#My vampire lover comes again
#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স
#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_02
ইরিন তড়িঘড়ি করে ফ্রেশ হয়ে নে। জবের পারমিশন তাও কোনো নিউজ দেওয়া ছাড়া তার সামনে আসছে। তাই সে এতে অবহেলা না করার জন্যে সব ঠিকঠাক করে গুছিয়ে অফিসের জন্যে রওনা দে। লন্ডনের সব টেক্সি গুলো গাড়ির মতো,, বাংলাদেশের মতো রিকশা এখানে নেই। ইরিন বাস টপে দাঁড়িয়ে বাসের জন্যে অপেক্ষা করছে। শুধু সেই নয় অনেকে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে।
ইরিন বাস টপে বেশি যাওয়া আসা পছন্দ করে না। তার থেকে খোলামেলা ভাবে চলতে ভালো লাগে। তবে মাঝে মধ্যে কাজের জন্যে যাই। ইরিন হাতে নিজের স্কুল কলেজে তার প্রগ্রেস,,এক্টিভিটি সবগুলোর ফাইল তৈরি করে একসাথে করে নিয়ে আছে। সে একবার রাস্তার এপাশ ওপাশ দেখে নে বাস আসতেছে কিনা। আবার সে নজর ফিরিয়ে হাতে থাকা ফাইলের মধ্যে দেখে নে। সে আনমনেই বিড়বিড় করে বলে…..
—” উহ এখানে আসার ড্রিম ছিলো তাই এতো কিছু করছি। নইতো কোথাকার কি? মুখজোড়া উদাস করে। বাট সব ঠিকই আছে। কেননা এখানে এসে এমন লাগছে কেউ যেনো আমার আশেপাশে আছে যে কিনা আমায় দেখছে। মুচকি হেসে দিলো।
ইরিন ভাবনায় বিভোর থাকায় কে যেনো তার ঘাড়ে নিজের নাক ছুঁয়ে ইরিনের শরীরের ঘ্রাণ নিতে থাকে। তার নিশ্বাস হালকা থেকে গভীরে যাওয়ার উপক্রম। ইরিন ভাবতে ভাবতে অনুভব করে কেউ যেনো তার খুব কাছে এসে দাঁড়িয়ে তার সাথে লেগে আছে। এতে ইরিন কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। সে হুট করে পিছে তাকিয়ে দেখে কেউই নেই। সে আশপাশ খেয়াল করে দেখে যে যার মতো দাঁড়িয়ে আছে। সাথে তার ঘাড়ে তার নিশ্বাস এর অনুভূতি সে পাচ্ছিলো তাও আর পাওয়া যাচ্ছে না।
সে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে বাস এখনো আসে নি। তাই সে নিজে নিজেই বলে—” হেঁটে হেঁটেই যায়(ঘড়ির দিকে তাকিয়ে )। সে হেঁটে হেঁটে শেষ পযর্ন্ত অফিসের সামনে চলে আসে।
এসেই অফিসের ভেতরে পা রাখতেই জোরোসরে ধাক্কা খেয়ে পরে যেতে লাগলেই কে যেনো তার কোমর চেপে নিজের দিকে টান দিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নে। ইরিনও ভয়ে সেই মানুষটাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে। দুইমিনিট পর্যন্ত এভাবে জড়িয়ে থাকায় ইরিন জট করে চোখজোড়া খুলে ফেলে সে চোখ ঘুরিয়ে দেখে সে কারো বুকের সাথে মিশে আছে। এতে ইরিন মনে মনে বলে…….
—“আমি কি আজকে যেখানে সেখানে পড়ার প্রতিক্ষা করেছি? যখন তখন পড়তেছি। ইয়া আল্লাহ উদাস করে আমতা আমতা করে বলে—” আ…আইম সরি। আ..আমি দেখি নি। মানুষটার কাছ থেকে সরে এসে মুখের দিকে তাকিয়ে হা হয়ে যায় ইরিন।
ইরিন সরে আসলেও ওর হাত এখনো সেই মানুষটার হাতে সাথে মিলানো। ইরিন ত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সেই মানুষটার দিকে। সুদর্শন পুরুষ দেখতে ত মাশাআল্লাহ সেই টাইপের জস ছেলে!!।
মানুষটা গম্ভীর কণ্ঠে বলে—” আপনি ঠিক আছেন?এখন ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্যে রেডি হোন। সারাক্ষণ না জানে কার কার উপর পড়েন ! অবশেষে আমার উপর এসে পড়লেন (রাগী মুডে)
ইরিন মানুষটার মুখে নিজের ব্যাপারে এমন কথা শুনে চেঁচিয়ে উঠে বলে—” এক্সকিউজ মি মিস্টার আপনি যে কেউ হোন। আপনি কে যে আমাকে এমন বলবেন?? কোমরে হাত রেখে চোখজোড়া ছোট করে রাগি সুরে বললো।
ইরিনের কথায় অফিসে থাকা সব স্টার্ফরা হতমম্ভ হয়ে যায়। সবাই দাঁড়িয়ে যায় আর কিছু বলতে আসলেই মানুষটা হাতের ইশারা দিয়ে তাদের থামিয়ে দে। ইরিন কিছুটা অবাকসূচক হয়ে মনে মনে বলে….
—” এর হাতের ইশারায় সবাই থেমে গেলো কেন??ঘাবড়ে প্লাস মুখ বাঁকিয়ে নে।
মানুষটা নিজের কলার ঠিক করে বলে—” যা বলেছি বেশ বলেছি তোমার মতো থার্ড ক্লাস মেয়ে অনেক দেখেছি। এখন আবার তুমিও এলে। যাক আসছো তো আসছো। এবার কাজে মন দাও যদি?
ইরিনের মুখের সামনে তর্জনী আঙুল দেখিয়ে। কোনো কাজে অবহেলা বা অমনোযোগী দেখেছি। তবে দেখবেন আপনার সাথে কি কি হয় ! বাঁকা হেসে কথাটা বললো।
ইরিন মানুষটার কথায় খুব রেগে যায় সে মানুষটার কলার ধরে তার মুখের খুব কাছে এসে বলে—“ওই তুই যেইই হস। আমি তোরে ভয় পাই না। উহহ আসছে আমাকে ধমক দিতে। আমিও সব পারি। তুই কি জিনিস বুঝে গেছি। তোর কাজ কে করতে আসছে? আমি আসছি এখানের বসের সাথে কাজ করতে উনার এস্সিটেন্ট হতে। আপনার মতো ফালতু মানুষের সাথে নয়। ভাব মেরে কথাটা বললো।
মানুষটা ইরিনের মুখের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দে। ইরিন মানুষটার হাসির কারণ বুঝতে পারলো না। সে তার কলার ছেড়ে দিয়ে আরো কিছু বলবে তার আগেই মানুষটার ফোনে কল আসায় সে ইরিনের পাশ কেটে বাইরে চলে যায়। ইরিন ব্যবলাকান্তের মতো তাকিয়ে থাকে। তখন পিছ থেকে হঠাৎ তার নামে ডাক দে অফিসের মেনেন্জার। সে এসে ইরিনকে দেখে বলে…..
মেনেন্জার—” আর ইউ ইরিন ম্যাম??
ইরিন তার নাম শুনে পিছে তাকিয়ে দেখে এক বিদেশি লোক তাকে ডাকছে। সে নিজের মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়। মেনেন্জার দেখে বলে…..
—” ওকে ইরিন ম্যাম। আইম দ্যা মেনেন্জার অফ দিস বিগেস্ট হোসেন গ্রুপ ইনড্রাসট্রি। ওয়েলকাম ইন আওয়ার গ্রুপ।
ইরিন মুচকি হেসে বলে–” থ্যাংকস স্যার। আইম ইরিন কাম ফ্রোম বাংলাদেশ টু স্টাডি এন্ড……কিছুটা থেমে ভেবে আনমনেই মুখের উপর বলে টু ফাইন্ড সামওয়ান।
মেনেন্জার ইরিনের লাস্টের কথা বুঝতে পারে নি সে ইরিনের দিকে চেয়ে বলে—” এক্সকিউজ মি মিস? এন্ড ওয়াট?
ইরিন হকচকিয়ে কেঁপে উঠে তাও মেনেন্জারকে না বুঝতে দিয়ে আমতা আমতা করে বলে—” আই….আইমিন স্টাডি এন্ড ভিজিট এভরি স্পেশাল প্লেসেস হাসার ট্রাই করে। বাট বাই দ্যা ওয়ে হো ইজ দিস পারসন? বাইরের দিকে মানুষটার যাওয়ারদিকে ইশারা করে।
মেনেন্জার—” ওও গুড। ইরিনের কথায় পিছে তাকিয়ে যাকে যেতে দেখে তাকে দেখে বড় বড় চোখ করে ইরিনের দিকে তাকিয়ে কিছু বলবে তার আগেই মেনেন্জারের ফোনে মেসেজ আসে। সে মেসেজটা দেখে মুচকি হেসে ইরিনের দিকে তাকিয়ে বলে……
মেনেন্জার–” ম্যাম ইউর ইন্টারভিউ ইউল বি টুমোরও। টুডে স্যার ইজ বিজি।
ইরিন—” ইটস ওকে।
ইরিন বের হয়ে যায়। কিন্তু প্রায় বিশ মিনিট রাস্তা দিয়ে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলো তখনই ফোনে মেসেজ আসে অফিস থেকে। সেখানে তাড়াতাড়ি অফিসে আসতে বলে। সে আবারো হেঁটে অফিসে এসে বসের রুমের সামনে বসে আছে। একজন লাস্ট সেই বাকি ইন্টারভিউ দিতে। তাকে রুমে ডাকা হলো। ইরিন শুনে এক পায়ে দাঁড়িয়ে যায়। সে মনে মনে বলে…
ইরিন–” ইয়া আল্লাহ আমাকে বাঁচাবে কেমন । এই রকম ভয় শুধু তখনই লাগে যখন স্কুল-কলেজ এ বাইবা চলে। স্যার-ম্যাডাম কি না কি প্রশ্ন করে তা নিয়ে ভাবতে ভাবতে অবস্থা কাহিল হয়। আর এই ইন্টারভিউ তে না জানি কি কি প্রশ্ন করে? ভয়ে এক প্রকার খুব চিন্তিত হয়ে যায়। এমনেই বাইরে শুনলাম বস বলে খুবই রাগী,, গম্ভীরতাপূর্ণ। বাবা শুনে আমি ত এখনই মরার মতো অবস্থা। উফফফ আল্লাহ সেভ মি। সে দরজার হেন্ডেল ধরে বিসমিল্লাহ বলে খুলে ভেতরে উঁকি দিয়ে অর্ধেক পা রেখে বলে—” স্যার মে আই কাম ইন?
ইরিনের সামনের মানুষটা চেয়ারটা সামনের দিকে ঘুরিয়ে আছে। সে ইরিনের সাউন্ড শুনে বাঁকা হেসে বলে –” কাম অন।
ইরিন ঢুকে বসার অনুরোধ চাইলো। মানুষটা তখনো সামনেই দিকে তাকিয়ে জবাব দে বসতে। সে বসার পর মানুষটা জট করে চেয়ার পিছে করে ঘুরে। ইরিন মানুষটা কে দেখে হতবম্ভ হয়ে হা করে তাকিয়ে থাকে।মানুষটা নিজের হাতজোড়া এক করে বলে–” হাই মিস ইরিন এন্ড ওয়েলকাম ইন মাই অফিস । ওপস ফুল নেইম আই ইউল সে। মাই মিনস সিরাত হোসেন ইনড্রাসট্রিস অফিস। দ্যা বিগ ওয়ান ইনড্রাসট্রি।
ইরিন ভয়ে কাঁপাকাঁপি শুরু করে দে যা সিরাত বুঝতে পারে। এর মজা নিয়ে সে বলে—“সো মিস ইউর পার্নিসমেন্ট ইউল বি গ্রারন্টেট।
ইরিন আমতা আমতা করে হাসির চলে বলে—” আইম রিয়েলি সরি স্যার। আইম মিসটেক ইট। প্লিজ ফোরগিভ মি।
সিরাত চেয়ার এর মধ্যে হেলান দিয়ে বলে–” সিরাত হোসেন ডাজেন্ট ফোরগিভ উইদার ইউ ইউড মিসবিহেভ ইউড মি।
ইরিন শুনে মনে মনে বলে—” শালা বজ্জাত উগান্ডার বাচ্চা কালা কুকুর এমন কি মিসবিহেভ করছি তোর সাথে? একটুই ত ফালতু বলছি ! গালি দেয় নি সেটার জন্যে শুকরিয়া আদায় করবি তা না করে বাল বকতেছিস। ইয়া আল্লাহ কোন গাধার অফিসে জয়েন করলাম। না জানে কি পার্নিস করে।
তখন সিরাত বলে—” গিভ মি দ্যাট ফাইল। ইরিন উঠে ফাইলটা অপর পাশে ওর টেবিল থেকে নিয়ে সিরাতের কাছে আসতেই সিরাতও তখন দাঁড়ায়। এতে দুইজনের মাঝে সংঘর্ষ হয়।
তারপর থেকে ত বাকিটুকু প্রথম পর্বেই জেনেছেন।
ইরিন ক্যান্টিনের মধ্যে বসে বসে ভাবতেছে মিস্টার রুস্টার এমন কেন? এতো রাগি মুড নিয়ে কিভাবে থাকে সারাক্ষণ?
তখন এক মেয়ে তার পাশে এসে বলে–“কোজ হি ইজ দ্যা ওয়ান গ্রেটেস্ট পার্সন।
ওহ অাছেন সিরাতের সম্পর্কে বলি। যা জানানো হয় নি।
সিরাত তার বাবার অফিসে চাকরি করছে প্রায় তিনবছর ধরে। সে একডোকেটেট সাথে দেখতে ত মাশাআল্লাহ হ্যান্ডসাম। ফেস দেখলে লাগে একজন বিদেশি চামড়ার কালার । তার চোখের মণিগুলো হালকা বাদামী রঙের। গায়ের হালকা হলুদে। চুল স্পাইক সাথে কাটিং করা। ভ্রুগুলো ডার্কব্লাক,,উচ্চতা ছয় ফুট,,, দেখতে মাশাআল্লাহ সেই রকমের জস ছেলে। তবে খুবই গম্ভীর প্রকৃতির,, নোন স্টপ কথা বলে না,, সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলে।
আপন বলতে তার এক পুরো পরিবার আছে। আব্বু-আম্মু,,এক বোন আর সে। সে হলো বড়।
#My vampire lover comes again
#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স
#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_03
সিরাত গম্ভীর প্রকৃতির হলেও রাতের দিকে সে খুবই আজব টাইপ কান্ড করে যা নিয়ে খুবই চিন্তিত থাকে সে আর তার বাবা তফাজাল হোসেন মা ইয়াসমিন রহমান আর বোন রেনা।
বাসার মধ্যে সিরাত আর রেনা ছোটবেলা থেকেই খুব চঞ্চল কিন্তু দুইজনের মধ্যে খুবই মিল একে অপরকে ইজিলি বুঝে ফেলে মনের কথা তো জোট করে বলে ফেলে।
এসব কথা গুলো ইরিন খুব মনোযোগ সহকারে শুনছিলো তার সাথে বসে থাকা মেয়েটা থেকে। ইরিন সব শুনে বলে—“বাপ রে বাপ দুই ভাই বোন কেমনে এমন হয়? বাবা-মা বাঙালী কিন্তু সিরাত আই মিন আমাদের বসকে দেখলে লাগেই না বাঙ্গালী এই দেশে থাকে এখানকার নাগরিক মনে হয়। তবে যেভাবে বাংলা কথা বলেছেন তা শুনে নিজের কানকে বিলিভ করাতে পারছিলাম না। ওকে বুনু আমি যাই কেমন!?
ইরিন উঠে চলে যাচ্ছিলো। মেয়েটা ইরিনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে—“বুনু তুমি এখন আবার আমার কাছে আসবে এক….দুই…..ত…!
বাকিটুকু বলতে গিয়ে থেমে যায় কারণ সামনে ইরিন ক্যান্টিন থেকে বের হতে যেয়ে হলো না কেননা তখনই সে মনে মনে বলে…..
—“এক মিনিট আমি এখানে এসে বাঙালী হিসেবে কথা বলেছি বজ্জাত বসের সাথে আর….ডান হাত এর তর্জনী আঙুল গালে রেখে। আরে ওই মেয়েটার সাথে কথা বললাম সেও তো বজ্জাত এর মতো দেখতে। ওও হ্যাঁ। পিছে ফিরে তাকিয়ে মেয়েটাকে বসে থাকতে দেখে তার কাছে আসে।
মেয়েটা স্বাভাবিক ভাবে কপি খাচ্ছিলো অর্ডার করে। ইরিন এসে—“হাই আসসালামুয়ালাইকুম বুনু।
মেয়েটা ইরিনকে আসতে দেখে নি এমন ভান করে তার দিকে তাকিয়ে বলে—” ওয়ালাইকুমাসালাম ইরিন বুনু। আসো বসো।
ইরিন ওর কথা মতো বসে মেয়েটাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে জট করে বলে—” বুনু তোমাকে ত আমি নিজের নামই বললাম না? তুমি আমার নাম জেনেছো কিভাবে?
অবাকসূচক ভঙ্গিতে চোখজোড়া ছোট করে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলে —“আমি তো বলিও নি আর কিছু দেখাও নি? আর আপনি কিভাবে বজ্জাত (ওপস) সিরাত স্যারকে চেনেন।
মেয়েটা শুনে কিছুটা ভড়কে যায়। সে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে মনে মনে বলে—” এখনই লগো পিন এসে পড়ুক ইরিনের কাপড়ে! (ইরিনের দিকে চুপ করে তাকিয়ে )
ইরিনের কাপড়ে লগোটা এসে গেলো সাথে সাথে। তখন মেয়েটা ইরিনকে বলে—” তোমার কাপড় এর বাম পাশে অফিসের লগো সাথে তোমার নাম দেওয়া আছে। সেটা দেখেই বললাম। ইরিন শুনে তার কথামতো বাম পাশে তাকিয়ে দেখে সত্যিতেই লগো লাগানো। কিন্তু এ দেখে একদফা অবাক হয়ে ইরিন মনে মনে বলে…..
—“আমি তো কোনো লগো নিলামই না সেখানে লগো পিন পড়া তো দূরের কথা। এটা কিভাবে আসলো আমার বুকের উপর? কিছুক্ষণ আগে তো ছিলো না আসলো কই থেকে? ও যাই হোক আপু টার থেকে জিগ্যেস করি।
সে মুখ উপর তাকাতেই হা হয়ে যায়। কারণ তার সামনের চেয়ার খালি। সে আশ পাশ তাকিয়ে দেখে মেয়েটা কোথাও নেই।
ইরিন সাথে সাথে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করে বলে—“এখানেই তো মেয়েটা বসে ছিলো তাহলে জট করে কোথায় গেলো? আর গেলেও আমি তার উঠার সাউন্ড পেলাম না কেনো? কি হচ্ছে এসব?
ইরিন নিজের মাথা ঝাকুনি দিয়ে—“ধুর সব ফাজলামি লাগছে কাজে যায় (বাম হাতে ঘড়ির দিকে টাইম দেখে) নইতো বজ্জাত উগান্ডা আবারো ঠাঠিয়ে চড় লাগাবে (গালে ডান হাত দিয়ে ঘসতে ঘসতে)
ইরিন চার-পাচঁ না ভেবে বেরিয়ে পড়ে। তার যাওয়ার দিকে বাঁকা হাসি দে সেখানেই বসে থাকা মেয়েটা। সে নিজেই আশপাশ চোখ বুলিয়ে ক্যান্টিনে থাকা এক আয়নার দিকে তাকায়। সেখানে নিজের প্রতিচ্ছবি না দেখে মেয়েটা আনমনেই বলে…
—” যার কোনো প্রতিবিম্ব নেই,,, তার কোনো পরিচয়ও নেই। গম্ভীর কণ্ঠে কষ্টে আয়নার দিকে তাকিয়ে থেকে। আমার প্রতিবিম্ব নেই বলে আজ আমি কোনো পরিচয়ও দিতে পারলাম না ইরিন বুনু। তবে খুব শীগ্রই অনেক কথা জানতে পারবে। তুমিই হলা এসবের বড় মোহ। তোমার মাধ্যমেই সব কিছু ঠিক হবে। ইরিনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে। কিছুক্ষণের জন্যে তোমার সাথে কথা হয়েছিলো তখন তুমি আমার প্রতিবিম্ব দেখে ছিলে। কিন্তু এখন দেখতে পাও নি কারণ সেটা আমারই ইচ্ছা ছিলো যেনো তুমি আমায় না দেখো। তাই নিজের মনকে অনুমতি দিয়েছিলাম অদৃশ্য হওয়ার(মুচকি হেসে)
ইরিন নিজের কেবিনে এসে চেয়ারে বসে পড়লো। কিন্তু তাতেও বেচারি শান্তি পাচ্ছে না। কেননা তার কেবিনটার সাথে সিরাতের কেবিন লাগানো। সে ছটপট করতে করতে বলে….
—“বজ্জাত এনাকন্ডার কেবিন কেনো যে আমার চোখের সামনে দিলো (চোখ ঘুরিয়ে)।
সকাল সকাল শান্তি পাবো না আরকি ! সবসময় এরে সহ্য করা লাগবে। যদি পারতাম তোরে তো দুধ চাপাতার মধ্যে কেচপাতার সাথে মিশিয়ে পিচে ফেলতাম(রেগে মুখটা ফুলিয়ে)।
সে ব্যাগটা টেবিলের উপর রেখে পুরো কেবিনটা দেখতে লাগলো। পুরো কেবিনটা যেনো গোছালো বুকসেল্ফ,,, জানালা পর্দামোড়ানো। সে উঠে জানালার কাছে এসে মোড়ানো পর্দাটা খুলবে তার আগেই কেউ ওর হাত চেপে ধরে। এতে সে ব্যথায় আউচচচ কুকড়িয়ে সেই মানুষটার দিকে তাকাতে অবাক। সে চোখজোড়া গোল করে তাকিয়ে আছে তার হাত চেপে ধরা মানুষটার দিকে। কেননা মানুষটা অন্যকেউ নয় সে হলো সিরাত।
—“গান্জা তুই এখানে?
সিরাত ভ্রু কুচকে তাকালে সে ঠোঁট উল্টিয়ে বলে—” আই মিন বজ্জাত তুই এখানে ধুর ধুর ! (জিহবে কামড় দিয়ে বলে) সো সো সো সরি স্যার। আমি ভুলে মুখ থেকে বের করে ফেলছিলাম। আসলে আমি এসব বলতেই চাইনি।
সিরাত ইরিনের হাত ধরেই টান দিয়ে নিজের কাছে আনে। এতে ইরিন ভয়ে কাঁপাকাপি শুরু করে দে। সে মনে মনে বলে।
—” ইরে এভাবে কাছে কেন টানছে আবারো কোনো শাস্তি দেবা না তো ইয়া আল্লাহ বাঁচাও(ততোক্ষণে জানালার অপরপাশ থেকে যোহরের আযানের শব্দ আসতে লাগে) ইরিন শুনে মনে মনে আযানের জবাব দে (চোখজোড়া বন্ধ করে)।
সিরাত ইরিনের দিকে একবার তাকিয়ে আবার জানালার দিকে তাকায়। সে ইরিনের হাত ছেড়ে দিয়ে মনে মনে বলে—“কি হচ্ছে আমি কেবিন থেকে এভাবে কেনো এলাম? (কপালে দুই আঙুল দিয়ে চুলকান দিয়ে) সেও আযানের শব্দ শুনে মনে মনে আযানের জবাব দিলো।
ইরিন নিজের হাতে হালকা ব্যথা অনুভব করায় চোখজোড়া মিটমিট খুলে দেখে আশেপাশে বজ্জতাটা নেই। সে একশ্বাস ফেলে বলে—” এই অফিসে কি সবার থেকে অলৌকিক ক্ষমতা আছে নাকি(বেকুবের মতো হয়ে )
একজনরে দেখার পর হারিয়ে যায় আবার আরেকজন জট করে বাতাসের মতো সামনে চলে আসে। যাই হোক আমি নামাজ পড়তে যায় (কেবিন থেকে বের হতেই থেমে) কিন্তু এই অফিসে কি নামাজ পড়ার জায়গা আছে?
আচমকা অফিসের এক স্টাফ এসে ইরিনকে ডাক দে বলে—” Mam? You want to pray?
ইরিন আবারো সেইম ভাবে অবাক হয়ে জিগ্যেস করে —“Yeah! But how can you know that?(সন্দেহের ভঙ্গিতে)
স্টাফ মুচকি হেসে বলে—” This is not my thought.
it’s our boss say me for you!
—” বজ্জাত বুঝলো কি করে রহস্য জানতে হবে (চোখজোড়া ছোট করে ঠোঁট বাঁকিয়ে)
—“Mam you can go this side..there you will see the blue door.
That door is the prayer house of all Muslims..Boys and girls are separated.Don’t worry.
ইরিন নিজের মাথা নাড়িয়ে হ্যাসূচক জানায়। স্টাফ চলে যেতে লাগলেই ইরিন উনাকে থামিয়ে উনার কাছে এসে বলে—” In our office, how many Muslim works here?
স্টাফ শুনে ভেবে বলে—“Hmm not much.Only 2-3 people can go there to pray..
—” Ok Thanks..মুচকি হেসে ইরিন বললো।
এখন আছেন আপনাদেরকে ইরিনের সম্পর্কে আরো কিছু কথা ছিলো যা জানানো হয় নি। তা বলি…
ইরিন খুবই চঞ্চল তার কাজের দক্ষতা অতুলনীয় (যা আপনারা প্রথম পার্টে কিছুটা জেনে ছিলেন। আরো জানবেন সামনের পার্টে) সে দেখতে তেমন ফর্সা সুন্দর না হলেও শ্যামলা হওয়ায় তার মায়াবী চোখজোড়া আর মুখটা দেখলেই যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে,,, তার চোখের মনি দুটো বাদামী কালচে রঙের,,, ভ্রুগুলো হালকা তবে গাড় কালো রঙের,,, চুলগুলো কোমর ছাড়িয়ে।
গালের মধ্যে ঠোঁটের পাশে ছোট করে একটা কালো তিল,,,হাসলে গালে হালকা টোল পড়ে,,, ভিতু হলেও সবসময় নিজের মধ্যে সাহস জুটিয়ে রাখে। আপন কেউ নেই শুধু এক বান্ধবী ছাড়া। যার সাহায্যে সে লন্ডনে পাড়ি দিয়েছে। এখন তাকেই খুঁজে বের করতে।
……..চলবে……
[