The unlimited love part 10+11

#The_unlimited_love💖
#Season_2
#Part_10
#Writer_Nusrat

আমার মনে হচ্ছে সামান্তা অনেক্ষন যাবত না খেয়ে আছে৷ তাই ও দুর্বল হয়ে গেছে আর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে৷ জিসান তুই তারাতাড়ি কিছু খাবার আনার চেষ্টা কর৷
জিসান চলে গেলো খাবার আনার জন্য৷
আদনান সামান্তাকে একটা খাটে রেখে রকির দিকে এগিয়ে এলো৷ রকি এখনো ভাবলেশহীন দাঁড়িয়ে আছে৷
সেদিন রকিই নিলয়কে বলেছিলো আদনানের ব্যাপারে৷ রকি সাইকোর ব্যাপারে যা বলেছিলো সেটা আন্দাজে বলেছিলো৷
বেচারা তো জানেই না আদনান আসলেই কতটা ভয়ংকর৷ তাই সে যেভাবে ছিলো ঠিক সেইভাবেই দাঁড়িয়ে আছে আজ আদনানের সাথে বুঝাপড়া করে তবেই এখান যাবে৷

আদনান রকির দিকে শক্ত চোখে তাকিয়ে বললো,

তুই খুব বড় অন্যায় করেছিস খুব বড়৷ এর শাস্তি তো তোকে পেতেই হবে রকি৷
.
তাই নাকি? কী শাস্তি দিবি তুই? তোর থেকে তো একটা বিড়ালও যথেষ্ট সাহসী৷ আর তুই দিবি আমাকে শাস্তি।তুই নিজেইতো একটা ভিতুর ডিম।কী করবি তুই?(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)
.
কী করবো? সেটা নাহয় পরেই টের পাবি৷ আপাতত আমার কাছে সামান্তার জ্ঞান ফেরানোটা বেশি ইম্পর্ট্যান্ট৷
.
জিসান কিছু খাবার নিয়ে আসলো।আদনান সামান্তার জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছে৷ মুখে বারবার পানির ছিটে দিচ্ছে৷
সামান্তা আস্তে চোখ মেলে তাকালো৷ ওর তাকানো দেখে আদনান সাথে সাথে দূরে সরে গেলো৷ তারপর জিসানকে ইশারায় বললো সামান্তাকে বলতে যেনো সে খাবারটা খেয়ে নেয়৷
জিসানও মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো৷ খাবারটা নিয়ে সামান্তার দিকে এগিয়ে গেলো সে৷

আপু খাবারটা খেয়ে নিন৷ আপনি অনেকক্ষণ যাবত কিচ্ছু খাননি৷ মুখও শুকিয়ে গেছে একেবারে৷

আমি একবার খাবারের দিকে তাকালাম আরেকবার আদনান ভাইয়ার দিকে৷ ভাইয়া দেয়ালে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে৷ আর রকি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে৷
আমি সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে খাবার খেতে শুরু করলাম৷ অনেক খিদে পেয়েছে আমার৷ আগে খাই তারপর যা হবার তা হবে৷

আমি খাবার খেয়ে নিলাম৷ দেয়ালে মাথা টেকিয়ে বসে আছি৷ রকি আমার দিকে এগিয়ে আসলো,,
ব্যস অনেক হয়েছে সামান্তা। তোমার খাবার খাওয়া শেষ হয়ে গেছে এবার চলো আমার সাথে৷ কথাটা বলে রকি আমার হাত ধরে দাঁড় করাতেই কষিয়ে চড় বসিয়ে দিলাম ওর গালে৷

কী মনে করেছিস তুই?তুই এসব করবি আর আমি হাসতে হাসতে তোর সাথে চলে যাবো৷ কথাটা বলে ইচ্ছামতো চড় বসিয়ে দিতে থাকলাম ওর গালে৷ আমার যত রাগ তার সব রকির গালের উপর ঝারছি৷কতোটা কষ্ট দিয়েছে আমাকে আর আদনান ভাইয়াকে৷

আদনান জিসানের কাছে গিয়ে বললো যেনো সামান্তাকে বাড়িতে দিয়ে আসে৷ এদিক সে সামলাবে৷ আদনানের কথা অনুযায়ী জিসান সামান্তাকে নিয়ে তাদের বাড়ির দিকে রওনা দিলো৷

রকি তোমায় আমার সাথে এক জায়গায় যেতে হবে৷
.
কোথায় যাবো,আর কেনো যাবো৷ আমি যেতে পারবোনা৷
.
সেখানে গেলেই তুমি তোমার উত্তর পেয়ে যাবে৷ আর তুমিইতো বলো আমি ভিতুর ডিম তাহলে আমার সাথে যেতে এতো ভয় কিসের তোমার৷ তবে কী আমি ধরে নিবো যে তুমি আমায় ভয় পাও৷
.
কথাটা শুনে রেগে গেলো রকি,
এক্সকিউজ মি,আমি কাউকে ভয় পাইনা৷ আর তোমাকে তো নয়ই৷ বলো কোথায় যেতে হবে৷

আদনান এটাই চাইছিলো৷ কারণ এতো মানুষের ভিড়ে রকিকে তুলে নিয়ে যেতে পারবেনা সে৷
হুম চলো আমার সাথে৷


আদনান রকিকে নিয়ে ওর বাংলোতে আসলো৷ রকির মনে অনেক প্রশ্ন জাগছে আদনান কেনো ওকে এখানে নিয়ে আসলো৷

আদনান রকিকে একটা রুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো৷ তারপর এক পা এক পা করে রকির দিকে এগুতে থাকলো৷

একি আদনান তুমি দরজা বন্ধ করলে কেনো৷ আর এই রুম এতো অন্ধকার কেনো৷ রকির কথার মাঝেই আদনান এসে ওর নাক বরাবর একটা পাঞ্চ মারলো৷ রকি নাকে হাত দিয়ে আদনানের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷
এই তোমার সাহস তো কম নয় তুমি আমায় মারলে৷

তো কী করবো জামাই আদর করবো৷
রকিও এগিয়ে আসলো৷ একজন আরেকজনকে মারছে৷ আদনান ক্যারাটে জানায় রকি আদনানকে তেমন আঘাত করতে পারছেনা৷ কিন্তু আদনান একটার পর একটা করে যাচ্ছে৷ রকি আর না পেরে ফ্লোরে পরে গেলো৷ আদনান রকিকে তুলে চেয়ারে নিয়ে বসালো তারপর সারা শরীর দড়ি দিয়ে বাধলো৷ রকি নিবুনিবু চোখে তাকাচ্ছে আদনানের দিকে৷ মার খেয়ে বেচারার অবস্থা শেষ৷ আদনান ওর সামনে বসলো হাতে একটা ধারালো ব্লেড৷ ব্লেড দেখে বড় বড় চোখে তাকালো রকি৷ আদনান একটা মুচকি হাসি দিয়ে রকির হাতে ব্লেডটা চালিয়ে দিলো৷ চিৎকার করে উঠলো রকি৷

খুব শখ তোর সামান্তাকে পাওয়ার তাই-না৷ এই হাত দিয়েই তো তুই ওর রুমে ক্যামেরা লাগিয়েছিলি৷বল ওর রুমে কেনো ক্যামেরা লাগিয়েছিলিস৷
রকি তবুও কিছু বলছেনা দেখে আদনান আরেক হাতে ব্লেড চালিয়ে দিলো৷

বলবি নাকি চোখ উপরে নিবো৷ আমি কিন্তু এসবে অভ্যস্ত আছি৷ তাই তেমন কষ্ট হবেনা আমার৷
আদনানের কথা শুনে অবাক চোখে তাকালো রকি৷

বলবি কী না বল?

কী বলবো কী বলার বাকি রেখেছো তোমরা৷ তোমাদের কারণে আমার বাবা দুইমাস পুলিশের হেফাজতে ছিলো৷ আর আমার মা তিন মাস কোমায় ছিলো৷ তাই আমি রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য সামান্তার সাথে এসব করেছি৷ আর আমার মনে হয় আমি যা করেছি বেশ করেছি৷
#The_unlimited_love💖
#Season_2
#Part_11
#Writer_Nusrat

সোহানি আন্টি কোমায় গিয়েছিলো গাড়ির নিচে চাপা পরার কারেণে৷ আর উনি কোমা থেকে ফিরে আসার পর রেহান আংকেল নিজে পুলিশের কাছে গিয়ে সোহানি আন্টি আর উনার কুকর্মের কথা স্বীকার করেছিলেন৷জানিস ইতো বাংলাদেশে এখন এসবের জন্য কিছু শাস্তি প্রদান করার ব্যবস্হা করা হয়েছে৷ তাই উনাকে পাঁচ মাসের জেল দেওয়া হয়েছিলো৷প্রথমে উনাকে বলা হয়েছিলো যেন সোহানি আন্টিকে বিয়ে করে নেন বাট আংকেল রাজী ছিলেন না৷ প্রায় একমাস পর রেহান আংকেল রাজী হলেন আর উনাকেও জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো৷
কী সত্যি বললাম তো৷ নাকি বেজাল আছে৷ তাহলে এখানে তুই আমাদের দোষ কোথায় দেখলি৷ যে আমাদের উপরে রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিস৷

আমি এতো কিছু জানিনা৷ আমি শুধু জানি এসবের জন্য তোরা দায়ী৷

আমার কী মনে হয় জানিস রকি তুই না মানসিক ভাবে সিক৷ একজন সুস্থ মানুষ সব কিছু জেনে এমন পাগলামু জীবনেও করবেনা৷ তুই সব সময় তোর মস্তিষ্কের কথা শুনেছিস মনের কথা শুনিসনি৷ মন দিয়ে বিচার করিসনি৷ যদি মনের কথা শুনতিস তাহলে এসব করতি না৷ সে যাইহোক তোকে তোর কর্মের শাস্তি পেতেই হবে৷
কথাটা বলে আদনান রকির শার্টের কয়টা বোতাম খুলে শার্টটা নিচে নামালো তারপর রকির কাঁধে ব্লেডটা চালিয়ে দিলো৷
রকি ঠোঁট কামড়ে ধরলো৷ চিৎকার করছেনা কিন্তু চোখ থেকে ঝরঝর করে পানি পরছে৷ আদনান ওর আরেক কাঁধেও ব্লেড চালিয়ে দিলো তারপর একটা বাটি নিয়ে আসলো যেটাতে মরিচের গুঁড়ো আর নুন মেশানো আছে৷
আদনান একটা বাঁকা হাসি দিয়ে ওর কাটা স্থানে নুন আর মরিচের গুঁড়ো লাগিয়ে দিলো৷ রকির হাত বারবার কেঁপে উঠছে৷ হাত বাঁধা থাকার কারেণে কিছু করতে পারছেনা সে৷ আদনান একটু একটু করে সব কাটা স্থানেই নুন আর মরিচ লাগিয়ে দিলো৷ রকির চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে৷
আদনান একটা চেয়ারে বসে বললো,,

আপাতত এটাই তোর পানিশমেন্ট৷ রেহান আংকেলের দিকে তাকিয়ে তোকে মাফ করে দিলাম নাহলে তোর পরিণতি খুব ভয়ানক হতো৷ তোর বাবা আমাদের ফ্যামিলির সদস্যদের মতোই একজন৷ অনেক উপকার করেছেন আমার আর আমার চাচ্চুর৷ তাই তোকে ছেড়ে দিলাম বাট এটা বুঝিসনা যে আমি৷ তোকে মাফ করে দিয়েছি৷ তোর প্রতি রাগ আর ক্রোধ আমার শরীরের শিরায় শিরায় বয়ে যাচ্ছে৷ ইচ্ছে তে হচ্ছিলো তোকে খুন করে ফেলি বাট এটা আমি করতে পারবোনা৷ বাই দ্যা ওয়ে যাচ্ছি আমি৷ তুই আপাতত সাত-দশ দিন এখানেই বন্দী থাক৷ তোর খাওয়া দাওয়া সব বন্ধ৷
কথাটা বলে আদনান রুম থেকে বেড়িয়ে বাইরে থেকে দরজায় তালা মেরে দিলো৷

♣️♣️♣️
বাড়িতে ভাইয়া সবাইকে মিথ্যা কথা বলেছিলো যে আমি আমার বান্ধবীর বাসায় ছিলাম৷ তাই কেউ তেমন চিন্তা করেনি৷ ড্রয়িং রুমে বসে আছি আর নখ কামড়াচ্ছি৷ ভাইয়া কখন আসবে আর সামনাসামনি দেখবো৷

বেশ কিছুক্ষন পর ভাইয়া বাসায় এলেন৷ আমার দিকে একবার তাকিয়ে আবার সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলেন৷ আমি ভাইয়াকে ডাক দিতে গিয়েও দেইনি৷ কী মুখ নিয়ে ডাক দিবো ভাইয়াকে৷

রাতে সবাই ডিনারে বসেছি৷ ভাইয়া আসার উপলক্ষে আম্মু আর মামনী ভাইয়ার পছন্দের খাবার রান্না করেছে৷ সবাই ডাইনিংয়ে বসে ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করছে৷ বেশ কিছুক্ষন পরে ভাইয়া এলেন৷ একটা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আর লাল টি-শার্ট পরে৷ ভাইয়া একাবারো আমার দিকে তাকননি৷
টেবিলে না বসেই ভাইয়া বললেন,,,

সামান্তা যদি আমার সাথে বসে খাবার খায় তাহলে আমি খাবার খাবোনা৷ কথাটা বলে ভাইয়া পুনরায় উনার রুমে চলে গেলেন৷

হয়েছে শান্তি!!ছেলেটার সাথে এমন না করলেও পারতিস৷ চলে গেছে বেশ করেছে৷ তোর সাথে এক টেবিলে বসে খাবার খাওয়ার কোনো মানেই হয়না৷

রিংকি এসব কী করছিস মেয়েটা খেতে বসেছে ওকে খেতে দে৷ আদনান নাহয় পরে খেয়ে নিবে৷ ও যখন টেবিলে বসেছে তাহলে ও খেয়ে নিক না৷

আমি আর কিচু না বলে খাবার ফেলেই চলে আসলাম৷ আব্বু, বড় আব্বু, মামনী,জিএম সবাই পিছে পিছে ডাকছে তবুও আমি না দাঁড়িয়ে চলে আসলাম৷
সত্যিই তো ভাইয়া আমার জন্য না খেয়ে আছে আর আমি কী করে খেতাম৷

রিংকি এবার তুই শান্তি হয়েছিস?নে এবার মেয়েটাও না খেয়ে চলে গেলো৷ কেন শুধু শুধু বকতে গেলি বলতো?

রুহি দেখ সামান্তা যা করেছে সেটা একেবারে অন্যায়৷ আমরাতো শুধু আদনানকেই দোষারোপ করে যাচ্ছিলাম যেখানে ছেলেটা একেবারে নির্দোষ৷ তুই যদি না বলতিস তাহলে তো আমি জানতেই পারতাম না৷

হয়েছে এবার খাওয়া স্টার্ট করো খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো৷ আর রিংকি খাবার খেয়ে একটু তারাতাড়ি চলে আইসো(আহিল)

আরুহিও একটু হেসে বললো,
হ্যাঁ রিংকি তারাতাড়ি যাস নাহলে তোর হাসবেন্ড তোকে অনেক মিস করবে ইয়ার৷

রিংকি একটু লাজুক হেসে সেও খাবারে মনোযোগ দিলো৷

★★
আদনান বারবার উকি দিয়ে দেখছে সবার খাওয়া শেষ হয়েছে কী না৷ সবার খাওয়া শেষ হলে তারপর সে খাবে৷ পেটে অলরেডি ইঁদুর দৌঁড়াচ্ছে খিদেয়৷

সামান্তারও সেইম অবস্থা সে মনে করেছে আদনান খাচ্ছে৷ তাই সে অপেক্ষায় আছে কখন খাওয়া শেষ হবে আর সে খাবে৷

অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সবার খাওয়া শেষ হলো৷ সামান্তা তারাতাড়ি কিচেনে চলে গেলো পাতিলে খাবার আছে কী না দেখার জন্য৷ সামান্তা খাবার দেখে সেও প্লেটে খাবার বেড়ে কিচেনেই খাবার খাওয়া শুরু করে দিলো৷ আদনানও একটু পর কিচেনে গেলো৷

একি সামু এখানে কী করছে?সে যাই করুক আমার কী৷
সামান্তা খাবার খাওয়ায় এতোটাই মগ্ন যে আদনান কোনদিকে খাবার নিয়ে চলে গেলো সেটাই টের পায়নি৷

চলবে,,,,,

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here