অতিরিক্ত চাওয়া {২}
২১
বেলির উত্তেজিত চাহনিতে মাদকতা ভরপুর। এ-ই উত্তেজিত চাহনি তৃষ্ণার কাছে নেশাময় লাগছে। এবং সেটা দূর থেকে দেখেই চোখ বুঝে ফেলল তৃষ্ণা। অদ্ভুত ভালোলাগার মাঝে খারাপ লাগা মিশে। বেলির আশাময় চোখদুটো ঠিক তৃষ্ণার বুকে গিয়ে বিঁধছে। আবিরের গাড়িটা সম্পুর্ন লেগে থামলো আবিদের গাড়ির সাথে। বেলি এখনো উত্তেজিত চাহনিতে আবিরের গাড়ির দিক তাকিয়ে। তাঁর চোখে আশার আলোর ছোঁয়া। এ-ই বুঝি তৃষ্ণা এসেছে। আবিদ দুষ্টু হেসে বেলির মাথায় টোকা দিলো,
‘ বাবাহ। এতো প্রেম। আচ্ছা, সত্যি করে বল তো, এতো দ্রুত কিভাবে ভাইয়ের পাগল হলে? ভাই কি কোনো জাদুবিদ্যা করেছে? মানে আম জাষ্ট কিউরিয়াস। ‘
বেলি আড়চোখে আবিদের দিক তাকিয়ে আবারও নতুন এসে থামা গাড়ির দিক নজর রাখল,
‘ সে এসেছে? সত্যি করে বলবে। ‘
বেলির ভাংগা-ভাংগা শব্দের আওয়াজ শুনে আবিদ চুপ মেরে যায়। আরও কিছু বললে নির্ঘাত বেলি কেঁদে দেবে। তাই অগ্যত মাথা দুলালো,
‘ হ্যাঁ। ‘
আবিরের সাথে অঞ্জলি, আয়েশা, তৃষাও বেরিয়ে আসে। বেলি কিছুটা এগিয়ে যায়। ভদ্রতা বজায় রাখতে কোনোভাবে সালাম জানাল,
‘ আসসালামু আলাইকুম। ‘
আবির হেসে জবাব দেয়,
‘ আলাইকুম আসসালাম।
অ্যান্ড অলসো হ্যাপি বার্থডে ডিয়ার। আগে জানলে সুন্দর একটি প্রেজেন্ট ও নিয়ে আসতাম। আফসোস তোমার তিনি আমাদের একটু আগে জানিয়েছেন। ‘
বেলি আড়চোখে গাড়ির দিক বারবার তাকাচ্ছে দেখে, আয়েশা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো। যেই হাসিটা আবিরের চোখ এড়ালো না। এমন অদ্ভুত হাসি প্রিয়তমার মুখে দেখে, আবিরের ঠোঁটেও হাসি ঝুলে। সে একধ্যানে তাকিয়ে আয়েশা মায়াবী চেহরায়। সেটা খেয়াল করে আয়েশা ঢোক গিলে অন্যদিকে ফিরে গেলো।
তৃষা দ্রুত বেলিকে দৌড়ে জড়িয়ে নিলো,
‘ ভাবি। তোমাকে অনেক মিস করেছি।
তুমি কি জানো ভাইয়ার অবস্থা কতটা খা..’
তৃষার কথা শেষ হওয়ার আগেই, আবিদ তৃষার মুখ চেপে ধরলো,
‘ বাচ্চা মেয়ে। শুধু বেশি কথা। ‘
তৃষা বেলির দিক তাকিয়ে মাথা নাড়াচ্ছে। আবিদ চোখ রাঙিয়ে তৃষাকে টেনে পাশের গাড়িতে বসিয়ে দিল। কনফিউজড হয়ে থাকা বেলির নাক টেনে দিলো আয়েশা,
‘ হ্যাপি বার্থডে বেলি। মাফ চাইছি দেরি করে উঈশ করার জন্য। আর তুমি আমার থেকে গিফট পাওনা কিন্তু। ‘
আবির আয়েশার দিক মিষ্টি হেসে বলল,
‘ তুমি আর আমি কি আলাদা? আমি দিলে তোমার দেওয়া হয়ে যাবে। তাই না বেলি? ‘
বেলি বোকার মতো জবাব দিলো,
‘ হ্যাঁ। ‘
আয়েশা মুখ বাঁকাল।
অঞ্জলি বেলিকে জড়িয়ে উঈশ করে ফেলল,
‘ হ্যাপি বার্থডে বেলিই। আমার থেকেও গিফট পাওনা তুমি। ‘
বেলি মাথা নাড়িয়ে না করবে বা সহমত হওয়ার আগেই, আবিদ সবাইকে তাড়া দিতে লাগলো।
‘ সবাই টেনশন করছে। দ্রুত বাড়ি পৌঁছাতে হবে।’
আয়েশা যাওয়ার আগে বেলির হাত ধরে মুচকি হাসলো,
‘ তৃষকে দেখে আবার কাঁদতে শুরু করিয় না কেমন। যা হয়েছে তা হয়ে গিয়েছে। বুঝলে? আপাতত বাড়ি যেতে হবে সবাই ক্লান্ত। কাল বাড়িতে কথা হবে জমিয়ে। ‘
না বুঝেও মাথা দুলালো বেলি।
আবিদ বেলিকে গাড়ির দিক ঠেলে দিল,
‘ মামা তুমি ওঁদের নিয়ে বাড়ি পোঁছাও। আমি ভাই কে নিয়ে কিছুক্ষণের মাঝে চলে আসবো। ‘
আবির সহমত হলো,
‘ দ্রুত ফিরিস। সবাই তৃষের চিন্তায়। ‘
কথাটা বলেই আবির ধীরগতিতে গাড়ির দিক এগোলো। এইবার ও আয়েশাকে পেছনে বসতে দেখে রেগে গেলো আবির। দাঁত কিড়মিড় করতে করতে, পেছন থেকে আয়েশার হাত টেনে গাড়ি থেকে বাহির করে ফেলল।
‘ আমার সাথে বসতে না চাইলে হেঁটে হেঁটে যাবি। ‘
‘ অসভ্য ব্যাবহার। আমি হেঁটেই যাব লাগলে । তাও আপনার সাথে বসে যাব না। ‘
‘ এক্ষুনি উঠবি এবং সামনে বসবি। নাহলে ওঁদের সামনেই কোলে নেব। অ্যান্ড বিলিভ মি আয়েশা আমি কোলে উঠালে বাড়ি পৌঁছানোর আগে নামাব না। ‘
চোখ রাঙাতে রাঙাতে আয়েশা গাড়িতে উঠতে লাগলো।
‘ আপনার খারাপ ব্যাবহার কখনও যাবে না। ‘
আবির আয়েশার কথা কানে তুলল না। মিষ্টি হেসে নিজেও পাশে গিয়ে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো।
সেকেন্ডে-ই বেলির চোখের থেকে দূরে চলে
গেল গাড়িটা। এতক্ষণ সে শুধু আবির আর আয়েশার দিক তাকিয়ে ছিলো। দুজনকে একসাথে অঅদ্ভুত সুন্দর দেখায়। আসলে যাকে বলে ” পারফেক্ট ম্যাচ “। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আবিদ বেলিকে চোখ টিপ মারল,
‘ কী? তোমার ‘ সে ‘ কে দেখবে না? ‘
বেলি চারপাশে তাকিয়ে, আবিদের দিক ফিরলো,
‘ কোথায়? ‘
আবিদ পকেট থেকে সিগারেট বের করতে করতে বলল,
‘ গাড়িতে। [ একটু চিল্লিয়ে ] ভাই? আমি মাথার দোকানটায় যাচ্ছি। কল দিলে চলে আসবো। [ বেলিকে ইশারা করে ] দাঁড়িয়ে কেন? যাও। ‘
বেলিকে দাঁড়ানো রেখে আবিদ সিগারেটে টান দিতে-দিতে অন্যদিক চলে যাচ্ছে। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটির দিক তাকিয়ে, ছোট শ্বাস ফেলল বেলি। কিছুটা এগোতেই সেই চেনা ডাক,
‘ বেলি? ‘
তৃষ্ণার আওয়াজ গাড়ি থেকে আসতেই ঠোঁট চেপে ধরলো বেলি। বুক কাঁপছে। ঢোক গিলল ছোট করে। কতদিন পর দেখবে তৃষ্ণাকে? ১৫ নাকি ১৬? এ-ই ১৫-১৬ দিনকে কি বেলি ১ বছরের সমান তুলনা করতে পারবে? কারণ বেলির কাছে এক বছর এ-র সমান-ই মনে হয়েছে। তার যে ভয়-ও করছে । সেটা কেন হচ্ছে? এতো অপেক্ষার পর তৃষ্ণার সাথে তার দেখা হচ্ছে। অথচ বেলির পা এক যায়গাই দাঁড়িয়ে। একটুও নাড়াতে পারছে না পা। আবারও তৃষ্ণার আওয়াজে কেঁপে উঠলো সে। চারপাশে চোখ বুলিয়ে, একটু একটু করে এগিয়ে গেল গাড়িটার দিক। গাড়ি বরাবর দাঁড়াতেই তৃষ্ণা দরজা বাম হাত দিয়ে খুলে দিলো।
তৃষ্ণার শীতল চাহনি বেলির মুখ থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে ব্যাস্ত। স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে বেলির আতঙ্কিত চাহনি। বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে বেলি, ভিতরে বসে থাকা তৃষ্ণার দিক। যার কপালে, ডান হাতের তালুতে, এবং বাম পায়ের পাতায় ব্যান্ডেজ করা। চোখের পলক পড়ছে না যেনো। লেগে থাকা ঠোঁট দুটো হালকা ‘ হা ‘ হয়ে গেলো। মুঠো করে থাকা হাত ধীরে ধীরে গাড়ির দরজাটা ধরলো। এতোক্ষণের হঠাৎ
ভয়-লজ্জা কোথাত জেনো উবে গেল। এখন শুধু বিষ্ময়। এটা কি সেই তৃষ্ণা যাকে বেলি শেষ দেখেছিল?
হঠাৎ তৃষ্ণার লম্বা ডান হাত বেলির হাত টেনে ভিতরে নিয়ে আসে। বেসামাল ভাবে বেলি ধপ করে তৃষ্ণার পাশে গিয়ে পড়লো। চোখে টলমল করা জল এখন গাল গড়িয়ে পড়লো। তাঁর তৃষ্ণার এ-ই কি অবস্থা হয়েছে? তৃষ্ণার মুখের দিক চোখ উঠাতে-ই পরক্ষনে তৃষ্ণার ফ্যাসফ্যাসে ঠোঁট বেলি’র ঠোঁট চেপে ধরলো। ঠোঁটে ছোটছোট চুমু খেতে খেতে নিজের ঠোঁট বেলি’র ঠোঁটে প্রবেশ করাতে লাগলো। ব্যান্ডেজ করা হাতটি বেলির কোমর চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। খোলা চোখের কোণা দিয়ে পানি বেয়ে পড়ছে বেলির। হাত দু’টো তৃষ্ণার বুকের দিকের জ্যাকেট দ্রুত টাইট করে ধরলো। ধীরে-ধীরে বেলি’র চোখ বুঝে গেল। কিন্তু চোখের জল পড়া কমছে না। বন্ধ চোখের কোণা দিয়ে জল বেয়ে গলা ভিজে যাচ্ছে। তৃষ্ণা বেলিকে আঁকড়ে ধরে চুমু খেতে খেতেই, ঝুকে গাড়ির দরজাটা ‘ঠুস’ আওয়াজে লাগিয়ে দিলো। বেলি’র বন্ধ চোখে এখনও তৃষ্ণার ব্যান্ডেজ করা ক্ষত গুলো স্পষ্ট হয়ে আছে। চুমু ব্যাপারটা এখনও বেলির মাথায় খেয়াল হচ্ছে না। সে আপাতত ভাবতে চেষ্টা করছে ঠিক কি হচ্ছে তার সাথে। কিন্তু ভাবতে পারছে না, কারণ তৃষ্ণার চুমু খাওয়ার শক্তিটা বেড়ে চলেছে। বেলির ঠোঁটে তাঁর ঠোঁট প্রবল ভাবে প্রবেশ করছে।
ঠিক কতক্ষণ বেলির নাক দিয়ে শ্বাস নিতে হয়েছে মনে নেই। তৃষ্ণা তাঁর ঠোঁট ছেড়ে ঘাড়ে প্রবেশ করলো। বেলির কাঁপা শরীর আরও কাঁপতে শুরু করেছে। তৃষ্ণার গরম নিশ্বাস বেলির ঘাড় ছুঁয়ে দিচ্ছে। তাঁর ভেজা ঠোঁট বেলির ঘাড়ে-ও চুমু খেতে লাগলো টুকরো টুকরো করে। বেলি চোখ বুঝে তৃষ্ণার জ্যাকেট আরেকটু শক্তি দিয়ে চেপে ধরলো। নাহলে নির্ঘাত সে পড়ে যাবে। ঘাড়ে মাথা রেখেই তৃষ্ণা বলতে লাগলো,
‘ শুনেছি প্রেমিক-রা নাকি তার প্রেমিকার চোখের পানি দেখলে কষ্ট পায়। অথচ আমি যখন তোকে কাঁদতে দেখি আমার শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যায় তোকে চুমু খাওয়ার জন্য। এখন বল আমার বেলায় ব্যাপারটা উল্টো কেন হচ্ছে?’
লজ্জায় বেলি কুঁকড়ে যাচ্ছে। তাঁর কথা বলার কোনো শক্তি নেই। ভাবতেই শরীর কাঁটা দিচ্ছে যে তৃষ্ণার ঠোঁট তাঁর ঠোঁটের মাঝে ছিলো। তৃষ্ণাকে সরানোর জন্য একটু ধাক্কা দিতেই, তৃষ্ণা স্বেচ্ছায় সরে আসলো। দুষ্টু হেসে বেলির দিক তাকাতেই আবারও বেলির ঠোঁটে টুপ করে চুমু খেয়ে বসলো,
‘ লাল হয়ে আছে কেন ঠোঁট? টোম্যাটো দেখাচ্ছে। [ হালকা আওয়াজে ] আরও খেতে ইচ্ছে করছে। ‘
বেলি দ্রুত অন্যপাশে ফিরে গেলো। কাঁপা-কাঁপা হাত দিয়ে তৃষ্ণাকে সরে বসতে বলল। কিন্তু কে শুনে কার কথা। তৃষ্ণা পেছন থেকে বেলিকে জড়িয়ে ধরলো,
‘ শরীরে সোয়েটার কোথায়? এ-ই ঠান্ডা বাতাসের মাঝে হাতা কাঁটা জামা পড়ে কোন পাগল বাহিরে আসে। হুঁ? ‘
‘ ম..মনে ছিলো না প..পড়তে। ‘
‘ মন কই ছিলো? ও হ্যাঁ। মন তো আমার কাছে দিয়েছিলি। ‘
বেলির গাল লজ্জায় ফুলে যাচ্ছে। তৃষ্ণা বেলিকে নিজের দিক ফিরিয়ে বসালো। বেলির হাত নিজের গালে ছুঁয়ে দিয়ে চোখ বুঝে ফেলল।
বেলির চোখ তৃষ্ণাকে দেখতে লাগলো। এমন অবস্থায় তৃষ্ণাকে সে কখনও দেখে নি। কখনও না। কপালের ব্যান্ডেজে এখনও রক্তের ছোপ-ছোপ দাগ দেখাচ্ছে। মুখটা শুকিয়ে আছে। বেলির চোখে জল আবারও টলমল করছে।
তৃষ্ণা চোখ খুলতেই দেখল বেলি কাঁদছে। ছোট শ্বাস ফেলে, চোখের পানি আঙুলের সাহায্যে মুছতে মুছতে বলল,
‘ ইউ ডোন্ট নিড টু ক্রায় বেলি। আম পারফেক্টলি অলরাইট। ‘
তৃষ্ণার কথা বেলি’র কানে যায় নি। সে তার নিজের মতো ফোঁপাতে লাগল। তৃষ্ণা ধীরে বেলিকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো,
‘ কাঁদলে আবার চুমু খাব। ‘
বেলি নাক টেনে নিজের কান্না আটকানোর চেষ্টায় লেগে পড়লো। সেটা খেয়াল করে তৃষ্ণা বাঁকা হাসলো।
‘ এমতাবস্থায়-ও আ..আপনি এমন কিভাবে ক..করতে পারেন। ‘
তৃষ্ণা বেলির চুল গুলো কানে গুঁজে দিচ্ছে,
‘ কি করলাম? ‘
বেলি কপাল কুঁচকে ফেলল। বেলির অসন্তুষ্ট চাহনি দেখে তৃষ্ণা বেলির গাল টেনে ধরলো,
‘ কোথায় একটু আদর-টাদর করবি তা না। বসেবসে কাঁদছিস। তার জন্যই বাচ্চা-কাচ্চার সাথে প্রেম-পিরিতি পেরাময়। ‘
বেলি চোখ পিটপিট করলো,
‘ ব্যান্ডেজে চেপে দেব। ‘
তৃষ্ণা বাঁকা হাসলো,
‘ হুমকি দিচ্ছিস? ‘
‘ আপনি যে আমায় বাচ্চা বলছেন? ‘
‘ তো তুই কি? ‘
বেলি চোখ ছোট করে তৃষ্ণার ব্যান্ডেজ গুলো ধীরে ছুঁয়ে দিচ্ছে,
‘ সতেরো বয়স। মা বলেছে বড় হয়ে গিয়েছি। ‘
‘ আচ্ছা? তাহলে বিয়ে করে ফেলি। তারপর ডজন বাবু নেব। ‘
বেলি আড়চোখে তৃষ্ণার দিক তাকিয়ে,
‘ আ..আপনি তো এখনও বলছেন না কিভাবে হলো এগুলো। ‘
‘ আ স্মল এক্সিডেন্ট। ‘
‘ ভিতরেও ব্যান্ডেজ করা? ‘
‘ ছিলো। ওগুলো খুলা হয়েছে। ‘
‘ ব্যাথা করছে। ‘
‘ একদম না। ‘
‘ এখানে থাকতে হবে না। আবিদ ভাইয়াকে কল করুন। আপনার বাড়ি যেতে হবে। আমাকে দিন ফোন। ‘
তৃষ্ণা ডান হাত দিয়ে বেলির কোমর চেপে ধরলো। নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে নিলো,
‘ এতো দ্রুত? নেভার। ‘
বেলির ঘাড়ে নাক-ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়ে,
‘ ফোনে না কেঁদে ভাসিয়েছিস আমায় দেখার জন্য? ‘
তৃষ্ণাকে ঠেলে সরানোর চেষ্টা করতে করতে জবাব দিলো,
‘ আ..আমমি কি জানতাম আ..আপনি এক্সিডেন্ট করেছেন? আর আমাকে কেউ জানাল-ও না। ‘
বেলির কন্ঠে অভিমান ভরপুর। তৃষ্ণা বেলির গাল টেনে ধরলো,
‘ কেন জানাতাম? যাতে আরও কাঁদতে পারিস? ‘
‘ কে বলেছে আপনায়? আমি মোটেও কাঁদিনি। ‘
‘ আচ্ছা? ‘
তৃষ্ণাকে বাম হাত নাড়াতে দেখে বেলি আওয়াজ করে উঠে,
‘ হাতে ব্যাথা পাবেন। ‘
‘ সরে যাচ্ছিস কেন? ‘
অগ্যত বেলি তৃষ্ণার সাথে লেগে বসলো৷ তৃষ্ণার ডান হাত বেলির কোমর ছুঁয়ে দিচ্ছে। মুখ ঘাড়ে স্পর্শ করছে। বেলি’র মন-শরীর একটু-আধটু করে কাঁপছে। আচ্ছা এতো দিনের একান্ত ভাবটা কোথায় চলে গেলো? এখন বেলির মন হঠাৎ ফুর্তিময় কিভাবে হয়ে গেলো?
চলবে…