#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ৭
.
.
বিছানার বামপাশে বেশ খানিকটা জায়গা খালি রয়েছে। সেই খালি জায়গার মেঝেতে উপুড় হয়ে নিথর দেহের ন্যায় পড়ে আছে তিহান। তার একহাত রয়েছে বুকের নিচে ভাঁজ করা তো আরেক হাতে রয়েছে মাথার কাছ দিয়ে সটান করে সোজা ভাবে রাখা। হাতের মুঠোর মাঝে রয়েছে একটি কাঁচের বোতল। আর পা দুটো রয়েছে সোজা ভাবে রাখা তবে, দু’পা দুদিকে। চোখের সামনে নিজের যুবক ছেলের এ করুণ অবস্থা দেখে বাকরূদ্ধ হয়ে যায় বাবা আনিস খন্দকার। মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে তিহানকে উল্টো ভাবে শোয়া থেকে সোজা করে নিজের হাঁটুতে তিহানের মাথা রাখতেই চমকে উঠে বাবা সহ রুমে উপস্থিত থাকা সকলে।
তিহানের নাক মুখ দিয়ে সমানে গড়গড়িয়ে ফেনা পড়ছে। তাও আবার সাদার মাঝে হলুদ রঙ ভাসা। ফেনার ধরন দেখেই বুঝা যাচ্ছে এটা সাধারণ কোনো ফেনা নয়। এ যে বিষের ফেনা। যে বিষ তিহানের সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে তাকে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দিচ্ছে।
বাবা আনিস খন্দকার ছোট ছেলে তিহানের গাল বেয়ে পড়া ফেনার কিছু অংশ হাতের দু’আঙুল দিয়ে ধরে ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে কাঁপা গলায় বললেন,
” তিহান!বাবা আমার… তুই কি করেছিস? আর কেন করেছিস এ কাজ ? তোর এ অবস্থা দেখলে আমাদের কেমন লাগবে জানিস না? ও বাবা! তোর এমন কি হয়েছিল যে আমাদেরকে ছেড়ে যেতে চাচ্ছিস তুই? অতলের মা ! এই অতলের মা ! দেখো আমাদের ছেলের কি অবস্থা… হে আল্লাহ! এ তুমি কি দেখালে… এ বিশ্বজুড়ে আমার ছেলেটাই তোমার চোখে পড়লো? এ দৃশ্য দেখানোর চেয়ে তুমি না-হয় আমাকেই নিয়ে যেতে, বুড়ো বাবার কোলে যুবক ছেলের নিথর দেহ দেখা কি সহ্য করার মতো ! ”
বাবার আর্তনাদ শুনে অতলের বুকে মোচড় দিয়ে উঠছে বারবার। কিন্তু সে যে পারছে না তার বাবাকে সান্ত্বনা দিতে। তার নিজেরই যে হাত পা অবশ হয়ে পড়ে আসছে। তবুও নিজের গায়ে ঢলে পড়া মা’কে বিছানার উপর আলতো করে শোয়া অবস্থায় রেখে এগুলো তিহানের দিকে। বাবার কাঁধে হাত রেখে অতল বলল,
” বাবা এভাবে কেঁদো না, যা হবার তা হয়েই গিয়েছে। এখন বাকিটা যা করার আমাদের করতে হবে আর তা খুব দ্রুত। এভাবে তিহানকে বুকে নিয়ে বসে কাঁদলে তো সবকিছু ঠিক হবে না, ক্ষতি ছাড়া। এখানে বসে থাকা মানেই নিজেদের বিপদ ঢেকে আনা। আমাদের উচিৎ এখনি তিহানকে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে পড়া। তা না হলে…।”
” আর কিছু বলিস না! আমার বুকের ভেতর যে পুড়ে যাচ্ছে। আমার আর সহ্য হচ্ছে না। ”
” এটাই যে সত্য বাবা ! আর দেরি করলে যে আমরা আমাদের তিহানকে হারিয়ে ফেলবো। ”
” না না, আমি আমার তিহানকে হারাতে চাই না। তুই যেখানে নেবার নিয়ে যা। তবে আমায় এই ঘরে ফেলে যাস না। আমিও যাবো তোর সাথে। ”
” হুম চলো। তবে কান্নাকাটি করো না, তাহলে যে আমি নিজেকে সামলাতে পারবো না। মিরাজ কাকা! আমরা যাচ্ছি। আপনি তানহা কে ডেকে মায়ের কাছে নিয়ে আসুন। আর মায়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে বলবেন। মা কোথাও যেতে নিলে আপনারা কিন্তু যেতে দিবেন না। চোখে চোখে রাখবেন মা’কে। ”
কথাটুকু বলেই অতল তিহানকে একবারেই নিজের পাজ কোলে নিয়ে নিল। আর সামনের দিকে এগুতে লাগলো। কিন্তু অতলকে দেখলে বুঝাই যাবে না, সে কোনো যুবককে পাজ কোল নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। কারণ অতল যে বেশ শক্ত একটি ছেলে। যেমন তার উচ্চতা, ঠিক তেমন তার স্বাস্থ্য। উচ্চতা দেখতে গেলে ৬ ফুট ১ ইঞ্চি’র মতো হবে। আর ওজন প্রায় ৮০/৮৫ কেজি। তাই হয়তো সহজেই কোনো সাহায্য ছাড়াই কোল করে তিহানকে গাড়ি অবধি নিয়ে যেতে পারছে। তবে তিহানও যে বেশ হালকা পাতলা তা কিন্তু নয়। লম্বার দিক থেকে ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি আর ওজনের দিক থেকে প্রায় ৭০ কেজির মতো হবে। তবে বিপদে পড়লে যে সবাই সবকিছু করতে পারে এটি তার প্রমাণ। অতল নিজেও বোধহয় জানে না হুট করেই তার এ শক্তি কোথা থেকে এসেছে। হয়তো মনের জোরেই এ শক্তির উদঘাটন। তাইতো একাই সে তিহানকে নিয়ে ছুটছে। অতল যে তার সমবয়সী ভাইকে হারাতে চায় না। আর না চায় তার বাবা মা’য়ের বুক খালি করতে। তিহানের কিছু হয়ে গেলে যে তার বাবা মা’কে সে বাঁচাতে পারবে না আর, না পারবে নিজেকে কোনোদিন ক্ষমা করতে।
গাড়ির পেছনে সিটে বাবার কোলে তিহানকে শোয়া অবস্থায় রেখে ড্রাইভারের অপেক্ষা না করেই সামনের ড্রাইভিং সিটে বসলো অতল। আর গাড়ি স্টার্ট দিল হসপিটাল যাওয়ার উদ্দেশ্যে।
.
তানহা এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে জানালার গ্রিল ধরে। কেউ যে তাকে দরজার ওপাশ থেকে ডাকছে সেই খেয়ালই নেই তার। সে তো তার নিজ ভাবনায় ডুবে আছে। এমন সময় ঘরের দরজা খোলার শব্দ পেয়ে তানহার হুশ ফিরল। তানহা এখনো দরজার দিকে তাকায়নি তবে তার বুকের মাঝে বারবার মোচড় দিয়ে উঠছে। সে যে ভাবছে অতল ঘরে এসেছে। তবে তার ভাবনা যে ভুল ছিল সেটি প্রমাণিত হয়, যখন একটি বয়স্ক লোকের কন্ঠ তানহা শুনতে পায়। তাই চট করে পেছনে ফিরে তাকায় তানহা। তাকিয়ে দেখে এই বাড়ির কেয়ারটেকার মিরাজ কাকা সামনে দাঁড়িয়ে। মিরাজ কাকা’কে দেখতে তানহার কাছে ভীষণ চিন্তিত লাগছে। তার সাথে কিছুটা ঘাবড়ানোও। তাই ভ্রু কুচকে দ্রুত পায়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বলল,
” কিছু হয়েছে মিরাজ কাকা? আপনাকে এত চিন্তিত দেখাচ্ছে যে! ”
” তুমি আমাকে চিনো নতুন বউ! ”
” হুম। আজ বাড়িতে ঢোকার সময়ই উনি আপনাকে নাম ধরে ঢেকেছিলেন তখনি শুনেছি। এখন বলুন আপনাকে এরকম দেখাচ্ছে কেন? কি সমস্যা হয়েছে? ”
” এ বাড়িতে এক বিরাট দূর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে নতুন বউ। ”
দূর্ঘটনার কথা শুনে তানহা আঁতকে উঠল। তবে তার যে আঁতকে উঠার কথা না! সে-তো এ বাড়ির কাউকেই চিনে না। না এ বাড়ির কারো জন্য তা মায়া জন্মেছে। তবে কেন তার এই ভয়? কথাগুলো ভেবেই নিজের দিকে নিজে প্রশ্ন ছুঁড়ে মারলো। তারপরও তার দুশ্চিন্তার মাত্রা বিন্দু পরিমাণ কমলো না। তাই মিরাজ কাকার দিকে তাকিয়ে ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,
” কি হয়েছে, কিসের দূর্ঘটনা? ”
” এ বাড়ির ছোট ছেলে যে বিষ খেয়েছে। তাকে বাঁচানো হয়তো দায় হয়ে পড়বে। আর তার কিছু হলে যে ভাইজান ও ভাবীকে অর্থাৎ তোমার শ্বশুর শাশুড়ী’কে বাঁচানো যাবে না। যুবক ছেলের নিথর দেহ কোনো বাবা মা-ই বা সহ্য করতে পারে বলো ? ”
” এখন সবাই কোথায়? বাড়িতেই আছে? নাকি হসপিটাল নিয়ে গিয়েছে? ”
” অতল বাবা আর ভাইজান তার ছোট ছেলেকে নিয়ে হসপিটাল গেল একটু আগে। আর ভাবী ঘরেই আছে কিন্তু হুশ নেই ভাবীর। তাই তো তোমায় ডাকতে এলাম। অতল বাবা বলে গিয়েছে তোমাকে ভাবীর পাশে থাকতে। ভাবী কোথাও যেতে নিলে যেতে না দিতে। ”
” কোন হসপিটালে নিয়ে গিয়েছে জানেন কিছু? ”
” এইতো বাড়ির কাছেই একটি হসপিটাল আছে সেখানে। ভালো হসপিটালে নেয়ার তো এখন সময়ও নেই তাই। ”
” হুম। আর উনি এখন কোথায় আছে ? মানে মা কোথায় আছে? ”
” ছোট ছেলের ঘরে আছে। এসো আমি তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি। ”
” হুম চলুন। ”
মিরাজ কাকা নিয়ে যাচ্ছে তানহাকে এ বাড়ির ছোট ছেলের ঘরে। তানহার ছেলেটির জন্যে কিছুটা খারাপ লাগছে সেই সাথে দুশ্চিন্তাও। তবে কোনো সম্পর্কের বাঁধনের জন্য নয়, শুধুমাত্র একটি মানুষ হিসেবেই এই দুশ্চিন্তা ও খারাপ লাগা। তবে মনের কোনো এক কোণে তানহার অজানা বসত একটা ভয়ও কাজ করছে। সেই ভয়ের রহস্য তানহার জানা নেই। তবুও সে এগিয়ে চলছে সেই ঘরের দিকে। যতই এগুচ্ছে ততই যেন তার অস্থিরতা বেড়ে চলছে। তার বুকের ঠিক মাঝখানে মাঝে মধ্যেই চিনচিন করে উঠছে। আর এই অস্থিরতা অনুভব করেই যেন তানহার রুমটিতে যাওয়ার আগ্রহ ক্রমশ বেড়েই চলছে।
তানহা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে নিলে মিরাজ কাকা বললেন,
” নতুন বউ ওই যে দেখছ না সিঁড়ির ডানপাশে একটি ঘরের দরজা দেখা যাচ্ছে? ওই ঘরেই তুমি যাও। সেটিই এই বাড়ির ছোট ছেলের ঘর আর সেই ঘরেই ভাবী রয়েছে। ”
” আমি একা কেন, আপনি যাবেন না? ”
” আমি রুমে চলে গেলে বাড়ি পাহাড়া দিবে কে? সদর দরজা যে খোলা।”
” ওহ্, আচ্ছা। ”
” তবে তুমি ভয় পেয়েও না আমি কাছাকাছি আছি। কোনো সমস্যা হলে কিংবা ভাবীকে সামলাতে না পারলে মিরাজ কাকা বলে একটি ডাক দিও আমি সাথে সাথে চলে আসবো। ”
” আচ্ছা কাকা। ”
মিরাজ কাকা চলে গেল। একা হয়ে গেল তানহা। এমনিতেই নতুন বাড়ি। নতুন মানুষজন। তারউপর এরকম একটি অস্বস্তিকর ঘটনা। সবমিলিয়ে কেমন যেন লাগছে তানহার। তারপরও তানহা গুটিকয়েক পায়ে হেঁটে দরজার সামনে দাঁড়ায়। দরজার ভেতর প্রথম পা রাখতেই তার বুক যেন ধক করে উঠলো। গায়ের পশমগুলো সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। তার নাকে যে পরিচিত এক সুগন্ধি ভেসে আসছে। যে সুগন্ধি টি তার অতি প্রিয় মানুষটি গায়ে থেকে পেত ঠিক সেরকম সুগন্ধি ভেসে আসছে এই ঘর থেকে । তানহার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। সুগন্ধিটি অনুভব করায় তানহার চারিপাশ যেন হাহাকারে মেতে উঠলো। তবুও সেদিকে পাত্তা না দিয়ে শাশুড়ী মায়ের কাছে যেতে লাগলো তানহা কিন্তু আশেপাশের কোনোদিকেই সে তাকালো না। শাশুড়ী মায়ের মাথার কাছে বসে তাকে নিচু গলায় ডাকতে লাগলো। তবে বেশ একটা লাভ হলো না ডেকে। তাই বিছানার সাথে রাখা সাইড টেবিলের উপর থেকে পানির গ্লাসটি হাতে নিয়ে একপশলা জল তার হাতের মুঠোয় নিয়ে শাশুড়ী মায়ের চোখে মুখে ছিটিয়ে দিতে লাগলো। তবে এবার তানহা হতাশ হলো না। তবে তার চেয়েও বড় একটি ধাক্কা খেল শাশুড়ী মায়ের বলা প্রথম কথাটি শুনে। ” তিহান…”
তানহার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। চোখের জলে বন্যা বয়ে যাচ্ছে তার। তার বুকে যেন সেকেন্ডের মাঝে বড় একটি পাথর চাপা দিয়েছে। যার জন্যে সে শ্বাস টুকুও নিতে পারছে না। তবে সে এখনো জানে না, এই তিহানই কি সেই তিহান না-কি! শুধু নামটারই মিল না-কি আস্ত মানুষটারই মিল তানহা জানে না! কিন্তু তাকে যে জানতে হবে আর সেটা এই মুহুর্তেই। নাহলে যে দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে সে। তাই চারিদিকে পাগলের মতো খুঁজতে লাগলো কোনো ক্লু কিংবা ছবি পাওয়া যায় কি-না! তাহলেই তো সে বুঝবে কে এই তিহান!
তানহা ছবির খোঁজে এতটাই মরিয়া হয়ে উঠেছিল ঘরের কোনায় দেখতে গিয়ে তার নাক বরাবর সামনের দেয়ালে ঝুলন্ত ছবিটি তার চোখে পড়েনি। তানহার হাত লেগে বুক সেলফ থেকে পড়ে যাওয়া বইটি উঠাতে গিয়ে চোখ দেয়ালের মাঝে পড়তেই চোখ দুটো যেন ছানাবড়া হয়ে গেল। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। এ পানি যে কোনো সাধারণ পানি নয়। এ পানি যে একেকটি সমুদ্র সমান কষ্টের পানি। মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না তার। কেবল চোখ দিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ছবির সেই প্রাণচাঞ্চল্যকর মানুষটির দিকে। তানহার হুট করে দম বন্ধ হয়ে আসছে। বিন্দু পরিমান শ্বাস নিতে পারছে না সে। এই ছবিটির দিকে তাকিয়ে থাকতে যে বেশ কষ্ট হচ্ছে। কারণ তার যে এ ছবির মানুষটিকে নিজের চোখে একটিবার দেখতে,ছুঁয়ে দিতে বড্ড ইচ্ছে করছে। কারণ সে জানে, তার এক পরশে তার তিহান সুস্থ হয়ে যাবে। এ পৃথিবীর আর কারো সেই শক্তি নেই যে শক্তি তানহার পরশে রয়েছে। এটাই যে তানহার বিশ্বাস। কারণ এরকম ঘটনা যে এর আগে বহু বার ঘটেছে। তাই তানহা আর এক মুহুর্তও দেরি না করে ছুটে যায় তার তিহানের কাছে। এদিকে তার শাশুড়ীর দায়িত্ব যে তাকে দেয়া হয়েছিল সেকথা তার হুশই নেই।
.
হসপিটালে এসে দেখে নরমাল বিভাগে তেমন ডাক্তার নেই । রাত তো আর কম হয়নি ডাক্তাররাও যে মানুষ! তবে জরুরী বিভাগটা এখনো কর্মচঞ্চল দেখা যাচ্ছে। তাই তিহানকে জরুরী বিভাগে ভর্তি করে মাথায় হাজারো আতংক নিয়ে মাত্রই অতল এসে বসেছিল হসপিটালের লবিতে। তবে বাবা আনিস খন্দকার বসেনি সে যে ছোট ছেলের ওটির সামনে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলছে আর কাঁচের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারছে। যদি এক ঝলক ছেলেকে নাড়াচাড়া অবস্থায় দেখা যায়! সেই আশায়। কারণ সে যে বাবা! আর বাবাদের যে অনেক জ্বালা।
অতল চেয়ারে বসে বসে সময় দেখছিল বারবার। কখন তার ভাইয়ের কোনো ভাল খবর পাবে সেইজন্য কিন্তু বাবার এই ছটফট দেখে আর বসে থাকতে পারেনি সে। দু’হাঁটুর উপর ভর দিয়ে দাঁড়ায় অতল। বাবার কাছে গিয়ে কাঁধে হাত রেখে বলল,
” তুমি না আমাদের মাথার উপরের বট গাছ ! যে বট গাছের ছায়ায় আমরা ভরসা খুঁজে পাই ! সেই তুমি আজ এমন করছ বাবা? তাহলে আমরা কোথায় যাব বলতে পারো? ”
” কিন্তু দিনশেষে আমিও যে একজন মানুষ। একজন বাবা। সেকথা ভুলে গেলে যে চলবে না অতল। ”
” তুমি বাবা বলেই তো তোমায় এসকল কিছু সহ্য করে শান্ত থাকতে হবে। ভেঙে পড়া যাবে না। ”
” আর কোনো কথা বলব না আমি। শুধু একটা কথাই বলব,আজ আমার যন্ত্রণা তুই বুঝবি না। যেদিন নিজে বাবা হবি সেদিন নিজেকে আমার আজকের এই মুহুর্তটাতে দাঁড়া করাস। তখন তোর বলা এই প্রতিটি কথা উত্তর তুই নিজেই পেয়ে যাবি। ”
.
.
চলবে…….