#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_৩৭
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
_____________
আজ আকাশটা সকাল থেকেই মেঘলা। সূর্য মেঘের আড়ালে লুকিয়ে আছে। আকাশের বুকে কালো কালো মেঘ জমেছে বার কয়েক বজ্রপাত ও হয়েছে কিন্তু বৃষ্টি নামেনি। আকাশের অবস্থা তেমন ভালো নয় যেকোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে। বাহিরে গাছপালা বাতাসের সাথে দুলছে ঠান্ডা হিমেল বাতাসে গা শীতল হয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতির রূপে সজ্জিত হতে সকলে ছাঁদে এসে বসে আছে। শুধু শুধু খালি মুখে বসে থাকা ও দ্বায়। মনটা জেনো তাদের খাই খাই করছে। বাড়ির সবগুলো ছেলে মেয়ে ছাঁদে বসে রয়েছে। এমন অবস্থায় ঝাঁল কিছু খেলেই ভালো লাগবে। পুতুল সকলের উদ্দেশ্য বলল, ‘ তোদের নিশ্চয়ই কিছু খেতে ইচ্ছে করছে? ১০মিনিট সময় দে আমি সবার জন্য বেশি করে পেঁয়াজ মরিচ দিয়ে ঝাল করে ঝালমুড়ি বানিয়ে নিয়ে আসছি। ’
নাহিদ পুতুলের দুইগাল টেনে দিয়ে বলল, ‘ আপা তুই সত্যি অনেক সুইট কোনো কিছু বলতে হয় না। বলার আগেই সব বুঝে যাস। ’
নাহিদের কথায় তাল মিলালো সকলে। পুতুল রিয়া ও বৃষ্টি কে বলল, ‘ ঝালমুড়ি ছাঁদে বসে বানালে ভালো হবে। রান্নাঘর থেকে বানিয়ে আনতে গেলে ওখানেই অর্ধেক শেষ হয়ে যাবে। রিয়া, রিমা, বৃষ্টি আমি যা যা বলছি কিচেন থেকে নিয়ে আয়। পেঁয়াজ, সরিষার তেল, কাচা মরিচ, চানাচুর, মুড়ি, টমাটো একটা আর দুইটা বোল একটা ছোট আরেকটা বড় অন্তিমে বটি। যা তারাতাড়ি গিয়ে নিয়ে আয়। ’
ওরা সঙ্গে সঙ্গে নিচে চলে গেলো। এত কিছু নিয়ে আসছে দেখে বর্ষার ছোট ফুপি কাজল বলে উঠল, ‘ এইসব নিয়ে কথায় যাচ্ছিস? ’
বৃষ্টি ক্ষীণকন্ঠে বলল, ‘ ছাঁদে। পুতুল আপু মুড়ি মাখাবে। ’
মিসেস কাজল এবার চেচিয়ে বললেন, ‘ আমার জন্য নিয়ে আসিস। ’
বৃষ্টি নির্মূলকন্ঠে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে বলল, ’ আচ্ছা মা। ’
১০মিনিটের মধ্যে মুড়ি মাখানো হয়। সকলে মুড়ি খাওয়ার জন্য হাত বাড়িয়েছে ঠিক তখনই সেখানে উপস্থিত হলো বর্ষা। সকলের উদ্দেশ্য বলল, ‘ জানো তোমরা কি হইছে? ’
সকলে সন্ধিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, ‘ কি হইছে? ‘ বর্ষা মৃদু হেসে বলল, ‘ একটা কোরিয়ান ড্রামা দেখছিলাম। নায়কটা যে কত্তো কিউট আর হ্যান্ডসাম আল্লাহ আমি তো পুরো ফিদা হয়ে গেছি। কি সুন্দর কোনো খুদ নেই। আমার ক্রাশ সামনে পেলে কি যে করতাম। ইশশ ’
বলতে বলতে বর্ষার দুইগাল টমাটোর মতো লাল হয়ে গেলো। লজ্জা পেয়ে দুই হাত দিয়ে চোখ-মুখ ঢেকে ফেলল। ঠোঁট জোড়া উল্টিয়ে কপালের চামড়া ভাজ করে বর্ষার কথাগুলো শুনছিলো অভ্র। অন্য একজনের তারিফ করছে দেখে সে রাগে সবার মাঝখান থেকে উঠে চলে যায়। আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে তাকে যেতে দেখে ফিক করে হেসে উঠল বর্ষা। বিড়বিড় করে বলল, ‘ মেডিসিনে কাজ হয়েছে জ্বলেছে জ্বলেছে। ’
বলে সে-ও হাসতে হাসতে চলে যায়। সকলে একে অপরের দিকে তাকালো এতেই বোঝা যায় তাদের মাথায় কিছুই বোধগম্য হয়নি।
.
.
সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে রুমের দরজার সামনে আসতেই হঠাৎ বর্ষার হাত ধরে কে জেনো টান মারলো। বর্ষা কোনো কিছু বোঝার আগেই ঠাসস করে দরজা আঁটকে দেয়। দুই হাতের বাহু ধরে দরজার সাথে চেপে ধরল। মুখ দিয়ে অস্ফুটস্বরে বলে উঠল, ‘ আউচ ‘
একবার হাতের দিকে তাকিয়ে সামনে তাকাতে বিস্ময়ে ডুবে যায় বর্ষা। শুকনো ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলল, ‘ অভ্র ভাই,ই ভাইয়া ’
চোখমুখ খিচে রাগী গলায় বলল, ‘ কি বলছিলি তখন? অনেক কিউট হ্যান্ডসাম ক্রাশ তাই না? ’
বর্ষা চোখজোড়া ছোট ছোট করে বলল, ‘ আমি কখন বললাম? আর কাকে বলছি? ’
‘ওই কোরিয়ান হিরোকে বলছিস?’
‘কোরিয়ান হিরো সেটা আবার কে? ’
‘ বর্ষা? ’ রাগে কটমট করে বলল।
‘ আমি কিছু করিনি। ’
‘ সামনে পেলে তো করতি বলেছিলি। ’
‘ তাতো করতামই’ বিড়বিড় করে বলল।
‘কি বললি? ’
‘কোই কিছু না তো। আমাকে আম্মু ডাকছিলো আসি। ’
বলে কোনো রকমে অভ্রর হাত থেকে ছুটে পালালো বর্ষা।
___________
দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর সকলে যার যার রুমে চলে যায়। অনেকে বিছানার সাথে গা এলিয়ে দিতে ঘুমেরে দেশে পারি জমায়৷
বিছানার উপর বসে পড়ছে বর্ষা। মাঝেমধ্যে টুংটাং শব্দে ফোনের মেসেজ রিংটোন বেজে উঠছে। কিন্তু সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই বর্ষার তার সামনেই পরীক্ষা পড়া জমে রয়েছে বহুত পড়তে হবে। জানালার পর্দা বাতাসে উড়ছে ঠান্ডা বাতাস রুম পুরো ঠান্ডা করে তুলেছে। কাঁথা মুড়ো দিয়ে বর্ষা শুয়ে পরে। শুয়ে শুয়ে পড়তে থাকে কিছুক্ষণের মধ্যে শিল দ্বারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। বৃষ্টির দিনে ঘুমাতে বেশ লাগে। এমনিতেও দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমঘুম একটা রেশ চলে আসে। সে সাথে যদি হয় বৃষ্টি তাহলে তো কথাই নাই। বই পাশে রেখে ঘুমিয়ে পরে বর্ষা। অনুভব করতে লাগে কেউ একজন গভীর দৃষ্টিতে মগ্ন হয়ে তাকে দেখছে। ঘুমের মধ্যে এমন অনুভূতি সর্বপ্রথম ভূত নয় তো চিন্তা ভাবনা মাথায় আসে। সবে মাত্র চোখ লেগেছে তাই ঘুমটা গভীর নয়। পিটপিট করে চোখ খুললে আবছা আবছা দেখতে পায়। ওর মাথার দুইপাশে দুই হাতের উপর ভোড় দিয়ে অনেকটা ওর মুখের দিকে ঝুঁকে রয়েছে কেউ। আবছা আবছা দেখায় ভয়ে ‘আহহ’ বলে চিৎকার দেয়। সঙ্গে সঙ্গে ছায়ামূর্তি তার হাত দিয়ে বর্ষার মুখ চেপে ধরে বলে, ‘চেচামেচি করছিস কেন? মার খাওয়াবি নাকি?’
ভালো মতো চোখ খুলে দেখল বর্ষা ছায়ামূর্তি আর কেউ নয় অভ্র।
বিস্ময়ে বরফের মতো হয়ে তাকিয়ে আছে বর্ষা অভ্রর দিকে। তার চাহনি দেখে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে বর্ষার। ভয় মিশ্রিত কন্ঠে বলল, ‘ তুমি এখানে কি করছো? কিভাবে এলে? ‘
অভ্র হাত সরিয়ে নিলো বিছানার এক কোণায় বসে বলল, ‘ যখন তুই পড়ছিলি মেসেজের রিপ্লাই দিচ্ছিলি না তখন। ‘
‘ কিভাবে আসছো? দরজা তো ভেতর থেকে বন্ধ। ‘
বিছানার উপর বসে বলল।
‘ পাইপ বেয়ে যেভাবে তুই উঠা নামা করিস। ’
” কেন আসছো? ”
‘ তোকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো তাই। ‘
‘ এত ঢং করতো হবে না যাও কেউ এসে দেখে ফেললে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। ‘
‘ কিভাবে যাবো? বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে তো। ‘
‘ বৃষ্টি হবে জেনেও আসছো কেন তুমি আমার রুমে? ‘
অভ্র কোনো প্রত্যত্তর না করে হাত পা কাঁথার নিচে ঢুকিয়ে বসলো। আকস্মিক ঘটনায় বর্ষা বিছানা থেকে লাফ দিয়ে নিচে নেমে দাঁড়ায়। বর্ষার দিকে তাকিয়ে মৃদু ঠোঁট বাঁকা করে হাসে অভ্র। বর্ষা বিরক্ত হয়ে বলল, ‘ বিছানার নিচে ঢুকছো কেন? ‘
‘ বিছানার নিচে কোথায় ঢুকলাম? আমি তো কাঁথার নিচে ঢুকলাম। ‘ হেয়ালি করে বলল অভ্র।
‘ সে যাগ্গে কেন ঢুকলে? ‘
‘ আমার একমাত্র বউয়ের বিছানায় আমি শুয়েছি তাতে তোর এত কেন জ্বলছে শাঁকচুন্নি? ‘
বর্ষা ঠোঁট জোড়া উল্টিয়ে অভ্রর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। অভ্র কিছু বলবে ভাবে তখনই দরজায় কে জেনে বর্ষা বলে ডাকছে। বৃষ্টির শব্দে কন্ঠ স্পষ্ট নয়। বর্ষা দরজার দিকে তাকিয়ে কাপড় খামচে ধরে। অভ্র লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ায়। ধীরে ধীরে ডাক একটু জোরে হতে লাগে। বর্ষা অভ্রকে নিয়ে আলমারির পেছনে দাঁড় করায়। অভ্র বর্ষার মতো চিকন নয়। ছেলে মানুষ তাদের বডি ফিটনেস মেয়েদের থেকে আলাদা হয়। তাই অভ্র আলমারির পেছনে একটু জায়গায় ফিট হচ্ছিল না। না পেরে সে পেছন থেকে বের হয়ে আসে। অভ্রর গায়ের রং ফর্সা, আলমারির কাঠের সাথে লেগে শরীরে কয়েক জায়গায় লালচে দাগ হয়ে গেছে। বর্ষা করুণ দৃষ্টিতে অভ্রর দিকে তাকালো। হাতের দাগ দেখে চোখের কার্নিশে অশ্রু টলটল করছে। এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পরার সাথে সাথে অভ্র তার আঙুলের তর্জনী দিয়ে জলটা মুছে দিয়ে সরু কন্ঠে বলল,’ আমার কিছু হয়নি পাগলী। আমি দরজার পেছনে লুকিয়ে পরছি তুই দরজা খোল। ’
বর্ষা উপর নিচ মাথা নাড়ালো। অভ্র দরজার পেছনে লুকালো। বর্ষা দরজা খুলে দেখে ওর মা দাঁড়িয়ে আছে হাতে তার একটা বাটি বর্ষা লক্ষ্য করে দেখলো পায়েসের বাটি। শানিতকন্ঠে বর্ষার মা জানতে চাইলো, ‘ এতক্ষণ লাগলো কেনো দরজা খুলতে? ‘
ঘুম ঝড়ানো কন্ঠে বর্ষা বলল, ‘ ঘুমিয়ে পরেছিলাম আম্মু। ‘
বর্ষার আম্মু আর কিছু না বলে বাটিটা বর্ষার হাতে থামিয়ে দিয়ে চলে যায়। বর্ষা ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে বিছানার উপর ঝুঁকে বাটি সহ ট্রে টা রাখে।
সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে দুটি হাত বর্ষাকে আগড়ে ধরে। অভ্রর এমন অদ্ভুদ কান্ড বর্ষাকে বিস্ময়ে ফেলে দেয়। বর্ষা অভ্রর থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য কিছুটা নড়েচড়ে দাঁড়ালে অভ্র বর্ষাকে আরও শক্ত করে চেপে ধরে বলল, ‘ উঁহু! প্লিজ নড়ো না কিছুক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকো। খুব ইচ্ছে করছে তোমাকে আষ্টেপৃষ্টের সাথে আঁকড়ে ধরি। নিজেকে আটকাতে চেয়েও পারিনি। প্লিজ ‘
স্তব্ধ প্রায় দাঁড়িয়ে রয় বর্ষা। অভ্র তার গরম নিঃশ্বাস ফেলছে বর্ষার কাঁধের উপর অনুভব করতে পারছে বর্ষা। কিছুক্ষণের মধ্যে অভ্র তার অষ্ট জোড়া বর্ষার ঘাড়ের উপর ডুবিয়ে দিলো। চোখ জোড়া সঙ্গে সঙ্গে বড় বড়সড় করে নেয়। বর্ষা হুট করে পেছনে ঘুরে দাঁড়িয়ে অভ্রর চিবুকে হাত রেখে সজোরে ধাক্কা মারে। কয়েক পা পিছিয়ে যায় সে পরক্ষণে জেনো অভ্র ওর হুঁশশ ফিরে পায়। এতক্ষণ সে জেনো তার মধ্যে ছিলো না। কোনো এক গভীর নেশায় মগ্ন হয়েছিল। বর্ষা কাঁদো কাঁদো ফেস বানিয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইল। দু’জনের মধ্যে নীরবতা বিরাজমান অভ্র পরিস্থিতি সামলানোর জন্য বলল, ‘ সরি। আমার কোনো হুঁশশ ছিলো না নিজের মধ্যে ছিলাম না। জানি না কি হয়েছিল সরি। ‘
বর্ষা জড়ানো কন্ঠে বলল, ‘ আম্মু পায়েস দিয়ে গেছে। তোমার তো পায়েস অনেক প্রিয়। বিছানায় বসে খাও। বৃষ্টি কমলে না হয় চলে যেও। ‘
বর্ষার কথায় সাই দিয়ে বিছানায় উঠে বসল। চোখ দিয়ে ইশারা করে বর্ষাকে তার পাশে বসতে বলল। বর্ষা হাত পা গুটিয়ে বিছানায় বসল। অভ্র বর্ষাকে প্রথমে কয়েক চামচ খাইয়ে দিয়ে নিজেও খেলো।
বারান্দায় গিয়ে কয়েকবার উঁকি ঝুঁকি দিয়েছে বর্ষা। বৃষ্টি কমবার কোনো নামগন্ধ ও নেই। বৃষ্টি জেনো বাড়ছে দেখে ভারী নিঃশ্বাস ফেললো বর্ষা। পাশ গেষে হাতের সাথে হাত লাগিয়ে দাঁড়ালো অভ্র।
কানে কানে ফিসফিস করে বলল, “আমার নীলচে পরী, ভালো লাগে বৃষ্টির প্রতিটি বিন্দু বিন্দু পানি সঙ্গে থাকো যদি তুমি। ”
বর্ষা মাথা ঘুরিয়ে অভ্রর দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দেয়। দু’জনে বেশ কিছুক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে। অভ্র একহাত বর্ষার মাথার উপর রেখে কপালে আলতো চুমু একে দেয়। যখনই বৃষ্টি কিছুটা কমে ফোঁটা ফোঁটা পরে তখনই চারপাশে একবার লক্ষ্য করে অভ্র। তারপর পাইপ বেয়ে তার রুমে চলে যায়।
পাইপ বেয়ে উঠার সময় পা পিছলে পরে যাচ্ছিলো অভ্র কিন্তু পরক্ষণে নিজেকে সামলে নেয়। রুমে গিয়ে গোসল করতে চলে যায়। বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে পরেছে তাই। রুমে এসে কাঁথা মুড়ো দিয়ে শুয়ে পরে বর্ষা।
.
.
হল রুমে সবে একত্রে বসে আড্ডা দিচ্ছে। কিছু দল বসে মোবাইল টিপছে কিছুদল লুডু খেলছে তো বাকিরা বসে বসে সারাদিনের গল্প করছে। আর বড়রা বসে তাদের যুগের গল্প করছে।
সকলের নাকে একটা ঘ্রাণ আসতে লাগল। সকলে চোখ বন্ধ করে ঘ্রাণ টা শুঁকতে লাগল। বর্ষা কিচেনে সকলের জন্য নুডলস রান্না করছে তারই ঘ্রাণ বাতাসে ভেসে আসছে। কিছুক্ষণ আগে রাতের ডিনারের জন্য খিচুড়ি ও গরুর মাংসের ভোনা রান্না করা হয়েছে। কিন্তু সেটা তো রাতের জন্য এখন তো সন্ধ্যা আর এখন ওর খিদে পেয়েছে। নিজের জন্য একা রানবে? ভেবে সকলের জন্য রান্না করে নিলো।
ট্রে সাজিয়ে হল রুমে আসলো বর্ষা। সকলকে একটা একটা করে বাটি দিয়ে দিলো। শেষের টা অভ্র নিলো। সকলে খেতে শুরু করে দিয়েছে। এদিকে মন মরা হয়ে ট্রে হাতে দাঁড়িয়ে রয় বর্ষা। সবার জন্য এনে এখন তার জন্যই নেই। বর্ষার ভাগের বাটিটা একটা মেয়েকে দিয়েছে। পাশের বাসার আন্টি মার্কেটে গিয়েছে আর তার মেয়েকে বর্ষাদের বাড়িতে রেখে গেছে। বাচ্চা মেয়ে নুডলস দেখে খেতে চেয়েছে দেখে বর্ষা ওর ভাগের টা মেয়েটাকে দিয়ে দেয়।
অভ্র লক্ষ্য করে নিঃশ্বাস ফেলে বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘ বর্ষা তোর ভাগে তো পরলো না। তুই এক কাজ কর এদিকে আয় আমি তোকে আমার বাটি থেকে খাইয়ে দেই। ‘
বাড়ির সবার সামনে খাইয়ে দেই কথাটা বলায় হাত পা কাঁপতে শুরু করে তার। বুকের মধ্যে মোচড় দেয়া শুরু হয়ে গেলো। বর্ষা দাঁড়িয়ে রয়েছে হ্যাঁ বা না কোনো কিছু বলছে না দেখে অভ্রর মা বলে উঠল, ‘ কিরে তুই এমন খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? তোর অভ্র ভাইয়া কি বলল? যা ও তোকে খাইয়ে দিবে। এত কষ্ট করে রান্না করছিস না খেয়ে থাকবি নাকি? ‘
বর্ষা ওর বড় আম্মুর কথা শুনে সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকালো। তার মাথায় ঢুকলো না, ‘ব্যাপার’ টা সকলে এত ইজিলি নিলো কিভাবে? অভ্র বর্ষার মাথায় কি চলছে বুঝতে পেরে তার হাত ধরে টেনে ওর সামনে বসিয়ে এক চামচ নুডলস বর্ষার মুখে পুরে দিলো।
.
.
.
রাতে সকলে একসাথে ডিনার করতে বসেছে। বাহিরে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পরছে। বৃষ্টির থেকে বাতাস বইছে তীব্র। এমন পরিবেশে খিচুড়ি উফফ। সকলের প্লেটে বেড়ে দেওয়ার পরপর সবাই খাওয়া শুরু করে। এক লোকমা মুখে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্ষার নাকে মুখে খাবার উঠে যায় সে অনবরত কাশতে শুরু করে।
বর্ষার বাবার বলা একটা কথায় সে বর্ষার দিকে তাকিয়ে বলেছিল, ‘ বর্ষার জন্য দুইটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। কালকেই ছেলে দুটো মেয়েকে দেখতে চায়। যেকোনো একজনকে পছন্দ হলে কথা পাকাপাকি করবো। ছেলে মেয়ে দুজন দু’জনকে পছন্দ হলে দুই পরিবার একত্রে আলোচনার জন্য বসবো। দুইটা ছেলের মধ্যে কাউকে না কাউকে তো ওর পছন্দ হবে। ‘
কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে খাবার তাউলায় উঠে। মাথায় হাত দিয়ে কাশছে দেখে এক গ্লাস পানি বাড়িয়ে দেয়। সম্পূর্ণ পানি টুকু খেয়ে চুপচাপ বসে রয় বর্ষা। মাথা নিচু করে খাওয়া সম্পূর্ণ করে উঠে চলে যায়।
.
.
পড়ার টেবিলে বই খোলা রেখে চেয়ারে বসে রয়েছে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে শুধু তার বাবার বলা কথাটা। কাঁধের উপর কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে পেছনে তাকালো, বর্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তার বাবা বলল, ‘ মারে প্রতিটা মেয়েরই কোনো না কোনো সময় বাপের বাড়ি ছেড়ে যেতে হয়। প্রথমবার আমরা ভুল করেছি। তাই এবার আর দ্বিতীয় ভুল করতে চাই না। রেস্টুরেন্টে তোর জন্য অপেক্ষা করবে ওরা গিয়ে একবার দেখা করে আসিস। ‘
বর্ষা মাথা নিচু করে দুই পাশে মাথা নাঁড়ায়। বর্ষার বাবা রুম থেকে চলে যায়। বর্ষা ভেতর থেকে দরজা আঁটকে পেছনে ঘুরে দাঁড়ায় ভয়ে দুই পা পিছিয়ে যায়। দরজার সাথে চেপে ধরে রাগী গলায় বলল, ‘ বাড়িতে এসে বলবি ছেলেদের তোর পছন্দ হয়নি। ‘
দরজার দু’পাশে দুই হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অভ্র। বর্ষা মৃদু কন্ঠে বলল, ‘ ঠিক আছে। তাছাড়া তাদের জেনো আমাকে পছন্দ না হয় আমি সে ব্যবস্থাই করবো। তুমি এখন যাও। ‘
অভ্র বর্ষার দুই হাত চেপে ধরে বলল, ‘ যদি না পারিস। দেখিস আমি তাদের মে’রে ফেলবো। ‘
বর্ষা অস্ফুটস্বরে বলে উঠল, ‘ মা’মা’ মানে? ‘
‘ মানে কিছু না তুই ঘুমা। ‘ বলে অভ্র বারান্দায় চলে যায়।
#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_৩৮
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
_____________
‘ কিরে তুই এখনো রেডি হসনি? সকাল এগারো টা বাজতে চললো। কখন যাবি দেখা করতে? ‘
‘ এই তো আম্মু এখনই রেডি হচ্ছি। কিন্তু তার আগে বলো আব্বু কোথায়? ’
‘ রুমে ‘
” আচ্ছা টাটা ‘
বলে ছুটে চলে গেলো বর্ষা। রুমের সামনে এসে দেখল বর্ষার বাবা বিছানার উপর পা ঝুলিয়ে বসে কিছু ফাইল চেইক করছে। বর্ষা ওর বাবার সামনে গিয়ে এক বাক্যে বলল, ‘ আমি যাবো। কিন্তু একটা শর্তে। ‘
বর্ষার বাবা বর্ষার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললেন, ‘ কি শর্ত? ‘
বর্ষা হাফ ছেড়ে বলল, ‘ জায়গা আমি ঠিক করবো। কোথায় দেখা করবো৷ কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে অচেনা লোকদের সাথে বসে কথা বলা খাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ‘
বর্ষার বাবা কিছুক্ষণ ভাবনা চিন্তা করে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, ‘ ঠিক আছে। তোমার যেমনটি ইচ্ছে। ‘
বর্ষা চোখজোড়া ছোটছোট করে বাঁকা হাসল। রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। কিছুক্ষণ শাওয়ার নেওয়ার পর গোলাপী রঙের গাউন পরে বের হয়ে আসে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হালকা সাজগোজ করে নেয়। যেমন হালকা লিপস্টিক আর চোখে কাজল। মোবাইলে টাইম দেখে রুম থেকে বের হয়ে পরে।
বাড়ির বাহিরে, গাড়ির দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে অভ্র বর্ষাকে দেখে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে, পরক্ষণে সে হাসি বিলীন হয়ে যায়। বর্ষা হেঁটে অভ্রর সামনে আসতে অভ্র ধীর কন্ঠে বলল, ‘ এত সাজগোজ করে আসছিস কেন? বোরকা পরে আসতে পারতি তো? ‘
বর্ষা স্মিত হেসে বলল, ‘ তোমার সাথে ঘুরবো তাই এখন বেশি বকবক না করে চলো। ‘
অভ্র বর্ষার কথার মানে বুঝলো না। গাড়িতে উঠে সিট বেল্ট লাগিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয়। ওইদিকে বর্ষার ঠিক করা জায়গায় ছেলেগুলো গিয়ে অপেক্ষা করছে। বর্ষা আর অভ্র গাড়ি দিয়ে এক ঘন্টা ঘোরার পর সেথায় পৌঁছালো কিছু কেনার ছিল বর্ষার সেগুলোই কিনেছে এতক্ষণ। বর্ষা গাড়ি থেকে নামে তার হাতে একটা ব্লাক কালারের বাক্স। দুই হাত দিয়ে ধরে হেঁটে যাচ্ছে। অভ্র গাড়ির দরজা দিয়ে মাথা কিছু বের করে বর্ষার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুদূর যেতে অভ্রর চোখের আড়ালে চলে গেলে বর্ষা। এটা সেই জায়গা যেখানে বিয়ে ঠিক হওয়ার আনন্দে আহিতা পার্টি দিয়েছিল। বর্ষাকে দেখে এগিয়ে আসলো কাব্য। বর্ষার ডান হাতের কব্জি চেপে ধরে বলল, ‘ এতক্ষণ লাগলো কেন তোর আসতে? প্রায় এক ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। ‘
‘ রাস্তায় জ্যাম ছিলো তাই লেট হয়েছে। এখন তুমি লেট করাচ্ছো। ‘
কাব্য কথা না বাড়িয়ে বর্ষার সামনে থেকে সরে গেলো। গাড়িতে বসে থাকতে অস্বস্তি হচ্ছে বলে গাড়ি থেকে নেমে বর্ষার পিছু পিছু গিয়ে একটা গাছের আড়ালে লুকিয়ে পরে অভ্র। বর্ষা টেবিলের কাছে পৌঁছানোর পর প্রথম ছেলেটা টেবিলের কাছে এসে দাঁড়ায়। হাতে তার একটা রুমাল। ছেলেটা দেখতে সাধারণ, বোকা স্বভাবের হাতের রুমাল টা দিয়ে চেয়ারের উপরে মুছতে লাগল অহেতুক কিন্তু চেয়ার আগে থেকে পরিষ্কার। টেবিলের উপরেও মুছতে লাগল। তা দেখে বর্ষা বাঁকা হেসে বক্সটার ভেতর থেকে একটা পিজ্জা বের করল। প্যাকেট খুলে ছেলেটার দিকে এক পিস বাড়িয়ে দিলো। যেহেতু সে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। সে বিধায় চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালো। পেছন ঘুরে তার সম্মন্ধে বর্ষাকে বলতে লাগল। তার নাম, কি করে, বাড়িতে কে কে আছে ইত্যাদি বলতে লাগে। রুমাল ঝেড়ে পিছনে বর্ষার দিকে ঘুরে স্তব্ধ হয়ে যায়। বর্ষা একাই অর্ধেক পিজ্জা শেষ করে ফেলেছে। সেটা বড় কথা নয় বড় কথা হলো বর্ষা খুবই বাজে ভাবে খাচ্ছে পুরো বাচ্চাদের মতো করে গালে, মুখে, নাকে হাতে টেবিলের উপরে সস লাগিয়ে নাজেহাল অবস্থা করে ফেলেছে। ছেলেটা বর্ষার দিকে তাকিয়ে অস্ফুটস্বরে বলল, ‘ একি অবস্থা করেছেন আপনি? ‘
বর্ষা খাওয়া অফ করে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ কোই কি করেছি?’
পরক্ষণে আবারও বলল, ‘ ওওও, আপনি খাবারের কথা বলছেন। এটাতো আমার প্রতি দিনের অভ্যাস। গালে টালে ভরছে তাই না? কিন্তু কি করবো বলেন? এভাবে না খেলে আমার পেট ভরে না। এই নেন আপনিও খান। ‘
এক পা পেছনে গিয়ে বলল, ‘ না দরকার নেই। আপনি বরং এই রুমাল টা নিন হাত ও মুখ পরিষ্কার করুন। ‘
বর্ষা রুমালটা হাতে নিয়ে মুখ পরিষ্কার করল। হাত মুছে নিয়ে টেবিল মুছতে লাগল। ছেলেটা ভালো করে বুঝতে পারল, যে মেয়েকে সে দেখতে আসছে ও মেয়ে অনেক খচ্চর অপরিষ্কার। সে এই পরিস্থিতি থেকে পলায়ন করার জন্য বলে উঠল, ‘ মিস বর্ষা আপনি এখানেই অপেক্ষা করুন আমি কিছুক্ষণের মধ্যে আসছি। ‘
বলেই সে উড়াধুড়া দৌঁড় দিলো। বর্ষা লোকটার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে সশব্দে হেসে উঠল। হাসি কন্ট্রোল করে বলল, ‘ তাড়াতাড়ি আসবেন আমি এখানে অপেক্ষা করছি। ‘
গাছের আড়াল থেকে ফিক করে হেসে ফেললো অভ্র। টেবিলের উপরে খাবার এলো মেলো করে রেখে দিলো। কালো বক্সটার ভেতর থেকে একটা বোতল বের করল। বোতলের মুখটা খুলে হাতে কিছুটা হুইস্কি ঢেলে খাবারের উপর ছিটিয়ে দিলো। পরক্ষণে টেবিলের উপর মাথা ঠেকিয়ে শুয়ে পরার মতো রইল। দ্বিতীয় জন এসে বর্ষাকে ডাক দিলো। বর্ষা মাথা সোজা করে লোকটার দিকে তাকিয়ে মাতলামো কন্ঠে বলল, ‘ আরে আপনি আসুন বসুন। ’
বলতে বলতে টেবিলের নিচ থেকে বোতলটা বের করে লোকটার মুখের উপর ছিটিয়ে দিলো। লোকটা মুখে হাত দিয়ে ‘ বাবা গো ‘ বলে দৌঁড় দিলো।
পেছন থেকে নেশার এক্টিং করে বর্ষা লোকটাকে ডাকে দিল। কিন্তু সে যে দৌঁড় দিয়েছে ভুলেও আর পেছনে ঘুরে তাকাবে না৷ ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে তুলে গাছের আড়াল থেকে বের হয়ে আসে অভ্র। বর্ষার সামনে চেয়ার টেনে বসে বলল, ‘ ম্যাম! আপনার ওই বক্সে পিজ্জা আর হুইস্কি ছাড়া কি অন্য কিছুও আছে খাওয়ার মতো এমন? ‘
বর্ষা হেসে মাথা উপর নিচ নাড়িয়ে বলল, ‘ কফি আছে খাবে? ‘
.
.
.
হল রুমে সবাই বসে রয়েছে বর্ষা ও বাকিরা বসে টিভি দেখছে। বাড়ির বড়রা বসে কিছু কথা আলোচনা সমালোচনা করছে। বর্ষার বাবা মলিন কন্ঠে বললেন, ‘ দুজন ছেলে মেয়েটাকে দেখতে গেলো কিন্তু কারোরই পছন্দ হলো না। অথচ ছবি দেখে কত কথাই না বলেছিল। ‘
নূর ইসলাম ও বাকিরা বর্ষার বাবাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, ‘ মেয়ে কি নদী ভেঙে পানিতে পরে যাচ্ছে নাকি? ওদের পছন্দ হয়নি অন্য কারো হবে তাছাড়া পড়াশোনা করছে করতে থাকুন। আর কোনো দিন বিয়ের কথা বার্তা বলিস না। এতে করে মেয়েদের বিয়ের প্রতি লাজলজ্জা ভেঙে যায়। ‘
বর্ষার মনে মনে হাসতে হাসতে করুণ অবস্থা শুধু শব্দ করে হাসতে পারছে না। ছেলেরা দু’জনই মেয়ে পছন্দ হয়নি বলে বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে।
সবাই হল রুমে উপস্থিত দেখে বর্ষা সেখান থেকে চলে আসল। অভ্রর রুমে এসে অভ্রকে না দেখতে পেয়ে সোজা চলে যায় ছাঁদে। চারদিকে অন্ধকার তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। বর্ষা ভেবে নেয় অভ্র এখানে নেই তাই চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে অভ্রর কন্ঠস্বর ভেসে আসে সে বলে, ‘ কি বলতে আসছিস? ‘
অভ্রর কন্ঠ শুনে আন্দাজে ছুটে যায় বর্ষা। ঠিক পেছন থেকে অভ্রকে জড়িয়ে ধরে। অভ্র বর্ষার দুই হাতের উপর হাত রেখে তাকে নিজের সামনে দাঁড় করালো। শালিনকন্ঠে বলল, ‘ এত খুশি কেনো তুই? ‘
বর্ষা সামনে থেকে অভ্রকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘ তারা বিয়ে ভেঙে দিছে। বলেছে তাদের মধ্যে কারোরই আমাকে পছন্দ হয়নি। ‘
অভ্র জেনো এই কথাটাই শুনতে চাচ্ছিলো। বর্ষাকে শক্ত করে তার বাহুডোরে চেপে ধরে কপালে আলতো চুমু একে দিয়ে বলল, ‘ তোর জন্য আইসক্রিম রেখেছি ফ্রিজে দেখিসনি এখনো? খুশির খবর শুনলে মিষ্টি মুখ করতে হয়। যা ছুটে গিয়ে আইসক্রিম টা নিয়ে আয়। ‘
বর্ষা অভ্রকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে আইসক্রিম নিয়ে আসে। অভ্রর সামনে দাঁড়িয়ে হাঁপাতে থাকে। সিঁড়ি দিয়ে উঠা নামা করায় ক্লান্ত হয়ে পরেছে। আইসক্রিমের প্যাকেট খুলে একটা আইসক্রিম দুজনে মিলে খেলো।
বর্ষার দুইগালে অভ্র ওর দুইহাত রেখে বলে উঠল, ‘ আমার হিরোইন ‘
বর্ষা অভ্রর কথা শুনে ফিক করে হেসে উঠল। অভ্র সাথে সাথে বুকের মধ্যে আড়াল করে নিলো তাকে। জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু একে দেয়। বর্ষা লজ্জায় পঞ্চমুখ হয়ে অভ্রর বুকে মাথা লুকালো।
চলবে?
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ]
চলবে?
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ]