Unexpected_lover part_06

0
1960

Unexpected_lover
part_06
#Rimy_Islam

অনিব আমার দু’হাত চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট গুজলেন। বাঁধা দিয়ে জানি লাভ নেই। এবার কিন্তু চোখের জল পড়তে ভুললো না। আমি সারারাত কেঁদে গেলাম। আর উনি সেসব তোয়াক্কা না করে নিজের অধিকার ফলিয়ে গেলেন।

সকালে ঘুম ভাঙে এক উটকো গন্ধে। চোখে খুলে বিছানার পাশে ফাঁকা দেখে উঠে বসি। রুমে অনিব নেই। আর গন্ধতাও অন্যদিক থেকে আসছে। আমি ঘুম চোখে কৌতুহল নিয়েই বিছানা ছেড়ে নেমে পড়ি। বারান্দার দিকে পা বাড়াই। সেখানে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ। অনিব মদের বোতল হাতে ফ্লোরে বসে আছে। আমার উপস্থিতি টের পেয়ে একবার আমার দিকে চেয়ে সরল হাসলেন। যার অর্থ আমাকে মোটেও তিনি পরোয়া করছেন না। চোখ জোড়া টকটকে লাল।রাতের পোশকেই অগোছালো ভঙ্গিতে বসে আছেন।
মিতির কাছে জেনেছি,পূর্বে অনিবের নেশা করার অভ্যাস ছিল। কিন্তু এখন তো আর করে না। এমনতাই মিতি বলেছিল। আজ যে তা ভুল প্রমাণ হলো। বাড়ির লোকের অগোচরে দিব্যি পূর্ব অভ্যাস অটুট রেখেছেন।

খুব রাগ হলো। বললাম,
” এসব কি অনিব? আপনি মদ এখনো খান?”

অনিব এবার বেশ রেগে তাকিয়ে বললো,
” নাম ধরে ডাকবে না। এই যে শুনুন, এই যে- ঠিক এমন করে ডাকবে। আমার নাম নেয়ার মতো যোগ্যতা নেই বা আপন কেউ তুমি নও। আমি মদ খাই,বিড়ি খাই তা একান্ত আমার ব্যাপার। ”

এবার সত্যি রাগ হলো। খুব গালাগালি করতে মন চাইলো। পারছি না। মাথা নত করে বলি,
” বিয়ে কেন করেছেন তাহলে? এখন বিয়ে করে অধিকার তো দিতেই হবে।”

” তোমার থাকার জায়গা আর আমার একটা নামের বউ দরকার ছিল। ”

” নামের বউ হাজারো পেতেন। আমিই কেন?”

“পুরনো কিছু হিসেব মেটানো বাকি ছিল।”

আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। এই মানুষটা বলছে কি? আমার সাথে আগে কখনো যার দেখাই হয়নি, তার সাথে কিসের পুরনো হিসেব?

আমি বিস্মিত হয়ে বললাম,
” একটু পরিষ্কার করে বলুন তো! পুরনো হিসেব কোন অর্থে বলছেন? শুরুতে মিথ্যে বউয়ের পরিচয় দিয়েছি বলেই কি প্রতিশোধ তুলছেন?”

অনিব মদের বোতল পাশে রেখে আমাকে ইশারায় বসতে বললো। আমি নিরবে আদেশ পালন করি। তাঁর থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে বসলাম।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
তিনি বললেন,
“তোমার বড় বোনের নাম শিলা। বাবা মোঃ আদিল হোসেন সরকারি কর্মকর্তা তাইতো?”

আমি হা হয়ে রইলাম। আগেই বলেছি বিয়ের আগে থেকেই এত সারপ্রাইজ পাচ্ছিলাম। তখন ভেবেই নিয়েছিলাম বিয়ের পরও সেই চমকিত হওয়া অব্যাহত থাকবে। কিন্তু এত তা জানতাম না। আমি বললাম,
” হ্যাঁ। আপনি কিভাবে জানেন?”

” শিলা তো এখন বিবাহিত তাইনা? ক’মাস আগেই বিয়ে করেছে শুনেছি। আচ্ছা তুমি এত বোকা কেন? যে ছেলের সাথে তোমার শিলা আপুর প্রথম বিয়ে ঠিক হয়েছিল, একবার দেখতে চাওনি? দেখলে এত বর্ণনা করা লাগতো না আমার। ”

আমার মাথায় চক্কর দিয়ে উঠল। ওই ধনীর দুলাল অনিব নয় তো? কিন্তু ওর নাম তো মুনতাসির ছিল! আমি হতবাক হয়ে বললাম,
” ওই ছেলের সাথে আপনার সম্পর্ক কি? আপনি ওই ছেলে নন তো? তাহলে ওর নাম যে মুনতাসির ছিল!”

অনিব এবার জোরে হেসে উঠল। এরপর বললো,
” মুনতাসির আমার ভালো নাম। আর হ্যাঁ, আমিই ওই ছেলে। ”

” এই কারণে আপনি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হলেন? কিন্তু আমাকে না দেখে চিনলেন কিভাবে?”

” তোমরা দুই বোন একসাথে ঘুরো, ফিরো। না দেখার কি আছে? তুমি দেখনি বলে এই না যে আর কেউ তোমাকে দেখবে না।”

” সব বুঝলাম। কিন্তু বিয়ে আমায় কেনো?”

অনিব উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
” পরবর্তী জট তুমি নিজে খুলতে চেষ্টা করো। কারণ আমি আর কিছু বলবো না। ”

প্রচন্ড রাগে, অপমানে বললাম,
” পুরোটা না বললে অর্ধেক বলার দরকার কি ছিল?”

অনিব বললেন,
” দরকার ছিল। এখন তুমি পুরো জীবন এই সংশয়ে পার করবে কি হয়েছিল? কেন তোমাকে বিয়ে করলাম? তাছাড়া তোমাকে কষ্টই বা কেন দিচ্ছি? শত শত প্রশ্নের উত্তর জান্তা কেবল আমি। তবে আমিতো মুখে কুলুপ এটে আছি। ভুগতে থাকো কনভিউশনে।”

তিনি ঘরে ঢুকে গেলেন। আমার মাথা এলোমেলো হয়ে গেলো। আপুর যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। আজ সেই মানুষটা আমার হাজবেন্ড! প্রথমেই বোঝা উচিত ছিল, এক দেখায় কেউ কাউকে অযথা বিয়ে করতে চাইবে না। নিতান্তই আমার মতো বোকা মেয়েরাই বোঝে না। মুহূর্তে খারাপ আচরণ, আবার পরমুহূর্তেই ভালো আচরণ। সব তাহলে উনার জেনে বুঝে করা? কেন? এত প্রশ্ন, দ্বিধা নিয়ে পুরো জীবন পার করতে পারবো কি? কি চলছে তাঁর মনে?

চলবে………

( আজকে দু’টো পার্ট দিয়ে দিলাম। আসল টুইস্ট এখনো বাকি😶😶টুইস্ট জানতে গল্প পড়ে সাথে থাকুন আর ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন। ভাবতে থাকুন অনিবের বর্ষার সাথে এমন করার পেছনের কারণ কি🤔🤔
আজকে দু’টো পার্ট দিয়েছি। সো কালকে গল্প পাবেন না। আবার পরশু ইনশাআল্লাহ গল্প পোস্ট করবো🙂🙂)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here