#Your_love_is_my_Addiction
#Season_2
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_১৫
.
পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালো ইচ্ছে। শরীরে তার বিন্দুমাত্র শক্তি নেই। কপাল কেটে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। ইচ্ছে ভালো করে চোখ মেলে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সে চেয়ারের সাথে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বসে আছে। ভীষণ অবাক হলো সে। পরক্ষণেই গাড়ি অ্যাক্সিডেন্টের কথা মনে পড়তেই ভয় পেয়ে গেল সে। চারপাশে তাকিয়ে দেখলো এটা একটা স্টোর রুম। রুমটা চেনা পরিচিত বলে মনে হচ্ছিল ইচ্ছের। কিন্তু পুরোপুরিভাবে চিনতে পারছে না। নড়তে চাইলেও নড়তে পারছে না সে।
-“কেউ আছেন! প্লিজ হেল্প! আমাকে বেঁধে রেখেছেন কেন আপনারা? ছেড়ে দিন আমাকে প্লিজ! কেউ আছেন!”
বেশ কয়েকবার চিল্লিয়ে সাহায্য চাইলো ইচ্ছে। কিন্তু জায়গাটা যেমন নিস্তব্ধ হয়ে আছে মনে হচ্ছে এখন এখানে ও ছাড়া আর কেউ নেই। ভীষণ পানি তেষ্টা পেয়েছে তার। সামনে পানির পাত্র থাকলে তা ধরার মতো ক্ষমতা তার নেই কারণ তার হাত চেয়ারের সাথে বাঁধা। চেয়ার থেকে ছুঁটতে না পেরে কেঁদে দিল ইচ্ছে। এমন সময় কারও পায়ের আওয়াজ শুনতে পেলো সে। কান্নারত অবস্থায় সামনের দরজার দিকে তাকালো ইচ্ছে। হঠাৎ পায়ের আওয়াজ থেমে গেল। কিছুক্ষণ পরেই রুমের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো কয়েকজন লোক। তার ভেতরে একজন মহিলাও আছেন। ইচ্ছে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
-“বাবাই! লিজা! তোমরা এখানে!”
লিজা বললো,
-“ওয়েল তোমাকে তো আমরাই এনেছি এখানে।”
-“কিন্তু আমাকে এভাবে বেঁধে রেখেছো কেন?”
-“কারণ তোমাকে বেঁধে না রাখলে তুমি পালিয়ে যাবে।”
-“মানে কী লিজা! আমি কেন পালাবো? আর বাবাই তুমি এতদিন কোথায় ছিলে? লিজা দড়িগুলো খুলে দাও প্লিজ! আমার লাগছে।”
ইউসুফ হালকা হেসে ইচ্ছের সামনে একটা চেয়ার টেনে বসলো। ইচ্ছে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো তার বাবাইয়ের দিকে। লিজা এসে ইউসুফের কোলে বসলো। এবার চোখ বড় বড় করে তাকালো ইচ্ছে। কিছু বলার মতো বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে সে। হঠাৎ ইচ্ছের চোখ গেল ইউসুফের গলার দিকে। ভ্রু কুঁচকে ইচ্ছে বললো,
-“তুমি আমার বাবাই নও। তুমি অন্য কেউ।”
হো হো করে হেসে উঠলেন লোকটি। তার সাথে হাসলো লিজা নিজেও। ইচ্ছে অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
-“আমার বাবাই কোথায়? আর তুমিই বা কে? তোমার চেহারা আমার বাবাইয়ের মতো কেন?”
লিজা বললো,
-“তুমি কীভাবে বুঝলে যে উনি তোমার বাবা নয়!”
-“আমার বাবার গলার কাছে একটা বড় কালো তিল ছিল যা উনার গলায় নেই।”
-“ওহ্ আচ্ছা।”
লোকটা মুচকি হেসে নিজের মুখ থেকে টেনে মাস্কটা খুলে ফেললো। হতভম্ব হয়ে গেল ইচ্ছে। সে নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছে না। কম্পিত গলায় ইচ্ছে বললো,
-“রা..রায়ান তুমিহ্!”
-“হ্যা আমি। আসলে কী বলো তো, আয়াশ আমাকে এত মেরেছিল যে আমি অনেকদিন হসপিটালে অ্যাডমিট ছিলাম। কিন্তু এখন আমি সুস্থ। তাই আমার পুরোনো শত্রুতা আজ শেষ করতে এসেছি।”
-“মানে! কিসের শত্রুতা? কী বলছো তুমি এসব রায়ান?”
-“এর আগে বেশ কয়েকবার তোমার ওপর হামলা হয়েছে এটা তো জানো তুমি!”
-“কিহ্! কবে?”
-“মনে আছে একবার ঘুরতে গিয়ে তুমি পানিতে পড়ে গিয়েছিলে!”
-“হ্যা কিন্তু আমার স্পষ্ট মনে আছে কেউ একজন আমাকে ধাক্কা দিয়েছিল পেছন থেকে। পরে যখন আমার জ্ঞান ফিরে তখন বাবাই বললো যে ওখানকার লোকজনেরা জানিয়েছে যে আমি না’কি পা পিছলে পরে গিয়েছিলাম।”
-“ভুল! তুমি পা পিছলে পরে যাও নি। তোমাকে আমি ধাক্কা দিয়েছিলাম।”
-“তুমি! তার মানে তুমি আমাকে আগে থেকে চিনতে! দেখো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। প্লিজ একটু ক্লিয়ার করে বলো আমাকে সবকিছু। আর লিজাকে কেন নিজের কোলে বসিয়ে রেখেছো?”
-“লিজার ব্যাপারটা পরে বলছি। আগে তোমাকে আমার ব্যাপারটা বলি। তোমার বাবা ইউসুফের একটা ভাই ছিলেন। যিনি কি-না আমার বাবা। তো সেই হিসেবে তুমি আমার কাজিন। যাই হোক এবার আসি আসল কাহিনিতে। দাদু যখন মৃত্যু শয্যায় ছিলেন তখন উনি নিজের সব সম্পত্তি তোমার বাবা ইউসুফের নামে করে দেয়। আর আমার বাবাকে দাদু একটা কানাকড়িও দেন নি। কারণ আমার বাবা তার কথার অবাধ্য হয়ে আমার মা’কে বিয়ে করেছিলেন। কাজটা কী ঠিক করেছিলেন দাদু! ঠিক করেন নি। পরে যখন আমার বাবা তোমার বাবাকে বললো যে অর্ধেক সম্পত্তি তার নামে করে দিতে তখন তোমার বাবাও নিষেধ করে দিল যে উনি সম্পত্তি দিবেন না আমার বাবাকে। এর কারণ দাদু না-কি তাকে নিজের কসম দিয়েছিলেন যাতে আামার বাবাকে তোমার বাবা একটা কানাকড়িও না দেয়। এই নিয়ে আমার বাবা ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন। উনি সেদিনই প্রতিজ্ঞা করেন যে যেভাবেই হোক তিনি তোমার বাবার কাছ থেকে সব সম্পত্তি নিজের নামে করে নিবেন। তাই তোমার বাবার সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় আমার বাবা। মাঝে অনেকগুলো বছর পেড়িয়ে যায়। তোমার বাবা বহু সম্পত্তির মালিক ছিলেন আর তোমার মা-ও তোমার নানার সমস্ত সম্পত্তি একাই পেয়েছিলেন কারণ তার কোনো ভাই-বোন ছিল না। এরপর তোমায় জন্ম দিতে গিয়ে তোমার মা মারা যায়। তোমার মায়ের সকল সম্পত্তি হয়ে যায় তোমার নামে। এদিকে তোমার বাবাও তার সকল সম্পত্তি তোমার নামে লিখে দিয়েছিলেন যার মালিকানা তোমার ১৮ বছর বয়স হলেই তুমি পেয়ে যেতে। আমার বাবা অপেক্ষা করছিলেন কবে তোমার ১৮ বছর হবে আর তোমার কাছ থেকে উনি সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নিবেন। ১৮ তে পা দেওয়ার আগেই তোমার দেখা হয় আয়াশ খানের সাথে। তুমি সেদিন তোমার বাবার সাথে আর্জেন্ট টাকার জন্য দেখা করতে গিয়েছিলে। তখন আয়াশ খানও সেখানেই ছিল। তুমি যেমন প্রথম দেখাতেই আয়াশ খানকে পছন্দ করে ফেলেছিলে, ঠিক তেমনি আয়াশও তোমায় প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছিল। এরপর থেকে তোমার অগোচরে তোমার সুরক্ষার দায়িত্ব নিয়েছিল আয়াশ। তুমি যখন ১৮ তে পা দিলে তখন তোমাকে কিডন্যাপ করার জন্য লোক পাঠিয়েছিল আমার বাবা। কিন্তু তোমায় ওরা কিডন্যাপ করতে পারে নি। এর কারণ কী জানো! আয়াশ খান। ওই বাস্টার্ড এর কারণে তুমি বেঁচে গিয়েছিলে ওইদিন। এরপর আরও কয়েকবার তোমায় কিডন্যাপ করার জন্য লোক পাঠানো হয় কিন্তু প্রতিবারই তুমি বেঁচে গিয়েছো আয়াশের কারণে। আমার বাবা চাইলেই তোমায় মেরে ফেলতে পারতো। কিন্তু উনি তা করেন নি কারণ তোমায় মেরে ফেললে তোমার সমস্ত সম্পত্তি অরফানেজ ট্রাস্টে চলে যেতো। তোমার বাবা বুঝতে পেরেছিলেন কেউ তোমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এই ব্যাপারে উনি আয়াশের সাথে কথা বললে আয়াশ উনাকে গ্যারান্টি দেয় যে ও তোমার কোনো ক্ষতি হতে দিবে না। একদিন তোমার কলেজ থেকে পিকনিকে যাওয়ার জন্য ঠিক করা হয়। তুমিও গিয়েছিলে সেখানে। আর সেখানেই আমি ছিলাম। তুমি পানির কাছে যেতেই আমি তোমায় ধাক্কা দিয়েছিলাম পানিতে। মারার জন্য নয়, বাঁচানোর জন্য। যাতে তোমার মনে আমার জন্য ভালো লাগা তৈরি হয়। কিন্তু তুমি তো ওই আয়াশকে পছন্দ করতে তাই আমার দিকে ফিরেও তাকাও নি ওইদিন। আর তোমার বাবা একটা প্ল্যান বানায় তাদের বিরুদ্ধে যারা তোমার ক্ষতি করতে চায়। উনি একা একাই নিখোঁজ হয়ে যান হঠাৎ করে। আসলে উনি ছদ্মবেশে সবসময় তোমার আশেপাশেই থাকতেন। এর মাঝে আবারও তোমাকে কিডন্যাপ করার চেষ্টা করি আমি। কারণ আমার বাবা হার্ট অ্যাটাক করে বর্তমানে শয্যাশায়ী হয়ে আছেন। তখন তোমার বাবা আমাকে দেখে ফেলে আর খোঁজ নিয়ে জানতে পারে আমি তার ভাইপো। উনি এই কথাটা আয়াশকে জানাতে চাইছিলেন। আর এটা যদি আয়াশ জানতো তাহলে আমার জন্য একদমই ভালো হতো না। তাই তোমার বাবাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে হয়েছে। আ’ম স্যরি ফর দ্যাট।”
এতটুকু শুনেই ইচ্ছের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। এতক্ষণ তার চরম রাগ হচ্ছিল রায়ানের প্রতি। কিন্তু ওর বাবাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছে শুনে ও যেন স্তব্ধ হয়ে গেল। দু-চোখ পানিতে ভরে উঠলো ওর। তা দেখে রায়ান বললো,
-“ওহ্ নো! ডোন্ট ক্রাই বেবি আভি স্টোরি বাকি হে।”
ইচ্ছে চিৎকার করে বললো,
-“তুমি একটা জঘন্য লোক।”
শব্দ করে হেসে ফেললো রায়ান। যেন সে কোনো মজার জোক্স শুনেছে। হাসছে তার কোলে বসে থাকা লিজাও। রায়ান লিজার গালে চুমু খেয়ে লিজাকে বললো,
-“বেবি এবার কী তোমার কথাটা বলবো?”
-“অফকোর্স জান।”
ইচ্ছের আর কিছুই শুনতে ইচ্ছে করছে না। তার বাবা আর কখনো তার কাছে ফিরে আসবে না কথাটা জানা মাত্রই সে একেবারে ভেঙে পড়েছে। লিজা ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“একটু আমার দিকেও তাকাও এখন।”
ইচ্ছে না চাইতেও লিজার দিকে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়েই চমকে গেল। এ কাকে দেখছে ও? ও কী সত্যি দেখছে? বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে রইলো ইচ্ছে লিজার দিকে। রায়ান আবারও শব্দ করে হেসে ফেললো। বললো,
-“তুমি ভুল দেখছো না। তুমি ঠিকই দেখছো। ও লিজা নয়। ও তোমার প্রাণপ্রিয় বান্ধবী কাম সিস্টার রুজাইনা। যে এখনো জীবিত আছে।”
-“রু..জাই..রুজাইনা!”
রুজাইনা ওর মাস্কটা ফেলে দিয়ে রায়ানের উদ্দেশ্যে বললো,
-“জান আমি আর মাস্ক পড়তে পারবো না। আমার স্কিনের কী অবস্থা হয়েছে মাস্ক পড়ে দেখেছো!”
-“আজকে পর থেকেই এই মাস্ক পড়ার কোনো কারণই নেই। কারণ আজকে থেকে লিজার কোনো প্রয়োজন নেই।”
-“রুজাইনা!”
ইচ্ছের ডাকে তার দিকে তাকালো রুজাইনা। হেসে প্রশ্ন করলো,
-“আমাকে দেখে নিশ্চয়ই সারপ্রাইজ হয়েছিস! অবশ্য হওয়ারই কথা। আমি মানুষটা সারপ্রাইজিং।”
-“তুই বেঁচে আছিস?”
-“ওমা! আমি মরবো কোন দুঃখে?”
-“তাহলে সেই ডেড বডিটা!”
-“উফফো! তুই আসলেই একটা ডাফার। এখনো বুঝিস নি যে ওই বডিটা আমার ছিল না!”
-“এইসবে তুইও শামিল ছিলি?”
-“অফকোর্স! আসলে কী বলতো, যখন রায়ান দেখলো যে কোনোভাবেই ও তোকে নিজের বাগে আনতে পারছে না তখন ও আমাকে পাঠালো তোকে বাগে আনার জন্য। তোর ব্যাপারে সব ইনফরমেশন ও আমাকে আগেই দিয়েছিল। আর আমি ঠিক সেই অনুযায়ী আমার করা প্ল্যানগুলো কাজে লাগাই। তোর সাথে বন্ধুত্ব করে তোর কাছের একজন হয়ে উঠি আমি। আসলে তোকে একা পেতে হলে আয়াশকে তোর জীবন থেকে স্যরি মন থেকে সরানোর প্রয়োজন ছিল। আর তাই তুই যখন পুরোপুরি ভাবে আমার উপর দূর্বল হয়ে পড়লি তখন আমি নিজের প্ল্যানকে কাজে লাগাই। একটা মেয়েকে অনেকগুলো টাকা দিয়ে হায়্যার করি তোকে মারার কথা বলে। মেয়েটাকে আমার চেহারার মাস্ক পড়িয়ে তারপর তোর সাথে পাঠিয়েছিলাম ওকে। সেদিন আয়াশের কানে শুধু এতটুকু খবর পৌঁছে দিই যে রুজাইনাই হলো তোর আসল শত্রু যে কি-না তোকে মারতে চায়। কথাটা শোনা মাত্রই আয়াশ তোর কাছে চলে আসে ছুটে। ও যখন তোর কাছে পৌঁছায় তখন দেখে নকল রুজাইনা তোর পেছনে দাঁড়িয়ে রিভলবার বের করছে তোকে মারার জন্য। তুই ব্যাপারটা খেয়াল করিস নি। আয়াশ তখন কোনো উপায় না পেয়ে ওই রুজাইনাকে গুলি করে দেয় তোর সামনে। আর তুই তখন থেকেই আয়াশকে ঘৃণা করা শুরু করে দিস। আর এদিকে লিজাকে কিডন্যাপ করে ওকে মেরে লিজার চেহারার মাস্ক লাগিয়ে আয়াশের বাড়িতে আমি যাই লিজা সেজে। কারণ সেদিন থেকেই আয়াশ তোকে ওর বাড়িতে রেখে দিয়েছিল জোর করে। আয়াশ বারবার তোকে সত্যিটা বলতে চেয়েছে কিন্তু তুই শুনতে চাস নি। তাই পরে ও নিজেও আর কিছু বলে নি তোকে। এই সম্পূর্ণ গেইমে আয়াশ নির্দোষ ছিল।”
রুজাইনার কথা শুনে ইচ্ছে এবার নিজের বাঁচার ইচ্ছেটাই মাটি দিয়ে দিয়েছে। শুধু মাত্র রুজাইনার কারণে ও আয়াশকে এতদিন ঘৃণা করতো। কিন্তু আজ জানতে পারছে আয়াশের কোনো দোষই ছিল না! রায়ান বললো,
-“আর শোভনেরও কোনো দোষ ছিল না। ও বেচারার বোনকে তো আমিই রেপ করে মেরে ফেলেছি। আর সম্পূর্ণ দোষ চাপিয়েছি আয়াশের উপরে। আর তাই ও তোমাকে ব্যবহার করে আয়াশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। আমরা কিন্তু চাইলে তোমাকে আরও আগে শেষ করতে পারতাম। কিন্তু করিনি কেন জানো! কারণ আয়াশ বহুল সম্পত্তির মালিক ছিল। আর আমি চেয়েছিলাম তোমার বাবার, তোমার মায়ের আর আয়াশের সব সম্পত্তি তোমার কাছ থেকে লিখিয়ে নিতে।”
আর নিতে পারছে না ইচ্ছে। এত বড় ভুল ও কী করে করলো? কী করে করে পারলো আয়াশকে ঠকাতে? কিন্তু রায়ানের কথা শুনে ও বললো,
-“আয়াশের সম্পত্তি আমার কাছ থেকে লিখিয়ে নিবে এর মানে কী? উনার সম্পত্তি তো আমার নামে নয়।”
-“কে বললো এই কথা তোমায়? আয়াশের সমস্ত প্রপার্টির একমাত্র মালিক তুমি। যেদিন তোমাদের বিয়ে হয়েছে সেদিনই আয়াশকে ওর সব প্রপার্টি তোমার নামে করে দিয়েছে। আহা! কী ভালোবাসা।”
ইচ্ছের প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে এই মূহুর্তে। চিৎকার করে কাঁদতে মন চাইছে তার। কিন্তু পারছে না সে। আয়াশকে সে কত ভুল বুঝেছে, কত উল্টো পাল্টা বলেছে অথচ আয়াশ তাকে শুধু নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে গিয়েছে। ও যোগ্য নয় আয়াশের ভালোবাসার। ও যদি যোগ্যই হতো আয়াশের ভালোবাসার, তাহলে আয়াশকে ভুল বুঝতে পারতো না।
#Your_love_is_my_Addiction
#Season_2
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_১৬
.
ইচ্ছে বাকরুদ্ধ হয়ে বসে আছে। বারবার তার চোখের সামনে শুধু আয়াশের মুখটা ভেসে উঠছে। ওই লোকটা তাকে এত ভালোবেসেছে আর সে কী করেছে! তার ভালোবাসাকে পা দিয়ে পিষে ফেলেছে। নিজের উপরই ভীষণ ঘৃণা হচ্ছে ইচ্ছের। কিছু না করেই তার করা কত অপমান মুখ বুঁজে সহ্য করেছে আয়াশ। শুধু মাত্র তাকে ভালোবাসে বলে। ইচ্ছে চোখ বন্ধ করে মনে মনে বারবার আয়াশের নাম নিচ্ছে। নাহ নিজেকে বাঁচানোর জন্য নয়, বরং একটা বার আয়াশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য। ইচ্ছে বুঝতে পেরেছে আজ তার নিস্তার নেই এই দুই বিশ্বাসঘাতকের কাছ থেকে। রায়ান আর রুজাইনা আজ তাকে মেরে ফেলবে এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
-“হ্যাল্লো ইচ্ছে!”
রায়ানের গলার আওয়াজ শুনে চোখ মেললো ইচ্ছে। রায়ান বিশ্বজয় করা একটা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে। এই মূহুর্তে ইচ্ছের কাছে পৃথিবীর সবথেকে জঘন্য হাসি বলে মনে হলো রায়ানের হাসিটা। সে নাক-মুখ সিটকে অন্যদিকে তাকালো। আবারও হাসলো রায়ান। একটা কাগজ ইচ্ছের সামনে এগিয়ে দিয়ে বললো,
-“মুহিব, রাসেল আর আয়াশ কিন্তু এখনো আমার নজর বন্দী হয়ে আছে। তুমি শুধু এই প্রপার্টির পেপারে সাইন করে দিলেই আমি ওদের ছেড়ে দিব।”
-“রায়ান আই স্যুয়ার যদি আয়াশের কিছু হয় তাহলে আমি তোমাকে ছাড়বো না।”
-“ওহ্ কাম অন ইচ্ছে! তুমি নিজেই এখন আমার হাতের মুঠোয়। তাই তোমার মুখে ওই ধরনের কথা মানায় না। আর আমি কথা দিচ্ছি তুমি যদি এই কাগজে সই করে দাও তাহলে আয়াশের কোনো ক্ষতি করব না আমি। আমি বিশ্বাসঘাতক হলেও নিজের দেওয়া কথা সব সময় রাখি।”
-“তোমাকে বিশ্বাস করার মতো ভুল আমি দ্বিতীয়বার করব না।”
-“ভেবে দেখো! আমাকে বিশ্বাস না করেও উপায় নেই তোমার।”
-“তোমার ভয় লাগছে না যে এখান থেকে আমি একবার বেরিয়ে গেলে আয়াশ তোমাদের খুঁজে বের করে টুকরো টুকরো করবে।”
-“আমাকে কী তোমার কাঁচা খেলোয়াড় বলে মনে হয়! আর তুমি প্রপার্টির পেপারে সাইন করে দিলেও আমি তোমাকে ছেড়ে দিব এই কথা তোমায় কে বললো?”
ইচ্ছে বুঝতে পারলো রায়ান কী বলতে চাইছে। ও ঠিক এই কথাটাই আন্দাজ করেছিল। তবুও বললো,
-“আমি তো সব প্রপার্টি তোমার নামে করেই দিব। তারপরও আমাকে কী দরকার তোমার?”
-“তারপর তোমাকে আমার কোনো দরকার নেই। কিন্তু তোমাকে ছেড়ে দিয়ে তো আয়াশের হাতে নিজের মৃত্যু লিখতে পারি না আমি। তাই তোমাকে উপরে পাঠিয়ে দিব।”
-“তুমি ভাবলে কী করে যে প্রপার্টির কাগজে সাইন করে দেওয়ার পরও আমাকে মরতে হবে জেনেও আমি এই কাগজে সাইন করব!”
-“কারণ মুহিব, রাসেল আর আয়াশকে বাঁচানোর জন্য এই একটা অপশনই খোলা আছে। ওদের বাঁচাতে হলে তোমায় এই কাগজে সাইন করতে হবে আর নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করতে হবে।”
ইচ্ছে বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো,
-“আমি রাজি। শুধু আয়াশ, মুহিব আর রাসেল ভাইয়ার যেন কোনো ক্ষতি না হয়। তুমি কিন্তু আমাকে কথা দিচ্ছ!”
-“প্রমিস।”
-“হাত খুলে দাও আমার।”
রায়ান ইচ্ছের হাত খুলতে লাগলো। বাবাইকে এই সম্পত্তির জন্য হারিয়ে ফেলেছে ইচ্ছে। এখন আয়াশকে হারাতে চায় না সে। আয়াশকে বাঁচতে হবে, তার জন্য বাঁচতে হবে। যারা আজ তাকে মেরে ফেলবে তাদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বাঁচতে হবে আয়াশকে। ইচ্ছের হাত খুলে তার দিকে একটা কলম এগিয়ে দিল রায়ান। রুজাইনা চেয়ারের উপর বসে আপেল খাচ্ছে। ইচ্ছে কোনো প্রকার চালাকি না করে সাইন করে দিল কাগজে। তারপর এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো সে। কাগজে সাইন হতেই রায়ান ইচ্ছের হাত থেকে ছোঁ মেরে কাগজটা নিয়ে নিলো। ক্লান্ত গলায় ইচ্ছে বললো,
-“একটু পানি দাও আমাকে।”
-“মৃত্যু পথযাত্রীর শেষ ইচ্ছা সবসময় পূরণ করতে হয় শুনেছি। তোমার ইচ্ছাও পূরণ করব আমি।”
রায়ান এক বোতল পানি এনে দিতেই পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করে নিলো ইচ্ছে। রুজাইনার হাতে আপেল কাটার ধারালো ছুরি রয়েছে। সেই ছুরিটা হাতে নিয়ে উঠে এলো রুজাইনা। ইচ্ছের চোখের দিকে তাকিয়ে সে বললো,
-“তোর মৃত্যু দেখার অপেক্ষায় ছিলাম। আজ তা পূরণ হতে চলেছে। কিন্তু তোকে সহজ মৃত্যু আমি দিব না। একটু একটু করে শেষ করব তোকে।”
কথাটা বলেই ইচ্ছের হাতের রগে ছুরি চালিয়ে দিল রুজাইনা। মূহুর্তেই ইন্ছের হাত কেটে রক্ত পড়তে লাগলো। চোখ-মুখ কুঁচকে গেল ইচ্ছের। ভীষণ জ্বলছে তার হাত। ব্যাথায় আর্তনাদ করতে মন চাইছে তার। কিন্তু সবটাই সহ্য করে নিয়ে চুপ করে এক দৃষ্টিতে রুজাইনার দিকে তাকিয়ে রইলো সে। এই মানুষটার কারণে আয়াশের ভালোবাসাকে ভুল বুঝে দূরে ঠেলে দিয়েছিল সে। লোকটাকে শেষবারের মতো চোখের দেখাও দেখতে পেলো না ইচ্ছে। তার কাছে সবকিছুর জন্য ক্ষমা চাইতে পারলো না সে। বিরবির করে ইচ্ছে বললো,
-“আ’ম স্যরি আয়াশ। পারলে ক্ষমা করে দিয়েন আমাকে। আমি আপনার ভালোবাসার যোগ্য ছিলাম না কখনোই। নাহলে আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারতাম না। আর না পারতাম আপনার ভালোবাসাকে দূরে ঠেলে দিতে। আ’ম রিয়্যেলি ভেরি স্যরি আয়াশ।”
রুজাইনা বললো, “আর কিছুক্ষণের মধ্যেই তুই এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিবি। এরপর তোর সকল সম্পত্তির উপরে অধিকার থাকবে একমাত্র রায়ান আর আমার। ওহ্! তোকে তো একটা কথা বলাই হয় নি। আমি রায়ানের ওয়াইফ। মিসেস রায়ান বুঝলি!”
ইচ্ছের চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে সমানে। দৃষ্টি জোড়া ঘোলা হয়ে গিয়েছে। মৃত্যু যে কতটা যন্ত্রণাদায়ক তা বুঝতে পারছে সে। আয়াশের সাথে করা বিশ্বাসঘাতকতার ফল হয়তো এটাই ছিল। বেঁচে থাকতে আয়াশের চোখে নিজের জন্য ঘৃণা ও সহ্য করতে পারবে না। সে যা করেছে আয়াশের সাথে তারপরও যে আয়াশ তাকে ঘৃণা করবে না এটা ভাবা নিতান্তই বোকামি তার কাছে। এসব ভাবা বাদ দিয়ে আয়াশের সাথে কাটানো ভালোবাসাময় মধুর স্মৃতিগুলো মনে করতে লাগলো সে। তার ঠোঁটের কোণায় ফুটে উঠলো এক চিলতে হাসি। ইচ্ছেকে হাসতে দেখে রুজাইনা বললো,
-“কী’রে মরার আগে পাগল হয়ে গেলি না-কি!”
রায়ান হাসতে হাসতে বললো, “বেচারি মনে হয় এত শক একসাথে নিতে পারে নি। তাই পাগল হয়ে গিয়েছে। ব্যাপার না, একটু পরে তো উপরেই চলে যাবে। তারপর সেখানে বসে বসে নিজের পাগলামি দেখাবে। আমাদের আর এসব প্যারায় পড়তে হবে না।”
-“ঠিক বলেছো।”
রুজাইনা ইচ্ছেকে চেয়ার থেকে তুলে নিচে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিল। ওর হাত দু’টো পাশের একটা সোফার পায়ার সাথে বেঁধে দিল। সম্পূর্ণ বাড়িতে রায়ান, নিজের লোক দিয়ে পেট্রোল ছিটিয়ে দিয়েছে। এই বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে বাড়িসহ ইচ্ছেকে এখানেই জ্বালিয়ে দিয়ে যাবে ওরা। রায়ান ইচ্ছেকে সেভাবে রেখে রুজাইনাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। বাড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে গাড়ির দিকে এগোতে গেলে সেখানে আরও কতগুলো গাড়ি এসে পৌঁছালো। গাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো আয়াশ আর তার গার্ডরা। ওদের দেখে ভরকে গেল রায়ান আর রুজাইনা। আয়াশ রক্তচক্ষু মেলে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। রায়ান এখন কী করবে বুঝতে পারলো না। এভাবে তীরে এসে তরি ডুবে যাবে কল্পনাও করতে পারে নি সে। রুজাইনা রায়ানের দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় কিছু একটা বললো। রায়ান তা বুঝতে পেরে মাথা নাড়িয়ে ওর গার্ডদের ইশারা করতেই একজন গার্ড লাইটার জ্বালিয়ে বাড়ির দিকে ছুঁড়ে ফেললো। সাথে সাথেই বাড়িতে আগুন জ্বলতে শুরু হলো। এই বাড়িটা ছিল ইচ্ছের বাবার। এখানেই ইচ্ছে ছোট থেকে বড় হয়েছে। রায়ানকে বাড়িতে আগুন লাগাতে দেখেও ভ্রুক্ষেপ করলো না আয়াশ। সে তীক্ষ্ণ গলায় বললো,
-“আমার ইচ্ছেময়ী কোথায়?”
রুজাইনা হেসে বললো, “আহ্ কী ভালোবাসা! দ্য গ্রেট গ্যাংস্টার আয়াশ খান কাউকে এতটা ভালোবাসতে পারে তা নিজের চোখে না দেখলে জানতেই পারতাম না।”
রুজাইনার কথা শুনে হাসলো রায়ান। রুজাইনার উদ্দেশ্যে বললো, “কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো ও এখানে এসেই ইচ্ছের খোঁজ করছে। আমাদের দেখে ও একটুও অবাক হয় নি। এর কারণ কী?”
-“আসলেই তো!”
আয়াশ আবারও প্রশ্ন করলো, “আমার ইচ্ছেময়ী কোথায়? ভালোয় ভালোয় বল ও কোথায় নাহলে তোদের দু’টোকে আমি এমন মৃত্যু দিব যে মৃত্যুও তোদের দেখে ভয়ে কেঁপে উঠবে। আর তোরা কে কী করেছিস আর কেন করেছিস সবই আমার জানা। এখন বল ইচ্ছে কোথায়?”
রায়ান হাসছে দেখে রুজাইনা গার্ডদের দিকে তাকিয়ে ইশারা করতেই গার্ডরা আয়াশের গার্ডদের উপর গুলি চালাতে লাগলো। আয়াশের গার্ডরাও তাদের উপর পাল্টা আক্রমণ করলো। আয়াশ নিজের গান বের না করেই রায়ানের দিকে যেয়ে ওর ঘাড়ে জোরে একটা বারি দিল। তৎক্ষনাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো রায়ান। রায়ানকে অজ্ঞান হয়ে যেতে দেখে এবার ভয় পেয়ে গেল রুজাইনা। সে পালাতে চাইলে আয়াশ তার হাত ধরে গালে সপাটে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল। পাশেই কতগুলো মেয়ে গার্ড ছিল। তাদের দিকে ছুঁড়ে ফেললো রুজাইনাকে। সারা বাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। কিন্তু বাড়ির ভেতরে এখনো ঠিক ভাবে আগুন পৌঁছাতে পারে নি। আয়াশ চিৎকার জিজ্ঞেস করলো,
-“আই স্যুয়ার রুজাইনা! যদি আমার ইচ্ছেময়ীর কিছু হয় তাহলে আমি তোমাকে ছাড়বো না। ভালোভাবে জিজ্ঞেস করছি এখন। বলো ইচ্ছেময়ী কোথায়? কোথায় আটকে রেখেছো তাকে?”
রুজাইনা কিছু বলছে না দেখে একজন লেডি গার্ড কষিয়ে দু’টো থাপ্পড় মেরে দিল রুজাইনার গালে। রুজাইনা বুঝতে পারলো এখন যদি সে ইচ্ছের খবর আয়াশকে না দেয়, তাহলে আজ এই মূহুর্তে তার মৃত্যু নিশ্চিত। তাই ভয় পেয়ে সে বললো,
-“বলছি! ই..ইচ্ছে বাড়ির ভেতরে আছে। স্টোর রুমে আটকে রাখা হয়েছে ওকে।”
কথাটা শোনামাত্রই আয়াশের বুক কেঁপে উঠলো। থমকে গেল সে। শরীর কাঁপতে লাগলো তার। বাড়ির দিকে একবার তাকিয়ে আবারও রুজাইনার দিকে তাকালো সে। লেডি গার্ডদের দিকে তাকাতেই তারা বুঝতে পারলো যে আয়াশ কী বলতে চাইছে। তারা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে রুজাইনাকে টেনে নিয়ে গেল। বাকি গার্ডরা রায়ানকে নিয়ে গেল।
আয়াশ কিছু না ভেবেই বাড়ির দিকে এগিয়ে গেল। ভেতরে কীভাবে যাবে সে? বাড়ির চারপাশে আগুন ছড়িয়ে গিয়েছে। হঠাৎ বাড়ির জানালার দিকে চোখ গেল ওর। সেখানে আগুন যথেষ্ট কম আছে। আয়াশ দ্রুত জানালার কাছে গিয়ে জানালার কাঁচে জোরে জোরে দু’টো ঘুষি দিতেই কাঁচ ভেঙে পড়ে গেল। হাত ভেতরে ঢুকিয়ে জানালা খুলে বাড়ির ভেতরে ঢুকলো আয়াশ। ভেতরে তেমন একটা আগুন এখনো প্রবেশ করতে পারে নি। আয়াশ দৌড়ে স্টোর রুমের দিকে গেল। রুমটা ভেতর থেকে লক করা দেখে সে যেন পাগল হয়ে গেল। অস্থির হয়ে আছে সে একটা বার তার ইচ্ছেময়ীকে দেখার জন্য। আয়াশ আর না ভেবে পর পর বেশ কয়েকবার জোরে জোরে দরজায় ধাক্কা দিল। আবারও ধাক্কা দিতেই দরজাটা খুলে গেল। আয়াশ ভেতরে ঢুকতেই তার পা জোড়া যেন থমকে গেল। ইচ্ছেকে এই অবস্থায় দেখার কল্পনাও করে নি সে। দ্রুত ইচ্ছের কাছে গিয়ে ওর হাতের বাঁধন খুলে ওকে নিজের বুকের মাঝে চেপে ধরলো আয়াশ। তার চোখে পানি টলমল করছে। ইচ্ছে আধো আধো চোখে তাকিয়ে দেখে আয়াশ তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। কোনো কথা বলতে পারলো না ইচ্ছে। আয়াশ আর দেরি না করে ইচ্ছেকে কোলে তুলে নিলো। স্টোর রুম থেকে বের হতেই দেখতে পেলো ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভেতরে এসেছে। তাদের সাহায্যে ইচ্ছেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো সে। দ্রুত এ্যাম্বুলেন্সে করে ইচ্ছেকে হসপিটালে নিয়ে গেল আয়াশ।
চলবে….
“ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।”
চলবে….
“ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।”
নোটঃ আসসালামু আলাইকুম। সব জট খুলে গেছে আশা করি🙄 বাকিটা আগামীকাল ইনশাআল্লাহ।