ : উহু
মুন : রোদ আমার লাগছে এভাবে কেউ জড়িয়ে ধরে প্লিজ উঠুন

রোদ পিটপিট করে চোখ খুলে বলে।
রোদ : কি হইছে?
মুন : উঠুন
রোদ : না এখন ও সকাল হইনি
মুন : আমাকে তো ছাড়েন এমন ভাবে ধরেছেন যেনো কোনো দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখছেন
রোদ : এভাবেই সারাজীবন বেঁধে রাখবো কেউ আলাদা করতে পারবে না আমাদের একবার হারিয়েছি আর না (আরো শক্ত করে জড়িয়ে)
মুন : আচ্ছা ঠিক আছে কিন্ত আপনি কখন আসলেন আর কাল সারাদিন একবার ও ফোন দিলেন না কেনো (অভিমানী কণ্ঠে)
রোদ : সরি জান বেস্ত ছিলাম। অনেক কিছুর সমাধান করা এখন ও বাকি সেগুলো না করে তো আমার শান্তি নেই জান
মুন : কিসের সমাধান আমাকে বলুন
রোদ : বলবো সময় হলে এখন ঘুমাতে দাও
মুন : না আপনি ঘুমাবেন না আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন

রোদ….

মুন রোদের চুল ধরে টানতে লাগলো। রোদ একটা কঠিন লুক দিলে মুন চুপ হয়ে যায়।

একটু পর আবার চুল দাড়ি ধরে টানতে থাকে

রোদ : মুন আমার খুব ঘুম পাচ্ছে
মুন : কিসের ঘুম সারারাত কই ছিলেন হামম অন্য কারোর কাছে নাকি (সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে)

রোদ মুনের কথা শুনে হেসে দেয়। মুন ছোট ছোট চোখ করে বলে

মুন : হাসার কি হলো আমি হাসির কি এমন কথা বললাম
রোদ : হাসবো ছাড়া কি করবো আমার মুণ পাখি যে আগের মতই কথা বলেছে
মুন : আগের মত মানে আপনি আগে ও যেতেন
রোদ : এই জন্য বলে মেয়ে মানুষদের বলে এক বুঝে আরেক

(শালা তোরে কিন্ত আজকে গল্প থেকে কিক মেরে দেবো😒)

রোদ : আচ্ছা ঠিক আছে রাগ করতে হবে না আমি কালকে একটু কাজে ব্যাস্ত ছিলাম আর শুন যাই হোক তুমি ভয় পাবে না বুঝছো আমি বেচে থাকতে তোমার কিছু হতে দিবো না কিছু না । (মুনের কপালে চুমু দিয়ে)
মুন : সেসব বুঝলাম কিন্ত আমাদের আবার কি কোনো বিপদ হবে
রোদ : খেলা তো সবে শুরু হইছে
মুন : মানে কিসের খেলা ?
রোদ : তোমাকে অত বুঝতে হবে না
মুন : আজব বললে কি হয় (গাল ফুলিয়ে)
রোদ : ড্রামা কুইন (নাক টেনে ) বলবো সময় হক
মুন : সেই সময় কবে হবে ?
রোদ : খুব তাড়াতাড়ি এখন চুপ করে ঘুমিয়ে পর ।

মুন আর কিছু বলল না রোদ মুনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ঘুমিয়ে পড়ে সাঠে মুন ও।

সকালে দরজা ধাক্কায় রোদের ঘুম ভেংগে যায়। চোখ ডলতে ডলতে দরজা খুলে দেয়।

রোদ তাকিয়ে দেখে জন দাড়িয়ে আছে।

জন : স্যার খোজ পাইছি
রোদ : কোথায় এখন ?
জন : স্যার পুরনো বিল্ডিং এ
রোদ : আচ্ছা ঠিক আছে আমি একটু পর আসছি।
জন : জি স্যার

জন চলে গেলো । রোদ দরজা দিয়ে মুনের কাছে গেলো।

রোদ : খুব তাড়াতাড়ি এই খেলা শেষ হবে সব কিছুর শেষ আমি করবো ।

রোদ মুনের কপালে ভালোবাসা দিয়ে গোসল করতে যায়।

গোসল করে বেরিয়ে দেখে মুন বিছানায় বসে আছে।

রোদ : কিহলো এভাবে বসে আছো কেনো ?
মুন : কিছু না

রোদ আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল মুছছে । মুন উঠে ওয়াসরুমে যেতে গেলে মাথা ঘুরে পরে যেতে নিলে রোদ ধরে।

রোদ : মুন এই মুন কি হইছে ? (চিন্তিত হয়ে)
মুন : আমি ঠিক আছি একটু দূর্বল লাগছে
রোদ : সকাল থেকে কিছু খাওনি সেই জন্য আচ্ছা ঠিক আছে আমি খাবার আনছি
মুন : হুম

রোদ কিচেনে খাবার আনতে গেলো। মুন গোসল করতে গেলো।

গোসল করে এসে দেখে রোদ ফোন কথা বলছে। রোদ মুনকে দেখে ফোনটা রেখে দেয়।

রোদ : নাও খেয়ে নাও
মুন : আমার খেতে ইচ্ছা করছে না কেমন কেনো বমি বমি পাচ্ছে
রোদ : এসব মনে হয় ওষুধ এর জন্য হচ্ছে ওষুধ কাজে দিচ্ছে মুনের তো কিছু কিছু মনে পড়ছে (মনে মনে) না খেলে তো আরো শরীর দুর্বল করবে একটু খেয়ে নাও

রোদ জোর করে মুনকে খাইয়ে দিলো।

খাওয়া শেষে মুন শুয়ে আছে ।
রোদ : আমাকে একটু কাজে যেতে হবে তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো তুমি নিজের খেয়াল রেখো।

মুন মাথা নরারায় । রোদ যেতে গেলে আবার কি ভেবে ফিরে এসে মুনকে জড়িয়ে ধরে।

মুন : কিহলো?
রোদ : কিছু না আসছি

রোদ চলে যায়। মুনের কেমন যেন মাথা ঘুরাচ্ছে তাই মুন শুয়ে আছে।

রোদ গাড়ি চালিয়ে পুরানো বিল্ডিং এর ভিতরে গেলো।

রোদকে দেখে রোদের লোকজন এগিয়ে আসলো । রোদ তাদের সাথে ভিতরে গেলো।

ভিতরে একটা লোক চেয়ারে বাধা অবস্থায় আছে । রোদ লোকটার কাছে গিয়ে বলে

রোদ : দেখ তোর সাথে আমার কোনো শত্রুতা নেই তাই সোজাসুজি সব বলে দিলে তোর জন্য ভালো।
লোকটা : আমি কিছু জানি
রোদ : মিথ্যে মিথ্যে মিথ্যে এটা বলে কি লাভ ? যদি সত্যি বলে দিস তাহলে ছেরে দেবো নাহলে
লোকটা : আমি কিছু জানিনা
রোদ : এ এতো সহজে মানবে না

রোদ ওর লোকগুলোকে ইশারা করলে । ওরা একটা প্লাস নিয়ে আসে। লোকটা দেখে ভয় পেয়ে যায়। রোদ প্লাস্টা হাতে নিয়ে বলে

রোদ : আমার ওতো টাইম নেই কিছু প্রশ্ন করবো যদি সত্যি বলিস তাহলে কিছু বলবো না নাহলে তোর (ডেভিল হাসি দিয়ে)

রোদ : তো প্রথম প্রশ্ন ও কে?
লোকটা : আমি জানিনা

রোদ লোকটার হাতের নখ তুলে ফেলে।
লোকটার চিৎকারে বিল্ডিং কেপে উঠে।

রোদ : এখন ও বলছি বল নাহলে এবার হাতের আঙ্গুল হারাবি
লোকটা : আমি সত্যি কিছু জানিনা
জন : স্যার ওদের ভালো ভাবে বলে কিছু হবে না ওদের সব টেনিং দেওয়া হয়েছে
রোদ : ঠিক বলেছ একে আর কষ্ট দেবো না ভাবছি এর ছেলেটাকে তুলে নিয়ে আসবো। এর ছেলের হাতের আঙ্গুল গুলো খুব সুন্দর
লোকটা : না আমার ছেলের কিছু করবেন না (চিৎকার করে)
রোদ : কোনো স্কুলে যেনো পরে হাম্মম মনে পড়েছে

রোদ চলে যেতে নিলে লোকটা চিৎকার করে বলে।

লোকটা : স্যার আমি বলছি
রোদ : হুম বল
লোকটা : স্যার আপনারা ভুল লোককে ধরে আনছেন এটা ওদের একটা প্ল্যান ছিল আমাকে এখানে পাঠিয়ে আপনার সময় এখানে আটকে দিয়ে ওরা ওদের প্ল্যান এ এগিয়ে যাবে।
রোদ : ওরা কে?
লোকটা : স্যার আমি এর থেকে বেশী জানিনা । আমাকে যেই টুকু বলছে সেইটুকু করছি
রোদ : জন এর থেকে কে ওকে কাজ করতে বলছে কোন নাম্বার দিয়ে কথা বলছে সব নাও।
জন : ওকে স্যার

রোদ বেরিয়ে যায়। অনেক জোরে গাড়ি চালাচ্ছে। হটাৎ রাস্তার পাশে একটা দুকান দেখলো

রোদ : মুনের তো শরীর ভালো লাগছে না এক কাজ করি কিছু চকোলেট আর ice cream নিয়ে যাই।

রোদ দোকান থেকে কিনে গাড়ি নিয়ে বাসায় গেলো।

রোদ বাসার ভিতরে গিয়ে অবাক । বাসায় কেউ নেই সব গার্ডরা সেন্সলেস অবস্থায় পড়ে আছে। রোদের বুক ধক করে উঠলো।

রোদ উপরে গেলো সারা বাড়ি খুঁজলো কিন্ত মুনকে পেলো না । রোদ হাতে থাকা সব কিছু ফেলে দিয়ে মাটিতে বসে পরলো।

রোদের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে মুনকে হারানোর ভয় টা রোদকে আবার ধরেছে।

রোদ : মুননননননন (চিৎকার করে)

এদিকে ল্যাপটপে বসে কেউ একজন রোদের কান্না দেখছে মুখে তার রহসোজনিত হাসি।

অচেনা : সবে তো খেলা শুরু আগে দেখো কি হয় কার ফাঁদে পা দিচ্ছ জানো না । সাপের লেজে পা দিলে ছোবল ত খেতে হবেই (অট্ট হাসি দিয়ে)

তার হাসিতে নিস্তব্ধ ঘর কেপে উঠছে।

রোদ নিচে বসে আছে তখনই তার ফোন বেজে উঠে। রোদ নিজেকে ঠিক করে ফোন ধরে।

রোদ : হোয়াট
……

রোদ কিছু না ভেবে বেরিয়ে পরে ।
গল্পঃ #Mr_Devil
(A psycho love story)
লেখিকা : নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৩৮

রোদ গাড়ি চালাচ্ছে আর মুনের কথা ভাবছে। রোদের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।

রোদ : আমি পারলাম না তোমাকে ধরে রাখতে আমাকে মাপ করো কিন্ত তুমি চিন্তা করো না আমি তোমার কিছু হতে দিবো না কিছু না

রোদ আরো জোরে গাড়ি চালালো। তখনই ও সামনে কিছু পরে থাকতে দেখল।

রোদ গাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখতে গেলো হটাৎ মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে। কারণ রোদের মাথায় কেউ জোরে আঘাত করছে । রোদ নিজেকে ঠিক রাখতে পারছে না তাও অনেক কষ্টে পিছনে তাকিয়ে দেখে ৪জন লোক হাতে রড।

রোদকে ইচ্ছা মত মারে। রোদ মাথার যন্তনায় উঠতে পারছে না মাটিতে শুয়ে আছে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে চোখ দিয়ে এক ফুটা পানি গড়িয়ে পরলো। লোকগুলো রোদকে মেরে কাউকে ফোন করে

লোকটা : স্যার মনে হয় মরে গেছে

লোকটা : ফেলে দেবো নাকি আপনার ওখানে নিয়ে আসবো

লোকটা : ওকে স্যার

লোকটা ফোন কেটে ওদের লোকদের বলে

লোকটা : এই স্যার একে নিয়ে যেতে বলছে চল।

লোকগুলো রোদকে তুলে গাড়িতে নিয়ে গেলো।

এদিকে
মুন চোখ খুলে নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করে । উঠতে গেলে বুঝতে পারে হাতে কেনেল লাগানো সেলাইন চলছে।

মুন চারিদিক তাকিয়ে চেনার চেষ্টা করে

মুন : আমি এখানে কি করে আসলাম আমি বাসায় ছিলাম

মুনের মনে পরে মুন যখন বাসায় টিভি দেখছিল তখনই দরজা ধাক্কা দেয়। মুন রোদ ভেবে খুলে দেখে কাল পোশাক পড়া লোক। লোকগুলো মুনকে ধরতে গেলে মুন এটা সেটা ছুড়ে মারে শেষে সিড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যায় তারপর আর মনে নেই।

মুনের মনে পড়তেই মুন মাথায় হাত দিয়ে দেখে ব্যান্ডেজ করা।

মুন : আমি এখানে কি করে আসলাম রোদ রোদ কোথায়

মুন উঠতে গেলে একটা নার্স বলে

নার্স: ম্যাম আপনি উঠবেন না আপনার সেলাইন চলছে
মুন : আমাকে আমার স্বামীর কাছে যেতে হবে

তখনই কেউ বলে উঠে তোমার স্বামী তো এখানে।

মুন তাকিয়ে দেখে আরিয়ান দরজায় হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে

মুন : আপনি (অবাক হয়ে)
আরিয়ান : হা আমি তো তোমার স্বামী আমি ছাড়া কে থাকবে জান
মুন : আমি আপনাকে ছাড়বো না আপনি

মুন উঠতে গেলে আরিয়ান মুনের হাত ধরে ফেলে।

আরিয়ান : আরে আরে কি করছো এতো হায়পার হয়ার কি আছে শান্ত হোয় পরি
মুন : একদম আপনি আমাকে পরি বলবেন না আমি পরি না মুন
আরিয়ান : রোদ তোমাকে সব মিথ্যে বলছে তুমি আমাকে বিশ্বাস করছো না তোমার মামনি কে তো বিশ্বাস কর তাই না
মুন : সব মিথ্যে সব মিথ্যে আপনাকে আমি ছাড়বো না

মুন কেণেল খুলে আরিয়ানের গলা ধরে তখনই নীলিমা এসে মুনকে সরিয়ে একটা চর মারে।

আরিয়ান : আম্মু তুমি এটা কী করলে
নীলিমা : যা করছি বেশ করছি ও তোর ক্ষতি করতে চাইছিল ।
আরিয়ান : মম তুমি এখানে থেকে যাও

মুন এতক্ষণে নীলিমাকে ভালো করে দেখে ।

নীলিমা আর আরিয়ান কথা কাটাকাটি করছে ।

মুন : মামনি তুমি আমাকে মারলে? (কান্না মিশ্রিত কণ্ঠে)
নীলিমা : হা তুই আমার ছেলের ক্ষতি করতে চাইছিলি
মুন : মামনি উনি তো
নীলিমা : চুপ আর একটা কথা ও শুনতে চাইনা।
মুন : আপনি এখান থেকে জান আমি একা থাকতে চাই একা
নীলিমা : আরিয়ান তুই যা আমি ওকে বুঝাবো
আরিয়ান : কিন্ত
নীলিমা : কোনো কিন্ত না

আরিয়ান চলে যায় মুন দরজা আটকে দেয়।

রোদকে একটা বন্ধ ঘরে ফেলে রাখা হইছে । রোদের খুব কষ্ট হচ্ছে তাও চারিদিক তাকিয়ে দেখছে।

রোদ উঠার চেষ্টা করলে তখনই কেউ একজন দরজা খুলে ভিতরে আসে।

রোদ পিটপিট করে তাকিয়ে আছে। লোকটা রোদের পাশে এসে রোদের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়।

অজানা : হেলো মিস্টার রোদ আমাকে কি চেনা যায়?

রোদ লোকটার দিকে একবার তাকিয়ে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না ।

রোদ : আপনি
অজানা : ওহ তাহলে আমাকে চিনতে পারছে । ভালো তো কেমন আছো আব্বু? (ডেভিল স্মাইল দিয়ে)
রোদ : তার মানে এসব আপনার কাজ (অস্পষ্ট করে)
অজানা : না মোটেও না এসব আমার লোকের কাজ আমি শুধু তাদের বলেছি করতে
রোদ : কেনো কাকু কেনো ? আমার এতো ক্ষতি করছো ?
নাহিদ : আমি তোমার ক্ষতি করতে চাইনি কিন্ত কি করবো তুমি তোমার বাবার মতো হইছো তোমার বাবা যেমন আমার সুখ সহ্য করতে পারতো না তেমনি তুমি আমার ছেলের রোদ : তোমার ছেলে ?(অবাক হয়ে)
নাহিদ : হা আরিয়ান আমার ছেলে।

রোদ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। অনেক কষ্ট রোদ উঠে দাড়ায়

নাহিদ : আরে আরে এতো কষ্ট কেনো তুমি তো আমার নিজের ছেলেই
রোদ : ঠিক বলেছেন নিজের ছেলে বলে এভাবে মেরেছেন নিজের ছেলে বলে তার সুখ আপনার চোখে সহ্য হইনি
নাহিদ : উফফ এতো ইমোশনাল তুমি একদম তোমার আব্বু মত।
রোদ : একদম আমার আব্বুর নাম আপনার ওই নোংরা মুখ দিয়ে নেবেন না
নাহিদ : কেনো সে তো আমার নিজের ভাই
রোদ : ভাই হা ভাই বলে তো তাকে মেরে ফেলেছেন (তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)
নাহিদ : ওহ তার মানে তুমি সত্যি টা জানো গুড তাহলে আর ঘুরিয়ে বলতে হবে না
রোদ : কেনো করলেন এমন কেনো ?
নাহিদ : বলবো যেই সত্যিটা আমি এতো বছর ধরে লুকিয়ে রেখেছি সেটা এখন তোমাকে বলবো কারণ যানো তোমার সময় শেষ তাই । তাহলে শুরু করি
রোদ : কি শুরু করবেন একটা ড্রাগস ব্যাবসায়ী আবার কি বলবে যাকে ড্রাগস খেতে দেখে তার বাবা আর বড়ো ভাই বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
নাহিদ : হা আমি ড্রাগস ব্যাবসায়ী (চিৎকার করে) আর এটাই আমার কাছে সুখ। আমি খারপা আর তোর আব্বা খুব ভালো তাহলে লাভ কি হলো সেই তো কবরে শুয়ে থাকতে হলো । কি দোষ করেছিলাম আমি যে তোর আব্বু আমার সব কেরে নিলো এখন দেখে আমি কোথায় আর তোর আব্বু কোথায়
রোদ : আপনি টাকা চেয়েছিলেন আর আমার আব্বু সম্মান । আপনি টাকার জন্য নিজের সাইকেল বেচে দেন শুধু নেশা করবেন বলে । আর সেটা আমার আব্বু জানতে পারে তাই আমার দাদুকে বলে দেয় আপনার ভালো জন্য কিন্ত আপনি বুঝেননি
নাহিদ : কি ভালো চাইছিল আমার । তোর আব্বু সব সময় নাটক করতো কোনো ভালো চাইনি আমার কত বার বলেছিলাম কাউকে না বলতে কিন্ত তাও বললো আমাকে খারাপ বানানোর জন্য । ওর জন্য আব্বু আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় সেইজন আমি ওকে মেরে ফেলেছি । তোর মাকে নেশা করিয়ে উল্টা পাল্টা তোর আব্বুর নামে বুঝতাম । তোর মা আমার পড়ানো ফ্রেন্ড ছিল।সেই জন্য কাজটা আরো সহজ হয়। নিহাল ভাইয়ার সাথে বিয়ে হোয়ার কিছু বছর পর যখন তুই হোস তোদের অনেক সম্প্রতি হয় যেটা আমি দেখতে পারছিলাম না আমি কষ্ট করবো টাকার জন্য আর তোর আব্বু সুখ করবে তাই তো তোর মাকে নেশা করিয়ে তার মাধ্যমে তোর আব্বুকে মেরে ফেলি তোকে ও মারতে চেয়েছিলাম কিন্ত তুই পালিয়ে যাস পরে তোর আব্বুর টাকা পয়সা সব আমার হয়।

রোদের সারা শরীর কাপছে রাগের জন্য। রোদ যেই নাহিদ খান এর গলা ধরতে যাবে তার আগে আরিয়ান ওকে হকিস্টিক দিয়ে বাড়ি মারে । রোদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

মুন : রদ্দ্ড্ডড্ডড (চিৎকার করে)

আরিয়ান পিছনে তাকিয়ে দেখে মুন দাড়িয়ে আছে। মুন তাড়াতাড়ি গিয়ে রোদের মাথা নিজের কোলে নেয়

মুন : রোড উঠুন এই দেখুন আমি আসছি প্লিজ উঠুন আপনি ত বলেছিলেন আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবেন না প্লিজ উঠুন দেখুন আপনার মুন আপনার সাথে আছে (কাদতে কাদতে)

রোদের মুখ দিয়ে রক্ত পরছে ।

নাহিদ : বেটা ওকে তুলো

আরিয়ান মাথা নেড়ে মুনকে তুলতে গেলে মুন আরিয়ান এর গালে চর বসিয়ে দেয়।

মুন : একদম আমার আছে আসবেন না আপনার জন্য আমার রোদের এই অবস্থা আজ যদি ওর কিছু হয় তো আপনাকে আমি ছাড়বো না (রেগে)

আরিয়ান মুনকে জোর করে তুলে আনতে গেলে আরিয়ান মাটিতে পরে যায়

চলবে

(আজ রহস্যের সমাধান করলাম কাল শেষ। তাড়াতাড়ি শেষ করার জন্য খুব ছোটো করে লিখছি আমি জানি আপনাদের এখন আর গল্পটা তেমন ভালো লাগে না )
চলবে
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here